[গত বেশ কিছুদিন ধরে গার্মেন্টস শ্রমিকের নিম্নতম মজুরি নতুনভাবে নির্ধারণের জন্য আন্দোলন চলছে। শ্রমিক সংগঠনগুলোর চলমান আন্দোলনে অনেকগুলো সংগঠন থেকে নিম্নতম মজুরি হিসাবে দাবি উঠেছে ২৫ হাজার টাকা এবং আরও বেশি কিছু সংগঠন দাবি করেছে ২৩ হাজার টাকা। তাদের উভয়ের পক্ষ থেকে বিস্তারিত তথ্য যুক্তিও দেয়া হয়েছে। মজুরি বোর্ডের কালক্ষেপনের মধ্যেও তাদের অনেকে নিজ নিজ ব্যাখ্যা জমাও দিয়েছে। এসব কর্মসূচী ও আলোচনার মধ্যে গত ৮ই অক্টোবর গার্মেন্ট শ্রমিকের জন্য ১৭,৫৬৮ টাকা নিম্নতম মজুরির প্রস্তাব দিয়েছে দেশের খ্যাতনামা গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। যেহেতু প্রস্তাবটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছে, এবং দেশের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে যাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, তাই তাদের এহেন কম মজুরির প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করা জরুরী বলে আমরা মনে করি। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সিপিডির প্রস্তাব পর্যালোচনা করে এই লেখা।]
শুরুতেই বলে নেয়া ভাল যে, শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ নিয়ে কথা বলা কোন ইচ্ছাপূরণের গল্প বা উইশফুল থিংকিং এর বিষয় নয় যে মন চাইল আর একটা বলে দিলাম। এটা শ্রমিকের অস্তিত্বের প্রশ্ন। তার সুস্থ শরীরে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার প্রশ্ন এবং বাজার অর্থনীতিতে সেটা দীর্ঘমেয়াদে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতার প্রশ্নও বটে। এই প্রস্তাব বিজিএমইএ দিলে সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজনই পড়ত না। কারণ বিজিএমইএ এমন কম মজুরি বা তার থেকেও কম মজুরির প্রস্তাব দিবে তেমনটাই তাদের শ্রেণীস্বার্থে স্বাভাবিক। কিন্তু একটি বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এরকম প্রস্তাব দিলে তা গুরুতর বিষয়ই বটে।
সিপিডি নিম্নতম মজুরীর প্রস্তাব করতে গিয়ে তাদের নিজেদের পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে (মূল রিপোর্ট তারা প্রকাশ করেনি এখনো) বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকের দুর্দশা অল্পবিস্তর তুলে ধরার পরেও, শেষমেষ যে পদ্ধতিতে ওই নিম্নতম মজুরি হিসাব করেছে তাতে শ্রমিকের প্রতি ভীষণ অসংবেদনশীলতা ও শ্রেণীগত অবহেলারই বহিপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সিপিডির করা সেই হিসাব নিয়ে পদ্ধতিগতভাবেই কতগুলো গুরুতর প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে। কীভাবে সেটাই নীচে আলোচনা করা হচ্ছে।
[লেখাটি ইসরায়েলি সংবাদপত্র দ্য হারেৎজ-এ প্রকাশিত সাংবাদিক ও লেখক Gideon Levy-এর ‘Israel Can’t Imprison Two Million Gazans Without Paying a Cruel Price’ শীর্ষক লেখার অনুবাদ। অনুবাদ করেছেন কল্লোল মোস্তফা।]
এই সবকিছুর জন্য দায়ী ইসরায়েলি ঔদ্ধত্য; এরকম একটা ধারণা যে আমরা যা খুশি তা করতে পারি, এ জন্য আমাদের কোনো মূল্য দিতে হবে না এবং কোনো শাস্তি পেতে হবে না। আমরা নির্বিঘ্নে এসব চালিয়ে যাব।
আমরা ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার করব, হত্যা করব, হয়রানি করব, উচ্ছেদ করব আর তাদের ওপর গণহত্যা কার্যক্রম চালানো সেটেলার বা দখলদারদের রক্ষা করব।
আমরা নিরপরাধ মানুষের ওপর গুলি চালাব, তাদের চোখ তুলে ফেলব, মুখ ভেঙে ফেলব, তাদের বহিষ্কার করব, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করব, তাদের বিছানা থেকে তুলে নিয়ে আসব এবং অবশ্যই গাজা উপত্যকায় অবিশ্বাস্য অবরোধ চালিয়ে যাব আর ধরে নেব সবকিছু ঠিকমতো চলবে।