বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র: প্রতারণামূলক নিষ্ঠুর ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পের দৃষ্টান্ত

৭ম বর্ষ বিশেষ লেখা

কল্লোল মোস্তফা

‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ’ এই বিজ্ঞাপনী প্রচার দিয়ে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু করেছিল এস আলম গ্রুপ। এই প্রকল্পে তার সহযোগী চীনা কোম্পানি আর পৃষ্ঠপোষক সরকার। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পে পাওয়া যায় কোম্পানি-সরকারের যোগসাজসে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম আর জোর জবরদস্তির নানা চিত্র। এর কারণে এই প্রকল্প এলাকার গরীব মানুষ আর প্রকল্পের শ্রমিকদের উপর জুলুমের অনেক ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ-সন্ত্রাসীদের গুলিতে মানুষ খুনজখম করা তার অংশ। এই প্রাণবিনাশী প্রকল্প  প্রথম থেকেই কীরকম অনিয়ম ও মিথ্যাচারের উপর দিয়ে চলছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র এই লেখায় উপস্থিত করা হয়েছে।  

যে প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং তার প্রতিক্রিয়ায় গুলি করে হত্যার ঘটনা দু-দুবার ঘটতে পারে, তা যে কোনো সাধারণ প্রকল্প নয়, তা বলাই বাহুল্য। দেশীয় কোম্পানি এস আলম ও চীনা কোম্পানি সেপকো-৩ এবং এইচটিজির যৌথ মালিকানায় নির্মিতব্য বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প এরকমই একটি অসাধারণ ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প! অসাধারণ বলেই হয়তো ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘শুভ উদ্বোধন’ উপলক্ষ্যে সংবাদপত্রের পাতাজুড়ে দেওয়া এস আলম ও চীনা কোম্পানি সেপকো-৩-এর যৌথ বিজ্ঞাপনের শিরোনাম ছিল: ‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ’! এই বিশেষ ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমবার মানুষ হত্যার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল টেক্সটাইল মিলস ও ভেজিটেবল অয়েলের নামে জমি কিনে প্রতারণামূলকভাবে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা বাঁশখালীর গণ্ডামারা গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালিয়ে। আর দ্বিতীয়বার মানুষ হত্যা করা হয় ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পর্যায়ে সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ ও রোজার সময় কাজের সময়সূচি পরিবর্তনের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে।

ছবি: বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে পত্রিকার পাতা জুড়ে ছাপা চাইনিজ কোম্পানি সেপকো-৩ এবং এসআলম গ্রুপের যৌথ বিজ্ঞাপন যার শিরোনাম ছিল “অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ”!

বাংলাদেশকে ‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে’ নিয়ে যাওয়ার দাবিদার বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের সূচনাই ঘটে প্রতারণা ও জবরদস্তির মধ্যদিয়ে। উদ্দেশ্য কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে ৬৬০ একর জমি জেনেসিস টেক্সটাইল ও এস আলম ভেজিটেবল অয়েল নামে কিনেছিল এস আলম গ্রুপ। শুধু তাই নয়, বাঁশখালী উপজেলার ভূমি অফিস থেকে এস আলম গ্রুপকে জমি কেনার অনুমোদন বাবদ দেওয়া ৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপ কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্দেশ্যে গণ্ডামারা, পশ্চিম বড়ঘোনা ও পূর্ব বড়ঘোনা মৌজার মোট ৫০৩২.১৪ একর জমি হস্তগত করতে চায়, যার মধ্যে ৩৩০৩ একর জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং খাসজমি ১৭২৮.৯৭ একর। ভূমি অফিস ওই এলাকায় মাত্র ১৫০টি বসতবাড়ি থাকার কথা বলে নাল জমি দেখিয়ে এস আলম গ্রুপকে ৩১০০ একর জমি ক্রয়ের অনুমোদন দেয়।

বাংলাদেশকে ‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে’ নিয়ে যাওয়ার দাবিদার বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের সূচনাই ঘটে প্রতারণা ও জবরদস্তির মধ্যদিয়ে। উদ্দেশ্য কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে ৬৬০ একর জমি জেনেসিস টেক্সটাইল ও এস আলম ভেজিটেবল অয়েল নামে কিনেছিল এস আলম গ্রুপ। শুধু তাই নয়, বাঁশখালী উপজেলার ভূমি অফিস থেকে এস আলম গ্রুপকে জমি কেনার অনুমোদন বাবদ দেওয়া ৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপ কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্দেশ্যে গণ্ডামারা, পশ্চিম বড়ঘোনা ও পূর্ব বড়ঘোনা মৌজার মোট ৫০৩২.১৪ একর জমি হস্তগত করতে চায়, যার মধ্যে ৩৩০৩ একর জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং খাসজমি ১৭২৮.৯৭ একর।

মূলত বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা গোপন করে টেক্সটাইল ও ভেজিটেবল অয়েল কারখানা তৈরির কথা বলে জমি কেনার কারণেই স্থানীয়রা শুরুর দিকে কর্মসংস্থান হবে ভেবে জমি বিক্রি করেছেন; কিন্তু এক পর্যায়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকেই স্থানীয়রা কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন এবং জালিয়াতি, প্রতারণা, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানির প্রতিবাদে ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ ও কোম্পানির সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে চারজন গ্রামবাসী নিহত হন। এ ঘটনায় দোষীদের বিচার তো হয়ই-নি, উলটো তিন সহস্রাধিক গ্রামবাসীকে আসামি করে পুলিশ তিনটি মামলা করে এবং পরে জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে না-পেরে পুলিশ তিন মামলারই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।

ছবি:৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে দেয়া বাঁশখালী উপজেলার ভূমি অফিসের প্রতিবেদন

এই ঘটনার পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল আবারও সংবাদ শিরোনাম হলো বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এবারের ঘটনা: বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, গুলিতে নিহত ৭। কিন্তু বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র তো বাংলাদেশকে ‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে’ নিয়ে যাওয়ার ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প! এরকম ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পে কেন শ্রমিকরা বিক্ষোভ করবেন আর সে বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে শ্রমিকদের হত্যাই-বা কেন করা হবে! লক্ষণীয় বিষয় হলো, যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে মানুষকে জবরদস্তি করে উচ্ছেদ করে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের যেসব রঙিন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো কর্মসংস্থান। বাঁশখালীর গণ্ডামারায় জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও এস আলম গ্রুপ একইরকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ৪ এপ্রিল ২০১৬ বাঁশখালী হত্যাকাণ্ডের পর ‘ভুল ধারণা ও বাস্তব অবস্থা’ শিরোনামে চট্টগ্রামের স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার অর্ধেক পাতাজুড়ে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে এস আলম গ্রুপ লিখেছিল: ‘যোগ্যতা অনুযায়ী প্রত্যেক পরিবার থেকে চাকরির সুযোগ দেওয়া হবে।’ সেই কর্মসংস্থানের সম্ভাব্য সংখ্যা হিসেবে ওই বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছিল: ‘প্রথম পাঁচ বছরে প্রকল্প এলাকায় কাজ করবে সাত হাজার লোক। প্রকল্প নির্মাণ শেষে স্থায়ী কর্মসংস্থান হবে প্রত্যক্ষভাবে এক হাজার লোকের। পরোক্ষভাবে আরো পাঁচ হাজার লোকের।’ প্রকল্প শেষে স্থানীয় কতজনের মানসম্পন্ন স্থায়ী কর্মসংস্থান হবে সেটা ভবিষ্যতেই দেখা যাবে। তবে, প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলাকালীন যে বেশ কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, সেটা সংবাদপত্রের খবর থেকেই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কেমন সেই কর্মসংস্থান? সেখানে কি শুধু স্থানীয়দেরই কর্মসংস্থান হয়েছে? সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের হাতে নেই; কিন্তু পাঁচজন শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা ও আহত-নিহতের তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলের এবং চীনের নাগরিকদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে। কর্মসংস্থানের সংখ্যা বাদ দিয়ে চলুন দেখা যাক কর্মসংস্থানের ধরন বা কোয়ালিটি কেমন এই ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পে।

এস আলম ও চীনা মালিকানায় নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাঁদপুর থেকে আসা শ্রমিক রুবেলের বক্তব্য থেকেই জানা যাক এখানকার কাজের পরিবেশ কেমন:

‘এখানে বাথরুমের সমস্যা, খাওয়া-দাওয়ার অনেক কষ্ট, থাকার অনেক কষ্ট। আমাদের ফ্যামিলির যেন কষ্ট না-হয়, এই ভেবে আমরা আছি। এখানকার চাল-ভাত খাওয়ার কোনো পরিস্থিতি নেই। আমরা বাইরে যেতে পারি না। আমরা বন্দি অবস্থায় থাকি। আমাদের টয়লেট প্রবলেম, পানির প্রবলেম। ডিউটি করে আসার পর পানি পাই না। কারও কাছে যে এসব বলব–এখানে এমন কোনো লোক নেই।’

অভিযোগগুলো একটি একটি করে খেয়াল করা দরকার:

  • ‘খাওয়া-দাওয়ার কষ্ট।’
  • ‘থাকার অনেক কষ্ট।’
  • ‘এখানকার চাল-ভাত খাওয়ার কোনো পরিস্থিতি নেই।’
  • ‘আমরা বাইরে যেতে পারি না। আমরা বন্দি অবস্থায় থাকি।’
  • ‘আমাদের টয়লেট প্রবলেম, পানির প্রবলেম। ডিউটি করে আসার পর পানি পাই না।’
  • ‘কারও কাছে যে এসব বলব–এখানে এমন কোনো লোক নেই।’

কোনো ভালো কাজের জায়গায় কি মানুষ এরকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়, নাকি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বা বন্দিশিবিরে?

এটা কেমন উন্নয়ন প্রকল্প যার সঙ্গে বন্দিশিবিরের পার্থক্য করা মুশকিল!

‘এখানে বাথরুমের সমস্যা, খাওয়া-দাওয়ার অনেক কষ্ট, থাকার অনেক কষ্ট। আমাদের ফ্যামিলির যেন কষ্ট না-হয়, এই ভেবে আমরা আছি। এখানকার চাল-ভাত খাওয়ার কোনো পরিস্থিতি নেই। আমরা বাইরে যেতে পারি না। আমরা বন্দি অবস্থায় থাকি। আমাদের টয়লেট প্রবলেম, পানির প্রবলেম। ডিউটি করে আসার পর পানি পাই না। কারও কাছে যে এসব বলব–এখানে এমন কোনো লোক নেই।’

এবার আসা যাক শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে। প্রথম আলোর সংবাদ অনুসারে, ‘৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজান মাসে কর্মঘণ্টা ১০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা, শুক্রবার ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৪ ঘণ্টা করাসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের শ্রমিকেরা।’ আর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংবাদ অনুসারে: ‘এই প্রকল্পের শ্রমিকরা সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কাজ করে থাকেন। রোজা শুরু হওয়ার আগ থেকেই শ্রমিকরা ইফতারের জন্য এক ঘণ্টার বিরতি চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা মঞ্জুর করেনি। এছাড়া প্রতিমাসের ১০ তারিখের মধ্যে শ্রমিকরা আগের মাসের বেতন চেয়ে এলেও বেতন পরিশোধে ২০ তারিখেরও বেশি সময় পার হয়ে যাচ্ছিল।’

‘৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজান মাসে কর্মঘণ্টা ১০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা, শুক্রবার ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৪ ঘণ্টা করাসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের শ্রমিকেরা।’

এখান থেকে দুটো দাবি পরিষ্কার:

এক. বেতন সময়মতো প্রদান ও বকেয়া বেতন পরিশোধ।

দুই. রমজান মাসে কর্মঘণ্টা হ্রাস করে ইফতার ও সেহরির সুযোগ করে দেওয়া।

যে এস আলম গ্রুপ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি গ্রুপ অব কোম্পানি ও বহুসংখ্যক ব্যাংক, কারখানা, ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠানের যারা মালিক, বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যে এস আলম গ্রুপ ল্যান্ড লিজ এগ্রিমেন্ট এবং ফাইনান্সিং ডকুমেন্টসের অন্তর্ভুক্ত দলিলাদি রেজিস্ট্রেশনের ওপর আরোপণীয় স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ সরকারের কাছ থেকে ৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকা কর মওকুফ পেয়েছে, সেই এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজের কয়েক হাজার শ্রমিকের বেতন কেন বকেয়া থাকবে? একের পর এক দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয়, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে সেন্ট্রিয়াম স্কয়ার নামের বাণিজ্যিক ভবনের সমস্ত রিটেইল স্পেইস বা খুচরা বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা ১৩ কোটি ৫০ লাখ সিঙ্গাপুর ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮১০ কোটি টাকা (প্রতি সিঙ্গাপুর ডলারের বিনিময়মূল্য ৬০ টাকা ধরে) খরচ করে কিনে ফেলা কিংবা প্রচারণামূলক দান-খয়রাতের ক্ষেত্রে তো এস আলম গ্রুপের টাকার কোনো অভাব দেখা যায় না! তাহলে শ্রমিকদের মজুরি সময়মতো পরিশোধের ক্ষেত্রে টালবাহানা কেন? বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী চীনা কোম্পানি সেপকো-৩-এর অবহেলা, অব্যবস্থাপনা তো রয়েছেই; কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৭০ শতাংশের মালিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেসবের মূল দায় তো এস আলম গ্রুপের।

বাঁশখালীর কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য যে এস আলম গ্রুপ ল্যান্ড লিজ এগ্রিমেন্ট এবং ফাইনান্সিং ডকুমেন্টসের অন্তর্ভুক্ত দলিলাদি রেজিস্ট্রেশনের ওপর আরোপণীয় স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ সরকারের কাছ থেকে ৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকা কর মওকুফ পেয়েছে, সেই এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজের কয়েক হাজার শ্রমিকের বেতন কেন বকেয়া থাকবে? একের পর এক দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয়, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে সেন্ট্রিয়াম স্কয়ার নামের বাণিজ্যিক ভবনের সমস্ত রিটেইল স্পেইস বা খুচরা বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত জায়গা ১৩ কোটি ৫০ লাখ সিঙ্গাপুর ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮১০ কোটি টাকা (প্রতি সিঙ্গাপুর ডলারের বিনিময়মূল্য ৬০ টাকা ধরে) খরচ করে কিনে ফেলা কিংবা প্রচারণামূলক দান-খয়রাতের ক্ষেত্রে তো এস আলম গ্রুপের টাকার কোনো অভাব দেখা যায় না!

রমজান মাসে কর্মঘণ্টা হ্রাস করে ইফতার ও সেহরির সুযোগ করে দেওয়ার দাবিটিও তো করার প্রয়োজন পড়ার কথা নয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের তো স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই কাজটি করার কথা। বরাবরের মতো এবারও গত ৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রমজানে অফিস চলবে সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। মাঝে থাকবে ১৫ মিনিটের বিরতি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঘোষণায় বেসরকারি কারখানা বা নির্মাণকাজের সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করে না-দিলেও বলা হয়: ‘রোজায় ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, রেলওয়ে, হাসপাতাল, শিল্পকারখানা ও জরুরি সেবার দপ্তরগুলো তাদের মতো করে অফিসসূচি নির্ধারণ করবে।’১০ যেহেতু রমজান বিবেচনায় সরকারি, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের সময়সূচি হ্রাস করা হয়েছে, খুব স্বাভাবিকভাবেই কলকারখানা, নির্মাণক্ষেত্র বা অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইফতার, সেহরি ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সময়সূচি হ্রাস ও পুনর্নির্ধারণ করতে হবে–এটাই স্বাভাবিক। কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল নিজ থেকেই সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ করে দেওয়া। সেটা তো তারা করেই-নি, উলটো ন্যায্য দাবি-দাওয়াগুলো সময়মতো মেনে না-নিয়ে বিক্ষোভে রূপান্তরিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং তারপর সেই বিক্ষোভ দমনের নামে পুলিশ নিয়ে শ্রমিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে! অভিযোগ উঠেছে, আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিক্ষোভ মোকাবিলায় পুলিশ গুলি চালানোর আগে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি, লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস কিংবা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা না-করেই সরাসরি গুলি করেছে।১১

উলটো ন্যায্য দাবি-দাওয়াগুলো সময়মতো মেনে না-নিয়ে বিক্ষোভে রূপান্তরিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং তারপর সেই বিক্ষোভ দমনের নামে পুলিশ নিয়ে শ্রমিকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে!

পাঁচ বছর আগের মতোই ২০২১ সালের ঘটনায়ও ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়। এজন্য ১৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখ রাতে সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করে বাঁশখালী থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলা করে পুলিশ–পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদানের অভিযোগে। এতে অজ্ঞাতপরিচয় দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে আসামি করা হয়। আরেকটি মামলা করে এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের পক্ষে চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ, যাতে ২২ জন শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় এক হাজার ৫০ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া প্রকল্পে ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি ও ১০ কোটি টাকার সম্পদ লুটের অভিযোগ আনা হয়। তবে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের পক্ষে কোনো মামলা হয়নি। মামলার পর গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটান বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে থাকা শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। কয়েকজন শ্রমিক বলেন, পুলিশের গুলিতে তাঁদের সহকর্মী মারা গেছেন, উলটো তাঁরাই আতঙ্কে রয়েছেন।১২

পাঁচ বছর আগের মতোই ২০২১ সালের ঘটনায়ও ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়। এজন্য ১৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখ রাতে সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করে বাঁশখালী থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়।

এখানেই শেষ নয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আগে এবং নির্মাণ পর্যায়ে এস আলম ও চীনা প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা ও নিষ্ঠুরতার যে দৃষ্টান্ত দেখা গেল, বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা পর্যায়ে তা কী আকার ধারণ করবে, সে বিষয়ে আশঙ্কা হওয়াই স্বাভাবিক। ৪ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে বাঁশখালী হত্যাকাণ্ডের পর ‘ভুল ধারণা ও বাস্তব অবস্থা’ শিরোনামের বিজ্ঞাপনে এস আলম গ্রুপ দাবি করেছিল:

‘নিয়োগ করা আন্তর্জাতিক পরিবেশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলেছে, ভূগর্ভের পানি, গাছপালা এবং বায়ুমণ্ডলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।’

‘সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।’

‘আমাদের পরিবেশের সঙ্গে সংগতি রেখে কয়লার ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে সর্বাধুনিক মেশিন আমদানি করা হবে।’

বাস্তবে, বৃহদাকার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চারপাশে জনবসতি ও কৃষিজমি থাকায় মানুষ ও প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত সালফার ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের মাধ্যমে বায়ুদূষণ, কয়লা পুড়িয়ে তৈরি দূষণকারী বিষাক্ত ভারী ধাতু সংবলিত ছাইয়ের মাধ্যমে বায়ু ও পানিদূষণ, কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কঠিন ও তরল বর্জ্য বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে, সংরক্ষণ আধার থেকে চুইয়ে ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠের পানিদূষণ ইত্যাদি কারণে সাধারণত জনবসতি ও কৃষিজমির ১৫-২০ কিমি-র মধ্যে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ক্ষতিকর।

বাস্তবে, বৃহদাকার কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চারপাশে জনবসতি ও কৃষিজমি থাকায় মানুষ ও প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত সালফার ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের মাধ্যমে বায়ুদূষণ, কয়লা পুড়িয়ে তৈরি দূষণকারী বিষাক্ত ভারী ধাতু সংবলিত ছাইয়ের মাধ্যমে বায়ু ও পানিদূষণ, কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কঠিন ও তরল বর্জ্য বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে, সংরক্ষণ আধার থেকে চুইয়ে ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠের পানিদূষণ ইত্যাদি কারণে সাধারণত জনবসতি ও কৃষিজমির ১৫-২০ কিমি-র মধ্যে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন ক্ষতিকর।১৩ সমুদ্র উপকূল অঞ্চলে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করলে পরিবেশ বা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় না–এরকম ধারণাও সঠিক নয়। সমুদ্রের যে স্থানে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পানি নির্গত হয়, সে স্থানের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ায় ওই স্থানের মাছের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।১৪ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণপট্টম ও তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অঞ্চলের উপকূলীয় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়:

‘কৃষ্ণপট্টম অঞ্চলে যখন একের পর এক কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বন্দর নির্মিত হতে থাকল, তখন দেখা গেল এই অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানি ক্রমশ লবণাক্ত হতে থাকল। কয়েক বছরের মধ্যে এই পানি একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেল। এখন গ্রামবাসীকে বন্দর কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা ট্যাংকের পানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু এই পানি পান করার উপযুক্ত নয়, তাই অনেক পরিবারকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হচ্ছে।…

কৃষ্ণপট্টম গ্রামের পার্শ্ববর্তী গুমাল ডিব্বা গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির লবণাক্ততার পাশাপাশি মৎস্য চাষাবাদও নষ্ট হয়েছে…

বেশ কয়েকটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এখানে তরল বর্জ্য নির্গত হয়, যার মধ্যে গরম পানিও রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্গত তরল উষ্ণ বর্জ্যের কারণে বিশেষত পোনা মাছ মারা যায়, অন্যদিকে ড্রেজিংয়ের করণে ঘোলা পানি ও অন্যান্য বর্জ্যের কারণে বড় মাছও মারা যায়। এই দুয়ে মিলে তাদের মৎস্য চাষাবাদ প্রায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।

ফলে স্থানীয়রা এখন নিজেদের খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত মাছই পায় না; বাজারে বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া তো দূরের কথা। তাছাড়া জাহাজ আসা-যাওয়ার কারণে মাছ ধরার নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ ধরাও কঠিন হয়ে গেছে… সেইসঙ্গে কয়লার গুঁড়া ও ছাইয়ের সমস্যা তো আছেই–গ্রামের সর্বত্রই এমনকি পানির উৎসগুলোও এই দূষণে আক্রান্ত।’১৫

কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রসৃষ্ট এসব দূষণ মোকাবিলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থাপনা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি থাকা প্রয়োজন, বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি খুব কম প্রতিষ্ঠানেরই তা আছে। বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ-পূর্ব ও নির্মাণকালীন পর্যায়ে জালিয়াতি, প্রতারণা, নিষ্ঠুরতা ও ক্ষমতাচর্চার যে দৃষ্টান্ত এস আলম ও চীনা কোম্পানির কাছ থেকে দেখা গেল, বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা পর্যায়ে সম্ভাব্য দূষণের বিষয়গুলো শিকার করে নিয়ে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ ইত্যাদি তাদের কাছ থেকে আশা করা কঠিন।

তথ্যসূত্র:

১। চট্টগ্রামে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে চুক্তি, প্রথম আলো, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

২। বাঁশখালীতে পুলিশের ‘অসহিষ্ণু আচরণ নিয়ে প্রশ্ন, ১৯ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো

৩। বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, গুলিতে নিহত ৫, ১৭ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো অনলাইন

বাঁশখালীতে গুলিবিদ্ধ দুই শ্রমিকের মৃত্যু: মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭, ২২ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো

বাঁশখালীতে গুলিবিদ্ধ আরো ২ শ্রমিকের মৃত্যু, ২২ এপ্রিল, ২০২১, মানবজমিন

৪। ‘এলোপাতাড়ি গুলি’র অভিযোগ শ্রমিকদের : ‘শ্রমিকরা আক্রমণ করেছিল’ দাবি পুলিশের, ১৭ এপ্রিল ২০২১, ডেইলি স্টার অনলাইন

৫। বাঁশখালী: বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় ২ মামলা, গ্রেফতার আতঙ্ক, ১৮ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো অনলাইন

৬। বাঁশখালীতে সংঘাত: আন্দোলন চলছিল কয়েকদিন ধরেই, ১৭ এপ্রিল ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

৭। এস, আর, ও, নং 49-আইন/২০১৯/০৮.০০.০০০০.০৪০.২২.০১৬.১৮

৮। S Alam Group buys more shares of embattled Islami Bank, ২৭ এপ্রিল, ২০১৮, নিউ এইজ

Social Islami Bank faces ‘hostile’ takeover, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭, ঢাকা ট্রিবিউন

S Alam Group: ‘Govt looking into fund sources’, ২৭ নভেম্বর, ২০১৭, ডেইলিস্টার

ব্যাংক খাতে আধিপত্য বাড়ছে এস আলম গ্রুপের, ২৮ মে ২০১৭, শেয়ার বিজ

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে এবার বড় পরিবর্তন, ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, প্রথম আলো

এস আলম গ্রুপের দখলে যাচ্ছে আরেকটি ব্যাংক, ২১ ডিসেম্বর ২০১৭, আমাদের সময় ডট কম

৯। Bangladeshi group pays S$135m for Centrium Square’s retail space, ০৯ জুলাই ২০১৬, দ্য বিজনেস টাইমস

১০। রোজায় অফিস ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা, ৪ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো অনলাইন

১১। বাঁশখালীতে পুলিশের ‘অসহিষ্ণু আচরণ’ নিয়ে প্রশ্ন, ১৯ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো

১২। বাঁশখালীতে পুলিশের ‘অসহিষ্ণু আচরণ’ নিয়ে প্রশ্ন, ১৯ এপ্রিল ২০২১, প্রথম আলো

১৩। বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প: এস আলম গ্রুপের বিজ্ঞাপনী অপপ্রচার ও প্রকৃত তথ্য, সর্বজনকথা, মে, ২০১৬

১৪। Preparatory Survey on Chittagong Area Coal Fired Power Plant Development Project in Bangladesh

১৫। Breaking the myth behind Coastal Thermal Power Plants

Social Share
  •  
  •  
  • 492
  •  
  •  
  •  
  •  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *