মুক্তদৈর্ঘ্য সিনেমার আখ্যান

চলচ্চিত্র

মুক্তদৈর্ঘ্য সিনেমার আখ্যান

মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন

আমাদের প্রয়োজন কম নিখুঁত কিন্তু মুক্ত সিনেমা।- জোনাস মেকাস।

“শেষ পর্যন্ত, সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায় কারণ তারা তাদের রাজনীতিবিদদের কথা শোনে, তাদের কবিদের কথা নয়।” – জোনাস মেকাস।

 “অধিকাংশ সিনেমা কাজ করে এভাবে, ‘তথ্য, কাট, তথ্য, কাট, তথ্য, কাট’ এবং তাদের কাছে তথ্য কেবল গল্প। আমার জন্য, [তথ্য] অনেক কিছু – আমি চলচ্চিত্র, সময়, স্থান এবং আরো অনেক কিছু জড়িত করার চেষ্টা করি – যা আমাদের জীবনের একটি অংশ কিন্তু সরাসরি গল্প বলার সাথে সংযুক্ত নয়। এবং আমি একইভাবে কাজ করছি – ‘তথ্য, কাট, তথ্য, কাট’ তবে আমার কাছে তথ্য কেবল গল্প নয়। – বেলা তার।

তারকোভস্কি আমার চেয়ে অনেক নিষ্পাপ। তার সিনেমায় বৃষ্টি মানুষকে শুদ্ধ করে। আমার সিনেমায় [বৃষ্টি] কেবল কাদা তৈরি করে।- বেলা তার।

ভূমিকা

সাধারণত নানান দৈর্ঘ্যের সিনেমা তৈরি হয় সারা পৃথিবী জুড়ে কিন্তু নানানসব কারণে থিয়েটারে দেখানো হয় প্রায় একই দৈর্ঘ্যের সিনেমা, যার দৈর্ঘ্য বর্তমানকালে অধিকাংশ সিনেমার ক্ষেত্রে ৮০ থেকে ১২০ মিনিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ । এ সময়কাল নির্ধারিত হয় নানাসব কারণের জন্য যার অন্যতম প্রধান একটা কারণ হচ্ছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা, অর্থাৎ সময়কাল কতটা হলে বাণিজ্যিকভাবে বেশি লাভবান হওয়া যাবে সেদিক বেশি বিবেচনায় রাখা হয়। এবং সাধারণত “সিনেমা” বা “সিনেমার আলোচনা” “উৎসব” “পুরষ্কার” ইত্যাদি ইত্যাদি এসব সিনেমাকেন্দ্রিক হয়ে থাকে। এসব সিনেমা যেমন অধিক মনোযোগ পায় ঠিক সেরকমভাবেই অধিক বিনিয়োগও পেয়ে থাকে, ফলে নির্মাতাদের একটা নানানমুখী চাপ সহজাতভাবেই চলে আসে যার অন্যতম প্রধান একটা বিষয় হল ভিন্ন ভিন্ন “নির্ধারিত সময়” এর ভিতরেই পুরো গল্প শেষ করার।ফলত এসব সিনেমাতে সাধারণত নির্মানের ঢং বা গল্পের ক্ষেত্রে বা গল্প বলার, সময়কালের ধরনে তেমন নিরীক্ষাপ্রবণতা থাকেনা। আর এসব সিনেমার বাইরে যে সকল সিনেমা তৈরি হয়ে থাকে সেসব সিনেমার সব সিনেমাতেই যে খুব নিরীক্ষা প্রবণতা থাকে বা নিরীক্ষার জন্যই তৈরি, এমন নয়। কিন্তু নানান দিক থেকে একটা নিরীক্ষাপ্রবণতা থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব সিনেমায়, যেমন বিষয়,অজনপ্রিয় মতবাদ ও জীবনবোধের আলাপ, অপ্রচলিত, পরীক্ষামূলক নির্মাণ ঢং, রাজনৈতিক আলাপএবং এসব সিনেমায় অনেকসময় “সময়কাল” বা “দৈর্ঘ্য” ও হতে পারে একটা নিরীক্ষা বা পরীক্ষার বিষয়। দুনিয়ায় সিনেমা হয় এমন প্রায় সব জায়গাতেই তৈরি হয়েছে ও হচ্ছে নানান দৈর্ঘ্যের সিনেমা। কোনো কোনো সিনেমা হয়তো ১ মিনিটের আবার কোনো সিনেমা হয়তো ৩/৪ ঘন্টার আবার কোনো সিনেমা হয়তো ৭/৮ ঘন্টা জুড়ে। এসব নির্মাতাদের ভিতরে যেমন রয়েছে প্রখ্যাত বড় নির্মাতাগণ তেমনই রয়েছে নতুন সদ্য চলচ্চিত্র পাঠশালা থেকে বের হওয়া বা পড়ছে বা এসবের বাইরের আনকোরা কেউ। এসব নানান বিবেচনায় এই ভিন্ন ভিন্ন “নির্ধারিত” সময়ের বাইরের সিনেমাসমুহকে একযোগে “মুক্তদৈর্ঘ্য” সিনেমা বলার একটা প্রবণতা বজায় রয়েছে (আবার সিনেমার মাঝে যে সিনেমাগুলোর সময়কাল ৪০ মিনিটের ভিতরে সেসব সিনেমাকে একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর নিয়ম অনুযায়ী স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাও বলা হয় আর এরচেয়ে বেশি সময়ের সিনেমাকে বলা হয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে পৃথিবীর অধিকাংশ পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ৭০ থেকে ২১০ মিনিটের মধ্যে। এবং সমসাময়িক অনেক উৎসবে এখন মধ্যদৈর্ঘ্যের (৩০ থেকে ৫০ মিনিট) সিনেমার প্রচলন দেখা যায় বা ৩০ থেকে ৫০ মিনিটের সিনেমাকে মধ্য দৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে অভিহিত করার প্রবণতা দেখা যায়। এরকম আলাপ ধরে আলোচনা করা হয়েছে সম্প্রতিকালের তৈমুর গাদেরী পরিচালিত “বৃক্ষদের পিতা” (১ মিনিট, ২০১৯ (?), ইরান), অ্যালেক্সিস ল্যাংলোইস পরিচালিত “ডরোথির অপদেবতারা” (২৯ মিনিট, ২০২১, ফ্রান্স),  এবং আপিচাটপং ভিরসাথকুল পরিচালিত “নীল” (১২ মিনিট, ২০১৮, ফ্রান্স) ও ফিল স্যাম্পসন এবং অলি উইলিয়ামস (ফিল এবং অলি) এর “কৃষ্ণ গহ্বর” (৩ মিনিট, ২০০৮, ইংল্যান্ড)সিনেমাগুলোকে।

মুক্তদৈর্ঘ্যের সিনেমা

আলোচিত চার সিনেমার দৈর্ঘ্য এক মিনিট থেকে শুরু করে আধঘণ্টার ভিতরে কিন্তু এসবের বাইরে গড় দৈর্ঘ্যের বাইরের সিনেমাদের সহজে এ তালিকাভুক্ত করতে পারি। গড় দৈর্ঘ্যের বাইরের অনেক আলোচিত, জনপ্রিয়(?) এরকম কিছু সিনেমার নাম বলতে হলে শুরুতে বলা দরকার হাঙ্গেরিয়ান লেখক লাসজলো ক্রাসনাহোরকাই এর সমসাময়িক ধ্রুপদী উপন্যাস “শয়তান ট্যাঙ্গো” অবলম্বনে আরেক হাঙ্গেরিয়ান পরিচালক বেলা তার এবং তার “শয়তান ট্যাঙ্গো” (১৯৯৪) সিনেমার কথা, যার দৈর্ঘ্য ৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। মহাকাব্যিক এ সিনেমার প্রতিটি শটের গড় দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ মিনিট করে। এবং এ সিনেমার অভিনয়, সঙ্গীত, নির্মাণরীতি, দর্শন, লোকেশনসহ সবকিছু গড় মধ্য মেধা, মধ্যবিত্ত ছাপোষা পুঁজিকেন্দ্রিক মানসিকতার বাইরের। এছাড়া যার কথা বিশেষ করে উল্লেখ করা দরকার, তিনি হলেন ফিলিপাইনের নির্মাতা লাভ ডিয়াজ। তার নির্মিত কয়েকটি সিনেমা এবং তার দৈর্ঘ্য পর্যায়ক্রমিকভাবে উল্লেখ করছি। ওয়েস্ট সাইড এভিনিউ, ৩১৫ মিনিট (২০০১), একটি ফিলিপিনো পরিবারের বিবর্তন, ৬৪৭ মিনিট (২০০৪), হেরেমিয়াস (একটি বই: গিরগিটি রাজকুমারীর পুরাণ), ৫১৯ মিনিট (২০০৬), এনক্যান্টোসের দেশে মৃত্যু, ৫৪১ মিনিট (২০০৭), বিষাদময়তা, ৪৪৭ মিনিট (২০০৮) জন্ম দেয়ার শতক, ৩৫৯ মিনিট (২০১১), ফ্লোরেনটিনা হুবাল্ডো, সি টি ই, ৩৬৭ মিনিট (২০১২),নর্তে, ইতিহাসের শেষ,২৫০ মিনিট (২০১৩), আগে কি ছিল থেকে, ৩৩৯ মিনিট (২০১৪), দুঃখজনক রহস্যের জন্য একটি ঘুমপাড়ানি গান, ৪৮৯ মিনিট (২০১৬), যে নারী চলে গেছেন, ২২৯ মিনিট (২০১৬), শয়তানের ঋতু, ২৩৪ মিনিট (২০১৮), নিবৃত্তি, ২৮৩ মিনিট (২০১৯), হা এর ইতিহাস, ২৭৩ মিনিট (২০২১), ফিলিপিনো সহিংসতার একটি গল্প, ৪০৯ মিনিট (২০২২) ইত্যাদি ইত্যাদি সিনেমাদের মুক্তদৈর্ঘ্যের সিনেমা হিসেবে অভিহিত করা যায়।এছাড়া সিনেমার গোড়ার দিকের আবেল গাসের “চাকা” ৪১৩ মিনিট, ২০১৯ সালের সংস্করণ, “নেপোলিয়ন” ৩৩০ মিনিট (১৯২৭)। ক্লদ ল্যাঞ্জম্যান এর ১৯৮৫ সালের “সোয়া”, ৫৬৬ মিনিট, অয়াং বিংয়ের “টাই সি কুইঃ ট্রাকের পশ্চিম”, ৫৫১ মিনিট (২০০২) বা শিবেন্দ্র সিং ডুঙ্গারপুরের “চেকমেট: জিরি মেনজেলের সন্ধানে” ৪৪৮ মিনিট (২০১৮)। যদিও এখানে উল্লিখিত সিনেমার বাইরে পরীক্ষামূলক সিনেমাতে আরো বেশি পরিমাণে দৈর্ঘ্য নিয়ে নিরীক্ষা করা হয়েছে বা একই সিনেমা ভিন্ন ভিন্ন পর্বে মুক্তি দেয়া হয়েছে বা ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণ রয়েছে,এসব সিনেমার আলোচনা এখানে করা হয়নি। যেমন উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের সিনেমা “আমরা একটি সিনেমা বানাবো” এর দৈর্ঘ্য ১২৬০ মিনিট বা ২১ ঘণ্টা (২০১৯)। এবং আশরাফ শিশির নির্মিত এ সিনেমা ৮ পর্বে বিভক্ত প্রতি পর্বের গড় দৈর্ঘ্য ১৫৮ মিনিট করে।

উপরে উল্লিখিত লম্বা দৈর্ঘ্যের সিনেমাগুলোর সূত্র ধরে মুক্তদৈর্ঘ্য বিষয়ক আলাপের সরলীকরণ করে বলা যায়, কোনো নির্ধারিত সময়কাল বা দৈর্ঘ্য ভাবনায় না রেখে বিষয় অনুযায়ী যে সময় প্রয়োজন সে অনুযায়ী সিনেমা ভাবনা অনেক বেশি প্রয়োজনীয় এবং ঠিকঠাক। যেমন এ আলোচনার সিনেমাগুলো কিন্তু প্রথাগত অর্থে “স্বল্পদৈর্ঘ্য” সিনেমা কিন্তু এদের “মুক্তদৈর্ঘ্য” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এদের বিষয় আর বিশ্লেষণ কিন্তু সম্পূর্ণ। এদের টেনে হিঁচড়ে বড় করার প্রয়োজন নেই, এরা বিন্দুতেই সিন্ধু। আর “দৈর্ঘ্য” নিয়ে নিরীক্ষামূলক যেসব বড় বড় দৈর্ঘ্যের সিনেমা নির্মিত হয়েছে সে বিষয়ক আলাপ ঠিকঠাক উপলদ্ধির জন্য স্বল্প দৈর্ঘ্যের নিরীক্ষামূলক সিনেমার আলাপ করা যেতে পারে, “দৈর্ঘ্য” এবং “বিষয়” কি করে একে অন্যের পরিপূরক সে বিষয়ক ধারনা খানিক বিস্তার করার জন্য। এবং আলোচিত মুক্তদৈর্ঘ্যের এ সিনেমাগুলোর প্রাপ্তির সহজলভ্যতা অন্যতম আরেক কারণ। সিনেমাগুলোর দৈর্ঘ্যে স্বল্প হলেও এদের বক্তব্য আর দর্শন, বিষয় বা নির্মাণ বৈচিত্র্যতা কিন্তু গতানুগতিক প্রচলিত গড় দৈর্ঘ্যের সিনেমার চেয়ে ঢের শক্তিশালী। আলোচিত সিনেমাগুলো বানানো কাহিনীর ভিতর দিয়ে আমাদের বাস্তবতায় পৌঁছাতে সাহায্য করে, বুদ্ধির বিকাশে সহযোগিতা করে, যদিও তারা দৈর্ঘ্যে স্বল্প থেকে স্বল্পতর। মুক্তদৈর্ঘ্যে বিষয়ক আলাপের বিস্তার করার স্থান থেকে এখানে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের এ চার সিনেমা নিয়ে পর্যালোচনা করা হল।

“আমাদের সামনে দুটি বিকল্প থেকে একটি পছন্দ বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে হয় একযোগে উদ্যোগ নিতে হবে, নয়তো একযোগে আত্মহত্যা করতে হবে।”

  -আন্তোনিও গুতেরেস (মহাসচিব, জাতিসঙ্ঘ) । প্রথম আলো (অনলাইন), ১৮ জুলাই, ২০২২।

বৃক্ষদের পিতা (২০১৯) | নির্মাতাঃ তৈমুর গাদেরী | ১ মিনিট | ইরান

সিনেমার দুনিয়ায় ইরানের নির্মাতাদের সিনেমা বেশ আলোচনার বিষয়। এসবের বিষয়, অভিনয়, শিল্পী ও কলাকুশলী এবং আরো নানা কারণেই। আলোচিত সিনেমা “বৃক্ষদের পিতা” ইরানের একজন তরুণ নির্মাতা তৈমুর গাদেরী নির্মিত ১ মিনিটের এক সিনেমা, যা নির্মাণ করা হয়েছে মোবাইল ফোনে ধারন করে। এ সিনেমায় বয়স্ক এক ব্যক্তি প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে সে বোতলে পানি ভরে যেসব বৃক্ষের/গাছের পানি দরকার সেসব গাছে পানির বোতল ফুটো করে ঝুলিয়ে দেন ফলে এসব গাছেরা/বৃক্ষেরা তাদের প্রয়োজনীয় পানি পায় শুষ্কতার সময়ে। এটুকুই এ সিনেমার গল্প কিন্তু এ সিনেমার ফটোগ্রাফি এবং ইরানের ভূপ্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী মিলে দারুণ এক কাব্যিক অনুভূতি তৈরি করে। যদিও সামগ্রিক নির্মাণে রয়েছে খানিক অপরিপক্বতার ছাপ আর সব ছাপিয়ে নজর কেড়ে নেয় এ সিনেমার একমাত্র মানুষ (আর গল্পের ঢং, ফটোগ্রাফির দরুন ইরানের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু এসব নিজেরাও হয়ে ওঠে একেক চরিত্র) অভিনেতার অভিনয়।

বোতলে পানি ভরে যেসব বৃক্ষের/গাছের পানি দরকার সেসব গাছে পানির বোতল ফুটো করে ঝুলিয়ে দেন ফলে এসব গাছেরা/বৃক্ষেরা তাদের প্রয়োজনীয় পানি পায় শুষ্কতার সময়ে। এটুকুই এ সিনেমার গল্প কিন্তু এ সিনেমার ফটোগ্রাফি এবং ইরানের ভূপ্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী মিলে দারুণ এক কাব্যিক অনুভূতি তৈরি করে।

ইরানের সিনেমার সাধারণ যে বৈশিষ্ট্য সে হল এসব সিনেমায় প্রচুর অপেশাদার শিল্পী মনে রাখার মতো অভিনয় করেছেন, কেউ কেউ একবার আবার কেউ কেউ হয়তো কয়েকবার। এসব শিল্পীদের সহজাত ভঙ্গী বা সংলাপ বলার ঢং সবসময়েই একধরনের নতুনতর সংযোজন, কারণ এসব অভিনয় শিল্পীদের নির্বাচন করা হয় তার চারিত্রিক ঢং, পেশা, বয়স, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় ভাবনায় রেখে আর অধিকাংশ সময়ে প্রথাগত সংলাপ ও চিত্রনাট্যের ব্যবহার না করে এসব অপেশাদার অভিনেতাদের পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়ে তাদের মত করে করতে বলা হয়। ফলাফল যে ইতিবাচক তা ইরানি নির্মাতাদের সিনেমা দেখেই বোঝা যায়।ইরানের সিনেমা তার ব্যাপক বিষয় বৈচিত্র্য ও চিত্রনাট্যের সরল অথচ গভীর দার্শনিক, রাজনৈতিক কুশলতার জন্যও সুবিদিত আর “বৃক্ষদের পিতা” সিনেমাতেও ইরানি সিনেমার এসকল সৌরভ বিদ্যমান। তার সাথে যোগ হয়েছে পরিবেশ বিষয়ক নতুনতর সংবেদনশীল মনভঙ্গি ও মনোযোগ যার ফলে খুব সহজেই ইরানের প্রান্তিক অঞ্চলের এক বয়স্ক মানুষের গাছের প্রতি সংবেদনশীলতা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এর ফলাফল ও সম্পর্কিত তর্কে, আচরণে, রাজনীতিতে যোগ করে এক সংবেদনশীল কাব্যিক আলাপ, এবং মাত্র এক মিনিটের ভিতর।

বাংলাদেশে এলজিবিটি সম্প্রদায়-এবং সাধারণভাবে বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে কট্টরপন্থী ইসলামপন্থীদের আক্রমণ এবং সরকারের সেন্সরশিপের মাধ্যমে।

  -রাদ রাহমান/রহমান । ভাইস (অনলাইন) ২ জুন, ২০১৬।

ডরোথির অপদেবতারা | নির্মাতাঃ অ্যালেক্সিস ল্যাংলোইস | ২৯ মিনিট | ২০২১ | ফ্রান্স

ফরাসি সিনেমার বহুস্বর জগৎ বিদিত, নন্দিত এবং আলোচিত। আলোচিত সিনেমা “ডরোথির অপদেবতারা” তরুণ চলচ্চিত্রকার অ্যালেক্সিস ল্যাংলোইস এর নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা কেন্দ্র করে তৈরি করা এক সৃজনশীল সিনেমা যেখানে ডরোথি নামের এক লেসবিয়ান চলচ্চিত্রকার তার স্বপ্নের সিনেমার চিত্রনাট্য সম্পূর্ণ করতে থাকে বিয়ার খেতে খেতে কিন্তু তার এ খুশির মেজাজ সহসাই ধ্বংস করে দেয় তার প্রযোজক ফোনে খারাপ খবর জানিয়ে। তার সিনেমা বানানোর টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই কারণ তার গল্পে অনেক বেশি বেশি পুরুষতন্ত্র বিরোধিতা, অনেক বেশি বেশি লেসবিয়ানগিরি, প্রায় হার্ডকোর আরকি! তো এসব বানানোর জন্য কে টাকা খরচ করতে চায়, তার চেয়ে সে যদি খানিক নরম-গরম একটা গল্প ফাঁদে যা খানিক শ্যাম-কুল দুপক্ষই রাখা যায় তবে টাকা পাওয়া যেতে পারে। আর এরকম সিনেমা বানালে ক্ষতি কি, উৎসব, পুরস্কার, আর্থিক হিসাব ইত্যাদি আছে না? সে হতাশ হয়ে পড়ে। মায়ের ফোনেও তার সাড়া দিতে ইচ্ছে করেনা। মায়ের কথার খোঁটা খেতে খেতে এসব ছুঁড়ে সে তার প্রিয় সিরিজ দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ে। তার দুঃস্বপ্নে ফিরে আসে বাস্তবের সব চরিত্রেরা আরো দানবীয় এবং আরো সব মানসিক পীড়নকারী আচরণ নিয়ে।

প্রচুর গোলাপি রংয়ের ছড়াছড়ি সারা সিনেমা জুড়ে, রয়েছে লেসবিয়ান বাইকার গ্যাং এবং পুরুষতন্ত্র পুজারিদের মাথা কেটে গোলাপি সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলার মতো দৃশ্য, যেখানে এসবের পরেই শুরু হয় তাদের রোমাঞ্চ। কমেডি, সিরিয়াস, কুইয়ারসব বিষয়ের ছড়াছড়ি এবং জনপ্রিয় মিউজিক ভিডিওর মতো করে বানানো এ ছবি। ছবির সঙ্গীত নাচময়, ক্রেডিট টাইটেলে যথেষ্ট পরিমাণে গোলাপি এবং গোলাপি রঙের সমাহার এবং এখানেও নাচময় সঙ্গীত। সবার উচ্চকিত অভিনয় কুইয়ার সিনেমার আরো সব এরকম মেধাবী নির্মাণ ও নির্মাতাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, বিশেষত জন ওয়াটার্স ও ডিভাইনের মিলিত কাজের কথা। কমেডির সাথে সাথেই উচ্চারিত হতে থাকে রূপান্তরকামি মানুষের বিভিন্ন রাজনৈতিক আলাপ, ভয়, হতাশা, স্বপ্ন, আশার কথা। অনেক সংহত নির্মাণ, মিউজিক ভিডিওর নির্মাণধরনের আদলে বানানো এক সম্পূর্ণ রঙ্গিন কুইয়ার সিনেমা।

“সাধারণ মানুষ যখন ঘুমায় তখন আমার মন দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।”

  -উৎস অজানা, ইন্টারনেট থেকে খুঁজে পাওয়া।

নীল | নির্মাতাঃ আপিচাটপং ভিরসাথকুল | ১২ মিনিট | ২০১৮ | ফ্রান্স

বর্তমান যারা শিল্পধরনের সিনেমা বানান তাদের ভিতরে থাইল্যান্ডের নির্মাতা আপিচাটপং/আপিচাতপং ভিরসাথকুল অন্যতম প্রধান। তার সিনেমাতে একই সাথে কয়েক জগতের ঘটনা ও চরিত্রেরা একই সাথে, একই সময়ে বাস করে, কখনো তারা পরস্পর পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, কখনো পারেনা, আবার কখনো তারা নিজেরাও অপরের সাথে যোগাযোগ করতে চায়না বা যোগাযোগের প্রয়োজন বোধ করেনা। ভিরাসাথকুলের “নীল” সিনেমার বিষয় “ঘুম”,আর ভিরাসাথকুল নিজেও একজন অনিদ্রারোগী ফলে ঘুম নিয়ে তার মনোযোগ সহজাত এবং তার সিনেমাতে ঘুম, অনিদ্রা, স্বপ্ন, স্মৃতি, বিষণ্ণতা, দুঃস্বপ্ন, যোগাযোগহীনতা ইত্যাদি বিষয় বারবার ঘুরে আসে (তার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা “মেমোরিয়া” তেও ঘুম, অনিদ্রা, স্মৃতি বিষয় হিসেবে ফিরে এসেছে (১৩৬ মিনিট, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশ)।

“নীল” সিনেমাতে একজন মাঝবয়সী মহিলা এক খাটের উপরে একটা নীল কম্বল জড়িয়ে শুয়ে থাকে কিন্তু বোঝা যায় সে অনিদ্রায় ভুগছে আর ঘুম হচ্ছেনা। তার পিছনে একের পরে এক বায়স্কোপের পর্দার মতন পর্দায় নানান ধরনের দৃশ্যাবলীর পরিবর্তন হয় একের পরে এক ঠিক বায়স্কোপের মতো করে। সে এপাশ ওপাশ করতে থাকে। বনের ভিতরের রাতের শব্দ ধরে, ধীরে ধীরে দেখা যায় মঞ্চস্থ মহিলার নীল কম্বলে বুকের জায়গা থেকে আগুন জ্বলে উঠছে। মনে হয় তার বুকের ভিতরের আগুন দেখছি আমরা, যে আগুন সচরাচর দেখা যায়না, আমরা দেখাতে পারিনা, দেখতে পারিনা। ভিরাসাথকুলের সিনেমায় আমরা সে আগুন দেখি।

বর্তমানে সিনেমা এবং ভিডিও আর্টের বা আর্টের ভিতরকার ব্যবধান ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে যে কজন নির্মাতার কাজে ভিরাসাথকুল তাদের অন্যতম। আলোচিত সিনেমাতেও এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, এ সিনেমা যেমন প্রখ্যাত সব উৎসবে দেখানো হয়েছে একইভাবে প্রদর্শিত হয়েছে বড় বড় শিল্প উৎসবে। তার এরূপ পরীক্ষাপ্রবণতা তার নির্মিত অন্যান্য সিনেমার দিকে নজর দিলে আরো পরিষ্কার হয়। একই আলোচনায় সদ্য প্রয়াত আব্বাস কিয়ারস্তামির (২২জুন ১৯৪০ – ৪জুলাই ২০১৬) কিছু কিছু কাজের কথা স্মরণ করা যেতে পারে, যেমন, ফাইভডেডিকেটেড টু ওজু(২০০৩), ২৪ ফ্রেমস (২০১৭) ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব সিনেমায় সাধারণত প্রথাগত কোনো গল্প বা চরিত্র থাকেনা বা কাহিনীর কোনো ঘনঘটাও দেখানো হয়না পক্ষান্তরে থাকে বিশেষ ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখানো কোনো বিশেষ আবেগ বা ভাবনার বিবরণ বা ব্যাখ্যা। নির্মাণরীতিতেও থাকে দুর্দান্ত ভিন্নতা ও নতুনত্ব।   

বর্তমানে সিনেমা এবং ভিডিও আর্টের বা আর্টের ভিতরকার ব্যবধান ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে যে কজন নির্মাতার কাজে ভিরাসাথকুল তাদের অন্যতম।

পৃথিবী প্রত্যেক মানুষের চাহিদা পূর্ণ করার জন্য যথেষ্ট কিন্তু প্রত্যেক মানুষের লোভ নয়।-মহাত্মা গান্ধী।   

কৃষ্ণ গহ্বর । নির্মাতাঃ ফিল স্যাম্পসন এবং অলি উইলিয়ামস (ফিল এবং অলি) । ৩ মিনিট। ২০০৮। ইংল্যান্ড।

লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু

আমাদের সাধারণ খেটে খাওয়া জীবন যাপনে প্রায় প্রতিজনের নুন আনতে যেয়ে পান্তা ফুরায়। আমাদের লাভের গুড় মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের ঝোলায় যায় আর আমরা স্বপ্নে গাজর মুলা ঝুলতে দেখি। এভাবে দিন কাটে, এভাবে জীবন কাটে আমাদের। লন্ডনের এরকম সাধারণ একজন খেটে খাওয়া অফিস কর্মির এক সন্ধ্যার কাহিনী দেখানো হয় “কৃষ্ণ গহ্বর” সিনেমায়। অফিসের বসেরা যথারীতি আগে ভাগে চলে গেছে তাদের সুবিধামতো কিন্তু সবচেয়ে কম বেতন আর কম সুবিধাভোগী একজনের থাকতে হয়েছে কারণ স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী যে কাজগুলো করা দরকার সে ছাড়া আর কেউ নেই কাজগুলো করার! সে খুব ক্লান্ত হয়ে কাজ গোছাচ্ছে আর সাথে কফি খেতে খেতে ফটোকপি করছে। কিন্তু বিধিবাম! ফটোকপি মেশিনে খানিক সমস্যা দেখা দেয়, সে বিতৃষ্ণা নিয়ে বেশ জোরে চাপে, মেশিন চালু হয় কিন্তু বের হয় এক আজব কাগজ, যার মাঝখানে কালো এক বৃত্ত, সে কিছু বুঝতে পারেনা, মেশিন ভালো করে দেখে, কোনো সমস্যা নেই। সে কাগজটা পাশে রাখে, চিন্তা করতে করতে শেষ হয়ে যাওয়া কফির ওয়ান টাইম গ্লাস পাশের বিনে রাখতে যায় কিন্তু ভুল করে সেই কালো বৃত্তের কাগজের উপরে রাখে। ঘটে এক আজব কাহিনী, কাগজের উপরে গ্লাসটা না থেকে কালো বৃত্ত দিয়ে নিচে পড়ে যায়! সে খুব অবাক হয়। তারপর ক্ষুধার জ্বালায় ভুগতে থাকা সে, খুশি আর আশঙ্কা নিয়ে ভেন্ডিং মেশিনের কাছে যায়, চকলেট বের করে আনন্দ নিয়ে খেতে থাকে এবং ভাবতে ভাবতে সে বের করে ফেলে, এভাবে সে সিন্ধুক খুলে কাড়ি কাড়ি টাকা বের করে নিতে পারে, হয়ে যেতে পারে ধনী। সে সিন্ধুকের মুখে কাগজটা কোনমতে লাগিয়ে টাকা বের করতে করতে একসময় আরো টাকার জন্য ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং কোনমতে লাগানো কাগজটা খুলে পড়ে যায়। সে সিন্ধুকের ভিতরে আটকা পড়ে দাপাতে থাকে, সারা অফিসে আর কেউ নেই এবং পরেরদিন সকালের আগে কারো আসার সম্ভাবনা নেই, নিশ্চিত মৃত্যু। সিন্ধুকের বাইরে পরিহাসের মত পড়ে রয়েছে কাড়ি কাড়ি টাকা। শেষ, তিন মিনিটের সিনেমা “কৃষ্ণ গহ্বর”।

খানিক বিশদ করে এবার এ সিনেমাকে ভাবা যায়, আমরা মানুষেরা পৃথিবীকে যেভাবে ব্যাবহার করছি, যে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছি প্রতি মুহূর্তে পরিবেশ ধ্বংস করে, তার ফলাফল কি হবে? মানুষের বাসযোগ্য আর কোনো গ্রহ নেই, অতি ধনিদের অতি লোভের পুঁজিকেন্দ্রিক দর্শনের ফাঁদে পা দিয়ে সবাই কিন্তু পৃথিবী ধ্বংসের আয়োজনে খেয়ে না খেয়ে ব্যস্ত। লোভের ফাঁদে পা দিয়ে পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং অন্যসব প্রজাতিকে চিরতরে বিলুপ্ত করে শুধু মানুষ প্রজনন আর পুঁজিকেন্দ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার চাকর হিসেবে কাজ করছে! আর এসবের ফলে অতিরিক্ত বিলাসিতায় মগ্ন পৃথিবীর মাত্র এক শতাংশ মানুষ! ভাবনা নেই তারাও মরবে, কিন্তু আপনি আমি কি বুঝে কি করে যাচ্ছি? কার জন্য করছি? আমরা কেন আমাদের জীবন যাপন করছিনা? সমাজ, পরিবার, সংস্কৃতি, জনপ্রিয় প্রবণতার দাসত্ব কেন করছি? কতটুকু লাভ, কতটুকু সুবিধার জন্য করছি? এসব লাভ ও সুবিধা আসলেই আমাদের কোনো কাজে লাগছে?

আমরা মানুষেরা পৃথিবীকে যেভাবে ব্যাবহার করছি, যে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছি প্রতি মুহূর্তে পরিবেশ ধ্বংস করে, তার ফলাফল কি হবে? মানুষের বাসযোগ্য আর কোনো গ্রহ নেই, অতি ধনিদের অতি লোভের পুঁজিকেন্দ্রিক দর্শনের ফাঁদে পা দিয়ে সবাই কিন্তু পৃথিবী ধ্বংসের আয়োজনে খেয়ে না খেয়ে ব্যস্ত।

মুক্ত হোক সময় | মুক্ত হোক সিনেমা | যুক্ত হোক প্রাণ

সারা পৃথিবী জুড়ে জনপ্রিয় সিনেমার ভূগোলে রয়েছে প্রধানত খুব প্রথাগত আদর্শের জয়গান, মেধাহীন নির্মাণ, একই গল্পের, একই ফর্মুলার চর্বিত চর্বণ ইত্যাকার নানান মুনাফামুখী ব্যাবসা নির্ভর প্রকল্পের উৎপাদন এবং পুনঃউৎপাদন, নতুন বোতলে পুরনো সেই কাসুন্দি।মূললক্ষ্য “মধ্যবিত্ত” আর তথাকথিত “প্রগতিশীল” শ্রেণির মনযোগ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আর কিছু অর্থনৈতিক সুবিধা। সাথে মুখরক্ষার খাতিরে যতটুকু না হলে নয় ততটুকু নিরীক্ষাপ্রবণ সিনেমার এবং নিরীক্ষাপ্রবণতার পৃষ্ঠপোষণ। পক্ষান্তরে তুলনামূলক কম বাজেটে, অপেশাদার দল নিয়ে তৈরি “স্বাধীন সিনেমা”, “আভাগার্দ সিনেমা” বা “পরীক্ষামূলক সিনেমা” প্রাণ প্রকৃতি ও মানুষের স্বাধীনতার কথা, পরিবেশের কথা, রাজনীতি, যৌনতা ইত্যাকার নানান অপ্রথাগত, অজনপ্রিয় মতবাদের এক উৎসব। যেখানে সিনেমা নির্মানের ঢং, বিষয়, উপস্থাপনের ধরন সব কিছুতেই প্রধানত নজর রাখা হয় তার আদর্শগত, শিল্পগত ও অন্যান্য সৌকর্যের একটা স্বাধীন, নিজস্ব বয়ান তৈরি করতে। যেখানে খুব সহজেই মুনাফা, বাণিজ্য, জনপ্রিয়তা, খ্যাতি এসব গৌণ। স্বাভাবিকভাবে এসব সিনেমাতে একটা বিষয় ঠিকঠাক উপস্থাপনের জন্য যে সময় দরকার, যেভাবে দরকার, সে সময়ের ভিতরে, সে ভাবেই ভাবনার উপস্থাপন করা হয় ফলে এসব সিনেমার দৈর্ঘ্য কখনো কম আবার কখনো বেশি সহজভাবে, নির্মাতার দৃষ্টিভঙ্গি স্বাধীনভাবে প্রকাশে যত সময় দরকার, যেমন নির্মান ঢং দরকার, তত সময়ে, তেমন নির্মাণ রীতিতেই এখানে ভাবনার প্রকাশ করা হয়। ফলে সাধারণত মুক্তদৈর্ঘ্যের সিনেমাতেই নানান সব নিরীক্ষাপ্রবণ, নতুন ধরনের কাজের, অপ্রথাগত, গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অজনপ্রিয় আলাপের সমাহার দেখা যায়। যা মুক্ত ভাবনার বিকাশে সহায়ক। মুক্ত দৈর্ঘ্যের সিনেমার সাধারণ এ চারিত্রিক প্রবণতার সম্ভাবনার ফলাফল তৈরি করতে পারে নতুন ইতিবাচক কোনোকিছুর সুচনা যা হতে পারে আরো বেশি অন্তর্ভুক্তিমুলক, পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই।

মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন: চলচ্চিত্রকার, চলচ্চিত্র সমালোচক। ইমেইল: raiparasadardi@gmail.com

দোহাইঃ

https://www.prothomalo.com/world/7yowi673cc

https://www.vice.com/en/article/9b89v3/how-bangladeshs-lgbt-community-is-dealing-with-threats-and-machete-attacks

https://en.wikipedia.org/wiki/Short_film

https://en.wikipedia.org/wiki/Feature_film

https://en.wikipedia.org/wiki/Lav_Diaz

https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_longest_films

https://en.wikipedia.org/wiki/Amra_Ekta_Cinema_Banabo

বৃক্ষদের পিতা (২০১৯(?))/The Father of Trees (2019(?))

https://www.youtube.com/watch?v=HTX229VQCQ8&ab_channel=CARAVAN

https://www.youtube.com/watch?v=CMj5IvCJEGM&ab_channel=MobileFilmFestival

https://www.instagram.com/teymourghaderi_/?hl=en

https://interculturalleaders.org/author/teymour-ghaderi/

https://www.imdb.com/name/nm10392833/

ডরোথির অপদেবতারা(২০২১)/Les démons de Dorothy (2021)

https://www.imdb.com/title/tt14972414/

https://www.youtube.com/watch?v=MoHICMgUDs8&ab_channel=AlexisLANGLOIS

https://mubi.com/films/the-demons-of-dorothy

https://variety.com/2022/film/global/the-demons-of-dorothy-unifrance-myfrenchfilmfestival-1235155109/

https://en.wikipedia.org/wiki/John_Waters

https://en.wikipedia.org/wiki/Divine_(performer)

নীল (২০১৮)/ Blue (2018)

https://www.imdb.com/title/tt9104810/

https://mubi.com/films/blue-2018

https://www.artforum.com/print/reviews/201908/geng-jianyi-liang-shaoji-apichatpong-weerasethakul-80901

https://mubi.com/notebook/posts/toronto-correspondences-5-present-portraits-grand-illusions

http://www.sensesofcinema.com/2018/festival-reports/leadership-transitions-critical-voices-and-experimental-cinema-at-the-2018-toronto-international-film-festival/

https://en.wikipedia.org/wiki/Abbas_Kiarostami#Feature_films

কৃষ্ণ গহ্বর (২০০৮)/ The Black Hole (2008)

https://www.youtube.com/watch?v=P5_Msrdg3Hk

Social Share
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •