তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের মামলার টাইমলাইন (২০১২-২০২৫): অপরাধী মালিকশ্রেণী কি আইনের উর্ধ্বে?

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনস গার্মেন্টস কারখানায় আগুন পুড়ে মারা যান শতাধিক শ্রমিক। মালিকের অবহেলার কারণে ঘটা এই কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের পর অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মালিক দেলোয়ারসহ আসামীদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয় সেই মামলা আজও চলছে। এর মধ্যে পার হয়ে গেছে ১৩টি বছর! বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সহযোগিতা করার জন্য এই রাষ্ট্র আদৌ কোন দায় অনুভব করে কিনা এই মামলার টাইমলাইনটি সেই প্রশ্নটাকেই সামনে আনে। তাজরীনের এই মামলাটি শুরু থেকেই পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন শ্রমিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত কয়েকজন গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, সংগীত শিল্পী, রাজনৈতিক কর্মী ও চলচ্চিত্রকার। তাদের পক্ষ থেকে এই মামলার টাইমলাইনটি তৈরি করেছেন সায়দিয়া গুলরুখশহীদুল ইসলাম সবুজ

আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে অবস্থিত তাজরীন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছর হল ২৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে। তেরো বছর আগে এই ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে ১১৯ জন শ্রমিক পুড়ে মারা যান। আহত হয় আরও অর্ধশতাধিক শ্রমিক। পরবর্তীতে আহত শ্রমিকদের মধ্যে ৪ জন শারীরিক অসুস্থতাসহ নানা দুঃখকষ্টে মৃত্যুবরণ করেন।

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করার জন্য ঘটনার পরপরই সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে ২টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রতিটি অনুসন্ধানেই মালিক-কর্তৃপক্ষের শ্রমিক নিরাপত্তা বিষয়ে সার্বিক অবহেলার চিত্র তুলে ধরা হয়।

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

সর্বজনকথা ১২তম বর্ষ: ১ম সংখ্যা (নভেম্বর ২০২৫- জানুয়ারি ২০২৬)

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

চা-শ্রমিকদের ভূমি অধিকার কেন নিশ্চিত করা হবে না

মোহন রবিদাস

বাংলাদেশের চা-বাগানগুলোতে কর্মরত ১৫ লক্ষাধিক চা-শ্রমিক একটি বৈচিত্র্যময় ও স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে শুরু করে আজ অবধি তারা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। কিন্তু তাদের মজুরি, জীবনযাত্রার মান ও অধিকার নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন। চা-শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য সমস্যা হলো ভূমি অধিকারের অভাব। এই জনগোষ্ঠীর নিজস্ব জায়গা-জমির কোনো আইনগত দলিল না থাকায় তারা নানাবিধ আর্থ-সামাজিক বঞ্চনা ও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই লেখায় চা-শ্রমিকদের ভূমি অধিকারের গুরুত্ব ও সমস্যা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের চা-বাগানগুলোতে কর্মরত ১৫ লক্ষাধিক চা-শ্রমিক একটি বৈচিত্র্যময় ও স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে শুরু করে আজ অবধি তারা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। কিন্তু তাদের মজুরি, জীবনযাত্রার মান ও অধিকার নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন। চা-শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য সমস্যা হলো ভূমি অধিকারের অভাব। এই জনগোষ্ঠীর নিজস্ব জায়গা-জমির কোনো আইনগত দলিল না থাকায় তারা নানাবিধ আর্থ-সামাজিক বঞ্চনা ও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই লেখায় চা-শ্রমিকদের ভূমি অধিকারের গুরুত্ব ও সমস্যা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

ঐতিহাসিক পটভূমি

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চা-শ্রমিকদের বাংলাদেশের সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রামের চা-বাগানে নিয়ে আসা হয়। তাদেরকে বলা হতো ‘বাগান শ্রমিক’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বংশধররা একই বাগানে কাজ করে আসছেন, কিন্তু জমির মালিকানার স্বীকৃতি পাননি। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ও পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান আমলে তাদেরকে শুধু শ্রমিক হিসেবেই দেখা হতো, স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশ নয়। ফলে তারা ভূমিহীন হয়ে পড়েন। স্বাধীনতার পরও এ ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং রাষ্ট্রীয়করণের পর বাগানগুলো সরকারি মালিকানায় এলেও শ্রমিকদের ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তী সময়ে বেসরকারিকরণের মাধ্যমে বাগানগুলো আবার ব্যক্তিগত মালিকানায় ফিরে গেলেও শ্রমিকদের অবস্থান অপরিবর্তিত থেকে যায়।

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস সনদ (চার্টার) চাই

মাহতাব উদ্দীন আহমেদ

দীর্ঘদিন পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার অনুকূল গণতান্ত্রিক পরিবর্তন নিশ্চিত করার জন্য যেসব বিষয়ে শিক্ষক শিক্ষর্থীদের ঐকমত্য ও কার্যকর পদক্ষেপ অপরিহার্য সেগুলো নিয়ে বিস্তর আলোচনা দরকার যাতে সমাজে এর পক্ষে প্রবল জনমত তৈরি হয়। এই লেখায় গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বিষয় সনাক্ত করা হয়েছে যেগুলো নিয়ে সবার অংশগ্রহণে ‘ক্যাম্পাস সনদ’ তৈরি হতে পারে। গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা এই লেখা অনলাইনে আগাম প্রকাশ করছি। 

এই মুহূর্তে ডাকসু, জাকসু, রাকসু নিয়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ তিন বিশ্ববিদ্যালয় সরগরম রয়েছে। এই শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন হওয়াটা একটা ইতিবাচক পরিবর্তন। তবে অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়ে গেলেও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর ক্যাম্পাসে শুধুমাত্র ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব ও আওয়ামী লীগের দলীয় লেজুড় প্রশাসনের পরিবর্তন হওয়া ছাড়া পরিস্থিতির আর কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের পরে শিক্ষার্থীদের আশা কী ছিল? তারা চেয়েছিলেন একটি নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস, একটি সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব মুক্ত ক্যাম্পাস, সেটা তারা এখনও পাননি। তারা চেয়েছিলেন একটি দলীয় প্রশাসনমুক্ত ক্যাম্পাস, সেটাও তারা এখনও পাননি। তারা চেয়েছিলেন একটি শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস, একটি গবেষণাবান্ধব ক্যাম্পাস কিংবা পড়াশোনাবান্ধব ক্যাম্পাস, সর্বোপরি একটি অধ্যয়নের উপযোগী রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগতভাবে স্বাস্থ্যকর ক্যাম্পাস– এর কোনোটাই গত এক বছরে শিক্ষার্থীরা পাননি।

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •