অ্যাঞ্জেলা ডেভিসের সাথে কথোপকথন-৭

অ্যাঞ্জেলা ডেভিসের সাথে কথোপকথন-৭

নারীবাদ এবং কারা-বিলোপ: একবিংশ শতাব্দীর জন্য তত্ত্ব ও অনুশীলন

অনুবাদ: ফাতেমা বেগম

মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদী লেখক ও অধিকার আন্দোলনে সক্রিয় ব্যক্তিত্ব অ্যাঞ্জেলা ডেভিসের সাথে লেখক এ্যাক্টিভিস্ট ফ্রাংক বারাত দীর্ঘ আলাপ করেছেন, তাঁর বক্তৃতা সংকলিত করেছেন। এতে মার্কিন সমাজে বৈষম্য, বর্ণবাদী আক্রমণ, ফিলিস্তিনি জনগণ সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের লড়াই নিয়ে অ্যাঞ্জেলা ডেভিসের বক্তব্য পাওয়া যায়। এই সংকলন গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়, নাম: Freedom is a Constant Struggle: Ferguson, Palestine and the Foundations of a Movement|  এর অনুবাদ ধারাবাহিকভাবে সর্বজনকথায় প্রকাশিত হচ্ছে। এবারে সপ্তম পর্ব যেখানে অ্যাঞ্জেলা ডেভিসের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব জেন্ডার অ্যান্ড সেক্সুয়ালিটি’র সহযোগিতায় ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব রেইস, পলিটিকস অ্যান্ড কালচার’ আয়োজিত বার্ষিক পাবলিক লেকচার হিসেবে দেওয়া বক্তৃতা উপস্থাপন করা হয়েছে।

দীর্ঘ সময় পর এই প্রথম শিকাগোয় এত লম্বা সময় কাটালাম। সম্পূর্ণ চার দিন কাটিয়েছি। গতকাল থেকে মনে হচ্ছে শিকাগো যেন আমার সবসময়ের চেনা একটি শহর। মঙ্গল ও বুধবার ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দুটি দিন! [হাসি] গতকাল শৈত্যপ্রবাহ ফিরে আসার আগ পর্যন্ত ভাবতে শুরু করেছিলাম, ‘আমি শিকাগোয় বসবাস করতে পারি!’ যাই হোক, আমি শিকাগোকে ভালোবাসি।

সংগ্রামের ইতিহাসসমৃদ্ধ এই শহরকে সব ঋতুতেই অপূর্ব লাগে। এটি হে মার্কেট শহিদদের শহর, বিপ্লবী শ্রমিক সংগঠনের শহর, ফ্রেড হ্যাম্পটন এবং মার্ক ক্লার্ককে পুলিশি হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের শহর। উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে পুয়ের্তো রিকান বিপ্লবের শহর। এটি অভিবাসন অধিকার রক্ষাকারী সংগ্রামের শহর। এবং অবশ্যই শিকাগো টিচার্স ইউনিয়নের শহর।

সংগ্রামের ইতিহাসসমৃদ্ধ এই শহরকে সব ঋতুতেই অপূর্ব লাগে। এটি হে মার্কেট শহিদদের শহর, বিপ্লবী শ্রমিক সংগঠনের শহর, ফ্রেড হ্যাম্পটন এবং মার্ক ক্লার্ককে পুলিশি হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের শহর। উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে পুয়ের্তো রিকান বিপ্লবের শহর। এটি অভিবাসন অধিকার রক্ষাকারী সংগ্রামের শহর। এবং অবশ্যই শিকাগো টিচার্স ইউনিয়নের শহর।

কয়েক বছর আগে আসসাটা শাকুরের সমর্থনে শিকাগোয় জাতীয় আন্দোলনের পুনর্জাগরণ ঘটেছিল। আমি স্মরণ করছি লিসা ব্রক, ডেরিক কুপার, ট্রেসি ম্যাথিউস, বেথ ই. রিচি, ক্যাথি কোহেন এবং অন্যদের যারা আসসাটা শাকুরের অধিকার এবং জীবন রক্ষার জন্য পুনরায় প্রতিবাদ করেছিলেন। গতকাল ২ মে ২০১৩ তারিখ, নিউ জার্সি স্টেইট পুলিশের গুলিতে আহত হওয়া এবং রাজ্য পুলিশ সদস্য ওয়ের্নার ফয়ের্সটারকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার চল্লিশ বছর পূর্তির দিনে আসসাটা শাকুর সর্বপ্রথম নারী হিসেবে এফবিআইয়ের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকাভুক্ত হলেন।

প্রশ্ন হলো, বিশেষ করে বোস্টন ম্যারাথনের দুঃখজনক বোমা নিক্ষেপের ঘটনার ঠিক পরপরই কেন একজন নারীকে সন্ত্রাসীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো? সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেন একটি কৃষ্ণাঙ্গ মুখকেই দেখানো দরকার ছিল, বিশেষত বোস্টন বোমা হামলার বিষয়ে প্রাথমিক খবরে দোষী হিসেবে যখন একজন কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ বা কৃষ্ণাঙ্গ না-হলেও হুডি-পরা অশ্বেতাঙ্গ মানুষকে দেখানো হয়েছিল? সেটা কি ট্রাভিয়ন মার্টিনের ভূত ছিল?

এফবিআই তাঁকে যেভাবে উপস্থাপন করেছে, আসসাটা তেমন কোনো হুমকি নন যে, তিনি বোস্টনে বোমা হামলার জন্য ওত পেতে থাকবেন। আসসাটা মোটেই কোনো সন্ত্রাসী ছিলেন না। মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে সহিংসতা না-করা সত্ত্বেও এফবিআই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকার একমাত্র নারী হিসেবে আসসাটার নাম অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাই তাদের এই সিদ্ধান্তের অন্তর্নিহিত কারণ সম্পর্কে সবার মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হওয়া উচিত।

আমি বিশেষভাবে আসসাটার প্রতি সহানুভূতিশীল। কারণ, তেতাল্লিশ বছর আগে আমাকেও এফবিআইয়ের শীর্ষ দশ পলাতকের তালিকায় রাখা হয়েছিল। আপনারা কেউ কেউ হয়তো আমার বিচার প্রক্রিয়ার ওপর নতুন তথ্যচিত্রটি দেখে থাকবেন। আমাকে গ্রেফতার করার জন্য এবং এ প্রক্রিয়ায় আমাকে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য এই তথ্যচিত্রে রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন প্রকাশ্য ও আনুষ্ঠানিকভাবে এফবিআইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সুতরাং আমি জানি, এই ধরনের আদর্শিক লেবেলিং লাগিয়ে চিহ্নিত করার ফলাফল কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।

তেতাল্লিশ বছর আগে আমাকেও এফবিআইয়ের শীর্ষ দশ পলাতকের তালিকায় রাখা হয়েছিল। আপনারা কেউ কেউ হয়তো আমার বিচার প্রক্রিয়ার ওপর নতুন তথ্যচিত্রটি দেখে থাকবেন। আমাকে গ্রেফতার করার জন্য এবং এ প্রক্রিয়ায় আমাকে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য এই তথ্যচিত্রে রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন প্রকাশ্য ও আনুষ্ঠানিকভাবে এফবিআইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আর যেহেতু এই ঘটনাটি ঘটছে আসসাটার প্রথমবার গ্রেফতার হওয়ার চল্লিশ বছর পর, তাই পুরো ব্যাপারটা তলিয়ে দেখা উচিত। এই ঘটনা প্রথমেই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, বিংশ শতাব্দীর অনেক কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়ে গেছে। বিশেষত আমাদের জন্য, যারা কাজ করছি শান্তির জন্য; বর্ণ, লিঙ্গ, যৌনতাকেন্দ্রিক ন্যায়বিচারের জন্য; কাজ করছি এমন একটি বিশ্বের জন্য যা পুঁজিবাদী ধ্বংসযজ্ঞের বিকৃতি থেকে রক্ষা পাবে।

বিংশ শতাব্দীর অনেক কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়ে গেছে। বিশেষত আমাদের জন্য, যারা কাজ করছি শান্তির জন্য; বর্ণ, লিঙ্গ, যৌনতাকেন্দ্রিক ন্যায়বিচারের জন্য; কাজ করছি এমন একটি বিশ্বের জন্য যা পুঁজিবাদী ধ্বংসযজ্ঞের বিকৃতি থেকে রক্ষা পাবে।

দুনিয়াজুড়ে ১৯৬০-এর দশককে স্মরণ করা হয় বিপ্লবী আন্দোলন-সংগ্রামের যুগ হিসেবে, যে সময় থেকে আমাদের দূরত্ব চার দশকের। কিন্তু এই ঐতিহাসিক দূরত্বের কারণে যারা প্রকৃতপক্ষে অতীতে এবং বর্তমানে তাদের জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন এবং তাদেরকে মুক্ত করার দায়িত্ব আমরা অস্বীকার করতে পারি না–যেন আমরা বর্ণবাদ, সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ, যৌনতা, সমকামভীতি এবং পুঁজিবাদী শোষণমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।

সুতরাং আমি এটি উল্লেখ করতে চাই যে, প্রাতিষ্ঠানিক, বিশেষত নিপীড়ক প্রতিষ্ঠানের স্মৃতির তুলনায় ব্যক্তিজীবনের স্মৃতি দীর্ঘ নয়। জে এডগার হুভারের প্রেতাত্মা আজও এফবিআইকে তাড়া করে। বর্ণবাদ ও যুদ্ধের অবসান এবং পুঁজিবাদকে উৎখাতের জন্য সংঘটিত গণসংগ্রামের স্মৃতি সিআইএ এবং আইসিইর মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে এখনো তাজা ও স্পষ্ট।

লিওনার্দো পেলটিয়ার এখনো কারাগারে বন্দি। মন্ডো উই লাংগা এবং এড পয়েনডেক্সটার প্রায় চল্লিশ বছর কারাগারে বন্দি আছেন। আসসাটার সহকর্মী সানডিয়াতা একোলি জেলবন্দি। হারম্যান বেল, ভেরোনজা বাওয়ারস, রোমেইন ফিজগারাল্ড এখনো কারাগারে। আমার সহবিপ্লবী রুচেল ম্যাগে প্রায় অর্ধশত বছর কারাগারে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন। এঙ্গোলা থ্রি-র দুজন সদস্য–হারম্যান ওয়ালেস এবং আলবার্ট উডফক্স এখন পর্যন্ত জেলের নির্জন সেলে বন্দি। মুমিয়া আবু জামালের কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। মানুষের প্রতিবাদের চাপে তার মৃত্যুদণ্ড মওকুফ হলেও এখন পর্যন্ত তিনি জেলখানায়।

মার্কিন সরকার আসসাটাকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে এবং তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধরে আনতে সবার জন্য উন্মুক্ত আমন্ত্রণ জারি করে। ব্ল্যাকওয়াটার এবং অন্যান্য বেসরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থা দ্বারা প্রশিক্ষিত অনেক ভাড়াটে গুন্ডা সম্ভবত দুই মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে এই আমন্ত্রণটি গ্রহণ করতে চাইবে। মার্কিন সরকার এই দেশে পাঁচজন কিউবানকে কারাগারে আটক রেখেছে। এই আটক ব্যক্তিরা কিউবায় সন্ত্রাসী হামলা রোধ করার চেষ্টা করেছিল। তারা সন্ত্রাসবাদের তদন্ত করছিল। অথচ তাদের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি কিউবান ফাইভের কথা উল্লেখ করছি–কিউবান ফাইভকে মুক্ত করুন!

মার্কিন সরকার এই দেশে পাঁচজন কিউবানকে কারাগারে আটক রেখেছে। এই আটক ব্যক্তিরা কিউবায় সন্ত্রাসী হামলা রোধ করার চেষ্টা করেছিল। তারা সন্ত্রাসবাদের তদন্ত করছিল। অথচ তাদের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করে আসসাটাকে আক্রমণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে আতঙ্কিত করা ছাড়া আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে। আমার মনে হয়, এর মাধ্যমে এফবিআই আসসাটার এবং আমারও নাতি-নাতনি প্রজন্মকে পুলিশি সহিংসতা অবসানের জন্য লড়াই, কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্স ভেঙে ফেলার সংগ্রাম, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার সংগ্রাম, প্যালেস্টাইন দখল শেষ করার সংগ্রাম, এখানে এবং বিদেশে অভিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য সংগ্রাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে।

আমি মনে করি, শিকাগোয় একজন পুলিশ হত্যাকারী হিসেবে আসসাটার অভিযুক্ত হওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা উচিত। বন্দুক তোলার জন্য তার হাতগুলো ব্যবহার করা আবশ্যক ছিল। কিন্তু পেছনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় আসসাটার হাতগুলো উপরে উঠেছিল এবং সাময়িকভাবে তার হাত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। প্রশ্ন ওঠা উচিত। কারণ, শিকাগো অ্যালায়েন্স অ্যাগেইনস্ট রেসিস্ট অ্যান্ড পলিটিক্যাল রিপ্রেশনের মতে, গত চার বছরে শিকাগো পুলিশ ষাটজন মানুষকে হত্যা করেছে এবং ১৭২ জন কৃষ্ণাঙ্গ ও সাতাশ জন লাতিনোসহ ২৫৩ জনকে গুলিবিদ্ধ করেছে।

আপনাদের ব্যাপক সন্দেহ হওয়া উচিত। কারণ, যত বেশি করে তরুণদের খরচযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যত বেশি করে তরুণদের এমন উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা হিসেবে হাজির করা হচ্ছে যাদের শুধু কারাবন্দি করেই সামলানো যায়, তত বেশি করে এসব সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে যে স্কুলগুলো ভূমিকা রাখতে পারত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সময়ের একজন অসাধারণ নেতা ক্যারেন লুইসের হিসাবে শহরের প্রায় ৬১টি স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আমি নারীবাদ এবং বিলোপবাদকে একবিংশ শতাব্দীর জন্য প্রয়োজনীয় তত্ত্ব এবং অনুশীলন হিসেবে বিবেচনা করি। বিপ্লবে-সংগ্রামে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের উপস্থাপনা ও অংশগ্রহণ কী করে নারী সম্পর্কে বিদ্যমান ভাবাদর্শগত ধারণাগুলোর বিরুদ্ধে লড়তে পারে–নারীবাদী তত্ত্ব ও সংগ্রামের প্রেক্ষিতে আসসাটা শাকুর তার জীবন্ত দৃষ্টান্ত।

প্রকৃতপক্ষে, বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে, ‘নারী’ বর্গটিকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, সে সম্পর্কে বহু বিতর্ক হয়েছিল। কারা এই বর্গটিতে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং কারা বাদ যাবে, তা নিয়ে বহু লড়াই হয়েছিল। এই সংগ্রামগুলো আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে, কেন সেই সময় অ-শ্বেতাঙ্গ এবং দরিদ্র ও কর্মজীবী শ্বেতাঙ্গ শ্রেণির নারীরা এই উদীয়মান নারীবাদী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হতে চাননি। আমাদের মধ্যে অনেকে সেই সময়কার আন্দোলনকে অতিরিক্ত শ্বেতাঙ্গ এবং বিশেষত অতি মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক ও বুর্জোয়া ধরনের বলে মনে করেছিল।

কিছু বিবেচনায় নারী অধিকারের সংগ্রামকে মতাদর্শিকভাবে শ্বেতাঙ্গ মধ্যবিত্ত নারীদের অধিকারের সংগ্রাম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে আলোচ্য ‘নারী’ বর্গটি থেকে শ্রমজীবী, দরিদ্র, কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনা এবং অন্য অশ্বেতাঙ্গ নারীদের দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ‘নারী’ বর্গটিকে নিয়ে অনেকগুলো প্রতিযোগিতা আমাদের জন্য ‘বিপ্লবী অশ্বেতাঙ্গ নারীবাদী তত্ত্ব এবং অনুশীলন’ তৈরি করতে সহায়তা করেছিল।

যখন ‘নারী’ বর্গটির সর্বজনীনতা বিষয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছিল, ঠিক একই সময়ে ‘মানব’ বর্গটি সম্পর্কে একই ধরনের উদ্বেগ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছিল, বিশেষত মানবাধিকারের ডিসকোর্সের অন্তর্নিহিত ব্যক্তিবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত করে। তাহলে নারী বর্গটিকে কীভাবে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে? শুধু আফ্রিকান, আদিবাসী, অন্য অ-ইউরোপীয়দের নয় এবং শুধু ব্যক্তিই নয়; কীভাবে গোষ্ঠী এবং সম্প্রদায়গুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা যায়? এরপরেই কেনিয়ার নাইরোবিতে ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত একটি অসাধারণ সম্মেলনের পর ‘উইমেন রাইটস আর হিউম্যান রাইটস’ বা ‘নারী অধিকার হলো মানবাধিকার’ স্লোগানটির জন্ম হয়েছিল।

যখন ‘নারী’ বর্গটির সর্বজনীনতা বিষয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছিল, ঠিক একই সময়ে ‘মানব’ বর্গটি সম্পর্কে একই ধরনের উদ্বেগ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছিল, বিশেষত মানবাধিকারের ডিসকোর্সের অন্তর্নিহিত ব্যক্তিবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত করে। তাহলে নারী বর্গটিকে কীভাবে পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে? শুধু আফ্রিকান, আদিবাসী, অন্য অ-ইউরোপীয়দের নয় এবং শুধু ব্যক্তিই নয়; কীভাবে গোষ্ঠী এবং সম্প্রদায়গুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা যায়? এরপরেই কেনিয়ার নাইরোবিতে ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত একটি অসাধারণ সম্মেলনের পর ‘উইমেন রাইটস আর হিউম্যান রাইটস’ বা ‘নারী অধিকার হলো মানবাধিকার’ স্লোগানটির জন্ম হয়েছিল।

আমার ধারণা, এখানে যারা আছেন তাদের অনেকেই সেই সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। আমি ঠিক বলছি? হ্যাঁ, আমি কিছু হাত উঠতে দেখছি। চমৎকার।

এই সম্মেলনে, প্রথমবারের মতো, মার্কিন অশ্বেতাঙ্গ নারীদের বেশ বড় একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত হয়েছিলেন। আমার মনে হয়, মার্কিন অশ্বেতাঙ্গ নারীদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সেটাই ছিল প্রথম ঘটনা। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই ভেবেছিলেন, ‘নারী’ বর্গটির ব্যাপ্তিকে আরো প্রসারিত করা দরকার যাতে এটি কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনা, আদি আমেরিকানসহ অন্যদেরও সেখানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। আমরা ভেবেছিলাম, এটি করে আমরা কার্যকরভাবে নারী বর্গটি থেকে কারোর বাদ পড়ে যাওয়ার সমস্যাটির সমাধান করতে পারব। কিন্তু তখন যে বিষয়টি বুঝতে পারিনি, তা হলো ‘নারী’ হিসেবে গণ্য–এই স্থির বর্গটিতে শুধু আরও বেশি নারী অন্তর্ভুক্ত করার পরিবর্তে পুরো বর্গটিকেই ঢেলে সাজাতে হবে।

বেশকিছু কাল আগে, ১৯৭৯ সালে স্যান্ডি স্টোন নামে একজন শ্বেতাঙ্গ নারী অলিভিয়া রেকর্ডস নামে একটি নারীবাদী রেকর্ডিং সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। আপনারা কেউ কেউ হয়তো অলিভিয়া রেকর্ডসের সঙ্গে পরিচিত। সত্যিকারের নারী না-হওয়ার অভিযোগে এবং নারীদের পরিবেশে পুরুষালি প্রবণতা যুক্ত করার জন্য স্ব-সংজ্ঞায়িত কিছু লেসবিয়ান নারীবাদী স্যান্ডি স্টোনকে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছিলেন। স্যান্ডি স্টোন একজন রূপান্তরকামী নারী ছিলেন। তিনি পরে এমন কিছু লেখা লিখেছিলেন যেগুলো ট্রান্সজেন্ডার স্টাডির উন্মেষের পেছনে ভূমিকা রেখেছিল। জন্মের সময় ‘পুরুষ’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার কারণে স্যান্ডি স্টোনকে নারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে আলাদা লিঙ্গপরিচয়ে পরিচিত হতে তাকে কেউ বাধা দিতে পারেনি।

এখন তাহলে বর্তমানে ফেরা যাক। এটা এমন একটা সময় যখন বুদ্ধিজীবী ও আন্দোলনের কর্মীরা কারা-বিলোপ ও জেন্ডার-নন-কনফর্মিটি বা লিঙ্গভিত্তিক স্থির নির্দিষ্ট কিছু আচরণবিধি মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানানোর মতো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, যারা দারুণ আকর্ষণীয় কিছু তত্ত্ব এবং আন্দোলনের জন্য প্রয়োজনীয় দারুণ কিছু ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দিয়েছেন।

এই চিন্তাধারা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আমি একটা কথা বলে নিতে চাই, আজ সকালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বার্নার্ড হারকোর্ট আয়োজিত রাজনৈতিক আশ্রয় এবং কারাগার বিষয়ে একটি খুব উত্তেজনাপূর্ণ কর্মশালায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমরা সবাই এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে পারি। আমি মাইকেল রেম্বিস এবং লিয়াত বেন-মোশির দুটি খুব চমৎকার উপস্থাপনা শুনেছি। আপনারা সবাই সেগুলো শুনতে সক্ষম হলে আমি খুশি হতাম। এটি প্রায়শই ধরে নেওয়া হয় যে, মানসিক কারাগারে বন্দি করা এবং মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কারাবাস একটি প্রান্তিক প্রশ্ন। বাস্তবতা কিন্তু এর পুরোপুরি বিপরীত। উভয় উপস্থাপক রাজনৈতিক আশ্রয় ও মনস্তাত্ত্বিক সংস্থাগুলোর অপ্রাতিষ্ঠানিকীকরণকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে কারাগার এবং কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্স বিলুপ্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন।

এই কথাগুলো বলে এবার আমি অন্য আরেকটি সমস্যা এবং সংগ্রামের ব্যাপারে উল্লেখ করতে চাই যা দুর্ভাগ্যক্রমে অনেক সময় বৃহত্তর কারা-বিলোপ সংগ্রামের ক্ষেত্রে নগণ্য বলে মনে করা হয়।

‘নারী’ বর্গটিকে কেন্দ্র করে ঐতিহাসিক প্রতিযোগিতার ব্যাপারে ফিরে আসার জন্য বর্তমানের দিকে মনোযোগ দেওয়া যাক। আমি সানফ্রান্সিসকো বে এরিয়ায় থাকি। সেখানে ‘ট্রান্সজেন্ডার, জেন্ডার ভেরিয়েন্ট, ইন্টারসেক্স জাস্টিস প্রজেক্ট’ নামে পরিচিত একটি সংস্থা আছে। টিজিআই জাস্টিস প্রজেক্ট হলো অশ্বেতাঙ্গ নারীদের দ্বারা পরিচালিত একটি সংস্থা। এই সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মিস মেজর নামে একজন নারী। আর হ্যাঁ, আমি মিস মেজরকে বলব, তিনি শিকাগোয় প্রচুর প্রশংসা পেয়েছেন। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তিনি এখান থেকে খুব বেশি দূরে নয়, শিকাগোর দক্ষিণ দিকে বেড়ে উঠেছেন।

তিনি নিজেকে একজন কৃষ্ণাঙ্গ, পূর্বে কারাবন্দি, পুরুষ থেকে স্ত্রী লিঙ্গে পরিবর্তিত হওয়া একজন প্রবীণ নারী, শিকাগোর দক্ষিণ পাশে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা এবং একজন অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি ১৯৬৯ সালে স্টোনওয়াল বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেছিলেন যে, অ্যাটিকা জেলবিদ্রোহ শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত তার সত্যিকার অর্থে রাজনীতি করা হয়নি। আমি আরেকদিন তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জেনেছি, বিট ব্ল্যাক নামে একজন অ্যাটিকা বিবাদী এবং মৃত্যুর আগপর্যন্ত আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাকে রাজনীতিতে সংযুক্ত করেছিলেন।

ফ্র্যাঙ্ক স্মিথ বিগ ব্ল্যাক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি অ্যাটিকা বিদ্রোহের অন্যতম নেতা, যিনি শেষ পর্যন্ত অ্যাটিকার সঙ্গে নিউইয়র্ক রাজ্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা জিতেছিলেন। মিস মেজর তার সঙ্গে কারাগারে দেখা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ফ্র্যাংক স্মিথ যে শুধু তার লৈঙ্গিক পরিচয়কে পুরোপুরি গ্রহণ করেছেন শুধু তাই নয়; বর্ণবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়েও তাকে নানান নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

টিজিআই জাস্টিস প্রজেক্ট একটি তৃণমূল সংস্থা, যা মূলত রূপান্তরকামী নারী এবং অশ্বেতাঙ্গ রূপান্তরকামী নারীদের নিয়ে কাজ করে–তাদেরকে সমর্থন করে এবং রক্ষা করে। ‘নারী’ বর্গটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য এই নারীদের ঠিক সেভাবে লড়াই করতে হয়েছে যেভাবে জন্মগত সূত্রে নির্ধারিত নারী লিঙ্গের কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের লড়াই করতে হয়েছিল। তাদের গভীর নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কার্যকারিতা বোঝা এবং তা অনুকরণ করা আমাদের জন্য একটি ভালো পদক্ষেপ বলে মনে করি।

মিস মেজর নিজেকে Ms. মেজরের পরিবর্তে Miss মেজর বলতে পছন্দ করেন। কারণ, রূপান্তরকামী নারী হিসেবে তিনি এখনো স্বাধীনতা লাভ করেননি। জাতি, শ্রেণি, যৌনতা এবং লিঙ্গের মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপনকারী টিজিআইজেপি গভীরভাবে একটি নারীবাদী সংস্থা হিসেবে কাজ করে। সম্প্রদায়ের যেসব সদস্যকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যক্তিগত পর্যায়ে চরম হয়রানি, গ্রেফতার এবং কারারুদ্ধ করে–টিজিআইজেপি তাদের সমস্যার চেয়ে বৃহত্তর পর্যায়ে কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

অশ্বেতাঙ্গ রূপান্তরকামী নারীদের সাধারণত পুরুষ কারাগারে রাখা হয়, বিশেষ করে যদি তাদের লিঙ্গ পুনর্নির্ধারণী অস্ত্রোপচার না-হয়ে থাকে। তাদের অনেকেই অবশ্য এই অস্ত্রোপচার করতে রাজি নন। আবার অস্ত্রোপচার করা হলেও কখনো কখনো তাদেরকে পুরুষদের কারাগারেই রাখা হয়। বন্দি হওয়ার পর প্রহরীরা অন্যদের চেয়ে তাদের প্রতি প্রায়ই বেশি হিংস্র আচরণ করে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে পুরুষ নির্যাতনের লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই নির্যাতনের চর্চা এতটাই বেশি যে, পুলিশ খুব সহজেই পুরুষ কারাগারে রূপান্তরকামী নারীদের যৌনজীবন নিয়ে রসিকতা করে। পুরুষ কারাগার একটি সহিংস স্থানের প্রতিনিধিত্ব করে। কিন্তু রূপান্তরকামী নারীদের অবস্থা থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, প্রায়ই প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এই সহিংসতা উসকে দেয়।

আপনারা অনেকেই সেসে-ম্যাকডোনাল্ডের মিনেপলিস মামলার ব্যাপারটি জানেন। সেসে-ম্যাকডোনাল্ডের সঙ্গে একটি দলের সাক্ষাৎ হয়, যারা তাকে একই সময়ে বর্ণবাদী, সমকামী এবং ট্রান্সফোবিক বেশ্যা বলে গালিগালাজ করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সেসে একটি খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তিনি সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে মিনেসোটার একটি পুরুষ কারাগারে আছেন। বৈধ প্রেসক্রিপশন থাকা সত্ত্বেও প্রায়ই রূপান্তরকামী নারীদের সহিংসতার পাশাপাশি হরমোনের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়।

আমি যে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করছি তা হচ্ছে, রূপান্তরকামী বন্দিদের বিশেষ সংগ্রাম এবং বিশেষ করে রূপান্তরকামী নারীদের অবস্থা পরীক্ষা করে আমরা কারাগার ব্যবস্থা, কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের প্রকৃতি এবং বিলুপ্তির বিষয় সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং নারীবাদী বিলুপ্তিবাদী তত্ত্ব ও অনুশীলন বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু বিষয় হলো: মতাদর্শগত প্রক্রিয়ায় যেসব বিষয়কে ‘স্বাভাবিক’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে চিন্তা, কাজ ও লড়াই করা শিখতে হবে। কারাগার সেরকম একটি ‘স্বাভাবিক’ ব্যাপার। তাই কারাগারবিহীন একটি পৃথিবী কল্পনা এবং শাস্তির প্রভাবশালী মাধ্যম হিসেবে কারাগার বিলুপ্তির জন্য সংগ্রাম করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা একটি কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

আমরা এই প্রসঙ্গে নিজেদের প্রশ্ন করতে পারি, কেন রূপান্তরকামী নারী, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ রূপান্তরকামী নারীদের প্রচলিত ‘স্বাভাবিক’ থেকে এত দূরে বিবেচনা করা হয়? সমাজের প্রায় সবাই তাদেরকে স্বাভাবিকের বাইরে বিবেচনা করে।

আমরা এই প্রসঙ্গে নিজেদের প্রশ্ন করতে পারি, কেন রূপান্তরকামী নারী, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ রূপান্তরকামী নারীদের প্রচলিত ‘স্বাভাবিক’ থেকে এত দূরে বিবেচনা করা হয়? সমাজের প্রায় সবাই তাদেরকে স্বাভাবিকের বাইরে বিবেচনা করে।

বিগত দশকগুলোয় আমরা লিঙ্গ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছি। আমার মনে হয়, নারীবাদী গবেষণার ক্ষেত্রে সংযুক্ত সবাই জুডিথ বাটলারের জেন্ডার ট্রাবল লেখাটি পড়েছেন। কিন্তু বেথ রিচির “অ্যারেস্টেড জাস্টিস: ব্ল্যাক উইমেন, ভায়োলেন্স অ্যান্ড আমেরিকা’স প্রিজন নেশন” নামের সাম্প্রতিক বইটিও আপনাদের পড়া উচিত। বিশেষ করে তার বইয়ের নিউ জার্সি ফোর-এর ঘটনা লক্ষ করুন। চারজন তরুণ লেসবিয়ান কৃষ্ণাঙ্গ গ্রিনউইচ ভিলেজে ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছিলেন, মজা করছিলেন। কিন্তু পুরুষালি সহিংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করার কারণে তাদেরকে শেষ পর্যন্ত জেলে যেতে হয়েছিল। এই সহিংসতা আরো মজবুত হয়েছে যখন মিডিয়ায় তাদেরকে ‘লেসবিয়ান নেকড়ের দল’ হিসেবে হাজির করা হয়েছে। আমরা এখানে দেখছি, জাতি, লিঙ্গ ও যৌনতার ব্যাপারে অসামঞ্জস্যতার কারণে বর্বর বর্ণবাদিতার জন্ম দিতে পারে। এরিক স্ট্যানলি নামে আমার একজন ছাত্র তার গবেষণায় এটাকে শুধু মানুষের বিরুদ্ধে নয়, পশুদের বিরুদ্ধেও একটা হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

চারজন তরুণ লেসবিয়ান কৃষ্ণাঙ্গ গ্রিনউইচ ভিলেজে ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছিলেন, মজা করছিলেন। কিন্তু পুরুষালি সহিংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করার কারণে তাদেরকে শেষ পর্যন্ত জেলে যেতে হয়েছিল। এই সহিংসতা আরো মজবুত হয়েছে যখন মিডিয়ায় তাদেরকে ‘লেসবিয়ান নেকড়ের দল’ হিসেবে হাজির করা হয়েছে। আমরা এখানে দেখছি, জাতি, লিঙ্গ ও যৌনতার ব্যাপারে অসামঞ্জস্যতার কারণে বর্বর বর্ণবাদিতার জন্ম দিতে পারে।

টিজিআই জাস্টিস প্রজেক্ট একটি বিলোপবাদী সংস্থা। এটি পরিষেবা বিধান এবং বিলোপবাদ সমর্থনের মধ্যে দ্বান্দ্বিক অবস্থানের ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়। টিজিআইজেপি সমর্থিত নারীবাদ আমাদেরকে নমনীয় হতে অনুরোধ করে। সংস্থাটি আমাদেরকে লক্ষ্যবস্তুর সঙ্গে খুব বেশি সংযুক্ত না-হওয়ার জন্য সতর্ক করে, সেটা বাড়ির একাডেমিকদের পড়াশোনার বিষয়বস্তু হোক বা আমাদের সাংগঠনিক নেতাকর্মীদের কাজই হোক।

টিজিআই জাস্টিস প্রকল্প আমাদের দেখায় যে, আমাদের কাজের ধরনের কারণে এই লক্ষ্যবস্তুগুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছুতে পরিণত হতে পারে। এই প্রকল্প আমাদের দেখায়, একটি বিদ্যমান বর্গে নারীদের নানা উপায়ে একীভূতকরণের চেষ্টা করার প্রক্রিয়াটি র‌্যাডিকেল বা বিপ্লবী ফলাফল আনার প্রচেষ্টার সঙ্গে বিরোধিতা করে। এটি আমাদের আরো দেখায়, রূপান্তরকামী নারীদের একই ধরনের বর্গে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা না-করে বরং বর্গটিকেই এমনভাবে রূপান্তরিত করা উচিত, যা নারী হিসেবে গণ্য হওয়া বা না-হওয়ার প্রচলিত ধারণাকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়।

আরো একটি শিক্ষা হলো: লিঙ্গধারণার সঙ্গে খুব বেশি সংযুক্ত হয়ে উঠবেন না। কারণ, বাস্তবিক বিচারে আমরা লিঙ্গকে যত ঘনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করি, ততই আমরা আবিষ্কার করি, এটি অনেকগুলো সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং মতাদর্শগত কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত; একক কোনো বিষয় নয়। লিঙ্গের একক কোনো সংজ্ঞা নেই। অবশ্যই এক মেরুতে ‘পুরুষ’ এবং অন্য মেরুতে ‘নারী’ রেখে লিঙ্গকে শুধু দুভাগের কাঠামো হিসেবে আর বর্ণনা করা যায় না।

আমরা লিঙ্গকে যত ঘনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করি, ততই আমরা আবিষ্কার করি, এটি অনেকগুলো সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং মতাদর্শগত কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত; একক কোনো বিষয় নয়। লিঙ্গের একক কোনো সংজ্ঞা নেই। অবশ্যই এক মেরুতে ‘পুরুষ’ এবং অন্য মেরুতে ‘নারী’ রেখে লিঙ্গকে শুধু দুভাগের কাঠামো হিসেবে আর বর্ণনা করা যায় না।

তাই রূপান্তরকামী নারী ও পুরুষ, উভলিঙ্গ, বিভিন্ন অনির্ধারিত লিঙ্গকে লিঙ্গের ধারণার অধীন আনা হলে তা লিঙ্গের ধারণার ভিত্তিকে ভয়াবহভাবে দুর্বল করে দেয়।

ডিন স্পেইডের সঙ্গে গতকাল আমার দেখা হয়েছে। আমি তার ‘ফ্রম মাই আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ থেকে চমৎকার একটি অংশ উদ্ধৃত করছি:

শরীরের নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাধ্যমে লৈঙ্গিক বৈশিষ্ট্য, লিঙ্গভিত্তিক সামাজিক বৈশিষ্ট্য ও ভূমিকা নির্ধারণের যে সাংস্কৃতিক মতাদর্শ, সামাজিক চর্চা ও আইনি প্রথা রয়েছে, সেগুলো বাতিল করাই ছিল নারীবাদী, কুইয়ার ও রূপান্তরকামীদের মূল প্রচেষ্টা। জরায়ু, ডিম্বাশয়, পুরুষাঙ্গ বা অণ্ডকোষের উপস্থিতির মাধ্যমে মানুষের বুদ্ধিমত্তা, পিতামাতার সঠিক ভূমিকা, সঠিক শারীরিক আকৃতি, সঠিক লিঙ্গপরিচয়, সঠিক শ্রমের ভূমিকা, সঠিক যৌনসঙ্গী ও যৌন ক্রিয়া এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার মতো বিষয়গুলো নির্ধারণ করা যায়–এরকম ধারণার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। প্রচলিত লৈঙ্গিক ভূমিকা ও কর্মকাণ্ডকেই শুধু স্বাস্থ্যকর হিসেবে দেখা এবং এর ব্যতিক্রমকে অসুস্থতা চিহ্নিত করার চিকিৎসাশাস্ত্রীয় ও বৈজ্ঞানিক দাবির বিরোধিতা করেছি। দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাধ্যমেই আমাদের পরিচয় গড়ে ওঠে (এবং সেই পরিচয়ের ওপর নির্ভর করে আমরা তুলনামূলক ‘কম’ বা ‘ভালো’)–এরকম গালগল্পকে ভুল প্রমাণ করার জন্য আমরা কাজ করে চলেছি।

ট্রান্স স্কলার-অ্যাকটিভিস্টরা জেল বিলুপ্তির বিষয়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় কাজের কিছু অংশ করছেন। এ ব্যাপারে আমি ট্রান্স বিলোপবাদী রাজনীতিতে জড়িত স্কলার-অ্যাকটিভিস্টদের সংকলিত সাম্প্রতিক তিনটি বইয়ের কথা উল্লেখ করতে চাই। এর মধ্যে একটি হলো এরিক স্ট্যানলি এবং ন্যাট স্মিথ সম্পাদিত ‘ক্যাপটিভ জেন্ডারস: ট্রান্স এমবডিমেন্ট অ্যান্ড দ্য প্রিজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স’ নামের সংকলন। আন্ড্রেয়া রিচি, কে হুইটলক এবং জো মোগুল সম্প্রতি ‘কুইয়ার (ইন) জাস্টিস: দ্য ক্রিমিনালাইজেশন অব পিপল ইন দি ইউনাইটেড স্টেটস’ নামে একটি সংকলন প্রকাশ করেছেন। ডিন স্পেড, যাকে আমি ইতঃপূর্বে উদ্ধৃত করেছি, খুব মেধাবী একজন মানুষ। আমি কল্পনাও করতে পারি না, তিনি কীভাবে এসব বই এবং নিবন্ধ লিখেছেন। বিশ্বজুড়ে চলমান বিক্ষোভে তিনি সবসময় সামনের সারিতে থাকেন। সম্প্রতি প্রকাশিত তার একটি বই হলো: ‘নরমাল লাইফ: অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ভায়োলেন্স, ক্রিটিক্যাল ট্রান্স পলিটিক্স, অ্যান্ড দ্য লিমিটস অব ল’।

নারীবাদীদের উচিত বর্ণবাদ, কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্স, অপরাধীকরণ, বন্দিদশা, হিংস্রতা এবং আইনকে বিশ্লেষণ করা, সমালোচনা করা এবং সংগ্রামের মধ্যদিয়ে সেগুলো প্রতিরোধ করা। এসব নারীবাদী শুধু বিষয়বস্তু সংবলিত হওয়ার কারণেই যে এই বই তিনটিকে আমি নারীবাদী বলছি তা নয়; বরং আমি পদ্ধতিগত কারণে এই লেখাগুলোকে নারীবাদী হিসেবে দেখছি। নারীবাদী পদ্ধতিগুলো গবেষক, শিক্ষাবিদ ও অ্যাকটিভিস্ট এবং সংগঠকদের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

নারীবাদীদের উচিত বর্ণবাদ, কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্স, অপরাধীকরণ, বন্দিদশা, হিংস্রতা এবং আইনকে বিশ্লেষণ করা, সমালোচনা করা এবং সংগ্রামের মধ্যদিয়ে সেগুলো প্রতিরোধ করা।

আমরা অনেক সময় দেখি, কোনো একটি বর্গের আপাত অর্থে ছোট ও প্রান্তিক একটি ধরন কিংবা বর্গের বাইরে থাকা কোনো ধরন পুরো বর্গের ধারণাটিকেই বদলে দিতে পারে। কোনো একটি বর্গের প্রচলিত ধারণা নিয়ে পড়ে থাকার চেয়ে এই প্রক্রিয়াটি অনেক ভালো ধারণা দিতে পারে। আমরা জানি, শিক্ষাবিদরা তাদের প্রশিক্ষণের কারণেই অপ্রত্যাশিতকে ভয় পান। কিন্তু আমাদের সংগ্রামীরাও সবসময় আমাদের কাজের গতিপথ এবং লক্ষ্য সম্পর্কে খুব পরিষ্কার ধারণা পেতে চান। উভয় ক্ষেত্রেই আমাদের চাওয়া হলো পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা। আর যেহেতু আমরা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চাই, তাই প্রায়শই আমাদের বিদ্বান ও কর্মীদের তৈরি প্রকল্পগুলো যেন ইতোমধ্যে আমরা যা জানি তাকে পুনরায় নিশ্চিত করে। কিন্তু এটি আকর্ষণীয় ব্যাপার না-হয়ে বরং একঘেয়েমি ব্যাপারে পরিণত হয়। সুতরাং কীভাবে এই কাজগুলোকে চমকপ্রদ করে তাদের উৎপাদনশীল করে তোলা সম্ভব?

আমি এখন কিছুটা ভিন্ন প্রসঙ্গের একটা কথা বলব, অবশ্য নানা বিচারেই তা চমক জিনিসটাকে কাজে লাগানোর সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি যখন হাইস্কুলে পড়ি তখন আমি স্কোয়ার ডান্স পছন্দ করতাম।[হাসি] আমি এই নাচ খুব ভালোবাসতাম। কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গ মুক্তি আন্দোলনের সময়ে আমাকে একজন বলল, ‘কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ স্কোয়ার ডান্স করে না! কেন আপনি স্কোয়ার ডান্স করছেন, কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ তো স্কোয়ার ডান্স করে না!’ অতি সম্প্রতি অসাধারণ ক্যারোলিনা চকলেট ড্রপসের সঙ্গে আমার সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে আমি এখানে শিকাগোর এক স্কোয়ার ডান্স কলারের [স্কয়ার ড্যান্স চলাকালীন নাচের মুদ্রার দিকনির্দেশনা প্রদানকারী] বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে একটি গল্প শেয়ার করতে চাই। তার নাম সম্ভবত সান্ড্রা ব্রায়ান্ট। আমি এটি অনলাইনে কোথাও পড়েছি। একজন তাদেরকে স্কোয়ার ডান্স ক্লাবে কলারের কাজটি করার অনুরোধ জানাতে টেলিফোন করে। সান্ড্রা তাকে বলেন, ‘ঠিক আছে, আমাকে ক্যালেন্ডার দেখতে হবে।’ টেলিফোনকারী ব্যক্তিটি তখন তাকে দ্রুত বললেন: ‘ক্যালেন্ডার দেখার আগে অবশ্য আপনার এটা জানা উচিত যে, আমরা একটি সমকামী স্কোয়ার ডান্স ক্লাব।’ সান্ড্রা তার ত্বরিত পালটা জবাব দিয়েছিলেন এভাবে: ‘আচ্ছা, ক্যালেন্ডারের দিকে আমার নজর দেওয়ার আগে আপনার জানা উচিত যে, আমি একজন ব্ল্যাক স্কোয়ার ডান্স কলার।’ এভাবে সেই মুহূর্তে স্কোয়ার নৃত্যটি কৃষ্ণাঙ্গ ও সমকামী উভয়ের বিষয় হয়ে উঠল, যা সম্ভবত স্কোয়ার নৃত্যেও কিছুটা পরিবর্তন এনেছিল।

আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছি। কিন্তু আসলে তা নয়। কারণ, আমরা আমাদের তাত্ত্বিক অনুসন্ধান এবং আন্দোলনের ক্রিয়াকলাপ উভয়কে এমনভাবে প্রয়োগ করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে চাই, যাতে আমাদের তত্ত্ব ও স্বাধীনতার চর্চা আরও বর্ধিত, প্রসারিত এবং গভীর হতে পারে।

নারীবাদে লিঙ্গ ও লিঙ্গসাম্য ছাড়া আরও অনেক বিষয় জড়িত। নারীবাদকে অবশ্যই পুঁজিবাদ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আমি সেই ধরনের নারীবাদের সঙ্গেই সম্পর্কিত। নারীবাদকে পুঁজিবাদ, বর্ণবাদ, উপনিবেশবাদ, উত্তর-উপনিবেশবাদ, ক্ষমতা এবং অজ্ঞাত অনেক লিঙ্গ ও নামহীন বিভিন্ন ধরনের যৌনতা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বক্তৃতা, প্রতিষ্ঠান, পরিচিতি এবং মতাদর্শগুলোকে আমরা প্রায়শই আলাদাভাবে বিবেচনা করি। নারীবাদ সেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সংযোগের স্বীকৃতি দিতেই শুধু সহায়তা করছে না; এটি আমাদের জ্ঞানতাত্ত্বিক এবং সংগঠিত কৌশলগুলো বিকাশ করতেও সহায়তা করেছে, যা আমাদেরকে ‘নারী’ এবং ‘লিঙ্গ’ বর্গগুলোর বাইরে নিয়ে যায়। নারীবাদী পদ্ধতিগুলো প্রায়শ অস্পষ্ট সংযোগগুলো অন্বেষণ করতে আমাদেরকে প্ররোচিত করে। তারা আমাদের পরস্পর বিরোধিতার মধ্যে বাস করতে এবং এই বৈপরীত্যগুলোর মধ্যে ফলপ্রসূ ব্যাপার আবিষ্কার করতে উদ্বুদ্ধ করে। নারীবাদ সেই চিন্তাভাবনা এবং কর্মপদ্ধতিগুলোর ওপর জোর দেয়, যা আপাত অর্থে পৃথক দেখা যাচ্ছে। এমন বিষয়গুলোকে একসঙ্গে করে এবং প্রাকৃতিকভাবে একসঙ্গে আছে এরকম বিষয়গুলোকে পৃথক করে ভাবতে শেখায়।

নারীবাদকে পুঁজিবাদ, বর্ণবাদ, উপনিবেশবাদ, উত্তর-উপনিবেশবাদ, ক্ষমতা এবং অজ্ঞাত অনেক লিঙ্গ ও নামহীন বিভিন্ন ধরনের যৌনতা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

ধারণা করা হয়, যেহেতু রূপান্তরকামী এবং লিঙ্গ-পরিচয়হীন জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম (উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন এবং বিশ্বব্যাপী ৮ মিলিয়নেরও বেশি বন্দি কারাগারে রয়েছে), সেহেতু কেন খুব বেশি মনোযোগ তাদের জন্য প্রাপ্য হবে? কিন্তু নারীবাদী পদ্ধতি কারাগার এবং কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্স ব্যবস্থা বোঝার জন্য সবসময় একটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয় যে, বিশ্বব্যাপী কারাবন্দি নারীদের মোট সংখ্যা খুব কম হলেও, শুধু কারাবন্দি পুরুষদের চেয়ে তাদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে পুরো জেলব্যবস্থা সম্পর্কে আমরা অনেক বেশি জ্ঞান লাভ করতে পারি।

এটা সত্য যে, আমরা বর্ণবাদবিরোধী প্রেক্ষাপটকে বাইরে রেখে কারাগার বিলোপের বিষয়ে ভাবতে পারি না। এটিও সত্য যে, কারা বিলোপবাদীদের উচিত জেন্ডার পুলিশিংয়ের বিলোপ চাওয়া। পুরো প্রক্রিয়াটি এপিস্টেমিক বা জ্ঞানতাত্ত্বিক সহিংসতা প্রকাশ করে। এখানে নারীবাদ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা জানেন, আমি কী বলতে চাইছি–যে জ্ঞানতাত্ত্বিক সহিংসতা বৃহত্তর সমাজে নারী-পুরুষ লিঙ্গ বিভাজনের ধারণার মধ্যেই নিহিত থাকে।

সুতরাং বিলোপবাদী কাঠামোর মধ্যে নারীবাদকে আনা এবং তদ্বিপরীতভাবে একটি নারীবাদী কাঠামোর মধ্যে বিলোপবাদ আনার অর্থ হলো আমরা যেন পুরোনো নারীবাদী প্রবাদ–‘ব্যক্তিগত ব্যাপার একটি রাজনৈতিক বিষয়’-কে গুরুত্বসহকারে নিই। ব্যক্তিগত ব্যাপার একটি রাজনৈতিক বিষয়–এ কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে, তাই না? কারাগারের প্রাতিষ্ঠানিক সহিংসতার সঙ্গে পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক রয়েছে। বেথ রিচি আমাদেরকে সেটাই ভাবতে শিখিয়েছেন। আমাদের আরো প্রশ্ন হলো, সহিংসতার অভিযোগে কাউকে কারাগারে আটক করার মাধ্যমে সেই সহিংসতার পুনরুৎপাদন করা ছাড়া আর কিছু অর্জন হয় কি না। অন্য কথায়, অপরাধীকরণ প্রক্রিয়াটি সহিংসতার সমস্যাকে বরং টিকিয়ে রাখতেই সাহায্য করে।

আমি মনে করি, নারীদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে যারা সম্মুখ সারিতে সংগ্রাম করছেন, কারাগার বিলুপ্তি সংগ্রামেও তাদের সামনে দাঁড়ানো উচিত। যারা পুলিশি সহিংসতার বিরোধিতা করেন, তাদের পারিবারিক সহিংসতারও বিরোধিতা করা উচিত। রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত সহিংসতার মধ্যে যোগসূত্রটি আমাদের বুঝতে পারা উচিত।

নারীদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে যারা সম্মুখ সারিতে সংগ্রাম করছেন, কারাগার বিলুপ্তি সংগ্রামেও তাদের সামনে দাঁড়ানো উচিত। যারা পুলিশি সহিংসতার বিরোধিতা করেন, তাদের পারিবারিক সহিংসতারও বিরোধিতা করা উচিত। রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত সহিংসতার মধ্যে যোগসূত্রটি আমাদের বুঝতে পারা উচিত।

যা কিছু ব্যক্তিগত তাই রাজনৈতিক। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়াই এবং আমাদের ব্যক্তিগত জীবন পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের সংগ্রামের মধ্যে একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা জানি, প্রতিশোধাত্মক ন্যায়বিচারের কাঠামোটি প্রায়শই আমাদের সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলোয় প্রতিফলিত হয়। মৌখিক বা অন্য কোনোভাবে যখন কেউ আমাদের আক্রমণ করে, আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হয়? একটি পাল্টা আক্রমণ। রাষ্ট্রের প্রতিশোধাত্মক প্ররোচনা আমাদের খুব সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়ায় লিপিবদ্ধ হয়ে যায়। এটি একটি নারীবাদী অন্তর্দৃষ্টি–একটি মার্কসবাদ-প্রভাবিত নারীবাদী অন্তর্দৃষ্টি, যা সম্ভবত ফুকোর কিছু প্রভাব প্রকাশ করে। মানুষের ব্যক্তিগত পর্যায়ে রাজনীতি নিজেকে পুনরুৎপাদন করে। এটি সেই সম্পর্কেরই পুনরুৎপাদন সম্পর্কিত নারীবাদী অন্তর্দৃষ্টি যা কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের মতো একটা বিষয়কে সম্ভবপর করে তোলে।

আমাদের প্রচ্ছন্ন সম্মতি ছাড়া এদেশের কারাবন্দি জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ হতে পারত না। এমনকি আমরা স্বীকার করি না যে, মানসিক চিকিৎসার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা এটাও স্বীকার করি না যে, ওষুধশিল্প কমপ্লেক্স এবং কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের মধ্যে একটি আন্তঃসংযোগ রয়েছে।

আমাদের প্রচ্ছন্ন সম্মতি ছাড়া এদেশের কারাবন্দি জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ হতে পারত না। এমনকি আমরা স্বীকার করি না যে, মানসিক চিকিৎসার প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা এটাও স্বীকার করি না যে, ওষুধশিল্প কমপ্লেক্স এবং কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের মধ্যে একটি আন্তঃসংযোগ রয়েছে।

আমি যা বলতে চাচ্ছি তা হলো, আমরা যদি ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে রিগ্যান-বুশ যুগের সময় এবং ক্লিনটন যুগে আরও শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতাম, তবে আমাদেরকে আজ এত বড় সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না।

গত কয়েক দশকের অনেক কিছুই আমাদেরকে ভুলে যেতে হবে। আমাদেরকে বর্ণবাদ ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এটা যে শুধু শ্বেতাঙ্গদের কথা ভেবে বলছি তা নয়; কৃষ্ণাঙ্গদেরও অনেক কিছু ভুলে যেতে হবে, বিশেষ করে বর্ণবাদকে ব্যক্তিগত আচরণের বিষয়-আশয় যা সংবেদনশীলতার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা যায়–এরকমটা মনে করা ভুলে যেতে হবে।

আপনাদের কি মনে আছে, ডন ইমাস প্রায় পাঁচ বছর আগে রুটজার্স মহিলা বাস্কেটবল দলকে বর্ণবাদী গালি (nappy-headed hoes) দিয়েছিলেন? পাঁচ বছর পর তিনি পুনর্বাসিত হয়েছিলেন! তাতে অবশ্য ট্রয় ডেভিসের মৃত্যুর ঘটনার কোনো ক্ষতিপূরণ হবে না, যিনি মৃত্যুদণ্ড নামের সবচেয়ে বড় বর্ণবাদী প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনের শিকার হয়েছিলেন। যদি আমরা বর্ণবাদের কাঠামোকে ভেঙে ফেলা শুরু না-করি, তবে কোনো মানসিক চিকিৎসা বা দলগত প্রশিক্ষণই দেশে কার্যকরভাবে বর্ণবাদের অবসান ঘটাতে পারবে না।

কারাগারগুলো বর্ণবাদের অবতার। মিশেল আলেকজান্ডার যেমন উল্লেখ করেছেন, তারা নতুন জিম ক্রো গঠন করছেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের মূল উপাদান–এই কারাব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে, শাস্তির মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান মুনাফা অর্জন নিশ্চিত করা হচ্ছে। অশ্বেতাঙ্গ ও দক্ষিণ থেকে আগত অভিবাসীদের সঙ্গে উদ্বৃত্ত এবং পরিত্যাজ্য জনসংখ্যা হিসেবে আচরণ করার ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রবণতার প্রতিনিধিত্ব করছে এই ব্যবস্থাটি।

তাদের সবাইকে একটি বিশাল আবর্জনার বাক্সে রাখুন। নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদের সঙ্গে কিছু অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি যুক্ত করুন এবং তাদেরকে সেখানে স্তব্ধ হতে দিন। আর ইতোমধ্যে এমন আদর্শিক একটি মায়াজাল তৈরি করুন যেন বিপজ্জনক কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো, আমেরিকান আদিবাসী, এশীয়, শ্বেতাঙ্গ এবং মুসলমানদের বন্দিত্বের মধ্যদিয়ে চারপাশের সমাজটিকে অধিকতর নিরাপদ এবং মুক্ত বলে মনে হয়।

সবর্জনের শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি হোক! সর্বজনের শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, করপোরেট মানদণ্ড অনুসারে তা লাভজনক নয়। ক্ষতিগ্রস্ত হোক জনস্বাস্থ্যখাত! শাস্তি যদি লাভজনক হতে পারে, তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবাও লাভজনক হওয়া উচিত। এসব ভীষণ আপত্তিকর! একেবারে জঘন্য ব্যাপার!

এটি অত্যন্ত গর্হিত ব্যাপার যে, ইসরায়েল মার্কিন কারাগারে ব্যবহৃত নির্যাতনের উন্নতমানের প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করছে। শুধু আট হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিকে নিয়ন্ত্রণ করতেই নয়, বিস্তৃত ফিলিস্তিনি জনসংখ্যাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে ইসরায়েল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যকার সীমানাপ্রাচীরের মতো পৃথকীকরণের দেওয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের দমন-নির্যাতনমূলক প্রযুক্তি হলো ইসরায়েলের বর্ণবাদী ব্যবস্থার বস্তুগত ভিত্তি।

G4S করপোরেশন ফিলিস্তিনি বন্দিদের কারাবন্দি ও নির্যাতন থেকে মুনাফা লাভকারী একটি সংস্থা। G4S সিকিউরিটি সলুশন নামে G4S করপোরেশনের একটি সহায়ক সংস্থা রয়েছে, যা আগে ওয়াকেনহাট নামে পরিচিত ছিল। সম্প্রতি জিইও গ্রুপ নামে এই করপোরেশনের একটি সহায়ক ব্যক্তিমালিকানাধীন কারাগার সংস্থা ফ্লোরিডা আটলান্টিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মিলিয়ন ডলার অনুদানের বিনিময়ে নামকরণের অধিকার দাবি করার চেষ্টা করেছিল। ছাত্ররা তখন বিদ্রোহী হয়ে বলেছিল, আমাদের ফুটবল স্টেডিয়ামটি কোনো প্রাইভেট কারাগার করপোরেশনের নাম বহন করবে না! ছাত্ররা তাদের দাবিতে জয়ী হয়েছিল।

ক্যালিফোর্নিয়া বা টেক্সাস বা ইলিনয়েস থেকে শুরু করে ইসরায়েল ও দখলকৃত প্যালেস্টাইন এবং তারপরে ফ্লোরিডায় এসব ঘটনা ঘটতে দেওয়া উচিত হয়নি। গত তিন দশক ধরে এমন ঘটনা ঘটতে দেওয়া আমাদের উচিত হয়নি। এখন আমরা তা চলতে দিতে পারি না।

আমি তরুণ ছাত্র এবং শ্রমিকদের নতুন প্রজন্মকে সত্যিই ভালোবাসি। আমার পর দুটি প্রজন্ম এসেছে; তারা বলে কখনো কখনো বিপ্লব একটি প্রজন্মকে এড়িয়ে চলে। তবে সেই বাদপড়া প্রজন্মও কঠোর পরিশ্রম করেছে! আপনারা যারা চল্লিশের কোঠায় রয়েছেন, আপনারা যদি কাজটি না-করতেন, তবে তরুণ প্রজন্মের পক্ষে আবির্ভাব সম্ভব হতো না। আমি তরুণ প্রজন্মের সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যা পছন্দ করি তা হলো, তারা সত্যিই নারীবাদের ব্যাপারে অবহিত।

এমনকি তারা তা না-জানলেও বা স্বীকার না-করলেও! বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে তারা অনেক কিছু জেনে গেছে। তারা মানসিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সমকাম বিদ্বেষে আক্রান্ত নয়; যা আমাদের প্রজন্মকে ভুগিয়েছে দীর্ঘকাল। তারা বর্ণবাদ এবং ইসলামবিদ্বেষ মোকাবিলার পাশাপাশি ট্রান্সফোবিয়াবিরোধী সংগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাই আমি তরুণদের সঙ্গে কাজ করা পছন্দ করি। কারণ, দশকের-পর-দশক নিপীড়ক আদর্শের চাপে জর্জরিত না-থাকার ব্যাপারটি তারা আমাকে কল্পনা করতে দেয়।

নির্দিষ্টভাবে যুবকদের কারণে বিয়ের সাম্য আরও বেশি করে গ্রহণযোগ্য। তবে এই যুবকদের মধ্যে অনেকে আবার এটাও মনে করিয়ে দেন যে, বিয়ের সাম্যের জন্য লড়াইয়ের অন্তর্ভুক্তিমূলক যুক্তিটিকে আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে হবে! আমরা ধরে নিতে পারি না, বিয়ে নামের এই বুর্জোয়া পিতৃতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের চক্রে বহিরাগতদের প্রবেশের একবার অনুমতি দেওয়া হলেই, লড়াইটি জয়লাভ করেছে।

এখন নারীবাদ এবং বিলোপবাদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কমূলক গল্পের কোনো যথাযথ শেষ নেই। এই আলোচনার মধ্যদিয়ে আমরা সবেমাত্র এর কয়েকটি মাত্রা আবিষ্কার করতে শুরু করেছি। তবে যদিও গল্পের শেষ হয়নি, আমি কিন্তু আমার সময়ের শেষে চলে এসেছি। তাই আজ রাতে আমি আসসাটা শাকুরের কথা দিয়ে শেষ করতে চাই। তিনি কয়েক বছর আগে লিখেছিলেন:

এই মুহূর্তে আমি নিজের সম্পর্কে তেমন উদ্বিগ্ন নই। প্রত্যেককেই কোনো-না-কোনো সময় মরতে হয়। মর্যাদার সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে পারা হলো আমার একমাত্র চাওয়া। ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, আমেরিকার ক্রমবর্ধমান হতাশা সম্পর্কে আমি উদ্বিগ্ন। আমাদের ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্বকারী তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আমি বেশি উদ্বিগ্ন। আমি বেশি উদ্বিগ্ন কারাগার-শিল্প কমপ্লেক্সের উত্থান সম্পর্কে, যা আমাদের জনগণকে আবার দাসে পরিণত করছে। আমি বেশি উদ্বিগ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত নিপীড়ন, পুলিশের বর্বরতা, সহিংসতা, ক্রমবর্ধমান বর্ণবাদের তরঙ্গ নিয়ে। তরুণদের জন্য একটি ভবিষ্যৎ প্রাপ্য। আমি মনে করি, আমাদের পূর্বপুরুষদের অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে সেই লড়াইয়ের অংশ হতে হবে, যা তরুণদের সেই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।

 

ফাতেমা বেগম: লেখক, অনুবাদক। কানাডা প্রবাসী ফিনান্সিয়াল কনসালট্যান্ট। ইমেইল: fatemaorama@gmail.com

 

Social Share
  •  
  •  
  • 131
  •  
  •  
  •  
  •  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *