৮ম বর্ষ, ১ম সংখ্যা
সংবাদপত্রের পাতা থেকে (২৬ জুলাই ২০২১- ২৫ অক্টোবর ২০২১)
অর্থনীতি
সন্তানের লজ্জা, তাই মা দাঁড়িয়েছেন সাশ্রয়ী পণ্যের জন্য
২৬ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানের পাশে বিডিআর ৩ নম্বর গেটের সামনে একটা মিনিট্রাক ঘিরে দুই সারি মানুষ। সকাল ১০টার সময়ই আজ তাপমাত্রা ৩৩। তবে অনুভব হচ্ছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কারও ছাতা, কারও মাথায় ধরা বাজারের ব্যাগ। দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন এক বয়স্ক নারী। প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁর পালা এল। দুজন করে পুরুষ পণ্য কেনার পর একজন নারী নিতে পারছেন। এই বৈষম্যের কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা বললেন, লকডাউনের জন্য পুরুষের সংখ্যা এখন বেশি। এমন সময় নারীরাই বেশি আসেন। ট্রাকের কাছে পৌঁছাতেই জেরবার হতে হয়েছে তাঁর। ঘেমে জবজবে হয়েছেন। এক শ টাকার দুটো নোট এগিয়ে দিয়ে বললেন, শুধু তেল নিব। দুই লিটারের দুটো তেলের বোতল নিয়ে পাশের উঁচু ফুটপাতে উঠে আসতে আসতে হাঁপিয়ে গেলেন।
নাম অর্চনা ভদ্র। ষাটোর্ধ্ব নারীর কথা বলতে আপত্তি নেই। বাড়িতে তিনজন পুরুষ থাকতেও কাজটি তিনিই করছেন। টিসিবির এই পণ্য নিজে নিয়ে গেলে বাড়ির মানুষদের লজ্জার মুখে পড়তে হবে না ভেবে স্বস্তি আছে তাঁর। অর্চনা ভদ্রর পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৯। শুধু তেল নিলেন কেন জিজ্ঞেস করলে জানালেন, চালের ট্রাক ভিন্ন। আবার আসবে কাল বা পরশু। অর্চনা ভদ্র থাকেন নিউ পল্টনের খালেক লেনে। সাত বছর হলো ঢাকায় এসেছেন। দুই ছেলের সংসার নিয়ে যৌথ পরিবার তাঁদের। ছেলেদের দোকান আছে নিউমার্কেটে। ভাড়ার দোকান। লকডাউনের জন্য বহুদিন ধরে বন্ধ। তবে আশপাশের মানুষজন ছেলেদের ভালোভাবে চেনে বলে তাঁদের টিসিবির লাইনে দাঁড়াতে লজ্জা হয়। আর ছেলেদের বাবাকে আসতে দেননি নিজেই। এই কড়া রোদ বুড়ো মানুষটার সহ্য হবে না বলে তাঁকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করে এসেছেন।… ….
করোনা অতিমারির পর থেকে টিসিবির পণ্য ক্রেতার চিত্র বদলাচ্ছে। সংকোচ আর লজ্জা পরাজিত হয়েছে মানুষের প্রয়োজনের কাছে। মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষও উপস্থিত হচ্ছেন মিনিট্রাকের সামনে। গত কয়েক মাসে বেকার হয়েছেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী অনেক মানুষ। মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্তে পরিণত হওয়া এই মানুষদের জন্য খাবারের মূল্যের এই সাশ্রয়টুকু কিছুটা হলেও স্বস্তির।
এমন একজনকে পাওয়া গেল এখানকার ক্রেতা হিসেবে। ময়মনসিংহের বেলি মালির পরিবারের সদস্য পাঁচজন। স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। আজিমপুরের বাসিন্দা বেলি মালির চাহিদাও সয়াবিন তেল। আগে টিসিবির পণ্যের জন্য লাইনে দাঁড়াতেন না। এখন আসতে হয়, এর জন্য তাঁর খারাপ লাগে কি না জানতে চাইলে বললেন, খারাপ লাগারে পাত্তা দেওয়ার সুযোগ নাই। একজনের সামান্য উপার্জনে এখন সংসার চালানো কঠিন। আগে নিজেও কিছু টুকটাক কাজ করতেন। লকডাউন বলে সে কাজ বন্ধ হয়েছে। তাই একটু কম দামে পণ্য নিতে এসেছেন।
বেলা একটার মধ্যে এখানকার ট্রাকের সব পণ্য প্রায় শেষ। বিক্রেতারা ক্রেতাদের আশ্বস্ত করছিলেন, এখন থেকে এক মাস প্রতিদিন আসবেন। এত হুড়োহুড়ি না করে আগামীকালও নিতে পারবেন। কিন্তু এই লকডাউনের মধ্যে তপ্ত রোদে বাড়ি থেকে একবার বেরিয়ে ট্রাক পর্যন্ত আসা মানুষগুলো অধীর হয়ে আছেন। ভয়ে আছেন, আবার যদি বন্ধ হয়ে যায়! ৫ জুলাই থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরুর পর আবার বন্ধ হয়েছিল ১৯ জুলাই থেকে। ২৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কার্যক্রম চলবে এক মাস ধরে। টিসিবির ট্রাকে প্রতি কেজি চিনি ও মসুর ডাল ৫৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ চার কেজি চিনি ও দুই কেজি ডাল কিনতে পারবেন। এ ছাড়া সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটারে একজন ক্রেতা দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার নিতে পারছেন।
প্রতি বর্গফুটে ৬৪ টাকা মুনাফা
২৯ জুলাই ২০২১, যুগান্তর
একজন মৌসুমি ব্যবসায়ী কুরবানির পশু চামড়ায় (২৫ বর্গফুট) লোকসান গুনছেন সর্বোচ্চ দুইশ টাকা। কেউ ন্যায্য দাম না পেয়ে মাটিতে পুঁতেছেন অথবা রাস্তায় ও নদীতে ফেলে দিয়েছেন। নজিরবিহীন এমন ঘটনা বিগত কয়েক বছর ধরেই ঘটছে। একই আকারের চামড়া আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করে ট্যানারি মালিকরা মুনাফা করছেন প্রায় ১৬শ টাকা। অর্থাৎ প্রতি বর্গফুটে সব খরচ বাদ দিয়ে আয় করছেন ৬৪ টাকা। আর যে আড়তদার ট্যানারি মালিকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন চামড়া তার পকেটে যাচ্ছে আরও দেড়শ থেকে ২শ টাকা। অর্থাৎ প্রতি বর্গফুটে আড়তদারের লাভ হচ্ছে আট টাকা।
পাইকারদের চামড়া ক্রয় ও প্রক্রিয়াকরণ, ট্যানারির মালিকদের ক্রয় ও মূল্য সংযোজন, জাহাজীকরণসহ অন্যান্য ব্যয় হিসাব-নিকাশ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ), বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) থেকে এ আয়-ব্যয়ের হিসাব নেওয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বছরে প্রায় ২৭শ কোটি বর্গফুট চামড়া বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ খাতে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১৭শ কোটি টাকা মুনাফা আসছে চামড়া শিল্পে। কিন্তু এর ৬০ শতাংশ চামড়া সরবরাহ করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। যাদের অধিকাংশই লোকসান দিচ্ছেন। আর বাংলাদেশে এমন ঘটনা বছরের পর বছর ঘটে আসছে। এটি মনিটরিং বা পর্যবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নীরব ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্যমতে, সবচেয়ে বড় কুরবানির পশুর চামড়া (২৫ বর্গফুট আকারের) এ বছর কেনা হয় ৫শ টাকায়। এরসঙ্গে আড়তেই ৭২ শতাংশ অর্থাৎ ৩৬০ টাকা মূল্য সংযোজন হচ্ছে। সেটি হলো একটি চামড়ায় লবণ মেশানোয় ব্যয় ৩শ টাকা। এরমধ্যে ২৫০ টাকার লবণ এবং ৫০ টাকা মজুরি।
এছাড়া আড়ত চার্জ ৩৫ টাকা, দাসনদার ১০ টাকা, চামড়া পরিবহণ থেকে নামানো এবং উঠানো (লোড-আন লোড) মজুরি ১৫ টাকা। এসব ব্যয় যোগ হয়ে চামড়ার মূল্য দাঁড়ায় ৮৬০ টাকা। এর সঙ্গে প্রতি পিস চামড়ায় ২০০ টাকা যোগ করে আড়তদারের বিক্রয় মূল্য দাঁড়ায় ১০৬০ টাকা। এক্ষেত্রে আড়তদারের প্রতি ফুট চামড়ায় মুনাফা হচ্ছে ৮ টাকা।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব টিপু সুলতান যুগান্তরকে বলেন, প্রতিটি চামড়ায় আমাদের আড়তদারি প্রক্রিয়াগত ব্যয় আছে ৩৬০ টাকা। পাশাপাশি একটি চামড়া থেকে ১শ টাকা থেকে দেড়শ টাকা মুনাফা করতে না পারলে আড়তদাররা এত টাকা বিনিয়োগ করে টিকে থাকতে পারবে না। ফলে ওই হিসাবেই আমরা ট্যানারির মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করব। ৫শ টাকায় একটি চামড়া কিনলেও সেটি প্রক্রিয়াজত করে মুনাফাসহ এক হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হবে।
বিএফটিআই চামড়া শিল্পে ওপর একটি গবেষণা করেছে। সেখানে দেখানো হয়, একটি ট্যানারিতে চামড়ায় কেমিক্যাল, শ্রমিক, ট্যানারি ভাড়াসহ অন্যান্য খাতে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় যোগ হচ্ছে। এ ৪৮ শতাংশ মূল্য সংযোগের পরে আড়তদার থেকে ১০৬০ টাকার কেনা চামড়ার মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৬৯ টাকা। পরবর্তী ধাপে জাহাজীকরণসহ অন্যান্য খাতে আরও ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ২৩৫ টাকা ব্যয় রয়েছে। এটি যুক্ত হওয়ার পর ২৫ ফুট আকারের চামড়ার মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০৪ টাকা। বিটিএর তথ্যমতে, বিশ্ববাজারে প্রতি বর্গফুট চামড়ার রপ্তানির মূল্য হচ্ছে ১ দশমিক ৬০ সেন্ট, অর্থাৎ ১৩৫ টাকা।
সে হিসাবে ২৫ বর্গফুট আকারের চামড়ার রপ্তানি মূল্য দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪শ টাকা। এ রপ্তানি মূল্য থেকে সব ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যয়সহ ট্যানারি চামড়ার ক্রয় মূল্য বাদ দিলে একটি চামড়ায় মুনাফা আসছে ১ হাজার ৫৯৬ টাকা। অর্থাৎ একজন ট্যানারি মালিকের প্রতি বর্গফুট চামড়ায় মুনাফা দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৬৪ টাকা।
মেয়ের জন্য দুধ কিনতে আর্টিস্ট বাবা রিকশা নিয়ে রাস্তায়
২৯ জুলাই ২০২১, ঢাকা পোস্ট
‘আমার দুই বছরের একটা মেয়ে আছে। মেয়েটাকে দুই দিন ধরে দুধ কিনে দিতে পারছি না। মেয়েটা আমাকে বলে, আব্বা আমি দুধ খাব। আমাকে দুধ এনে দাও। বাচ্চাটা খুব কান্নাকাটি করে। বাচ্চার কান্না দেখে আমি আর ঘরে থাকতে পারিনি। রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছি। মেয়ের নাম মুসকান জাহান তাইয়্যেবা। মুসকান অর্থ হাসি। আমার মেয়েটা সত্যিই হাসিখুশি থাকে। সেই হাসি কেড়ে নিচ্ছে ঘরের অভাব।’
কথাগুলো বলছিলেন মাঝ বয়সী মাহাবুব আলম। পেশায় একজন আর্টিস্ট। কিন্তু করোনার প্রবল আঘাত আর লকডাউনের বাধ্যবাধকতায় হয়েছেন রিকশাওয়ালা।
বরিশাল নগরীর কালীবাড়ি রোড জগদীশ স্বারস্বত গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশেই নিজের দোকান। লকডাউনে সেই দোকান খুলতে পারেন না অনেক দিন। যতটুকু পুঁজি ছিল তা গত বছর ঘরে বসেই শেষ করেছেন। এ বছর স্বামী-স্ত্রী মিলে এক বেলা ভাত আর দুই বেলা মুড়ি-পানি খেয়ে পার করেছেন টানা দুই মাস।
তারপরও মান-সম্মানের ভয়ে ঘরে ছিলেন। কিন্তু মেয়ে দুধ খাবে বলে যখন কান্না করেছে তখন আর বসে থাকতে পারেননি এই বাবা। দিনে লোকলজ্জার ভয়ে বের না হলেও রাতে রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন নগরীতে।
দেশের সবচেয়ে ধনী বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ
০৩ আগস্ট, ২০২১, বণিক বার্তা
শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে প্রতি বছর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) আয় হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনায় আয়কৃত এ অর্থের অর্ধেকও ব্যয়ের প্রয়োজন পড়ে না। এনএসইউর বার্ষিক অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয়ের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকারও কম। প্রতি বছরই বেঁচে যাওয়া বড় অংকের এ অর্থ যুক্ত হচ্ছে নর্থ সাউথের তহবিলে। উদ্বৃত্ত অর্থে ক্রমেই ফুলেফেঁপে উঠছে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির তহবিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, বর্তমানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা আছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। দেশের এক ডজনেরও বেশি বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মেয়াদি আমানত হিসেবে এ অর্থ জমা রাখা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বলছে, দেশের আর কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই এত বড় অংকের তহবিল নেই। এমনকি আয়ের পরিমাণ ও উদ্বৃত্ত তহবিলের আকারে নর্থ সাউথ এখন দেশের অনেক বৃহৎ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকেও ছাড়িয়েছে।
লুকোচুরির পরে অবশেষে পাওয়া গেল জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব
০৫ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
অনেক লুকোচুরির পর অবশেষে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির খবর প্রকাশ করল সরকার। এক বছরের বেশি সময় পর সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। যদিও এর আগে সরকারের দাবি ছিল ওই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয় গত বছর মার্চে। ওই বছর ২৬ মার্চ থেকে টানা দুই মাসের বেশি সময় ছিল সাধারণ ছুটি। করোনার কারণে অর্থনীতির সব সূচক ছিল স্থবির। রাজস্ব আদায়, আমদানি, রপ্তানি, পর্যটন, হোটেল রেস্তোরাঁয় কিছু ছিল বন্ধ।
তারপরও সরকার বাজেটে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের (সাময়িক) কথা বলেছিল। যদিও অর্থনীতিবিদেরা সরকারের তথ্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে আসছেন এত দিন। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাস্তবতার সঙ্গে সরকারের দেওয়া তথ্যের মিল নেই। অবশেষে বিবিএস জানিয়েছে, সরকারের প্রক্ষেপণের চেয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১.৭৩ শতাংশ।
কৃষিপণ্যে মুনাফার ৮০ শতাংশই ভোগ করে ফড়িয়া পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী
আগস্ট ০৭, ২০২১, বণিক বার্তা
কৃষিপণ্যের সরবরাহ চেইনে জড়িত সব পক্ষের মধ্যে কৃষক শ্রম ও সময় দেয় সবচেয়ে বেশি। যদিও এসব পণ্যের মুনাফায় ভাগ সবচেয়ে কম থাকে সে কৃষকেরই। প্রচলিত উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থায় মুনাফার সিংহভাগই পকেটস্থ হচ্ছে ফড়িয়া থেকে শুরু করে খুচরা ব্যবসায়ী পর্যন্ত মধ্যস্বত্বভোগীদের। বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত নানা গবেষণায়ও উঠে এসেছে, ভোক্তাদের হাতে কৃষিপণ্য পৌঁছার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীদারদের (কৃষক থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা) মোট মুনাফার ২০ শতাংশও কৃষক পান না। ৮০ শতাংশেরও বেশি মুনাফা চলে যায় ফড়িয়া, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের পকেটে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফুড প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটের (এফপিএমইউ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণেও বিষয়টি উঠে আসছে। ‘মনিটরিং রিপোর্ট ২০২১: বাংলাদেশ সেকেন্ড কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (সিআইপি) নিউট্রিশন সেনসিটিভ ফুড সিস্টেম (সিআইপি২ ২০১৬-২০২০)’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বেগুন, আলু ও টমেটো—এ তিন কৃষিপণ্যের বিপণন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের মূল্য ও মুনাফার বণ্টন দেখানো হয়। এতে দেখা যায়, এসব সবজির উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়ায় মোট মুনাফার বণ্টনে কৃষকের প্রাপ্তি সাকল্যে এক-পঞ্চমাংশও নয়। বাকি মুনাফার পুরোটাই ভোগ করছে মধ্যস্বত্বভোগী ট্রেডার বা ফড়িয়া, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
পুষ্টিকর ও সহজলভ্য সবজি হিসেবে ব্যাপক ভোক্তা চাহিদা রয়েছে বেগুনের। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৩২ টাকা দরে বিক্রি হলে তাতে বিপণন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের মোট মুনাফা থাকে ১৯ টাকা। এর মধ্যে কৃষকের লাভ থাকে ৩ টাকা ৭২ পয়সা। অর্থাৎ কৃষিপণ্যটির সরবরাহ চেইনের মোট মুনাফায় কৃষকের ভাগ মাত্র ১৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
গত এক দশকে কৃষিপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন বেড়েছে আলুর। বেগুনের মতো আলুতেও মুনাফার সিংহভাগই চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। কৃষিপণ্যটির বাজারজাতের বিভিন্ন পর্যায়ের মুনাফা যোগ করে যে অংক দাঁড়ায়, তাতে কৃষকের ভাগ ২২ শতাংশেরও কম। টমেটোর ক্ষেত্রে এ হার মোটে ১৩ শতাংশ।
করোনায় স্বামী হারিয়ে শিক্ষক মায়িশা এখন পরিচ্ছন্নতাকর্মী
১০ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে স্বামীকে। তারও আগে করোনাকালেই গেছে দুজনের চাকরিও। চাকরি হারানোর পর স্বামী মতিউর রহমান (২৯) ভাড়ায় ইজিবাইক চালাতেন। কিন্তু দেড় মাসের মাথায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন স্কুলশিক্ষক মায়িশা ফারাহ্ (২৪)। পাঁচ ও আড়াই বছর বয়সী দুই শিশুকন্যা এবং বৃদ্ধ মা–বাবাকে নিয়ে দিশেহারা তিনি। অবুঝ শিশুসন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে ফুটপাতে মানুষের কাছে হাত পেতেছেন। চেয়েচিন্তে কোনোরকমে বেঁচে থাকার লড়াই করেছেন। সবার খাবার জোটাতে শিক্ষকতার পেশা খুইয়ে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নিয়েছেন।
ঢালাও ছাড় না থাকায় বাড়ল খেলাপি ঋণ
২০ আগস্ট ২১, সমকাল
করোনার কারণে চলতি বছরও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। যদিও গত বছরের মতো তা ঢালাও নয়। শিথিলতা কমানোর পর ব্যাংকহখাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেছে। আগের প্রান্তিকের তুলনায় গত জুন শেষে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এর আগের তিন মাসে বেড়েছিল ৬ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। এর মানে চলতি বছরের ৬ মাসে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বাড়ল ১০ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংকগুলোর মোটহখেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট বাদে ব্যাংক খাতে মোট ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। গত মার্চ পর্যন্ত যা ছিল ১১ লাখ ১১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। মার্চ পর্যন্ত মোট খেলাপি ঋণ ছিল ৯৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৮ হাজার ২৮২ কোটি টাকা ছিলহখেলাপি, যা ওই সময়ের মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
কিস্তির ২৫% দিলেই কেউ ঋণখেলাপি হবেন না
২৮ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
করোনা মোকাবিলায় ঋণ পরিশোধে ঋণগ্রহীতাদের নতুন করে আবারও বড় ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, কোনো ঋণগ্রহীতা তাঁর চলতি বছরের ঋণের কিস্তির ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলেই ওই ঋণকে খেলাপি করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আর কোনো ঋণ খেলাপি হবে না। কারণ, ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত এই সুবিধা নেওয়া যাবে। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করা হয়েছে গতকাল শুক্রবার।
চড়া সুদে ঋণের জালে কৃষকেরা
২৮ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
গত বছর তিন দফা বন্যায় গাইবান্ধার কৃষকেরা মারাত্মক ক্ষতিতে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষক এলাকার মহাজন ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। এক বছর পরও তাঁরা ঋণের জাল থেকে বের হতে পারেননি।
সাধারণত বোরো মৌসুম শেষে জেলার ভূমিহীন ও প্রান্তিক কৃষকদের চার-পাঁচ মাস কাজ থাকে না। তাঁরা ওই সময় কাজের খোঁজে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় যান। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে যেতে পারেননি। ফলে সংসারের খাওয়া খরচ মেটাতে তাঁরা ঋণনির্ভর হয়েছেন। করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় ঋণগ্রস্ত অনেক কৃষক ইতিমধ্যে কাজের আশায় রাজধানীমুখী হয়েছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার দাঁড়িয়াপুরের কৃষক শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এখনো তিনি আমন চাষ নিয়ে সিদ্ধান্তহীন। বললেন, তাঁর তিন বিঘা আবাদি জমির মধ্যে দুই বিঘায় বোরো ও আমনÑদুই ফসলই হয়। কিন্তু বন্যায় বারবার ক্ষতির কারণে তিনি আমন চাষের সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
কৃষি বিভাগের করা কৃষকের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী, শহিদুল একজন ক্ষুদ্র কৃষক। জেলায় মোট কৃষক আছেন ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬০৬ জন। শহিদুলের মতো ৫০ থেকে ১৪৯ শতাংশ জমির মালিক ক্ষুদ্র কৃষক আছেন ২ লাখের কিছু বেশি।
শহিদুল বলেন, ২০১৯ সালের বন্যায় আমন খেত ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেড় বিঘা জমি বন্ধক রেখে দেড় লাখ টাকা নেন। গত বছর আমন চাষ না করলেও সংসারের টানাপোড়েনে একটি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ করেছেন।
৫ বিঘা জমি থেকে এখন মাত্র ১৭ শতাংশ জমি আছে সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের মীরের বাগান গ্রামের কৃষক আবদুর জলিলের। তিনি মাঝারি কৃষক থেকে হয়েছেন প্রান্তিক কৃষক। এখন দিনমজুরিও করেন। তিনি বলেন, ‘বন্যায় ধান খায়া গেছে। খুউব ক্ষতি হইছে। সুদের ওপর টাকা নিছি, জমি বন্ধক রাখছি। আর কুলাতে পারি নাই।’
একই ইউনিয়নের বামনীপাড়ার বর্গাচাষি কায়েস, সাজু, রফিক ও রশিদুল জানান, তাঁরা অগ্রহায়ণ থেকে জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত কেরানীগঞ্জের ইটভাটায় কাজ করেন। এবার টাকার অভাবে পড়ে স্থানীয় সরদারের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। শর্ত অনুযায়ী, মাসখানেক পর তাঁরা সরদারের নির্দেশমতো ইটভাটায় কাজ করতে যাবেন। সেখানে টানা ছয় মাস কাজ করবেন। অন্য কোথাও কাজ করা যাবে না।
কয়েকজন দাদনগ্রহীতা ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমি ধান বাবদ এবং মাসিক, সাপ্তাহিক, দৈনিক ও হাটরা সুদের ভিত্তিতে এসব সুদের ব্যবসা হয়। ধানের হিসাবে এক লাখ টাকা নিলে বোরো মৌসুমে ২০ মণ ধান ও আমন মৌসুমে ১০ মণ ধান দিতে হয়।
মাসিক টাকার ভিত্তিতে ১০ হাজার টাকা নিলে মাসে ১ হাজার টাকা সুদ দিতে হয়। বার্ষিক সুদের হার দাঁড়ায় ১২০ শতাংশ। এ ছাড়া ‘কারেন্ট’ সুদের ওপর নিলে ১ হাজার টাকায় দিনে ১০০ টাকা সুদ দিতে হয়। ‘হাটরা’য় প্রতি সপ্তাহে হাটে ১ হাজার টাকায় সুদ দিতে হয় ১৬০ টাকা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাগজপত্রের ঝামেলা ও হয়রানির কারণে তাঁদের ব্যাংকঋণ নিতে আগ্রহ কম।.. …
প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পায়নি ৭৯% প্রতিষ্ঠান
আগস্ট ২৯, ২০২১, বণিক বার্তা
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পায়নি ৭৯ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কোনো অর্থ সহায়তাই পায়নি। প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে জানেনই না ১৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিক। আবার যে ২১ শতাংশ প্রতিষ্ঠান প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় অর্থ পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ছোট প্রতিষ্ঠান তুলনামূলকভাবে কম। সাম্প্রতিক এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। অন্যদিকে, মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে দেয়া সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থছাড়ের জন্য ঘুষ দাবি করা হয়েছে বলে জরিপকালে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আস্থা ও প্রত্যাশার ওপর বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে জরিপটি পরিচালিত হয়। গত এপ্রিল থেকে জুনের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৫০১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জুলাইয়ে এ জরিপ চালানো হয়।
শিক্ষার্থী কমছে, টিউশন ফি ছাড় দিয়ে অস্তিত্ব সংকটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
২৯ আগস্ট ২০২১, ঢাকা ট্রিবিউন বাংলা
বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, টিউশন ফি কমিয়ে, স্কলারশিপ দিয়ে কিংবা বকেয়া রেখেই রাজধানীর বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কম বেতন নিয়েও শিক্ষকতা করছেন।
ভর্তি কমেছে সর্বোচ্চ ৮৮.৯ শতাংশ
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিগত সময়ের শিক্ষার্থী ভর্তির চিত্রে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে ভর্তি কমেছে ব্যাপক হারে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২০ সালের সামার সেমিস্টারে ২৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৮৮ দশমিক ৯ শতাংশ ভর্তি কমেছে।
ছুটি নেই বেতনেও টান, অতঃপর আত্মহত্যা!
০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ঢাকা পোস্ট
কেউ ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন, কেউ নিজের রাইফেলের গুলি নিজের গলায় চালিয়েছেন। এভাবে গত তিন বছরে বাংলাদেশ পুলিশের মোট ১৮ সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। তাদের সবাই কনস্টেবল ও এসআই পদমর্যাদার। পুলিশ সদস্যদের আত্মহত্যার ঘটনায় স্ব স্ব ইউনিটে তদন্ত কমিটি হয়। তদন্তও হয়। তবে অধিকাংশ তদন্তের প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কারণ বলা হয় ‘পারিবারিক কলহ’।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। কথা হয় ভিন্ন ভিন্ন ইউনিটের কনস্টেবল ও এসআইদের সঙ্গে। সহকর্মীদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেওয়া মানসিক চাপ’-কে দায়ী করেন তাদের অনেকে। প্রায় প্রত্যেকের বর্ণনা একই রকম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কনস্টেবল ঢাকা পোস্টকে বলেন, কনস্টেবল পদের চাকরি অনেক পরিশ্রমের। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হয় তাদের। কেউ কেউ খোলা আকাশের নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন। কেউ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বডিগার্ড, মালি এমনকি বাবুর্চি হয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। যারা নতুন নতুন কনস্টেবল হিসেবে চাকরিতে আসেন তাদের বয়স মাত্র ১৮ থেকে ২০ বছর। এত অল্প বয়সে অতিরিক্ত চাপ নিতে পারেন না তারা। একপর্যায়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
উচ্চহারে বেতনের কাটছাঁট
ঢাকা পোস্ট জানতে পেরেছে পুলিশ সদস্য আত্মহত্যা করার পর একটি তদন্ত কমিটি হয়। অধিকাংশ কমিটির প্রতিবেদনে ওই সদস্যের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ‘মানসিক চাপ’ বা ‘পারিবারিক চাপ’ ইত্যাদি দেখানো হয়।
কুমিল্লা জেলায় কর্মরত কনস্টেবল আব্দুর রহমান (ছদ্মনাম- ১) ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশের প্রতিবেদনে চাপের কথা উল্লেখ থাকলেও এজন্য খোদ পুলিশের সিস্টেমই দায়ী। প্রতিটি মানুষ টাকার জন্য কাজ করে। পুলিশে আসার পেছনে ‘জনসেবা’ অন্যতম কারণ হলেও প্রধান কারণ কিন্তু অর্থ। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে কনস্টেবলরা সবচেয়ে কম বেতন পান। অথচ প্রতি মাসে তাদের বেতনের মোটা একটা অংশ নানা অজুহাতে কেটে নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সদরদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সদ্য যোগদান করা একজন কনস্টেবল ১৪ হাজার ৩০০ টাকা বেতন পান। সঙ্গে কমপক্ষে দুই হাজার টাকা ভ্রমণ ভাতা দেওয়া হয়। তবে কনস্টেবলরা এ টাকার পুরোটা তুলতে পারেন না।
পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংকে বিনিয়োগের জন্য প্রতি মাসে একজন কনস্টেবলের কাছ থেকে বেতনের দুই হাজার করে টাকা কেটে রাখা হয়। এছাড়া পুলিশের শপিং মল তৈরির জন্য এককালীন ১০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। পুলিশের কল্যাণ তহবিলের জন্য প্রতি মাসে ৫০ টাকা করে কাটা হয়। তবে প্রতি বছরের জুলাই ও ডিসেম্বরে কাটা হয় ১১০০ টাকা করে। কাটা হয় সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের (জিপিএফ) জন্য অর্থ। কনস্টেবলদের ভ্রমণভাতা আগে কমপক্ষে ২০০০ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ‘শূন্য’।
বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, বণিক বার্তা
বাস চলাচলের জন্য বিমানবন্দর-গাজীপুরের মধ্যে বিশেষায়িত লেন (বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি) গড়ে তুলছে সরকার। লেনটি নির্মাণ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিবিআরটিসিএল)। এরই মধ্যে প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৩ শতাংশ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ডিসেম্বরে চালু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম বিআরটি। সরকারি কোম্পানির মাধ্যমে নির্মাণ হলেও এর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ভার বেসরকারি খাতের হাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তৈরি করে দেয়া চারটি ‘বিজনেস মডেল’ থেকে একটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অর্থায়নকারী সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সম্মতি এবং ঢাকা বিআরটি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পর এ-সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় ঠিক করা হবে বলে ডিবিআরটিসিএল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি আরও বেড়েছে
০৩ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
বিভিন্ন শিথিলতার মধ্যেও বেড়েছে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ। এর প্রভাব পড়েছে মূলধন সংরক্ষণে। সরকারি-বেসরকারি খাতের ১১টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। তিন মাস আগে গত ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ২৪ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বছরের পর বছর বিভিন্ন নির্দেশনার পরও ঘুরেফিরে ব্যাংকগুলো ঘাটতিতে থাকছে।
৮০ হাজার কোটি টাকা বিদেশী ঋণ খুঁজছে রেলওয়ে
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, বণিক বার্তা
ঢাকা থেকে কুমিল্লা ও লাকসাম হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রস্তাবিত ২২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটটিতে ট্রেন চলবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার গতিতে। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে যাতায়াতে সময় লাগবে মাত্র ৫৫ মিনিট। দ্রুতগতির এ রেলপথ নির্মাণে এরই মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। রেলপথটি নির্মাণে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে চায় রেলওয়ে। এজন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করে দিয়েছে সংস্থাটি। বিপরীতে একাধিক উন্নয়ন সহযোগীও প্রকল্পটিতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
বেসরকারি খাতে যাচ্ছে ১২ পাটকল
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
বছরের পর বছর লোকসান গুনতে থাকা ২৫টি পাটকল গত বছরের ১ জুলাই বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর পাটকলগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দিয়ে চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেটিও গত ১৩ মাসে সম্পন্ন হয়নি। ফলে চালু হয়নি একটি পাটকলও।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) দাবি, বন্ধ থাকা ১২টি পাটকল বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ২৯টি প্রস্তাব বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই ইজারা দেওয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে।.. …
শেষ পর্যন্ত ১২টি পাটকল ইজারা নেওয়ার জন্য ২৯টি চূড়ান্ত পরিকল্পনা আসে। এবারে চট্টগ্রামের এমএম ও নরসিংদীর ইউএমসি জুট মিলস নিতে কোনো প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখায়নি। আর ২৯টি চূড়ান্ত পরিকল্পনার মধ্যে ভারতের মোহন জুট ও প্যাসিফিক জুট মিলসহ চারটি পাটকল ইজারা পেতে আবেদন করেছে। সেগুলো হচ্ছে যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ, ইস্টার্ন জুট মিলস, কার্পেটিং জুট মিলস ও দৌলতপুর জুট মিলস। আর যুক্তরাজ্যের জুট রিপাবলিক চেয়েছে সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিলস।
কুড়িগ্রামে ৫০ হাজার শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, যুগান্তর
কুড়িগ্রামে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী ঝরে পরেছে। এ শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ (ছাত্রী) বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন কন্যাশিশুর অনুপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম জানান, শতকরা ১৩ ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। এ হিসাবে জেলায় গত দেড় বছরে ঝরে পড়া শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। ঝরে পড়া কন্যাশিশুদের অধিকাংশই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। করোনার দীর্ঘ বন্ধের মধ্যে সদরের ৫টি স্কুলের ৬৩ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। অন্য স্কুলগুলোতে ঝরে পড়া ও বাল্যবিয়ের শিকার মেয়েদের প্রকৃত তথ্য নিতে উপজেলাগুলোতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে সার্বিক চিত্রটা বোঝা যাবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
রাজধানীর বাড্ডায় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে একটি ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বাড্ডা থানা–পুলিশ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নিহত ব্যক্তির নাম চন্দন পার্সি। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ থেকে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এই ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। বাড্ডা এলাকার ওই ভবনে চন্দন মা ও বোনের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘থানায় সকাল সাড়ে আটটার সময় ঘটনাটি জানানো হয়। আমরা ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাই। সেখান থেকেই পরিবারের সদস্যরা তাঁর লাশ নিয়ে যায়।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন বছর তিনি চাকরির চেষ্টা করছিলেন। তাঁদের পরিবার একমাত্র বোনের আয়ে চলছিল। এসব বিষয়ে তিনি প্রায় মানসিকভাবে পীড়িত হতেন। হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাথাপিছু বিদেশি ঋণের পরিমাণ ২৪,৮৩০ টাকা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিকদের মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ২৯২ দশমিক ১১ মার্কিন ডলার বা ২৪ হাজার ৮৩০ টাকা (১ ডলার = ৮৫ টাকা ধরে)। আজ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে চট্টগ্রাম-৪ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।
২০ হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে
২১ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
‘আশার আলো বিদ্যানিকেতন’- মিরপুরের রূপনগর থানার ইস্টার্ন হাউজিংয়ের এল-ব্লকের এই বিদ্যালয়টি গত বছরের মার্চেও শিক্ষার্থীদের পদচারণায় জমজমাট ছিল। শিক্ষক ছিলেন ১০ জন। ২০১৮ সালে এই কিন্ডারগার্টেন স্কুল চালু করেছিলেন মো. জাকির হোসেন। তিনিই ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক। করোনা মহামারির কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সরকার স্কুল-কলেজ খুলে দিলেও এ প্রতিষ্ঠানটি আর খোলেনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়টির অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিপুল ভাড়া বকেয়া থাকায় বাড়িওয়ালা বাসাটি নতুন করে ভাড়া দিয়ে দিয়েছেন। নিভে গেছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জাকির হোসেনের সব আশার আলো। গত রোববার বিকেলে মোবাইল ফোনে সমকালের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, মহামারি করোনায় আর্থিক সংকটে পড়ে তিনি দুর্বিষহ জীবনযাপন করছিলেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে নিজের ভাড়া বাসাও ছেড়ে দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামের বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়ায়। চিন্তা করছেন, জীবনধারণের জন্য নতুন করে কী করা যায়! জাকির হোসেনের আশার আলো বিদ্যানিকেতনের মতোই বন্ধ হয়ে গেছে সারাদেশের অন্তত ২০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুল। এসব স্কুলের সঙ্গে সম্পৃক্ত লক্ষাধিক শিক্ষক এখন বেকার।.. ..
ঠিক কতটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল সারাদেশে বন্ধ হয়ে গেছে, তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন্স) মনীষ চাকমা বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো তাদের মতো করে চলে। আমাদের কাছে তাদের কোনো তথ্য নেই।
তবে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে মোট কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা ৬০ হাজার। এগুলোতে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ১০ লাখ। শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটি। এসব প্রতিষ্ঠানের ৯৯ শতাংশই ভাড়াবাড়িতে প্রতিষ্ঠিত। তারা খবর নিয়ে দেখেছেন, এই ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন থেকে বাড়িভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে হয়তো আরও ১০ হাজারের মতো কিন্ডারগার্টেন আগামী জানুয়ারিতে খুলতে পারে। তবুও বাকি ১০ হাজার স্কুল চিরদিনের জন্য বন্ধই থাকবে।
কভিডকালীন প্রণোদনা পেয়েছে ৬% ক্ষতিগ্রস্ত এসএমই প্রতিষ্ঠান
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, বণিক বার্তা
কভিডকালীন সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সহায়তা পেয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত মাত্র ৬ শতাংশ এসএমই প্রতিষ্ঠান। সারা এশিয়ায় এর গড় ৩৬ শতাংশ। চলতি বছর মার্চ-জুলাই সময়ে দেশের সব এসএমই ও বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে। একই সময়ে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) ও জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিডোর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি জরিপের প্রাথমিক ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে।
দামে দিশাহারা ক্রেতা
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, কালের কন্ঠ
নিত্যপণ্যের বাজারে জমেছে কালো মেঘ। করোনার এই দুঃসময়ে দামের ঝাঁজে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের চোখে জলকণা। মাস না ফুরাতেই অনেকেরই পকেট হচ্ছে ‘গড়ের মাঠ’। সহজ দামে যেন কোনো পণ্যই মিলছে না। আগুনদামের কারণে অনেক পণ্যে হাত দেওয়ার সাহসই পাচ্ছে না ক্রেতারা। অতিমারিতে এমনিতেই মানুষের জীবনযাত্রা গতিহীন। কেউ কেউ হারিয়েছেন চাকরি। অনেকের চাকরি থাকলেও ঝুলে গেছে বেতন। দীর্ঘ লকডাউনের পর ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান খুললেও এখনো পুরোপুরি ফেরেনি ছন্দ। এমন প্রেক্ষাপটে নিত্যপণ্যের দামের এমন আস্ফাালন মানুষকে কাঁদাচ্ছে।
নিম্ন শ্রেণির মানুষ মোটা চালে ডাল মিশিয়ে পেট ভরাবে, নেই সেই উপায়। গরিবের মসুর ডালে চলছে খেল। কিছুটা স্থির চালের চালবাজি, তবে জারি তেলের তেলেসমাতি। পরিবারের ছোট্ট সদস্যকে যে দুধ মুখে তুলে দেবেন বাবা, সেই প্যাকেটজাত দুধের দরটাও এখন পাগলা ঘোড়া। ডিম কিনতে রীতিমতো হিমশিম। আটা-ময়দা কিনতে বেকায়দা। ব্রয়লার মুরগিও দিচ্ছে দামে সুড়সুড়ি। আর চিনির দামটাও এখন অচেনা। রুপালি ইলিশের এখনো ‘রুপার দর’, একাই নাচিয়ে যাচ্ছে বাজার। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে কোনো পণ্যের দাম একবার চড়লে আর সহজে নামে না।.. …
গতকাল বৃহস্পতিবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, এই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মোটা দানার মসুর ডালের। মূলত নিম্ন আয়ের মানুষের প্রধান খাবার এই ডাল। বাজারে এখন বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা কেজি। সপ্তাহ দুয়েক আগেও ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় কেনা যেত। গত জানুয়ারিতে এই মানের ডাল ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। চিনির দাম অবশ্য সপ্তাহ দুয়েক ধরেই বাড়তি। যদিও সরকার ও ব্যবসায়ীরা মিলে সর্বোচ্চ খুচরা দাম ৭৫ টাকা বেঁধে দিয়েছিলেন; কিন্তু এই দামে পাওয়া যাচ্ছে না চিনি। বাজারে এখন খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। আর প্যাকেটজাত চিনি বেচাকেনা হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি। দাম বেশি হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতা খোলা চিনি আনা বন্ধ করে দিয়েছেন। চিনির সঙ্গে ভোজ্য তেল সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। বাজারে এখন খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪২ টাকা কেজি। সেপ্টেম্বরের শুরুতেও খোলা সয়াবিন ছিল ১৩৭ থেকে ১৩৮ টাকা কেজি। এর আগে গেল জানুয়ারিতে ছিল ১২২ থেকে ১২৪ টাকা কেজি। বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ১৫৩ থেকে ১৬০ টাকা লিটার। গত আগস্ট পর্যন্ত ছিল ১৪৫ থেকে ১৪৯ টাকা লিটার। জানুয়ারিতে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। সয়াবিনের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পাম তেলের দামও। পাম লুজ ও সুপার বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩৪ থেকে ১৩৬ টাকা কেজি। গত আগস্ট পর্যন্ত ছিল ১২২ থেকে ১২৮ টাকা, এর আগে জানুয়ারিতে ছিল ১০০ থেকে ১১২ টাকা কেজি।
বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই আটা-ময়দার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এখন সেই আটা-ময়দার দামও বেড়েছে। বাজারে এখন খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি, গত মাস পর্যন্ত যা ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। প্যাকেটজাত আটা বর্তমানে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। দুই মাস আগেও ময়দার দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা কেজি।
বাজারে গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা। খুচরায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফুলক্রিম গুঁড়া দুধ বিক্রি হচ্ছে ৬৯০ থেকে ৭২০ টাকা কেজি। গেল মাসে দুধ কেনা যেত ৫৭০ থেকে ৬৬০ টাকা কেজি। এ বছরের শুরুতে গুঁড়া দুধের দাম ছিল ৫০০ থেকে ৬৩০ টাকার মধ্যে।
বাজারে মুরগির ডিমের দাম নামছেই না। এক মাস আগে ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা ডজন। এখন বেড়ে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় ঠেকেছে। গত জানুয়ারিতেও ডিমের দাম ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা ডজন।
দীর্ঘদিন ব্রয়লার মুরগির বাজারে খামারিদের হাহাকার ছিল। ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি মুরগির উৎপাদন খরচ দিয়ে বিক্রি করতে হয়েছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে তা ১১৫ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে ছিল। তবে গত আগস্ট থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে দাম। বাজারে এখন খুরচায় ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, গত মাসে যা ছিল ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকার মধ্যে।
চালের দাম মাসখানেকের মধ্যে না বাড়লেও স্বস্তি আসেনি। এখনো সরু চাল কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৮ টাকা কেজিতে। বিক্রেতারা বলছেন, এই সময়টায় দাম আরো বেশি থাকত, যদি আমদানি অনুমোদন না দেওয়া হতো। ভারত থেকে কিছু কম দামের চাল আসায় দাম না কমলেও বাড়েনি। মাসখানেক আগেও সরু চালের দাম কেজিতে উঠে গিয়েছিল ৬৫ থেকে ৭২ টাকা। জানুয়ারিতে এ মানের চালের দাম ছিল ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা কেজি। এ ছাড়া মোটা চালের দাম বাজারে এখন ৪৬ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। গত মাসে ছিল ৪৮ থেকে ৫৮ টাকা কেজি, জানুয়ারিতে ছিল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা কেজি।
এ ছাড়া মাছ ও গরুর মাংস, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচসহ প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যই বিক্রি হচ্ছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি দামে। দেশে এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। ফলে দাম খুব একটা বাড়েনি এখনো। তবে কম দামে কত দিন পেঁয়াজ খেতে পারবে ভোক্তারা, তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, ব্যাপারীরা এখন পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি চাইছেন। এ পেঁয়াজ বাজারে এলে খুচরায়ও দাম বাড়বে। সেটা সপ্তাহখানেকের মধ্যেই হতে পারে। গতকাল বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। এটা কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়তে পারে বলে তাঁরা ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ ছাড়া আদার দাম মাঝখানে কিছুটা কমলেও আবার বাড়তে শুরু করেছে। চায়না আদা ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগে। এখন কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেশি চাইছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
বাজারে সবজির দাম এখন গড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। গেল মাসে তা ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে ছিল। গেল জানুয়ারিতে অবশ্য শীত মৌসুমের সবজি ছিল বাজারে, তাই দামও ছিল কম। ওই সময় ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে সবজি পাওয়া যেত। কাঁচা মরিচের দাম মাসখানেক আগে ডাবল সেঞ্চুরিতে বিক্রি হয়েছিল। এরপর উপায় না দেখে সরকার কাঁচা মরিচও আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। এতে দাম কমেছে ঠিকই, কিন্তু এখনো তা ১০০ টাকার ওপরেই রয়েছে।
দেশে উদ্বৃত্ত গরু তবু বিদেশি মাংস
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, দেশ রুপান্তর
রাজশাহীর দুর্গম চর খিদিরপুরের প্রান্তিক খামারি মইনউদ্দিন-আমেনা দম্পতি। কোরবানির পশু হিসেবে ভালো দামে বিক্রির স্বপ্নে বহু যত্নে সাতটি গরু লালন-পালন করেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই আশায় গুড়েবালি। গত ঈদুল আজহায় সাতটি গরুর মধ্যে মাত্র দুটি তারা বিক্রি করতে পারেন। বাকি পাঁচটি গরু যেন এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই গরুগুলোকে প্রতিদিন কেনা খাদ্য খাওয়াতে হচ্ছে, যার জোগান দিতে গিয়ে মইনউদ্দিন-আমেনা দম্পতির নাভিশ্বাস অবস্থা। এভাবে আর কতদিন গরুগুলোর প্রতিপালন করতে পারবেন তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না তারা। আর শুধু মইনউদ্দিন-আমেনা দম্পতিই নন, একইভাবে গত ঈদুল আজহায় তাদের মতো লাখো প্রান্তিক খামারির ২৮ লাখ গরু অবিক্রীত থেকে গেছে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ২৯ হাজার কোটি টাকা। এসব প্রান্তিক চাষিরাই বছরে শুধু ঈদুল আজহায় ৬০ হাজার কোটি টাকার কোরবানির পশুর অর্থনীতি গড়ে তুলেছেন দেশে। কিন্তু বিদেশ থেকে আমদানি করা মাংস তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন সারা জীবনের জন্য নষ্ট করে দেবে কি না সেটাই এখন বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কারণ দেশে লাখ লাখ উদ্বৃত্ত গরু থাকলেও বৈধ কর্র্তৃপক্ষের পরীক্ষা ছাড়াই গত তিন মাসে ভারত থেকে মহিষের সাড়ে ২৮ হাজার টন প্যাকেটজাত হিমায়িত মাংস আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। মাংস আমদানির জন্য সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) সনদ নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু শুধু চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) পরীক্ষাগারের সনদ দিয়ে এসব মাংস আমদানি করা হয়েছে। অথচ দেশে পর্যাপ্ত চাহিদা না থাকায় প্রান্তিক খামারিদের লাখ লাখ গরু অবিক্রীত রয়েছে।
প্রবীণদের এক-চতুর্থাংশই ভুগছেন অপুষ্টিতে
১ অক্টোবর, ২০২১, দেশ রুপান্তর
দেশে বর্তমানে ৬০ বছর বয়সী প্রবীণ মানুষের সংখ্যা দেড় কোটি। তাদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ অপুষ্টিতে ভুগছেন। পুষ্টিহীনতার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। এমনকি পুরুষের তুলনায় নারী প্রবীণদের মধ্যে অপুষ্টির হার বেশি নারী ২৯ ও পুরুষ ২২ শতাংশ।
গবেষকরা প্রবীণদের অপুষ্টির প্রধান চারটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো বিষণ্নতা, মুখ ও দাঁতের খারাপ স্বাস্থ্য, বিশেষ খাদ্য পরিহারের অভ্যাস এবং অসংক্রামক রোগের উপস্থিতি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) একদল গবেষক প্রবীণদের নিয়ে দুটি গবেষণায় এসব তথ্য তুলে ধরেছে।
মিল বন্ধ থাকায় বিকল্প পথে আখ বিক্রি
০১ অক্টোবর ২১, সমকাল
অব্যাহত লোকসানের কারণে গত বছর দেশের ছয়টি চিনিকলে উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ চিনিকলগুলোর মধ্যে পাবনা চিনিকল একটি। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন পাবনা জেলার আখচাষিরা। তবে বিকল্প পথ খুঁজতেও দেরি করেননি তারা।
চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিল বন্ধ থাকায় এ বছর পাবনা চিনিকল এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত আখ সরবরাহের দায়িত্ব তারা নেবে না। পাবনার কাছাকাছি গোপালপুর চিনিকলে গত বছর আখ সরবরাহ করতে পারলেও এ বছর এখনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাননি চাষিরা। তাই এবার চাষিরা নিজেই উপজেলার সব হাট-বাজারে খুচরা আখ বিক্রি করতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ জমি থেকেই আখ বিক্রি করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীদের কাছে। কেউ তৈরি করছেন আখের গুড়। উপজেলার রেলবাজার, মূলগ্রাম, ফৈলজানা, শরৎগঞ্জ, মহেলা, ছাইকোলা, বামনগ্রাম, মির্জাপুর, হান্ডিয়াল, হরিপুর, মথুরাপুরসহ বিভিন্ন বাজারে আখ বিক্রির ধুম পড়ে গেছে। শতাধিক আখ বিক্রেতা খুচরা আখ বিক্রি শুরু করেছেন।
রেমিট্যান্স কমলো টানা তিন মাস
০৪ অক্টোবর ২১, সমকাল
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস টানা কমলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। সব মিলিয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৪১ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৬৭১ কোটি ডলার। এ হিসাবে তিন মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ১৩১ কোটি ডলার বা ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শুধু সেপ্টেম্বরে কমেছে ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
ধারণা করা হচ্ছে, লোকজনের যাতায়াত শুরু হওয়ায় হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন বাড়তে পারে। মাঝে হুন্ডি একেবারেই কমে গিয়েছিল। এ ছাড়া করোনার প্রভাবে কাজ হারিয়ে যে হারে কর্মীরা দেশে এসেছেন, তার তুলনায় কম গেছেন। রেমিট্যান্স কমার প্রভাব ইতোমধ্যে মুদ্রাবাজারে পড়েছে। ডলারের দর বেড়ে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে গতকাল ৮৫ টাকা ৫০ পয়সায় বেচাকেনা হয়েছে।
দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি
এখন সংসার চালানোই দায়
১০ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
নিম্নবিত্তের মানুষ থেকে মধ্যম আয়ের পরিবার—সবার যেন হাত পুড়ছে বাজারে গিয়ে। চাল, ডাল ও তেলের দামে অস্বস্তি আগে থেকেই ছিল; এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে পেঁয়াজ, আটা, ময়দা, মুরগি, ডিমসহ আরও কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। বেড়েছে রান্নার গ্যাস, সাবান ও টুথপেস্টের মতো নিত্যব্যবহার্য সামগ্রীর দামও।
সব মিলিয়ে যখন সংসার চালানোই দায়, তখন দুঃসংবাদ আরও আছে। বিপণনকারী কোম্পানিগুলো ভোজ্যতেল ও চিনির দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দামও বাড়তি।
এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সরকারের ভূমিকা সীমিতই থাকছে। তেল-চিনিতে কর ছাড় দেওয়ার দাবি উঠেছিল, তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। সরকারিভাবে কম দামে চাল, ডাল, তেল ও চিনি বিক্রির কার্যক্রমের পরিসরও চাহিদার তুলনায় সীমিত থাকছে।
অথচ এখন সরকারের চাল ও নিত্যপণ্য বিক্রির ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের সামনে সীমিত আয়ের মানুষের ভিড় সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর চেয়ে বেশি ভিড় দেখা যেত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজধানীর কাজীপাড়ার এক আসবাব ব্যবসায়ী জানান, তিনি এখন সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকের অপেক্ষায় থাকেন। কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও তেল-চিনি কিনে বাসায় ফেরেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সবকিছুর দাম এখন চড়া। বাজারে এক কেজি চালের দাম ৬০ টাকা। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ টাকা। কিছুদিন আগেও এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকায় কেনা যেত, এখন সেটা ১৭৫ টাকা। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে ব্যবসার অবস্থা ভালো নয়। এর মধ্যে সংসারের ব্যয় বাড়ছেই।
করোনাকালে দাম কতটা বাড়ল
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তখন থেকে শুরু হয় আতঙ্কের কেনাকাটা, যাকে বলা হয় ‘প্যানিক বায়িং’। বাড়তে থাকে দাম।
টিসিবির ২০২০ সালের ১ মার্চ ও গত বৃহস্পতিবারের বাজারদরের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সে সময়ের তুলনায় এখন মোটা চালের গড় দাম সাড়ে ৩১ শতাংশ, খোলা আটার ২০, খোলা ময়দার ৩৩, এক লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৪৩, চিনির ১৯, মোটা দানার মসুর ডাল ৩০ ও গুঁড়া দুধের ১৩ শতাংশ বেশি।
ভোজ্যতেলের উদাহরণটি দেওয়া যাক। পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারে মোটামুটি পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল প্রয়োজন হয়। গত বছর অক্টোবরে এই পরিমাণ তেলের দাম ছিল ৫০৫ টাকা। এখন তা কিনতে ৭০০ টাকা লাগে। বোতলের গায়ে মুদ্রিত দর ব্র্যান্ডভেদে ৭২৮ থেকে ৭৪৮ টাকা। ফলে দেখা যাচ্ছে, একটি পরিবারে মাসে ২০০ টাকার মতো বাড়তি লাগছে শুধু ভোজ্যতেল কিনতেই।
বাজারে দুই সপ্তাহে বেড়েছে পেঁয়াজ, মসুর ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও সবজির দাম। পেঁয়াজের দাম মোটামুটি দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যে দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজিতে কেনা যেত, তা কিনতে এখন ৮০ টাকা লাগছে। কোনো উৎসব বা উপলক্ষ নেই, তবু ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকা ছুঁয়েছে, যা সাধারণত ১২০ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে থাকে।
এ বছর ইলিশের দামও কমেনি বললেই চলে। ৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরা বন্ধ হওয়ার পর বাজারে অন্য মাছের কদর বেড়েছে, দাম চড়া। সবজি রান্নার জন্য সামান্য ছোট চিংড়ি কিনতে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৫৫০ টাকা। অবশ্য সবজি কেনার জো কই! বেশির ভাগের প্রতি কেজির দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
শুধু যে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, তা নয়। বেড়েছে নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যের দাম। যেমন মাস তিনেক আগে বাজারে সুপরিচিত একটি ব্র্যান্ডের ১০০ গ্রাম ওজনের একটি সাবানের দাম ছিল ৩৫ টাকা। সেটা এখন ৪০ টাকায় বিক্রি করছে তারা। বেড়েছে ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, নারকেল তেল, শৌচাগারে ব্যবহার করা টিস্যুসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। সুপরিচিত আরেকটি ব্র্যান্ডের এক প্যাকেট টিস্যুর দাম ছিল ১৭ টাকা, যা এখন ২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। মানে হলো, টিস্যুর পেছনে একটি পরিবারের মাসিক ব্যয় ১৮ শতাংশ বেড়ে গেছে।
ফেসবুকে কিডনি বেচার চক্র, টার্গেট গরিব-অসহায়রা
১২ অক্টোবর ২১, সমকাল
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি কেনা বেচার সংঘবদ্ধ চক্রের প্রধান হোতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আটককৃতরা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মানবদেহের কিডনিসহ নানাবিধ অঙ্গের অবৈধ ট্রান্সপ্লান্টেশনের সঙ্গে জড়িত। এসময় কিডনি দাতাদের চারটি পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, পাঁচটি মোবাইল ও দেশি বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।.. ..
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চক্রে ১৫-২০ জন সদস্য তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। প্রথম দল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিডনি প্রয়োজন এমন বিত্তশালীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দ্বিতীয় দল প্রথম দলের চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রলোভন দেখিয়ে গরিব ও অভাবী মানুষ যোগার করে ঢাকায় নিয়ে আসে। তৃতীয় দল ডোনারদের ল্যাব পরীক্ষা করিয়ে কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ভারত পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এই চক্রের সঙ্গে ভারতের একটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে ডোনারকে এয়ারপোর্ট অথবা স্থলবন্দরে রিসিভ করে। পরে তারা কিডনি নেওয়া এবং ডোনারদের দেশে ফেরত পাঠানোর কাজ করে।
‘অ্যাহোন মোগো সংসার চালানো দায়’
১৩ অক্টোবর ২১, সমকাল
নাসির হাওলাদার, বয়স সবে ২৫ বছর। বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। খুঁটা জেলে হিসেবে কুয়াকাটা সংলগ্ন সাগরে মাছ ধরাই তার আয়ের একমাত্র উৎস। এ দিয়েই ‘দিন আনি, দিন খাই’ করে চলে তার সাত সদস্যের সংসার। ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় তাই ভীষণ কষ্টে আছেন তিনি।
নাসির বলেন, ‘যহোন বেশি ইলিশ পাই, তহোন সংসার ভালাই চালাই। তয় এই মৌসুমে গাঙে ইলিশের দ্যাহা নাই। মুই এই ১০-১২ বছর ধইর্যা গাঙে ইলিশ ধরি, কিন্তু এই রহোম ইলিশের আকাল দ্যাহি নাই। হেইয়ার ওপর আবার ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ কইর্যা দেওয়ায় মোরা অনেক বড় কষ্টে আছি। ২০ কেজি চাউল দেওয়ার কথা আছিলো, হেইয়াও অ্যাহোনও পাই নাই। এক সপ্তাহ তো চইল্যাও গ্যাছে। অ্যাহোন মোগো সংসার চালানো দায়।’.. ..
ইলিশ সম্পদ রক্ষায় প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের অবাধ ও নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করতে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এমনকি এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও মজুদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই সময়কালে মা ইলিশ সাগর থেকে উপকূলের মিঠাপানিতে ছুটে আসে এবং ডিম ছাড়ার পর আবার সাগরে চলে যায়। মা ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য ২০০৬ সাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে সরকার। সরকারের এই নির্দেশনা মান্য করে গভীর সমুদ্রের জেলেদের মতো উপকূলের খুঁটা জেলেরাও ইলিশ ধরা বন্ধ রেখেছেন এবং তাদের খুঁটা নৌকাগুলো কুয়াকাটার সমুদ্র তীরে সারি সারি করে উঠিয়ে রেখেছেন।
কুয়াকাটা ও রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ এলাকায় প্রায় তিন হাজার ৭০০ খুঁটা জেলে রয়েছেন। তাদের মধ্যে কুয়াকাটা এলাকায় দুই হাজার ৩০০ এবং চরমোন্তাজে এক হাজার ৪০০ খুঁটা জেলে রয়েছেন। এসব খুঁটা জেলের বেশিরভাগেরই নিবন্ধন হয়নি। ফলে সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে তারা। আবার যাদের নিবন্ধন হয়েছে, তারা ২২ দিনে ২০ কেজি করে ভিজিডির চাল পাবেন বটে, কিন্তু এই চাল দিয়ে তাদের ৮ থেকে ১০ দিন যাবে। বাকি ১২-১৪ দিন কাটাবেন কীভাবে? এসব জেলের দাবি, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে চালসহ ডাল, তেল, লবণ দেওয়া হোক। তাহলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কোনো জেলেই আর গাঙে মাছ ধরতে যাবেন না। সংসারে অভাব থাকার কারণেই তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতের আঁধারে গাঙে মাছ শিকারে যান।
অবলোপনকৃত ১৬ হাজার কোটি টাকা আদায় হবে কি
১৪ অক্টোবর, ২০২১, বণিক বার্তা
হলমার্কের মতো দেশের বৃহৎ ঋণ কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়ে তুমুল সমালোচিত হয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গ্রুপটিকে দেয়া প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ আর ফেরত পাচ্ছে না ব্যাংকটি। মামলা করেও হলমার্কের কুশীলবদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে ঋণ অবলোপনের পথে হেঁটেছে সোনালী ব্যাংক। এরই মধ্যে হলমার্কের প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। তার পরও গ্রুপটির ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে বিপদ বাড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত বৃহৎ ব্যাংকটির।
হলমার্কের মতোই অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণ আদায় করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান চার ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী। মামলা করেও খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত অবলোপনের পথে হাঁটছে এ ব্যাংকগুলো। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান চার ব্যাংকের অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অনিয়ম আড়াল করার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখাতেই রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান ব্যাংকগুলো ঋণ অবলোপনের পথ বেছে নিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করছে সোনালী ব্যাংক। ৫ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করে অগ্রণী ব্যাংক রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। আর জনতা ব্যাংক অবলোপন করেছে ৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। রূপালী ব্যাংকও ৫৯৯ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ অবলোপনের এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
অর্থনীতির যে ৫ সূচক নিয়ে দুশ্চিন্তা
১৪ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
১. মুদ্রাস্ফীতি: কাগজে-কলমে এখনো দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, ৬ শতাংশের নিচে। তবে বাজারদরের প্রতিফলন সরকারি পরিসংখ্যানে নেই। প্রায় সব ধরনের পণ্যের দরই ঊর্ধ্বমুখী। ফলে সাধারণ মধ্যবিত্তের এখন সংসার চালানোই দায়। সারা বিশ্বই এখন মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে ব্যস্ত। আর এখন এই মূল্যস্ফীতি স্ট্যাগফ্লেশনের দিকে নিয়ে যায় কি না, সেটাই এখন আলোচনা ও পরিকল্পনার বিষয়।
২. প্রবাসী আয়: করোনার প্রবল সংক্রমণের সময়েও প্রবাসী আয় ছিল ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু চার মাস ধরেই প্রবাসী আয় টানা কমেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে দশমিক ১৯ শতাংশ। চলাচলব্যবস্থা কার্যত বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আসা বৃদ্ধি পেয়েছিল। সঙ্গে ছিল ২ শতাংশ প্রণোদনা। কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা চালু হওয়ার পর আয় কমতে শুরু করেছে। নতুন দুশ্চিন্তার নাম প্রবাসী আয়ের নিম্নগতি।
৩. নতুন দারিদ্র্য: করোনার ঠিক আগে বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত ২০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। অতিমারিতে কত মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে, এর কোনো সরকারি হিসাব নেই। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের জরিপ বলছে, দেশে এখন ৪২ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। তবে সরকারের নীতিনির্ধারণ এবং পরিকল্পনার জন্য অবশ্যই এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা জানাটা জরুরি বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
৪. বৈষম্য: একটা সময় বলা হচ্ছিল করোনা-পরবর্তী বিশ্বে উত্তরণ কবে ইংরেজি ‘এল’ অক্ষরের। অর্থাৎ অর্থনীতি নিম্নমুখী হয়ে তা দীর্ঘ সময় বজায় থাকবে। পরে বলা হলো উত্তরণ হবে ইংরেজি ‘ভি ‘অক্ষরের মতো। অর্থাৎ অর্থনীতি দ্রুত নেমে গেলেও আবার দ্রুত ওপরে উঠে যাবে। আর এখন বলা হচ্ছে, উত্তরণ ঘটবে ইংরেজি ‘কে’ অক্ষরের মতো। এর অর্থ হলো, এক দলের উত্তরণ হবে ঊর্ধ্বমুখী, অন্য দল চলে যাবে নিচে। অর্থাৎ মূলত দেশে দেশে প্রকট হবে আয় ও সম্পদে বৈষম্য।
দেশে এমনিতেই বৈষম্য বাড়ছিল। করোনা তা আরও প্রকট করছে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
৫. খেলাপি ঋণ: সরকার করোনা মোকাবিলায় এক লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা তহবিলের জোগান দিয়েছে। এর প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে শিল্প খাতে। এই অর্থের কত অংশ উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই এ প্রশ্ন তুলেছে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ গণনা দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল। সুতরাং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কী পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে ফিরে আসবে, সে প্রশ্ন ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদদের।
সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দিলে কষ্টে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। আর এরই মধ্যে যাঁরা গরিব হয়ে গেছেন, তাঁরা থাকবেন সবচেয়ে বিপাকে।
মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে দিনমজুরের আত্মহত্যা
২২ অক্টোবর ২০২১, জাগো নিউজ
কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত একমাত্র মেয়ের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মো. লিটন (৩৫) নামে এক দিনমজুর।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) সকালে তার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মৃত লিটন ভোলার দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সি বাড়ির শাহে আলমের ছেলে।
মৃতের স্ত্রী ছালেহা বেগম জানান, লিটন একজন দিনমজুর। তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে রুপা বেগম কিডনিজনিত রোগে ভুগছে। বেশ কয়েকদিন আগে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করান। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শনিবার (২৩ অক্টোবর) আবারও ঢাকায় চিকিৎসার তারিখ ছিল। মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য শুক্রবার ঢাকায় রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়ের চিকিৎসার টাকার জোগোড় করতে না পেরে বৃহস্পতিবার চিন্তিত হয়ে পড়েন লিটন। মেয়েকে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। সবাই ঘুমিয়ে গেলে রাতের কোনো এক সময় ঘরের পেছনের আম গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
অভাবের সাথে যুদ্ধ করে ক্লান্ত, একটু রেস্ট দরকার; বিজিবি সদস্যের আত্মহত্যা
২৩ অক্টোবর ২০২১, যমুনা টিভি অনলাইন
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের কাছে থাকা বন্দুক দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন সোহরাব হোসাইন চৌধুরী নামে বিজিবির এক সিপাহী। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহে।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাত ৮টা ৩ মিনিটে ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে একটি সুইসাইড নোট পোস্ট করার পর রাত ৯ টার দিকে ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকায় অবস্থিত ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে আত্মহত্যা করেন তিনি।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ৩৯ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী।
নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ। নিহত সোহরাব ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ছেলে।
এর আগে, নিজের বেতনের টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সোহরাব হোসাইন। সেখানে তিনি লেখেন, মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম নিয়ে ভালো কিছু আশা করা মহাপাপ। নামে সরকারি চাকরি কিন্তু বেতনটা ঐ নামের ওপরই। ৭ বছর চাকুরি এখনও বাড়িতে গেলে ঠিক মতো একটু কোথাও যাওয়া হয় না, ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়।
তিনি আরও লেখেন, গত কিছুদিন আগে আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো, মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলাম পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মায়ের জন্য ঔষধ কিনবো, কিন্তু সে টাকা আর হাতে নেই। পরে মামার কাছ থেকে ধার নিয়ে মাকে ঔষধ কিনে গাড়ি ভাড়া করে দিলাম। এমনটা প্রতিমাসেই হতে থাকে। না পারি নিজের খুশি মতো একটা জিনিস কিনতে কিংবা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভালো কিছু খেতে। না পারি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে। তার মধ্যে বর্তমান বাজারের যা পরিস্থিতি এতে বাজার করা কিংবা সংসার চালানো কতটা কঠিন বোঝানোর মতো না।
মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে এখন ক্লান্ত উল্লেখ করে সোহরাব হোসাইন আরও লিখেছেন, ছোট ভাইটা শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম তার জন্য কিছু করবো তার সুযোগ হয়নি এই জীবনে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ প্রশ্ন করে, বিয়ে করি না কেন। কিন্তু মানুষকে তো আমার সরকারি চাকরির ভেতরটা দেখাতে পারি না। আমার বেতন, আমার সুযোগ, সুবিধা, সেভিংস এই সব কিছুতে অন্য একটা মানুষকে আনা আমার জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা। তাই বিয়ে শাদির চিন্তা করিও না। শুধু খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারলে খুশি এমন চাইলাম, তাও আর হয়ে উঠলো না। ৭টা বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সত্যি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এইবার একটু রেস্ট দরকার।
আমরা দ্বিগুণ ভাত খাই, এটা কমাতে পারলেই সমাধান: কৃষিমন্ত্রী
২৪ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে ভাত খাওয়া কমানোকে একটি উপায় হিসেবে দেখছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
আজ রোববার এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রতি প্রায় ২০০ গ্রাম চাল খেয়ে থাকেন। কিন্তু আমাদের দেশে চাল খাওয়ার পরিমাণ প্রায় ৪০০ গ্রাম। এটা কমিয়ে আনতে পারলে আমাদের যে চালের উৎপাদন, সেটাকে টেকসই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তিনি বলেছেন, করোনা মহামারি সত্ত্বেও এ দেশের মানুষ না খেয়ে নেই। এ সময়ে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের জোগান দেওয়া এবং কৃষির আধুনিকায়ন করা।
রাজধানীর বাইরেও টু-লেটের ছড়াছড়ি
করোনাকালে শহর ছেড়ে যাওয়া লাখো মানুষ এখনও ফেরেনি
২৫ অক্টোবর ২১, সমকাল
কেবল রাজধানী ঢাকা নয়; করোনা মহামারিতে উপার্জন ও চাকরি হারিয়ে লাখ লাখ মানুষ ও তাদের পরিবার চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, কুমিল্লা ও যশোরের মতো দেশের অন্য বড় শহরগুলো ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে পুরোদমে। কিন্তু মহানগরীগুলো ছেড়ে যাওয়া লাখো মানুষ এখনও আগের আবাস ও কর্মস্থলে ফিরে আসেনি। এর একটি বড় কারণ, কর্মসংস্থান পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তাই করোনা সংকটে চাকরি হারানো লাখো মানুষ ফিরতে পারেনি তাদের আগের কর্মস্থলে। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান আবার করোনার অজুহাতে শ্রমিকদের বেতনও কমিয়ে দিয়েছে। ফলে তারা পরিবারকে আর শহরে আনার সাহস পাচ্ছেন না।
এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে আবাসিক ভবনগুলোর ওপর। সমকালের ব্যুরো ও অফিসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেশিরভাগ মহানগরীতে এখনও ‘টু-লেট’-এর ছড়াছড়ি। এতে বিপাকে পড়েছেন ভবন মালিকরা। তাদের বিনিয়োগে কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। অবশ্য কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে খুলনায়। সেখানে খুব বেশি টু-লেট চোখ পড়ছে না। আবার করোনা সংকটের শুরুতে অনেকে দোকান ছেড়ে চলে গেছেন। তার অনেকটি এখনও খোলেনি। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিনের লকডাউনে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েন। এরপর দফায় দফায় বেড়েছে লকডাউন। এতে বেকার হয়ে পড়েন শ্রমজীবী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা। তাদের অনেকেই শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। দীর্ঘ দেড় বছর পর জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলেও শহরে ফিরে আসেননি অনেকেই। এর কারণ জানা গেছে ব্র্যাকের একটি জরিপে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর জরিপ করে গত মে মাসে এই বেসরকারি সংস্থাটি জানায়, ৩৬ শতাংশ লোক চাকরি বা কাজের সুযোগ হারিয়েছেন। ৩ শতাংশ লোক চাকরি থাকলেও বেতন পাননি। আর দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে যারা কাজ করেন, তাদের ৬২ শতাংশই কাজের সুযোগ হারিয়েছেন।
ডলারের দাম বেড়ে ৯০, বাড়ছে আমদানি খরচ
২৫ অক্টোবর, ২০২১, নিউজবাংলা টুয়েন্টিফোরডটকম
ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণ কয়েকটি। করোনা শেষে মূলধনি যন্ত্র ও কাঁচামাল আমদানি যেমন বেড়েছে, তেমনি দেড় বছর পর খুলে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন দেশের সীমান্ত। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। করোনার কারণে থেমে যাওয়া বহুজাতিক বিমান সংস্থাগুলো এখন অনেক রুট তথা গন্তব্যে তাদের বিমান চলাচল শুরু করেছে। ফলে মানুষের পেশাগত কাজ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কেনাকাটার জন্য বিভিন্ন দেশে যাতায়াত শুরু হয়েছে।
পণ্যমূল্য বেড়ে চলার মধ্যে আরও একটি দুঃসংবাদ হলো ডলারের দরের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো যাচ্ছে না। ফলে আমদানি পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মুদ্রাবাজারে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ডলারের। খোলাবাজারে ডলারের দর ৯০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো ডলার বিক্রি করছে ৮৮ টাকার ওপরে। তবে সেখানে চাইলেই তা কেনা যায় না।
তবে আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে গত এক সপ্তাহে ডলারের দর বাড়েনি; ৮৫ টাকা ৬৫ পয়সা দরেই বিক্রি হয়েছে।
আমদানির জোয়ারে আর রেমিট্যান্সের নিম্নগতিতে দেখা দিয়েছে এই সংকট। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভেও টান পড়েছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
দখল, দুর্নীতি ও অনিয়ম
সিএজি–এর নিরীক্ষা প্রতিবেদন
করোনা হাসপাতালে কেনাকাটায় অনিয়ম
২৮ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
জনগণের করের টাকায় কেনা চিকিৎসা উপকরণ হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে গেছে। সরঞ্জাম না পেলেও একটি হাসপাতাল ঠিকাদারকে বিল দিয়ে দিয়েছে। চিকিৎসক-নার্সদের কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য যে দামে হোটেলের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, একটি হাসপাতাল হোটেল মালিককে বিল দিয়েছে তার চেয়েও বেশি দরে। খাবারের বিলও দেওয়া হয়েছে অস্বাভাবিক বেশি। নিয়ম না থাকলেও সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দরে ওষুধ কেনা হয়েছে। এসব অনিয়মের কারণে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন ১৫টি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ওপর করা কমপ্লায়েন্স (সার্বিক মান) নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে করা প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের মহা হিসাবনিরীক্ষক নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) কার্যালয় দুই মাস আগে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠিয়েছে।
মেঘনা-ফুলদীর বুকে কারখানা!
২৮ জুলাই, ২০২১, দেশ রুপান্তর
নৌ চলাচল ও পানি ব্যবস্থাপনার জন্য দেশের অন্যতম প্রধান নদী হিসেবে বিবেচিত মেঘনা ও এর শাখা নদী ফুলদীর একাংশ ভরাট করে জাহাজ মেরামত-নির্মাণ কারখানা গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার দৌলতপুরে ‘থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড’ নামে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান দুটি নদী দখলের পাশাপাশি দুটি খালও পুরোপুরি ভরাট করে বহুতল বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। দখল ও ভরাটের ফলে সংকুচিত হয়ে পড়ায় ফুলদী নদী দিয়ে বড় ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারছে না। এতে করে সেখানকার পাঁচটি খাদ্যগুদামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।
দুটি নদীর আংশিক দখল ও দুটি খাল ভরাটের পাশাপাশি থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের বিরুদ্ধে দৌলতপুরে অন্তত শখানেক কৃষকের জমি বালি ফেলে দখলেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, ওইসব জমির দখল ধরে রাখতে দিনরাত ৩০ জন অস্ত্রধারী পাহারা দিচ্ছে সেখানে। মেঘনার মতো গুরুত্বপূর্ণ নদী দখল হয়ে যাওয়ার পরও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। দখল হওয়া জমির কয়েকজন মালিকের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে। চার সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হলেও এখন পর্যন্ত তা দেয়নি মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি), গজারিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)।
গরিব সাজলেন ১০ লাখ সচ্ছল
০২ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
গৃহহীনদের ঘর দেওয়া কর্মসূচিতে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঢুকে পড়া কিংবা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সহায়তা পাওয়ার যোগ্য না হয়েও অনেকেরই টাকা নেওয়ার ঘটনা বেশ পুরোনো। এবার সরকারের ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পেও একই চিত্র ধরা পড়েছে। উপযুক্ত না হয়েও টানা এক যুগ ধরে ঋণসুবিধা নিয়েছেন অনেক ধনী ব্যক্তি। গত ৩০ জুন প্রকল্পটি শেষ হয়।
২০০৯ সাল থেকে চলতি ২০২১ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার দিন পর্যন্ত ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কাগজপত্রে উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ লাখ। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে এই তালিকার ১০ লাখ, মানে ১৭ শতাংশ উপকারভোগীই ছিলেন সচ্ছল মানুষ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দেশের আটটি বিভাগের ৪০টি উপজেলার ৮০টি ইউনিয়নে ২৪০টি সমিতির তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করে আইএমইডি।
তিন বেলার খাবার ‘এক প্যাকেজে’
০৪ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একজন রোগীর জন্য তিন বেলা খাবারের জন্য ৩০০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে ঠিকাদার কেবল ‘একটি প্যাকেজে’ সকালে খাবার সরবরাহ করছেন। রোগীরা বলছেন, এই প্যাকেজে বাজারমূল্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১২৫ টাকার খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রোগী ও স্বজনেরা।
রন ও দিপু সিকদার নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় সমঝোতা, দাবি বাদীর
১০ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই দিপু হক সিকদার নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ায় সমঝোতা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাদী এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। এদিকে এই দুই আসামিকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়ে আদালতে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাদী-বিবাদীর মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তাঁরা একটি সমঝোতা চুক্তি করেন।
পলাতক ঋণখেলাপির বিলাসী জীবন দুবাইয়ে
১১ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
ব্যাংকের খাতায় তিনি শীর্ষ ঋণখেলাপি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় অর্থ পাচারকারী হিসেবে রয়েছে তাঁর নাম। আর পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক আসামি। অথচ এই শাহজাহান ওরফে বাবলুর জীবন কাটছে বিদেশে আরাম-আয়েশে, বিলাসিতায়। দুবাইয়ে বসে নিয়মিতই তিনি তাঁর বিলাসবহুল বাসভবন এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেই যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বিদেশে শাহজাহানের বিলাসী জীবনযাপনের পুরো অর্থই গেছে দেশ থেকে। সরকারি-বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক থেকে লোপাট করা প্রায় ২০০ কোটি টাকার একটা অংশ এবং ভুয়া রপ্তানির বিপরীতে হাতিয়ে নেওয়া সরকারি ভর্তুকির টাকায় বিদেশে তিনি বিলাসী জীবন যাপন করছেন। অথচ তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনার কোনো উদ্যোগই সরকারি কোনো সংস্থারই নেই। তাঁর বিরুদ্ধে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দুটি সংস্থা মামলা করেছে, এই যা।
অব্যাহতি পেলেন বসুন্ধরার এমডি
১৮ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। আজ বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।
পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করায় মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন সায়েম সোবহান আনভীর। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপকমিশনার মো. জাফর হোসেন।
৫৩ ফেরির ৪৭টিরই সনদ নেই
১৯ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
দেশের নৌপথে ৯৫ বছর বয়সী ফেরিও চলে। আইন অনুযায়ী ৪০ বছরের বেশি বয়সী নৌযান চালানোর সুযোগ নেই। মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া রুটে চলাচল করে এই ডাম্ব ফেরি। তীব্র স্রোতে ঝুঁকি এড়াতে এর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাবাজার ঘাটে
দেশের নৌপথে ৯৫ বছর বয়সী ফেরিও চলে। আইন অনুযায়ী ৪০ বছরের বেশি বয়সী নৌযান চালানোর সুযোগ নেই। মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া রুটে চলাচল করে এই ডাম্ব ফেরি। তীব্র স্রোতে ঝুঁকি এড়াতে এর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাবাজার ঘাটেঅজয় কুন্ডু
পদ্মা সেতুর পিলারে যে চারটি ফেরি ধাক্কা দিয়েছিল তার একটিরও হালনাগাদ ‘ফিটনেস’ সনদ নেই। আইন অনুযায়ী দুটির জীবনকাল পেরিয়ে গেছে। এই ফেরিগুলো নৌপথে চলার কথা নয়। যেহেতু সরকারি সংস্থা ফেরি চালায়, তাই আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
ফেরিচালকেরা বলছেন, ফিটনেস সনদ নেওয়া হলে ফেরিতে কী কী সমস্যা আছে, তা ধরা পড়ে। কিন্তু ফেরি চালানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সনদ না নিয়েই ফেরি চালাচ্ছে।
শুধু পদ্মা সেতু এলাকার শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথ নয়, পুরো দেশে বিআইডব্লিউটিসি যে ৫৩টি ফেরি চালায়, তার ৪৭টিরই হালনাগাদ ফিটনেস সনদ নেই। জীবনকাল পেরিয়ে গেছে ২০টির। এর মধ্যে পাঁচটির বয়স ৯৫ বছর।
বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণীর অভিজাত পণ্যের ব্যবসা
আগস্ট ২২, ২০২১, বণিক বার্তা
ফ্যাশন হাউজ ভাসাভির উত্থান আর রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের লুণ্ঠন—এ দুটি একই সূত্রে গাঁথা। ২০১২ সাল-পরবর্তী সময়ে হঠাৎ করেই একের পর এক ফ্যাশন শোর আয়োজন করে ভাসাভি। এসব ফ্যাশন শোতে ভিড় বাড়তে থাকে দেশী-বিদেশী অভিনেতা, অভিনেত্রী ও মডেলদের। একই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক থেকে ভাসাভি গ্রুপের নামে বেরোতে থাকে শত কোটি টাকার ঋণ। যদিও ঋণ হিসাবে নেয়া সে অর্থ আর বেসিক ব্যাংকে ফেরেনি। সুদসহ বর্তমানে ভাসাভি গ্রুপের কাছে বেসিক ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩১৭ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের মধ্যে ভাসাভি গ্রুপের সব ঋণই ব্যাংকটির খেলাপির খাতায় উঠেছে।
শুধু বেসিক ব্যাংকই নয়, ভাসাভি ফ্যাশনের চেয়ারম্যান ইয়াসির আহমেদ খান তানিম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল জামান মোল্লা বড় অংকের অর্থ বের করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে। ২০১২ সাল-পরবর্তী সময়ে নেয়া এ ঋণের অর্থও ব্যাংক দুটিতে ফেরেনি। এর মধ্যে রূপালী ব্যাংকে কামাল জামান মোল্লার দুটি কোম্পানির ঋণের পরিমাণ ১৩৫ কোটি টাকা। আর অগ্রণী ব্যাংকে ইয়াসির আহমেদ খান তানিমের কোম্পানির ঋণ রয়েছে ২০০ কোটি টাকার বেশি। বেসিকের মতো ভাসাভি ফ্যাশনের এ দুই কর্ণধারের কাছ থেকে অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকও ঋণ আদায় করতে পারছে না।
নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে মিটফোর্ডকেন্দ্রিক চক্র
২২ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
মো. রবিন পাঁচ বছর ধরে ঢাকার মিটফোর্ড এলাকার বিল্লাল শাহ মার্কেটে ওষুধের পাইকারি ব্যবসা করছেন। ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয়। এখন তিনি মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তিনি যে সারা দেশে নকল ও ভেজাল ওষুধ ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত, একথা জানা ছিল না ব্যবসায়ীদের।
একাধিক ব্যবসায়ীর ভাষ্য, পাঁচ বছর ব্যবসা করেই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর উত্থান নিয়ে কানাঘুষাও চলছিল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করে বলছে, রবিন দেশের জেলা এবং উপজেলায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ভেজাল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এমন অভিযোগে গত ১২ জুলাই তাঁকেসহ চক্রের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ফয়সাল হোসেন নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ীও রয়েছেন। শুধু এই দুজন নন, এই চক্রে আরও কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছেন বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।
গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ না করার দাবিতে সড়ক অবরোধ সাঁওতালদের
২৩ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলের আওতাধীন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকায় রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) নির্মাণ না করার দাবিতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটামোড় এলাকায় আজ সোমবার বিকেলে সড়ক অবরোধ করেন সাঁওতালরা। বিকেল চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে দুই শতাধিক সাঁওতাল অংশ নেন।
বিকেলে সাঁওতালরা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাদারপুর ও জয়পুর (সাঁওতাল–অধ্যুষিত) গ্রাম থেকে মিছিল নিয়ে কাটামোড় এলাকায় সমবেত হন। তাঁরা লাঠি ও তির–ধনুক হাতে নানা স্লোগান দেন। এরপর গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটামোড় এলাকায় বিকেল চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।.. ..
সড়ক অবরোধ চলাকালে বক্তব্য দেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে। তিনি বলেন, সাহেবগঞ্জ বাগদা র্ফাম এলাকায় সাঁওতালদের পৈতৃক জমিতে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এখানে ইপিজেড নির্মাণ করা হলে সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি থাকবে না। তাই এখানে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে। সরকার এখানে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ সেই পুলিশ কর্মকর্তার
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
দেশ ছেড়ে পালানোর পর ভারতে গ্রেপ্তার ঢাকার বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানার বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে। নামে-বেনামে থাকা তাঁর সম্পদের মধ্যে ঢাকার অভিজাত এলাকায় ৫টি ফ্ল্যাট, ৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাণিজ্যিক ভবনে জায়গা (স্পেস), ২টি প্লট ও ৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরও চারটি দেশে তাঁর সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
শেখ সোহেল রানা বছর চারেক আগে পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক হন। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন গুলশান ও বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ছিলেন।.. …
এই সোহেল রানা আলোচনায় আসেন গত আগস্টের মাঝামাঝিতে, ই-অরেঞ্জ নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হওয়ার পর। ওই মামলায় তাঁর বোন সোনিয়া মেহেজাবিন ও ভগ্নিপতি মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে। তাঁর চতুর্থ স্ত্রী নাজনীন নাহার (বীথি) পলাতক। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার ই-অরেঞ্জের আরেক গ্রাহকের মামলায় আসামি করা হয় সোহেল রানাকে। ওই রাতেই তিনি পালিয়ে যান। এরপর গত শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্দায় তিনি ওই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়েন। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কোচবিহারের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর বের হয়।.. …
প্রথম আলোর অনুসন্ধান ও পুলিশের গুলশান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেখ সোহেল রানার গুলশানের শাহজাদপুরের সুব্যস্তু নজরভ্যালির ৩ নম্বর টাওয়ারে একটি ও গুলশান মডেল টাউনে একটি, নিকেতনে দুটি ফ্ল্যাট ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই ব্লকে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। গুলশানে একটি বাণিজ্যিক ভবনে ৯ কোটি টাকায় স্পেস কিনেছেন। বসুন্ধরা ও পূর্বাচলে দুটি প্লট এবং গুলশানে ও উত্তরায় তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া গেছে। ঢাকার বাইরে নিজ জেলা গোপালগঞ্জ ও খাগড়াছড়িতেও জমি কিনেছেন বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া থাইল্যান্ডের পাতায়ায় সুপারশপ, জমি ও ফ্ল্যাট, পর্তুগালের লিজবনে সুপারশপ, বার ও রেস্তোরাঁ, ফিলিপাইনের ম্যানিলায় বার এবং নেপালের কাঠমান্ডুতে বার ও ক্যাসিনো রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।.. …
‘ধর্মীয় আবেগ’ ফাঁদ বানিয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছে এহসান গ্রুপ
১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, জাগো নিউজ
ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এমএলএম কোম্পানির ফাঁদ তৈরি করে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমান, ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যুক্ত ব্যক্তি, ইমাম শ্রেণি ও অন্যান্যদের টার্গেট করে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান। তিনি শরিয়ত সম্মত সুদবিহীন বিনিয়োগের বিষয়টি ব্যাপক প্রচারণা করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতেন। এছাড়া তিনি ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের নামে ব্যবসায়িক প্রচার-প্রচারণা করতেন।
এসব প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান (৪১) ও তার সহযোগী মো. আবুল বাশার খানকে (৩৭) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০। তিনি ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেন। রাগীব আহসানের বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। রাগীব আহসান লাখ টাকার বিনিয়োগে মাসিক মাত্রাতিরিক্ত টাকা প্রাপ্তির প্রলোভন দেখিয়ে ২০০৮ সালে ১০ হাজার গ্রাহককে যুক্ত করেন। এখন তার গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক।
কম্পিউটার অপারেটর থেকে ৪৬০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক
অঢেল সম্পদ গড়ার বাংলাদেশী স্টাইল
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, বণিক বার্তা
এক সময়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে দৈনিক ১৩০ টাকা বেতনে কম্পিউটার অপারেটরের চাকরি করতেন মো. নুরুল ইসলাম (৪১)। সে সময় দালালি ও চোরাকারবারিসহ বন্দরকেন্দ্রিক বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত সিন্ডিকেটগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তার। জড়িয়ে পড়েন স্থলবন্দরকেন্দ্রিক অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে। এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে নিজেই গড়ে তোলেন দালালির এক সিন্ডিকেট।
ধীরে ধীরে টেকনাফ স্থলবন্দরকেন্দ্রিক অপরাধচক্রের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে সিন্ডিকেটটি। চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস ও দালালিসহ সব ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন নুরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা বরাবরই এড়িয়ে চলেছে সিন্ডিকেটটি। যদিও বন্দরভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় সবার সঙ্গেই দহরম-মহরম বজায় রেখেছেন নুরুল ইসলাম। ফলে অপরাধমূলক কার্যক্রমে কখনই তেমন একটা বাধার সম্মুখীনও হতে হয়নি তাকে। নুরুল ইসলাম হয়ে ওঠেন বন্দরের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি।
অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, টেকনাফে তার সিন্ডিকেটের সদস্য ১২-১৫ জন। তাদের সহযোগিতায় টেকনাফ স্থলবন্দর ও ট্রাক স্ট্যান্ডে নানা ধরনের দালালি কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি বন্দরের শ্রমিক নিয়োগ, পণ্য খালাস ও পরিবহনের সিরিয়াল দেয়ার কাজগুলোও তার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এছাড়া প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে কাঠ, শুঁটকি, বরইয়ের আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য আমদানির সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন তিনি।
এভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন নুরুল ইসলাম। এক সময়ে দৈনিক ১৩০ টাকা বেতনে চাকরি করা নুরুল ইসলাম হয়ে ওঠেন কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। সম্প্রতি জাহাজ কেনার পরিকল্পনাও করছিলেন তিনি। এছাড়া সাভারে একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণের কাজেও বিনিয়োগ করেছেন তিনি।
তবে এ পরিকল্পনা সফল হওয়ার আগেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন নুরুল ইসলাম।
গ্রাহকদের পাওনার কী হবে
১৭ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন গ্রেপ্তারের পর কোম্পানির কাছে লাখ লাখ গ্রাহকের পাওনা ফেরত নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ইভ্যালির কাছে দেশের ২ লাখের বেশি ক্রেতা এবং কয়েক হাজার পণ্য সরবরাহকারী বা মার্চেন্টের টাকা প্রাপ্য। এ ছাড়া অফিস ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিল, কর্মীদের বেতন বাবদ কয়েক কোটি টাকা পাওনা রয়েছে কোম্পানিটির কাছে। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা দেনার দায়ে থাকা কোম্পানির গ্রাহকদের সামনে অনিশ্চয়তা ছাড়া অন্য কিছু দেখছেন না বিশ্নেষকরা।
বাণিজ্য বিশ্নেষকরা বলছেন, ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আপাতত ক্ষীণ। যতদূর তথ্য পাওয়া গেছে, দেনা পরিশোধের মতো সম্পদ এ প্রতিষ্ঠানের নেই। বেশ কিছুদিন ধরে এ বিষয়ে তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। গ্রাহকদের মধ্যে এ কারণে উদ্বেগ রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ৬ মাসের মধ্যে দেনা শোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি, কিন্তু বিস্তারিত পরিকল্পনা জমা দেননি। গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন তিনি কীভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন, তা এখন সময়ই বলে দেবে।
যুবক, ডেসটিনি থেকে ইভ্যালি – গ্রাহকদের টাকার খবর কী?
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, বিবিসি বাংলা
ফেনীর বাসিন্দা মারজান কনক ২০০৫ সালে যুবক নামের একটি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানিতে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বেশি লাভের আশায়। প্রথম দিকে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। যুবকের তরফ থেকে তাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল বেশি মুনাফা এবং জমি দেয়া হবে। সে আশায় তিনি আরো টাকা বিনিয়োগ করেন। এক পর্যায়ে দেখেন কোম্পানির লোকজনের আর কোর খবর নেই।
মারজান কনক বলেন , ” প্রথমে আমি যখন ৫০ হাজার টাকা রাখি তখন আমাকে ২০ থেকে ২৫ পার্সেন্ট লাভ দিয়েছিল। এক বছর আমাকে ঠিক মতো টাকা দিছে। শেষ পর্যন্ত আমি এক লাখ টাকা রেখেছিলাম।”
দেড় দশক আগে বিতর্কিত মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং ব্যবসার নামে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে যুবক। প্রতারণার অভিযোগে ২০০৬ সালে যুবকের কার্যক্রম ও বন্ধ করে দেয় সরকার। যুবকে যারা টাকা দিয়েছেন তারা সেই টাকা আজও ফেরত পাননি। মারজান করকও সে টাকা ফেরত পাবার আশা করেন না।
ডেসটিনির জালিয়াতি
যুবকের মতোই প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে ডেসটিনি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। মানুষের কাছ থেকে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও জালিয়াতির মামলায় ডেসটিনির শীর্ষ ব্যক্তিরা এখন কারাগারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শুরু হয়েছে ই-কর্মাসের নামে নানা প্রতারণা। ই-ভ্যালি এবং ই-অরেঞ্জ মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী র্যাব বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল জানিয়েছেন, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেবার কোন পরিকল্পনা তার নেই।.. …
সিনেমার স্পন্সরেও পিছিয়ে ছিল না ইভ্যালি
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, সময় নিউজ টিভি অনলাইন
দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ব্যবসায়িক প্রচার-প্রচারণায় শীর্ষে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। বিলবোর্ড-বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরেই ছিল তাদের ব্যাপক প্রচারণা।
পিছিয়ে ছিল না নাটক-সিনেমাতেও। অসংখ্য নাটকের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে ইভ্যালিকে দেখা গেছে। এছাড়া সিনেমাতেও ছিল ইভ্যালির স্পন্সর। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘অপারেশন সুন্দরবন’। ইভ্যালির আংশিক পৃষ্ঠপোষকতায় র্যাব ওয়েলফেয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রযোজনায় নির্মিত হয় ‘অপারেশন সুন্দরবন’।.. …
ইভ্যালির রাসেলের গ্রেপ্তারকে ‘ফন্দি’ ভাবছেন অনেকে
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
প্রতারণার দায়ে বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের গ্রেপ্তারকে বিপুল সংখ্যক পণ্য ক্রেতা-বিক্রেতার ‘পাওনা পরিশোধ এড়ানোর ফন্দি’ বলে ভাবছেন কেউ কেউ।
শুক্রবার পুরান ঢাকায় আদালত চত্বরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাসেলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো ‘পাওনাদার’ দাবিদারদের সঙ্গে কথা বলে এমন সন্দেহের প্রকাশ মেলে।
ঢাকা মহানগর আদালতের শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাব্বির আহমেদ সজিব জানান, রাসেল দম্পতিকে আদালতে আনার খবর শুনে সেখানে অর্ধশতাধিক লোক জড়ো হন। তারা রাসেলের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
বিকাল ৩টায় শাহবাগ চত্বরে কয়েকশ লোক রাসেলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে। কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে তারা ধানমণ্ডিতে ইভ্যালির কার্যালয়ে গিয়েও রাসেলের মুক্তির জন্য স্লোগান দেয়।
লোপাট ২১ হাজার কোটি টাকা
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
সব মিলিয়ে গত ১৫ বছরে ২৮০টি প্রতিষ্ঠান মানুষের অন্তত ২১ হাজার ১৭ কোটি টাকা লোপাট করেছে বলে বেরিয়ে এসেছে। সব ক্ষেত্রেই উপায় ছিল গ্রাহককে বেশি মুনাফা ও ছাড়ের লোভ দেখানো। টাকার এই হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক, যুবকের ঘটনায় গঠন করা কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত ও গ্রাহকদের দাবির ভিত্তিতে তৈরি। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৬ সালে যুবকের ২ হাজার ৬০০ কোটি, ২০১১ সালে ইউনিপে টু ইউর ৬ হাজার কোটি, ২০১২ সালে ডেসটিনির ৫ হাজার কোটি এবং ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল সময়ে ২৬৬টি সমবায় সমিতির গ্রাহকদের ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা।
এসবের বাইরে ২০২১ সালে ১১টি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না বলে বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে রয়েছে ই-অরেঞ্জের গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, ই-ভ্যালির ১ হাজার কোটি টাকা, ধামাকার ৮০৩ কোটি টাকা, এসপিসি ওয়ার্ল্ডের ১৫০ কোটি টাকা, এহসান গ্রুপের ১১০ কোটি টাকা, নিরাপদডটকমের ৮ কোটি টাকা, চলন্তিকার ৩১ কোটি টাকা, সুপম প্রোডাক্টের ৫০ কোটি টাকা, রূপসা মাল্টিপারপাসের ২০ কোটি টাকা, নিউ নাভানার ৩০ কোটি টাকা এবং কিউ ওয়ার্ল্ড মার্কেটিংয়ের গ্রাহকদের ১৫ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা।
বর্তমানে সিআইডি মোট ১৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে। বেশির ভাগের বিরুদ্ধে গ্রাহককে পণ্য না দেওয়া, টাকা ফেরত না দেওয়া, চেক দিলেও ব্যাংকে টাকা না থাকা এবং সরবরাহকারীদের টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
দেড় দশকে মানুষের টাকা লোপাটের ঘটনা বেরিয়ে আসার পর মামলা হয়েছে। কোনো কোনো ঘটনায় আসামিরা আত্মগোপন করেছেন। কোনো কোনো মামলায় আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে কারাবাস করছেন। কিন্তু গ্রাহকেরা টাকা ফেরত পাননি।
যেমন যুবকের ঘটনা বেরিয়ে আসে ২০০৬ সালে। আমানতকারীরা বলছেন, যুবকের অনেক সম্পদ ও জমি আছে। সেগুলো বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা দেওয়ার দাবিতে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কিন্তু ১৪ বছরেও কিছু হয়নি। যুবকের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের সংগঠন জনকল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে পদক্ষেপ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলাও হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগের অনুমতি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে শুধু চিঠি–চালাচালি হয়েছে। কাজ হয়নি।
কেউ দায় নেয় না
ই-কমার্স কেলেঙ্কারির সবকিছুই হয়েছে প্রকাশ্যে, ডিজিটাল মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়েবসাইট খুলে গ্রাহককে বিশাল ছাড়ে পণ্য দেওয়ার লোভ দেখিয়েছে। বিপুল টাকা তুলেছে। লেনদেন করেছে ব্যাংক ও মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। অভিযোগ হলো, সরকারের দপ্তরগুলো যথাসময়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেনি।
আলোচিত ইভ্যালি যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। শুরু থেকেই তারা বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে বাজারদরের চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য বিক্রি শুরু করে। মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অবশ্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে পণ্য না দেওয়া ও টালবাহানা করার অভিযোগও জমা পড়ছিল। ইভ্যালির মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আশ্চর্যজনক হারে ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক ব্যবসায়িক কৌশল সরকারের কোনো সংস্থা খতিয়ে দেখার কোনো চেষ্টা করেনি।
২০২০ সালের আগস্ট মাসে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নিজেরা একটি কমিটি করে, চিঠি পাঠানো হয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে। অনুসন্ধান চলে। এক মাসের জন্য ইভ্যালির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। কিন্তু ব্যবসা চলতে থাকে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৮ জুন এক প্রতিবেদনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা ছিল ৪০৩ কোটি টাকা। বিপরীতে চলতি সম্পদ ছিল মাত্র ৬৫ কোটি টাকার। গ্রাহকের প্রতারণা মামলায় সবশেষ গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হন ই-ভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল। রাসেলের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, সর্বশেষ ইভ্যালির দেনার পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে ব্যাংকে আছে মাত্র ৩০ লাখ টাকা। আর ডিজিটাল লেনদেনের গেটওয়ের কাছে আছে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা। বিপুল দেনা কীভাবে পরিশোধ করবেন, তা রাসেল জানেন না বলে র্যাবকে বলেছেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিপুল ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রির বিষয়টি শুরুতেই অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এ ক্ষেত্রে যাঁদের তদারকির দায়িত্ব ছিল, তাঁরা তা ঠিকমতো পালন করেননি।
বিআরটিসির বাস
অকালে অচল, বিক্রি লোহালক্কড়ের দামে
২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ,প্রথম আলো
দক্ষিণ কোরিয়ার দায়্যু কোম্পানির কাছ থেকে ২০১১ সালের দিকে ২৫৫টি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) ও সাধারণ (নন-এসি) বাস কেনে সরকারের পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। বাসগুলো সড়কে অন্তত ১৫ বছর চলার কথা। কিন্তু ১০ বছর না যেতেই ৫টি বাস লোহালক্কড় হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছে সংস্থাটি। আরও ৩০টি বাস একইভাবে বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে।
দায়্যুর বাসসহ সব মিলিয়ে ১৫৩টি বাস লোহালক্কড় হিসেবে বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে বিআরটিসি। সংস্থাটির সূত্র বলছে, দায়্যু কোম্পানির অচল বাসগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে অবস্থাভেদে প্রতিটি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। তবে সংস্থাটি যে দাম নির্ধারণ করে, বরাবরই তার চেয়ে অনেক কমে পাওয়া যায়। এবারও কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, দায়্যু কোম্পানির বাসের দাম প্রতিটি এক-দেড় লাখ টাকার বেশি পাওয়া যাবে না।
বিআরটিসি সূত্র জানিয়েছে, কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে ঋণ নিয়ে বাসগুলো কেনা হয়েছিল। করসহ প্রতিটি বাসের দাম পড়ে ধরনভেদে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। সেই বাসই এখন লোহার দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। বিআরটিসি সূত্র জানায়, কোরিয়া থেকেই বাস কিনতে হবে—এমন শর্তে ঋণ নেওয়া হয়েছিল। রাস্তায় নামার পর থেকেই বাসগুলোতে নানা ত্রুটি দেখা দিতে শুরু করে। ২০১৬ সাল নাগাদ অর্ধেক বাস অচল হয়ে যায়। বিআরটিসির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, একেকটি বাসে ইঞ্জিনসহ ২০টির মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র থাকে। দায়্যু কোম্পানির বেশির ভাগ বাসে এখন অর্ধেক যন্ত্র বিকল।
ব্রেক করলেই উঠে যাচ্ছে ৩২১ কোটি টাকার সড়কের কার্পেটিং
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
পণ্যবাহী ট্রাক হঠাৎ ব্রেক করলেই উঠে যাচ্ছে খুলনা-যশোর মহাসড়কের কার্পেটিং। মাঝেমধ্যে জমাট বেঁধে যায় পিচ ও খোয়া। সংস্কারকাজ শেষ না হতেই সড়কে তৈরি হয়েছে গর্ত। ৩৮ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে একই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, যান চলাচল ও জনদুর্ভোগ কমাতে খুলনা-যশোর মহাসড়ক মেরামতে ৩২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের জুন মাসে কাজ শুরু হয়। এক বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে সংস্কারের জন্য দুই দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরই মধ্যে সংস্কার হওয়া নওয়াপাড়া থেকে যশোরমুখী ৩৮ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে উঠে গেছে কার্পেটিং। অতিরিক্ত যান চলাচল ও পণ্য বহনের কারণে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ না দেওয়ায় উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং, জমাট বেঁধে যায় পিচ। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে চেঙ্গুটিয়া এলাকায় সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়। এরই মধ্যে কার্পেটিং উঠে গেছে। পরে আবার সংস্কারকাজ শুরু হয়।
ডাকাতির টাকায় বিপুল সম্পদ সেই এসআইয়ের
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপপরিদর্শক আকসাদুদ-জামান ঢাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও পোশাক কারখানার মালিক। চলতেন দামি গাড়িতে। ঠাকুরগাঁও শহরে ও গ্রামে তাঁর কয়েক কোটি টাকার জমি রয়েছে।
ডাকাতির টাকা দিয়েই আকসাদুদ এসব সম্পদ করেছেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাজধানীর কাওলায় সৌদিপ্রবাসীর বিদেশি মুদ্রা ও মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনায় ডিবির তদন্তে সম্প্রতি সিআইডির এসআই আকসাদুদের নাম আসে। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১৮ আগস্ট তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিআইডি। পরে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয় বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি।.. …
মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আকসাদুদ সিপাহীবাগে পঞ্চমতলার যে ফ্ল্যাটে থাকেন, তা দুই বছর আগে ৮০ লাখ টাকায় কেনেন। ছয়-সাত বছর ধরে তিনি নিজের কেনা ব্যক্তিগত গাড়িতে চলতেন। ঢাকায় তাঁর তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আকসাদুদ ১৯৯৫ সালের ২৯ আগস্ট কনস্টেবল হিসেবে পুলিশে যোগ দেন। ২০০২ সালে এএসআই হন তিনি। ২০১০ সালের ২৬ অক্টোবরে তিনি উপপরিদর্শক (এসআই) পদে পদোন্নতি পান। এরপর তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হতে থাকেন। আকসাদুদ ২০১৮ সালে সিআইডিতে বদলি হন।
প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি আকসাদুদের গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানান, আকসাদুদ এসআই হওয়ার পর বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পাশে দুই একর জমি কেনেন। দুই বছর আগে সেখানে আরও ১৬ বিঘা জমি কেনেন। এই জমির বাজারদর দুই কোটি টাকা। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঠাকুরগাঁও শহরের তাঁতীপাড়ায় আকসাদুদের পৌনে দুই কোটি টাকার জায়গা রয়েছে। সম্প্রতি বালিয়ায় তিনি আরও ৩৭ শতাংশ জমি কেনেন।
তদন্ত সূত্রমতে, আকসাদুদ বর্তমানে সব মিলে ৫০ হাজার টাকা বেতন পান। এই টাকায় পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে কীভাবে এত বিপুল সম্পদের মালিক হলেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। ডিএমপির ডিবি সূত্র জানায়, সম্প্রতি আকসাদুদের একটি ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে সোর্স আমির তাঁকে ১২ লাখ টাকার ডাকাতি করার প্রস্তাব দেন। এ সময় আকসাদুদকে বলতে শোনা যায়, ২০ লাখের নিচে কোনো কাজ করবেন না। ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, বিমানবন্দর এলাকাকেন্দ্রিক সংঘটিত অধিকাংশ ডাকাতি আকসাদুদের নেতৃত্বে হয়েছে।
সোনারগাঁয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ঢাকা পোস্ট
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করার কারণে ২৫ গ্রামের কৃষকদের ফসলি জমি নদে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদে রোববার মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী কৃষকরা।
উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে রোববার বিকেলে কৃষকরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার সনমান্দি, নোয়াগাঁও ও জামপুর ইউনিয়নের ২৫ গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্র নদে গত চার মাস ধরে ড্রেজারের সাহায্যে জোরপূর্বক অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। অপরিকল্পিতভাবে নদের তীর থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদের তীরের ২৫ গ্রামের কৃষকদের ফসলি জমির মাটি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা বিভিন্ন সময়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করার কারণে সন্ত্রাসীরা ১৫ জন কৃষককে পিটিয়ে আহত করেছে।
মিল্ক ভিটার জমি প্রতিমন্ত্রীর ছেলের নামে নিবন্ধন
০২ অক্টোবর, ২০২১, বণিক বার্তা
সরকারি প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটার জন্য কেনা জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের নামে। যশোরের মণিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নে এ ২০০ শতক জমি কেনা হয়েছে ৮০ লাখ টাকায়। তবে জটিলতা ও সময়ক্ষেপণ এড়াতে ছেলের নামে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিমন্ত্রী।
মণিরামপুর ভূমি ও রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোহিতা ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের ৮৪৫ নম্বর খতিয়ানের ৭৬, ৭৭, ৭৯ ও ৮৯ দাগের ২০০ শতক জমি কিনেছেন প্রতিমন্ত্রীর ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার নামে এ জমি রেজিস্ট্রি করা হয়, যার দলিল নম্বর ৭৬৭১। আর এ জমির নামপত্তনের জন্য উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে দাখিল করা কেস নম্বর ১২০১ (২০২১-২২)।
জমিটি মন্ত্রীপুত্রের কাছে বিক্রি করেছেন রোহিতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কাছে ৮০ লাখ টাকায় তিনি জমিটি বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন। যদিও রেজিস্ট্রি অফিস সূত্র বলছে, জমির দলিলমূল্য দেখানো হয়েছে ১৯ লাখ টাকা।
মিল্ক ভিটার নামে কেনা জমি কেন তার ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করা হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিল্ক ভিটার নামে কেনার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে, তাছাড়া সময়সাপেক্ষও। তাই মূলত জমিটা আটকাতে এ পথ নেয়া হয়।
৩ মাসে ২১৩ কোটি হাতিয়েছে রিং আইডি, পরিচালক গ্রেপ্তার: সিআইডি
০২ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
রিং আইডির পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁর নামে ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাল্টিলেভেল মার্কেটিং নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা রয়েছে বলে সিআইডি জানিয়েছে। সিআইডি বলেছে, শুধু তিন মাসে রিং আইডি ২১৩ কোটিরও বেশি টাকা আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে।
২৫ হাজার টাকার রিকশা গুলশানে সাড়ে ৩ লাখ
০৩ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
ঢাকায় নতুন একটি রিকশা কিনতে লাগে বড়জোর ২৫ হাজার টাকা। পুরোনো রিকশার দাম আরও কম, ১৫ হাজারেই পাওয়া যায়। তবে কেউ যদি রিকশা কিনে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় চালাতে চান, তাহলে ব্যয় হবে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা। না, গুলশানের রিকশায় বিশেষ কিছু নেই। এতে যন্ত্র লাগানো নেই যে চালকের কষ্ট কম হবে। এর আসন, কাঠামো অন্য এলাকার রিকশার মতোই। অবশ্য গুলশান, বনানী ও বারিধারার রিকশার বিশেষ নিবন্ধন আছে, যা তার দাম ১০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই নিবন্ধন ছাড়া রিকশা ওই এলাকায় চলতে পারে না। নিবন্ধিত রিকশার সংখ্যাও সীমিত। পুরোনো হলে রিকশা পাল্টে যায়, থেকে যায় নিবন্ধন নম্বরপ্লেটটি। সেটি যে রিকশার পেছনে যুক্ত হয়, সেই রিকশার দাম তাৎক্ষণিকভাবে ১০ গুণ বেড়ে যায়।… ….
গুলশানের রিকশায় আয় বেশি দেখে এতে বিনিয়োগ করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরাও। তাঁদের একজন আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠনের গুলশান থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সম্প্রতি ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকায় দুটি রিকশা কেনেন। একেকটির দাম পড়ে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে কিনলেও বিনিয়োগ লাভজনক।.. ..
অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক বলেন, মাত্র আট ঘণ্টায় ২৫০ টাকা জমা। তার ওপর নিজের খরচ। বাড়তি আয় করতে গিয়ে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ থাকে না। জমা যদি অন্য এলাকার মতো ১০০ টাকা হতো, তাহলে দুই বেলার দুই চালকের পকেটে দৈনিক বাড়তি ২০০ টাকা থাকত। এতে তাঁদের পরিবার আরেকটু ভালো থাকার, ভালো খাওয়ার সুযোগ পেত।
ই–কমার্সের নামে প্রতারণা
‘আনন্দের বাজারে’ এসে টাকা খোয়ালেন গ্রাহকেরা
০৬ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
ই-কমার্সের নামে এবার গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে ‘আনন্দের বাজার’ নামের আরেকটি কোম্পানি। এর কার্যালয় গুলশানের জব্বার টাওয়ারের ১৩ তলায়। এক মাস ধরে গ্রাহকদের কাছে পণ্য সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল কোম্পানিটি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহকদের অনেকে সেখানে ভিড় করেন। তবে তাঁদের শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়েই বাসায় ফিরতে হয়েছে। কোম্পানির কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল।
গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে ব্যবসা শুরু করে আনন্দের বাজার। নির্ধারিত দামের চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটরসাইকেল, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করত তারা। শুরুতে ৩০ কর্মদিবসের মধ্য কিছু গ্রাহকের কাছে পণ্য সরবরাহ করে আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালায় কোম্পানিটি। এই ফাঁদে পড়েন অন্য গ্রাহকেরা। এক মাস ধরে পণ্যের জন্য টাকা নিলেও প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে তা সরবরাহ করছিল না তারা।
সাংসদ শফিকুলের বাড়িবিলাস
০৭ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
নাটোর শহরটা দেশের অন্য মফস্বল শহরের মতোই। বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট কিংবা অফিস-আদালতে বাড়তি কোনো আকর্ষণ নেই। তবে শহরের কান্দিভিটুয়া মহল্লা কিছুটা ব্যতিক্রম। এই এলাকার বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রে আসলে সড়কের দুই পাশে থাকা কাছাকাছি দুটি বাড়ি।
একটির নাম ‘জান্নাতি প্যালেস’। দেখতেও প্রাসাদের মতো। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাড়িটির কাজ শুরু হয়। সম্পন্ন হয়েছে মাস ছয়েক আগে। বাড়িটির সীমানাদেয়াল, সুবিশাল গেট সুন্দর কারুকার্যখচিত। মূল বাড়িটা তিনতলা, ট্রিপলেক্স। সামনে খোলা জায়গা। ছাদে লাল টালির ছাউনি। বসার কক্ষ, শয়নকক্ষসহ অন্যান্য কক্ষের বাইরে তিনতলার অন্যতম আকর্ষণ সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগার। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, বাড়িটি যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে, সেটি আগে পুকুর ছিল। রাতারাতি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।
আলোচিত এই বাড়ি নাটোর সদর আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম ওরফে শিমুলের। প্রায় ২৮ শতাংশ জায়গার ওপর বাড়িটি করেছেন স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতির নামে। আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, বাড়িটিতে দামি সব বিদেশি উপকরণ ও আসবাব ব্যবহার করা হয়েছে।.. …
শফিকুল ইসলাম নাটোর সদর আসনের সাংসদ হন ২০১৪ সালে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ওই বছরই তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এর আগে তাঁরা চার ভাই কান্দিভিটুয়া এলাকাতেই পৈতৃক দোতলা বাড়িতে থাকতেন। এখন পুরোনো বাড়িটিতে সাংসদের অন্য দুই ভাই থাকেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, সাংসদ শফিকুল ইসলামের বাবা হাসান আলী সরদার ছিলেন ছোটখাটো ঠিকাদার। মোটামুটি সচ্ছল জীবন যাপন করতেন। দোতলা বাড়ি, কিছু কৃষিজমি ছাড়া বলার মতো তেমন কিছু ছিল না পরিবারটির। হাসান আলীর ছেলেদেরও দৃশ্যমান আয়ের উৎস ছিল না। বছর ছয়েক আগে হাসান আলী মারা যান। শফিকুল সাংসদ হওয়ার পরই পরিবারের সবার ভাগ্য ঘুরে যায়। তাঁর দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখায়, গত ১২ বছরে সাংসদের সম্পদ বেড়েছে ২৬ গুণ। তাঁর ‘গৃহিণী’ স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৪১ গুণ।
নাটোরের মতো কানাডার টরন্টোর নিকটবর্তী স্কারবরো শহরে আরেকটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে শফিকুল ইসলামের। গত বছরের শুরুতে বাড়িটি কেনা হয়েছে। সাংসদের ঘনিষ্ঠ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বাড়িটি কিনতে ১৭ লাখের বেশি কানাডিয়ান ডলার খরচ হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ১২ কোটি টাকা। এই বাড়ির ছবি, দলিল, টাকা পরিশোধের রসিদ নাটোরে আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে রয়েছে।
ই-কমার্সে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দায় নেবে না সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
০৮ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
রংপুরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ই-কমার্সে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দায়ভার সরকার নেবে না। দেশে অন্তত ২০ হাজার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত। গ্রাহকেরা কম মূল্যে পণ্য কিনতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁরা কমে পণ্য কিনতে তো সরকারকে জানাননি। তাঁদের ক্ষতির দায় সরকার নেবে কেন?
আজ শুক্রবার বিকেলে রংপুর নগরের গোল্ডেন টাওয়ারে অবস্থিত ‘ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
শ্রমজীবি মানুষ
পরিবহনশ্রমিক
বেশির ভাগই সহায়তার বাইরে
২৯ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
দেশের পরিবহন খাতের ২ লাখ ৩৫ হাজার শ্রমিককে এককালীন আড়াই হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে শ্রমিকদের বড় অংশের কাছে এ টাকা চলেও গেছে। তবে শ্রমিকনেতারা বলছেন, পরিবহন খাতে শ্রমিকসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। সে তুলনায় সরকারের সহায়তার
হার নগণ্য।
শ্রমিকেরা আর্থিক সহায়তার আওতা আরও বাড়ানোর দাবি করেছেন। তা সম্ভব না হলে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল ও সাশ্রয়ী দামে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছেন।
নৌশ্রমিক
একই লঞ্চের শ্রমিক, কেউ পেয়েছেন, কেউ পাননি
২৯ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
ঢাকা থেকে নোয়াখালীর হাতিয়া রুটে চলাচলকারী এমভি ফারহান-৪ লঞ্চে কাজ করেন প্রায় ৪০ জন শ্রমিক। এর মধ্যে সরকারের দেওয়া সহায়তার আড়াই হাজার টাকা পেয়েছেন মাত্র দুজন।
একই লঞ্চে কাজ করে একজন সহায়তা পেয়েছেন, বেশির ভাগ পাননি—এমন ঘটনা অনেক। সব মিলিয়ে সরকার ১৩ জুলাই ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১ হাজার ৬০৩ জনকে এককালীন আড়াই হাজার টাকা করে দিয়েছে। যদিও নৌশ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, শুধু যাত্রীবাহী নৌযানে শ্রমিক রয়েছেন ১৮ থেকে ২০ হাজার। সরকার এ নিয়ে দুই দফায় নৌশ্রমিকদের সহায়তা দিল। এর আগে গত ঈদুল ফিতরের আগে ১ হাজার ৯৪৭ জন শ্রমিককে সহায়তা দেওয়া হয়। তখনো বেশির ভাগ বঞ্চিত হন।
কারখানা খোলায় পথে পথে শ্রমিকদের দুর্ভোগ
৩১ জুলাই ২১, সমকাল
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে দেশে চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে রোববার থেকে গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্প কারখানা খুলে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু বন্ধ আছে গণপরিবহন চলাচল। শ্রমিকেরা দূর-দূরান্ত থেকে কীভাবে কর্মস্থলে ফিরবেন তার কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে গার্মেন্টসসহ কলকারখানার শ্রমিকেরা। বাধ্য হয়ে তারা যে যেভাবে পারছেন কর্মস্থলমুখী হচ্ছেন। ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভেঙে ভেঙে বেশি ভাড়া ও ভোগান্তি নিয়ে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে শ্রমিকদের।
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাতের বেলায় ট্রাক, পিকআপ ও মাইক্রোবাসে যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এসব পরিবহন নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুন ভাড়া। কর্মস্থলে ফেরার তাগিদে বাড়তি ভাড়া দিয়েই গাজীপুর, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের এলাকায় যাচ্ছেন শ্রমিকেরা।
হাসেম ফুডসে আগুনে পোড়া ১৩ জনই ছিল শিশু শ্রমিক
০৪ আগস্ট, ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ১৩ জনই ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক। কয়েকজনের বয়স ১৮ হলেও তারা শিশু বয়স থেকেই ওই কারখানায় কাজ করছিল বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
ওই কারখানায় পুড়ে যাওয়া ৪৮টি মৃতদেহের ডিএনএ পরীক্ষা করে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি তিনটি লাশেরও ডিএনএ পরীক্ষার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি।
কফিনের সঙ্গে তাঁরা নিয়ে গেলেন বুকভরা বেদনা
০৫ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
অভাবের সংসারে তাঁদের বেড়ে ওঠা। স্বজনদের নিয়ে একটু সচ্ছলতার সঙ্গে বাঁচতে কারখানায় কাজ নিয়েছিলেন তাঁরা। হঠাৎ আগুনে পুড়ে নিজেদের সঙ্গে শেষ হয়েছে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে তাঁদের সেই লড়াই। তবে যাঁদের তিল তিল কষ্টে উপার্জনের পথে গিয়েছিলেন তাঁরা, সেই মানুষগুলো এখন নিঃস্ব। প্রিয়জনের কফিনের সঙ্গে বিগত দিনের স্মৃতিগুলোই সঙ্গী হয়েছে তাঁদের।
মাসখানেক আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় ভয়াবহ আগুনে নিহত ২৪ জনের লাশ বুধবার বুঝে পেয়েছেন স্বজনেরা। দুপুরে যখন একে একে কফিনবন্দী লাশগুলো বুঝে নিচ্ছিলেন তাঁদের মা–বাবা, ভাই ও বোনেরা, সেই সময় হাহাকার ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে আর কিছুই বের হচ্ছিল না।
দেখে চিনতে না পারার মতো এই লাশগুলোর তালিকায় ছিল ১৭ বছরের কিশোর রিপন মিয়া। এসএসসি পাস রিপন সংসারে সহযোগিতার জন্য পাঁচ মাস আগে কাজ নিয়েছিল এই কারখানায়। দুই ভাই ইসমাইল ও ইব্রাহীম এবং মা লিলি বেগমকে নিয়ে ছিল তাঁদের সংসার।
দুপুরে রিপনের লাশ বুঝে নেওয়ার সময় বিলাপ করছিলেন চল্লিশোর্ধ্ব লিলি বেগম। তিনি বলছিলেন, ছেলে তাঁর কবিতা লিখত। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে কবি হবে সে। কলেজ বন্ধ থাকায় কাজ করতে গিয়েছিল। তা–ই কাল হলো তাঁর আদরের সন্তানের। তিনি বলেন, ‘ছেলে আমার আর কোনো দিন কবিতা লিখবে না। আবৃত্তির ঢংয়ে সেই কবিতা আর আমাকে পড়ে শোনাবে না।’.. …
স্বল্পতা-সংরক্ষণ জটিলতায় গণটিকাদান কর্মসূচিতে পরিবর্তন
৫ আগস্ট, ২০২১, দেশ রুপান্তর
টিকা স্বল্পতা ও সংরক্ষণ জটিলতায় করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) টিকাদান কার্যক্রমের বিশেষ ক্যাম্পেইন পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম এ কথা জানিয়েছেন।
পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৃদ্ধ, নারী, প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিয়ে ৭ আগস্ট অধিক সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এরপর সাত দিন বিরতি দিয়ে টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে ১৪ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত।
গণটিকা নিতে টোকেন ভোগান্তি
০৭ আগস্ট ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
মাকে নিয়ে সকাল ৯টায় টিকাদান কেন্দ্রে গেলাম। সেখানে গিয়ে শুনি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস থেকে টোকেন আনতে হবে। টোকেন দেখালেই কেবল মিলবে টিকা। অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত টিকা না নিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে আমাদের। ক্ষোভ নিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ষোলশহর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা। শনিবার (৭ আগস্ট) সকালে তিনি তার বৃদ্ধ মাকে নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে টিকা দিতে নিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই যুবক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মায়ের টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। ১৫/১৬দিন হয়ে যাওয়ার পরও এখনও এসএমএস আসেনি। পরে আজ গণটিকার প্রথম দিন মাকে রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখানে সুরক্ষা অ্যাপের নিবন্ধন ফরম দেখানোর পরও আমার মাকে টিকা দেওয়া হয়নি। শুধু আমার মা নয়, এভাবে অনেক মানুষ ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ড কমিশনার গণটিকা নেওয়ার জন্য উনার ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন। তার ওই পোস্টের কোথাও এই টোকেন নেওয়ার কথা বলেননি। তাহলে এত মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার মানে কি?
শুধু ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র নয়, নগরীর অন্যান্য ওয়ার্ডেও একই অবস্থা দেখা গেছে।
পাসপোর্ট নবায়ন বন্ধ, বিপাকে প্রবাসীরা
১৭ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলোতে পাসপোর্ট নবায়ন সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাঁরা বলছেন, পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ও মালয়েশিয়ায় যেমন বাংলাদেশি শ্রমিকদের আটক হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তেমনি মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট নিয়ে ভ্রমণ করা যায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন, গত জুনের মাঝামাঝি থেকে বাংলাদেশে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের (এমআরপি) তথ্যভান্ডারে (সার্ভারে) কার্যত কোনো তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা বা ‘ডেটা এন্ট্রি’ সম্ভব হচ্ছে না। এতে পাসপোর্ট নবায়ন করা যাচ্ছে না।
শ্রমিকের পাওনা না দিতে লবিস্ট নিয়োগ দিলো গ্রামীণ টেলিকম
২০ আগষ্ট ২০২১, একাত্তর টিভি অনলাইন
শ্রমিক কল্যাণের পাওনা ৩০০ কোটি টাকার ১০৭টি মামলা থেকে বাঁচতে প্রায় ১৪ কোটি টাকা দিয়ে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়েছেন প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম।
সরকারের শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী আর আমলাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে এই মামলা জিতিয়ে দেওয়ার চুক্তি সই করেছেন গ্রামীণ কল্যাণ আর ঢাকা লজিষ্টক ফার্ম। আর, তা অনুমোদন করেছেন ড. মোহাম্মদ ইউনূস।
মোবাইল অপারেটিং কোম্পানি গ্রামীণ ফোনের ৩৪ দশমিক ২০ শতাংশের মালিক নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুসের গ্রামীণ টেলিকম।
গ্রামীণফোনের কাছ থেকেই প্রতি বছর এই গ্রামীণ টেলিকম ডিভিডেন্ট পায় হাজার কোটি টাকার ওপরে। ২০১৯ সালেই তাদের ডিভিডেন্ট এসেছে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
কিন্তু এই সব ডিভিডেন্টের পাঁচ শতাংশ শ্রমিক কল্যাণকে দেওয়ার কথা থাকলে তা কোন দিনই দেয়নি গ্রামীণ টেলিকম।
এমন করে তা জমেছে ২০০৬ সাল থেকে। যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকায়। ফলে ক্ষুব্ধ কর্মীরা বকেয়া পাওনা চেয়ে মামলা করেছে।
রাজধানী ঢাকার শ্রম আদালতে সব মিলে ১০৭টি মামলা করা হয় ড. মোম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে।
রাজমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি ৯৪০, টাইলস মিস্ত্রির ১,১০৫ টাকা
২৮ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
শহরে একজন রাজমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি হবে ৯৪০ টাকা। আর গ্রামাঞ্চলে সেই মজুরি হবে ৮৭০ টাকা। টাইলস বা মোজাইকমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি হবে শহরে ১ হাজার ১০৫ টাকা ও গ্রামে ১ হাজার ২০ টাকা। আর সাধারণ শ্রমিক বা জোগালির দৈনিক মজুরি শহরাঞ্চলে হবে ৬৮০ টাকা। আর গ্রামে ৬২০ টাকা।
নির্মাণ ও কাঠশিল্পের জন্য চূড়ান্ত হওয়া ন্যূনতম মজুরির প্রজ্ঞাপনে শ্রমিকদের মজুরির এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। খাতটির শ্রমিকদের জন্য মাসিক মজুরির পাশাপাশি দিনভিত্তিক মজুরিও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২০১২ সালে নির্মাণ ও কাঠশিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ছিল ৩৭৫ টাকা। বর্তমানে সেটি বেড়ে হয়েছে ৬৮০ টাকা। শহরাঞ্চলের জন্য এটি প্রযোজ্য হলেও গ্রামে মজুরি হবে ৬০ টাকা কম, অর্থাৎ ৬২০ টাকা।
নির্মাণ ও কাঠশিল্পের নতুন মজুরিকাঠামোতে ছয়টি গ্রেড রয়েছে। সব গ্রেডেই শহরাঞ্চলে বাড়িভাড়া মূল মজুরির ৪০ শতাংশ ও গ্রামাঞ্চলে ৩০ শতাংশ। তা ছাড়া শহরাঞ্চলে চিকিৎসা ভাতা ৮০০ টাকা ও যাতায়াত ভাতা ৪০০ টাকা। গ্রামাঞ্চলে সেটি কিছুটা কম, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা যথাক্রমে ৬০০ ও ৩০০ টাকা। যদিও সব গ্রেডেই মূল মজুরি শহর ও গ্রামে একই।
নতুন মজুরিকাঠামো অনুযায়ী ৬ নম্বর গ্রেডের সাধারণ শ্রমিক বা জোগালির মাসিক মজুরি শহরাঞ্চলে হবে ১৭ হাজার ৭২০ টাকা। তার মধ্যে মূল মজুরি ১১ হাজার ৮০০ টাকা। বাড়িভাড়া মূল মজুরির ৪০ শতাংশ, অর্থাৎ ৪ হাজার ৭২০ টাকা। তার বাইরে চিকিৎসা ভাতা ৮০০ ও যাতায়াত ভাতা ৪০০ টাকা। গ্রামাঞ্চলে এই শ্রমিকদের মাসিক মজুরি হবে ১৬ হাজার ২৪০ টাকা। এ ক্ষেত্রে মূল মজুরি ঠিক থাকলেও বাড়িভাড়া ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ হাজার ৫৪০ টাকা। আর চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা যথাক্রমে ৬০০ ও ৩০০ টাকা।
৫ নম্বর গ্রেডের সহকারী রাজমিস্ত্রি, রডমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ইলেকট্রিকমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি বা পলিশমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি শহরাঞ্চলে হবে ৭৭০ টাকা। আর মাসিক মজুরি ২০ হাজার ১০০ টাকা। তার মধ্যে মূল মজুরি সাড়ে ১৩ হাজার। গ্রামাঞ্চলে এই গ্রেডের শ্রমিকদের মাসিক মজুরি ১৮ হাজার ৪৫০ টাকা। দৈনিক মজুরি ৭১০ টাকা।
শহরাঞ্চলে ৪ নম্বর গ্রেডের সহকারী স্যানিটারিমিস্ত্রি, প্লাম্বার ও থাই অ্যালুমিনিয়ামমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি হবে ৮৩০ টাকা। আর মাসিক মজুরি ২১ হাজার ৬৪০ টাকা। তার মধ্যে মূল মজুরি ১৪ হাজার ৬০০ টাকা। গ্রামাঞ্চলে এই শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৭৬০ টাকা। তাঁদের মাসিক মজুরি ১৯ হাজার ৮৮০ টাকা।
৩ নম্বর গ্রেডের রাজমিস্ত্রি, রডমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, ইলেকট্রিকমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, সহকারী মোজাইক বা টাইলসমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি শহরাঞ্চলে হবে ৯৪০ টাকা। গ্রামে সেটি ৮৭০ টাকা। এই শ্রমিকদের মাসিক মজুরি শহরাঞ্চলে ২৪ হাজার ৫৮০ টাকা হলেও গ্রামে ২২ হাজার ৬১০ টাকা। উভয় ক্ষেত্রেই মূল মজুরি ১৬ হাজার ৭০০ টাকা।
মজুরিকাঠামো অনুযায়ী, ২ নম্বর গ্রেডের স্যানিটারিমিস্ত্রি, প্লাম্বার ও থাই অ্যালুমিনিয়ামমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি শহরাঞ্চলে ১ হাজার ২০ টাকা আর গ্রামে ৯৪০ টাকা হবে। শহরাঞ্চলে এই শ্রমিকদের মাসিক মজুরি ২৬ হাজার ৬৮০ টাকা হলেও গ্রামে ২৪ হাজার ৫৬০ টাকা। উভয় ক্ষেত্রেই মূল মজুরি ১৮ হাজার ২০০ টাকা।
অন্যদিকে ১ নম্বর গ্রেডে থাকা মোজাইক ও টাইলসমিস্ত্রির দৈনিক মজুরি শহরাঞ্চলে ১ হাজার ১০৫ টাকা ও গ্রামে ১ হাজার ২০ টাকা হবে। এ ছাড়া শহরে মাসিক মজুরি ২৮ হাজার ৭৮০ টাকা হলেও গ্রামে সেটি কিছুটা কমে হবে ২৬ হাজার ৫১০ টাকা। উভয় ক্ষেত্রেই মূল মজুরি ১৯ হাজার ৭০০ টাকা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, একজন শ্রমিকের শিক্ষানবিশকাল হবে তিন মাস। তবে সেটি প্রয়োজনে আরও তিন মাস বাড়াতে পারবেন নিয়োগদাতা। শিক্ষানবিশকালে মজুরি হবে মাসিক ১০ হাজার টাকা। দৈনিক ভিত্তিতে সেটি দাঁড়াবে ৫০০ টাকায়। এ ছাড়া নতুন মজুরিকাঠামো সমন্বয় করার পর একজন শ্রমিক এক বছর কাজ করলে পরবর্তী বছর তাঁর মূল মজুরি ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। পরের বছরও একই হারে বাড়বে।সে চূড়ান্ত করা জাতীয় করোনার টিকা প্রয়োগ পরিকল্পনায় জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনার বিষয়টি বিশদভাবে বর্ণনা করা আছে। দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার। এ হিসাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৩ কোটি ৫১ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দিতে চায়।
হাসেম ফুডসে অগ্নিকাণ্ড ‘কাঠামোগত হত্যা’
০১ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
নারায়ণঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনাকে ‘কাঠামোগত হত্যা’ বলে অভিহিত করেছে নাগরিক তদন্ত কমিটি। বিশিষ্ট ১৯ নাগরিককে নিয়ে গঠিত এ কমিটি গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ-সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার মালিক এবং সরকারের কলকারখানা, প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরসহ সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়ী করেছে কমিটি। এ ছাড়া কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশও করেছে।
গত ৮ জুলাই বিকেলে হাসেম ফুডস কারখানার ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ ৪৯ জন পুড়ে মারা যান। ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান আরও তিনজন। তবে নাগরিক কমিটির দাবি, ৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া বলেন, তাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে- ছয়তলা ভবনের কোথাও স্মোক ডিটেকটর, ফায়ার অ্যালার্ম ও জরুরি বহির্গমনের ব্যবস্থা ছিল না। সংশ্নিষ্ট যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের তদারকির দায়িত্ব ছিল, সেই দায়িত্ব যথাযথ পালন হয়নি। কারখানাটির বিভিন্ন ধরনের ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অনিয়ম ছিল। ভবনের চারতলায় সবচেয়ে বেশি লাশ পাওয়া গেছে। কারণ, সেখানে পেছনের গেটে তালা লাগানো ছিল। তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দফায় এ কারখানায় সেফটি প্ল্যান ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে কারখানাটির ত্রুটিপূর্ণ ফায়ার সেফটি প্ল্যানকে সাময়িকভাবে অনুমোদন দেয় তারা।
জ্যোতির্ময় বড়ূয়া বলেন, কারখানার শ্রমিকদের বেশিরভাগই ১৪ বছরের কম বয়সের। শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হতো কারখানায়। এভাবে শিশুদের শ্রমে নিয়োজিত করে কারখানা কর্তৃপক্ষ এ দায় এড়াতে পারে না। তিনি বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি নিহতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর নিয়েছে- তাদের আর কোনো দাবি-দাওয়া নেই। মানুষের জীবনের ক্ষতিপূরণ দুই লাখ টাকা হতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, এ ধরনের যত ঘটনা ঘটেছে, তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ীদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।
মুচলেকা নিয়ে দায়মুক্ত হাসেম ফুডস!
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত প্রত্যেক কর্মীর বিপরীতে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়ে হাসেম ফুডস লিমিটেড আর কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হওয়া থেকে নিজেদের দায়মুক্ত করেছে।
হাসেম ফুডস প্রত্যেক নিহত কর্মীর পরিবারকে দুই লাখ টাকা দেওয়ার সময় একটি মুচলেকায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে তারা (মৃত ব্যক্তির পরিবার) ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আর কোনো ধরনের দাবি জানাতে পারবে না।
এই প্রতিবেদক মুচলেকার একটি কপি সংগ্রহ করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় আমাদের হাসেম ফুডস লিমিটেড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো দাবি-দাওয়া অবশিষ্ট নেই।
মুচলেকায় আরও উল্লেখ আছে, ‘উক্ত টাকা আমি সাক্ষীদের সহায়তায় নিহতের সব উত্তরাধিকারীদের মধ্যে আইন অনুযায়ী বণ্টন করতে বাধ্য থাকব। এ ক্ষেত্রে কোনো দাবি উত্থাপিত হলে আমি নিজ দায়িত্বে তা সমাধানে বাধ্য থাকব।’
৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠানটির একটি কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে কমপক্ষে ৫৪ জন শ্রমিক নিহত হন। ভবনটির চতুর্থ তলা থেকে বের হয়ে আসার একমাত্র গেটটি বন্ধ থাকায় ৪৮ জন সেখানেই জ্যান্ত পুড়ে মারা যান।
রূপগঞ্জ ট্রাজেডি: দু’মাস পর কারখানা থেকে মাথার খুলি কঙ্কাল উদ্ধার
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ , ভোরের কাগজ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ২ মাস পর ভবনের চতুর্থতলা থেকে দুটি মাথার খুলিসহ মানবদেহের বিভিন্ন অংশের হাড় ও কঙ্কাল উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিআইডি পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ দিন বিকেল থেকে রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে যাওয়া আর কোনো মরদেহ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ভবনটিতে তল্লাশি করে ফায়ার সার্ভিস ও সিআইডি।
সিআইডির নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন জানান, ৩ শ্রমিক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তল্লাশি শুরু করি। চতুর্থ তলা থেকে হাড়ের অংশ উদ্ধার করেছি। এগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ
০৯ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
লালপুর উপজেলার নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারীদের ছাঁটাই করে অন্য চিনিকলের শ্রমিক ও কর্মচারীদের পদায়ন করার প্রতিবাদে সমাবেশ করা হয়েছে। মিলের অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গোপালপুর শহীদ মিনারে এ সমাবেশ করেন।
অত্যাবশ্যক পরিষেবার কর্মীর অবৈধ ধর্মঘটে চাকরিচ্যুতি-কারাদণ্ড
০৫ অক্টোবর, ২০২১, বণিক বার্তা
কোনো পরিষেবাকে অত্যাবশ্যক ঘোষণার পর কর্মীরা বেআইনিভাবে ধর্মঘট ডাকলে তাদের চাকরিচ্যুতির পাশাপাশি সর্বোচ্চ ছয় মাসের জেলের বিধান রেখে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন, ২০২১’ খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ অনুমোদনের কথা জানান। তিনি বলেন, এতদিন আমাদের দুটি আইন ছিল। এসেনশিয়াল সার্ভিসেস মেইনটেন্যান্স অ্যাক্ট, ১৯৫২ ও দি এসেনশিয়াল সার্ভিসেস (সেকেন্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৫৮—দুটিকে একসঙ্গে করে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন, ২০২১’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইন পাস হলে সরকার কোনো সময় যদি প্রয়োজন হয় বিভিন্ন সার্ভিসকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা ঘোষণা করতে পারবে। এটা ঘোষণা করলে সেখানে স্ট্রাইক (ধর্মঘট) করা যাবে না, বন্ধও করা যাবে না। মালিকরা লে-অফও করতে পারবেন না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অত্যাবশ্যক করতে বোঝায় যেমন—ডাক, টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট সেবা, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব ডিজিটাল সেবা, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল, ডিজিটাল আর্থিক সেবা, বিদ্যুৎ উপাদন ও সরবরাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত কাজ। জল, স্থল ও আকাশপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, বিমানবন্দর পরিচালনা, স্থল ও নদীবন্দর পরিচালনা, কাস্টমসের মাধ্যমে কোনো পণ্য ও যাত্রীর পণ্য ছাড় করার কাজ, সশস্ত্র বাহিনীর কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কার্যক্রম, প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত কার্যক্রম বা খাদ্যদ্রব্য ক্রয়, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত কার্যক্রম—সরকার যদি মনে করে কোনো কারণে কখনো এগুলোকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে ঘোষণা করতে হবে, তবে ঘোষণা করতে পারবে। সেই ঘোষণা সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য কার্যকর থাকবে।
সরকার যদি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ঘোষণা করে, তবে সেক্ষেত্রে লে-অফ, ধর্মঘট করা যাবে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইন ভাঙলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। শ্রমিক পর্যায়ে কেউ আইন ভাঙলে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। মালিক পর্যায়ে আইন ভাঙলে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হবে। কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে ধর্মঘট করলে তাকে বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা অর্থাৎ চাকরি থেকে বের করে দেয়া হবে। এছাড়া তাকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড দেয়া যাবে।
বেকারত্বের ফাঁদে ৬০ হাজার শ্রমিক
৩ অক্টোবর, ২০২১, কালের কণ্ঠ
লাকি বেগম, ছিলেন খুলনা প্লাটিনাম জুট মিলের লড়াকু শ্রমিক। নাম ‘লাকি’ হলেও জীবনটা তাঁর ‘আনলাকি’। স্বামী আউয়ালও ঘাম ঝরাতেন একই কারখানায়। মাস ফুরালে দুজনার বেতনে সংসারে আসত আলোর নাচন। সোয়া এক বছর আগে কারখানায় তালা পড়ার পর কাজ হারিয়ে এখন একেবারেই ছন্দহীন এই শ্রমিক দম্পতির জীবনকাব্য। নতুন করে জীবনের সুখ খুঁজতে স্বামী আউয়াল পেশা পাল্টে হয়েছেন হাঁস-মুরগির ফেরিওয়ালা। আর কাজের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও স্ত্রী লাকির কাছে কর্মমঞ্চটা এখনো ধূসর! তবে পেশার বাঁক বদলালেও পুঁজি না থাকায় একার উপার্জনে পাঁচজনের সংসারের চাকা ঘোরাতে আউয়ালের হৃদয়জুড়ে যন্ত্রণার দহন।
‘কাজ করে ভালোই ছিলাম। আমার দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী। করোনা দুর্যোগ আমাদের আরো শেষ করে দিয়েছে। কোনো কাজ নেই, হাতে টাকা-পয়সা নেই। কোনো বেলা খেতে পারলেও পরের বেলা খেতে হয় কম। কত মানুষের কাছে কাজ চেয়েছি, কিন্তু পাইনি। কিভাবে বাঁচব, কী করব; বুঝতে পারছি না।’ ভেতরের চাপা কষ্টের বুলিটা এভাবেই বের হচ্ছিল লাকি বেগমের।
অশ্রুভেজা চোখে একসময়ের এই নারী শ্রমিক ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘কারো দয়া চাই না। কাজ করে খেতে চাই। কিন্তু কাজ নেই। মিলগুলো চালু থাকলে আমার মতো হাজার হাজার মানুষ বেঁচে থাকত। জানি না, আর মিলের চাকা ঘুরবে কি না। আর চালু হলেও আমাদের কাজ জুটবে কি না।’
লাকি-আউয়াল দম্পতির মতো রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন এখন এমনই বিবর্ণ, রংহীন। গেল বছরের জুলাইয়ে বন্ধ হয়ে যায় রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল। ছয় চিনিকলে এখনো ঝুলছে তালা। একই সঙ্গে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত আরো সাত কারখানাও। ফলে সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক পড়েছেন বেকারত্বের ফাঁদে। কাজ হারিয়ে এসব কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নামলে সে সময় আন্দোলন ছাইচাপা দিতে তাঁদের চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও সেই অঙ্গীকার এখনো ফেলেনি আলোর রেখা। এর মধ্যে করোনা মহামারি কারখানা খোলার গতিতে বসায় নতুন বাগড়া। ফলে কাজ ফিরে পাওয়ার আশায় শ্রমিকদের অপেক্ষার পালা কবে শেষ হবে, তা কেউই জানে না।
বন্ধ হওয়া ২৫টি পাটকলের ৫২ হাজার শ্রমিক এখনো বেকারত্বের রোদনে পুড়ছেন। এর মধ্যে বদলি শ্রমিক ২০ হাজারের বেশি। তবে স্থায়ী শ্রমিকের অনেকে নগদ প্রতিশ্রুত অংশের ৫০ শতাংশ পেলেও অনেকে সঞ্চয়পত্রের টাকা এখনো বুঝে পাননি। এর মধ্যে প্রায় ১০ হাজার বদলি শ্রমিক তাঁদের নগদ অংশও পাননি বলে দাবি করেন শ্রমিক নেতারা। এসব শ্রমিকের বড় অংশ নামবিভ্রান্তি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ব্যাংক হিসাবে ত্রুটির জালে আটকে আছেন। এ ছাড়া ছয় চিনিকলের প্রায় আড়াই হাজার এবং রাষ্ট্রায়ত্ত আরো সাত কারখানার আনুমানিক পাঁচ হাজার শ্রমিক কাটাচ্ছেন বেকার জীবন।
বিএনপি সরকারের আমলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস লিমিটেড। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরই মিলটি ফের চালু করতে এবং এখানকার খালি জায়গায় নতুন শিল্প স্থাপনের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সামনে রেখে নিউজপ্রিন্ট উৎপাদনের পাশাপাশি কারখানার বাইরের অব্যবহৃত জায়গায় ১৫ হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড গোডাউন নির্মাণ, রাসায়নিক প্রস্তুতের কারখানা নির্মাণ এবং আরেকটি আধুনিক পেপার মিল স্থাপনে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত নিতেই পার হয়ে যায় কয়েক বছর। গেল ১৫ মার্চ এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদন চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ৫০ একর জমি বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে ৫৮৬ কোটি ৫২ লাখ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। বিক্রয়মূল্যের ২৫৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকি ৩৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। পাওনা পরিশোধে গত ৬ জানুয়ারি শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। তবে নিউজপ্রিন্ট মিলটি কবে চালু হবে, চাকরি হারানো শ্রমিকরা কবে ফের কাজে ফিরবেন, তা অনিশ্চিত।
সাগরপথে ইউরোপে যাত্রা: আবারও দ্বিতীয় বাংলাদেশ
৫ অক্টোবর, ২০২১, কালের কণ্ঠ
বহু দেশ ঘুরে লিবিয়া। দফায় দফায় মানব পাচারকারী চক্রের হাতবদলের পর অবশেষে ভয়ংকর সাগরযাত্রা। ভাগ্য ভালো হলে প্রাণ নিয়ে তারা পৌঁছে ইউরোপে, নয়তো মৃত্যু। এমন অনিশ্চিত মরণযাত্রা জেনেও লিবিয়া থেকে ইউরোপ, বিশেষ করে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করছে বাংলাদেশিরা। উন্নত জীবনের স্বপ্নে তারা নিজেদের সঁপে দিচ্ছে আন্তর্দেশীয় মানব পাচারকারী চক্রের হাতে।
গতকাল সোমবার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ বছরের প্রথম আট মাসে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ২৮ শতাংশই তিউনিশিয়ার নাগরিক। বাংলাদেশি আছে ১৩ শতাংশ। ওই সময়ের মধ্যে সাগর পাড়ি দেওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উৎস দেশ হিসেবে শীর্ষ তালিকায় আরো আছে মিসর, আইভরি কোস্ট, ইরান, গিনি, ইরিত্রিয়া, মরক্কো, সুদান ও ইরাক। হালনাগাদ তালিকায় এবারও দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে আছে বাংলাদেশ।
করোনায় বিপদে ৯২ শতাংশ প্রবাসী নারী
০৭ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
করোনা অতিমারির প্রভাবে আয় কমে যাওয়া, পরিবারের সদস্যদের হাতে নির্যাতনসহ নানা সমস্যায় পড়েছেন ৯২ শতাংশ প্রবাসী নারী। দেশে ফিরে স্বামীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন ৪৯ শতাংশ নারী। প্রবাসে কাজের জন্য যাওয়া নারী কর্মীদের ওপর করোনা মহামারির প্রভাব যাচাইয়ে পরিচালিত এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
সমীক্ষাটি করেছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এর ফল প্রকাশ করা হয়।
করোনার সময় দেশে ফিরে আসা ৯২ জন নারী কর্মী ও বিদেশে থাকা নারী কর্মীদের পরিবারের ৬১ সদস্যের ওপর সমীক্ষাটি করা হয়। এর মধ্যে সৌদিপ্রবাসী ১০১ জন, বাকিরা বিভিন্ন দেশের।
রামরুর সমীক্ষা বলছে, পরিবারের ভাগ্য বদলাতে বিদেশে কাজ করতে গিয়ে কর্মস্থলে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছেন ৩৫ শতাংশ নারী কর্মী। মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার ৫২ শতাংশ আর যৌন নিপীড়নের শিকার ১১ শতাংশ নারী। নিয়োগকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর হাতে এসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দেশে ফিরে তালাক, অসুস্থতা, সামাজিক কলঙ্কসহ নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছেন ২২ ভাগ নারী।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও করোনা পরিস্থিতি
মেহেরপুরে করোনায় এক গ্রামে ২১ মৃত্যু
২৮ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা শহরের কাছাকাছি একটি গ্রাম গাড়াডোব। ২৯ দিনে এই গ্রামে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ২১ জন। বিস্তীর্ণ কৃষিভূমি পরিবেষ্টিত গ্রামটিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যেন আঁচড়ে পড়েছে। কিন্তু মৌসুমি রোগ ভেবে কেউ একে গুরুত্ব দেননি। ফলাফল হয়েছে খুব খারাপ।
গাংনী উপজেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে পাকা সড়ক লাগোয়া গাড়াডোব গ্রাম। গ্রামের অধিবাসী ১৭ হাজারের মতো। ১৭টি পাড়া নিয়ে ধানখোলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড এই গাড়াডোব গ্রাম। গ্রামের মূল সড়কের পাশে আছে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। অসুস্থ হলে এই ক্লিনিকে যান কৃষিপ্রধান এই গ্রামের মানুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও যান অনেকে।
ছেলের জন্য আইসিইউ বেড ছেড়ে মারা গেলেন মা
২৯ জুলাই ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
করোনা আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মা কানন প্রভা পাল (৬৭)। কয়েকদিন পর করোনায় আক্রান্ত হয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি হন ছেলে শিমুল পাল (৪২)। এরইমধ্যে মা কানন প্রভাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছিল। অন্যদিকে মঙ্গলবার শিমুলের শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়। তারও আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু কোথাও আইসিইউ বেড পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি আইসিইউতে থাকা কানন প্রভা পাল জানতে পেরে চিকিৎসককে জানান তাকে বাদ দিয়ে ছেলেকে যেন আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
পরে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাতে ছেলের জন্য আইসিইউ বেড ছেড়ে দেন মা। এর ঘণ্টাখানেক পরেই তিনি মারা যান। মারা যাওয়া কানন প্রভা পাল নগরীর সিএনবি কলোনী এলাকার বাসিন্দা।
‘তিন ডোজ’ টিকা নেওয়া যুবককে মেডিকেল টিম পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
২৯ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
একসঙ্গে করোনাভাইরাসের ‘তিন ডোজ’ টিকা নেওয়া যুবক ওমর ফারুককে (২৪) মেডিকেল টিমের সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে মেডিকেল টিম পরিচয়ে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের ভুঁইগড় এলাকায় নিজেদের বাড়ি থেকে ওমর ফারুককে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বজনরা। তাঁরা বলেছেন, মেডিকেল টিমের সদস্যরা তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। এরপর সারা দিন কোনো খবর না পেলেও সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওমর ফারুক তাঁর মা রহিমা বেগমকে ফোন করে জানান, তিনি হাসপাতালে আছেন, সুস্থ আছেন।
শেষ পর্যন্ত অনুমতি পেল বুয়েট উদ্ভাবিত অক্সিজেট
জুলাই ২৮, ২০২১ , ভোরের কাগজ
করোনা আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেনের উচ্চ চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উদ্ভাবিত যন্ত্র অক্সিজেট শেষ পর্যন্ত সরকারের অনুমোদন পেয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সফল হওয়ার পরও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদন না পাওয়ায় বিষয়টি গত ৫ জুলাই উচ্চ আদালতের নজরে এনেছিলেন এক আইনজীবী। পরে উচ্চ আদালত বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পরামর্শ দেন। আজ বুধবার ২০০টি অক্সিজেট তৈরির অনুমোদন মিলেছে বলে ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন প্রকল্পটির তত্ত্বাবধানকারী বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসান।
তিনি জানান, ‘অক্সিজেট’ নামের সি-প্যাপ যন্ত্রটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) অনুমোদন না দেওয়ায় বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী অনীক আর হক। তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানোর পরামর্শ দেন। কোনো কারখানা থেকে উৎপাদন হচ্ছে না বলে অক্সিজেটের অনুমোদন দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিল ডিজিডিএ। অথচ দেশে অক্সিজেন সরবরাহের অপ্রতুলতার কারণে কোভিড রোগী মারা যাচ্ছে।
অক্সিজেট সি-প্যাপ প্রকল্পটির আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (আইডিয়া) প্রকল্প, অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এবং মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছেন বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মীমনুর রশিদ, কাওসার আহমেদ, ফারহান মুহিব, কায়সার আহমেদ, সাঈদুর রহমান এবং সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসান।
শয্যা খালি নেই, হন্যে হয়ে ছুটছে মানুষ
২৯ জুলাই ২১, সমকাল
রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড কভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় এসে দাঁড়ায় দুটি অ্যাম্বুলেন্স। একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে স্ট্রেচারে করে নামানো হয় লতিফুন্নেছা বেগম নামের এক রোগীকে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, কোনো শয্যাই ফাঁকা নেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে লতিফুন্নেছাকে ঢাকায় নিয়ে এসে বিপদে পড়ে যান ছেলে ওবায়দুল হক। তিনি সমকালকে বলেন, সম্প্রতি তার মায়ের করোনা শনাক্ত হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার পর গত মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু বুধবার সকালে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৭০-এ নেমে আসে। চিকিৎসকরা দ্রুত ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। এরপরই অ্যাম্বুলেন্সে তার মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়। কিন্তু শয্যা ফাঁকা না থাকায় ভর্তি করাতে পারছেন না। মাকে বাঁচাতে একটি শয্যার আকুতি জানিয়ে ওবায়দুল বলেন, ‘শ্বাসকষ্টে মায়ের নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একটি শয্যা না পেলে মাকে বাঁচানো যাবে না।’
ডিএনসিসির এই হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন সমকালকে বলেন, শয্যা ফাঁকা না থাকলে রোগী ভর্তি করার সুযোগ থাকে না। কারণ, করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হলে তাদের অক্সিজেন অথবা আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হয়। এর জোগান দিতে না পারলে রোগী ভর্তি করেও কোনো লাভ হবে না। ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে কেউ সুস্থ হলে কিংবা মৃত্যুবরণ করলে তখনই শয্যা ফাঁকা হয়। কিন্তু যত শয্যা ফাঁকা হয়, তার তুলনায় কয়েক গুণ রোগী সিরিয়ালে থাকেন। এ কারণে অধিকাংশ রোগীকে ভর্তি করা সম্ভব হয় না।
ডিএনসিসির এই হাসপাতালের মতো রাজধানীর প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রের একই চিত্র। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পর হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ তো দূরের কথা, সাধারণ শয্যা পাওয়াও দুরূহ হয়ে পড়ছে। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরেও শয্যা মিলছে না। শয্যা পাওয়ার জন্য সিরিয়াল দিতে হচ্ছে। ছোট ছোট কয়েকটি হাসপাতালে কিছু শয্যা ফাঁকা থাকলেও তাতে রোগী ভর্তি হচ্ছে না।
এর মধ্যেই গতকাল রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তির জন্য এক দম্পতির প্রাণপণ চেষ্টার খবর মানুষের মনকে নাড়া দেয়। রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে দুপুর ১টার দিকে করোনায় আক্রান্ত নাসরিন সুলতানাকে নিয়ে এসেছিলেন তার স্বামী আবদুর জাহেদ রাজু। নাসরিনের অবস্থা এতটাই খারাপ লাগছিল যে তিনি ঠিকমতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। তার অবস্থা দ্রুত খারাপ হচ্ছে দেখে রাজু তাকে মোটরসাইকেলে বসিয়ে নিজের শরীরের সঙ্গে ওড়না দিয়ে বেঁধে নিয়ে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও ভর্তি করাতে পারেননি তিনি। কারণ, সিট নেই। পরে মহাখালীর ডিএনসিসি কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে নেওয়ার আধা ঘণ্টা পর নাসরিনকে ভর্তি করা সম্ভব হয়।
জানা গেছে, গ্রাম থেকে স্রোতের মতো করোনা সংক্রমিত রোগীরা ঢাকার হাসপাতালে ভিড় করছেন। এ কারণে ঢাকার হাসপাতালে শয্যা সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি সমকালকে বলেন, রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে আটজনই গ্রাম থেকে এসেছেন।
এক দিনে রেকর্ড ১৫৩ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত
২৯ জুলাই, ২০২১, দেশ রুপান্তর
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৫৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এটি চলতি বছর এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। আগের ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা ছিল ১৪৩ জন।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশে সব মিলে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে চলতি মাসেই শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৭২৬ জন। এদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন ১ হাজার ৫২৬ জন।
চট্টগ্রামে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না
২৮ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা এক নারীর দেহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ ঘটেছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকেরা। ষাটোর্ধ্ব ওই নারী এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা। ওই নারী চার দিন আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। তবে তাঁর বিষয়ে বুধবার জানা যায়।
শহরে-গ্রামে এখন শুধু অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন
৩০ জুলাই ২১, সমকাল
রাজধানীর কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন একটি ভবনের ফ্ল্যাটে ভাড়ায় থাকেন রিমা রহমান। লকডাউনের কারণে তার অফিস বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বাসায় থেকে অনলাইনে অফিস করার পাশাপাশি ঘরের কাজকর্মও নিজ হাতে সামলাতে হয় তাকে। বাসার বারান্দায় দাঁড়ালে চোখে পড়ে কল্যাণপুরের ব্যস্ততম সড়ক, খোলা আকাশ। কাজকর্মের ফাঁকে অবসর পেলেই তাই তিনি ওই বারান্দায় দাঁড়িয়ে স্বস্তি খোঁজেন। তবে কয়েকদিন ধরে বারান্দায় দাঁড়ালে স্বস্তির বদলে আতঙ্ক ঘিরে ধরে তাকে। একটু পরপর সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের ছুটে চলা চোখে পড়ে। প্রতিদিনই মসজিদ থেকে কানে আসে মৃত্যুর ঘোষণা।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এসব মৃত্যু ঘটছে মূলত মহামারি করোনায়। অ্যাম্বুলেন্সের অস্বাভাবিক আনাগোনা বৃদ্ধির কারণও করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি। ঢাকা শহরের অনেক বাসিন্দাও আছেন আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায়। তবে ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলের অনেক করোনা রোগীকে বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আসা হচ্ছে এখানে। আবার তাদের অনেকে করোনার কাছে হার মানার পর অ্যাম্বুলেন্সের করুণ সাইরেন বাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে স্থায়ী ঠিকানায়। গ্রামের সড়কে এখন অ্যাম্বুলেন্সের চলাচলও বেড়েছে।
কভিড চিকিৎসায় নিঃস্ব হাজারো পরিবার
৩০ জুলাই, ২০২১, কালের কন্ঠ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের চাচি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ধাপে ধাপে তাঁকে প্রায় এক মাস রাখতে হয় হাসপাতালে। প্রথমে ১৫ দিন ছিলেন ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে। সেখানে খরচ চালাতে গিয়ে জমা টাকা, সম্পত্তি বিক্রি ও ধার করেও কুলাতে না পেরে নিয়ে যান একটি সরকারি হাসপাতালে। সেখানে অনেক কিছু ফ্রি থাকলেও চিকিৎসার প্রয়োজনে খুব দামি কিছু ইনজেকশন দিতে হয় প্রতিদিন, যা সরকারি ওই হাসপাতালেই নেই। এক পর্যায়ে সেখানেও হিমশিম খেয়ে বাধ্য হয়ে তাঁর সন্তানরা হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান ওই নারী। এর মাঝেই ওই পরিবারের ২০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। পরিবারটি রীতিমতো এখন প্রায় নিঃস্ব।
রাজধানীর পান্থপথ এলাকার একটি হাসপাতালে কভিড আক্রান্ত ষাটোর্ধ্ব এক রোগীকে হঠাৎ ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলেন এক্টিমেরা ৪০০ এমজি (টোসিলিজুমব) আইভি ইনজেকশন দিতে, যা ওই হাসপাতালের ফার্মেসিতে নেই। রোগীর স্বজনরা বাইরে হন্যে হয়ে খুঁজে না পেয়ে আবার যখন ওই হাসপাতালের নার্সদের জানায়, তখন তাঁরা ওই ইনজেকশন সরবরাহকারী একজনের মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। রোগীর স্বজনরা ওই নম্বরে ফোন করলে প্রথমে জানানো হয় ওই ওষুধ নেই। সংগ্রহ করে দিতে সময় লাগবে। ওই স্বজন কান্নাকাটি ও অনুনয়-বিনয় করার পর ইনজেকশন দিতে রাজি হলেও দাম চাওয়া হয় প্রতি ডোজের জন্য এক লাখ ১০ হাজার টাকা। পরে কমিয়ে তা নামানো হয় ৯০ হাজারে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই লোক ওষুধ দিয়ে টাকা নিয়ে যান। দেশে কভিড চিকিৎসায় কোনো কোনো হাসপাতালে জটিল পরিস্থিতিতে থাকা রোগীদের দেওয়া এটাই সর্বোচ্চ দামের কোনো ওষুধ।
তবে এ ছাড়া কভিড রোগীদের উপসর্গ থেকে শুরু করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং সুস্থ হওয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিকবার কভিড টেস্ট, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, রক্ত পরীক্ষার কমন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় রোগীর অবস্থা নির্ণয়ের জন্য। আছে অ্যাম্বুল্যান্স। মাঝে প্রয়োজনমতো আট থেকে ১০টি ওষুধও থাকে প্রায় সব রোগীর। এ ছাড়া অবস্থা অনুসারে চলে সিলিন্ডার অক্সিজেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা কিংবা আইসিইউতে ভেন্টিলেটর থেরাপি। গড়ে কমপক্ষে ১০ দিন থেকে এক-দেড় মাসও হাসপাতালে থাকতে হয় কোনো রোগীকে। সঙ্গে অক্সিমিটার আর ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার পরিমাপ যন্ত্র, ব্লাড প্রেসার মাপার যন্ত্রও যেন কমন হয়ে আছে। এর বাইরে রোগীর পথ্য, বেড, কেবিনের ব্যবস্থাপনাও যুক্ত থাকে রোগীর অবস্থা অনুসারে। এ ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে কভিড রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ পেলে অনেক কিছুই মেলে বিনা মূল্যে। সরকারের ঘোষণা অনুসারে হাসপাতালে কভিড রোগীদের সব কিছুই ফ্রি। এমনকি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ফ্রি। তবে কোনো কোনো ওষুধ এবং বিশেষ পরীক্ষার প্রয়োজন হলে ক্ষেত্রবিশেষে তা হাসপাতালের বাইরে থেকে মাঝেমধ্যে করতে হয়। তবে এর ঠিক উল্টো চিত্র বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।
কভিড চিকিৎসা যেন বেসরকারি হাসপাতালে বড় ব্যবসার মওকা হয়ে উঠেছে। বড় হাসপাতালগুলোতে আইসিইউতে থাকা রোগীদের জন্য গড়ে দিনে প্রায় এক লাখ টাকা গুনতে হয়, যা মাঝারি বা নিম্ন ক্যাটাগরির হাসপাতালগুলোতে নেমে আসে ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। কোনো কোনো হাসপাতালে আইসিইউয়ের প্যাকেজের মধ্যে ওষুধ-পরীক্ষা থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইসিইউ ভাড়া আর ওষুধ-পরীক্ষার বিল আলাদা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে রোগীর স্বজনরা কেবিন নিলে সেই ভাড়াও থাকে আলাদা। এ ক্ষেত্রে ওষুধ ও পরীক্ষার ফি বেশির ভাগ হাসপাতালেই আলাদা দিতে হয়।
পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলছে রোববার
৩০ জুলাই ২০২১, প্রথম আলো
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই তৈরি পোশাকসহ সব রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা আগামী রোববার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে রপ্তানিকারকেরা হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। যদিও চলমান বিধিনিষেধে শ্রমিকেরা দূর দূরান্ত থেকে কিভাবে কর্মস্থলে ফিরবেন তার কোনো নির্দেশনা নেই।
রোববার সকাল ছয়টা থেকে পোশাকসহ সব রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাকে বিধিনিষেধের আওতামুক্ত ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আজ শুক্রবার বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল ব্যবসায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে যত দ্রুত সম্ভব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার অনুরোজ জানান। তার একদিন পরই রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিল সরকার।
নিবন্ধন করেও টিকার জন্য অপেক্ষমাণের সংখ্যা বাড়ছে
৩১ জুলাই ৩১, বণিক বার্তা
চলতি মাসের শুরুতে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন পঁয়তাল্লিশোর্ধ্ব সেফাত আলী প্রামাণিক। কেন্দ্র হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু টিকা গ্রহণের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষুদে বার্তা পাননি তিনি। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মধ্যবয়স্ক এ বেসরকারি চাকরিজীবী। অন্যদিকে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব আহনাফ ইসলাম গত মঙ্গলবার বিকালে নিবন্ধন করার পর মাত্র ২ ঘণ্টার ব্যবধানে টিকা গ্রহণের জন্য ক্ষুদে বার্তা পান। তিনি রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) গিয়ে গত বুধবার টিকা গ্রহণ করেছেন।
দেখা গেছে, পছন্দসই কেন্দ্রে নিবন্ধন করে কেউ টিকা গ্রহণের জন্য ক্ষুদে বার্তা পাচ্ছেন খুবই কম সময়ে আবার কেউ পাচ্ছেন মাস পেরিয়ে। এরপর ক্ষুদে বার্তা পেলেও আবার টিকা গ্রহণের তারিখ পাচ্ছেন দুই সপ্তাহের ব্যবধানে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি চলমান রেখেছে সরকার। টিকা গ্রহণের জন্য সরকারের নির্দিষ্ট সুরক্ষা ওয়েবসাইট ও অ্যাপে গিয়ে নিবন্ধন করছেন টিকাপ্রত্যাশীরা।
নিবন্ধনকৃত কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে নাগরিকদের ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। এর মধ্যে কোনো কেন্দ্রে বেশি নিবন্ধন হলে তাতে টিকা নেয়ার জন্য ক্ষুদে বার্তা আসতে দেরি হয়। আর যে কেন্দ্রে নিবন্ধন কম, তাতে কম সময় লাগে। নিবন্ধনে নির্দিষ্ট এলাকা উল্লেখ করার পর সক্ষমতা ও নিবন্ধনের সংখ্যা বিবেচনা করে কেন্দ্র নির্ধারণে সার্ভারের বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করলে এ জটিলতা সৃষ্টি হতো না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, কেন্দ্রের দৈনিক সক্ষমতা বিবেচনা না করেই নিবন্ধন উন্মুক্ত রাখায় টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হচ্ছে। রাজধানীসহ সারা দেশে এমন অনেকে নিবন্ধনের পর টিকা গ্রহণের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছেন। ফলে বর্তমানে নিবন্ধনের সংখ্যা বাড়লেও টিকা পাওয়ার হার কম।
চট্টগ্রাম মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে টাকার খেলা, অবহেলায় মারা যাচ্ছে বিপুল রোগী
৩১ জুলাই ২০২১, চট্টগ্রাম প্রতিদিন
চোখের সামনে একটু একটু করে কমে আসছে অক্সিজেন স্যাচুরেশন। কমতে কমতে ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছেন রোগী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেড জোন ও ইয়েলো জোনে এখন প্রতিদিনই দেখা যায় এমন মর্মন্তুদ দৃশ্য। একদিকে যখন এমন চিত্র, অন্যদিকে তাৎক্ষণিক সহায়তায় এগিয়ে আসার মূল দায়িত্ব যাদের হাতে সেই নার্সদের মেলে না দেখা। ডাক্তার তো নয়ই। খোদ জোনগুলোর মূল দায়িত্ব যেসব নার্স ইনচার্জের হাতে, তাদের দেখা পাওয়াই যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। বিভিন্ন রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব নার্স ইনচার্জরা কক্ষের দরজা বেশিরভাগ সময়েই থাকে বন্ধ। কেউ কেউ মহিলা নার্সদের সঙ্গে গল্পগুজবে মেতে থাকেন ভেতরে। এ সুযোগে অন্য নার্সরা হেসেখেলে সময়টা কাটিয়ে দেন। ফলে রোগীদের অবস্থা যেমন গুরুতর হয়, তেমনি অনেকে বিনা চিকিৎসাতেই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।
বড় পরিসরে আপাতত হচ্ছে না ফিল্ড হাসপাতাল
০১ আগস্ট ২১, সমকাল
করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীর চাপ সামাল দিতে সারাদেশে ফিল্ড হাসপাতাল করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, তা থেকে কিছুটা সরে এসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ। আপাতত ঢাকার বাইরে কোনো ফিল্ড হাসপাতাল হচ্ছে না। শুধু রাজধানীতে একটি হবে। তবে ঢাকার বাইরে ফিল্ড হাসপাতালের পরিবর্তে মানসম্পন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনা চিকিৎসায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সিভিল সার্জন এবং জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বা-বধায়কদের এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
নির্মাণাধীন ভবনই ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে
১৭ জুলাই, ২০২১, বণিক বার্তা
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যেই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দৌড়ঝাঁপের শেষ নেই। প্রতিদিনই চলছে অভিযান। নগরবাসীকে করা হচ্ছে জরিমানা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই সিটির নির্মাণাধীন ভবনগুলোই ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এতে ব্যর্থ হচ্ছে মশা নিধন কর্মযজ্ঞ। জরিমানা গুনলেও মশার লার্ভা ধ্বংসে অনীহা দেখা গেছে ভবন মালিকদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মাসে সারা দেশে ৫৪১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এর আগে জুনে ২৭২ জন ও মে মাসে ৪৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি মাসের বেশির ভাগ ডেঙ্গুরোগীই রাজধানীর। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৬৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর ক্রমবৃদ্ধি প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে দুই সিটির মশা নিধন কার্যক্রমকে। মশা নিধন কর্মকর্তারা বলছেন, বর্ষার মৌসুমে ঘন ঘন বৃষ্টিপাতের কারণে ছাদবাগান, টব, টায়ার ও নির্মাণাধীন ভবনে পানি জমার সুযোগ পায় বেশি। বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বৃষ্টি হলে এসব ভবনের ভেতরে বাইরে আশপাশে নানা জায়গায় পানি জমে থাকে। ভবন মালিকরা পানি অপসারণ না করার কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর ঝুঁকি।
হাসপাতালের ১০ গুণ রোগী বাড়িতে
০১ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা রোগীর চেয়ে ১০ গুণ বেশি রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাড়িতে মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে। এই তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।.. …
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এ পর্যন্ত ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৭৮ হাজার ২১২ জন এবং মারা গেছেন ২০ হাজার ৬৮৫ জন।
গতকাল সারা দেশের সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে সাধারণ শয্যা, আইসিইউ ও এইচডিইউতে রোগী ভর্তি ছিলেন ১৩ হাজার ২৫১ জন।
শনাক্ত হওয়া, সুস্থ হওয়া, মারা যাওয়া এবং ভর্তি থাকা রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হননি। তাঁরা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই সংখ্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর চেয়ে ১০ গুণ বেশি।
রোগী বাড়ছেই, ভাগাভাগি করতে হচ্ছে অক্সিজেনও
০২ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
রোগীর চাপে হিমশিম অবস্থা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসক ও নার্সদের। শয্যা বাড়িয়ে ২০০ থেকে করা হয়েছে ৩০০। সেখানে গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত রোগী ছিলেন ৩১৮ জন। প্রায় সবার শ্বাসকষ্ট, লাগছে অক্সিজেন। কিন্তু হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ লাইনের ব্যবস্থা আছে ২৫০টি। ফলে কম অক্সিজেন চাহিদার রোগীদের একটি লাইন থেকে দুজনকে সেবা দেওয়া হচ্ছে।
করোনা নিয়ে সরকারি তথ্যে নানা অসংগতি
০২ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
ভোলা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, জামালপুর—স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে এই পাঁচ জেলার হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের জন্য ২০টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রয়েছে। বাস্তবে এসব হাসপাতালে গতকাল রোববার পর্যন্ত সচল কোনো আইসিইউ শয্যাই ছিল না।
আবার সিলেট জেলায় করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত চারটি সরকারি হাসপাতালে গতকাল চিকিৎসাধীন রোগী ছিলেন ৪৩৬ জন। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, এই জেলায় গতকাল চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা দেখানো হয় ১৩৬ জন।
শুধু এই দুটি নয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিদিনকার করোনাবিষয়ক বিজ্ঞপ্তিতে এমন নানা ধরনের তথ্যবিভ্রাট ও গরমিল থাকছে। কোনো জেলায় ভর্তি রোগীর তথ্য কম দেখানো হচ্ছে, আবার কোনো জেলায় হাসপাতালের শয্যা ও উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা যন্ত্র বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া আইসিইউ–সুবিধা না থাকলেও তা হিসাবে যুক্ত করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মূলত জেলা পর্যায়ে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের তথ্য দিচ্ছে। প্রায় সব জেলাতেই করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ায় এখন উপজেলা হাসপাতালেও অনেক রোগী ভর্তি থাকছেন। পার্বত্য এলাকার উপজেলাগুলোর বাইরের মাত্র তিন–চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন রোগীর তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে যুক্ত করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিদিনের বিজ্ঞপ্তিতে দেশের ৯৬টি সরকারি হাসপাতালের সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা, ভর্তি রোগী, হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার তথ্য থাকে। গতকাল প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা এসব হাসপাতালের তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
অধিদপ্তরের হিসাবে, এসব হাসপাতালে গতকাল শয্যা ছিল ১৩ হাজার ৭৯৮টি। প্রথম আলোর সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে শয্যা ১৩ হাজার ৪৬৫টি। অধিদপ্তরের হিসাবে, ৭৫০টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ৭৪টি গতকাল ফাঁকা ছিল। প্রথম আলোর সংগ্রহ করা তথ্য বলছে, ৭১৮টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ছিল ২২টি।
টিকা না নেওয়াদের মৃত্যুহার ৩ শতাংশ, নেওয়াদের ০.৩ শতাংশ
০২ আগস্ট, ২০২১, ইত্তেফাক
করোনা ভাইরাসের টিকা না নেওয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে তিন শতাংশ এবং টিকা গ্রহণ পরবর্তী আক্রান্তদের মধ্যে শূন্য দশমিক তিন শতাংশ রোগী মারা গেছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) এক গবেষণায় এমনটিই উঠে এসেছে।
ওই গবেষণায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের পূর্ণ ডোজ টিকা যারা নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, হাসপাতালে ভর্তির হার এবং মৃত্যুঝুঁকি টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় কম দেখা গেছে। পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার সাত শতাংশ এবং টিকা না নেওয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার ২৩ শতাংশ।
সরকারি হিসাবে সব মৃত্যুর তথ্য আসেনি
০৩ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় মৃত্যুর সব তথ্য সরকারি হিসাবে আসছে না। রাজধানীর তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে গত দুই মাসে করোনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর যে তথ্য প্রকাশ করছে, তাতে ওই তিনটি হাসপাতালের নাম নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি তদন্ত দল গত শনিবার রাজধানীর উত্তরার তিনটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে মৃত্যুর এই তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে শিন শিন জাপান হাসপাতালে ১০ জন, উত্তরা আল–আশরাফ জেনারেল হাসপাতালে ৪ জন এবং রেডিকেল হাসপাতালে ১০ জন মারা গেছেন করোনায়। এই তিন হাসপাতালের করোনা চিকিৎসার অনুমোদন নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা রোগনির্ণয় কেন্দ্র আছে প্রায় ১৪ হাজার। এগুলোর মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। করোনার চিকিৎসার অনুমোদন পাওয়া বেসরকারি সব হাসপাতাল করোনার রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠায়। অনুমোদনহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো তা করে না। তাই মৃত্যুর সঠিক তথ্যও জানা যাচ্ছে না।
অক্সিজেন সংকট নিরসনের দাবিতে করোনা ইউনিটের সামনে বিক্ষোভ
০৩ আগস্ট ২১, সমকাল
অক্সিজেন সংকট নিরসনের দাবিতে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের (শেবাচিম) করোনা ইউনিটের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) এ বিক্ষোভে হাসপাতালে রোগীদের স্বজনসহ কয়েকশত নারী-পুরুষ অংশ নেন। করোনা ইউনিটের সামনে সমাবেশ শেষে বাসদের বিক্ষোভ মিছিল হাসপাতাল এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেন নিয়ে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে হাহাকার চলছে। রোগীর চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আবার সরবরাহ করা অক্সিজেন বন্টন নিয়ে অনিয়মে জড়িয়েছেন একশ্রেণির কর্মচারীরা। ফলে অক্সিজেনের অভাবে রোগী মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু করোনার দ্বিগুণ
০৪ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
দেশে করোনার পাশাপাশি এর উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। পাঁচ জেলার পাঁচটি বড় হাসপাতালের বিগত সাত দিনের চিত্র বলছে, এ সময় করোনা শনাক্ত রোগীর মৃত্যুর চেয়ে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন প্রায় দ্বিগুণ মানুষ।
এই পাঁচ জেলা হলো চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, বরিশাল ও ময়মনসিংহ। কোনো কোনো হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা শনাক্ত রোগীর মৃত্যুর চেয়ে অনেক বেশি। যেমন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৮ জুলাই থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সাত দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। বিপরীতে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫২ জন।
মোটামুটি একই চিত্র ফেনী জেনারেল হাসপাতালের। সেখানে ৭ দিনে ৯ জন শনাক্ত রোগীর মৃত্যুর বিপরীতে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয় ২৮ জনের। একই সময়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনাক্ত রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা ৩৭, উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু ৬২ জনের।
বিগত এক সপ্তাহে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু সবচেয়ে বেশি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৭৭ জন। আর করোনা শনাক্ত রোগী মারা গেছেন ৪৬ জন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা শনাক্ত রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা ১৫, উপসর্গ নিয়ে ১৯ জনের।
এর বাইরে খুলনার পাঁচটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে গত এক সপ্তাহে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন চারজন রোগী। আর করোনায় মারা গেছেন ৩৩ জন। অবশ্য কিছুদিন আগেও খুলনায় উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ছিল।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে যাঁরা মারা যান, তাঁদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা করা হয় না অথবা পরীক্ষার ফলাফল আসার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়। এর একটি কারণ নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে চাপ অনেক বেশি। জেলা পর্যায়ে এক বা দুই দিনের মধ্যে পরীক্ষা করা ও ফলাফল পাওয়া দুষ্কর। গ্রামের মানুষ রোগীদের এমন সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যান, যখন অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে চলে যায়। এতে পরীক্ষা ও ফল পেতে সময় পাওয়া যায় না।
দেড় কিলোমিটার হেঁটে চাচাকে মাথায় করে হাসপাতালে
০৫ আগস্ট ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
কুমিল্লার মুরাদনগরে অসুস্থ চাচাকে টুকরিতে বসিয়ে মাথায় করে প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন ভাতিজা জয়নাল আবেদিন। বুধবার (০৪ আগস্ট) সকালে উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আব্দুল জলিল (৭৫) পরমতলা গ্রামের বাসিন্দা। সকাল ১০টার দিকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে গ্রামের রাস্তায় যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় চাচাকে মাথায় করে হাসপাতালে নিয়ে যান ভাতিজা জয়নাল।
দেশে ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি শিশু মারা যাচ্ছে
০৬ আগস্ট, ২০২১, বণিক বার্তা
দেশে শিশুমৃত্যুর প্রধানতম কারণ হয়ে উঠছে ক্যান্সার। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো এখন শিশুদের মধ্যেও প্রাণঘাতী ব্যাধিটির প্রকোপ বাড়ছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ২৯ মাস থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যেও ক্যান্সারজনিত মৃত্যুহার বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, দেশে শিশুস্বাস্থ্যে বড় এক সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে ক্যান্সার।
সম্প্রতি দেশে শিশুমৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে ৪০টি জেলায় এক জরিপ চালায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। জরিপে পাওয়া ফলাফল প্রকাশ হয়েছে ‘ডিটারমিনেশন অব কজেজ অব ডেথস বাই ভারবাল অটোপসি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে। আনুপাতিক হার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে এখন শিশুমৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে উঠেছে ক্যান্সার।
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে আরেকটি গবেষণা চালায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) দুজন বিশেষজ্ঞ এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ‘চাইল্ডহুড ক্যান্সার: এ সিচুয়েশন অ্যানালাইসিস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ, বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক ওই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে প্রতি বছর ৯-১২ হাজার শিশু-কিশোর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে।
সারা দিন খুঁজেও পাওয়া গেল না শয্যা: অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু মিলন মিয়ার
৬ আগস্ট, ২০২১, দেশ রুপান্তর
নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাকারিয়া আহমেদের বাবা মো. মিলন মিয়া (৫০)।
জাকারিয়া জানান, মঙ্গলবার রাতে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বাবা মো. মিলন মিয়ার। পরে বুধবার রাত ১টায় জাকারিয়া তার অসুস্থ বাবা, মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে নরসিংদী থেকে রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আসি। ভোরে সেখানে পৌঁছে কোনো বেড বা আইসিইউ খালি পাওয়া যায়নি। পরে সকাল ৯টায় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে গিয়ে সেখানেও আইসিইউ বেড মেলেনি। শেষে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ফাঁকা আইসিইউ বেডের খবর পেয়ে রওনা হন তারা । হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাত ৯টায় অ্যাম্বুলেন্সেই মারা বাবা।
গণটিকায় গণচাপ বিশৃঙ্খলা
০৮ আগস্ট ২১, সমকাল
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছয় দিনব্যাপী গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী দিনে গতকাল শনিবার এ কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। তবে ‘গণচাপ’ সামাল দিতে না পারায় অধিকাংশ টিকাকেন্দ্রেই ‘গণবিশৃঙ্খলা’ তৈরি হয়। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কার্যক্রম চালানোর কথা থাকলেও কোথাও কোথাও শুরুর এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই টিকা শেষ হয়ে যায়। আবার একেকটি কেন্দ্রে সাড়ে তিনশ থেকে ছয়শ টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও অতিরিক্ত তিন থেকে চারগুণ মানুষ ভিড় করেন। নিবন্ধন ছাড়া টিকা পাওয়ার সুযোগ থাকায় অনেকে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে কেন্দ্রে যান। আবার জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এমন মানুষও কেন্দ্রে ভিড় করেন। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন, তবে টিকা দেওয়ার এসএমএস পাননি, এমন অনেকেও ভিড় করেন। উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে অনেক জায়গায় ভোটকেন্দ্রের মতো লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকা দিয়েও বিশৃঙ্খলা ঠেকানো যায়নি। অভিযোগ ওঠে স্বজনপ্রীতি করারও। কেন্দ্রে সংশ্নিষ্টদের অব্যবস্থাপনা, গণচাপসহ সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যায়। ছয় দিনব্যাপী এ ক্যাম্পেইনে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গতকাল প্রথম দিনে ২৭ লাখের বেশি মানুষ টিকা পেয়েছেন।
সেই স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচির সুফল কতটা পাওয়া গেল…
০৮ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের জন্য স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি চালু করেছিল সরকার। মূল্যায়ন প্রতিবেদন বলছে, উপকারভোগীদের তালিকায় প্রায় অর্ধেকই দরিদ্র নন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) নামে ওই বিমা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ত্রুটি ছিল। ভালো হলেও কর্মসূচির পুরোপুরি সুফল পাওয়া যায়নি।
ইউএসএআইডির অর্থায়নে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) একটি দল কর্মসূচির আওতাভুক্ত তিনটি উপজেলা এবং কর্মসূচির বাইরের তিনটি উপজেলার ওপর গবেষণা চালায়। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের কাছে তারা ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।.. …
কর্মসূচির আওতায় তিন উপজেলার ৯০টি গ্রামের দিনমজুর, ভিটে ছাড়া কিছু নেই এবং আয়ের নির্দিষ্ট উৎস নেই—এমন লোকজনের অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মূল্যায়নকারী দল সরেজমিনে তিনটি উপজেলা ঘুরে ২০টি গ্রাম খুঁজেই পায়নি।
অবশিষ্ট ৭০ গ্রামের ৪২ শতাংশ কার্ডধারী দারিদ্র্যসীমার নিচের জনগোষ্ঠী নন বলেও প্রমাণ পায় তারা। খোঁজখবর নিয়ে দলটি জানতে পারে, শর্ত অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করে উপকারভোগীর তালিকা চূড়ান্ত করা ও ছবি তোলার কথা। পুরো কাজের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব ছিল স্থানীয় জনপ্রতিনিধির।
রাত ৮টা থেকে টিকাকেন্দ্রে মানুষের ভিড়
১০ আগস্ট ২১, সমকাল
আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে। এজন্য সোমবার রাত ৮টা থেকে রাজধানীর রায়েরবাজার কমিউনিটি সেন্টার এলাকার লোকজন লাইনে দাঁড়িয়েছেন। তারা সবাই গত কয়েকদিন লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে পারেননি। এ কয়দিন তাদের সিরিয়াল কেন্দ্রের গেটে আসার আগেই টিকা শেষ হয়ে যায়।
এজন্য মঙ্গলবার টিকা নেওয়া নিশ্চিত করতে তারা সোমবার রাতেই কেন্দ্রের ওয়াল ঘেঁষে লাইনে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিছানা নিয়ে বসেছেন, কেউ কেউ চেয়ার ও টুল এনে বসেছেন। আবার কেউ সিরিয়ালে চেয়ার, টুল, পিঁড়ি, ইট, পাথর বিছিয়ে রেখেছেন। কেউ কেউ টুল বা পিঁড়িতে কাগজ রেখে তাতে নিজের নাম লিখে গেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আগামীকাল এই কেন্দ্র যে আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ লোককে টিকা দেওয়া হবে সেই সংখ্যার মধ্যে থাকতে মানুষ রাত ৮-১০টার মধ্যে কেন্দ্রের বাইরে হাজির হয়েছেন।… …
উপসর্গেই মৃত্যু বেশি
১৪ আগস্ট ২১, সমকাল
দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই অনেকে মৃত্যুবরণ করছেন। কিন্তু সরকারি মৃত্যুর হিসাবে তাদের নাম আসছে না। সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এ পর্যন্ত কত মানুষ করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তার হিসাবও ঠিকমতো রাখা হচ্ছে না।
হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে দেশে কত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন সমকাল তা জানার চেষ্টা করেছে। দেশের ২০ জেলার সিভিল সার্জন অফিস, জেলা সদর হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত জুলাই মাসেই করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই হাজার ৩৮৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর একই সময়ে এসব হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৯০২ জনের। করোনায় মৃত্যুর তুলনায় উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু ২৫ শতাংশ বেশি। ঢাকার বাইরের তিনটি সরকারি হাসপাতালে করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী পাঁচজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর রোগীকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়। রিপোর্ট পেতে চার-পাঁচ দিন সময় লেগে যায়। অনেক রোগী এর আগেই মৃত্যুবরণ করেন। তাদের তথ্য উপসর্গে মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত করা হয়। কিন্তু রিপোর্ট আসার পর দেখা গেল, ওই রোগী করোনা আক্রান্ত ছিলেন, তখন তার মৃত্যুর তথ্য সংশোধন করা হয় না। আবার নমুনা সংগ্রহের আগে কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার নামও উপসর্গে মৃত্যুর তালিকায় রাখা হয়। উপসর্গে মৃত্যুর ৫০ থেকে ৬০ ভাগই করোনা সংক্রমিত বলে এই চিকিৎসকদের ধারণা
২৪ ঘণ্টায় ৩২৯ ডেঙ্গু রোগী, এই বছরে সর্বাধিক
১৭ আগস্ট, ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই বছরে এক দিনে এত বেশি আক্রান্ত আর হয়নি।
নতুন রোগীদের চলতি অগাস্ট মাসে ৩ হাজার ৯৯২ জন রোগী হাসপাতালে এসেছে ডেঙ্গু নিয়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩০৬ জন এবং ঢাকা মহানগরীর বাইরে ২৩ জন রোগী ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এইডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আগের দিন সোমবার ২২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
মডার্নার টিকা বিক্রি হচ্ছিল ৫০০ টাকায়
২০ আগস্ট ২১, সমকাল
দেশে এখন পর্যন্ত শুধু সরকারিভাবেই করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। আর সে ভ্যাকসিন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন বহু মানুষ। এর মধ্যে ৫০০ বা এক হাজার টাকা নিয়ে নিজের ক্লিনিকে লোকজনকে ‘করোনার টিকা’ দিয়ে আসছিলেন বিজয় কৃষ্ণ তালুকদার। গোপন সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ। ভ্যাকসিন গ্রহীতা সেজে একাধিক পুলিশ সদস্য ক্লিনিকে যোগাযোগ করেন। তবে চতুর বিজয় ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছাড়া বাকিদের কাছে বিষয়টি অস্বীকার করেন। নানাভাবে আস্থা অর্জন করে অবশেষে বুধবার রাতে ভ্যাকসিন নিতে যান এক পুলিশ সদস্য। পাশাপাশি অভিযান চালানোর জন্য তৈরি ছিল পুলিশের একটি বিশেষ দল। সময়মতো সংকেত পেয়ে তারা হাতেনাতে ধরে ফেলেন পল্লি চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিকে।
রাজধানীর দক্ষিণখানের চালাবন এলাকায় ‘দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা’ নামে একটি ক্লিনিকে চালানো ওই অভিযানে উদ্ধার করা হয় মডার্নার ভ্যাকসিনের দুটি অ্যাম্পুল ও ২০টি খালি বাক্স। একটি বাক্সে ১০টি করে অ্যাম্পুল রাখা হয়। সেই হিসাবে বাক্সগুলোয় ২০০ অ্যাম্পুল ছিল। সেগুলো দিয়ে তিন হাজার মানুষকে এক ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব।.. ..
চট্টগ্রামে দুটি টিকাকেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন স্বেচ্ছাসেবকেরা
১৯ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত করোনার টিকাকেন্দ্রে টাকার বিনিময়ে টিকা দেওয়া এবং বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার জেরে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম স্থগিত করেছে যুব রেড ক্রিসেন্ট নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতাল এবং সাফা মোতালেব সিটি করপোরেশন মাতৃসদন হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছেন না যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বিস্তারিত তুলে ধরেন যুব রেড ক্রিসেন্টের চট্টগ্রামের প্রধান ইফতেখার হোসেন। ইফতেখার হোসেন গতকাল বুধবার রাতে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘হাজার হাজার মানুষ ভোরে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন না পেয়ে বাড়ি ফেরেন। আর টাকার বিনিময়ে কিছু লাইনচ্যুত মানুষ অসাধু চক্রের মাধ্যমে মিনিটেই ভ্যাকসিন পাবেন, অনিয়মে তা হতে পারে না। এ কারণে সদরঘাটে অবস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালে বুধবার থেকে এবং মোহরার সাফা মোতালেব সিটি করপোরেশন মাতৃসদন হাসপাতালে বৃহস্পতিবার থেকে সাময়িকভাবে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে চট্টগ্রামের অন্য কেন্দ্রগুলোতে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
নিবন্ধন করেও অপেক্ষায় ১ কোটি ৭২ লাখ মানুষ
১৯ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করেন গত ৯ জুলাই। নিবন্ধনের সময় টিকাকেন্দ্র নির্ধারণ করেন কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল। এরপর ৪১ দিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু কবে টিকা পাবেন, সে বার্তা (এসএমএস) এখনো পাননি।
এই হাসপাতালে নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার জন। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শিহাব উদ্দিন বলেন, সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি নিবন্ধন হয়ে গেছে। হাসপাতালের ছয়টি বুথে দৈনিক প্রায় দেড় হাজার টিকা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অর্ধেক পাচ্ছেন প্রথম ডোজের টিকা, বাকিরা দ্বিতীয় ডোজ। এই হারে নিবন্ধিত সবাইকে টিকা দিতে হলে আট–নয় মাস লাগবে।
সচিবের অসুস্থ মায়ের সেবায় হাসপাতালে ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী
২৩ আগস্ট ২১, সমকাল
করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের করোনা ইউনিটে ভর্তি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদের মায়ের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন এক উপসচিবসহ ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের লিখিত নির্দেশনা দিয়ে তিন দিনের জন্য চার শিফটে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব সমন্বয় করছেন সচিবের একান্ত সচিব আজিজুল ইসলাম। নির্দেশনায় বলা হয়, সচিবের মায়ের সার্বিক অবস্থা সার্বক্ষণিক জানাতে হবে পিএসকে, চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ, টেস্ট করানোর ও তা দ্রুত সংগ্রহ করা এবং হোয়াটসঅ্যাপে সচিবের পিএসকে রিপোর্টের কপি পাঠাতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে হবে রোগীর কাছাকাছি, রোগীর এটেন্ডেনের কাছে জানান দিতে হবে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি।
পূর্ব জুরাইনের ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী
২৬ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
বেসরকারি একটি হাসপাতালে মাত্র চার দিন চিকিৎসা নেওয়ার পরই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রাজধানীর পূর্ব জুরাইনের বাসিন্দা হেলেনা পারভীন (৪২)। হেলেনার আগে তাঁর দুই সন্তান হাসানুজ্জামান (২৩) ও আফরিন আক্তারও (২১) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁরা সুস্থ হয়ে ফিরলেও তাঁদের মা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন ১৮ আগস্ট।
পূর্ব জুরাইনের কমিশনার মোড় এলাকায় আরএস টাওয়ারের সপ্তম তলায় থাকতেন হেলেনা পারভীন। স্বামী সৌদিপ্রবাসী। হেলেনার প্রতিবেশী কামরুন্নাহার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ভবনের অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনো তিনজন হাসপাতালে। সজল চোখে কামরুন্নাহার বললেন, হেলেনার আগে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়ে হেলেনা বলেছিলেন, ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি, তাতে কখন কে আক্রান্ত হয় বলা যায় না। সেই তিনিই মারা গেলেন।
হেলেনার মতো চলতি আগস্টে পূর্ব জুরাইনের অন্তত আটজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাঁরা হলেন ইসরাত জাহান (৭), তোহা (৯), মুস্তাফিজুর রহমান (১১), ফাতেমা (৪৫), হোসনে আরা (৪৫), আকরাম হোসেন (৬২) ও সাঈদা খানম (৭৫)।
এক মাসের বেশি সময় ধরে পূর্ব জুরাইনের বাগানবাড়ি এলাকায় প্রতিটি ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকমতো মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না। বিকেলে ছিটানো ওষুধে কেরোসিনের গন্ধ বের হয়। ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে তাঁরা বলেছেন, তাঁদের এলাকায় অন্তত এক হাজার জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।
সড়ক উঁচু করায় পূর্ব জুরাইনের বেশির ভাগ ভবনের নিচতলা রাস্তার উচ্চতা থেকে নিচে নেমে গেছে। অনেক ভবনের নিচতলা ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় সেখানে পানি জমে থাকছে। আবার এলাকায় প্রচুর পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে। ওই সব ভবনে পানি জমে থাকার কারণে এডিস মশা ব্যাপক হারে বংশবৃদ্ধি ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া এলাকাটি তুলনামূলক নিচু হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় মশকনিধন কার্যক্রমও পর্যাপ্ত নয়। এ কারণেই এ এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সঙ্গে সঙ্গে সরকার হটানোর প্রস্তুতি চলছে: কাদের
২৭ আগস্ট, ২০২১, দেশ রুপান্তর
করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সঙ্গে সঙ্গে সরকার হটানোর প্রস্তুতি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের শুক্রবার ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দেশে দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন ৪% মানুষ
২৮ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
সরকার দেশের মানুষের ৮০ শতাংশকে করোনার টিকা দিতে চায়। স্বাস্থ্য বিভাগ এ পর্যন্ত মাত্র ৪ শতাংশের কিছু বেশি মানুষকে পূর্ণ দুই ডোজ টিকা দিতে পেরেছে। বর্তমান ধারায় টিকাদান চলতে থাকলে বাকি ৭৬ শতাংশকে টিকা দিতে ১০ বছরের বেশি সময় লেগে যাবে।
২ মাস পর দেশে করোনায় মৃত্যু একশ’র নিচে
২৮ আগস্ট ২১, সমকাল
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘ দুই মাস পর দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা একশ’র নিচে নামলো। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ২৫ হাজার ৯২৬ জনের মৃত্যু হলো।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৩ হাজার ৪৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৯ জনে।
বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি, টিকা পাচ্ছেন কম
২৯ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
বয়স্ক ও অন্য রোগে ভুগছেন এমন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁদের জটিলতা বেশি হয়। করোনায় এমন বয়সীদের মৃত্যুহারও বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ এসব মানুষ করোনার টিকা কম পাচ্ছেন। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ৫৫ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এ পর্যন্ত দেওয়া টিকার ১৭ শতাংশ পেয়েছেন এই বয়সীরা।
আইসিটি বিভাগ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত নিবন্ধনকৃত ও টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যান তৈরি করেছে। তাতে দেখা যায়, প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে নিবন্ধনের পরিমাণও তুলনামূলকভাবে কম। তুলনামূলকভাবে ঝুঁকি কম এমন মানুষ নিবন্ধন করেছেন বেশি, তাঁরা তুলনামূলকভাবে টিকাও পেয়েছেন বেশি। দেখা গেছে, নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ শতাংশের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি।
বাংলাদেশ দ. এশিয়ায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হিসাবে দ্বিতীয়, টিকা প্রয়োগে সপ্তম
৩১ আগস্ট, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
মোট জনসংখ্যা অনুযায়ী করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার হারে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে বাংলাদেশ । বাংলাদেশের পরের দেশটি আফগানিস্তান।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৭৪ লাখ ১০ হাজার ৪৮০ জনকে করোনার দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার চার দশমিক ৫৫ শতাংশ।
অন্যদিকে আফগানিস্তানে এক দশমিক ১৩ শতাংশ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন।
১২ সেপ্টেম্বর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ কথা জানিয়েছেন বলে আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের।
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না।
নিবন্ধনের পর টিকার অপেক্ষায় দুই কোটি মানুষ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
নিবন্ধন করার পর দুই কোটি মানুষ টিকার এসএমএস বা খুদে বার্তা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে আছেন। দুই মাস পরও অনেকে টিকা পাওয়ার তারিখ জানতে পারছেন না। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও আলোচনা আছে।
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মকর্তারা দেশের সিভিল সার্জনদের সঙ্গে অনলাইন সভায় অপেক্ষমাণ মানুষের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সভায় একাধিক সিভিল সার্জন খুদে বার্তা পাঠানো নিয়ে ভুলত্রুটি ও অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। সভায় যুক্ত থাকা তিনটি জেলার সিভিল সার্জনদের সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে।
২০২০ এর মার্চে সাধারণ ছুটি দেশজুড়ে করোনা বিস্তারের প্রাথমিক কারণ: গবেষণা
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
গত বছরের মার্চ মাসে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছিল। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ২৩ মার্চ ছুটির ঘোষণা আসার পর বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢাকা ছাড়ে। দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তারের প্রাথমিক কারণ ছিল এটাই।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআর,বিসহ ৭টি দেশি-বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের যৌথ গবেষণায় এ কথা উঠে এসেছে। গবেষণাপত্রটি গত ৪ সেপ্টেম্বর নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের উদ্ভব, ভাইরাসটির দেশব্যাপী বিস্তারে লকডাউনের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে জনসাধারণের চলাচলের ভূমিকা নিয়ে এতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের অধিকার
সম্পাদক পরিষদ
গণমাধ্যমে মাহফুজ আনাম ও নঈম নিজামের পৃথক বক্তব্য
২৯ জুলাই ২১, সমকাল
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের পদত্যাগ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম গণমাধ্যমে বক্তব্য পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে, নিজের পদত্যাগের কারণ জানিয়ে আরেকটি বক্তব্য দিয়েছেন নঈম নিজামও। গতকাল বুধবার তারা পৃথকভাবে গণমাধ্যমে বক্তব্য পাঠান। নিচে তাদের বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
মাহফুজ আনাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নঈম নিজামের পদত্যাগের সংবাদে আমি বিস্মিত ও মর্মাহত। মঙ্গলবার রাতে তিনি নিউইয়র্ক থেকে টেলিফোনে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার পদত্যাগপত্র আমি এখনও পাইনি। সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরিষদের অবস্থান জানানো হবে। উল্লেখ্য, সম্পাদক পরিষদের যে কোনো সিদ্ধান্ত সদস্যদের মধ্যে আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নেওয়া হয়। কখনোই এর ব্যত্যয় ঘটেনি। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, নঈম নিজামের সঙ্গে আমার কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং পরিষদ পরিচালনার বিষয়ে তার সঙ্গে আমার কখনোই কোনো মতানৈক্য হয়নি।’
অন্যদিকে, নঈম নিজাম তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা পরস্পর ঐক্য ধরে রেখে একটি ইতিবাচক অবস্থান নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু কঠিন বাস্তবতা হলো, সরকারের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে বিবৃতি প্রদান ছাড়া সম্পাদক পরিষদ আর কোনো কিছু নিয়ে কাজ করছে না। সম্পাদকদের একটি প্রতিষ্ঠান শুধু সরকারবিরোধী ভাব নিয়ে চলতে পারে না। পরিষদ পেশার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু সভাপতির ব্যক্তিগত ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠান চলছে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের স্বার্থ রক্ষা সম্পাদক পরিষদের কাজ হতে পারে না। এসব তৎপরতা মিডিয়ার জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। কোনো অপরাধ প্রমাণের আগে কোনো মিডিয়া মালিকের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে বারবার বলার পরও তিনি নিজের অবস্থান থেকে সরেননি বিধায় সম্পাদক পরিষদ থেকে আমার সরে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প ছিল না।’
ঢাবি অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দিলো ছাত্রলীগ!
১৮ আগস্ট ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তার বিভাগীয় কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১৮ আগস্ট) সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মসূচি শেষে দুপুর দেড়টায় সংগঠনের নেতাকর্মীরা ওই কক্ষে তালা দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মেয়র সাদিককে গ্রেপ্তার দাবি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের
২০ আগস্ট ২১, সমকাল
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনায় সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার রাতে অ্যাসোসিয়েশনের এক জরুরি বৈঠক শেষে এই দাবির কথা জানান সংগঠনটির সভাপতি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।
পুলিশ-প্রশাসন এগিয়ে, পিছু হটছে রাজনীতি
২২ আগস্ট ২০২১, আজকের পত্রিকা
বরিশালে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলা থেকে ঘটনার শুরু চার দিন আগে। এরপর কার্যত মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছে পুলিশ-প্রশাসন ও দলীয় নেতা-কর্মীরা। প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষ থেকে পরদিনই বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করে বলা হয়েছিল ‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্তকে আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে।’ আর গতকাল শনিবার মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে বললেন, ‘আমি এখান থেকে চলে যাব, কোনো অসুবিধা নেই।’ অর্থাৎ মেয়রের গলায় নরম সুর।
মেয়রের সংবাদ সম্মেলন
নগরীর কালীবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনে গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। প্রশাসন ক্যাডারের গ্রেপ্তারের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার করলে আমার বাসা ঘেরাও করা লাগবে না। আমি তো পালিয়ে যাব না। আমাকে বললে থানায় চলে যাব।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আগস্ট মাসে আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না। আমরা কার বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা করব। যেটাই হবে তা আমার দল, নেত্রীর বিরুদ্ধে হবে। আমি এখান থেকে চলে যাব, কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু আমি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই।’
পদত্যাগ দাবি প্রশাসন ক্যাডারের
বুধবারের ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার জরুরি সভা করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। ওই দিন রাতে সংগঠনটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অবিলম্বে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। বলা হয়, বরিশালের ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায় সরকারি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে ইউএনও কীভাবে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের দ্বারা হেনস্তা হয়েছেন।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতীকী অনশনে হামলা
০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
রাজশাহীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে নগরের জিরো পয়েন্টে জড়ো হন। এ সময় তাঁদের প্রতীকী কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছেন। তবে মহানগর ছাত্রলীগ বলছে, তাঁদের কেউ এই হামলায় ছিলেন না।
সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট থেকে শিক্ষার্থীরা গণচিৎকার ও পদযাত্রা করতে চাইলে অনুমতি না থাকার কথা জানিয়ে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে সেখানেই শিক্ষার্থীরা সমাবেশ শেষে বেলা পৌনে একটার দিকে প্রতীকী অনশনে বসেন। পুলিশ তাঁদের ঘিরে ছিল। বেলা একটার দিকে সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে।
অনলাইনে গুজব ঠেকাতে এক লাখ অ্যাক্টিভিস্ট নামাচ্ছে আওয়ামী লীগ
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, মানবজমিন
নির্বাচনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও অপপ্রচার রোধে এক লাখ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট-এর সমন্বয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ করছে আওয়ামী লীগ। দলটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটি সারা দেশে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করছে। এরই অংশ হিসেবে আজ শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অন্তর্গত থানাসমূহের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদকদের নিয়ে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’র কাউন্সিল হলে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এ কর্মশালায় সার্বিক সহযোগিতা দেয় আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশ যত উন্নত হতে থাকবে, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, তত বেশি গুজব-অপপ্রচার ছড়ানোর চেষ্টা করবে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব-অপপ্রচার ছড়িয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- বাধাগ্রস্ত করার জন্য চেষ্টা করবে। যেহেতু তারা রাজপথে পেরে উঠতে পারবে না, তাই তাদের একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে গুজব ও অপপ্রচার। আগামী দিনে এসব গুজব-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের আরও সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সারা দেশে এরইমধ্যে ৬৯টি কর্মশালা সম্পন্ন করেছি, আজ ৭০তম কর্মশালা চলছে।
আমাদের লক্ষ্য, জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা। তাদের দিয়ে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত এক লক্ষ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তৈরি করা। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী যেন আগামী দিনে কোনো প্রকার গুজব-অপপ্রচারের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করবে এ অনলাইন এক্টিভিস্টরা।
ব্যক্তিগত তথ্যের নিয়ন্ত্রণ চায় সরকার
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
.. .. ‘পারসোনাল ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ নামের আইন করে ভার্চ্যুয়াল জগতের স্পর্শকাতর তথ্যসহ সব তথ্যই এখন তালুবন্দী করতে চাইছে সরকার। প্রস্তাবিত আইন নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক খসড়ায় তা-ই দেখা যাচ্ছে।
এতে বলা হয়েছে, সম্মতি নিয়ে যেকোনো তথ্য সরকার নিতে পারবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবে। পুরো বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবেন সরকারের নিয়োগ দেওয়া একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাঁর অধীনে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তথ্য সংগ্রহের কাজ করতে না পারলে এ দায়িত্ব তৃতীয় কোনো পক্ষকে দিয়ে করাতে পারবেন তাঁরা।
কোনো কারণে যদি ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয় বা কোনো অসংগতি দেখা দেয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আদালতে যেতে পারবেন না। তাঁকে অভিযোগ করতে হবে ডিরেক্টর জেনারেলের কাছেই। ডিরেক্টর জেনারেল যদি আবার দেখেন, সরল বিশ্বাসে তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব ফাঁস করে দিয়েছেন, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।.. ..
৯৭ ভাগ মামলাই টেকেনি
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
সাইবার অপরাধের ঘটনায় করা মামলার বেশির ভাগ অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারছে না। গত সাত বছরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৭৬৮টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ২২টি মামলায়। শতকরা হিসাবে সাজার হার ২ দশমিক ৮৬। বাকি ৯৭ দশমিক ১৪ শতাংশের বেশি মামলায় আসামিরা অব্যাহতি অথবা খালাস পেয়েছেন। ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের দৈনন্দিন কার্যতালিকাসহ মামলাসংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে এসব মামলার অনেক আসামিকে কারাগারে যেতে হয়েছে। অনেককে পুলিশি রিমান্ডেও থাকতে হয়েছে। আসামি ও আইনজীবীদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, এলাকায় টিকে থাকার জন্য তাঁদের বাদীর সঙ্গে রাজনৈতিক, সামাজিক বা আর্থিক প্রক্রিয়ায় আপস–মীমাংসায় পৌঁছাতে হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে গিয়ে আর্থিক, মানসিক ও শারীরিক ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু আইনে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না থাকায় শেষ পর্যন্ত কোনো প্রতিকারও পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
২০১৩ সাল থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলো দুই বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করেছে প্রথম আলো। এই সময়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলা এসেছে ২ হাজার ৬৬৯টি। অনিষ্পন্ন মামলাগুলোর বিচারকাজ এখন আটটি বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে চলছে। এসব মামলায় মোট আসামি প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
এক ছবি পোস্ট করেই ৭ বছর কারাদণ্ড, লাখ টাকা জরিমানা
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে এক আসামিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম আকতার হোসেন। তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার রানীনগর শেরকোল গ্রামে।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম জানান, ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর আসামি আকতার হোসেন তার ফেসবুক আইডি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ছবি অসম্মানজনক ও আপত্তিকরভাবে প্রচার এবং প্রকাশ করে। সাক্ষী আল মামুন তার ফেসবুক আইডিতে একইদিন রাত ৯টায় তা দেখতে পান। এ ঘটনায় একই এলাকার মোখলেছুর রহমান বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তথ্য প্রযুক্তি অপরাধ আইনে সিংড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭ ধারায় মামলাটির চার্জশিট দেন।
ভোটে ফের সহিংসতা কক্সবাজারে নিহত ২
ইউপি ও পৌরসভা নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, সংঘর্ষ গুলি ও বোমাবাজি
২১ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
দেশের ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও ৯টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল সোমবার। তবে অন্যান্যবারের মতো এবারও ভোটে সহিংসতা এড়ানো যায়নি। গতকাল নির্বাচনী সহিংসতায় কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় দু’জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে কেন্দ্র দখল, সংঘর্ষ, গোলাগুলি, ব্যালট পেপার ছিনতাই, এজেন্টদের মারধর, অনিয়মের অভিযোগে প্রার্থীদের ভোট বর্জন, ব্যালটে সিল মারার সময় নির্বাচন কর্মকর্তা আটক, ভোটকেন্দ্রে বোমাবাজি, ভোটারদের ভোট নৌকার এজেন্টদের দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অপ্রীতিকর ঘটনায় ৯টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। কিছু এলাকায় অবশ্য ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই। অনেক এলাকায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে, বাগেরহাটে ভোটের আগের রাতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক নারী নিহত হয়েছেন।
ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের বিক্ষোভ-মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, এনটিভি অনলাইন
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের বিক্ষোভ মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। গ্রাহকদের দাবি, লাঠিপেটায় ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে কয়েক জনকে আটক করা হয়। গ্রাহকেরা বিক্ষোভ মিছিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। মিছিলে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।
‘তারা আমাদের তৈরি করা ডিজিটাল সিস্টেম কেন ব্যবহার করে’
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন
বিদেশে বসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্টকারীদের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক বিদেশে অবস্থান করে দেশের সমালোচনা করে এবং ভাবমূর্তি নষ্ট করে। আমরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে উন্নীত করেছি, এখন তাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা।’
গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ বলে অভিহিত করছে। আমার প্রশ্ন হলো কীভাবে তারা এই শব্দগুলো উচ্চারণ করার সুযোগ পায় (সরকারের সমালোচনা)? আমরা বাংলাদেশকে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” হিসেবে গড়ে তুলেছি বলে তারা এটা বলার সুযোগ পেয়েছে।’
বিএনপি ও জামায়াতের কাছ থেকে সরকারের সমালোচনাকারীরা অর্থগ্রহণ করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি তারা নীতিবান হয় এবং তাদের কোনো আদর্শ থাকে, তাহলে তারা আমাদের তৈরি করা ডিজিটাল সিস্টেমগুলো কেন ব্যবহার করে?’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮৫ ভাগ মামলা করেছেন আ. লীগ নেতাকর্মীরা: সিজিএস
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে গত ২১ মাসে হওয়া ৬৬৮টি মামলা পর্যবেক্ষণ করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) জানিয়েছে, এই মামলাগুলোর বেশিরভাগই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দ্বারা না হয়ে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা তাদের নেতাদের পক্ষ হয়ে করেন।
যেসব রাজনৈতিক মামলা তারা খুঁজে পেয়েছে, তার ৮৫ ভাগ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা, যদিও মোট কতগুলো মামলাকে তারা রাজনৈতিক মামলা হিসেবে বিবেচনা করেছেন, সে তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর তিন বছর: একটি পর্যবেক্ষণমূলক ফলাফল’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মামলা ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ৭৬টি মামলা করেছে, যা মোট দায়েরকৃত মামলার ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে এই পর্যবেক্ষণের মূখ্য গবেষকের মন্তব্য, ‘আইনটি ভিন্নমতকে অপরাধে পরিণত করছে।’
সাংবাদিক কনক সারওয়ারের বোন মাদকসহ গ্রেপ্তার
০৫ অক্টোবর ২১, সমকাল
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বিতর্কিত সাংবাদিক কনক সারওয়ারের বোন নুসরাত শাহরিন রাকাকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার এবং রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব সদর দপ্তরে গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ গত সোমবার গভীর রাতে উত্তরা এলাকায় ওই অভিযান চালায়।
র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার নারীর কাছ থেকে রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্টসহ একটি মোবাইল, একটি পাসপোর্ট ও আইস নামের মাদকও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে উদ্ধার করা মাদকের পরিমাণ জানানো হয়নি।
তাসনিম-সামির সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
১৮ অক্টোবর, ২০২১, ঢাকা ট্রিবিউন বাংলা অনলাইন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় জুলকারনাইন সায়ের খান ওরফে সামি এবং সাংবাদিক তাসনিম খলিলসহ চার পলাতক আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
পলাতক অন্য দুই আসামি হলেন আশিক ইমরান ও স্বপন ওয়াহিদ।
প্রসিকিউশনের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস শামস জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। চারটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তকে (ওসি) সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত করার জন্য বলা হয়েছে আদেশে।
৮ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকার সেনানিবাস, সিলেটের বিশ্বনাথ, চাঁদপুর ও নোয়াখালীর চাটখিলের ওসিকে আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গুজব ছড়ানো এবং সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে র্যাব-৩ রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেছিল।
নিবন্ধের জন্য সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
২০ অক্টোবর ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
একটি নিবন্ধের জন্য অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতে।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীঅধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীতার ওই নিবন্ধ যে সঙ্কলন গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে, তার সম্পাদক নেছার আহমদকে এবং সাংবাদিক রাশেদ রউফকে আসামি করার আবেদন হয়েছে।
ওই লেখায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘অসম্মান করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন নাজিম উদ্দিন সুজন নামে এক ব্যক্তি।
সুজন নিজেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ‘অবমাননাকর পোস্ট’ করায় কলেজ শিক্ষক কারাগারে
২৪ অক্টোবর ২০২১, বিবিসি বাংলা
ফেসবুকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি ‘অবমাননাকর’ পোস্ট শেয়ার করার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের একজন কলেজ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের আখড়াবাজার এলাকা থেকে রুহুল আমিন নামের ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোসেনপুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
রুহুল আমিন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক।
মি. রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ”১৪ই অক্টোবর ফেসবুকের একটি আইডি থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে অবমাননাকর পোস্ট দেয়া হয়। ওই প্রভাষক পোস্টটি নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন। এরপর বিষয়টি ইউএনও মহোদয়ের নজরে এলে তিনি আমাদের জানান। তারপর আমরা তদন্ত করে গতকাল রাতে তাকে আখড়াবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি।”
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি
কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন
১ আগস্ট, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
সম্প্রতি একটি মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা না করেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ। একজন কলেজ শিক্ষার্থীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়। কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহে পুরুষের ডিএনএ পাওয়ার পরেও অভিযুক্ত ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ এপ্রিল কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহ গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করার
পর তার দেহে একজন পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গেছে।
তবে, তদন্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত ব্যক্তি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের ডিএনএ পরীক্ষা করার কোনো উদ্যোগ নেননি।
৬০ যাত্রী এখনও নিখোঁজ বিচারের অপেক্ষায় স্বজন
০৪ আগস্ট ২১, সমকাল
দীর্ঘ সাত বছর অপেক্ষায় থেকেও ৬০ যাত্রীর লাশ না পেয়ে প্রিয়জন হারানোর বেদনায় আজও শোকে পাথর তাদের পরিবার। আজ ৪ আগস্ট আলোচিত সেই পিনাক-৬ লঞ্চডুবির সাত বছর। বেপরোয়া নৌযান চলাচল, অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও অবহেলাজনিত কারণে যাত্রীদের মৃত্যু ও নিখোঁজের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি না হওয়ায় প্রিয়জন হারানোর বেদনায় এখনও গুমরে ওঠে শোকে পাথর পরিবারগুলো।
২০১৪ সালের ৪ আগস্ট ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে কাওড়াকান্দি থেকে রওনা হয়ে মাওয়ার অদূরে উত্তাল পদ্মায় ঢেউয়ের তোড়ে মুহূর্তেই ডুবে যায় পিনাক-৬ লঞ্চটি। ওই লঞ্চডুবিতে শতাধিক যাত্রী জীবিত উদ্ধার হলেও নিখোঁজ থাকে দেড় শতাধিক। সরকারি হিসাবে নিখোঁজ ১৩৬ জনের মধ্যে ৪৭ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার হয়। এখনও নিখোঁজ ৬০ জন। অন্যদিকে পাঁচ নারী, দুই পুরুষ, পাঁচ শিশুসহ ১২ যাত্রীর পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাদের মরদেহ শিবচরের পাচ্চর এলাকায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে প্রশাসন।
দেশের সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেও পদ্মায় ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ লঞ্চটির কোনো সন্ধান করা সম্ভব হয়নি। স্বজনরা জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া পিনাক-৬-এর ভেতরে অনেক লাশ রয়েছে। লঞ্চটি উদ্ধার হলে ভেতরে আটকে থাকা যাত্রীদের লাশ পাওয়া যেত।
আ.লীগের কর্মসূচিতে ওসির স্লোগানের ভিডিও ছড়িয়েছে ফেসবুকে
০৫ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনের স্লোগানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে তিনি স্লোগান দেন। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ২৭ সেকেন্ডের।
গুম হওয়া ৩৪ ব্যক্তির অবস্থান ও ভাগ্য জানতে চায় জাতিসংঘ
০৯ আগস্ট ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া ৩৪ জন ব্যক্তির অবস্থান ও ভাগ্য জানতে চায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সেই চিঠির সূত্র ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৪ জুন পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে একটি চিঠি পাঠায়। ৩৪ জনের একটি তালিকা সংযুক্ত করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের অবস্থান ও ভাগ্য জানতে চাওয়াসহ চারটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করা হয়েছে এতে। চিঠি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর পাঠানোর পর তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছেন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
দিনাজপুরে মা-ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, তিন সিআইডি কর্মকর্তাসহ ৫ জন আটকের পর কারাগারে
২৫ অগাস্ট ২০২১, বিবিসি বাংলা
রংপুর থেকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় গিয়ে এক বাড়ি থেকে দুজনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) তিনজন সদস্যকে আটকের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ওই তিনজনসহ মোট পাঁচজনকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছিলো। মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে করা মামলায় তাদের আজ বুধবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়।
সিআইডির তিন সদস্য হলেন একজন সহকারী পুলিশ সুপার, একজন সাব ইন্সপেক্টর ও একজন কনস্টেবল। তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও তাদের সাথে আটক করা হয়েছে।
১৪ বছরে গুম হয়েছেন ৬১৪ জন
৩০ আগস্ট ২০২১, ঢাকা পোস্ট
.. … সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অনেক ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে গুমের হাত থেকে সুরাহা পাওয়ার অধিকারটি আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয় এবং কাউকে গুম করে দেওয়া মানবতারবিরোধী অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃতি পায়।
এদিকে, আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সোমবার (৩০ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দেশে গুম বন্ধ ও এর প্রতিটি অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে।.. …
আসক বলছে, ২০০৭ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোট ৬১৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৯৪ জনকে। ফেরত এসেছেন ৫৭ জন। অন্যদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়নি।
রিমান্ড প্রশ্নে হাইকোর্টে দুই বিচারকের ব্যাখ্যা তলব
০৩ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
চিত্রনায়িকা পরীমণির দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে ঢাকার আদালতের দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছেন হাইকোর্ট। দুই বিচারক হলেন- ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ ও আতিকুল ইসলাম। পাশাপাশি মামলার নথিপত্রসহ একই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফাকে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এতে আরও বলা হয়, ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদ ও আতিকুল ইসলাম কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমণিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেবে এসএসএফ, সংসদে বিল
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দৈহিক নিরাপত্তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে নতুন আইনের একটি খসড়া সংসদে উঠেছে।
সংসদ কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) বিল-২০২১ সংসদে তোলেন।
পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
১৯৮৬ সালের একটি অধ্যাদেশ দিয়ে বর্তমানে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সামরিক আমলে প্রণীত ওই আইন বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছে।
বিলে জাতির পিতার পরিবারে সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা এবং তাদের সন্তানা এবং ক্ষেত্রমত সন্তানদের স্বামী বা স্ত্রী এবং তাদের সন্তান।
মুনিয়া হত্যা মামলা: এজাহারে যা আছে
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, বাংলা ট্রিবউন
রাজধানীর গুলশানে একটি ফ্ল্যাটে কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, তার স্ত্রী আফরোজা সোবহান, ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।
আহমেদ আকবর সোবহানসহ এবার আসামি ৮ জন
মামলায় আসামি করা হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর, আনভীরের মা আফরোজা, আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা, আনভীরের বাবা আহমেদ আকবর সোবহান, শারমিন, সাফিয়া রহমান মিম, মডেল পিয়াসা ও ইব্রাহীম আহমেদ রিপনকে। পিয়াসা বর্তমানে পুলিশের করা অপর এক মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
মামলায় যেসব অভিযোগ করা হয়েছে:
অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন মুনিয়া
বড় বোন নুসরাত মামলায় অভিযোগ করেছেন, মুনিয়ার মৃত্যুর পর যে ময়না তদন্ত করা হয়েছে; সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ভিকটিম ২/৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।’
মামলার আর্জিতে আরও বলা হয়, ‘মুনিয়া প্রতিদিন ডায়েরি লিখতেন। বাসায় তার লেখা চারটি ডায়েরি পাওয়া গেছে। যাতে আসামি আনভীরের সঙ্গে মেলামেশা ও শারীরিক সম্পর্কের কথা তারিখ দিয়ে লেখা রয়েছে। একটি ডায়েরির কাভারে লেখা ছিল ….. ‘Anvir I love you’.
এজাহারে দাবি করা হয়, ‘‘ভিকটিম ২/৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ভিকটিম ১ নম্বর আসামিকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। এতে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি অপর আসামিদের মধ্যে প্রকাশ পেলে তারা পারিবারিক সুনাম-সুখ্যাতি রক্ষায় ভিকটিমকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে ১ নম্বর আসামি ভিকটিমকে বলে, ‘তুমি কুমিল্লা চলে যাও। মা তোমাকে মেরে ফেলবে।’ এসময় ভিকটিম মুনিয়া ‘লাইভে’ এসে সব ঘটনা ফাঁস করে দেবে বলে ১ নম্বর আসামিকে হুমকি দেয়। পাল্টা জবাবে আসামি ভিকটিমকে বলে, ‘এত সময় আর তুই পাবি না’।’’
ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে মুনিয়াকে
অভিযোগের ১৪তম অংশে বলা হয়, ‘‘অত্র মামলার আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ঘটনার তারিখ ভিকটিমকে বাসা থেকে পালানোর সুযোগ না দিয়ে বাসায় আটকে রেখে কিলিং মিশনের মাধ্যমে ভিকটিমকে ধর্ষণোত্তর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে সুকৌশলে ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য ভিকটিমের লাশ ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।’’
১৬তম অংশে লেখা ‘তদন্ত রিপোর্টে ভিকটিমের সঙ্গে মৃত্যুর পূর্বে Intercourse এর প্রমাণ মিলেছে, অর্থাৎ ভিকটিম মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষিত।’
পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ
১৭তম অংশে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে বলা হয়, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমের হাতের লেখা ডায়েরি, মোবাইলসহ অন্যান্য মালামাল জব্দ করলেও রুমে পাওয়া রক্তমাখা জামা জব্দ করেনি। পরবর্তী ১৮তম অংশে বলা হয়, বাদী থানায় মামলা করতে গেলে কর্তৃপক্ষ বাদীর অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) (২)/৩০ ধারা এবং ৩০২/৩৪ ধারা উপাদান থাকা সত্ত্বেও উক্ত ধারায় মামলা রেকর্ড করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে।.. …
বিমানবন্দরে নামার পরই নিখোঁজ হয়েছিলেন রিজওয়ান, কেউই কিছু জানে না
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
আবু জাফর নিশ্চিত তার ছেলে রিজওয়ান হাসান রাকিন গত ৪ আগস্ট সকাল ৮ টা ৪০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছেন। এরপর তার আর কোনো খোঁজ নেই। তিনি কোথায় আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ কিছু বলতেও পারছেন না।
রিজওয়ান মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশের পর পড়তে যান সেখানে। তিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে সৌদি আরবের রিয়াদের ছিলেন লম্বা সময়। … …
রিজওয়ানের বাবা আবু জাফর সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, এমিরেটসের একটা ফ্লাইটে রিজওয়ান ও তাঁর স্ত্রীর বড় ভাই মাহফুজুর রহমান ওই দিন সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ছেলেকে আনতে গিয়েছিলেন ছেলের নানা সেলিম সারোয়ার। প্লেন থেকে নেমে মাহফুজ ফোনে তাঁকে পৌঁছানোর খবর জানান। এরপর সেলিম সারোয়ার আর তাঁদের খুঁজে পাননি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় মাহফুজকে তাদের যাত্রাবাড়ীতে নামিয়ে দেয় অজ্ঞাতনামা অপহরণকারীরা।
মাহফুজ তাঁদের জানান, অভিবাসন ডেস্ক পার হওয়ার পর তাঁদের দুজনকেই চোখ বেঁধে গাড়িতে তোলা হয়। তারপর অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে জেরা করা হয় তাঁদের। রিজওয়ানের রাজনৈতিক পরিচয় এবং কোনো অপরাধে জড়িত কি না তা জানতে চাওয়া হয়। অবশ্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় রিজওয়ান কোথায় ছিলেন তা মাহফুজ জানতে পারেননি।… …
বারবার পুলিশের মামলায় ত্যক্ত-বিরক্ত শওকত নিজের বাইকেই আগুন ধরিয়ে দিলেন
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
ছোট দোকান চালিয়ে ভালোই চলছিল শওকত আলীর সংসার। করোনার কারণে ছোট ব্যবসাটিও বন্ধ হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে কয়েক মাস ধরে মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ার করে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড্ডা লিংক রোডে যাত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন শওকত আলী। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট এসে তাঁর কাগজপত্র নিয়ে যান। মামলা না দিতে অনুরোধ করে পুলিশের কাছে গাড়ির কাগজপত্র ফেরত চান তিনি। কাগজপত্র ফেরত না পেয়ে হতাশ হয়ে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
মধ্যরাত থেকে ধর্মঘটে রাইড শেয়ারিং চালকরা
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের চালকদের প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ-বেজড ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশ ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি ও মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে।
৬ দফা দাবিতে এ কর্মসূচিতে আজ সোমবার মধ্যরাত থেকে তারা তাদের সেবা বন্ধ রাখবেন।
এ প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়কারী বেলাল আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।.. ..
অ্যাপভিত্তিক সেবা প্রদানকারীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, সব রাইড সার্ভিসের জন্য ১০ শতাংশ কমিশন নির্ধারণ, পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা এবং তাদের জন্য নির্ধারিত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করাসহ ৬ দাবিতে তারা এ কর্মসূচির আহ্বান করেছেন বলে জানান তিনি।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
খুলনায় দুর্বৃত্তের হামলা, ৪ মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর
০৭ আগস্ট ২১, সমকাল
খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালী গ্রামে চারটি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কিছু দোকান ও কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে শতাধিক দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালায়। এ সময় চারটি মন্দির, ছয়টি দোকান ও একটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুরো গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে; পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হামলাকারীরা ‘মুক্ত’, সাতবারেও জামিন পাননি ঝুমন দাস
৯ আগস্ট, ২০২১, ডিডব্লিও বাংলা
হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে আটক ঝুমন দাস এখনো কারাগারে। সাতবারের চেষ্টায়ও জামিন পাননি ঝুমন৷ অথচ সংখ্যালঘুদের পল্লীতে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫২ জনের সবাই এখন জামিনে মুক্ত।
এই বছরের ১৭ মার্চ সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হাবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁওয়ে সংখ্যালঘুদের গ্রামে হামলা চালানো হয়। ওই গ্রামের ঝুমন দাস নামে একজন হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ওই হামলা চালানো হয়। হামলা এড়াতে একদিন আগে ১৬ মার্চই ঝুমন দাসকে পুলিশ হেফাজতে দেন ওই গ্রামের সংখ্যালাঘুরা। তখন থানা পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপরও পরের দিন সকালে পুরো গ্রামে পরিকল্পিত হামলা ও লুটপাট চালানো হয়। হামলার ঘটনায় শাল্লা থানায় অজ্ঞাত পরিচয়সহ মোট দেড় হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাদের মধ্যে ৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও সবাই এরইমধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
ঘটনার পাঁচ দিন পর পুলিশ হেফাজতে থাকা ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে জিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এখনো কোনো তদন্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট দেয়া হয়নি। ঝুমন দাস জামিনও পাননি । তিনি পাঁচ মাস ধরে কারাগারে আছেন বলে জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবাংশু শেখর দাস।
মন্দিরে হামলায় অভিযুক্ত সেই দু’জনের মনোনয়ন বাতিল
১৪ অক্টোবর ২১, সমকাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দিরে হামলায় অভিযুক্ত দুই আসামির ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদর ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়ার একদিন পর বুধবার রাতে তাদের মনোনয়ন বাতিল করে ক্ষমতাসীন দলটি।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বাতিল করা এ দু’জন হলেন দেওয়ান আতিকুর রহমান ও আবুল হাসেম। আতিকুর রহমান উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা। তিনি ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত। আবুল হাসেমও সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক। তিনি প্রয়াত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের ভাগনে। হামলার ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করেছিল জেলা আওয়ামী লীগ।
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া নিয়ে শহরে উত্তেজনা, মণ্ডপে হামলা
১৩ অক্টোবর ২০২১, বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরের একটি পূজামণ্ডপ থেকে কোরআন পাওয়ার পর বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার পূজা উদযাপন কমিটির সম্পাদক নির্মল পাল।
তিনি বলেন শহরের নানুয়ারদীঘি এলাকার একটি পূজামণ্ডপের প্রতিমায় কোরআন রাখার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ গিয়ে তা সরিয়ে নেয়। কিন্তু এর পর পরই একদল ব্যক্তি বেশ কিছু পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা চালায়।
“পূজা বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে কোরআন রেখে এ ঘটনা ঘটিয়ে তারাই এখন শহরজুড়ে পূজাবিরোধী বিক্ষোভ করছে। কয়েকটি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু পুলিশের বাধায় ভেতরে ঢুকতে না পারলেও গেইট বা সামনের স্থাপনা ভাংচুর করেছে,” বলছিলেন তিনি।
জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন তারা এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
“আমরা টহল দিচ্ছি। আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। কয়টি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে এ মূহুর্তে বলতে পারছি না। পরিস্থিতি ঠিক হলে আমরা বিস্তারিত জানাবো,” বেলা চারটার দিকে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বিবিসিকে বলেছেন বেলা এগারটার দিকে হঠাৎ কোরআন অবমাননা হয়েছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে শহর জুড়ে।
তিনি বলেন দশটার পর নানুয়ারদীঘির মণ্ডপে কোরআন নজরে পড়লে দ্রুত পুলিশকে জানানো হয় এবং পুলিশ তখনি এসে কোরআনটি সরিয়ে নেয়।
“কিন্তু খবরটি খুব দ্রুত ছড়ানো হয় এবং কয়েকটি মাদ্রাসার লোকজন ছাড়াও স্থানীয় অনেকে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মণ্ডপ গুলোতে হামলা করা শুরু হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়”।
তিনি বলেন কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেলেও সেগুলো কোথায় হয়েছে তা বোঝা যায়নি।
এদিকে ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে ব্যাপক প্রচার শুরু হয় এবং অনেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনেকে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন।
প্রসঙ্গত, বাঙ্গালী হিন্দু সম্প্রদায় এখন তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করছে।
কুমিল্লার পর চাঁদপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, প্রাণহানি
১৪ অক্টোবর ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
কুমিল্লার ঘটনার পর চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে লক্ষ্মীনারায়ণ জিওর আখড়া মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও হয়েছে, জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা, মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি।
সংঘর্ষের পর হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তিনজনের লাশ আসার কথা জানিয়েছেন কর্তব্যরত এক চিকিৎসক। তবে সংঘর্ষে কারও নিহত হওয়ার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।
বুধবার সকালে কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
দুপুর নাগাদ কুমিল্লায় পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলেও পাশের জেলা চাঁদপুরে সন্ধ্যার পর মন্দিরে হামলা হয় বলে হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুহিদাস বণিক জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ৮টার পর উপজেলার মনিনাগ এলাকা থেকে একটি মিছিল এসে মন্দিরে (লক্ষ্মীনারায়ণ জিওর আখড়া) হামলা চালায়।”
বাজারের ওই মিন্দর ছাড়াও আরও কয়েকটি স্থানে মন্দিরে হামলা হয়েছে বলেও জানান রুহিদাস।
হামলাকারীদের পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় পুলিশ গুলি ছোড়ে বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ বলেন, “আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এর মধ্যেই রাত ৮টার দিকে হতাহত কয়েকজনকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুলতান মাহমুদ বলেন, “তাদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। মৃতদেহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।”
ওই তিনজন হলেন- হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল এলাকার আল আমিন রাজু (১৮), রান্ধুনিমুড়ার ইয়াসিন হোসেন হৃদয় (১৪) ও হাজীগঞ্জ বিজনেস পার্কের শ্রমিক বাবলু (২৮)।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসএম শোয়েব আহমেদ চিশতী বলেন, “৮-১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় এসেছে। তাদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড (জেলা হাসপাতালে) করা হয়েছে।”
তিনজনের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগে মারা গেছে নাকি পরে, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি চিকিৎসকরা।
সংঘর্ষে নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও ১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাজীগঞ্জের ওসি হারুন।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, “মৃত্যুর কথা শুনেছি। তবে কয়জন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও।”
কতটি মন্দির আক্রান্ত হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তা-ও এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”
পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
সহিংস পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
একই সঙ্গে বুধবার রাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানিয়েছেন।
হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ রাতে বলেন, “হাজীগঞ্জ বাজারের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পূজার নিরাপত্তায় ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন
১৪ অক্টোবর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
হিন্দু ধর্মাম্বলীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজার নিরাপত্তা রক্ষায় ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশব্যাপী বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।
বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দুর্গা পূজার নিরাপত্তা রক্ষায় দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।’
‘এখন পর্যন্ত কুমিল্লা, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জসহ ২২ জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
নোয়াখালীতে পূজামণ্ডপে দফায় দফায় হামলা-ভাংচুর, ১৪৪ ধারা
১৫ অক্টোবর ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
বিজয়া দশমীর দিনে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে কয়েকটি পূজামণ্ডপ এবং হিন্দুদের বাড়িঘরে দফায় দফায় হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলা-ভাংচুরের সময় এক ব্যক্তি ‘হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে’ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৮ জন।
ফাঁকা গুলি ও কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছুড়ে এবং লাঠিপেটা করে পুলিশ পরে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে বলে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ ইমরান জানান।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর মণ্ডপগুলোতে যখন বিসর্জনের প্রস্তুতি চলছে, তখনই হামলার শুরু হয়। পরে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন পূজামণ্ডপে দফায় দফায় হামলা-ভাংচুর চলে।
শাহ ইমরান বলেন, “এ সময় চৌমুহনী কলেজ রোডের বিজয়া পূজামণ্ডপে অগ্নিসংযোগ ও হিন্দুদের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। যতন সাহা নামে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি সে সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।”
যতন সাহা কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মনোরঞ্জন সাহার ছেলে। তিনি পূজা উপলক্ষে চৌমুহনীতে এক আত্মীয়র বাড়িতে এসেছিলেন।
বেগমগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অসীম কুমার দাস জানান, পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম, বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান শিকদার, পরিদর্শক রুহুল আমিনসহ আহত ১৮ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সদর হাসপাতালের আরএমও সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে তাদের হাসপতালে আনা হয়েছে।
যতন সাহাকে তাদের হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয় বলে জানান চিকিৎসক আজিম। তবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
জেলার ডিসি খোরশেদ আলম বলেন, “পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে চৌমুহনীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কাল সকাল-সন্ধ্যা চৌমুহনী বাজারে সেখানে১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।”
তিন দিনে ৭০ পূজামণ্ডপে হামলা: ঐক্য পরিষদ
১৬ অক্টোবর ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
দুর্গাপূজায় দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন দিনে ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত লিখিত বক্তব্যে এসব তথ্য তুলে ধরে জানান, এসবের বাইরে ৩০টি বাড়ি এবং ৫০টি দোকানেও ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।
তিনি বলেন, “এর মধ্যে ১৩ অক্টোবর হাজীগঞ্জের লক্ষ্মীনারায়ণজি আখরায় আক্রমণ চলাকালে মানিক সাহা নামে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন।
“১৫ অক্টোবর নোয়াখালীতে বিজয় পূজামণ্ডপের সদস্য যতন সাহাকে সাম্প্রদায়িক হামলাকারীরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। ইসকন মন্দিরের প্রভু মলয় কৃষ্ণ দাসের মাথায় আঘাত করে তাকে নির্মমভাবে খুন করেছে।”
এছাড়া তিনি শনিবার সকালে ইসকন মন্দিরের সামনের পুকুরে আরও এক ভক্তের লাশ ভেসে উঠার কথাও জানান, যার নাম পার্থ দাস বলে ইসকন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
তবে যতন সাহার ‘হৃদরোগে’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে নোয়াখালী পুলিশের ভাষ্য। পার্থর মৃত্যু হামলায় হয়েছে কিনা তা তারা নিশ্চিত করতে পারেনি। আর মলয় কৃষ্ণর মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশের কাছ থেকে কোনো তথ্যই মেলেনি।
হাজীগঞ্জে মানিক সাহার নিহত হওয়ার বিষয়েও চাঁদপুর পুলিশের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এসব হামলার ঘটনায় আরও কমপক্ষে ৭০ জন আহত হয়েছেন বলে রানা দাশগুপ্ত জানান।
সাম্প্রদায়িক হামলার এসব ঘটনার মধ্যে এক হিন্দু কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা গেছেন বলে শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
কেউ কেউ বলছেন ঘটনা চাঁদপুরের, কেউ নোয়াখালীর কথা বলছেন। তবে এই খবরের সত্যতা মেলেনি।
এবিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, “ধর্ষণের কোনো খবর আমাদের জানা নেই।”
কুমিল্লায় ১৭ ও চাঁদপুরে ১৬ মণ্ডপে হামলা
রানা দাশগুপ্ত জানান, ১৩ অক্টোবর অষ্টমীর দিন কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীর উত্তর পাড় দর্পন সংঘের অস্থায়ী মণ্ডপে এবং চানমনি কালী বাড়ির বিগ্রহ ও মণ্ডপে অগ্নিসংযোগসহ ১৭টি মণ্ডপে তোরণ ভেঙে দেওয়া হয়।
১৩ অক্টোবর চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে যেসব মন্দিরে হামলা হয় সেগুলো হলো- ত্রিনয়নী সংঘের পূজামণ্ডপ, লহ্মীনারায়ণজী আখড়া, রামকৃষ্ণ মিশন, জমিদারবাড়ি দুর্গা মন্দির, শ্মশান কালী মন্দির, নবদুর্গা সংঘ পূজামণ্ডপ, দশভূজা সংঘ পূজা মণ্ডপ, সোনাইমুড়ি গ্রামের পূজামণ্ডপ, হাজীগঞ্জ শহর পূজামণ্ডপ, রামপুর লোকনাথ মন্দির, ভদ্রকালী মন্দির, ত্রিশুল সংঘ পূজামণ্ডপ, রামপুর বলক্ষার বাজার পূজামণ্ডপ, হাজীগঞ্জ রাধাগোবিন্দ মন্দির, বাজারগাঁও মুকুন্দ সাহার বাড়ির দুর্গা মন্দির, হাটিলা গঙ্গানগর দুর্গা মন্দির।
কুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টি শ্রী শ্রী চান্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরে হামলায় মূল ফটক তছতছ হয়ে যায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভিকুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টি শ্রী শ্রী চান্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরে হামলায় মূল ফটক তছতছ হয়ে যায়। ছবি: মাহমুদ জামান অভিএছড়া হাতিয়ায় ৭টি মন্দিরে ভাঙচুর হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সেগুলো হলো- শংকর মার্কেটের আশুতোষ ডাক্তার বাড়ির পূজামণ্ডপ, জগন্নাথ মহাপ্রভুর সেবাশ্রম পূজা মন্দির, রাধাগোবিন্দ সেবাশ্রম পূজা মন্দির, শ্রী লোকনাথ মন্দির পূজামণ্ডপ, তপোবন আশ্রম পূজা মন্দির, গুরুচাঁদ সত্যবামা পূজা মন্দির, হাতিয়া পৌরসভা কালী মন্দির এবং তার কাছাকাছি ৪-৫টি ঘরও ভাঙচুর করা হয়।
অষ্টমীর দিনে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি সীতারাম ঠাকুর সেবাশ্রম, গাজীপুরের কাশিমপুর সুবল দাশের মন্দির ও কাশিমপুর বাজার কালী মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
একই দিনে কুড়িগ্রামের উলিপুর, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, হবিগঞ্জের বাহুবল, সিলেটের জকিগঞ্জের কালিগঞ্জ বাজার ও ভোলার নবীপুরে বেশ কয়েকটি মন্দির, পূজামণ্ডপে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
হামলার সময় ঘরবাড়ি-দোকান লুট
অষ্টমীর দিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল ও নাপোড়া গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়।
শেখেরখীলের মোহাম্মদ সাবের আহমেদ, গণ্ডামারার মোহাম্মদ রিদোয়ান ও নাপোড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম এসব হামলায় নেতৃত্ব দেন বলে রানা দাশগুপ্ত অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “সেদিন শেখেরখীল সার্বজনীন মন্দির ধ্বংস করা হয়। হরি মন্দিরের সামনের সড়কে হিন্দুদের ২০টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। শেখেরখীল সার্বজনীন মহাশ্মশানের সীমানা প্রাচীর ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। নাপোড়ায় সার্বজনীন কালীবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
নাপোড়া বাজার থেকে কালীমন্দির পর্যন্ত সড়কে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৩০টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় বলেও লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়।
হামলায় শেখেরখীলে সুকুমার দাস, সমীর দেব, দুলাল দেব, জুয়েল শীল ও লিটন দেব এবং নাপোড়ায় জহর লাল দেব, রতন শিকদার, আশুতোষ দেব, অনুপম দেব, জগদীশ পাল ও বোটন দেব আহত হন বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
বাঁশখালীর পশ্চিম চাম্বল বাংলাবাজার করুণাময়ী কালীবাড়ির সার্বজনীন পূজা কমিটির দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করে মন্দিরের তৈজসপত্র লুট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এসময় প্রদীপ দাস, রঞ্জিত দাস, সবিতা বালা আহত হন।
এছাড়া শীলকূপে দাস পাড়া সার্বজনীন দুর্গা মণ্ডপ, কৈবল্য যুব সংঘ পূজামণ্ডপ ও শীলপাড়া পূজামণ্ডপে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় বলে তথ্য দেওয়া হয়।
১৩ অক্টোবর রাতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শীলখালীর দুটি পূজামণ্ডপে প্রতিমা এবং স্থানীয় হরিমন্দিরে লুটপাট ও ভাঙচুরের পাশাপাশি ১৬টি বসতঘরও লুট করা হয়।
এছাড়া মগনামা ইউনিয়নের ১২টি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে একটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। স্থানীয় সরস্বতী মন্দিরে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। পেকুয়া সদর, বারবাকিয়া ইউনিয়ন এবং চকরিয়ায় ৫টি মণ্ডপ ও স্থানীয় লোকনাথ মন্দিরে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
কর্ণফুলীতে দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে হামলা
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৪ অক্টোবর বান্দরবানের লামা উপজেলার লামাবাজারে কেন্দ্রীয় হরিমন্দিরে দুর্গাপূজার মণ্ডপে হামলা চালিয়ে মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে।
এই হামলায় ৫০ জন আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর ১০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ৮ জন ডুলহাজারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান রানা দাশগুপ্ত।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী থানার জুলধা জেলেপাড়া পূজামণ্ডপে স্থানীয় জয়বাংলা ক্লাব থেকে এসে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া স্থানীয় দুই ভাই জয়নাল ও মনিরের নেতৃত্বে এই হামলা হয়।
“স্থানীয় ওসি দুলাল মাহমুদ হামলা হতে পারে এমন খবর আগে থেকে জানা স্বত্ত্বেও হামলা প্রতিরোধে কোনো রূপ ব্যবস্থা নেয়নি।”
৯ বছরে হিন্দুদের উপর ‘৩৬৭৯ হামলা’
১৮ অক্টোর, ২০২১, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা ভাংচুরের মধ্যে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, গত নয় বছরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ৩ হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে।
বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থাটি প্রতিবছরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি প্রতিবেদন দেয়। ২০১৩ সাল থেকে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর হামলার ঘটনাগুলোও তারা প্রতিবেদনে আলাদাভাবে দিয়ে আসছে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে আসক নয় বছরে হিন্দুদের উপর সাড়ে ৩ হাজারের বেশি হামলার তথ্য দিলেও প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি বলে দাবি করেন বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।
হামলায় তছনছ কুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টি শ্রী শ্রী চান্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরের মূল ফটক। ছবি: মাহমুদ জামান অভিহামলায় তছনছ কুমিল্লার কাপড়িয়াপট্টি শ্রী শ্রী চান্দমনি রক্ষাকালী মন্দিরের মূল ফটক। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার একটি মণ্ডপে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকটি মণ্ডপ ও স্থাপনা ভাংচুর হয়।
তার জের ধরে তিন দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হিসাব দেয়।
আসকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট বছর নয় মাসে হিন্দুদের উপর ৩ হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে।
এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৯টি বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। এই সময়ে হিন্দুদের ৪৪২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমা, পূজামণ্ডপ, মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৭৮টি।
এসব হামলায় আহত হয়েছে ৮৬২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। নিহত হয়েছে ১১ জন।
এর বাইরেও ২০১৪ সালে দুজন হিন্দু নারী ধর্ষণের শিকার হন। শ্লীলতাহানি করা হয় আরও চারজনের।
এছাড়া ২০১৬, ২০১৭ ও ২০২০ সালে ১০টি হিন্দু পরিবারকে জমি ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দখলের অভিযোগ ওঠে।
আসকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত নয় বছরে হিন্দুদের উপর সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে ২০১৪ সালে।
ওই বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল। এর পরবর্তী সহিংসতার শিকার হন হিন্দুরা। ৭৬১টি হিন্দু বাড়ি-ঘর, ১৯৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ২৪৭টি মন্দির-মণ্ডপে হামলা হয় ওই বছর। তখন নিহত হন একজন।
সবচেয়ে কম হামলা হয়েছে ২০২০ সালে। মহামারীর মধ্যে গত বছর ১১টি বাড়ি ও ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার তথ্য রয়েছে আসকের প্রতিবেদনে। তবে মন্দিরে হামলা হয়েছে ৬৭টি।
পীরগঞ্জে হামলায় পুড়ল ২০ বাড়িঘর
১৮ অক্টোবর, ২০২১, নিউজবাংলা টুয়েন্টিফোরডটকম
ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের বাটের হাট নামক এলাকায় রোববার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা ১৫ থেকে ২০টি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (ডি) সার্কেল কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর কমেন্ট দিয়েছেন- এমন অভিযোগের পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আমরা ওই যুবকের বাড়িটি প্রটেক্ট করতে পারলেও বেশ কিছু দূরে ১৫-২০টি বাড়িঘরে আগুন দেয় উত্তেজিতরা।
দেশের যেখানে যেখানে হামলা হয়েছে
২১ অক্টোবর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে গত ১৩ অক্টোবর পবিত্র কোরআন ‘অবমাননা’র অভিযোগে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর সহিংস হামলার ঘটনা ঘটেছে।
১৩ অক্টোবর কুড়িগ্রাম, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজারে হামলা হয়। ১৩, ১৪ ও ১৫ অক্টোবর হামলা হয় নোয়াখালীতে। এ ছাড়া, ১৪ অক্টোবর বান্দরবান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে, ১৫ অক্টোবর সিলেটে, ১৬ অক্টোবর ফেনী এবং ১৭ অক্টোবর রংপুরের পীরগঞ্জের জেলে পল্লীতে হামলা-অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার বগুড়া সদর উপজেলার একটি মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে প্রতিমা।
বিদ্যুৎ-জ্বালানী-খনিজসম্পদ
জামালপুরে দেশের সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে
আগস্ট ১০, ২০২১, বণিক বার্তা
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে জামালপুরের মাদারগঞ্জে দেশের সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনা করছে সরকার। ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন শেখ হাসিনা সোলার পার্কটি নির্মাণ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)। ২০২৩ সালের মধ্যে এ সোলার পার্ক তৈরি করবে সংস্থাটি। এরই মধ্যে প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আরপিসিএল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৩২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ করেছে আরপিসিএল। ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি-৩) আওতায় প্রকল্পে সিংহভাগ অর্থায়ন করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত।
৭৮ কোটি খরচ করে ১২৭৬ কোটি টাকার গ্যাস
১০ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
রাশিয়ার কোম্পানি গাজপ্রমকে দিয়ে দেশে একটি গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন করতে ১৮০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। আর একটি অনুসন্ধান কূপে মাত্র ৭৫ কোটি টাকা খরচ করে সিলেটের জকিগঞ্জে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। এখান থেকে যে পরিমাণ গ্যাস উত্তোলন করা যাবে, তার বর্তমান বাজারমূল্য ১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।
বাপেক্সের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ২০১৬-১৭ সালে জকিগঞ্জ এলাকায় ১০৩ লাইন কিলোমিটার দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ চালায় বাপেক্স। ওই প্রকল্পে বাপেক্সের খরচ হয় ৩ কোটি টাকা। এতে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় অনুসন্ধান কূপ খননের প্রস্তাব তৈরি করে তারা। এতে ৮৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা খরচ হওয়ার কথা থাকলেও বাপেক্স খরচ করেছে ৭৫ কোটি টাকা। সব মিলে জকিগঞ্জে ৭৮ কোটি টাকা খরচ করেছে বাপেক্স।
সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে বিস্তর অভিযোগ
১১ আগস্ট ২১, সমকাল
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের গহিন চর শৌলমারী। উপজেলা সদর থেকে পাকা রাস্তা ধরে দক্ষিণ ভোটমারীর বালিয়াপাড়া। সেখান থেকে হেঁটে, মোটারসাইকেল বা দ্বিচক্রযানে খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে যেতে হয় নদীর পাড়ে। সেখান থেকে নৌকায় পৌনে এক ঘণ্টার পথ। নৌকা থেকে নেমে খাল ও কর্দমাক্ত রাস্তা পেরিয়ে তবে দেখা মিলবে চর শৌলমারী নামে দুর্গম চরের। সেখানেই গড়ে উঠছে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেডের প্রস্তাবিত ৩০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প। এই প্রকল্প ঘিরে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
খাস ও নিরীহ লোকজনের জমি দখল, ফাঁদে ফেলে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করা, ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত, দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে নদীর বুক চিরে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণ- এমন অভিযোগের পাহাড় গড়ে উঠেছে এ প্রকল্প ঘিরে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি চরবাসী। চরবাসীর কান্না শুকিয়েছে চরের তপ্ত বালুতে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার কর্তৃপক্ষ।
এ লোকসানের দায় কার
২৯ আগস্ট ২১, সমকাল
পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। গত মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ৫৪০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ সক্ষমতার মাত্র ৪১ শতাংশ ব্যবহার করা সম্ভব হয়। পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতায় না চলার কারণে প্রতি মাসে শতকোটি টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে সরকারকে। ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়। সংশ্নিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ শেষ না হওয়ায় পুরো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। লাইন নির্মাণ শেষ হতে আরও এক বছর লাগতে পারে। ফলে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা ছাড়াই আগামী কয়েক মাসে হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)।
আরো বাড়ল এলপি গ্যাসের দাম
৩১ আগস্ট, ২০২১, বণিক বার্তা
দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম আরও এক দফা বাড়ানো হলো।
বেসরকারি খাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজি মূসকসহ ৯৯৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৩৩ টাকা করা হয়েছে। এর ফলে গতমাসের চেয়ে সিলিন্ডার প্রতি ৪০ টাকা বাড়ল।
আজ মঙ্গলবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় পরিবর্তন না হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির এলপিজির দাম পরিবর্তন করা হয়নি। সরকারি সাড়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম আগের মতো ৫৯১ টাকাই থাকছে। গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির নতুন দাম প্রতি লিটার ৫০ টাকা ৫৬ পয়সা। আগে এটি ছিল ৪৮ টাকা ৭১ পয়সা।
স্বল্প মেয়াদ শেষ কবে
০৫ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
আপৎকালীন সময়ের কথা বলে প্রায় এক যুগ আগে ‘স্বল্প মেয়াদে’ রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়। পাস করা হয় বিশেষ আইন। ১২ বছরেও সেই ‘স্বল্প মেয়াদ’ শেষ হয়নি। এরই মধ্যে চার দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আইনটির। এখন আরেক দফায় মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটিতে। পাশাপাশি বন্ধ হওয়া ৫টি রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র আবার চালানোর প্রক্রিয়া চলছে।
খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বিশেষ আইন বহাল রাখা এবং রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে থাকার এখন কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারণ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত আপৎকালীন সময় পেরিয়ে এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন চাহিদার চেয়ে দেড়গুণ বেশি রয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, নতুন মোড়কে রেন্টাল-কুইক রেন্টালগুলোর মালিকদের আবার অতি মুনাফা করার সুযোগ দেওয়া হবে।
গত এক দশকে ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রের পেছনে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট হিসেবে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ না কিনলেও কেন্দ্রের ভাড়া বা রেন্টাল চার্জ হিসেবে সরকারকে যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয় সেটিই ক্যাপাসিটি পেমেন্ট।
গ্যাস সংকটে সক্ষমতার অর্ধেক উৎপাদন বন্ধ
১৭ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
কয়েক দিন ধরে বস্ত্র খাতের কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ অস্বাভাবিক কম। এ কারণে বস্ত্রকলগুলো সক্ষমতার অর্ধেক পণ্যও উৎপাদন করতে পারছে না। অথচ হাতে এখন পর্যাপ্ত রপ্তানি আদেশের চাপ। সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে হারাতে হবে বস্ত্র ও পোশাকের বাজার।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র শিল্পকারখানায় গ্যাস সংকটের চিত্র এবং বাজার হারানোর শঙ্কার কথা তুলে ধরেন বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) নেতারা। এই সংকট সমাধানে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
গ্যাসের জন্য হাহাকার শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত
১৯ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
.. .. শুধু গাজীপুর বা সাভার নয়; নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ দেশের প্রায় সব অঞ্চলের শিল্পকারখানায় গ্যাসের জন্য হাহাকার চলছে। চাহিদা অনুসারে গ্যাস না পাওয়ায় কারখানাগুলো উৎপাদনে যেতে পারছে না। বিশেষ করে পোশাক, টেক্সটাইল কারখানাগুলোর সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। গত জুনের পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
করোনা মহামারির তীব্রতা কমার কারণে বিশ্ববাজার থেকে প্রচুর রপ্তানি আদেশ পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু গ্যাস সংকট তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্প উদ্যোক্তারা সরকারের কাছে বারবার ধরনা দিয়েও সমাধান পাচ্ছেন না। ফলে রপ্তানি আদেশ বাতিলের আশঙ্কা করছেন তারা। উদ্যোক্তারা বলছেন, দ্রুত গ্যাসের সংকটের সমাধান না হলে সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন সমকালকে বলেন, কোন কোন কারখানায় গ্যাসের চাপ পাচ্ছে ১ দশমিক ৫ পিএসআই; কোন কোন কারখানায় শূন্য। নারায়ণগঞ্জ, সাভার, ধামরাই, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে অবস্থিত টেক্সটাইল মিলগুলোতে গ্যাসের চাপ সবচেয়ে কম। কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অলস বসে থাকছে।
তিনি বলেন, বস্ত্রকলগুলো ক্যাপটিভ (নিজস্ব) বিদ্যুতে পরিচালিত হয়। সেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কম্পিউটারাইজড মেশিনারিজ ব্যবহার হয়। গ্যাসের অব্যাহত সরবরাহ না থাকায় যন্ত্রপাতির ক্ষতি হচ্ছে।
ইন্ট্রাকোর কাঁটাতারে আটকা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ঢাকা পোস্ট
বছরের পর যে রাস্তা দিয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শৌলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চলাফেরা করত, সেই রাস্তাসহ শৌলমারী চরাঞ্চলটি কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ‘ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড’-এর বিরুদ্ধে। ফলে আড়াই কিলোমিটার ঘুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয় শিক্ষার্থীসহ শৌলমারী চরের মানুষকে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ নিয়ে তারা সরকারি বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টার দিকে শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন নৌকা দিয়ে শৌলমারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু বেশি টাকার আশায় মাঝিরা ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেডের সোলার পিলার পার করছেন। ফলে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেক সময়। উপায় না পেয়ে তারা হাঁটুপানিতে পার হয়ে যান বিদ্যালয়ে। কখনো কখনো পড়ে গিয়ে আবার কাঁটাতারে ছিঁড়ে নষ্ট হয় জামাকাপড়।
একসময় চরবাসীর উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা ছিল এটি। কিন্তু সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের নামে ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার লিমিটেড সাইনবোর্ড লাগিয়ে কাঁটাতারে ঘিরে দেওয়া হয়। ফলে যেসব লোকজন বাপ-দাদার আমল থেকে ওই রাস্তা দিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা সদরে যাতায়াত করত, তাদের যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে চরের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও পড়েছেন চরম বিপাকে।
দুই গ্রুপের ১৬ কেন্দ্রে ক্যাপাসিটি চার্জ ৩১৩০ কোটি টাকা
বিদ্যুৎ খাতে সামিট ও ইউনাইটেডের দাপট
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, শেয়ার বিজ নিউজ
বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতায় বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে সামিট গ্রুপ। পরের অবস্থানটি ইউনাইটেড গ্রুপের। আর এ দুই গ্রুপের সমান যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডে (কেপিসিএল)। সব মিলিয়ে দুই গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে মোট ১৬টি। ২০২০-২১ অর্থবছর এ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা ছিল দুই হাজার ৬১১ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) গত অর্থবছর ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হয়েছে প্রায় তিন হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
পিডিবির ২০২০-২১ অর্থবছরের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, গত অর্থবছর বেসরকারি খাতে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল মোট ৮৭টি। এগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা ছিল আট হাজার ৪৯০ মেগাওয়াট। আর বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পিডিবিকে ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হয় ১৩ হাজার ১৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ দুটি স্থান ছিল সামিট ও ইউনাইটেড গ্রুপের।
নামমাত্র উৎপাদনেও ক্যাপাসিটি চার্জ ১৭৫০ কোটি টাকা
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, শেয়ার বিজ নিউজ
তিন বছর আগে এক হাজার মেগাওয়াটের ছয়টি ডিজেলচালিত বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেয় সরকার। চাহিদা না থাকায় বছরের বেশিরভাগ সময়ই এসব কেন্দ্র বসে থাকছে। গত অর্থবছর কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতার (প্লান্ট ফ্যাক্টর) মাত্র চার শতাংশ ব্যবহার করা হয়, যদিও কেন্দ্রগুলোর জন্য গুনতে হয় উচ্চ হারে ক্যাপাসিটি চার্জ। ফলে ডিজেলচালিত এসব কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ও পড়ছে অনেক বেশি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, ডিজেলচালিত ছয় কেন্দ্রের সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার হলে বছরে প্রায় ৭২০ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। অথচ গত অর্থবছর এ কেন্দ্রগুলোয় উৎপাদন করা হয় মাত্র ৩২ কোটি ১৬ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ। নামমাত্র উৎপাদন করা হলেও এ কেন্দ্রগুলোর জন্য গত অর্থবছর এক হাজার ৭৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হয়েছে পিডিবিকে। আর এ ছয় কেন্দ্রের গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় পড়ে ইউনিটপ্রতি ৭১ টাকা ১৪ পয়সা।
আরও পাঁচ বছর ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির সিদ্ধান্ত
১৮ অক্টোবর ২১, সমকাল
ভারতের ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে। এবারের চুক্তির মাধ্যমে ২০২৬ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরা থেকে প্রতিদিন ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেশে আসবে। গতকাল রোববার সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ সভায় আরও সাতটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভা শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, এবারের চুক্তির ফলে বিদ্যুৎ আমদানিতে সরকারের ৭০৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। পাঁচ বছরে এ বিদ্যুৎ আমদানির জন্য সরকারের চার হাজার ১৮৯ কোটি টাকা খরচ হবে।
ত্রিপুরার এনটিপিসি বিদ্যুৎ ভায়াপার নিগম লিমিটেড থেকে এক চুক্তির আওতায় সরকার ২০১৬ সাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে আসছে। এ বছরের ১৬ মার্চ আগের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি চুক্তি আরও পাঁচ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করে। আগের চুক্তির সব শর্ত ঠিক রেখে শুধু দাম পরিবর্তন করে নতুন চুক্তি করা হলো। আগে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম ছিল ৭ টাকা ৯৯ পয়সা। এবারের চুক্তিতে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ টাকা ১৩ পয়সা। এ ছাড়া বছরে ২ শতাংশ হারে এই দাম বাড়বে। আগের চুক্তিতে ৫ শতাংশ হারে দাম বেড়েছে।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান
বিদেশি কোম্পানির পরামর্শে সংশোধন হচ্ছে পিএসসি
২৪ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
বিদেশিদের বিনিয়োগে আগ্রহ কমে যাওয়ায় বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দরপত্র ঝুলে আছে কয়েক বছর ধরে। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে একাধিক বহুজাতিক কোম্পানি। তাদের পরামর্শে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) সংশোধন করতে পরামর্শক নিয়োগ করা হচ্ছে। মূলত গ্যাসের দাম বাড়াতেই করা হচ্ছে এ সংশোধন।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন-পেট্রোবাংলার দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, বর্তমান পিএসসিতে গভীর সমুদ্রে প্রতি ইউনিট সোয়া সাত ডলার ও অগভীর সমুদ্রে গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে সাড়ে পাঁচ ডলার। বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) প্রতি ইউনিটের দাম ৩৫ ডলার ছাড়িয়েছে। তাই বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে।
পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাসের দাম দুই থেকে তিন ডলার বাড়ানো হতে পারে। গভীর সমুদ্রের মতো অগভীর সমুদ্রেও গ্যাস রপ্তানির সুযোগ রাখার বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে। বর্তমান পিএসসিতে গভীর সমুদ্রে কোম্পানির জন্য করপোরেট কর না থাকলেও অগভীর সমুদ্রে আছে, এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। সরকার ও বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে গ্যাস বিক্রির মুনাফা ভাগাভাগি নিয়েও সংশোধন আসার সম্ভাবনা আছে।
পরিবেশ
ভরা মৌসুমেও যমুনায় মিলছে না মাছ, জেলেদের হাহাকার
আগস্ট ০৬, ২০২১, বণিক বার্তা
টাঙ্গাইলের মাহমুদনগরে যমুনা নদীতে বেঁধে রাখা জেলেদের নৌকা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী
ভরা মৌসুমেও টাঙ্গাইলে যমুনা নদীতে মাছের দেখা নেই। যমুনায় জাল পেতে দিন-শেষে হতাশ হয়ে ফিরছেন মৎস্যজীবীরা। গত বছর এ মৌসুমে জেলেদের জালে ধরা পড়ত প্রচুর পরিমাণে পিয়ালী, বাইজা, বাইলা, গোলসা ও চিংড়ি মাছ। বড় মাছের মধ্যে ছিল আইড়, বোয়াল, রিটা, রুই, মিরকা ও ইলিশ। কিন্তু এ বছর জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না মাছ। টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলা, কালিহাতি, নাগরপুর অংশে যমুনা নদীতে মাছ প্রায় উধাও। চলতি মৌসুমের মতো কয়েক দশকেও মাছের এতটা আকাল পড়েনি বলেই জানালেন মৎস্যজীবীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যমুনার বুকে কিছু মাছ ধরার ছোট ছোট ডিঙি ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা। জেলেরা তাতে জাল টানছেন। কিন্তু জাল তুলে হতাশ হতে হচ্ছে তাদের। কিছু ছোট পিয়ালী, বাইজা ছাড়া অন্য কোনো মাছই নেই।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাহমুদনগর ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে বর্ষার এ ভরা মৌসুমে প্রায় ৮০ জন জেলের জালে এমনই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া কালিহাতির গোয়লাবাড়ী, আলিপুর এবং নাগরপুরে আটাপাড়া, খকেন খাট, চৌহালির আরো দুই শতাধিক জেলের একই অবস্থা।
সাভারে ট্যানারি বন্ধের সুপারিশ সংসদীয় কমিটির
২৩ আগস্ট ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
সাভারের চামড়া শিল্প নগরী বন্ধ করে দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে না করায় কমিটি থেকে এই সুপারিশ করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) চিঠি দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সংসদীয় কমিটি বলেছে, পরিবেশ দূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার পর আবারও চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকালে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ আসে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সাভারের ট্যানারি শিল্প নগরী পরিদর্শন করেছিলাম। এছাড়া পরিবেশ অধিদফতর একাধিকবার পরিদর্শনে গিয়েছে। যেটা দেখা গেছে তা হলো, যে পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে, উৎপাদন হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। জরিমানা বিভিন্ন সময় করা হয়। কিন্তু সেটা কোনও স্থায়ী সমাধান নয়। এ জন্য আমরা বন্ধ করে দিতে বলেছি।
সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়কে জানায়, সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদন হয়। যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার ঘনমিটারের, অর্থাৎ দৈনিক ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য পরিবেশে মিশছে। গত তিন বছরে এক কোটি ৬৪ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে গেছে।
সীতাকুণ্ডের কৃষিজমিতে মানমাত্রার কয়েক গুণ ভারী ধাতুর উপস্থিতি
আগস্ট ২৮, ২০২১, বণিক বার্তা
বাংলাদেশে ১৯৬০ সালের দিকে জাহাজ ভাঙা শিল্পের গোড়াপত্তন হয়। তবে আদতে এ শিল্পটির বিকাশ হয় ৯০-এর দশকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকাজুড়ে বিস্তৃত শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলো দেশের ইস্পাতের চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশের জোগান দেয়। সময়ের সঙ্গে এ শিল্পের আকার যেমন বেড়েছে, তেমনি এর কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পরিবেশ দূষণের ঘটনাও। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, জাহাজ ভাঙা শিল্প এলাকা ও এর আশপাশের কৃষিজমিতে নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি বিভিন্ন ধরনের ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব আবাদি জমিতে উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে ক্ষতিকর ভারী ধাতু প্রবেশ করছে মানুষের শরীরে। যার ফলে ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগের আশঙ্কার কথাও বলছেন গবেষকরা।
সীতাকুণ্ডে জাহাজ ভাঙা শিল্প খাতসংলগ্ন কৃষিজমির অবস্থা জানতে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের দুজন শিক্ষক। ‘হেভি মেটাল কনসেনট্রেশনস অ্যান্ড ইটস ইমপ্যাক্ট অন সয়েল মাইক্রোবায়াল অ্যান্ড এনজাইম অ্যাক্টিভিটিজ ইন এগ্রিকালচারাল ল্যান্ডস অ্যারাউন্ড শিপ ইয়ার্ডস ইন চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় জাহাজ ভাঙা শিল্প খাতের কারণে নির্গত ভারী ধাতুর কী পরিমাণ অংশ স্থানীয় চাষযোগ্য মাটিতে মিশছে ও পরিবেশগত ঝুঁকি তৈরি করছে, তার মূল্যায়ন করা হয়।
এজন্য স্থানীয় সবজি বাগান, সবজির ক্ষেত ও ধানক্ষেতের মতো ১৯টি স্থানের মাটি নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। সংগৃহীত এ নমুনার মধ্যে বেলে-দোআঁশ মাটি, অত্যন্ত ক্ষারযুক্ত থেকে মাঝারি ক্ষারযুক্ত মাটি পাওয়া যায়। যার পিএইচ লেভেল ৪ দশমিক ২৩ থেকে ৫ দশমিক ৮৮। মাটির জৈব পদার্থের সীমা পাওয়া গেছে শূন্য দশমিক ৭৯ থেকে ১ দশমিক ৪৩ পর্যন্ত। এমনকি মাটির নমুনায় পাওয়া ভারী ধাতুর গড় ঘনত্ব নির্ধারিত মানের চেয়ে কয়েকশ গুণ বেশি। কৃষি জমিতে যেসব ভারী ধাতু পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে ক্যাডমিয়াম, লেড, কপার, জিংক, নিকেল ও ক্রোমিয়াম।
কৃষিজমিতে পাওয়া এসব ভারী ধাতুর বেশির ভাগই এসেছে জাহাজ ভাঙা শিল্প খাতের বিভিন্ন সামগ্রী প্রক্রিয়াজাত করার সময়। সেখানকার মাটিতে ক্যাডমিয়ামের ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ১ দশমিক ৭৭ থেকে ৮ দশমিক ১ মিলিগ্রাম। ক্রোমিয়ামের ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ১০২ দশমিক ৭৫ থেকে ২৬২ মিলিগ্রাম। কপারের ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ৯০ দশমিক ৫২ থেকে ৬৬২ দশমিক ৩৩ মিলিগ্রাম। নিকেলের ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ২৬ দশমিক ৬৬ থেকে ২২৭ দশমিক ৪৭ মিলিগ্রাম। সিসার ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ১৪৮ দশমিক ৩৩ থেকে ১ হাজার ৪৮৩ দশমিক ৩৩ মিলিগ্রাম। দস্তার ঘনত্ব প্রতি কিলোগ্রামে ২৭০ দশমিক ৩৭ থেকে ১ হাজার ৪১৬ দশমিক ১৩ মিলিগ্রাম। দেশের কৃষিজমিতে এসব ধাতুর সহনীয় কোনো মাত্রা নির্ধারিত নেই বলেও উল্লেখ করা হয় গবেষণায়। চীন, নেদারল্যান্ডস, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার কৃষি জমিতে মানমাত্রার উল্লেখ করে গবেষকরা দেখিয়েছেন, সীতাকুণ্ডের কৃষিজমিতে এসব ক্ষতিকর ধাতুর উপস্থিতি ৩ থেকে ১৫ গুণ পর্যন্ত বেশি।
বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি উত্তরাঞ্চলে
০৪ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়ার সারিয়াকান্দির নদ-নদীতে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষেত। রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় পদ্মার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভাঙছে পাড়। নদীতে বিলীন হচ্ছে জমিসহ বসতভিটা। জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু ক্রমেই ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। এ ছাড়া ফরিদপুর ও রাজবাড়ীতেও বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে।
খাবারের সন্ধানে পানি ভেঙে ছুটছেন বানভাসিরা
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন
‘দশ দিন ধইরা ঘরেও পানি, বাইরেও পানি। কোলের ছইল (বাচ্চা) নিয়া ভরা পানিতে কোনও দিক যাইতে পারি না। খাইয়া না খাইয়া দিন কাটতাছে, কেউ কোনও সাহায্য দিবার আইলো না। মেম্বার চেয়ারম্যান দেখপারও আহে নাই। আমাগো কষ্ট কে বুঝবো!’ সংবাদকর্মীদের নৌকাকে খাদ্যসামগ্রীর নৌকা ভেবে দেড় বছরের শিশুসন্তান রূপামণিকে কোলে নিয়ে কোমর সমান উচ্চতার পানি ভেঙে নৌকার দিকে ছুটে আসেন মনোয়ারা বেগম। কাছে এসে যখন বুঝলেন ত্রাণ সহায়তা নয়, এটি সংবাদকর্মীদের নৌকা তখন এভাবেই নিজেদের ভোগান্তি আর অসহায়ত্বের বর্ণনা দেন মনোয়ারা। একে একে জড়ো হন আরও বানভাসি নারী-পুরুষ। কেউ ডিঙি নৌকায়, কেউবা পানি ভেঙে। বেশির ভাগের কোলে শিশু সন্তান। মায়েরা যখন ভোগান্তির গল্প শোনান, কোলের শিশুরা ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। তাদের দৃষ্টিতে ক্ষুধা নাকি তিরস্কারের ভাষা তা ঠিক স্পষ্ট নয়। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র বেষ্টিত প্রত্যন্ত গ্রাম বালাডোবার চিত্র এটি। পানিবন্দি এই পরিবারগুলোর কষ্ট আর বিড়ম্বনা অবর্ণনীয়। ১০-১২ দিন যাবৎ পানিবন্দি থাকলেও খাদ্য সহায়তার ছিটেফোঁটাও জোটেনি তাদের ভাগ্যে।
বালাডোবার জুলেখা বেগম, নূরজাহান, হাজেরা বেগম সবার মুখেই খাদ্যসহায়তা না পাওয়ার আক্ষেপ। ঘোলা পানিতে বসবাস করা বিচ্ছিন্ন দ্বীপচরের এই বাসিন্দারা রাষ্ট্রের নিবন্ধিত নাগরিক হলেও অন্য সবার মতো রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা তারা পান না। জীবনযাপনে কষ্ট আর বিড়ম্বনা তাদের নিত্যসঙ্গী। এমনটাই জানা গেলো ভুক্তভোগীদের ভাষ্যে।
৭০০ একর বনভূমি প্রশাসন একাডেমির জন্য বরাদ্দ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আরেকটি প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করতে ‘রক্ষিত বনভূমির’ ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন ঝিলংজা বনভূমির ওই এলাকা প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন। বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ দিয়েছে। বন বিভাগের দাবি, এই জমি তাদের।
১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার একে রক্ষিত বন ঘোষণা করে। বন বিভাগ এত বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি এই ঝিলংজা বনভূমি। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমির ইজারা দেওয়া বা না দেওয়ার এখতিয়ার কেবল বন বিভাগের।
কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এ বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ।
নদনদীর ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে মানুষ দিশেহারা
০৯ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানিতে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল এখনও তলিয়ে রয়েছে। নদনদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বহু মানুষের ঘরবাড়ি। জমির ফসল, বসতভিটা হারিয়ে সবাই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে দুর্ভোগ অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০টি ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। উপজেলার কাঁঠালবাড়ি সন্ন্যাসীরচর ও শিরুইল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঘরবাড়িসহ নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। ভাঙনের প্রভাবে দিশেহারা দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবারগুলো ট্রলার ও নৌকায় করে ঘর-দরজা নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
ট্যানারির বর্জ্য গোপনে ফেলা হয় নদীতে
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
সাভারের চামড়াশিল্প নগর থেকে রাতের আঁধারে ট্যানারির তরল বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের এই অভিযোগের পর গত সোমবার রাতে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পনগরের কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) থেকে পাইপ বসিয়ে তরল বর্জ্য ধলেশ্বরী নদীতে ফেলা হচ্ছে।
শিল্পনগরের চামড়া পরিশোধনের কারখানা বা ট্যানারিতে উৎপাদিত চামড়ার তরল বর্জ্য পরিশোধন করে নদীতে ফেলার কথা। এ জন্য প্রায় ৫৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সিইটিপি করা হয়েছে। আর নদীদূষণ ঠেকাতেই রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সরিয়ে চামড়াশিল্প নগরে নেওয়া হয়েছিল।
ভূগর্ভে নদীর বিষাক্ত পানি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
দেশের প্রধান শহর ও শিল্প এলাকাগুলো সুপেয় পানির সুবিধা নিতে মূলত নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। কিন্তু যে নদী এসব শহর আর শিল্পকে জীবন দিয়েছে, সেখানকার পানি এখন বিষাক্ত হয়ে মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠছে। দেশের বর্জ্যের প্রধান ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত হতে হতে এসব নদী এখন বিষাক্ত হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, এসব বিষাক্ত পানি নদীর সীমা ছাড়িয়ে প্রবেশ করছে ভূগর্ভে। আর ওই ভূগর্ভ থেকেই আমাদের খাওয়ার ও সেচের পানির বড় অংশের জোগান আসছে, যা খাবারের সঙ্গে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে প্রাণঘাতী সব রোগের সৃষ্টি করছে।.. ..
গত ৪০ বছরে দেশের নদ-নদীগুলো নিয়ে হওয়া ২৮৩টি গবেষণা পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী হেলিয়ন–এ। দক্ষিণ কোরিয়ার কুমো ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক ইয়োন কো ঝিয়ং ও বাংলাদেশের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. জামাল উদ্দিন যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘গত ৪০ বছরে নগর নদীর দূষণ: সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ও প্রতিবেশগত ঝুঁকি, বিদ্যমান নীতি, পানি ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ দ্রুতগতিতে বাড়ছে। কিন্তু তাতে পরিবেশ সুরক্ষা এবং বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ কম থাকছে। বিভিন্ন উৎস থেকে বের হওয়া বর্জ্যের বড় অংশ শেষ পর্যন্ত নদীতে গিয়ে পড়ে। প্রতিবেদনটিতে বুড়িগঙ্গা থেকে শুরু করে তুরাগ, বালু, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা, কর্ণফুলী, করতোয়া, তিস্তা, রূপসা ও মেঘনা নদীতে সবচেয়ে বেশি দূষণ হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, এসব দূষিত পদার্থ নানাভাবে খাদ্যচক্রে প্রবেশ করছে, যা মানুষের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা ধরনের রোগবালাই তৈরি করছে। বিশ্বের যেকোনো মহাদেশের মধ্যে এশিয়ায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। আর বাংলাদেশ এর মধ্যে অন্যতম শীর্ষে থাকা দেশ।
প্রতিবেদনটিতে দূষণের বড় উৎসগুলোর মধ্যে শিল্পবর্জ্য এবং শহরের গৃহস্থালি বর্জ্য অপরিশোধিত অবস্থায় নদীতে ফেলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রংপুর শহরের সব বর্জ্য গিয়ে পাশের নদীগুলোতে গিয়ে পড়ছে। এ ছাড়া সাভারে চামড়াশিল্প নগরী, টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক কারখানা, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে গড়ে ওঠা ভারী শিল্পকারখানাগুলো থেকে বর্জ্যের সঙ্গে বিপুল পরিমাণে ভারী ধাতু জমা হচ্ছে। আর সড়ক, সেতু, কালভার্টসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের কারণে শহর এলাকার নদীগুলোয় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ থাকছে। অনেক স্থানে নদী বদ্ধ হয়ে সেখানে বর্জ্যের স্তর তৈরি হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিন উদ্দিন আহমেদের ২০১৮–১৯ সালে পরিচালিত গবেষণায় ঢাকার মতো বড় শহরগুলোর ভূগর্ভে ভারী ধাতুযুক্ত বিষাক্ত পানি প্রবেশ করার চিত্র উঠে এসেছে। ঢাকার হাজারীবাগ, সদরঘাট, সাভার ও গাজীপুরের নলকূপ ও গভীর নলকূপের পানি তিনি পরীক্ষা করেছেন। তাঁর গবেষণায় এসব পানিতে ভারী ধাতুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। ড. মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে খাবারের পানির বেশির ভাগ ভূগর্ভ থেকে তুলে জোগান দেওয়া হচ্ছে। ভূগর্ভে একবার বিষাক্ত পানি প্রবেশ করলে তা পরিশোধন করা খুবই কঠিন। তাই সরকারের উচিত নদীগুলোকে দ্রুত দূষণমুক্ত করার ব্যাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, দেশের টেক্সটাইল শিল্প থেকে ২০১৬ সালে ২১ কোটি ৭০ লাখ ঘনমিটার তরল বর্জ্য নির্গত হয়। গত পাঁচ বছরে তা বেড়ে ২০২১ সালে ৩৪ কোটি ৯০ লাখ ঘনমিটারে পরিণত হয়েছে। আর শুধু সাভারের চামড়াশিল্প নগরী থেকে দিনে ৪০ হাজার ঘনমিটার তরল এবং ৩৩২ টন কঠিন বর্জ্য বের হয়ে পাশের ধলেশ্বরী নদীতে গিয়ে পড়ে। শিল্পকারখানা দূষণের দিক থেকে পর্যায়ক্রমে রয়েছে সিমেন্ট কারখানা ও সার কারখানা। এর পরেই রয়েছে টেক্সটাইল, প্লাস্টিক, তেল প্রক্রিয়াজাত কারখানা, ফার্মাসিউটিক্যালস ও মেটাল কারখানা।
দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকা ডুবে ২১ জনের মৃত্যু
২৭ আগস্ট ২১, সমকাল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় লইসকা বিলে বালুবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবে গেছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ২১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল ও স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। আরও মরদেহ উদ্ধার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মরদেহের মধ্যে ১০ জন নারী ও সাতজন শিশুকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন।
রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার
‘এক্সপানশন জয়েন্ট’ যেন মৃত্যুফাঁদ
১৬ আগস্ট ২০২১, যুগাস্তর
রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ‘এক্সপানশন জয়েন্ট’ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ ধরনের সম্প্রসারণ সড়ক সংযোগে সহনীয় ফাঁকার পরিমাণ হচ্ছে আধা ইঞ্চি। কিন্তু এই ফ্লাইওভারে সেটা আছে এক থেকে দেড় ইঞ্চি।
গত কয়েক বছরে এই ফাঁকের ফাঁদে পড়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। তাদের অধিকাংশই মোটরসাইকেলচালক (বাইকার)। এত মৃত্যুর কারণ হিসাবে প্রকৌশলী, দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও বাইকাররা ফ্লাইওভারের ‘এক্সপানশন জয়েন্ট’কে (সম্প্রসারণ সড়ক সংযোগ) দায়ী করেছেন। তাদের মতে, সাধারণত আড়াআড়িভাবে ‘এক্সপানশন জয়েন্ট’ বসানো হলেও মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্টে লোহার জোড়াটি আছে লম্বালম্বিভাবে। রাস্তার মাঝ দিয়ে এটি অনেক দূর চলে গেছে। দ্রুত বা মাঝারি গতির মোটরসাইকেলের চাকা এই সংযোগ ফাঁকের মধ্যে পড়লেই চালক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। অনেক সময় স্লিপ কাটলেই নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রাণ যায় চালক বা সহযাত্রীর, অনেকেই হন আহত।
২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুগান্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাত্রাবাড়ী, ওয়ারী থানা ও ট্রাফিক পুলিশ সূত্র বলছে, ২০১৬-১৭ সালে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে দুই শতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৪০ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। সম্প্রতি শুধু যাত্রাবাড়ী থানার তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯ সালে ৩৩ জন, ২০২০ সালে ৫৭ এবং ২০২১ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত ৩৯ জন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে, যাদের বড় একটি অংশ বাইকার।
নালায় পড়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে নালায় পড়ে যাওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার (১৯) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের আগ্রাবাদের মাজার গেট এলাকায় নালায় পড়ে যান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের ছাত্রী সাদিয়া। তিনি চশমা কিনে মামার সঙ্গে বাসায় ফিরছিলেন। ভাগনিকে উদ্ধারের জন্য মামা সঙ্গে সঙ্গে নালায় লাফ দেন। কিন্তু ব্যর্থ হন।
পররাষ্ট্র বিষয়ক
বিএসএফের গুলিতে নিহত দুজনের লাশ ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ
৩১ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। নিহত দুজনের আত্মীয়স্বজনসহ স্থানীয় লোকজন বুড়িমারী স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক অভিবাসনচৌকির (আইসিপি) বিজিপির আউট পোস্টের সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান।
আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলে। এতে স্থলবন্দরে প্রায় এক ঘণ্টা আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে পাটগ্রাম থানা–পুলিশ উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে আমদানি-রপ্তানি চালু করা হয়।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের চিঠি
ভারতের সমুদ্ররেখা নিয়ে আপত্তি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, প্রথম আলো
ভারত নিজের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য যে উপকূলীয় ভিত্তিরেখা বা বেসলাইন ব্যবহার করেছে, এর একটি অংশ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার ভেতরে পড়েছে। সাত বছর ধরে বিষয়টি দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অবস্থানের বিষয়টি অবহিত করে বাংলাদেশ ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে একটি কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছে।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে মহাসচিবের কাছে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে এরই মধ্যে ওই চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে মহীসোপানের দাবির বিষয়ে বাংলাদেশের যুক্তির বিপক্ষে আপত্তি জানিয়ে ভারত গত এপ্রিলে জাতিসংঘকে একটি চিঠি দিয়েছিল। ভারতের সেই চিঠির বিষয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবকে পৃথক আরেকটি একটি চিঠি দেয় বাংলাদেশ। ওই চিঠিতে বাংলাদেশ বলেছে, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা অনুসরণ করেই মহীসোপানের দাবি নির্ধারণ করেছে ঢাকা।
তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটই খুলে দিল ভারত, পানিবন্দি ১০ হাজার পরিবার
২০ অক্টোবর ২০২১, দ্যা বিজনেস ট্রিবউন বাংলা
উজানের ঢল ও ভারতের গজলডোবার সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় বাড়ছে তিস্তার পানি। তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।
বুধবার (২০ অক্টোবর) ভোর থেকে তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় লালমনিরহাটের তিন উপজেলার তিস্তার চর এলাকায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধানক্ষেত। পানির তোড়ে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তিস্তা ব্যারেজের ফ্লাট বাইপাস সড়কও হুমকির মুখে পড়েছে।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তিস্তা শুকিয়ে জেগে উঠেছিল চর। হঠাৎ তিস্তার পানিতে সব ডুবে গেছে। কার্তিক মাসে এমনভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ।
বিবিধ
ফরাসি চলচ্চিত্রের সংলাপে আপত্তি, নেটফ্লিক্সকে বিজিএমইএর চিঠি
০৯ আগস্ট ২০২১, প্রথম আলো
বিশ্বখ্যাত স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে গত ৩০ জুলাই মুক্তি পায় ডেভিড শ্যারন পরিচালিত ফরাসি চলচ্চিত্র ‘দ্য লাস্ট মার্সেনারি’। সেই চলচ্চিত্রের একটি সংলাপ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তা প্রত্যাহারের জন্য নেটফ্লিক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টেড অ্যান্থনি স্যারান্ডেসকে চিঠি দিয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।
বিজিএমইএর সভাপতি গতকাল নেটফ্লিক্সের সিইওর পাশাপাশি এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে চলচ্চিত্রটির পরিচালক ডেভিড শ্যারন, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রসচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে চিঠি দিয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানায় বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
নতুন ভোগান্তি ‘উবার’
০১ সেপ্টেম্বর ২১, সমকাল
ঢাকা শহরে যাত্রীদের সামনে নতুন ভোগান্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ‘রাইড শেয়ারিং সার্ভিস’। এ সার্ভিসগুলো এখন রাজধানীর বিকল্প ‘ট্যাক্সি’ সার্ভিসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এখান থেকে গাড়ি পেতে নানা ধরনের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। একদিকে ভাড়া বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে চালকদের স্বল্প দূরত্বে না যাওয়ার জন্য বিড়ম্বনা। এক দশক আগে ট্যাক্সিক্যাব এবং বর্তমানে সিএনজিচালিত অটোরিকশার বাজে অভিজ্ঞতা এখন রাইড শেয়ারিং সার্ভিসেও। অ্যাপে চালকদের গন্তব্য জানার সুযোগ না থাকলেও ফোন করে গন্তব্য জেনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যেতে চাচ্ছেন না চালকরা। এমনকি চালকরা অস্বীকৃতি জানানোর পর যাত্রীদেরই কল কাটতে বাধ্য করছেন। ফলে তাদের জরিমানার শিকার হতে হচ্ছে। জরিমানার টাকা দিতে গিয়েও অ্যাপের জটিল নির্দেশনা অনুসরণের ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়ছেন যাত্রীরা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে ১৪টি রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নিবন্ধিত থাকার তথ্য রয়েছে। তবে ঢাকায় সাধারণত ‘উবার’ অ্যাপ থেকেই মানুষ গাড়ি পায়। এর বাইরে ‘ওভাই’ থেকে সব সময় না মিললেও মাঝেমধ্যে গাড়ি মিলছে। পাঠাও এবং সহজ থেকে মোটরসাইকেল মিললেও প্রাইভেট কার পাওয়া যায় না। ফলে রাজধানীতে একচেটিয়া ব্যবসায় আছে উবার।
ভোগান্তির নতুন মাত্রা :রাজধানীতে উবার ব্যবহার করে এবং সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায়, এ সার্ভিসের ভাড়া বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। যেমন- আগে উত্তরা থেকে ধানমন্ডি যেতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া আসত। এখন সেই ভাড়া ৭৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা দেখায়। মতিঝিল থেকে বিমানবন্দরে যেতে ভাড়া দেখাত ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এখন সেই ভাড়া দেখায় ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা।
স্বল্প দূরত্বের ক্ষেত্রে ভাড়া বেড়েছে আরও বেশি।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকালে অফিস যাওয়ার সময়, বিকেলে অফিস থেকে ফেরার সময় এবং কোনোরকম বৃষ্টি হলেই ‘বাড়তি চাহিদার কারণে ভাড়া একটু বেশি’ নোটিশ দিয়ে উবারের ভাড়া হয়ে যায় আকাশচুম্বী। সকাল ৮টায় খিলক্ষেত থেকে তেজগাঁও এলাকায় যাওয়ার জন্য উবারের ভাড়া দেখানো হয় ৬৫০ টাকা। বিকেল ৫টায় মতিঝিল থেকে বিমানবন্দরের যাওয়ার ভাড়া দেখানো হয় ১০২০ টাকা। বৃষ্টির ফোঁটা পড়লেই ভাড়া সাধারণ সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি হয়ে যায়।
বন্ধ অ্যাকাউন্টের টাকা ফেরতের দাবি নগদ ব্যবহারকারীদের
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ঢাকা ট্রিবউন অনলাইন বাংলা
বন্ধ নগদ অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু করার দাবিতে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নগদের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবহারকারীরা।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
নগদের জনসংযোগ প্রধান মুহম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি চেয়েছেন তারা।
“আসলে স্থগিতাদেশ তুলে দেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্পও নেই। এখন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব, ” তিনি যোগ করেন।
গত সপ্তাহে, নগদ সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়ে বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৩ হাজার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে।
চুল কেটে দিলেন শিক্ষক, অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা শিক্ষার্থীর
২৮ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, মানবজমিন
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিসিক বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে এক শিক্ষক কেটে দেয়ার অপমান সইতে না পেরে নাজমুল হাসান তুহিন (২০) নামের এক ছাত্র সোমবার রাত ৮টার দিকে ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। সে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি মাগুরা জেলায় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ছাত্ররা জানায়, এদিন দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন ফেসবুকে চুলকাটার বিষয়ে স্ট্যাটাস দেয়ায় তাকে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেয়। এ দিনের পরীক্ষা শেষে সে দ্বারিয়াপুরের শাহ মুখদুম ছাত্রাবাসের ৫ম তলার নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে মোট ৩৫টি ঘুমের বড়ি এক সাথে গুড়ো করে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি তার সহপাঠিরা টের পেয়ে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে ভর্তির পর তার চিকিৎসা চলছে।
ফেসবুক ইউটিউবে মিথ্যা প্রচারণা, ১০৭ নারকেল গাছ কাটলেন পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, যুগান্তর
দেশের কিছু নার্সারি মালিক সাধারণ কৃষকদের নানা মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে বিদেশি ফলের গাছ দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে নাটোরে ১০৭টি ভিয়েতনামী ও ক্যারালা হাইব্রিড জাতের নারকেল গাছ কেটে ফেলেছেন এক কৃষক।
গাছগুলো ২৪ মাসের মধ্যে ফলন ধরার কথা থাকলেও সাত বছরেও ফলন না ধরায় গাছ গুলো কাটেন দেশের প্রধান পেয়ারা চাষী জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক নাটোরের সেলিম রেজা।
নিজে প্রতারিত হয়ে এবং দেশের সাধারণ কৃষকদের প্রতারণা থেকে বাঁচানোর জন্য বৃহস্পতিবার সারাদিন ৮ জন শ্রমিক দিয়ে তিনি তার খামারের এসব বিদেশি নারকেল গাছ কেটে ফেলেন।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক সেলিম রেজা বলেন, কিছু সরকারি দপ্তরের মোসাহেবি কর্মকর্তার কারণে দেশের লাখো নতুন কৃষি উদ্যোক্তা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হচ্ছেন। হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। ফেসবুক ইউটিউবে মিথ্যা মুখরোচক বিজ্ঞাপন দেখে দেশের মানুষ পাগলের মতো বিদেশী ফলের চারা কিনে প্রতারিত হচ্ছে। তিনি নিজেও এমন চারা কিনে প্রতারিত হয়েছেন। এসব চারা নিয়ে দেশে কোন গবেষণা নেই।
বিজ্ঞাপনসহ বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধ
০১ অক্টোবর ২০২১, প্রথম আলো
বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করে—এমন বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধ রয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে এই চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ রেখেছেন কেবল অপারেটররা।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, সেগুলো বাংলাদেশে দেখানো যাবে না।
কেবল অপারেটররা বলছেন, বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করে—এমন বিদেশি চ্যানেলগুলো থেকে বিজ্ঞাপন কেটে বাদ দিয়ে সম্প্রচার করা সম্ভব নয়। এ কারণে তাঁরা চ্যানেলগুলো দেখানোই বাদ দিয়ে দিয়েছেন।
মেধা সূচকে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নিচে বাংলাদেশ
২০ অক্টোবর, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা
মেধা সূচকে বিশ্বের ১৩৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৩তম অবস্থানে। এ বছরের গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটিভনেস ইনডেক্সে (জিটিসিআই) বাংলাদেশের এ অবস্থান মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার নিচে।
ফরাসি বিজনেস স্কুল ইনসিড এবং অলাভজনক গবেষণা সংস্থা পোর্টুল্যান্স ইনস্টিটিউট গতকাল মঙ্গলবার এ তালিকা প্রকাশ করেছে।
মেধা অর্জনের সক্ষমতা, আগ্রহ, বিকাশ, ধরে রাখা, বৃত্তিমূলক, কারিগরি দক্ষতা ও বৈশ্বিক জ্ঞান- এ ৭টি বিষয় বিবেচনা করে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
তালিকায় মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের মধ্যে ২৫ দশমিক ৩ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ৮৮তম, শ্রীলঙ্কা ৯৩তম, পাকিস্তান ১০৭তম, নেপাল ১১৩তম ও বাংলাদেশ ১২৩তম।