রোজা লুক্সেমবার্গের ‘দি অ্যাকিউমুলেশন অব ক্যাপিটাল’
আতিয়া ফেরদৌসী
বিশ্বের বিপ্লবী চিন্তাবিদদের মধ্যে রোজা লুক্সেমবার্গ অন্যতম পথিকৃৎ। জার্মানসহ ইউরোপের বিপ্লবী সংগ্রামের সংগঠক এবং বিশ্ব বিপ্লবের তাত্ত্বিক হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হলেও বাংলাদেশে তাকে নিয়ে আলোচনা খুবই কম। তিনি একজন তাত্ত্বিক, বিপ্লবী এবং আরও বেশি কিছু। তার কঠোর সংগ্রামী জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র, বিজ্ঞান, কলা ও প্রকৃতির প্রতি তার একনিষ্ঠ অনুরাগ এবং সর্বোপরি প্রেম তাকে অনন্য অবস্থানে নিয়ে গেছে। অল্প বয়স থেকেই তিনি ছিলেন মার্ক্সের সমর্থক, যদিও তিনি তার তাত্ত্বিক বিশ্লেষণকে মার্ক্সের সমালোচনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়েছেন। গত সংখ্যায় তাঁর পরিচিতি প্রকাশিত হয়েছিল, এই সংখ্যায় তাঁর লেখা গ্রন্থ অ্যাকিউমুলেশন অব ক্যাপিটাল নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো, সেই সাথে তাঁর লেখার তালিকা।
রোজা লুক্সেমবার্গ-এর ‘দি অ্যাকিউমুলেশন অব ক্যাপিটালকে’ বলা হয়ে থাকে অর্থশাস্ত্রের ওপর লেখা অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ, যা মার্কস-এর রাজনৈতিক-অর্থনীতির ধারণার এক গুরুত্বপূর্ণ বিকাশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লুক্সেমবার্গ এখানে মূলত ডাস ক্যাপিটাল-এর দ্বিতীয় খণ্ড পর্যালোচনা করেছেন এবং একটি তাত্ত্বিক কাঠামো গঠন করার মাধ্যমে পুঁজিবাদী পুনরুৎপাদনের সংকটকে ব্যাখ্যা করেছেন। এই গ্রন্থ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৩ সালে। এটি লেখা হয়েছিল জার্মান ভাষায়। আজকের লেখায় আমরা অ্যাগনেস শোয়ার্জচাইল্ড (ডক্টর ইউরিস)-এর অনূদিত কপি নিয়ে আলোচনা করব। মান্থলি রিভিউ প্রকাশনী ১৯৬৪ সালে জোয়ান রবিনসনের ভূমিকাসহ এই বই প্রকাশ করে।
এ বইটি মোট ৩টি পর্বে লেখা। প্রথম পর্ব ‘পুনরুৎপাদনের সমস্যা’-তে লেখক তার অনুসন্ধানের উত্তর খুঁজতে একটি মডেলের অবতারণা করেছেন। এই পর্ব আদিম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে বর্তমানের পুঁজিবাদী অর্থনীতির সময়কালে পুঁজির পুঞ্জীভবন ও পুনরুৎপাদনের সংজ্ঞায়ন করেছে এবং সেই সঙ্গে উত্থাপন করেছে কয়েকটি জরুরি প্রশ্ন, যেমন: পুঁজি পুঞ্জীভবনের প্রণোদনা কী? কিংবা পুঁজিবাদীরা কীভাবে তাদের উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করে এবং সামগ্রিকভাবে সমাজ কীভাবে এতে সাড়া দেয়।
এই পর্বে রয়েছে ৯টি অধ্যায়। লেখক এখানে পূর্ববর্তী অর্থনীতিবিদদের কথা উল্লেখ করেছেন, যেমন: কুয়েজনে, অ্যাডাম স্মিথ এবং অবশ্যই কার্ল মার্কস। রোজা দেখিয়েছেন কীভাবে কার্ল মার্কস সাধারণ পুনরুৎপাদনের পরিস্থিতিকে সফলতার সঙ্গে আলোচনা করেছেন, কিন্তু পুঁজি পুঞ্জীভবনের প্রেক্ষিত থেকে পুনরুৎপাদনকে ব্যাখ্যা করতে সফল হননি।
লেখক দ্বিতীয় পর্ব ‘সমস্যার ঐতিহাসিক প্রকাশ’-কে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। তিনি পূর্ববর্তী অর্থনীতিবিদদের কাজগুলোকে বিশ্লেষণ করতে যথেষ্ট সময় ও শ্রম দিয়েছেন এ ক্ষেত্রে। তিনি শুরু করেছেন এভাবে:
এটি গুরুত্বপূর্ণ যে অর্থনীতির ইতিহাসে পুঁজির পুঞ্জীভবন ও পুনরুৎপাদন প্রশ্নে মাত্র দুটি উল্লেখযোগ্য কাজের সন্ধান পাওয়া যায়: একদম গোড়ার দিকের সমস্যা নিয়ে কাজ করেছেন ফ্রান্সিস কুয়েজনে, যিনি ফিজিওক্র্যাটসের জনক, অপর কাজটি পরিণত পর্যায়ের, যা কার্ল মার্কসের করা।
এই দ্বিতীয় পর্বে রোজা মূলত পূর্ববর্তী অর্থনীতিবিদদের কাজের কঠোর সমালোচনা করেছেন। স্পষ্টতই, সিস্মন্ডি, ম্যালথাস, সে, রিকার্ডো, ম্যাককুলোখ কারো কাজই লুক্সেমবার্গের অনুসন্ধানের যথাযথ উত্তর দিতে সক্ষম হয়নি। সিস্মন্ডি, ম্যালথাস, ভরনস্তভকে তিনি বরং অনেক কম সহানুভূতি দেখিয়েছেন, যারা সঞ্চয় ও বিনিয়োগের সাম্যাবস্থা (ইকুইলিব্রিয়াম) প্রশ্নে অনিশ্চিত ছিলেন (তিনি বরং সিস্মন্ডিকে তুলনামূলকভাবে বেশি দয়া দেখিয়েছেন এবং মার্কস সিস্মন্ডিকে তার প্রাপ্য যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি বলে মত দিয়েছেন)। (রবিনসন, ১৯৬৪) আর কিছু অর্থনীতিবিদের কাজও তিনি উল্লেখ করেছেন, যেমন: রোডবার্টাস, কার্জম্যান, স্ট্রুভ, বালগাকভ, বারানভস্কি, ভারানস্তভ ও নিকলায়ান।
তৃতীয় পর্ব এই বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ পর্ব, যেখানে তিনি সাম্রাজ্যবাদ ধারণা ব্যাখ্যা করেছেন, এবং এর মাধ্যমে তিনি তার পূর্বে উল্লিখিত সমস্যার স্বরূপ উল্লেখ করে এর পরিণতি দেখিয়েছেন। অনেক মার্কসীয় অর্থনীতিবিদ স্বীকার করেছেন যে এই পুঁজি পুঞ্জীভবনের ধরন পর্যালোচনা এবং সাম্রাজ্যবাদের চেহারা উন্মোচনের জায়গাটিতে তিনি মার্কসের থেকে অগ্রসর হতে সমর্থ হয়েছেন।
লুক্সেমবার্গ মার্কসের অসংখ্য পরিভাষা (টার্মিনোলজি) ব্যবহার করেছেন। তিনি ডাস ক্যাপিটালের দ্বিতীয় খণ্ডে উল্লিখিত সাধারণ পুনরুৎপাদন ও বর্ধিত পুনরুৎপাদন (পুঁজির পুঞ্জীভবনের মাধ্যমে উৎপাদন)-এর সংখ্যাগত উদাহরণ থেকে নিজের কাজের যাত্রা শুরু করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে, মার্কস সাধারণ পুনরুৎপাদনের মডেল নিয়ে তাঁর কাজ শেষ করেছেন, কিন্তু পুঞ্জীভবন-জাত পুনরুৎপাদনের মডেল নিয়ে তিনি তাঁর কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। এ বিষয়ে মার্কসের মৃত্যুশয্যায় লেখা কিছু অগোছালো নোট পাওয়া যায় মাত্র।
লুক্সেমবার্গ আমাদের মনে করিয়ে দেন যে,
‘পুনরুৎপাদন নিছক পুনরাবৃত্তি থেকে বেশি কিছু, যেহেতু এটি প্রকৃতির ওপর (কিংবা অর্থনীতির ভাষায় শ্রম-উৎপাদনশীলতার ওপর) সমাজের একটি নির্দিষ্ট মাত্রার ক্ষমতাকে নিশ্চিত করে। সামাজিক উন্নয়নের সকল স্তরে, উৎপাদনের প্রক্রিয়া নির্ভর করে দুটি ভিন্ন কিন্তু নিবিড় সম্পর্কযুক্ত চলমান ফ্যাক্টর-এর ওপর, যা হলো টেকনিক্যাল ও সামাজিক শর্ত‒আরও নির্দিষ্ট করে বললে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের ওপর। পুনরুৎপাদনও একই মাত্রায় এই উভয় শর্তের ওপর নির্ভরশীল।’
লুক্সেমবার্গ এ সমস্যাকে গাণিতিকভাবে প্রকাশের জন্য একটি মডেল গঠন করেন এবং এই মডেলকে বিস্তৃত করার মাধ্যমে এই লেখা অগ্রসর হয়েছে। উল্লিখিত মডেলে: (কোনো রকম আমদানি/রপ্তানিবিহীন অর্থনীতির ক্ষেত্রে), ধরা যাক, ১ বছরের
মোট জাতীয় আয়= C+V+S
যখন,
C= অপরিবর্তনীয় পুঁজি
V= পরিবর্তনীয় পুঁজি
S= উদ্বৃত্ত মূল্য
পরিবর্তনীয় পুঁজি V হলো বার্ষিক শ্রম মজুরি। উদ্বৃত্ত মূল্য S হলো বার্ষিক রাজস্ব, সুদ ও নেট মুনাফা। সুতরাং V+S হলো নেট জাতীয় আয়।
উল্লেখ্য, এখানে অপরিবর্তনীয় পুঁজি C= মোট উৎপাদনের মধ্যে উৎপাদিত উপাদান ও মূলধনের সরঞ্জাম+বছরের শুরুতে বিদ্যমান মোট মূলধন বজায় রাখার প্রয়োজনীয় খরচ (একই সময়ে)। যখন সব পণ্য স্বাভাবিক দামে বিক্রি হয়, তখন এই দুই-এর পরিমাণ সমান হবে। ষষ্ঠ অধ্যায়ে তিনি উল্লেখ করেছেন যে এই মডেলে কোনোরকম প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বিবেচনা করা হয়নি, (লেখক মডেলের স্বার্থে এই সরলীকরণ ব্যবহার করেছেন)।
সাধারণ পুনরুৎপাদন মডেলের ক্ষেত্রে আমরা দেখি বার্ষিক জাতীয় আয়ের মোট মূলধন বৃদ্ধি না করে একই রাখা হয়েছে। সকল উৎপাদিত পণ্য দুটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে‒
বিভাগ ১: যেখানে মূলধনী সরঞ্জাম ও উৎপাদনের কাঁচামাল উৎপাদিত হয় (উৎপাদকের পণ্য)
বিভাগ ২: যেখানে ভোক্তার ভোগ্যপণ্য উৎপাদিত হয়
বিভাগ ১: C1+V1+S1= C1+C2
বিভাগ ২: C2+V2+S2= V1+V2+S1+S2
সুতরাং, C2= V1+S1
এর অর্থ হলো, উৎপাদকের পণ্যের বিভাগের নেট উৎপাদন এবং ভোক্তার পণ্য বিভাগের প্রতিস্থাপিত মূলধনের পরিমাণ সমান। সম্পূর্ণ উদ্বৃত্ত ও সম্পূর্ণ মজুরি এখানে মূলধনে পরিণত হয়েছে। এই মডেলে, একজন পুঁজিবাদী আরেকজনের কাছ থেকে কোনো মূলধন ধার করছে না বলে লেখক ধরে নিয়েছেন বা শর্ত আরোপ করেছেন।
৭ নম্বর অধ্যায়ের শর্ত ও ধারণাগুলোর ওপর ভিত্তি করে আমরা এখানে একটি সরলীকৃত মডেল নিয়ে আলোচনা করব, যা এই বইয়ের ভূমিকায় অর্থনীতিবিদ জোয়ান রবিনসন উপস্থিত করেছেন। এই মডেলে, অপরিবর্তনীয় পুঁজি পরিবর্তনীয় পুঁজির চার গুণ। সঞ্চয়কেও এমনভাবে এই দুইয়ের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে, যাতে এই ৪:১ অনুপাত বজায় থাকে। সঞ্চয়ের চার-পঞ্চমাংশ উৎপাদকের পণ্যের চাহিদার প্রতিনিধিত্ব করে, এবং তা প্রতিবছর অপরিবর্তনীয় পুঁজিতে যোগ হয়। বাকি এক-পঞ্চমাংশ প্রতিনিধিত্ব করে ভোক্তার পণ্যের চাহিদাকে এবং তা মজুরির তহবিলে যোগ হয়। এই অনুপাত দুই বিভাগের আন্তঃসম্পর্ক রক্ষা করে। এখানে আরেকটি প্রয়োজনীয় শর্ত হলো, বিভাগ ১ ও বিভাগ ২-এর উৎপাদনের অনুপাত ১১:৪ বজায় থাকা।
C | V | S | মোট উৎপাদন | |
বিভাগ ১ | ৪৪ | ১১ | ১১ | ৬৬ |
বিভাগ ২ | ১৬ | ৪ | ৪ | ২৪ |
মোট | ৯০ |
প্রথম বিভাগে সঞ্চয় হয়েছে ৫.৫ ইউনিট (উদ্বৃত্তের অর্ধেক), যার মধ্যে ৪.৪ ইউনিট অপরিবর্তনীয় পুঁজিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং বাকি ১.১ ইউনিট বিনিয়োগ হয়েছে পরিবর্তনীয় পুঁজিতে। দ্বিতীয় বিভাগে সঞ্চয় হয়েছে ২ ইউনিট, এর মধ্যে ১.৬ ইউনিট বিনিয়োগ করা হয়েছে অপরিবর্তনীয় পুঁজিতে এবং বাকি ০.৪ ইউনিট বিনিয়োগ করা হয়েছে পরিবর্তনীয় পুঁজিতে। ৬৬ ইউনিট উৎপাদকের পণ্যের মধ্যে (৪৪+৪.৪)= ৪৮.৪ ইউনিট যাবে প্রথম বিভাগের অপরিবর্তনীয় পুঁজিতে এবং (১৬+ ১.৬)= ১৭.৬ ইউনিট যাবে দ্বিতীয় বিভাগের অপরিবর্তনীয় পুঁজিতে। ভোক্তার পণ্যের ২৪ ইউনিটের মধ্যে ১১+৪= ১৫ ইউনিট খরচ হবে ইতোমধ্যে নিয়োগকৃত শ্রমিকের মজুরিতে, উদ্বৃত্তের ৫.৫+২=৭.২ ইউনিট খরচ হবে ভোগ্যপণ্যে, এবং ১.১+০.৪=১.৬ ইউনিট যাবে অপরিবর্তনীয় পুঁজিতে, যা বাড়তি কর্মসংস্থান তৈরি করবে।
এভাবে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পর মজুরির সমানুপাতিক হারে শ্রমশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
C | V | S | মোট উৎপাদন | |
বিভাগ ১ | ৪৮.৪ | ১২.১ | ১২.১ | ৭২.৬ |
বিভাগ ২ | ১৭.৬ | ৪.৪ | ৪.৪ | ২৬.৪ |
মোট | ৯৯ |
এই দুই বিভাগই এখন সমান হারে আরেক দফা বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত এবং ফলে পুঁজির পুঞ্জীভবন প্রক্রিয়া চলমান। লেখক এই অনুপাতকে খুব সচেতনভাবে নির্ধারণ করেছেন, যাতে শ্রমশক্তি এবং মোট উৎপাদন ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়। লুক্সেমবার্গ মূলত মার্কসের ব্যাখ্যা থেকে এই সংখ্যাগত উদাহরণগুলো ব্যবহার করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে সবসময় প্রথম বিভাগই উৎপাদন প্রক্রিয়ার সূচনা করবে।
এরপর তিনি আসল সমস্যার দিকে আঙুল তুলেছেন: এই পুঞ্জীভবন বৃদ্ধির জন্য যে চাহিদা, তা কোথা থেকে আসে? এই প্রশ্ন উত্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুটি সমস্যার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন:
- মূল পুঁজির মজুত বৃদ্ধির জন্য পুঁজিপতিদের প্রণোদনা কোথা থেকে আসে?
- তারা কীভাবে জানেন যে এই পুঁজির ফলে সৃষ্ট বর্ধিত উৎপাদনের চাহিদা বাজারে বিদ্যমান, যার কারণে তারা তাদের উদ্বৃত্ত মূল্যকে লাভজনক পন্থায় পুঁজিতে পরিণত করতে উদ্বুদ্ধ হন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে বইয়ের তৃতীয় বা শেষ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মার্কসের নিজের উত্তর লুক্সেমবার্গ উল্লেখ করেছেন প্রথম অধ্যায়েই। মার্কস দেখিয়েছেন যে পুঁজিবাদীদের নিজেদের মধ্যকার প্রতিযোগিতা তাদের পুঁজি বৃদ্ধির প্রণোদনা দেয়, যাতে তারা অধিক উৎপাদনের সুবিধা (ইকোনমিস অব স্কেল) গ্রহণ করতে পারে। কারণ, সে যদি তা না করে, তার প্রতিপক্ষ সেই সুবিধা নেবে এবং ফলশ্রুতিতে তাকে কম দামে নিজের পণ্য বিক্রি করতে হবে।
লুক্সেমবার্গ এ ক্ষেত্রে দেখিয়েছেন, সংখ্যাগত উদাহরণ এ ক্ষেত্রে এই ব্যাখ্যা প্রদানে ব্যর্থ হয় এবং এটাই এ ধরনের ঘটনার মূল বৈশিষ্ট্য। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন: যদি পুঁজির পুঞ্জীভবন ঘটে, মডেল অনুযায়ী, বাড়তি উৎপাদনের চাহিদা তৈরি হবে। কিন্তু এই পুঞ্জীভবনের আসল কারণ কোথায় নিহিত? দ্বিতীয় অধ্যায়ে লেখক এই প্রশ্নের পূর্ববর্তী উত্তরগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। জোয়ান রবিনসন মন্তব্য করেছেন, এ অধ্যায়ে যেসব লেখককে নিয়ে লুক্সেমবার্গ আলোচনা করেছেন, তাদের নিয়ে তিনি যথেষ্ট উপহাস/রসিকতা করতে ছাড়েননি।
বইয়ের তৃতীয় অধ্যায়টি প্রথম দুটি থেকে যথেষ্ট দীর্ঘ এবং জোরালো। এখানে লুক্সেমবার্গ আবারও মার্কসের কাছে ফেরত গিয়েছেন, যেখানে পুঁজিবাদী মডেলে পুঁজির পুঞ্জীভবন ঘটছে। এখানে তিনি এক নতুন মডেলের অবতারণা করেছেন, যেখানে প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটছে। তিনি সেখানে দেখিয়েছেন যে, কীভাবে শোষণের মাত্রা (মজুরি ও উদ্বৃত্ত মূল্যের অনুপাত) বৃদ্ধি পায়, যেখানে প্রকৃত আয় (রিয়েল ইনকাম) অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু একই সময়ে মাথাপিছু উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সরলীকরণের স্বার্থে এ ক্ষেত্রে উদ্বৃত্তের যে অংশ সঞ্চয় হচ্ছে, তাকে অপরিবর্তনীয় রাখা হয়েছে (যদি প্রকৃতপক্ষে এটি যে পুঁজিবাদীর প্রকৃত আয়ের সমানুপাতিক হারে বৃদ্ধি পায়, সে সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন)। প্রযুক্তির অগ্রসরতার কারণে অপরিবর্তনীয় পুঁজি এবং পরিবর্তনীয় পুঁজির অনুপাতও সময়ের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়।
গাণিতিক এই মডেল দেখায় যে, এই পুরো ব্যবস্থা এক কানাগলির দিকে ছুটে চলেছে। কারণ, প্রথম বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় অপরিবর্তনীয় পুঁজি তৈরি হচ্ছে না, অথচ দ্বিতীয় বিভাগে অতিরিক্ত ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন ঘটছে। প্রথম বিভাগে বিনিয়োগকৃত পুঁজির পুঞ্জীভবন ঘটছে দুই বিভাগের পুঁজিপতিদের সঞ্চয়ের হারের থেকে দ্রুত এবং একই সময়ে তাদের নিজেদের শিল্পকারখানার বিপণন কেন্দ্র বা আউটলেটগুলো আর লাভজনক থাকছে না। এখানেই তৈরি হচ্ছে সবচেয়ে বড় অসংগতি। এই ‘অতিরিক্ত সঞ্চয়’ তখনই পুঁজিতে পরিণত করা যাবে, যখন এই সিস্টেমের বাইরের কোনো আউটলেটে তা বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে।
জোয়ান রবিনসন বলছেন,
‘২৬তম অধ্যায়ে তিনি (রোজা) তার থিসিসের মূল অংশকে এগিয়ে নিয়েছেন এভাবে: পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এর আদি ব্যবস্থাকে দখল করে নিয়েছিল, যার ফলে এ ব্যবস্থা টিকে থেকেছে। যে ভয়ানক প্রক্রিয়ায় তা সম্পন্ন হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বাণিজ্য, দখল ও চুরি। এভাবে পুঁজিবাদ গিলে খেয়েছে প্রাক-পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে। পুঁজি থেকে আগত মুনাফার বদলে সে সময় আয়ের উৎস ছিল মূলত ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদের দখলদারিত্ব।’ (রবিনসন, ১৯৬৪)
লুক্সেমবার্গ এ ক্ষেত্রে কিছু আধুনিক পন্থার কথা উল্লেখ করেছেন, যার মাধ্যমে পুঁজিবাদীরা আধুনিক সময়ে অন্য দেশ ও বাজার দখল করে থাকে, যেমন: আন্তর্জাতিক ঋণ, সুরক্ষামূলক ট্যারিফ এবং বিশেষত সামরিকীকরণ। তার বইয়ের শেষ তিন অধ্যায়ে এই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
লুক্সেমবার্গ এ ক্ষেত্রে কিছু আধুনিক পন্থার কথা উল্লেখ করেছেন, যার মাধ্যমে পুঁজিবাদীরা আধুনিক সময়ে অন্য দেশ ও বাজার দখল করে থাকে, যেমন: আন্তর্জাতিক ঋণ, সুরক্ষামূলক ট্যারিফ এবং বিশেষত সামরিকীকরণ।
৩০তম অধ্যায়ে লুক্সেমবার্গ পুঁজিবাদের থেকে সাম্রাজ্যবাদের দিকে ধাবিত হওয়ার পর্যায় বা ধাপগুলোর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যার মধ্যে আছে ঋণ প্রদান, রেললাইন নির্মাণ, পরিবর্তন ও যুদ্ধ। পরিবর্তন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে তাদের জীর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন, প্রাকৃতিক ও সাধারণ পণ্যের অর্থনীতির ধ্বংসাবশেষকে ছুড়ে ফেলতে হবে এবং পুঁজিবাদী উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে…। এই কারণেই লুক্সেমবার্গ বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক সংস্কার ও সামরিকীকরণ সবসময়ই অর্থনৈতিক স্বাধীনতার বুলি আওড়াতে থাকে।’
পুঁজির পুঞ্জীভবনের ক্ষেত্রে ঋণের বেশ কয়েকটি ভূমিকা রয়েছে‒
ক) এটি পুঁজিবাদী নয় এমন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অর্থকেও পুঁজিতে পরিণত করতে সাহায্য করে।
খ) এটি আর্থিক পুঁজিকে উৎপাদনমুখী পুঁজিতে পরিণত করে নানা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে যেমন: রেললাইন স্থাপন, মিলিটারি জোগান ইত্যাদি।
গ) এটি পুঞ্জীভূত পুঁজিকে পুরোনো পুঁজিবাদী রাষ্ট্র থেকে নতুন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে সঞ্চালন করে।
সুরক্ষামূলক ট্যারিফ শক্তিশালী রাষ্ট্রকে তাদের পক্ষে সুবিধাজনক বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিমালা গ্রহণ করতে সাহায্য করে, ফলে লাভবান হয় সেখানকার পুঁজিবাদী শ্রেণি। যেমনটি লুক্সেমবার্গ বলেছেন: ‘রাজনৈতিক ক্ষমতা আদতে শক্তিশালী অর্থনৈতিক বাহন ছাড়া কিছুই নয়।’ তিনি এই কুৎসিত সত্যকেও সামনে টেনে এনে দেখিয়েছেন যে, পরোক্ষ করের মাধ্যমে মূলত সামরিক বাহিনী চালানোর খরচের জোগান দেয় দেশের শ্রমজীবী মানুষ ও কৃষক।
সবশেষ ৩২তম অধ্যায়ে লুক্সেমবার্গ দেখিয়েছেন কীভাবে সামরিক বাহিনী পুঁজিবাদের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। তিনি এ অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়েছেন ‘পুঁজি পুঞ্জীভবনের পরিসর হিসেবে সামরিকীকরণ’। তিনি এ প্রসঙ্গে ২৮তম অধ্যায়ে একদম সঠিক উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আফিম যুদ্ধের কথা। উনিশ শতকের শুরুতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আফিমের দাম এত কমিয়ে দেয় যে এটি রাতারাতি মানুষের প্রতিদিনের ‘বিলাসী অনুষঙ্গে’ পরিণত হয়। সে সময় চীনের আমদানি ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। এর কিছুদিনের মধ্যে যখন আফিমের ভয়ানক উপসর্গগুলো সামাজিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে এবং মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস করতে শুরু করে, তখন চীন সরকার এই আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ততদিনে চীনের অসংখ্য মানুষের কাছে আফিম একটি প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ (মূলত এভাবেই এ ধরনের ড্রাগস কাজ করে থাকে)।
এর বিপরীতে ইংল্যান্ড চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ইংল্যান্ডের আধুনিক অস্ত্রের কাছে চীনের সাধারণ বন্দুক ছিল নিতান্তই খেলনার মতো। ফলে ‘মুক্ত বাজারের’ নামে বহু চীনা মানুষকে চোখের পলকে জীবন দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে ১৮৪২ সালে আফিম যুদ্ধের সমাপনী পর্যায়ে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী চীনের সব গুরুত্বপূর্ণ বন্দর দখলে নিয়ে নেয় এবং চীনের কাছ থেকে হংকংয়ের মালিকানা ব্রিটেনের কাছে চলে যায়। লুক্সেমবার্গ আরও উল্লেখ করেছেন কীভাবে এই আফিম যুদ্ধের সময়কালে ইউরোপীয় সভ্যতা চীনের রাজপ্রাসাদ ও অন্যান্য সরকারি ভবনে ব্যাপক লুটতরাজ চালিয়েছে এবং মূলত এটাই প্রায় সব ইউরোপীয় সভ্যতার অগ্রগতির মূল পন্থা। তিনি আরও বেশ কটি উদাহরণ হাজির করে মন্তব্য করেন:
‘পুঁজিবাদের জন্য একমাত্র উপায় হিসেবে খোলা রয়েছে জবরদস্তি; কেবল জন্মলগ্নে নয়, বরং বর্তমান সময়েও পুঁজির পুঞ্জীভবনের ঐতিহাসিক যাত্রায় বারবার জবরদস্তি একটি নিয়ত স্থায়ী পন্থা হিসেবে আমাদের সামনে হাজির হয়।’
‘পুঁজিবাদের জন্য একমাত্র উপায় হিসেবে খোলা রয়েছে জবরদস্তি; কেবল জন্মলগ্নে নয়, বরং বর্তমান সময়েও পুঁজির পুঞ্জীভবনের ঐতিহাসিক যাত্রায় বারবার জবরদস্তি একটি নিয়ত স্থায়ী পন্থা হিসেবে আমাদের সামনে হাজির হয়।’
সীমাবদ্ধতা
রোজা লুক্সেমবার্গ তাঁর বিশ্লেষণে যথেষ্ট দূরদর্শিতার পরিচয় দিলেও কিছু বিষয় যে তার নজর এড়িয়ে যায়নি সে কথা বলা যাবে না। তাঁর মডেলে তিনি ধরে নিয়েছেন যে, যখন উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পায়, তখন প্রতি শ্রমিকের জন্য মাথাপিছু উৎপাদকের পণ্যের হারও বৃদ্ধি পায়। ফলে, c এবং v-এর অনুপাত বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মার্কস ইতোমধ্যে আমাদের সচেতন করে দিয়েছেন যে, যখন উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, তখন পণ্যের মূল্য, যা স্থায়ী পুঁজি তৈরি করে, তা হ্রাস পেতে থাকে। ফলে মাথাপিছু শ্রমিকের জন্য নিয়োজিত পুঁজির মূল্য না-বেড়েই উৎপাদনের হার বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অগ্রসরতা হতে পারে ‘নিরপেক্ষ’।
এ ছাড়াও পুঁজিবাদের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকের প্রকৃত আয় বৃদ্ধির বিষয়টি তিনি উপেক্ষা করেছেন এবং সেই সঙ্গে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের প্রণোদনার বিষয়টিও। তবে এই দুটি বিষয় বা শর্ত পুঁজিবাদকে সেসব সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারে, যা তিনি তার বইয়ে বারবার উল্লেখ করেছেন। (রবিনসন, ১৯৬৪)।
রোজা লুক্সেমবার্গ এর লেখা ও বক্তৃতাঃ
লেখা ও বক্তৃতা |
প্রকাশের সাল |
What Are the Origins of May Day? | ১৮৯৪ |
The Polish Question at the International Congress in London | ১৮৯৬ |
Social Democracy and the National Struggles in Turkey | ১৮৯৬ |
The Industrial Development of Poland | ১৮৯৮ |
Opportunism and the art of the possible | ১৮৯৮ |
Speeches to Stuttgart Congress | ১৮৯৮ |
Speech to the Hanover Congress | ১৮৯৯ |
In Defense of Nationality Worker’s Party | ১৯০০ |
Reform or Revolution | ১৯০০ |
The Socialist Crisis in France | ১৯০১ |
To the National Council of the French | ১৯০১ |
Martinique | ১৯০১ |
The Eight Hour Day at the Party Congress | ১৯০২ |
An anti-clerical policy of Socialism | ১৯০৩ |
In Memory of the Proletarian Party | ১৯০৩ |
The Dreyfus Affair and the Millerand Case | ১৮৯৯ |
Militia and Militarism | ১৮৯৯ |
Marxist Theory and the Proletariat | ১৯০৩ |
Stagnation and Progress of Marxism | ১৯০৩ |
Lassalle and the Revolution | ১৯০৩ |
In the Storm | ১৯০৪ |
Social Democracy and Parliamentarism | ১৯০৪ |
Organizational Questions of the Russian Social Democracy [aka Leninism or Marxism?] | ১৯০৪ |
The Polish Question and the Socialist Movement | ১৯০৫ |
The Revolution in Russia | ১৯০৫ |
Socialism and the Churches | ১৯০৫ |
The Mass Strike | ১৯০৫ |
Riot and Revolution | ১৯০৬ |
Blanquism and Social Democracy | ১৯০৬ |
Two Methods of Trade-Union Policy | ১৯০৭ |
25th anniversary of Marx’s death | ১৯০৮ |
The First May as a Day of Working-Class Struggle | ১৯০৮ |
The Party School | ১৯০৮ |
The National Question | ১৯০৯ |
Revolutionary Hangover | ১৯০৯ |
Special Problems of Poland | ১৯০৯ |
The Next Step | ১৯১০ |
Theory & Practice [A polemic against Comrade Kautsky’s theory of the Mass Strike] | ১৯১০ |
Concerning Morocco | ১৯১১ |
Peace Utopias | ১৯১১ |
Mass Action | ১৯১১ |
An Amusing Misunderstanding | ১৯১১ |
To the Unity Conference of the Socialist Organizations in Manchester | ১৯১১ |
Women’s Suffrage and Class Struggle | ১৯১২ |
The Fallen Women of Liberalism | ১৯১২ |
What Now? | ১৯১২ |
The Idea of May Day on the March | ১৯১৩ |
Down With Reformist Illusions—Hail the Revolutionary Class Struggle! | ১৯১৩ |
The Political Mass Strike | ১৯১৩ |
Lassalle’s Legacy | ১৯১৩ |
The Accumulation of Capital | ১৯১৩ |
The Accumulation of Capital: An Anti-Critique | ১৯১৫ |
Rebuilding the International | ১৯১৫ |
The Junius Pamphlet (The Crisis of Social Democracy) | ১৯১৫ |
Theses on the Tasks of International Social-Democracy | ১৯১৫ |
Either/Or | ১৯১৬ |
The Old Mole | ১৯১৬ |
The Russian Revolution | ১৯১৮ |
Life of Korolenko | ১৯১৮ |
The Russian tragedy | ১৯১৮ |
Oh! How – German is this Revolution! | ১৯১৮ |
The Beginning | ১৯১৮ |
A Duty of Honor (Alternate Translation: Against Capital Punishment) | ১৯১৮ |
The National Assembly | ১৯১৮ |
A Call to the Workers of the World | ১৯১৮ |
The Acheron in Motion | ১৯১৮ |
Five Letters from Prison | ১৯১৮ |
Letters from Prison to Sophie Liebknecht | ১৯১৬- ১৯১৮ |
The Socialisation of Society (Alternate Translation: What is Bolshevism?) | ১৯১৮ |
What does the Spartacus League Want? | ১৯১৮ |
The Elections to the National Assembly | ১৯১৮ |
Our Program and the Political Situation (Alternate Translation: On the Spartacus Programme) | ১৯১৯ |
What are the Leaders Doing? | ১৯১৯ |
House of Cards | ১৯১৯ |
Order Prevails in Berlin | ১৯১৯ |
What is Economics? (PF) | মৃত্যুর পর |
আতিয়া ফেরদৌসী: ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিসি অ্যানালিস্ট, সিটি অব নরফোক গভ.,ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
ই-মেইল: chaity.srsp@gmail.com
তথ্যসূত্র
১) লুক্সেমবার্গ, রোজা, (১৯১৩), দি অ্যাকিউমুলেশন অব ক্যাপিটাল; মান্থলি রিভিউ প্রেস (১৯৬৪), অনুবাদ: অ্যাগনেস শোয়ার্জচাইল্ড, ভূমিকা: জোয়ান রবিনসন।