সিজারিয়ান ডেলিভারি: স্বাস্থ্যসুবিধা যখন স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ
আতিয়া ফেরদৌসী
বাংলাদেশে সিজারিয়ান ডেলিভারির সংখ্যা গত কয়েক দশকে বহুগুণ বেড়েছে। সন্তান জন্মদানের সময় সন্তান ও মায়ের সুস্থতা ও জীবন রক্ষায় সিজারিয়ান ডেলিভারি অনেক ক্ষেত্রেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার যেহেতু এটি একটি বড় ধরনের অস্ত্রোপচার পদ্ধতি, অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান সেকশন মায়ের ও সন্তানের জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে। সিজারিয়ান ডেলিভারি অপেক্ষাকৃত ব্যয়বহুল। সুতরাং, নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য বাড়তি খরচ অন্য যে কোনো চিকিৎসার মতোই কষ্টসাধ্য। বাংলাদেশে এই সিজারিয়ান সেকশন যে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে তা যে কোনো সাধারণ নাগরিকের জন্য কোনো অজানা তথ্য নয়। ঠিক কত হারে তা বেড়েছে, এই বাড়তি হার কী অর্থ বহন করতে পারে এবং অন্যান্য দেশে এই হারটি কেমন–এসব বিষয় নিয়েই এই লেখা।
বিভিন্ন বই-পুস্তকে সিজারিয়ান ডেলিভারির উল্লেখ পাওয়া যায় একদম প্রাচীনকাল থেকেই। অনেকেই বিশ্বাস করেন, সিজারিয়ান শব্দটি তৈরি হয়েছে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের জন্মকে কেন্দ্র করে। যদিও এর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। এটি যে কেবলই মিথ, তার বড় প্রমাণ– জুলিয়াস সিজারের মা অরেলিয়া দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে ছিলেন। প্রাচীনকালে সিজারিয়ান ডেলিভারি করা হতো একমাত্র মৃত কিংবা মৃতপ্রায় মায়ের শরীরে, যাতে মায়ের মৃত্যু হলেও শিশু সন্তানটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়। খুব সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এই প্যাটার্ন চর্চা চলেছে উনিশ শতক পর্যন্ত যখন প্রথম অ্যানেস্থেশিয়া বা অবচেতন করার প্রক্রিয়া আবিষ্কৃত হয়। এরপর প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিংশ শতাব্দীতে এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করার মূল উদ্দেশ্য বদলে যায়। তখন সিজারিয়ান ডেলিভারির মূল উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায় মাতৃমৃত্যু হার এবং সেইসঙ্গে শিশুমৃত্যুর হার কমানো। যখন স্বাভাবিক জন্মপ্রক্রিয়া কোনো মায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন সিজারিয়ান সেকশন ডেলিভারি ডাক্তারদের অন্যতম অবলম্বন।
কিন্তু এই প্রক্রিয়ার রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। American College of Obstetricians and Gynecologists (ACOG) যে কোনো নারীর ক্ষেত্রে দুটির বেশি সিজারিয়ান ডেলিভারি না করার পরামর্শ দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বৈশ্বিক সিজারিয়ান সেকশনের হার ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকা উচিত। তবে এটিও বলা হয়েছে যে, মা কিংবা শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি সবার আগে বিবেচ্য। সিজারিয়ান হার কম রাখার উদ্দেশ্যে সিজারিয়ান ডেলিভারির সুযোগ থেকে কাউকে যাতে বঞ্চিত করা না হয়, সে ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিষ্কার মত দিয়েছে।
তথ্যের উৎস: বাংলাদেশে সিজারিয়ান ডেলিভারি সংক্রান্ত বিষয়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য সহজে পাওয়া যায় বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ (বিডিএইচ) জরিপ থেকে। এই জরিপ পরিচালনা করে থাকে ইউএসএআইডি। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রশাসন এই প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এখন বন্ধ। প্রায় পাঁচ বছর অন্তর এই জরিপ পরিচালিত হতো। সবশেষ জরিপটি হয়েছিল ২০২২ সালে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের সাম্প্রতিক জরিপ (২০২৩) এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মাতৃমৃত্যু সংক্রান্ত ২০১৬ সালের জরিপে সিজারিয়ান ডেলিভারি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান সিজারিয়ান ডেলিভারির হার
বাংলাদেশে সিজারিয়ান ডেলিভারির সুযোগকে প্রাথমিকভাবে সুচিকিৎসার একটি সূচক হিসেবে দেখা হতো। অন্যসব দেশের মতোই মাতৃমৃত্যু হার কমাতে ও নবজাতকের সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সিজারিয়ান ডেলিভারির সুযোগ পাওয়া যে কোনো পরিবারের জন্য একটি বিশেষ সুবিধা এবং অধিকার। কিন্তু এর ব্যবহার এত দ্রুত বেড়েছে যে আজকাল তা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান ডেলিভারি মায়ের প্রাথমিক শারীরিক কষ্ট ছাড়াও পরবর্তী জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে শিশুর জন্য তা ক্ষতিকর, পরিবারের জন্য বাড়তি অর্থনৈতিক চাপের কারণ।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৫০.৭ শতাংশ ডেলিভারি সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় হচ্ছে। গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উচ্চহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের ২০২৩ সালের স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকসের (যা ২০২৪-এ প্রকাশিত হয়) জরিপ থেকে আমরা দেখতে পাই, বর্তমানে বাংলাদেশের ৫০.৭ শতাংশ ডেলিভারি সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় হচ্ছে। গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উচ্চহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিডিএইচ-এর ১৯৯৯–২০২২ পর্যন্ত জরিপে এই ক্রমবর্ধমান হারের চিত্র উঠে এসেছে।
সূত্র: বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ১৯৯৯-২০২২
মাত্র পাঁচ বছরে (২০১৭-২০২২) এই সিজারিয়ান ডেলিভারি হার বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। ১৯৯৯ সালে যেখানে মাত্র ৩ শতাংশ ডেলিভারি সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় হয়েছে, সেখানে ২০২২-এ তা দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে। ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্যমতে, ২০২৩-এ তা ৫০.৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, দেশের অর্ধেকের বেশি শিশু সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় জন্ম নিচ্ছে। এটি যে কোনো অর্থেই চিন্তার। যদি সত্যিই এই প্রতিটি সিজারিয়ান মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে করা হয়ে থাকে তারমানে দেশের মাতৃস্বাস্থ্যের পরিস্থিতি এক কথায় ভয়াবহ। আর যদি তা না হয়, তারমানে প্রচুর অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান ডেলিভারি হচ্ছে, যা অসংখ্য মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।
আরও কিছু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দ্বিতীয় ধারণাটির সপক্ষে বেশি যুক্তি পাওয়া যায়।
বিডিএইচের তথ্যানুসারে, পারিবারিক আয় ও সিজারিয়ান ডেলিভারির মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। দরিদ্র পরিবারে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার কম। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই হার বাড়তে থাকে।
তথ্য: বিডিএইচ সার্ভে-২০২২
উপরের চিত্র থেকে দেখা যায়, উচ্চ আয়ের পরিবারে সিজারিয়ান শিশু জন্মের হার নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে প্রায় তিন গুণ। যেহেতু সিজারিয়ান একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া এবং সবার ক্ষেত্রে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হয় না, তাই পারিবারিক আয়ের সঙ্গে সিজারিয়ানের সমানুপাতিক সম্পর্ক স্পষ্টত বিদ্যমান। অথচ এমনটি হওয়া স্বাভাবিক নয়। এই প্রক্রিয়া বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ধারক হওয়ার কথা মায়ের স্বাস্থ্য বা স্বাস্থ্যগত জটিলতা। এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই যে বিত্তশীল পরিবারের মায়ের স্বাস্থ্য নিম্নবিত্ত পরিবারের মায়ের থেকে তিন গুণ বেশি নাজুক। বরং উল্টোটাই সত্য। তার মানে নিম্নবিত্ত অনেক পরিবার মায়ের প্রয়োজন সত্ত্বেও সিজারিয়ানের সুবিধা পাচ্ছে না, অন্যদিকে উচ্চবিত্ত পরিবারে অপ্রয়োজনে মায়ের সিজারিয়ান হচ্ছে। কোনোটিই মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য কাম্য নয়।
উচ্চ আয়ের পরিবারে সিজারিয়ান শিশু জন্মের হার নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে প্রায় তিন গুণ। যেহেতু সিজারিয়ান একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া এবং সবার ক্ষেত্রে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হয় না, তাই পারিবারিক আয়ের সঙ্গে সিজারিয়ানের সমানুপাতিক সম্পর্ক স্পষ্টত বিদ্যমান। অথচ এমনটি হওয়া স্বাভাবিক নয়।
একইভাবে হাসপাতালের ধরনের সঙ্গে সিজারিয়ানের একটি অস্বাভাবিক সম্পর্ক আমরা দেখতে পাই। সরকারি এবং এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে প্রতি ১০০টি ডেলিভারির মধ্যে ৩৫টি সিজারিয়ান হলেও প্রাইভেট বা বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এই সংখ্যাটি ১০০-তে ৮৩।
তথ্য: বিডিএইচ রিপোর্ট ২০২২
সরকারি এবং এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে প্রতি ১০০টি ডেলিভারির মধ্যে ৩৫টি সিজারিয়ান হলেও প্রাইভেট বা বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এই সংখ্যাটি ১০০-তে ৮৩।
এলাকাভেদে সিজারিয়ান ডেলিভারির হারে পার্থক্য আছে। ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনায় ৫০ শতাংশ ডেলিভারি সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় হয়েছে, আবার সিলেটে এই হার মাত্র ২৬ শতাংশ। যদিও ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনার পারিবারিক আয় অপেক্ষাকৃত বেশি, কিন্তু অর্থনৈতিক কারণকেই একমাত্র কারণ হিসেবে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। চট্টগ্রামের গড় পারিবারিক আয়ও অপেক্ষাকৃত বেশি, কিন্তু এখানে সিজারিয়ানের হার মাত্র ৩১ শতাংশ। তাই আরও তথ্য-উপাত্ত ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় ঠিক কী কারণে কোন কোন বিভাগে সিজারিয়ান বেশি হচ্ছে।
তথ্য: বিডিএইচ সার্ভে-২০২২
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহসহ কয়েকটি জেলায় সিজারিয়ানের হার প্রায় ৮০ শতাংশ।
সিজারিয়ানের খরচ: দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ২০২২-এর সেপ্টেম্বরের একটি রিপোর্টে বলা হয়, গড়ে সাধারণ ডেলিভারির খরচ ১ হাজার ৩৭৯ টাকা, যেখানে সিজারিয়ানের খরচ গড়ে ২০ হাজার ৬২ টাকা। সরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ানের গড় খরচ ১৩ হাজার ৬২২ টাকা, যেখানে বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকে খরচ ২১ হাজার ৫০৬ টাকা। সিজারিয়ান যেহেতু একটি বড় ধরনের চিকিৎসা প্রক্রিয়া এবং ডেলিভারির পর মায়ের শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ হতে স্বাভাবিক ডেলিভারির প্রায় দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ সময় লেগে থাকে। প্রসূতির সেবা এবং জন্মদান-পরবর্তী মা ও শিশুর যত্নে যে পরিমাণ ব্যয় তার সঠিক হিসাব যদিও করা কঠিন, তবে নিশ্চিতভাবেই তা সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে অন্তত কয়েক গুণ বেশি।
অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনামূলক অবস্থান: যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-এ যুক্তরাষ্ট্রে গড় সিজারিয়ান ডেলিভারির হার ছিল ৩০.৯৯ শতাংশ এবং এই হার গত প্রায় ২০ বছরে তেমন বদলায়নি।
মনে রাখা দরকার, যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাব্যবস্থা ভীষণভাবে বাজারমুখী এবং চিকিৎসা ব্যয় সারা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। ফলে হাসপাতাল বা ডাক্তারদের পক্ষ থেকে অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রতি পক্ষপাত থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু একইসঙ্গে রোগীর ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি যেহেতু যে কোনো ‘অপ্রয়োজনীয়’ ব্যয়ভার বহন করতে অনিচ্ছুক, ডাক্তার বা রোগীর কারো পক্ষেই অপ্রয়োজনে সিজারিয়ানের দিকে ঝোঁকার কোনো সুযোগ নেই। ২০০৫ সালে যেখানে সিজারিয়ানের হার ছিল ২৯ শতাংশ, ২০২২-এ এসে তা দাঁড়িয়েছে ৩০.৯৯ শতাংশে।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় কোনো তদারকি বা নজরদারি জারি থাকলে এ দেশের সিজারিয়ান হার যে কমে যেত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে ২০২২ সালে এই হার যথাক্রমে ২১.৫ ও ২২.৩ শতাংশ। উভয় দেশেই ১৯৯১-৯২ সালে এই হার ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। ২০২২-এ এসে তা অনেক গুণ বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনায় এই হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কম। বাংলাদেশের এই অস্বাভাবিক উচ্চহার যে কোনো অর্থেই দুশ্চিন্তার।
বাংলাদেশে সিজারিয়ান ডেলিভারির ঠিক কত শতাংশ ঐচ্ছিক, সে ব্যাপারে তেমন সরাসরি কোনো তথ্য/জরিপ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ২০১৭-১৮-এর বিডিএইচ তথ্য ব্যবহার করে প্রকাশিত একটি গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, এক-তৃতীয়াংশ সিজারিয়ান ডেলিভারি ঐচ্ছিক এবং দুই-তৃতীয়াংশ জরুরি পরিস্থিতিতে করা। কিন্তু এই গবেষণায় ঐচ্ছিক সিজারিয়ানের জন্য যে মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে তা তর্কসাপেক্ষ। জরিপে যেসব মায়ের সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত প্রসব বেদনা ওঠার আগেই নেওয়া হয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে ঐচ্ছিক ধরা হয়েছে, আর উল্টোটা হলে তা জরুরি প্রয়োজন। কিন্তু নানারকম কারণে প্রসব বেদনার আগে থেকেই ডাক্তাররা সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মায়ের উচ্চ ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ বা এ ধরনের কোনো জটিলতা থাকলে সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত অনেক আগে থেকেই নেওয়া হতে পারে এবং এটিকে ঐচ্ছিক বলার তেমন সুযোগ নেই। কারণ, তা মায়ের সুস্থতা ও জীবন রক্ষায় জরুরি।
মোটকথা, সিজারিয়ান ডেলিভারি বিষয়টি আরও বেশি তথ্য, গবেষণা এবং নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে অনেক বেশি আলোচনার দাবি রাখে।
আতিয়া ফেরদৌসী: সিনিয়র বাজেট এ্যানালিস্ট। সিটি অফ নরফোক, ভার্জিনিয়া, ইউএস। ইমেইল: chaity.srsp@gmail.com
তথ্যসূত্র:
১) বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ১৯৯৯-২০২২, The DHS Program – Available Datasets
২) T Muhammad, et al. Prevalence and predictors of elective and emergency caesarean delivery among reproductive-aged women in Bangladesh: evidence from demographic and health survey, 2017–18. BMC Pregnancy and Childbirth.
৩) Centers for Disease Control and Prevention (CDC), Stats of the States-Cesarean Delivery Rates, 2022, cdc.gov/nchs/pressroom/sosmap/cesarean_births/cesareans.htm
৪) SMA Abidi. Application of the Robson Classification in Assessing Cesarean 2 Section Rates: An Audit of a Tertiary Care Hospital’s Gynecology 3 Department in Karachi, Pakistan. 2025. National Institute of Health.
৫) দ্য ডেইলি স্টার, মার্চ ২৪, ২০২৪, 50.7pc deliveries now C-sections, https://www.thedailystar.net/news/bangladesh/news/507pc-deliveries-now-c-sections-3574306#:~:text=While%2041.4%20percent%20of%20all,Bureau%20of%20Statistics%2C%20unveiled%20yesterday.