সর্বজনকথা ৭ম বর্ষ: ২য় সংখ্যা( ফেব্রুয়ারি – এপ্রিল ২০২১)

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

আখচাষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিশিল্প সংকট: কারণ ও তার প্রতিকার

পাটকল চিনিকল বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন-২

গত ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সর্বজনকথার আয়োজনে ‘পাটকল চিনিকল বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রতিবেদন’ প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আখচাষ ও চিনিকল বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও গবেষণার লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা। এখানে এই গবেষণা সারসংক্ষেপ পত্রটি প্রকাশ করা হলো। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে পাটকল বিষয়ক অনুসন্ধান ও গবেষণার লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষক ড. মাহা মির্জা। সম্পূরক বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, পাটকল শ্রমিক আবদুল হালিম মিঠু ও চিনিকল শ্রমিক ফেরদৌস ইমাম। পাটকল চিনিকল সহ সামগ্রিক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ও রাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সর্বজনকথার সম্পাদক আনু মুহাম্মদ।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করার পর এখন চেষ্টা চলছে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো বন্ধ করার। যুক্তি সেই একটাই- লোকসান। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এসে লোকসানের বোঝা কমানোর কথা বলে রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি চিনিকলের (পঞ্চগড়, সেতাবগঞ্জ, শ্যামপুর, রংপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া) চিনি উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বন্ধ হওয়া ছয় চিনিকলে ২ হাজার ৮৮৪ জন শ্রমিক কর্মচারী কর্মরত। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটশিল্পের মতোই রাষ্ট্রায়ত্ত চিনি কলগুলোর লোকসানের উপর যত বেশি আলোকপাত করা হয়, লোকসানের প্রকৃত কার্যকারণগুলো নিয়ে ততটুকু আলোচনা হয় না। কারণ সেই আলোচনা হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে কীভাবে সমস্যার কারণ ও সমাধান সুনির্দিষ্টভাবে জানা থাকার পরেও তার সমাধান না করে বরং সেই সমস্যাগুলোকে কাজে লাগিয়ে সর্বজনের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা ও কিছু চেনা গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেয়ার যৌক্তিকতা তৈরি করা হয়। 

(more…)
Social Share
  •  
  •  

পাটশিল্পের সংকট: কারণ ও তার প্রতিকার

পাটকল চিনিকল বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন-১

গত ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সর্বজনকথার আয়োজনে পাটকল চিনিকল বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে পাটকল বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধান ও গবেষণার লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গবেষক ড. মাহা মির্জা। এখানে এই গবেষণা সারসংক্ষেপ পত্রটি প্রকাশ করা হলো। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আখচাষ ও চিনিকল বিষয়ক অনুসন্ধান ও গবেষণার লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা। এরপর সম্পূরক বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, পাটকল শ্রমিক আবদুল হালিম মিঠু ও চিনিকল শ্রমিক ফেরদৌস ইমাম। সবশেষে পাটকল চিনিকল সহ সামগ্রিক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ও রাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সর্বজনকথার সম্পাদক আনু মুহাম্মদ।

এ বছর ২ জুলাই ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। করোনা মহামারির মধ্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর সরকার যখন বিপুল প্রণোদনার মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থান ধরে রাখবার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার সেখানে মহামারির সুযোগ নিয়ে বিপুল জমিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বেসরকারিকরন করার উদ্যোগ নিলো। এবং এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী ও ২৫ হাজার অস্থায়ী শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। যদিও সরকার থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল যে পাটকলগুলো দ্রুত খুলে দেয়া হবে, কিন্তু ইতিমধ্যেই ৬ মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত মিলগুলো খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এছাড়া খুলনার খালিশপুর সহ দেশের বিভিন্ন মিলএলাকায় হাজার হাজার শ্রমিকের পাওনা টাকা পরিশোধ না করেই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, শ্রম আইনের ৩২ ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে যে, পাওনা পরিশোধ না করে কোনোভাবেই শ্রমিককে তার বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করা যাবেনা। অথচ আমরা দেখছি সরকার নিজেই শ্রম আইন লঙ্ঘন করছে।

(more…)
Social Share
  •  
  •  

আখচাষ ও রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিশিল্প: সংকট কেনো?

পুন:প্রকাশ
মোশাহিদা সুলতানা ও কল্লোল মোস্তফা

যথেষ্ট সম্ভাবনাময় হলেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চিনিশিল্প প্রতিষ্ঠান ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আখচাষিদের জীবন-জীবিকা দীর্ঘদিন ধরেই গভীর সংকটে নিমজ্জিত। উৎপাদিত চিনি অবিক্রীত পড়ে থাকে গুদামে, চিনির উৎপাদন খরচ চিনির বাজারমূল্যের দ্বিগুণেরও বেশি। বেসরকারিভাবে আমদানীকৃত চিনির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না রাষ্ট্রায়াত্ব চিনিকলগুলো। চিনিকলের শ্রমিকরা নিয়মিত বেতন পান না, দিনে দিনে কমে যাচ্ছে আখ চাষ। চিনিশিল্পের এই সংকটের কার্যকারণ ও তার সমাধানের উপায় অন্বেষণ করতে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে এই প্রবন্ধটি প্রথম প্রকাশিত হয় সর্বজনকথা, ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সংখ্যায়। সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত এইসব সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ না নেয়ার কারণে সাম্প্রতিক কালে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনি শিল্প ও আখ চাষের সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে। আর এই সংকটকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর মতো রাষ্ট্রায়াত্ব চিনিকলগুলোও বন্ধ করার পায়তারা চলছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সর্বশেষ সংবাদ অনুসারে, সরকার দীর্ঘদিন ধরে অর্থসংকটে ভুগতে থাকা চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনকে অর্থ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে যার ফলে চলতি মৌসুমে নিবন্ধিত আখচাষিদের সার, কীটনাশক ও সেচের জন্য ঋণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, আসছে মৌসুমে আখ উৎপাদন আরো কমে যেতে পারে যার ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনি শিল্পের লোকসান ও সংকটের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান পরিস্থিতির বিবেচনায় রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিশিল্প ও আখ চাষের সংকট ও তার সমাধানের উপায় নিয়ে সর্বজনকথা, ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সংখ্যায় প্রকাশিত লেখাটি পুন:প্রকাশ করা হলো।

ঠাকুরগাঁও চিনিকলের একটি অংশের দৃশ্য, ছবি: উইকিপিডিয়া

১. ভূমিকা

দীর্ঘদিন ধরে গভীর সংকটে নিমজ্জিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চিনিশিল্প প্রতিষ্ঠান ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা ও আখচাষিদের জীবন-জীবিকা। রাষ্ট্রীয় চিনিকলগুলোর উৎপাদিত চিনি অবিক্রীত পড়ে আছে গুদামে। এসব কারখানায় চিনির উৎপাদন খরচ চিনির বাজারমূল্যের দ্বিগুণেরও বেশি। লোকসান দিয়ে বিক্রি করা হলেও বেসরকারিভাবে আমদানীকৃত চিনির সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না এই চিনি। ফলে চিনিকলের শ্রমিকরা নিয়মিত বেতন পান না, প্রায়ই বেতনের বদলে চিনি প্রদান করা হয় তাদের। আখচাষিরা আর চিনিকলগুলোতে আখ সরবরাহ করতে চান না, দিনে দিনে কমে যাচ্ছে আখ চাষ। চিনিকলের কাছে আখ বিক্রি করে পাওনা আদায়ের জন্য মাসের পর মাস ঘুরতে হয় তাদের। এদিকে পর্যাপ্ত আখ না পাওয়ায় চিনিকলের যন্ত্রপাতি ও শ্রমশক্তিবছরের বেশিরভাগ সময় অব্যবহৃত থাকে এবং আখ থেকে চিনি উৎপাদনের খরচ বাড়তে থাকে। চিনি খাতের এই সংকট নিরসনে ২০১৫ সালের শেষের দিকে এসে সরকার কিছু বাজার নিয়ন্ত্রণমূলক নীতি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই দফায় নতুন করে আমদানির ওপর সংরক্ষণমূলক শুল্ক আরোপ এবং ভ্যাট আরোপ। যুক্তি হচ্ছে, শুল্ক আরোপ করে বেসরকারি আমদানি নিয়ন্ত্রণে রাখা ও পিছিয়ে থাকা রাষ্ট্রীয় খাতকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। এই বাজার নিয়ন্ত্রণ নীতি আসলে এই চিনিশিল্পকে রক্ষা করে টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে কি না-এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে আমরা চিনিশিল্পের সংকটের কার্যকারণ ও তার সমাধানের উপায় অন্বেষণ শুরু করি। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও মাঠপর্যায়ে সাক্ষাৎকার গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই প্রবন্ধে চিনিশিল্পের সংকট ও সমাধানের বিবিধ উপায় অন্বেষণ করা হয়েছে।

(more…)
Social Share
  •  
  •