ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ: নিজস্বতার সন্ধান ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ: নিজস্বতার সন্ধান ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

রেং ইয়ং ম্রো

আমার মতো যেসব তরুণ প্রজন্ম ম্রো মাতৃভাষার ব্যাপক চর্চা ও বিকাশের ব্যাপারে আগ্রহী এবং একই সঙ্গে ভাষা হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় চিন্তিত, তাদের জন্য ২০২২ সালের সবচেয়ে বেশি খুশির সংবাদ সম্ভবত ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ প্রকাশিত হওয়া। এই ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে অসাধারণ! এ রকম অসাধারণ ব্যাপার উপহার দেওয়ার জন্য এবং ব্যাকরণ রচনার মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য ম্রো লেখক ইয়াঙান ম্রোকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে যেহেতু ব্যাকরণ একটা ভাষার জন্য একেবারে গোড়ার বিষয় এবং এই ব্যাপারটার ওপরই ভাষার চর্চা, বিকাশ প্রভৃতিকে কাঠামোবদ্ধ করে ফেলার একটা চেষ্টা থাকবে, সেহেতু রচিত ব্যাকরণের স্বরূপ, ভাষার সঙ্গে তার সংযোগের বিষয়-আশয়গুলোর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করছি।

প্রত্যেক ভাষার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও গতিময় পথচলার নিজস্ব রীতি রয়েছে। ভাষাকে কাঠামোবদ্ধ করার প্রক্রিয়ায় সেই নিজস্বতাকে প্রাধান্য দিয়ে ব্যাকরণ রচনা করা জরুরি। এ বিবেচনা থেকে এটা প্রত্যাশিত হবে যে, ম্রো ভাষার ব্যাকরণ একেবারেই নিজস্ব উপাদানগুলো নিয়ে নিজস্ব ধাঁচ ও কাঠামোতে নির্মিত হবে এবং অন্য কোনো মূলধারার ভাষার কাঠামো ও ব্যাকরণের হুবহু অনুকরণ এড়িয়েই কাজটা করা হবে। সেগুলো বরং ম্রো ভাষার জন্য বাহুল্য ও এই ভাষার স্বকীয় সৌন্দর্যের জন্য অন্তরায়। কথা প্রসঙ্গে এই বিষয়টি উল্লেখ করতে চাই যে, আমি ২০১৮ সালের শুরুর দিকে ম্রো ভাষার লিখিত রূপের ধরন-ধারণকে মূল স্রোতধারার মানুষের (বিশেষত বাংলা ও ইংরেজিভাষী মানুষ) জায়গা থেকে বোঝার সুবিধার্থে ব্যাকরণের কোন কোন বিষয় বিশ্লেষণ করা যেতে পারে তার ‍ওপর কাজ করেছিলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষের দিকে সেই একই কাজ গবেষণাকর্ম হিসেবে জমা দিই। এই কাজ করতে গিয়ে আমার উপলব্ধি হয়েছিল যে, এই বিশ্লেষিত ব্যাকরণ মূলত ম্রো ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণ নয়। এখানে বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণের কাঠামো ব্যবহার করে ম্রো ভাষাকে বোঝার একটা প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে মাত্র। ম্রো ভাষায় একেবারেই নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন, উচ্চারণের ধরন, স্বরের উত্থান-পতন রয়েছে, যেগুলো প্রচলিত বাংলা বা ইংরেজি ব্যাকরণের কাঠামোতে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সেসব ব্যাকরণের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তর গবেষণা চালানোর প্রয়োজন রয়েছে। ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ বই হিসেবে রচিত গ্রন্থে এই উপাদানগুলোর উপস্থিতি রয়েছে কি না এবং ব্যাকরণ রচনার উদ্দেশ্য পরিপূরণে এটি কতটা সার্থক হয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করেছি এ লেখায়।

এই বিশ্লেষিত ব্যাকরণ মূলত ম্রো ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণ নয়। এখানে বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণের কাঠামো ব্যবহার করে ম্রো ভাষাকে বোঝার একটা প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে মাত্র। ম্রো ভাষায় একেবারেই নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন, উচ্চারণের ধরন, স্বরের উত্থান-পতন রয়েছে, যেগুলো প্রচলিত বাংলা বা ইংরেজি ব্যাকরণের কাঠামোতে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

প্রথম ম্রো ব্যাকরণ হিসেবে প্রকাশিত বইয়ে এই ভাবনার যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি বলে মনে হয়েছে। বইটিতে ব্যাকরণের মৌলিক বিষয়বস্তুর সংযোজন করা হলেও এর বিস্তৃত ও গবেষণালব্ধ আলোচনা উঠে আসেনি। ব্যাকরণের মৌল বিষয়বস্তুর সংজ্ঞা ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অল্পবিস্তর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। সংজ্ঞায়নের সঙ্গে সঙ্গে ভাষায় এর উপস্থিতি চিহ্নিত করা এবং এর ব্যবহার সংক্রান্ত স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া জরুরি, যেটি এখানে অনুপস্থিত। ভাষার ব্যাকরণের যে মৌলিক বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে, সেগুলো ম্রো নামের পাশাপাশি বাংলায়ও প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন: ধ্বনি, বর্ণমালা, অক্ষর, শব্দ, ভাষা, ব্যাকরণ, পুরুষ, ক্রিয়ার কাল, বচন, বাক্যের প্রকারভেদ, বিরামচিহ্ন, লিঙ্গ, এককথায় প্রকাশ, ধাঁধা, প্রবাদ-প্রবচন ইত্যাদি। এটি করতে গিয়ে ব্যাকরণের বিষয়বস্তুর ধারণাসমূহে বাংলা ব্যাকরণের প্রভাব ও কিছু কিছু জায়গায় তার অনুকরণ করা হয়েছে। এর ফলে ম্রো ভাষার নিজস্ব উপাদান উপেক্ষিত রয়ে গেছে। যেমন, বইটিতে দুটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে সমোচ্চারিত/ভিন্নার্থক শব্দ এবং প্রতিশব্দ। ম্রো ভাষা স্বর (Tone)-নির্ভর হওয়ায় স্বরের ওঠানামার ওপর নির্ভর করে একটি শব্দের ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারণে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। এভাবে একটি শব্দের অনেকগুলো অর্থকরণ সম্ভব। বইয়ে সমোচ্চারিত/ভিন্নার্থক শব্দ বলতে একই উচ্চারণ কিন্তু ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে, এমন শব্দকে বোঝানো হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে যেসব শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো ম্রো-ভিন্ন অন্য কোনো ভাষাভাষী মানুষের কাছে একই উচ্চারণের মনে হলেও মূলত তা নয়। স্বরের তারতম্যের কারণে একই উচ্চারণের শব্দ বলে ম্রোভাষীদের কাছে কখনোই মনে হয় না। এ ছাড়াও মাত্র দুটি করে উদাহরণ দেওয়ার মাধ্যমে এটির বিস্তৃতিকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। বাংলা সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দের ধারণার অনুকরণ করতে গিয়ে এমনটা হয়েছে বলে আমার ধারণা। যেমন:

উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে:

ta (তা) অর্থ শুনতে পাওয়া (স্বর উঁচু হবে)।

ta (তা) অর্থ যে কোনো ফলমূলের পরিপক্ব হওয়া (স্বর মাঝামাঝিতে থাকবে)।

কিন্তু স্বরের তারতম্যের ভেদে এর আরও অনেক অর্থ রয়েছে। বয়সে বড় বোঝাতে, ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে কাটা ইত্যাদি বোঝাতেও একই শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শুধু অর্থভেদে স্বরের ওঠানামার তারতম্য রয়েছে।

ভাষার ব্যাকরণের যে মৌলিক বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে, সেগুলো ম্রো নামের পাশাপাশি বাংলায়ও প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন: ধ্বনি, বর্ণমালা, অক্ষর, শব্দ, ভাষা, ব্যাকরণ, পুরুষ, ক্রিয়ার কাল, বচন, বাক্যের প্রকারভেদ, বিরামচিহ্ন, লিঙ্গ, এককথায় প্রকাশ, ধাঁধা, প্রবাদ-প্রবচন ইত্যাদি। এটি করতে গিয়ে ব্যাকরণের বিষয়বস্তুর ধারণাসমূহে বাংলা ব্যাকরণের প্রভাব ও কিছু কিছু জায়গায় তার অনুকরণ করা হয়েছে। এর ফলে ম্রো ভাষার নিজস্ব উপাদান উপেক্ষিত রয়ে গেছে।

‘প্রতিশব্দ’ অধ্যায়টিতেও একই ব্যাপার উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও বাংলায় প্রতিশব্দ বলতে একই অর্থ প্রকাশ করে এমন অনেক শব্দকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, যা সমার্থক শব্দ বলেও পরিচিত। যেমন: আগুনের প্রতিশব্দ অনল, সর্বভুক, গহন, শিখা ইত্যাদি। কিন্তু ম্রো ব্যাকরণ বইয়ে একই শব্দ একাধিক অর্থ প্রকাশ করে এমন শব্দকে প্রতিশব্দ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। উদাহরণগুলোর মধ্যে jiy (চিয়া) শব্দ একটি। এর অর্থ গরু, জুম কাটা বা জঙ্গল কেটে সাফ করা- এই দুটির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্বরের উত্থানপতনের ওপর ভিত্তি করে এর আরও অর্থ রয়েছে। যেমন: jiy (চিয়া) শব্দটি গল্প বলা, কোনো কাজে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব করা অর্থেও বোঝায়। ভাষার স্বরের উত্থানপতনের ওপর নির্ভর করে শব্দের অর্থ বদলে যাওয়ার কারণে সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ বা সমার্থক শব্দের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা কঠিন। এ বিষয়টিকে বোঝানোর জন্য ম্রো ভাষার নিজস্ব রীতি ও উপাদান ব্যবহার করে বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে।

ভাষাগোষ্ঠীর বিচারে ম্রো ভাষা টিবেটো বর্মণ ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। একই সঙ্গে এই ভাষা মূলত স্বরনির্ভর। সে জন্য এর গঠন প্রণালি, সিনট্যাক্স, ফোনোলজি ইত্যাদির ধরন ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীর ভাষার ব্যাকরণের সঙ্গে মেলে না। কিন্তু ব্যাকরণের ধারণা বলতে আমরা যা শিখে এসেছি, তা সবই মূলত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার ব্যাকরণ। এই ব্যাকরণেরই ছাপ ম্রো ব্যাকরণ বইয়ে আমরা দেখতে পাই। ফলে ম্রো ভাষার প্রকৃত পরিচয়, স্বকীয় রূপ ও ভাষার গঠন প্রণালির উপস্থিতিকে প্রাধান্য দেওয়া, ভাষার লিখিত রূপের একক হিসেবে বর্ণমালার উচ্চারণবিধি, অক্ষর সংযোগের নিয়ম, বাক্য কাঠামো, শব্দের ব্যবহারের বিভিন্ন দিক প্রভৃতির বিস্তৃত ও গবেষণালব্ধ কাঠামো উপস্থাপনের ব্যাপারে প্রকাশিত গ্রন্থটির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রচলিত বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণের বিষয়গুলোর হুবহু অনুকরণ ও ক্ষেত্রবিশেষে তার অনুবাদ করার ফলে ম্রো ভাষার জন্য বাহুল্য এমন অনেক বিষয়বস্তুরও সংযোজন ঘটেছে। যেমন: প্রশ্নোত্তর, সারাংশ, অনুবাদ, ভাবসম্প্রসারণ, গল্প লেখার নিয়ম, চিঠি লেখার নিয়ম, দরখাস্ত লেখার নিয়ম, রচনা ইত্যাদি সংযোজন করা হয়েছে।

ভাষাগোষ্ঠীর বিচারে ম্রো ভাষা টিবেটো বর্মণ ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। একই সঙ্গে এই ভাষা মূলত স্বরনির্ভর। সে জন্য এর গঠন প্রণালি, সিনট্যাক্স, ফোনোলজি ইত্যাদির ধরন ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীর ভাষার ব্যাকরণের সঙ্গে মেলে না। কিন্তু ব্যাকরণের ধারণা বলতে আমরা যা শিখে এসেছি, তা সবই মূলত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার ব্যাকরণ।

ভাষাকে একেবারে তার মতো রেখেই তার ব্যাকরণ রচনা করা জরুরি। অর্থাৎ, ম্রো ভাষার গতিপ্রকৃতি, ধরন, প্রবাহ ইত্যাদি মাথায় রেখে যথাযথ গবেষণা পরিচালনা করে তার নিজস্ব ধাঁচেই ব্যাকরণ রচনা করা প্রয়োজন। এর জন্য অন্যান্য ভাষার ব্যাকরণের উপাদানের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। ভাষার সঙ্গে সার্বিক রাজনীতির বিষয় জড়িত। ভাষার সঙ্গে ঔপনিবেশিক আধিপত্যবাদিতার ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে। ভাষার আধিপত্য বিস্তার উপনিবেশবাদী শাসনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে সবসময়। আমরা যারা এই দেশের আদিবাসী ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর মানুষ দৈনন্দিন জীবনযাপনের প্রতিটি স্তর থেকে নিজেদের ভাষা হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা করি, তাদের জন্য ভাষা টিকিয়ে রাখার শেষ উপায় হিসেবে ব্যাকরণের শুদ্ধিতাকেই বেছে নিতে চাইব। সেই ভাবনা থেকে বাংলা ব্যাকরণের বিষয়গুলো ম্রো ভাষার ওপর আরোপ করেই সেটি ম্রো ব্যাকরণের পাঠ হিসেবে চালিয়ে দিতে হবে‒এমন ধারণার সঙ্গে সহমত পোষণ করতে পারছি না। ম্রো ভাষাভাষী শিক্ষার্থীদের বাংলা-ইংরেজির মতোই চিঠি, দরখাস্ত, সারাংশ, ভাবসম্প্রসারণ লেখা শেখাতেই হবে‒এমন ধারণারও ঘোর বিরোধিতা করতে চাই।

ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ হিসেবে প্রকাশিত বইটি ম্রো ভাষার জন্য একমাত্র ও আদর্শ (স্ট্যান্ডার্ড) ব্যাকরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই এই বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করে সংশোধন করা প্রয়োজন হবে বলে আমি মনে করি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, ব্যাকরণ লেখার তাড়না কোথা থেকে এলো, সেটা পরিষ্কার থাকা জরুরি। যদি একটা ভাষার ব্যাকরণ লেখার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে শুধু আগ্রাসি, ডমিনেন্ট, ঔপনিবেশিক কোনো ভাষাকে শেখা কিংবা সেই ভাষা আত্মস্থ করে সভ্য হয়ে ওঠার তাড়না থেকে এবং নিজস্বতার অনুসন্ধান না-করে সেসবের পেছনে অবিরাম ছুটে চলা হয়ে থাকে, তবে সেই উদ্দেশ্য হবে চরম আত্মঘাতী। গ্রন্থের ভূমিকা অংশে লেখক সরল উল্লেখ করেছেন যে, তিনি ম্রো ব্যাকরণ লেখার জন্য বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণের সাহায্য নিয়েছেন। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ম্রোদের নিজস্ব নিয়মেও লিখেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। ম্রো ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে ও বলতে পারার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থ কিছুটা ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে ম্রো ছাত্রছাত্রীদের বাংলা এবং ইংরেজি ব্যাকরণ বোঝার বা জানার ক্ষেত্রে ম্রো ব্যাকরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেছেন তিনি। ম্রো ব্যাকরণকে শুধু ম্রো ভাষা বোঝা ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অর্জনের উপায় হিসেবে উল্লেখ না করে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা বোঝার উপায় বা সিঁড়ি হিসেবে উল্লেখ হওয়ায় একটু অনিশ্চয়তা কাজ করেই। তবে যদি নিতান্তই সেই উদ্দেশ্য সাধন করার জন্য এই ব্যাকরণ গ্রন্থ রচিত হয়ে থাকে, তবে এটিকে ম্রোদের নিজস্ব ভাষার ব্যাকরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা না-করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তা না-হলে ম্রো ভাষার জন্য এ রকম একটি বিষয়কে সামনে আনার জন্য লেখকের প্রচেষ্টাকে সম্মান জানাতে চাই, তবে এই সীমাবদ্ধতাগুলো মেনে নিয়ে ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ হিসেবে প্রকাশিত বইটি ম্রো ভাষার জন্য একমাত্র ও আদর্শ (স্ট্যান্ডার্ড) ব্যাকরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই এই বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করে সংশোধন করা প্রয়োজন হবে বলে আমি মনে করি।

রেং ইয়ং ম্রো: গবেষক। ই-মেইল: nangchen777@gmail.com

Social Share
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •