কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে গণপ্রতিরোধ: ঘটনাপ্রবাহ এবং কারণ অনুসন্ধান

সালমান সিদ্দিকী

আজি কারার সারাদেহে মুক্তিক্রন্দন

ধ্বনিছে হা হাস্বরে ছিঁড়িতে বন্ধন
—নজরুল

কোটা সংস্কারের আন্দোলন এখন আর শুধু নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ নেই। বন্দী মানুষ মুক্তির আশায় রাস্তায় নেমে পড়েছে। কে নেই এই মিছিলে? ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষক, কারখানার শ্রমিক, হোটেল বয়, রিকশা চালক সবাই আজ রাস্তায়। ছাত্ররা জানে তারা ভালো নেই। ক্যাম্পাসগুলোতে ক্ষমতাসীনদের কাছে প্রতিদিনকার পরাজিত জীবন! পড়াশোনা শেষ করলেও চাকরি নেই,ভবিষ্যত নেই। মানুষ জানে, তারা দু’ মুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। বাজারে জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া।  ভোটাধিকার তো আগেই হরণ করা হয়েছে। কথা বলার অধিকার নেই। বিরোধী দল-মতকে দমন করা হচ্ছে। চলছে গুম-খুন, নির্যাতন। সরকার উন্নয়নের বাণী প্রচার করছে কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে উন্নতির বিন্দুমাত্র ছাপ নেই। মানুষ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে, শাসক আওয়ামীলীগ দেশটাকে লুটপাট আর জুলুমের রাজত্বে পরিণত করেছে। মানুষ মুক্তি পিয়াসায় ছটফট করছে! এই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়টি বোঝার চেষ্টায় এই লেখায় এই আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরে এই আন্দোলনের ঐতিহাসিক গণ আন্দোলনে পরিণত হবার কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে।

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

সর্বজনকথার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাজ গবেষণা প্রশিক্ষণ কর্মশালা

সর্বজনকথার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী সমাজ গবেষণা প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও গবেষণা পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সর্বজনকথা। আগ্রহীদের যোগদানের জন্য আহ্বান রইল।
 
২য় ব্যাচ (অনলাইন ব্যাচ) এর রেজিস্ট্রেশন শুরু হল।
২য় ব্যাচটি (অনলাইন ব্যাচ) শুধুমাত্র যারা ঢাকার বাইরে থাকেন তাদের জন্য।

কর্মশালার শিরোনাম: “জনস্বার্থের গবেষণা: বিষয় ও পদ্ধতি”

* প্রত্যেক ব্যাচের জন্য ৩টি কর্মশালা থাকবে।
* ২য় ব্যাচ (অনলাইন ব্যাচ) এর ৩টি কর্মশালার তারিখ: ২৩ মার্চ, ৩০মার্চ ও ৬ এপ্রিল ২০২৪।
* ২য় ব্যাচ (অনলাইন ব্যাচ) এর অনলাইনে যোগদানের লিংক ও সময় যারা রেজিস্ট্রেশন করবেন তাদের জানিয়ে দেয়া হবে।
* যারা ঢাকার বাইরে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে প্রধানত অনলাইনে কর্মশালা হবে। তবে যদি কোন জেলায় বা অঞ্চলে ২০-২৫ জন আগ্রহী ব্যক্তি পাওয়া যায় তাহলে সেই জেলা বা অঞ্চলে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হবে।
* তিনটি কর্মশালাতেই যারা অংশ নিবেন তাদের সনদপত্র দেয়া হবে।
* ১৮ বছরের উপর যেকোন ব্যক্তি অংশ নিতে পারবেন।
* ২০ মার্চ ২০২৪ এর মধ্যে ২য় ব্যাচ (অনলাইন ব্যাচ) এর রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
* রেজিস্ট্রেশন ফি প্রযোজ্য।

* কর্মশালায় অংশগ্রহণের রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পাওয়া যাবে এই লিংকে: https://forms.gle/rJrMvq4RYGDce5eG7

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য গবেষণা কর্মসূচী:

* প্রত্যেক ব্যাচের ৩টি কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পৃথকভাবে গবেষণা প্রস্তাব লেখার প্রতিযোগিতা হবে।
* নির্বাচিত গবেষণা প্রস্তাবগুলোর জন্য সর্বজনকথার পক্ষ থেকে তত্ত্ববধায়ক থাকবেন।
* প্রত্যেক নির্বাচিত গবেষক তার গবেষণা সমাপ্ত করার জন্য তিন মাস সময় পাবেন।
* সমাপ্তকৃত গবেষণা প্রতিবেদন তারা সর্বজনকথায় প্রকাশ করার সুযোগ পাবেন।
* নভেম্বরে জনস্বার্থের গবেষকদের সম্মেলনে নির্বাচিতরা তাদের নিজ নিজ গবেষণা উপস্থাপন করবেন।
* বিচারকদের নির্বাচিত কয়েকটি গবেষণার জন্য থাকবে পুরস্কার।
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

ডেঙ্গু জ্বর এবং করণীয়

ডা. মো. হারুন-অর-রশিদ

ঢাকা শহর সহ সারাদেশে ডেঙ্গুর আক্রমণ বাড়ছে। এবছর আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার আশংকাজনক। পরিস্থিতি অনুযায়ী সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের যথাযথ উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এই রোগের উৎস, সতর্কতা ও করণীয় বিষয়ে এই লেখায় সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে।

১৯৬০ সালে প্রথম ঢাকা শহরে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তখন একে ‘ঢাকা ফিবার’ নামে চিহ্নিত করা হয়, কারণ তখন সঠিক রোগ নির্ণয় করা যায়নি। তারপর বহু বছর তার আর লক্ষণ দেখা যায়নি। ২০০০ সালে আবার এর সংক্রমণ দেখা যায়, তখন ঢাকায় ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। ঐ সময় আমরা কিছুটা অপ্রস্তুত ছিলাম। ফলে বিনা চিকিৎসায় বা ভুল চিকিৎসায় বেশ কিছু মৃত্যু ঘটে। এর কতগুলো হয়েছিল আমাদের অজ্ঞতার জন্য। যেমন অনেকেই জ্বর কমাতে ডাইক্লোফেনাক বা এই জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করেছেন। এই ধরনের ঔষধ নিলে বেশি রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকে। এখন জ্বর হলে এই জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা প্রায় হয়না বললেই চলে। ফলে অধিক রক্তপাতে মৃত্যুর সম্ভাবনা কমেছে।

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন, ছবি: শহিদুল আলম

[১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ‘যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা’ প্রণয়নের তাগিদ তৈরি হয়। কারণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এটা স্পষ্ট হয়েছিল যে, বাংলাদেশে আইন আদালত এবিষয়ে খুবই অস্বচ্ছ অবস্থায় আছে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবিষয়ে কোনো বিধিবিধান নাই, ধারণাগত দিক থেকেও সমাজ এ নিয়ে খুবই নাজুক অবস্থায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক প্রথম এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই নীতিমালা সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করা হয়। এরপর বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ্ই নীতিমালার একটি খসড়া প্রণয়ন করা হয়। ২০০০ সালের দিকে এই খসড়া চ’ড়ান্ত করার পর বিভিন্ন বিভাগের ১৭ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করে এই নীতিমালা গ্রহণের জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন। শিক্ষার্থী-শিক্ষক সমন্বয়ে গঠিত ‘৮ই মার্চ পর্ষদ’ থেকে তা প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর পর প্রতিবছর ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মিছিল করে এই খসড়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে জমা দেয়া হতো।  বহু আলোচনা, বিতর্ক ও প্রচারের পর এক পর্যায়ে জাবি শিক্ষক সমিতি এই নীতিমালা গ্রহণ করে এবং তা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়। ২০০৬-৭ সালে আরেকটি যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের মুখে সকলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি থেকে আগের নীতিমালা পরিবর্ধন পরিমার্জন করে, শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ সকলের সাথে ব্যাপক আলোচনা মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে তা চ’ড়ান্ত করা হয়। ১৮ই মার্চ ২০০৭ সালে তা উপাচার্যের কাছে জমা দেয়া হয়। এরও বেশ কিছুদিন পর  বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তা গ্রহণ করে।

দেশজুড়ে যৌন নিপীড়ন বেড়ে যাবার পরিপ্রেক্ষিতে এরকম নীতিমালার প্রয়োজন তখন অনেকেই অনুভব করতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, মহিলা আইনজীবী সমিতি এ নিয়ে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সারাদেশে যৌন নিপীড়নের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি রিট আবেদনের সূত্রে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২০০৯ সালের ১৪ই মে এই নীতিমালা গ্রহণে একটি আদেশ জারি করে। কিন্তু এরপর বহু বছর পার হলেও, বহু প্রতিষ্ঠান এই নীতিমালা এখনও গ্রহণ করেনি। আসলে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সবধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানায় এই নীতিমালা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা উচিৎ। শুধু তাই নয় সকল রাজনৈতিক দল, শ্রমিক, ছাত্র, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠনেও এই নীতিমালা থাকা জরুরী।

বস্তুত যে নীতিমালা দলিল থেকে পরে অনেকেই কাজ করেছেন তা এখানে পুনপ্রকাশ করা হল। যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে সজাগ অবস্থান তৈরি এবং এর বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণে এই দলিল সহায়ক হবে বলে আমরা আশা করি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন নিজ নিজ অবস্থা অনুযায়ী এই দলিল পরিমার্জন করে নিজেদের নীতিমালা দাঁড় করাতে পারবেন।]

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •