বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র: প্রতারণামূলক নিষ্ঠুর ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পের দৃষ্টান্ত
কল্লোল মোস্তফা
‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ’ এই বিজ্ঞাপনী প্রচার দিয়ে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু করেছিল এস আলম গ্রুপ। এই প্রকল্পে তার সহযোগী চীনা কোম্পানি আর পৃষ্ঠপোষক সরকার। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পে পাওয়া যায় কোম্পানি-সরকারের যোগসাজসে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম আর জোর জবরদস্তির নানা চিত্র। এর কারণে এই প্রকল্প এলাকার গরীব মানুষ আর প্রকল্পের শ্রমিকদের উপর জুলুমের অনেক ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ-সন্ত্রাসীদের গুলিতে মানুষ খুনজখম করা তার অংশ। এই প্রাণবিনাশী প্রকল্প প্রথম থেকেই কীরকম অনিয়ম ও মিথ্যাচারের উপর দিয়ে চলছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র এই লেখায় উপস্থিত করা হয়েছে।
যে প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং তার প্রতিক্রিয়ায় গুলি করে হত্যার ঘটনা দু-দুবার ঘটতে পারে, তা যে কোনো সাধারণ প্রকল্প নয়, তা বলাই বাহুল্য। দেশীয় কোম্পানি এস আলম ও চীনা কোম্পানি সেপকো-৩ এবং এইচটিজির যৌথ মালিকানায় নির্মিতব্য বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প১ এরকমই একটি অসাধারণ ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প! অসাধারণ বলেই হয়তো ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘শুভ উদ্বোধন’ উপলক্ষ্যে সংবাদপত্রের পাতাজুড়ে দেওয়া এস আলম ও চীনা কোম্পানি সেপকো-৩-এর যৌথ বিজ্ঞাপনের শিরোনাম ছিল: ‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ’! এই বিশেষ ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমবার মানুষ হত্যার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল টেক্সটাইল মিলস ও ভেজিটেবল অয়েলের নামে জমি কিনে প্রতারণামূলকভাবে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা বাঁশখালীর গণ্ডামারা গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালিয়ে। আর দ্বিতীয়বার মানুষ হত্যা করা হয় ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পর্যায়ে সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ ও রোজার সময় কাজের সময়সূচি পরিবর্তনের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে।
350