সংবাদপত্রের পাতা থেকে (২৪ অক্টোবর ২০২০- ২৩ জানুয়ারি ২০২১)

সংবাদপত্রের পাতা থেকে (২৪ অক্টোবর ২০২০- ২৩ জানুয়ারি ২০২১)

অর্থনীতি

ফসলি জমিতে অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের বিরোধিতা করে মানববন্ধন

২৬ অক্টোবর, ২০২০, বণিক বার্তা

চট্টগ্রামের দোহাজারীতে অবস্থিত দিয়াকুলে কাজী ফার্মস এর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিয়াকুলের জনসাধারণের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা তিন ফসলি জমিতে অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের বিরোধিতা করে কৃষকদের ‘রুটি-রুজি বন্ধ’ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বক্তারা বলেন, এই এলাকায় অর্থনৈতিক জোন স্থাপিত হলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হবে। উচ্ছেদ হবে বনভূমি, ভরাট হবে পুকুর ও জলাধার এবং গৃহহীন হবে মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নিজেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন কৃষি জমিতে শিল্পায়ন করা হবে না। কিন্তু একটি স্বার্থন্বেষী মহল বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে চট্টগ্রামের খাদ্য ভান্ডার নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে।

তারা বলেন, চট্টগ্রামের শষ্যভান্ডারখ্যাত দোহাজারী যাতে করে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে খাদ্য শস্য সরবরাহ অব্যাহত রাখতে পারে, সেজন্য এখানে কোন অর্থনৈতিক জোন করার অনুমতি না দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, চন্দনাইশ উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী ও বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. ইব্রাহীম চৌধুরীসহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

সিলিকন ভ্যালি’ এখন হতাশার নাম

২৮ অক্টোবর ২০২০, প্রথম আলো

কথা ছিল যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক হবে বাংলাদেশের সিলিকন ভ্যালি। মেধাভিত্তিক অর্থনীতির দ্বার উন্মোচিত হবে পার্কটি চালুর মাধ্যমে। তিন বছর পর সেটি এখন হতাশার নাম।

কেন হতাশা? কারণ, বিনিয়োগ ততটা হয়নি, যতটা প্রত্যাশিত ছিল। বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি বললেই চলে। বর্তমান বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগ প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল মার্কেটিং, কল সেন্টার পরিচালনা ও গ্রাফিকস ডিজাইনিংয়ের কাজ করেন। কর্মসংস্থানের লক্ষ্য পূরণের ধারেকাছেও যেতে পারেনি পার্কটি। বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ পার্কটি ছেড়েছেন। বিপুল ব্যয়ে নির্মিত ডরমিটরি বা আবাসনসুবিধা খালিই থাকছে। সম্মেলনকেন্দ্র বা অ্যাম্ফিথিয়েটার বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়।… …

হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন পর্যন্ত যশোর হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ এসেছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। পার্কটি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান টেক সিটি জানিয়েছে, সেখানে ৫০টি প্রতিষ্ঠান জায়গা বরাদ্দ নিয়েছে। এর মধ্যে কার্যক্রমে রয়েছে ৩৮টি। অবশ্য সরেজমিনে ৩২টি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পাওয়া যায়।

পার্কটির মূল ১৫ তলা ভবনে ১ লাখ ৩৭ হাজার বর্গফুট জায়গা ইজারাযোগ্য। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়া প্রায় ৯৫ হাজার বর্গফুট। ৩টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১০ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে ফেলে রেখেছে। ফলে ৩৮ শতাংশ জায়গা এখনো খালি রয়েছে। আশানুরূপ বিনিয়োগ না হওয়ায় কর্মসংস্থানও হয়নি। মোট ১ হাজার ৪০০ কর্মী সেখানে কাজ করেন। তবে প্রতিষ্ঠার সময় পাঁচ হাজার কর্মীর কাজ পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

বিনিয়োগের ধরনও খুব বেশি আশাজাগানিয়া নয়। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই প্রশিক্ষণধর্মী। তারা বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষণের কাজ করে। সফটওয়্যার তৈরি করে, এমন প্রতিষ্ঠান রয়েছে মাত্র ছয়টি, যা হলো মাইক্রো ড্রিম আইটি, টেকনোসফট বাংলাদেশ, সফট এক্স টেকনোলজি, ডেসটিনি আইএনসি ডট, সেমিকোলন আইটি ও অংশ ইন্টারন্যাশনাল। কিছু প্রতিষ্ঠান কল সেন্টার পরিচালনা, ডিজিটাল বিপণন, গ্রাফিকস ডিজাইনসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। সূত্র জানায়, পার্কটিতে বিদেশি কোনো বিনিয়োগ নেই। ডেসটিনি আইএনসি ডট নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে জাপানি বিনিয়োগকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আসলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক বাংলাদেশি, যিনি জাপানে থাকেন।… …

এবার ওরিয়ন গ্রুপের চোখ ৪০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের দিকে

২৮ অক্টোবর ২৮, ডেইলিস্টার বাংলা অনলাইন

অনিয়ম আর ঋণ কেলেঙ্কারির জের ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকই খেলাপি। এসব মন্দ ঋণ ফিরে পাওয়া দুরূহ। নতুন করে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা এসব ব্যাংকের জন্য নিতান্তই কঠিন। ফলে সুযোগসন্ধানীদের এখন দৃষ্টি পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দিকে। অর্থাৎ, তাদের নতুন লক্ষ্যস্থল এখন খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ, করোনাভাইরাসের চলমান মহামারিতে রিজার্ভের আকার সাড়ে সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়ে ৪০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। আর এটিই ডেকে নিয়ে এসেছে রিজার্ভের জন্য বিপদ।

রিজার্ভ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য প্রথম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওরিয়ন গ্রুপ তৎপরতা শুরু করার পর থেকেই এই আশঙ্কার সূত্রপাত। রিজার্ভ থেকে টাকা নিয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য গত ২৬ জুলাই থেকে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটি ঋণ চায় ৯০৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। টাকার অঙ্কে হিসাব করলে এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্টভাবে কোনো একটি ব্যাংক থেকে এক সঙ্গে এতো টাকা ঋণ পাওয়ার নজির নেই।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী কর্মীর আত্মহত্যা

৭ নভেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

সাতক্ষীরায় তালায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এক ঘণ্টা পরই আত্মহত্যা করেছেন ছাত্রলীগ নেতা। ওবায়দুর রহমান বাবু (২৫) নামের ওই তরুণ খুলনা বিএল কলেজে ইতিহাসের মাস্টার্সের ছাত্র ছিলেন। তিনি বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছাড়াও তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি খলিলনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি।… …

মাসখানেক আগে ভাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য রাতে বাবার কাছে এক লাখ টাকা চায়। পরে আবারও টাকা চান ভাই। বাবা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ভাই বাড়ি থেকে সপ্তাহখানেক আগে চলে চায়। বৃহস্পতিবার বাড়ি এসে শুক্রবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খলিলনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি হয়েছে ১৭ মাস আগে। ওই কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে বলে উপজেলার কমিটির নেতারা পদপ্রত্যাশীদের আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন। ওবায়দুর ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হওয়ায় পদ পেতে তাঁর কাছে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি শেখ সাদী এক লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এর আগেও আশ্বাস দিয়ে তাঁকে নেতা বানানো হয়নি। এই টাকা জোগাড় করতে গিয়ে ওবায়দুর নানা জায়গায় ধরনা দিয়েও ব্যর্থ হন। অবশেষে বাবার কাছে টাকা চাইলে তাঁর বাবা অপারগতা প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ওবায়দুর ক্ষোভে ও দুঃখে আত্মহত্যা করেন। পদ না পাওয়ার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কিছু অপ্রাপ্তির দুঃখও তাঁকে আত্মহননে প্ররোচিত করেছে বলে ফেসবুকে ওবায়দুরের স্বীকারোক্তি ও তাঁর পরিচিতদের সূত্রে জানা গেছে।… …

জমি ইজারা দিয়ে লাভের বদলে ক্ষতির মুখে রেলওয়ে

২২ নভেম্বর, ২০২০, বণিক বার্তা

বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩৩৭ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ফয়’স লেক, যা কনকর্ড গ্রুপকে ইজারা দিয়েছে সংস্থাটি। চুক্তি অনুযায়ী, ইজারা বাবদ কনকর্ডের কাছে বছরে ২৫ লাখ টাকা পায় রেলওয়ে। ২ঃ১ অনুপাতে ইজারার এ টাকায় আবার ভাগ বসায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। ফলে এ জমি ইজারা দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের আয় সাকুল্যে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা। অথচ এ জমির জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকে প্রতি বছর ১ কোটি ৯৮ হাজার টাকার কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। বছর বছর লোকসান হওয়ায় কনকর্ডের সঙ্গে ইজারা চুক্তি বাতিলও করেছিল রেলওয়ে। এর বিরুদ্ধে রিট পিটিশন করে ফয়’স লেকের দখল এখনো নিজেদের হাতেই ধরে রেখেছে কনকর্ড।

কর বাবদ একদিকে প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা গচ্চা যাচ্ছে রেলের। অন্যদিকে যেসব শর্তে রেলওয়ের কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়েছিল কনকর্ড, তার বেশির ভাগই মানা হয়নি। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি নানা ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তুলে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে কনকর্ড। বিপরীতে ধারাবাহিক লোকসান থেকে বের হতে কনকর্ডের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে চেয়েও মামলা জটিলতায় ব্যর্থ হয়েছে রেলওয়ে। এখন রেলের শীর্ষ কর্মকর্তা চুক্তি বাতিল নয়, বরং কীভাবে কনকর্ডের সঙ্গে করা চুক্তিকে লাভজনক করা যায়, সেই পথ খোঁজার চেষ্টা করছেন।… ….

২০৫ কোটি টাকা ডিউটি অব্যাহতি পেল রিলায়েন্স বাংলাদেশ

২৬ নভেম্বর ২০২০, সমকাল

ভারতীয় কোম্পানি রিলায়েন্স বাংলাদেশ এলএনজি অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডকে স্ট্যাম্প ডিউটির ২০৫ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই কোম্পানির অর্থায়ন নথিপত্র (ফাইন্যান্সিং ডকুমেন্ট) ও জমি ইজারা নেওয়ার চুক্তি (ল্যান্ড লিজ অ্যাগ্রিমেন্ট) নিবন্ধনে এই পরিমাণ স্ট্যাম্প ডিউটি দেওয়া লাগত। অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে এই টাকা মওকুফ করার কথা জানিয়েছে।

জানা গেছে, কোম্পানিটি নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৭১৮ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে। গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের চর রমজান মৌজায় ৩০ একর জমি নেওয়া হবে। এই জমির লিজ চুক্তি বাবদ যে স্ট্যাম্প ডিউটি রয়েছে, তা মওকুফ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি লিজ চুক্তি, বন্ধক চুক্তি, শেয়ার প্লেস অ্যাগ্রিমেন্ট বাবদ যেসব স্ট্যাম্প ডিউটি রয়েছে, সেগুলোও মওকুফ করা হয়েছে।… ….

কৃষক কাঁদছে ভোক্তা জ্বলছে: কৃষিপণ্যের লাভ মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে

৩০ নভেম্বর, ২০২০, কালের কন্ঠ

লালমনিরহাটের একজন কৃষক এক কেজি মুলা বিক্রি করছেন দেড় টাকা থেকে দুই টাকা দরে। রাজধানীর ঢাকায় একজন ভোক্তা সেই মুলা কিনছেন প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকায়।

শীতের অন্যতম সবজি লাউ ভালো উৎপাদন হয় মানিকগঞ্জে। সেখানকার তথ্য বলছে, লাউয়ের চাহিদা এখনো সেখানে রয়েছে। তবে দাম কম। গতকাল রবিবার পর্যন্ত সেখানকার কৃষকরা প্রতিটি লাউ বিক্রি করেছেন ১২-১৫ টাকা দরে। এই লাউ গতকাল কারওয়ান বাজারে আড়তদারের মাধ্যমে ব্যাপারীরা (পাইকারি) বিক্রি করেছেন ৩০-৩৫ টাকা। আর খুচরা বাজারগুলোতে বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা।

শুধু মুলা ও লাউ নয়, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির ক্ষেত্রেই কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে দামের এমন আকাশ-পাতাল তফাত রয়েছে।

বিভিন্ন এলাকার কৃষক থেকে ঢাকায় ভোক্তা পর্যায়ে আসতে স্থানভেদে পাঁচ থেকে ছয়টি হাত বদল হচ্ছে। এই হাত বদলে মুলার দাম বাড়ছে ২০ গুণ, লাউয়ের দাম বাড়ছে তিন গুণের বেশি। এভাবে অন্য সবজির ক্ষেত্রে অনেক গুণ দাম বেড়ে যায়।

দামের এমন পার্থক্য হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, হাত বদলে মুনাফা ছাড়াও খাজনা ও স্থানভাড়া, শ্রমিক খরচ, পরিবহন খরচ, পথে পথে পুলিশ, পৌরসভা ও বিভিন্ন সংগঠনের চাঁদাবাজি, অতিরিক্ত ফেরি ভাড়া ইত্যাদি। ব্যাপারী থেকে খুচরা পর্যায়ে সরবরাহকারীরাই সবজির চূড়ান্ত দাম ঠিক করে দেয়, যেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দেখা যাচ্ছে কেউ বিনিয়োগ না করেও টাকা তুলে নিচ্ছে। যারা বিনিয়োগ করছে, অর্থাৎ মধ্যস্বত্বভোগী, তারা বেশি মুনাফা করছে।

সরবরাহ সারির প্রথম ব্যক্তি কৃষক ও সর্বশেষ ব্যক্তিটি হলো ভোক্তা। দাম বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই দুই শ্রেণির মানুষই দিনের পর দিন ঠকে যাচ্ছে। কৃষক উৎপাদনে যে খরচ করেন সবজির ভরা মৌসুমে ব্যাপক প্রতিযোগিতায় সে খরচটুকুও অনেক সময় অনেক পণ্যে পান না। নামে মাত্র দামে তাঁকে পণ্য বিক্রি করতে হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ঠকে ভোক্তা। কারণ কৃষক যে দামে বিক্রি করেন ভোক্তাকে কিনতে হয় তার কয়েক গুণ বেশি দামে।

দেশে সবজির বড় উৎস যশোর, পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, পঞ্চগড় ও কুষ্টিয়া।

বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীতে সবজি নিয়ে আসা এবং হাত বদলের পর্যায়গুলো অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, কিভাবে সস্তার মুলা ভোক্তা পর্যায়ে উচ্চ মূল্যের হয়ে যাচ্ছে।

লালমনিরহাটের একজন কৃষকের কাছ থেকে দেড় থেকে দুই টাকায় কিনে স্থানীয় ফড়িয়ারা সেটি বিক্রি করেন কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা দরে। প্রথম দফার হাত বদলেই দাম বেড়ে গেল কেজিতে তিন টাকা। ফড়িয়ার কাছ থেকে সবজি চলে যায় স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাতে। তখন বাড়ে আরো পাঁচ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সবজি চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে। ঢাকায় আসার পর কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বড় বড় সবজির আড়তে আসে। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসার পথে সড়কে বেশ কয়েক জায়গায় পৌরসভার পক্ষ থেকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, পরিহন শ্রমিকসহ বিভিন্ন সংগঠন, হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশের নামে কয়েক ধাপে চাঁদাবাজি হয়। যে কারণে খুচরা বাজারে যাওয়ার আগেই মুলা দাম বেড়ে যায় কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা।… …

বগুড়ার ট্রাকচালক এমরান হোসেন। তিনি নিয়মিত বগুড়া থেকে ঢাকায় সবজি নিয়ে আসেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, চাঁদা তো সব জায়গাতেই দিতে হয়। আগে প্রকাশ্যে দিতে হতো, এখন গোপনে দিতে হয়। যেখান থেকে ভাড়া করা হয় সেখানেও টাকা রাখা হয়। আর প্রতিটি পৌরসভায় চাঁদা দিতে হয়। দু-এক জায়গায় পরিবহন মালিক সমিতিও চাঁদা নিচ্ছে। পুলিশকে চাঁদা না দিয়ে তো দেশের কোথাও যাওয়া যায় না।

যশোরের ট্রাকচালক রবিউল কালের কণ্ঠ বলেন, ‘যশোরের বারীনগর বাজার থেকে ঢাকায় আসতে বেশ কয়েক জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। ফেরিঘাটেও দ্বিগুণ টাকা দিতে হয়। পৌরসভা ও সংগঠনের নেতাদেরও তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে নানা অজুহাতে ট্রাক আটকায়, হয়রানি করেন। পণ্য পচনশীল হওয়ায় ঝামেলা এড়াতে আগে থেকেই টাকার ব্যবস্থা করে রাখে সবাই।’

বাংলাদেশ কার্ভাড ভ্যান ট্রাক পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মকবুল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পৌরসভার টোল আদায়ের নামে ট্রাকচালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। পৌরসভা থেকে কোনো ধরনের মালামাল ওঠানো বা নামানো না হলেও তাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। যশোর থেকে যদি মালামাল নিয়ে ঢাকা আসে, তাহলে কতগুলো পৌরসভা আছে। সব পৌরসভাকে যদি চাঁদা দিতে হয় তাহলে খরচটা কেমন?’ তিনি বলছেন, এ ছাড়া বেশ কয়েক জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে ট্রাক আটকে হয়রানি করে। তাই বাধ্য হয়েই তাদের দিতে হয়।

মকবুল বলছেন, ‘আমি মনে করি, রাস্তায় সব ধরনের চাঁদা বন্ধ হলে ভোক্তা পর্যায়ে দাম অনেক কমে যাবে।

ডিএসইর লা মেরিডিয়ান কাণ্ড

১৭ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

বেসরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিকে ‘সরকারি মালিকানার তকমা’ দিয়ে শেয়ারবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অর্থ লুটের অভিনব এক আয়োজন সম্পন্ন করেছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ। কাজটি করা হয়েছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোনো অনুমোদন ছাড়া।

পর্যটন খাতের যে কোম্পানিকে ডিএসইতে সরাসরি তালিকাভুক্ত করতে পর্ষদের অনুমোদনের জন্য আলোচ্যসূচিভুক্ত করা হয়েছিল সেটি হলো বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড। এ নামে সাধারণ মানুষের কাছে কোম্পানিটি অপরিচিত। কিন্তু রাজধানীর নিকুঞ্জে পাঁচ তারকা হোটেল ‘লা মেরিডিয়ান’ হয়তো সবাই চেনেন। সেই হোটেল এই বেস্ট হোল্ডিংসেরই মালিকানাধীন।

আইন করে শেয়ারবাজারে বেসরকারি কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রেখেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। কিন্তু সেই আইনের ফাঁকফোকর খুঁজে বের করে বেসরকারি লা মেরিডিয়ান হোটেলকে সরকারি মালিকানার কোম্পানি বানিয়ে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন ডিএসইর প্রভাবশালী এক সদস্য। যিনি ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দুবারের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য অভিযুক্ত।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বেসরকারি একটি কোম্পানিকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কয়েক শ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার এ চেষ্টার কথা জানতে পেরে ছুটির দিনে ত্বরিত হস্তক্ষেপ করে বিএসইসি। বিজয় দিবসের ছুটির মধ্যেই জরুরি নির্দেশনা দিয়ে ডিএসইর পর্ষদ সভায় কোম্পানিটির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডিএসইর কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করা হয়।… ….

হাত ধোয়ার পরামর্শকের জন্যই ৫৬ কোটি

২২ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

 গরিব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন বা পায়খানা নির্মাণ ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাত ধোয়া স্টেশন নির্মাণকাজের পরামর্শকের পেছনেই শুধু খরচ হবে ৫৬ কোটি টাকা। একই প্রকল্পে তিন লাখ গরিব মানুষ বাছাই এবং করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে মানুষের আচরণ পরিবর্তনের কাজে ব্যয় হবে আরও ৪০ কোটি টাকা।

‘মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি’ নামের এই প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হচ্ছে।

 দেশের ৩০ জেলার ৯৮টি উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং পয়োনিষ্কাশনের জন্য প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই)। বিশ্বব্যাংক ও এশীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে ঋণ নিয়ে এই প্রকল্পের পরামর্শকের টাকা খরচ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক এবং এআইআইবি যৌথভাবে ঋণ দেবে ১ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা। বাকি ৫২ কোটি টাকা আসবে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে।… ….

ঋণখেলাপি দাপুটেদের বছর

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

বছরের শুরুতে সুদহার নিয়ে বিতর্ক, মার্চে করোনাভাইরাসের কারণে স্থবিরতা, এপ্রিলে কম সুদের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা ও ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি না হওয়ার সুযোগ প্রদান। বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) আটকে রেখে গুলি করার ঘটনা বড় বিতর্কের জন্ম দেয়। বছরজুড়ে আলোচনা ছিল এনআরবি গ্লোবাল ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে নিয়ে। গভর্নর ফজলে কবিরকে পদে রাখতে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশে পরিবর্তনও ছিল আলোচনার বিষয়। আর শেষ দিকে এসে অতিরিক্ত ১ শতাংশ অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখার নির্দেশনা। এসবের মধ্য দিয়েই ২০২০ সাল পার করল দেশের ব্যাংক খাত।… ….

সুদের হার কমানো নিয়ে ২০১৯ সাল থেকে সরকার ও ব্যাংকমালিকদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়। সিদ্ধান্তও হয়, যদিও ব্যাংকগুলো তা মানেনি। অবশেষে চলতি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নির্দিষ্ট করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সুদহার কমায় ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ সীমিত করে ফেলে। আমানতের সুদও কমানো শুরু হয়। কোনো কোনো ব্যাংক আমানতের সুদহার কমিয়ে ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনে। এতে বিপাকে পড়েন সাধারণ আমানতকারীরা।

এরপরও করোনাভাইরাসের মধ্যে ব্যাংকগুলোতে আমানত বাড়ে। ঋণ বিতরণ কমায় ব্যাংকে জমে যায় বিপুল অলস তারল্য। এতে ব্যাংকারদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে।

করোনাভাইরাসের কারণে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। তবে এই সময়ে ব্যাংক খোলা থাকায় গ্রাহকদের সেবা দিতে গিয়ে নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন ব্যাংকাররা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান অনেক ব্যাংকার। করোনাকালে প্রায় সব ব্যাংকই ঘরে বসে হিসাব খোলাসহ নতুন নতুন ডিজিটাল সেবা নিয়ে আসে। চালু করে আরও বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা। এতে অনলাইনে লেনদেন বৃদ্ধি পায়।

করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে নতুন করে কোনো ঋণখেলাপি হবে না বলে জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ঋণ শোধ না করেও এই বছরে খেলাপি হয়নি কেউ। আবার নতুন ঋণও পেয়েছেন। অর্থাৎ পুরো বছরেই ছিল ঋণখেলাপিদের জয়জয়কার।

এদিকে করোনার মধ্যে নতুন একটি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালুর অনুমোদন দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিস্ময়ের জন্ম দেয়। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো সিটিজেন ব্যাংক ও স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। বছরের শুরুতে অনুমোদন পায় বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক। ফলে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বেড়ে হয় ৬১টি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দাঁড়ায় ৩৫টি।

বছরজুড়ে আলোচনায় ছিল এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের আর্থিক দুর্নীতি। তিনি কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান। দেশে ফেরার জন্য চিঠি দিলেও তিনি ফেরেননি। কোনো টাকাও ফেরত দেননি। যে কারণে কমপক্ষে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকেরা তাঁদের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

মে মাসে সিকদার গ্রুপের মালিক জয়নুল হক সিকদারের দুই ছেলে রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার এক্সিম ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালান। তাঁরা নিজেদের বনানীর বাসায় দুই ব্যাংকারকে জোর করে আটক রেখেও নির্যাতন করেন। এরপর দুই ভাই রোগী সেজে দেশ ছেড়ে যান। এই ঘটনার ব্যাপক সমালোচনা হয়। এটি ব্যাংকারদের মাঝে ভয় ঢুকিয়ে দেয়।

মালিকদের নতুন আবদার

২৮ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

করোনা সংকটে সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা পেলেও গত এপ্রিলে শ্রমিকের মজুরি ৩৫ শতাংশ কম দিয়েছেন পোশাকশিল্পের মালিকেরা। পরে ঈদ বোনাসও কম দিয়েছেন তাঁরা। এবার শ্রমিকের বার্ষিক ৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির (ইনক্রিমেন্ট) ওপর চোখ পড়েছে মালিকদের। তাঁরা আগামী দুই বছর শ্রমিকের ইনক্রিমেন্ট না দেওয়ার আবদার জানিয়েছেন।

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের বড় দুই সংগঠনের একটি বিকেএমইএ গতকাল রোববার শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানকে এ ব্যাপারে একটি চিঠি দিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিভিন্ন খাতে যেখানে বেতন-ভাতা কমানো হয়েছে, সেখানে পোশাকশিল্পে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বাস্তবসম্মত নয়। বিকেএমইএর এই বক্তব্যকে অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য আবদার বলে মনে করেন শ্রমিকনেতারা।… ….

পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপে কমল বিআরটিসি বাসের সংখ্যা

৩১ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

সিলেট-হবিগঞ্জ ও সিলেট-শ্রীমঙ্গল রুটে বিআরটিসির ছয়টি বাস চলাচল করবে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে এ দুটি রুটে বাসগুলো চলাচল শুরু করবে বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এ সিদ্ধান্ত দেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। তবে বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন, তিনি এমন কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।

এর আগে ২২ ডিসেম্বর এই দুটি সড়কে চলাচলের জন্য ১২টি বিআরটিসি বাসের উদ্বোধন করা হয়। সে সময় পরিবহন ধর্মঘট চলায় বাসগুলো সড়কে নামানো হয়নি। গত রোববার বাসগুলোর মধ্যে দুটি বাস চলাচল শুরু করতে গেলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে। এরপর থেকে বাসগুলো চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেটের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ, পরিবহন মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিকনেতাদের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেও সড়ক দুটিতে কয়টি বাস চলাচল করবে, সেটির সিদ্ধান্ত হয়নি।

কোটিপতি বেড়েছে হাজার ৬১১ জন

৯ জানুয়ারি, ২০২১, নিউজ টুয়েন্টিফোর টিভি

দেশে করোনাকালীন সময়েও কোটিপতি বেড়েছে ৭ হাজার ৬১১ জন। ২০১৯ সালে যেখানে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ছিল ৭৯ হাজার ৮৭৭ জন। সেখানে বিদায়ী বছর ২০২০ সালে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৭ হাজার ৪৮৮ জন এমন তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (বিবিএস) তথ্যমতে করোনা মহামারিতে দেশে মানুষের আয় কমেছে ২০ শতাংশ।

বিবিএস বলছে, গত বছর ১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর বিবিএস ৯৮৯টি পরিবারের ওপর টেলিফোনে ওই জরিপ চালায়। সেই জরিপে দেখা গেছে, করোনার আগে গত মার্চ মাসে প্রতি পরিবারে মাসিক গড় আয় ছিল ১৯ হাজার ৪২৫ টাকা। আগস্ট মাসে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৪৯২ টাকা।

জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। কিন্তু বড় লোক বা ধনীদের আয় বেড়েছে। ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারী বেড়ে যাওয়া তারই প্রমাণ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশের কোটি কোটি লোক নিঃস্ব হয়েছে বলেই করোনার সময়ও কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। ব্যাংক থেকে লুট করা একটি শ্রেণি কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। আবার তারাই হয়তো ব্যাংকে টাকা রাখছেন।

মাসে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে হাজার ৮৬৩

০৮ জানুয়ারি ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন

২০২০ সালের মার্চে যখন দেশে মহামারি করোনার আবির্ভাব শুরু হয়, তখন ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। গত সেপ্টেম্বরের শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৪৮৮টি। অর্থাৎ, ছয় মাসে (১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর) ব্যাংক খাতে কোটি টাকা আমানত রাখা অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৩টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ৮৭ হাজার ৪৮৮টির মধ্যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট যেমন রয়েছে, তেমনই প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টও রয়েছে। আর প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টের পেছনে কোনও না কোনও ব্যক্তি রয়েছেন। তারা বলছেন,  ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি আছে—এমন আমানতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানেই দেশে নতুন করে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে গেছে।… ….

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সম্পদশালী বৃদ্ধির হার ও ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রক্ষেপণ ধরে ওয়েলথ-এক্স এর  প্রতিবেদনে বলা ছিল, ৩ কোটি ডলার বা আড়াইশ’ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকদের সংখ্যা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে। ওয়েলথ-এক্সের হিসাবে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে অতি ধনীর সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৭ শতাংশ হারে। এ হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ মোট ৭৫টি বড় অর্থনীতির দেশের চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতের সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৪৫১টি। আর গত মার্চ থেকে জুন ওই তিন মাসে ব্যাংকে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১২ জন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এই বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার ৩৭ জন। গত মার্চ শেষে এই সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫ জন।

এদিকে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) করোনাকালীন আয়, ব্যয় ও বেকারত্বের প্রভাব তুলে ধরে বলেছে, করোনায় মানুষের আয় কমেছে ২০ শতাংশ। করোনার আগে গত মার্চ মাসে প্রতি পরিবারের মাসিক গড় আয় ছিল ১৯ হাজার ৪২৫ টাকা। আগস্টে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৪৯২ টাকায়। অর্থাৎ পাঁচ মাসের ব্যবধানে পরিবারপ্রতি আয় কমেছে প্রায় চার হাজার টাকা। আর জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে জানানো হয়, কোভিড-১৯-এর কারণে আয় কমেছে শতকরা ৭২ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সেসব পরিবার, যাদের বছরে আয় এক লাখ টাকার কম।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত এক বছরে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৭ হাজার ৭১১ জন। এরমধ্যে করোনাকালের ছয় মাসেই বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৩। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার ৮৭৭ জন।… …

শিম কপি বেগুন ২–টাকা কেজি

১৫ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

যশোর সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন ৪০ কেজি শিম নিয়ে মোকামে গেলেন। ২ টাকা কেজি দরে সেই শিম বিক্রি করে ৮০ টাকা পেলেন। অথচ খেত থেকে শিম তোলা আর পরিবহনের জন্যই তিনি ১৪০ টাকা খরচ করলেন।

আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি তিন বিঘাতে শিম চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ৬০ হাজার টাকার মতো শিম বিক্রি করেছি। এখনো ৪০ হাজার টাকা ঘাটতি আছে। এখনো অন্তত তিন মাস খেতে শিম পাওয়া যাবে। ফলনও খুব ভালো হচ্ছে। কিন্তু দাম না পেলে শিম খেতে রেখে লাভ কী? খেত ভেঙে দিয়ে বোরো ধান চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গতকাল বৃহস্পতিবার যশোর অঞ্চলের সবজির বৃহত্তম পাইকারি মোকাম বারীনগরে এভাবে আরও অনেক কৃষক আলাউদ্দিনের মতো আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁরা এলাকায় বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপনের দাবি জানান, যাতে দাম কম হলে সবজি সংরক্ষণ করা যায়।

সরেজমিনে গতকাল বারীনগর সবজি মোকামে দেখা গেছে, প্রতি কেজি শিম ২ থেকে ৩ টাকা, বেগুন ৩ থেকে ৪ টাকা, ফুলকপি ২ টাকা, বাঁধাকপি ২ থেকে ৩ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৮ থেকে ১০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ২৫ টাকা ও পেঁয়াজের কলি ২ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। এদিন ব্যাপারীরা মোকাম থেকে সবজি কিনে ট্রাকে করে সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়েছেন।

ছোট হৈবতপুর গ্রামের ইজাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৩ বিঘা জমিতে শিম আর ১৩ কাঠায় বেগুন চাষ করেছি। ৯০ কেজির দুই বস্তা শিম নিয়ে হাটে গেলে প্রতি কেজির দাম ওঠে আড়াই টাকা। অথচ খেত থেকে ওই শিম তুলে বস্তায় ভরে হাটে নিতে তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়েছে। তাই দুঃখে শিম বিক্রি করি নাই। যে শ্রমিকেরা ওই শিম খেত থেকে তুলে দিয়েছেন তাঁদের দিয়ে খালি হাতে বাড়িতে ফিরে গেলাম।’ তিনি জানান, সার ও কীটনাশকের দোকানে ৬৩ হাজার টাকা দেনা রয়েছে। সবজিখেত ভেঙে দিয়ে নতুন করে বোরো ধান চাষের টাকাও তাঁর হাতে নেই।… ….

বিএসইসির সব প্রতিষ্ঠান ধুঁকছে, লোকসান বাড়ছে

১৬ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

একসময় বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) অধীনে ৬৩টি প্রতিষ্ঠান ছিল। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে তা কমতে কমতে এখন ৯টিতে এসে ঠেকেছে। এর মধ্যে ৭টি বহু বছর ধরেই লোকসানি। বাকি দুটি সামান্য লাভের মধ্যে থাকলেও বিদায়ী ২০২০ সালে করোনার ধাক্কায় বড় হোঁচট খেয়েছে। ফলে সব কটিই এখন ধুঁকছে।… …

বর্তমানে বিএসইসির নামকাওয়াস্তে লাভে থাকা কোম্পানি দুটি হলো প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও গাজী ওয়্যারস লিমিটেড। অন্য সাত লোকসানি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এটলাস বাংলাদেশ, ন্যাশনাল টিউবস, ইস্টার্ন টিউবস, ইস্টার্ন কেব্‌লস, জেনারেল ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি ও ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস লিমিটেড।

বাংলাদেশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান (জাতীয়করণ) অধ্যাদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী ওই বছরের ১ জুলাই গঠিত হয় বাংলাদেশ ইস্পাত কারখানা করপোরেশন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও জাহাজ নির্মাণ করপোরেশন। পরে ১৯৭৬ সালে সংস্থা দুটিকে একীভূত করে গঠন করা হয় বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি)। শুরুর দিকে সংস্থাটির অধীনে ৬২টি প্রতিষ্ঠান ছিল। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি স্থাপন করার ফলে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ৬৩।

বিএসইসির প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথম বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে শুরু করেন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তাঁর আমলে (১৯৭৬-৮১) ২২টি কোম্পানি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এইচ এম এরশাদ ক্ষমতায় থাকার সময়ে (১৯৮২-৯০) বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয় আরও ১৮টি প্রতিষ্ঠান। এরপর খালেদা জিয়ার দুই দফায় (১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-০৬) এবং শেখ হাসিনার প্রথম দফায় (১৯৯৬-২০০১) বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বেসরকারীকরণ করা হয়। এর মধ্যে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, ২০০০ সালে মেটালেক্স করপোরেশন ও ২০০৪ সালে চিটাগাং স্টিল মিলস বেসরকারীকরণ হয়। এ ছাড়া সরকারি নির্দেশে অন্য সংস্থার অধীনে দেওয়া হয় কিছু প্রতিষ্ঠান। যেমন ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি পায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আর ২০০৬ সালে ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস পায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।… …

সওজের ২২ হাজার কোটি টাকার কাজের ৫০% সাত ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রণে

১৯ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

বর্তমানে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরে চলমান কাজের মূল্য ২২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। এ কাজের প্রায় ৫০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে সাত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ সাতটিসহ মুষ্টিমেয় কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই পাচ্ছে সওজের সিংহভাগ কাজ।

প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে প্রতিবেশী ভারত ও চীনের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, চার লেন সড়ক নির্মাণে ভারতে প্রতি কিলোমিটারে ১১-১৩ লাখ ডলার ও চীনে ১৩-১৬ লাখ ডলার খরচ হয়। সেখানে বাংলাদেশে চার লেন সড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, রংপুর-হাটিকুমরুল মহাসড়ক, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে প্রতি কিলোমিটারে সর্বনিম্ন ২৫ লাখ ডলার থেকে সর্বোচ্চ  এক কোটি ১৯ লাখ ডলার ব্যয় হয়েছে। সড়কে এ বাড়তি খরচের বিষয়টি এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার আলোচনায় উঠে এসেছে। এর পেছনে নির্মাণ ব্যয়ে অস্বচ্ছতা, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়া ও দরপত্রে প্রতিযোগিতা না থাকাকে দায়ী করা হচ্ছে।

চলমান কাজের মূল্যে সওজের সবচেয়ে বড় ঠিকাদার এখন কুমিল্লার রানা বিল্ডার্স।…

রানা বিল্ডার্সের পরেই চলমান কাজের মূল্যে সওজ অধিদপ্তরের দ্বিতীয় শীর্ষ ঠিকাদার চায়না কনস্ট্রাকশন সেভেন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশন করপোরেশন। তারা বাস্তবায়ন করছে ১ হাজার ৫৯২ কোটি টাকার কাজ। ময়েনউদ্দিন (বাঁশি) লিমিটেড নামের আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একাই বাস্তবায়ন করছে ১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ। প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে তিন নম্বরে।

চার নম্বরে রয়েছে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স।… 

সওজের তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে আবদুল মোনেম লিমিটেড। তাদের চলমান কাজের মূল্য ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। ছয় নম্বরে থাকা স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড বাস্তবায়ন করছে ১ হাজার ১৫১ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ। সম্প্রতি ময়মনসিংহ জোনে কালো তালিকাভুক্ত হওয়া মজহার এন্টারপ্রাইজ ১ হাজার ১৪৯ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে সাত নম্বরে।

সওজ অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারা দেশে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া ঠিকাদারের সংখ্যা ৮৪৫। এর মধ্যে বর্তমানে দেশী-বিদেশী মিলিয়ে ২৩২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার কাজ করছে। এর অর্ধেক অর্থাৎ ১১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার কাজ করছে উল্লিখিত সাত ঠিকাদার। আর শীর্ষ ২০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সব মিলিয়ে বাস্তবায়ন করছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ। অবশিষ্ট সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ ভাগাভাগি করে বাস্তবায়ন করছে ২১২টি প্রতিষ্ঠান।… ….

৪২ শতাংশ মানুষ এখন দরিদ্র

২৩ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো অনলাইন

করোনার প্রভাবে দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার (আপার পোভার্টি রেট) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ। দেশব্যাপী খানা পর্যায়ের জরিপের ভিত্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নিজেদের অর্থায়নে এই জরিপ পরিচালনা করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম।

বিবিএসের খানা জরিপ অনুসারে, ২০১৬ সালে দেশের গ্রামাঞ্চলের সার্বিক দারিদ্র্য ছিল ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৮ সালের জিইডি-সানেম জরিপ অনুসারে যা ছিল ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু করোনার প্রভাবে ২০২০ সালে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। শহরাঞ্চলে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ২০১৬ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০১৮ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ আর করোনার সময়ে ২০২০ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ।

দারিদ্র্য ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে আজ এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

জরিপের আরেকটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, ২০২০ সালে দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে রেমিট্যান্স বা প্রবাসীয় আয়ের ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হলেও ব্যক্তিক পর্যায়ে তা বরং কমে গেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, অনানুষ্ঠানিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবাসী আয় এসেছে। এতে বিনিময় হার কমে গেছে। ৮২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ পরিবার বলেছে, দেশের বাইরে থেকে আসা প্রবাসী আয় কমেছে। একই ক্ষেত্রে আগের মতো আছে বলেছে ১৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ পরিবার। ফলে প্রবাসী আয়ের প্রভাব সমাজে অতটা অনুভূত হয়নি, যতটা বলা হয়েছে, সে তুলনায়।

দখল-দুর্নীতি-অনিয়ম

ক্ষমতার কাছে থেকে বড় হন গ্যাংস্টার ব্যবসায়ী হাজী সেলিম

২৯ অক্টোবর, ২০২০, বণিক বার্তা

এক সময়ে ছিলেন পানবিক্রেতা। এখন তিনি দেশের শীর্ষ ধনীদের একজন। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়কে কাজে লাগিয়ে পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাটের পান দোকানের ব্যবসায়ী থেকে হাজী মোহাম্মদ সেলিম হয়ে উঠেছেন বড় কনগ্লোমারেট মদিনা গ্রুপের মালিক।

ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিমের ব্যবসায়িক উত্থানের গল্পটিকে বলা চলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ও পেশিশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সমৃদ্ধি অর্জনের কেস স্টাডি হিসেবে। গত তিন দশকে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলেরই পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন তিনি।

স্বাধীনতার আগে হাজী সেলিমের বাবা চান মিয়া ছিলেন সোয়ারীঘাটের পানবিক্রেতা। পিতার সঙ্গে পান বিক্রির মধ্য দিয়ে ব্যবসার জগতে পা রাখেন হাজী সেলিম। স্বাধীনতার পরও পান বিক্রি করেই সংসার চলত পরিবারটির। একপর্যায়ে কোমলপানীয় সেভেন আপের এজেন্সি খুলে বসেন তারা। ওই এজেন্সির আড়ালে নকল কোমলপানীয় বিক্রির অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। সে সময় মোহাম্মদ সেলিম, তার বাবা চান মিয়া ও বড় ভাই কায়েস মিয়াকে পুলিশ আটকও করেছিল।… …

এমপির শ্যালিকার ৫০০ কোটি টাকা!

১১ নভেম্বর, ২০২০, কালের কন্ঠ

দিনমজুর বাবার সংসারে তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জুটত না। অর্থের অভাবে লেখাপড়াও হয়নি। সেই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান এখন বিত্তশালী। বাড়ি, গাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট—কী নেই তাঁর। সাত বছরের ব্যবধানে তিনি ৫০০ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। শুধু তাঁর পাঁচটি ব্যাংক হিসাবেই ১৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অথচ ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের মানবপাচারের টাকায় শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এখন সম্পদশালী। কুয়েতে মানবপাচারের হোতা পাপুল অর্থ ও মানবপাচারের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ আড়াল করতে শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে রাখেন। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ পথে অর্জিত বিপুল অর্থ বৈধ হিসাবে দেখাতে শ্যালিকা জেসমিনের মালিকানায় ‘লিলাবালি’ নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন এমপি পাপুল। ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচটি ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাচার করা হয় ১৪৮ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে এমপি পাপুল, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান এবং শ্যালিকার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।… ….

টাকা পাচারকারীদের মধ্যে সরকারি কর্মচারীই বেশি: ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১৯ নভেম্বর, ২০২০, ইত্তেফাক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, রাজনীতিবিদরা নয়, বিদেশে বেশি অর্থ পাচারীদের মধ্যে সরকারি কর্মচারীরাই বেশি। গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গোপনে কানাডার টরোন্টোতে অবস্থিত বাংলাদেশিদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যাই বেশি হবে। কিন্তু যে তথ্য পেয়েছি তাতে অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে। যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়।

তিনি বলেন, বিদেশে টাকা পাচার করছে এমন অনেক লোক আছে এবং অনেকে তাদের ছেলেমেয়ে বিদেশে রাখছে। আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চার জন। এছাড়া কিছু আছেন তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরো তথ্য সংগ্রহ করছি।.. …

ছয় ব্যাংকের টাকা লুটে মন্টেনিগ্রোয় পাঁচতারকা হোটেল

২২ নভেম্বর, ২০২০, বণিক বার্তা

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল আলিম চৌধুরী। ইউরোপীয় দেশ মন্টেনিগ্রোয় ফোর পয়েন্টস বাই শেরাটন ও ওয়েস্টিন নামে দুটি পাঁচতারকা হোটেলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন তিনি। ৬ কোটি ইউরো বা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৬০৩ কোটি টাকায় নির্মিতব্য হোটেল দুটি ছাড়াও সেখানকার আবাসন খাতেও বড় অংকের বিনিয়োগ রয়েছে তার। শুধু তাই নয়, মন্টেনিগ্রোয় তার বিনিয়োগকৃত প্রকল্পসংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানগুলোয়  সেখানকার ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। উপস্থিত থাকেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রীও।

দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর এ বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের অর্থের উৎস অনুসন্ধান করেছে বণিক বার্তা। সে অনুসন্ধানে উঠে আসা তথ্য বলছে, মূলত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ঋণের অর্থ বিদেশে পাচারের মাধ্যমেই এ বিনিয়োগ গড়ে তুলেছেন আবদুল আলিম চৌধুরী।

এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, দেশের মোট ছয়টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) প্রায় ৪১৬ কোটি টাকার দেনা রয়েছে আবদুল আলিম চৌধুরীর। খেলাপি হয়ে পড়া এ ঋণের অর্থ আদায়ে তার বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে ২৪ কোটি ৮৭ লাখ ৬ হাজার ৫২৫ টাকা, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ৫৯ কোটি ৭১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪০, ব্র্যাক ব্যাংকে ৩১ কোটি ৬১ লাখ ৬৬ হাজার ১০৫, হাবিব ব্যাংকে ১৬ কোটি ৯৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৬৯, প্রাইম ব্যাংকে ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫ হাজার ৪০৫, ব্যাংক এশিয়ায় ৩৬ কোটি ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৪ টাকা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের ১৯২ কোটি ৭০ লাখ টাকার ঋণ খেলাপ করেছেন তিনি। আবদুল আলিম চৌধুরীর নামে এ সাত ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের করা মোট ১৯টি অর্থঋণ মামলা ও ১৭টি চেকের মামলা চলমান।… ….

সাংসদ আসলামের দখলে নদী–জলাশয়ের ৫৪ একর

২৭ নভেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

বুড়িগঙ্গা নদী ও তুরাগ নদের জায়গা দখল করে অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ আসলামুল হক। দখল করা জায়গার মধ্যে জলাশয়ও রয়েছে। সব মিলিয়ে দখলের মোট পরিমাণ ৫৪ একরের বেশি। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনেই এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কমিশন বলছে, এই অবৈধ দখল পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু (বছিলা সেতু নামে পরিচিত) পার হলেই ডান পাশে নদীর তীর ঘেঁষে ঢাকা-১৪ আসনের সাংসদ আসলামুল হকের ‘আরিশা প্রাইভেট ইকোনমিক জোন’ ও ‘মায়িশা গ্রুপের পাওয়ার প্ল্যান্ট’। তুরাগ ও বুড়িগঙ্গার সংযোগস্থলের পাশেই পড়েছে পুরো এলাকা। কেরানীগঞ্জের ওয়াশপুর ও ঘাটারচর মৌজা এবং সাভারের শ্যামলাপুর মৌজার এই স্থাপনাকে অবৈধ চিহ্নিত করে গত মার্চ মাসে বিআইডব্লিউটিএ উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে বাধা দেন সাংসদ আসলাম। পরে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন এবং একই সঙ্গে তাঁর দখলে থাকা জমি বুড়িগঙ্গা বা তুরাগের সীমানার মধ্যে পড়েছে কি না, তা নির্ধারণ করতে যৌথ জরিপ পরিচালনার জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে আবেদন করেন।

বুড়িগঙ্গা ও তুরাগতীরের জায়গা থেকে সাংসদের মালিকানাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলেছে কমিশন।

আদালতের নির্দেশ এবং সাংসদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি, জরিপ ও পরিদর্শন শেষে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নিশ্চিত হয়, ওই সব স্থাপনা অবৈধ।… ….

সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ

১৫ ডিসেম্বর ২০২০, সময় নিউজ টিভি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মার্কেটের অবৈধ দোকানকে বৈধ করার নামে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে। শুধু ফুলবাড়িয়া-২ মার্কেট থেকেই ২০১৮ সালে সাঈদ খোকন ২১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করছেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলছেন, তাকে হেয় করতেই এ সব ষড়যন্ত্র।

নকশাবর্হিভূত ও পার্কিংয়ের জায়গায় দোকান থাকায় সম্প্রতি ফুলবাড়িয়া-২ মার্কেটে অবৈধ উচ্ছেদ শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

মার্কেট দোকান সমিতি বলছে, ২০১৮ সালে দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের শেষ সময়ে গুলিস্তান ফুলবাড়িয়াএলাকার ১৬টি মার্কেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তখন অবৈধ দোকানকে বৈধতা দেওয়ার কথা বলে প্রতি দোকান থেকে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।… ….

১টি চামচ ৯৭ হাজার টাকা

১৪ ডিসেম্বর ২০২০, সমকাল

বালিশ ও পর্দা কেলেঙ্কারির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার চামচ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে একটি চামচের দাম দেখানো হয়েছে ৯৭ হাজার টাকা। অথচ বাজারে চামচটির দাম মাত্র ৪০ টাকা। এ ছাড়া ৫০টি পর্দার দাম দেখানো হয়েছে এক লাখ ৯৯ হাজার টাকা। এসব অপকর্মের সঙ্গে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় ঠিকাদার, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান সুজন ও উপসহকারী প্রকৌশলী সুলতান আহম্মদ জড়িত বলে জানা গেছে। সরকারি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন ঝিনাইদহ পৌর এলাকার পবহাটি গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জন শিকদার বাঘা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিদর্শন বাংলোতে ক্রোকারিজ সামগ্রী কেনার জন্য ৯৭ হাজার টাকার বিল উত্তোলন করা হয়। এরপর ২০২০ সালের ৮ জুন ওয়ার্ক মেমোরেন্ডামে ক্রোকারিজ সামগ্রী কেনা বাবদ ৯৭ হাজার টাকার ব্যয় দেখানো হয়। কুষ্টিয়ার চৌড়হাস মোড়ের নাসির উদ্দীন মোল্লাকে এই মালপত্র সরবরাহকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে মাত্র ৪০ টাকার চামচ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। পরিদর্শন বাংলোর বেয়ারার রফিকুল ইসলাম জানান, একটি ৪০ টাকার চামচ ছাড়া কোনো ক্রোকারিজ সামগ্রী পাননি তিনি।

২০১৯-২০ অর্থবছরে আরএফকিউর মাধ্যমে ৫০টি পর্দা কেনার ব্যয় দেখানো হয়েছে এক লাখ ৯৯ হাজার টাকা। অথচ বাজারে ২৪০ টাকা দরের ৫০টি পর্দার দাম পড়ে মাত্র ১২ হাজার টাকা। অফিসের দুই দফায় মবিল কেনার ব্যয় দেখানো হয়েছে চার লাখ টাকা। কিন্তু মিলেছে ৪০ টাকা দামের গ্রিজের প্যাকেট। ১০টি মেহগনির চারা রোপণ বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে দুই লাখ টাকা। একটি ব্রান্ডিং বোর্ড তৈরি করতে খরচ দেখানো হয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা। শৈলকূপায় ১১ কিলোমিটার খাল সংস্কার না করেই তুলে নেওয়া হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। এভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন অফিস চত্বরে আবর্জনা পরিস্কার, অফিস ও ঘরবাড়ি মেরামত, বিলবোর্ড তৈরি, সেচ খাল পরিস্কার, গাছ রোপণ ও পরিদর্শন ব্যয় দেখিয়ে সরকারের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

একদিকে দানবীর অন্যদিকে গলার কাঁটা

২২ ডিসেম্বর, ২০২০, বণিক বার্তা

ছোটবেলা থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়েছেন। দিনমজুরের কাজ করেছেন অন্যের জমিতে। ভাগ্যান্বেষণে হয়েছিলেন অভিবাসী শ্রমিক। ফিরে এসে সাধারণ কর্মচারীর কাজ নেন তিতাসে। কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার নেশায় চাকরি ছেড়ে যুক্ত হন তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়। শূন্য থেকে গড়ে তোলেন বিশাল গ্রুপ। এ গল্প থারমেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লার। শুধু একজন ভালো উদ্যোক্তা নন, দানবীর হিসেবেও বেশ পরিচিতি রয়েছে তার। মাত্র ৩৬০ টাকার অভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা আবদুল কাদির মোল্লা পরবর্তী সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে দান করেছেন অঢেল অর্থ। গড়ে তুলেছেন অসংখ্য স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও কিনে দিয়েছেন বাস। তবে দান-খয়রাতে যতটা আগ্রহী তিনি ততটাই অনাগ্রহী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে। দীর্ঘ সময় ধরে বড় অংকের ঋণ ফেরত না দেয়ায় বর্তমানে অন্তত এক ডজন ব্যাংকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দানবীর আবদুল কাদির মোল্লার থারমেক্স গ্রুপ।

থারমেক্স গ্রুপের ব্যাংকঋণের পরিমাণ বর্তমানে ৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ ঋণের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকাই গিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে। এছাড়া আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়াসহ বেসরকারি ও বিদেশী কয়েকটি ব্যাংক থেকেও প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে থারমেক্স। বিপুল অংকের এ ঋণ আদায় নিয়ে এখন উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠায় রয়েছে ব্যাংকগুলো।… ….

ওমরা টাকাগুলা খাইয়া ফেলাইলো’

লালমনিরহাটে সঞ্চয়ের কোটি টাকা নিয়ে উধাও কোম্পানি

২৭ ডিসেম্বর ২০২০, সমকাল

তিস্তাপাড়ের বাক্‌প্রতিবন্ধী আব্দুর রহমান (১২)। তার দিনমজুর বাবা আব্দুর রশিদ সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ১০ বছর মেয়াদি মাসিক ৫০০ টাকা করে সঞ্চয় জমা করেন আল-হামীম পাবলিক লিমিটেড নামে একটি সংস্থায়। নদীভাঙনে সব কিছু হারিয়ে আব্দুর রশিদ এখন ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করছেন। ছেলের অবর্তমানে দাদি রেজিয়া অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে প্রতিবন্ধী নাতনির জন্য টাকা জমান। সুদে-আসলে দ্বিগুণ হবে এই আশায় সত্তরোর্ধ্ব রেজিয়া প্রতি মাসের জমানো টাকা তুলে দেন ওই সংস্থায়। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে তিনি সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই লাপাত্তা আল-হামীম পাবলিক লি. কোম্পানি। রেজিয়া এখন কোম্পানির দেওয়া সঞ্চয় জমা বই ও ক্রয়-বিক্রয়-সংক্রান্ত চুক্তিনামা নিয়ে উদভ্রান্তের মতো তিস্তাপাড়ে ঘুরছেন। তার মতো আরেক মা ইলিচা বেগম। মেয়ে মারুফার বিয়ের কথা ভেবে ৫ বছরে দ্বিগুণ হবে এমন আশ্বাসে ১ লাখ টাকার বিনিয়োগ চুক্তি করেন ওই সংস্থায়। অন্য এক বেসরকারি সংগঠন থেকে ঋণ নিয়ে তিনি ওই টাকা এখানে বিনিয়োগ করেন। এছাড়া ১০ বছর মেয়াদি মাসিক ২০০ টাকা করে দুটি হিসাব খোলেন তিনি। এখন হদিস মিলছে না এই সংস্থার। গত শুক্রবার লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ে অনুসন্ধানে গেলে এমন অসংখ্য প্রতারিত অসহায় নর-নারীর দেখা মেলে।… ….

বনের নিয়োগ-পদোন্নতিতে ‘ঘুষের তথ্য’ টিআইবির প্রতিবেদনে

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বন অধিদপ্তরে বন প্রহরী থেকে শুরু করে প্রধান বন সংরক্ষক পদে নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি বা পদায়নে ‘লাখ থেকে কোটি টাকা’ ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে।

টিআইবি বলছে, “সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক ও ব্যক্তিগত সহকারী এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ” এই ঘুষ লেনদেনে জড়িত।

বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ‘বন অধিদপ্তর: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বন অধিদপ্তরের ‘দুর্নীতি ও অনিয়মের’ ক্ষেত্র উল্লেখ করে ‘বিধিবহির্ভূত’ লেনদেনের চিত্র তুলে ধরেন টিআইবির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নেওয়াজুল মওলা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী দাবি করেছেন, তার অধিদপ্তরে নিয়োগ বা বদলির কোনো ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি ‘হয়নি’।

টিআইবির সংবাদ সম্মেলনে নেওয়াজুল মওলা বলেন, প্রধান বন সংরক্ষক হিসেবে পদোন্নতির জন্য এক কোটি থেকে তিন কোটি টাকা ‘বিধিবহির্ভূত’ লেনদেনের অভিযোগ তারা এ গবেষণা চালাতে গিয়ে পেয়েছেন।

এছাড়া বন সংরক্ষক হিসেবে নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি বা বদলির ক্ষেত্রে ১০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা, প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেতে এক থেকে দেড় কোটি টাকা এবং সহকারী বন সংরক্ষক পদে বদলির ক্ষেত্রে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথা জানান তিনি।

টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, রেঞ্জ কর্মকর্তা, চেক স্টেশন ইনচার্জ, ফরেস্টার, বিট কর্মকর্তা এবং বন প্রহরী পদে বদলি হতে প্রধান বন সংরক্ষকের দপ্তর, আঞ্চলিক ও বিভাগীয় বন কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশকে ‘লাখ লাখ টাকা ঘুষ’ দিতে হয়।

রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে বদলির ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা, চেক স্টেশন ইনচার্জ ও ফরেস্টার পদে বদলি ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকা, বিট কর্মকর্তার বদলিতে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা এবং বন প্রহরী পদে বদলির ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকার ‘ঘুষ’ লেনদেন হয় বলে টিআইবির ভাষ্য।… …

এক কিলোমিটার রাস্তায় ব্যয় ৮২ কোটি টাকা

২৭ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

ঢাকা-সিলেট বিদ্যমান দুই লেন সড়ককে চার লেনে উন্নীত করতে যে টাকা খরচ ধরেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। ২০৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি নির্মাণে খরচ হবে ১৭ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। সে হিসাবে কিলোমিটারপ্রতি খরচ হবে ৮২ কোটি টাকা। চার লেনের সড়কটি নির্মাণে পরামর্শক, যানবাহন কেনা, মাটির কাজসহ বিভিন্ন খাতে যে খরচ ধরা হয়েছে, তা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেটের পীর হাবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত প্রস্তাবিত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হবে। এ জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ঋণ মিলবে ১৩ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। বাকি ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।

চলতি মাসের প্রথম দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। সেখানে যাচাই-বাছাই করে বেশ কিছু খাতে আর্থিক খরচে অসংগতি খুঁজে পেয়েছে কমিশন। সমজাতীয় অন্য প্রকল্পের তুলনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ কেন ৮২ কোটি টাকা করে পড়ছে, তার ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। তবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ অন্য মহাসড়কগুলো প্রচলিত বিটুমিন দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রচলিত বিটুমিন ব্যবহার করা হবে না। এ সড়কে পলিমার মোডিফাইড বিটুমিন (পিএমবি) ব্যবহার করা হবে। তাই এই প্রকল্পে কিলোমিটারপ্রতি খরচ বেশি হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশে মহাসড়কে প্রচলিত বিটুমিনের চেয়ে পলিমার মোডিফাইড বিটুমিন যে ভালো, তা যে সড়ককে দীর্ঘস্থায়ী করবে, তার একটা যৌক্তিক বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রমাণ কমিশনে জমা দিতে সওজকে বলা হয়েছে। মহাসড়কে প্রচলিত বিটুমিন থেকে বের হয়ে পিএমবির দিকে কেন যাওয়া হচ্ছে, সেটির ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে সওজের কাছে।.. …

তিন বছর আগে সরকার প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাথমিক ব্যয় ধরেছিল ৯ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। পরে চায়না চারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এই প্রকল্পের ব্যয় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করে। নানা জটিলতায় গত তিন বছর কোনো অগ্রগতি না হওয়ার পাশাপাশি দর পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পটির ব্যয় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে এক লাফে ১৭ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, নির্মাণ তদারকিতে পরামর্শক, পুনর্বাসনকাজে পরামর্শক, আয় ও জীবিকার জন্য পরামর্শক, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পরামর্শকসহ ভিন্ন ভিন্ন নামে পরামর্শক খাতে এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৪ কোটি টাকা। দেশের মধ্যে চার লেনের একটি সড়ক নির্মাণ করতে কেন আলাদা পরামর্শকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। পরামর্শক খাতের এই ব্যয়কে বর্তমান বাস্তবতায় অনেক বেশি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে বলে মনে করে কমিশন।… ….

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ঢাকা-সিলেট সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে গিয়ে ছোট–বড় মোট সেতু বানাতে হবে ৬৪টি। যার মোট দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৭০১ মিটার। এসব সেতু বানাতে খরচ দেখানো হয়েছে ২ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। ছোট–বড় ৩০৯টি কালভার্ট নির্মাণে ব্যয় হবে ৬৪০ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশন বলছে, যেসব সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের কথা বলা হয়েছে, তাতে এখনো নকশাই তৈরি হয়নি। এ ছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় উড়ালসড়ক, ওভারপাস, রেল ওভারব্রিজ, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে খরচ হবে ১ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা। রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তবে রেল ওভারব্রিজ নির্মাণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়কে।

তথ্য–উপাত্ত বলছে, এ প্রকল্পের আওতায় মাটির কাজ করার জন্য আলাদাভাবে ১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। কিন্তু কিসের ওপর ভিত্তি করে এই টাকা রাখা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে কমিশন। বিস্তারিত সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে তবে মাটির কাজে খরচ নির্ধারণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশন থেকে।… ….

করোনার মধ্যেই অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার রেকর্ড

০৫ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি। এখনো ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি রফতানি খাত। এর মধ্যেও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আবাসন খাত। এ দুটি খাতেই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ মিলেছে চলতি অর্থবছরে। এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি বিনিয়োগকারীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ নিয়েছেন ৭ হাজার ৬৫০ জন করদাতা। এতে ৯৬২ কোটি ৬০ লাখ টাকা কর পেয়েছে এনবিআর।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার ঘটনা। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে সরকারগুলো অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিলেও এতে সাড়া মিলেছে খুব কম। অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ প্রথম দেয়া হয়েছিল ১৯৭৫ সালে, সামরিক আইনের আওতায়। এরপর ১৯৭৭-৭৮ অর্থবছরে মাত্র ৭০ কোটি টাকা, ১৯৮৭-৮৮ অর্থবছরে ২০০ কোটি, ১৯৮৮-৮৯ অর্থবছরে ২৫০ কোটি, ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে ৪০০ কোটি এবং ২০০০-০১ অর্থবছরে ১ হাজার কোটি টাকা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা হয়।

২০০৫-০৬ অর্থবছরের বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেয়া হলে এ সুযোগ নিয়েছিলেন ৭ হাজার ২৫২ জন। ওই সময় ৪ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা বৈধ হয়। এরপর সবচেয়ে বেশি অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ হয় ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ওই সময় ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ সুযোগ নিয়ে ৯ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা বৈধ করে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার নানাভাবে এ সুযোগ দিয়ে এলেও এবারের মতো আগে কখনই এত সাড়া মেলেনি।

লাখ কোটি টাকা ঋণের বন্ধকি সম্পত্তি বাস্তবে কত?

০৬ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

শিপইয়ার্ডের ২৯৫ দশমিক ৭৬ শতক জমি বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন। পূর্বাপর বিবেচনা না করে ব্যাংক তাকে এ ঋণ দেয়। পরে জানা যায়, ঋণের জন্য ব্যাংকে যে জমি তিনি বন্ধক রেখেছিলেন, তা ছিল মূলত সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এরই মধ্যে বন বিভাগ ওই জমি দখলে নিয়েছে। ফলে বন্ধকি জমি বিক্রি করে ঋণ আদায়ের উপায়ও নেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের।

রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিতই অভিযোগ উঠছে সরকারি খাসজমি দখলের। দখলের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না নদী, পাহাড়, বন, রেলসহ সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের ভূমিই। ব্যক্তি খাতের বিরোধপূর্ণ জমিও প্রভাবশালীদের দখলে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দখল বা নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয়া এসব জমি দেয়া হচ্ছে ব্যাংক জামানত হিসেবে। বিপরীতে দেশের ব্যাংক খাত থেকে বের করে নেয়া হচ্ছে লক্ষ কোটি টাকা।

সম্প্রতি সংসদীয় কমিটিকে দেয়া বন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৮৮ হাজারের বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ একর সংরক্ষিত বনভূমি। অবৈধভাবে দখল করা এসব বনের জমি বন্ধক দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণও নিয়েছেন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ ধরনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সতর্ক করার জন্য তাগিদ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।

কেনাকাটার আরেক কেলেঙ্কারি

৭ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

স্বাস্থ্য খাতে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ঘটেছে আরেক কেলেঙ্কারি। সব ধরনের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে অস্বাভাবিক ব্যয়ে কেনা হয়েছে আসবাব ও যন্ত্রপাতি। রক্তের রোগ থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের যন্ত্র কেনা হয়েছে বরাদ্দের প্রায় আট গুণ বেশি ব্যয়ে।

অ্যানেসথেসিয়া ভেন্টিলেটর নামের একটি চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা, কিন্তু কেনা হয়েছে প্রায় ১২ গুণ বেশি খরচে। এমনকি যেসব যন্ত্রপাতি কেনারই কথা ছিল না, সেসবও কেনা হয়েছে।

এক প্রকল্পে এত অনিয়ম দেখে পরিকল্পনা কমিশনও বিস্মিত। এভাবে ব্যয় করাকে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলছে কমিশন। বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, এটা তো পুকুরচুরি নয়, সাগরচুরিকেও হার মানিয়েছে।

স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটার অনিয়মের এ ঘটনা গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৯২৪ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ৭ তলা হাসপাতাল ভবনকে ১৫ তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা। আরও ছিল কলেজের একাডেমিক ভবন ও শিক্ষার্থীদের জন্য ডরমিটরি নির্মাণ।

আগামী জুনে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৪০ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পের সময় আরও দুই বছর এবং ব্যয় ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকায় উন্নীত করতে গত ২৪ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে তখনই কেনাকাটায় এসব অনিয়ম ধরা পড়ে।… …

কেনাকাটায় যত অনিয়ম

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রক্তের রোগ থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ে পরীক্ষার জন্য একটি ইলেকট্রোফোরিসেস হিমোগ্লোবিন যন্ত্র কিনতে খরচ ধরা হয়েছিল ১৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। কিন্তু নেদারল্যান্ডস থেকে তা কেনা হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকায়। অর্থাৎ প্রায় আট গুণ বেশি ব্যয়ে যন্ত্রটি কেনা হয়েছে। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনে যোগাযোগ করে জানা গেছে, সেখানে এ ধরনের একটি যন্ত্র আছে।

ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা রকিব হাসান জানালেন, এই যন্ত্রের দাম ২০ লাখ টাকার মধ্যে।

আবার একটি অ্যানেসথেসিয়া ভেন্টিলেটরের দাম ধরা ছিল ৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা। কিন্তু যুক্তরাজ্য থেকে ভেন্টিলেটর কেনা হয়েছে ১২ গুণ বেশি দামে, ৫৭ লাখ ২৯ হাজার টাকায়। চোখে ছানি পড়ার পর লেন্স লাগানোর কাজে ব্যবহৃত হয় ফ্যাকো ইমালসিফায়ার। এটি আমদানিতে খরচ ধরা হয়েছিল ২০ লাখ টাকা, কিন্তু কেনা হয়েছে ৯৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকায়। প্রকল্পে ১২টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর আমদানি করার কথা, দাম ধরা ছিল প্রতিটি ৫ লাখ টাকা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা প্রতিটি আইসিইউ ভেন্টিলেটরের পেছনে খরচ পড়েছে ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ আট গুণ বেশি দামে ভেন্টিলেটর কেনা হয়েছে।

আবার এই প্রকল্পে কেনাকাটার কথা ছিল না, সেসবও কেনা হয়েছে বর্তমান বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে। যেমন অর্থ বরাদ্দ না থাকলেও টেবিল ফর গাইনোকোলজি কেনা হয়েছে ৩১ লাখ ৮৯ হাজার টাকায়। একইভাবে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে কালার ডপলার আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন উইথ ফোরডি, ৫ লাখ ৫২ হাজার টাকায় পালস অক্সিমিটার ডেস্কটপ এবং ৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকায় ইসিআর ল্যাব অটোমেশন।… …

নামের মিলে জমি বাড়ি নিলামে

৯ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

অগ্রণী ব্যাংকের নবাবপুর শাখা থেকে ঋণ নিতে মেসার্স ট্রেড ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যে ছয়টি জমি বন্ধক রেখেছিল, তার একটি মো. আবু বকর সিদ্দিকী ওরফে সিদ্দিকুর রহমানের। ১৬ বছরের আইনি লড়াইয়ে জিতে অগ্রণী ব্যাংক আবু বকর সিদ্দিকীর বদলে আবু বকর সিদ্দিকের চারতলা বাড়ি নিলামে তুলে বেচে দিয়েছে। ব্যাংক বলছে, তাদের কোনো দোষ নেই। সব দোষ নিলামে ওঠা বাড়ির মালিক আর নিলাম ক্রেতার। অন্যদিকে মালিক আর ক্রেতা দুষছেন ব্যাংককে।

রাজধানীর ৩২২/১ খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক আদালতে অভিযোগ দায়ের করে লিখেছেন, আদালতকে অন্ধকারে রেখে ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা, নিলাম ক্রেতা ও আদালতের নিয়োগ করা বেইলিফ (জারিকারক) বদমতলবে এই কাজ করেছেন। নিলামে বাড়ি ও জমিটি কিনেছেন ওয়ারীর বাসিন্দা রিয়াজ রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি টাকা দিয়েছেন। জমি বুঝিয়ে দেওয়া ব্যাংকের কাজ। তিনি এর দায় নেবেন কেন?

ঘটনাস্থলে গিয়ে এবং ব্যাংক, ভূমি নিবন্ধন অফিস ও সিটি করপোরেশনের কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যাচ্ছে, আবু বকর সিদ্দিক ব্যাংকের ভুলের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেই গত ৯ ডিসেম্বর আদালতের প্রতিনিধি, নিলাম ক্রেতা, পুলিশ এবং মাথায় লাল ফিতা বাঁধা শতাধিক শ্রমিক আবু বকর সিদ্দিকের বাসার দখল নেন। ভাড়াটেদের জোর করে বের করে দেন ও ভাঙচুর চালান। আশপাশের লোকজনের বাধায় পরে তাঁরা চলে যান।

গ্রুপ খেলাপি, তাই অন্যের নামে ঋণ

৯ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ব্যবসা পরিচালনার লাইসেন্স নেয় গ্লোবাল ট্রেডিং হাউস নামের একটি কোম্পানি। পরের বছরের ৫ নভেম্বর রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় ১০০ কোটি টাকা ঋণ চেয়ে আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি। আবেদনে জানানো হয়, গ্লোবাল ট্রেডিং হাউস স্ক্র্যাপ আমদানি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। ব্যবসা সম্প্রসারণ ও চলতি মূলধনের জন্য ঋণ প্রয়োজন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ৩৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো টাকা তুলে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।

জানা গেছে, কাগজে-কলমে গ্লোবাল ট্রেডিং হাউসের মালিক আহসানুল মাহমুদ হলেও এই ঋণের জামানত হিসেবে যে জমি দেখানো হয়েছে, সেটি রতনপুর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমানের। এই ঋণের জন্য তিনি ব্যক্তিগত গ্যারান্টি প্রদানের পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ৬৫৬ শতাংশ জমি জামানত হিসেবে দেন। আবার আহসানুল মাহমুদ রতনপুর ফার্মস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাউথ এশিয়া ইনস্যুরেন্সের পরিচালক। আবার এ বিমা কোম্পানিতে রতনপুর গ্রুপেরও অংশীদারত্ব রয়েছে।

এ অবস্থায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এ ঋণের আসল সুবিধাভোগী কি তবে রতনপুর গ্রুপ? তাই বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে, গ্লোবাল ট্রেডিংয়ের ঋণ রতনপুর গ্রুপের ঋণ হিসেবে বিবেচনা করার। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যখন এই ঋণ অনুমোদন হয়, তখন রতনপুর গ্রুপ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই গ্রুপটি নতুন কোম্পানি গঠন করে ঋণ তুলে নিয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তাপস ডিএসসিসি’শত শত কোটি টাকা নিজের ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন’ 

০৯ জানুয়ারি ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র থাকার যোগ্য নয় বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ করেছেন ও করছেন। অপরদিকে অর্থের অভাবে করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, ২য় ভাগের ২য় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।’

প্রকল্পে দলগত দুর্নীতি হচ্ছে : পরিকল্পনামন্ত্রী

১৩ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে এক ধরনের জোয়ার উঠে গেছে। প্রকল্পের কেনাকাটায় দলগত (টিমওয়ার্ক) দুর্নীতি হয় বলে আমার ধারণা, তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দুর্নীতি বেশি হয়। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়া প্রকল্প গ্রহণ করা হলে মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয় না। এজন্য সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘উন্নয়ন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনের খসড়া রূপরেখা চূড়ান্তকরণ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমার ধারণা দুর্নীতিতে মাঝে মাঝে টিমওয়ার্ক হয়। পকেটমারও কিন্তু টিমওয়ার্ক। একজন নেয়, আরেকজনকে দিয়ে দেয়, সে আরেকজনকে দেয়, এভাবে হয় বলে শুনেছিলাম। দুর্নীতিতেও এ রকম আছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে।… …

শ্রমজীবি মানুষ

 এলোমেলো সরকারি ব্যপস্থাপনা, বহুমাত্রিক সংকটে অভিবাসী শ্রমিক

০৫ নভেম্বর, ২০২০, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকেই সংকটে পড়েছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি ও কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিবাসী শ্রমিকরা বহুমাত্রিক সংকটে পড়েছেন।

এই বছরের শুরুর দিকে কয়েক হাজার অভিবাসী শ্রমিক, বিশেষত উপসাগরীয় ও আরব দেশে থাকা শ্রমিকরা ছুটির সময়ে দেশে এসেছিলেন এবং পরবর্তীতে মহামারির কারণে দেশে আটকে গেছেন।

পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরে শ্রমিকদের স্বাচ্ছন্দ্যে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত পরিকল্পনা করেনি। ফলে, সৌদি আরব স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিসার মেয়াদ বাড়ানো বন্ধ করে ফ্লাইট চলাচল চালু করলে মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এন্ট্রি ভিসা ও আবাসনের অনুমতি নিয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দুর্ভোগে পড়েন।

উড়োজাহাজের টিকিট, ভিসা ও ইকামার মেয়াদ বাড়ানোর দাবিতে তারা রাস্তায় নামেন। পরে সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে।

অন্যদিকে, মহামারির মধ্যে বিদেশে চাকরি হারানো প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ঋণ দিতে এপ্রিলে নেওয়া সরকারি উদ্যোগ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মধ্যে পড়ে।

শ্রম মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্ত্রণালয় ও অ্যাজেন্সিগুলোর মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টার যে অনুপস্থিতি, এর পেছনে সরকারের দূরদৃষ্টির অভাব রয়েছে।

তাজরীনের আহত শ্রমিক সন্তানের খোলা চিঠি : আমার মাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন

১৭ নভেম্বর ২০২০, শ্রমিক আওয়াজ ডট কম

আমরা পড়তে চাই, আপনাদের সন্তানদের মত সুস্থ্য ও সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই। অবিলম্বে তাজরীনের শ্রমিকদের ¶তিপূরণসহ তিন দফা দাবী মেনে নিয়ে আমাদের সুস্থ্য ও সুন্দর জীবনের সুযোগ করে দিন। প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর প্রতি খোলা চিঠিতে এই আবেদন জানায় তাজরীন গার্মেন্টসের আহত শ্রমিকের সন্তানেরা।

১৬ নভেম্বর-২০২০ সকাল ১১:৩০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ফুটপাথে তাজরীন গার্মেন্টসের আহত শ্রমিকের সন্তানরা প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর প্রতি খোলা চিঠি প্রকাশ করে। উক্ত কর্মসূচিতে খোলা চিঠি পাঠ করেন তাজরীন গার্মেন্টসের আহত শ্রমিক জরিনা বেগমের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন এবং নাসিমা খাতুনের ছেলে আব্দুর কাদের নাহিদ গাজী।… …

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠিতে সাবিনা ইয়াসমিন বলে, আজ প্রায় দুই মাস ধরে আমরা বাবা-মায়েদের কাছ থেকে আলাদা। তারা প্রেস ক্লাবের ফুটপাথে রাত দিন থাকে। আমাদেরকে বাসায় একা থাকতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন তাড়াতাড়ি ¶তিপূরণসহ তিন দফা দাবি মেনে নিয়ে আমাদের পরিবারকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিন।

দীর্ঘদিন আমরা মা অসুস্থ থাকার জন্য আমাদের পরিবারের উপার্জন নাই। আমাদের খাওয়া-পড়ার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

আব্দুল কাদের নাহিদ গাজী তার লেখা চিঠিতে জানায়, আমার মা গত দুই মাস ধরে বাসায় থাকে না। জিজ্ঞাস করলে বলে তাজরীনের আন্দোলনের জন্য প্রেস ক্লাবের সামনে থাকতে হয়।

আমরা তিন ভাই-বোন এতদিন মাকে ছাড়া বাসায় আছি। আমি সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি। আমার বাকী ভাই-বোনও স্কুলে যায়। আমার মা আগে চাকরী করে আমাদেও সংসার চালাতো। কিন্তু তাজরীন গার্মেন্টসে আহত হওয়ার করণে মা আর চাকরি করতে পারে না। এই ঠিকমত আমাদের পড়াশোনা হচ্ছে না। তাছাড়া মা না থাকায় বাসায় আমাদের খুব মন খারাপ হয়।

আমি আমার মাকে বাসায় নিয়ে যেতে চাই। আপনারা আমার মায়ের বাড়ি ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।

উল্লেখ্য তাজরীন গার্মেন্টস অগ্নিকাণ্ডে আহত শ্রমিকরা প্রায় ২মাস যাবৎ ন্যায্য ¶তিপূরণ, পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনকারী শ্রমিক জরিনা বেগম উক্ত কর্মসূচিতে বলেন, আমাদের সন্তানদের আজ এভাবে ফুটপাথে দেখতে হবে এটা জানতে পারলে এ অগ্নিকাণ্ডের দিনে গার্মেন্টস থেকে লাফ দিতাম না। সন্তানদের এই দৃশ্য দেখার চেয়ে সেদিন আগুনে পুড়ে মরা ভাল ছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন আগামী ২৪ তারিখে মধ্যেই আমাদের দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করুন।

শ্রমজীবীর দুর্দশার বছর

৩১ ডিসেম্বর, ২০২০, দেশ রুপান্তর

ঢাকার লালবাগের একটি ওয়ার্কশপের কর্মী সজীব মিয়া। ২০২০ সাল তার ভাষায় দুর্ভাগ্যের বছর। প্রায় ছয় মাস বেকার থাকায় ঋণ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। এ টাকা পরিশোধের চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে তার। বরিশালের রোকেয়া বেগম (৬০) থাকেন কামরাঙ্গীরচরের একটি বস্তিতে। ময়লার স্তূপ থেকে ভাঙ্গাড়ি কুড়িয়ে সংসার চলে তার। দৈনিক আয় ১০০ টাকার ওপরে। রোকেয়া বেগম জানান, শৈশব-কৈশোরে টানা দুই-তিন দিন পর্যন্ত উপোস থেকেছেন। ১৫ বছর আগে ঢাকায় আসার পর সেই দুর্দশা কিছুটা লাগব হয়। তবে শৈশবের কষ্ট আবার ফিরে আসে ২০২০ সালে। মার্চের পর করোনা পরিস্থিতিতে থমকে যায় জনজীবন। তখন তিন বেলার আহার জোটাতে ধনীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। ঘর ভাড়া আটকে যায় চার মাসের। যা শোধ হয়নি আজও।

সজীব মিয়া ও রোকেয়া বেগমের মতো অতিমারী করোনাভাইরাস একইভাবে দেশের খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর বড় প্রভাব ফেলেছে। লাখো কর্মহারা মানুষ, উচ্চ বেকারত্ব, কর্মসংকোচন, দরিদ্রের হার বৃদ্ধি, খাদ্য সংকট এবং নিম্ন মজুরিসহ নানা কারণে ২০২০ বছরটিকে শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা ও দুর্ভাগ্যের বছর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস পৃথিবীব্যাপী যে সংকট সৃষ্টি করেছে তার প্রধান ভুক্তভোগী নিম্ন আয়ের মানুষ।

করোনা পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় দারিদ্র্যের সংখ্যা বেড়ে যায় বলে গত জুনে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি জানায়, করোনায় সার্বিকভাবে দারিদ্র্যের হার ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর পাশাপাশি আয় ও ভোগের বৈষম্যও বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী তখন দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। ২০১৯ সাল শেষে অনুমিত হিসাবে তা নেমে আসে সাড়ে ২০ শতাংশে। সিপিডির মতে, করোনার কারণে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, মানুষের আয় কমেছে। ফলে দারিদ্র্যের হারও বেড়ে গেছে। সিপিডির তথ্যমতে, করোনার কারণে গিনি সহগে (সম্পদের বৈষম্য মাপার একটি পদ্ধতি) ভোগের বৈষম্য বেড়ে দশমিক ৩৫ পয়েন্ট হয়েছে। ২০১৬ সালে এটি ছিল দশমিক ৩২ পয়েন্ট। একইভাবে আয়ের বৈষম্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৫২ পয়েন্ট। ২০১৬ সালের হিসাবে এটি ছিল দশমিক ৪৮ পয়েন্ট। সাধারণত গিনি সহগে আয়ের বৈষম্য দশমিক ৫০ পয়েন্ট পেরোলেই উচ্চ আয়ের বৈষম্যের দেশ হিসেবে ধরা হয়।

পোশাক খাতেই ৩ লাখ ছাঁটাই : গেল আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এক জরিপ প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতিতে দেশে চাকরি হারানো পোশাকশ্রমিকের সংখ্যা ৩ লাখ ২৪ হাজারের বেশি। বিলস জানায়, শুধু বেকার হয়ে পড়ারাই নন, বেকায়দার আছেন চাকরিতে বহাল থাকা লাখো পোশাকশ্রমিক। বিপুলসংখ্যক এ শ্রমিকের অন্তত ২৭ শতাংশই টিকে থাকতে কমিয়েছেন খাবারের ব্যয় ও চাহিদা। নিয়মিত বেতন না পাওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। বেতনের অভাবে ২৭ শতাংশ শ্রমিক খাদ্যের চাহিদা কমিয়েছেন বলে বিলসের গবেষণা উঠে এসেছে। পোশাকশ্রমিকদের সুরক্ষায় তিন দফায় সরকার ৫০ হাজার কোটি টাকার উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও শ্রমিকরা এর সুফল তেমন একটা পায়নি। করোনা সংকটে বাড়ির মালিকদের হাতে নির্যাতনের হার বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন শ্রমিকরা। সাভার, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানাগুলোর সামনে হাজার হাজার চাকরিপ্রত্যাশী মানুষের ভিড় এখনো লক্ষ করা যায়।

পোশাক ছাড়াও দেশের আরেক বড় রপ্তানিমুখী শিল্প চামড়া খাতেও কয়েক হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হয়। বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকদের সহযোগিতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে সহায়তা পাঠানো হলেও সেটি মালিকদের অসহযোগিতার কারণে পাননি অসহায় শ্রমিকরা।

বন্ধ পাটকল ও চিনিকলে উত্তেজনা : করোনা সংকটে যখন লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ বেকার তখন এক ঘোষণায় রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয় সরকার। এসব কারখানায় প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। আর অস্থায়ী বা বদলি মিলে এ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। হঠাৎ বন্ধের সিদ্ধান্তে পাটকল ঘিরে লাখো মানুষের জীবিকায় অনিশ্চয়তা নেমে আসে। সংস্কার করে পাটকলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে দিনের পর দিন আন্দোলন করেন শ্রমিকরা। তবে সরকার সে দাবি আমলে নেয়নি। শ্রমিকরা জানান, টানা প্রায় এক বছর বেকার থাকায় তাদের পরিবারে হাহাকার চলছে। অনেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, ২৫টি পাটকল বন্ধ হওয়ায় এর ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবনে অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে।

এদিকে পাটকল বন্ধ হওয়ার পাঁচ মাস পর রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারি হিসাবে এসব চিনিকলে ২ হাজার ৮৮৪ জন শ্রমিক কাজ করেন। বর্তমানে তাদের পাঁচ মাসের মজুরি বকেয়া রয়েছে। বেতনের অভাবে শ্রমিক পরিবারগুলো চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি হয়েছে বলে জানা গেছে।

৩ লাখ ২৬ হাজার প্রবাসীকর্মী ফেরত : অতিমারী করোনা প্রবাসীকর্মীদেরও চরম দুর্ভোগে ফেলে। কাজ হারিয়ে অসংখ্য শ্রমিক মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হন। অনেকে দেশে ফিরতে বাধ্য হন। রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) সাম্প্রতিক এক হিসাব বলছে, গত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২৬ হাজারের বেশি প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। যাদের অধিকাংশই ফিরেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে। এছাড়া কাজ হারিয়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও অন্যান্য দেশ থেকেও ফিরেছেন লাখো কর্মী।

ছুটি না পেয়ে’ কারখানার গাড়িচালকের মৃত্যু: লাশ নিয়ে অবস্থান স্ত্রীর

৩ জানুয়ারি, ২০২১, দেশ রুপান্তর

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ক্ষতিপুরণ ও বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে তার কর্মস্থলে অবস্থান করছেন রহিমা নামে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ। রবিবার সকাল থেকেই তিনি আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকায় অবস্থিত স্বামীর কর্মস্থল স্কাইলাইন কারখানার সামনে অবস্থান করছেন।

এর আগে ভোর ৪টার দিকে নিজ ভাড়া বাসার টয়লেটে স্ট্রোক করে মারা যান রহিমার স্বামী মো. নজরুল ইসলাম (৫৫)। তিনি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানা এলাকার বাসিন্দা এবং ১২ বছর ধরে স্কাইলাইন নামক তৈরি পোশাক কারখানার গাড়ি চালাতেন বলে দাবি করেন তার স্ত্রী রহিমা।

রহিমা জানান, গত কয়েক মাস ধরে তার স্বামীর বুকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হচ্ছিল। এ জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলে তার বুকে পানি জমেছে জানিয়ে প্রথমে ১৫ দিন বিশ্রামে থাকতে বলা হয়। ঘটনাটি জানিয়ে নজরুল ইসলাম কারখানায় ছুটি চাইলে তাকে ছুটি না দিয়ে কাজ করতে বলা হয়। পরবর্তীতে গত ২৯ ডিসেম্বর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু এ্যাডমিন ম্যানেজার আনিস তাকে ছুটি না দিয়ে উল্টো অপমান করে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। এদিকে শনিবার রাতেও কারখানায় কাজ করে বাসায় ফেরার পর রবিবার ভোর ৪টার দিকে বাসার টয়লেটে স্ট্রোক করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

বেতনের দাবিতে গাজীপুর নারায়ণগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

৭ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে দুটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেড এলাকায় শ্রমিকেরা বেলা ১১টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেন। আর গাজীপুর নগরের সাইনবোর্ড এলাকায় বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।

অবরোধের কারণে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-ডেমরা সড়কে প্রায় তিন ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। আর গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকে। এতে এসব পথে যানজট তৈরি হয়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নিলে আস্তে আস্তে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

নারায়ণগঞ্জে বকেয়া ভাতা ও বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে আদমজী ইপিজেডের কুনতং অ্যাপারেলস লিমিটেড (ফ্যাশন সিটি) পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে আনসার ও ইপিজেডের নিরাপত্তাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে ১০ শ্রমিক আহত হন।.. …

গাজীপুরে ইস্ট ওয়েস্ট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।…

উচ্চ খরচে বিদেশ গিয়ে ফতুর অনেক শ্রমিক

৯ জানুয়ারি, ২০২১, দেশ রুপান্তর

… …. সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রবাসী কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় নিয়ে একটি জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, একজন বাংলাদেশিকে বিদেশে পাড়ি জমানোর জন্য গড়ে ব্যয় করতে হচ্ছে ৪ লাখ ১৬ হাজার ৭৮৯ টাকা। সে অনুপাতে তাদের মাসিক গড় আয় হচ্ছে ২৩ হাজার ৬৯৩ টাকা। আর অদক্ষ অভিবাসীর ক্ষেত্রে বিদেশ যাওয়ার ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯২৭ টাকা। দক্ষ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ২৭ হাজার ২১৭ টাকা। তবে গৃহকর্মীদের ক্ষেত্রে সেই গড় নিয়োগ ব্যয় ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৬৪ টাকা। নারীদের নিয়োগ ব্যয় তুলতে সময় লাগে ৫ দশমিক ৬ মাস আর পুরুষদের নিয়োগ ব্যয় তুলতে সময় লাগে ১৯ দশমিক ১ মাস বা প্রায় দুই বছর।… …

ব্যয় তুলতেই ভিসার মেয়াদ শেষ : বিদেশে অভিবাসনের ক্ষেত্রে কোন দেশের কর্মীদের কত ব্যয় করতে হয় বিষয়টি জানতে ২০১৬ সালে একটি গবেষণা করে বিশ্বব্যাংক। তাতে দেখা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে অন্য দেশের প্রবাসী কর্মীদের কাজ পেতে গড়ে ১ হাজার ৯৫৫ ডলার খরচ হয়। কিন্তু বাংলাদেশি কর্মীদের কাজ পেতে ব্যয় হয় ৫ হাজার ১৫৪ ডলার (৪ লাখ ১২ হাজার টাকা) পর্যন্ত। অন্য দেশের কর্মীরা তিন মাস কাজ করে অভিবাসন ব্যয় তুলতে পারেন। সেখানে বাংলাদেশি কর্মীদের লেগে যায় দেড় থেকে দুই বছর। ততদিনে অধিকাংশ প্রবাসী কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ। অনেকে শূন্য হাতে দেশে ফিরতে বাধ্য হন, অথবা অবৈধ অভিবাসী হয়ে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হন। বিবিএসের জরিপেও এ বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশি কর্মীরা জমি-বাড়ি বিক্রি করে, সুদে ধার নিয়ে ৫-৬ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ যান। অদক্ষ কর্মীরা মাসে যে বেতন পান, তাতে বিদেশ যাওয়ার খরচ তুলতেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। অধিকাংশ বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মী এ দুষ্টচক্রের শিকার। এ কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ কর্মী বিদেশে গেলেও কাক্সিক্ষত মাত্রায় উপার্জন করতে পারছেন না তারা। প্রবাসী জীবনের কঠোর পরিশ্রমের আয়ের বড় অংশই চলে যায় বিদেশ যাওয়ার সময়ের খরচের দায় মেটাতে।

বিবিএসের জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর যেতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় ৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। সেখানে মাসিক গড় আয় ৩৮ হাজার ১৩৪ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সৌদি আরবে লাগে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬৬। আর সেখানে গড় মাসিক আয় ২২ হাজার ১৪০ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মালয়েশিয়ায় খরচ পড়ে ৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ৪৮০, গড় মাসিক আয় ২৩ হাজার ৮৯৬ টাকা। চতুর্থ কাতার যেতে খরচ পড়ে ৪ লাখ ২ হাজার টাকা ৭৭৮, সেখানে গড় মাসিক আয় ২২ হাজার ২৯৩ টাকা। আর সবথেকে কম খরচ ওমানে যেতে লাগে ৩ লাখ ৮ হাজার ৪৭ টাকা। আর মাসিক গড় আয় ১৯ হাজার ১৭৭ টাকা। অথচ এসব দেশে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

৮১ শতাংশ পুরুষ, ৭৭ শতাংশ নারী ঋণগ্রস্ত : ২০২০ সালে করা বিবিএসের জরিপটি সারা দেশের ৮ হাজার অভিবাসীর পরিবারের ওপর পরিচালিত হয়। এতে বলা হয়েছে, বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে অভিবাসীরা যে খরচ করেন তার অধিকাংশই আসে ঋণের উৎস থেকে। এক্ষেত্রে ৮১ শতাংশ পুরুষকর্মী অভিবাসন ব্যয় মেটাতে ঋণ করেছেন। আর নারী কর্মীদের ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশ অভিবাসন ব্যয় মেটানোর জন্য ঋণ করেন। ২১ শতাংশ কর্মী নিয়োগ ব্যয় মেটানোর জন্য ঋণ করেননি।

চার মাস ধরে বেতন নেই, ঘরে খাবার নেই; খেতে হলো লাঠিপেটা-টিয়ারশেল

৯ জানুয়ারি, ২০২১, কালের কন্ঠ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডে কুংতন অ্যাপারেলস লিমিটেড (ফ্যাশন সিটি) এর সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। একপর্যায়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শ্রমিকরা রাস্তায় বসে পড়েন। সকালে চিটাগাংরোড আদমজী নারায়ণগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের সাথে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। দুই দফা পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীসাধারণ।… …

শ্রমিকরা জানায়, ৪ মাস ১০ দিনের বেতন বকেয়া পড়েছে তাদের। এ ছাড়া আরো অন্যান্য পাওনাদি রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকদের। কিন্তু মালিকপক্ষ কোনো বকেয়াই পরিশোধ করছে না। এতে করে চরম বিকাকে পড়েছেন শ্রমিকরা। বাড়ি ভাড়া দিতে পারছে না, খাবার খেতে পারছে না। এমনকি অফিসে আসার ভাড়াও যোগাড় করতে পারছে না অনেক শ্রমিক। আর মালিকপক্ষ দিই-দিচ্ছি করে বকেয়া পরিশোধও করছে না। এ অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে শ্রমিকরা। একপ্রকার নিরুপায় হয়ে শনিবার সকালে ফ্যাক্টরির সামনে অবস্থান নিয়ে আমরা বিক্ষোভ করে। দাবি আদায়ে নেমে পড়ে রাস্তায়। কিন্তু শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলাকালে আকস্মিকভাবে বেপজার আনসাররা শ্রমিকদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে। পুলিশ চটে গিয়ে তাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।… …

দুর্ঘটনা নির্যাতনে ১০৪৫ শ্রমিকের মৃত্যু

৯ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

সদ্য বিদায়ী বছরে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৭২৯ জন শ্রমিক। এর মধ্যে পরিবহনশ্রমিকই বেশি। এ ছাড়া নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান ৩১৬ জন শ্রমিক।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এক জরিপ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

গেল বছর দেশের প্রথম সারির কয়েকটি জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে ‘কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি জরিপ–২০২০’ প্রস্তুত করে বিলস। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে বিলসের নেতারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।

বিলসের প্রতিবেদন বলছে, গত বছরে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত ৭২৯ জন শ্রমিকের মধ্যে ৩৪৮ জন পরিবহনশ্রমিক, ৮৪ জন নির্মাণশ্রমিক, ৬৭ জন কৃষিশ্রমিক ও ৪৯ জন দিনমজুর। আর নির্যাতনে মারা যাওয়া ৩১৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ৫২ জন অভিবাসী শ্রমিক, ৪২ জন কৃষিশ্রমিক ও ১৬ জন গৃহকর্মী।

শ্রমিক মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বলা হচ্ছে, শ্রমিক মৃত্যুর বড় কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। সর্বোচ্চ সংখ্যক পরিবহনশ্রমিক মৃত্যুরও বড় কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অনেক শ্রমিক হতাহত হয়েছেন। কৃষিশ্রমিক মারা যাওয়ার বড় কারণ বজ্রপাত।

নির্যাতনে মারা গেছেন ৩১৬ জন শ্রমিক

বিলসের প্রতিবেদন বলছে, গত বছর ৫৯৬ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ৪৫৪। আর নারী শ্রমিক হলেন ১৪২ জন। কর্মক্ষেত্রে ২৩২ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কর্মক্ষেত্রের বাইরে নির্যাতনের শিকার হন আরও ৩৬৪ জন।

নির্যাতনে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক হতাহত হয়েছেন পরিবহনশ্রমিক। নির্যাতনে মারা যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে পরিবহনশ্রমিক ৯০, অভিবাসী শ্রমিক ৫২, তৈরি পোশাককর্মী ২৫, গৃহকর্মী ১৬, নিরাপত্তাকর্মী ১০, কৃষিশ্রমিক ৪২, নির্মাণশ্রমিক ৮, দিনমজুর ১১, মৎস্য শ্রমিক ১১ ও অন্যান্য ৫৭ জন।

গত বছরের (২০২০) তুলনায় ২০১৯ সালে বেশি সংখ্যক শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হন। ২০১৯ সালে নির্যাতনের শিকার ১ হাজার ২৯২ জন শ্রমিকের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৩৩২ জন।

৫৯৩ শ্রমিক আন্দোলন

বিলসের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর (২০২০) শ্রমিক আন্দোলন বেশি হয়েছে। ২০১৯ সালে শ্রমিক আন্দোলন হয়েছিল ৪৩৪টি। তবে গত বছর আন্দোলনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯৩।

গেল বছর সব থেকে বেশি সংখ্যক শ্রমিক আন্দোলন হয়েছে তৈরি পোশাক খাতে, এ সংখ্যা ২৬৪। এরপর শ্রমিক আন্দোলন বেশি হয়েছে পাটশিল্পে, ৪৯টি। এর বাইরে চিনিশিল্পে ৪৬টি, পরিবহন খাতে ৪৫টি, কৃষি খাতে ২৩টি, নৌ পরিবহন খাতে ১৯টি, অভিবাসী শ্রমিক ১৮টি এবং স্বাস্থ্য খাতে ১৫টি শ্রমিক আন্দোলন সংঘটিত হয়। শ্রমিক আন্দোলনের নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে বিলসের প্রতিবেদন বলছে, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৭৬টি আন্দোলন করেন।

বেকারত্ব বেড়েছে

বিলসের প্রতিবেদন বলছে, করোনায় তৈরি পোশাকখাতসহ অন্য খাতের শ্রমিকেরা প্রণোদনার আওতায় এলেও নির্মাণ শ্রমিকেরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। নির্মাণশ্রমিকদের বড় অংশের এখন কোনো কাজ নেই।

এ ছাড়া গত বছর দেশে ছয়টি চিনিকল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন ৫ হাজার চিনিকল শ্রমিক। এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে পাঠানো হয়েছে।… ….

পাট চিনি শিল্প

বেকারত্বের জাঁতাকলে পাটকল শ্রমিকরা

২৮ অক্টোবর, ২০২০, দেশ রুপান্তর

খুলনার খালিশপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল। প্রধান ফটকের কয়েক হাত দূরেই রেললাইন। রেললাইন ঘেঁষে ফারুক মিয়ার চায়ের দোকান। সেখানে মাথায় হাত দিয়ে বসা কয়েকজন। এদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম ১৬ বছর বদলি শ্রমিক হিসেবে মিলে কাজ করেছেন। আগেও অসংখ্যবার মিল বন্ধ হওয়ায় বেকারত্বের অভিজ্ঞতা তার পুরনো। কিন্তু এবারের বেকারত্ব সেলিমের ভাষ্যে, রীতিমতো বিপর্যয় ডেকে এনেছে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে ২৬ মার্চ থেকে মিল বন্ধ। মাঝখানে এক মাসের জন্য খুলল। তারপর পাকাপাকি বন্ধ। প্রায় একটা বছর ধইর‌্যা বেকার। ক্যামনে জীবন চলতেছে? সরকার হাত-পা বাইন্ধা আমাগোরে নদীতে ফালায় দিছে।’

ক্রমাগত লোকসানের কারণ দেখিয়ে গত ২৫ জুন খুলনা-যশোর অঞ্চলের নয়টিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর ২ জুলাই কারখানা বন্ধসহ গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় শ্রমিকদের অবসায়নের প্রজ্ঞাপন মিলগুলোর নোটিস বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি হিসাবে, এসব কারখানায় প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিক কর্মরত। অস্থায়ী বা বদলি মিলে এ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। হঠাৎ বন্ধের সিদ্ধান্তে পাটকল ঘিরে লাখো মানুষের জীবিকায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। শ্রমিকরা টানা ১০ মাস বেকার থাকায় তাদের পরিবারে চলছে হাহাকার। অনেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। তারা পাটকল আবার চালুর দাবি জানিয়েছেন।… …

বন্ধ হতে চলেছে পাবনা সুগার মিলসহ চিনিকল!

০১ ডিসেম্বর, ২০২০, ইত্তেফাক

ঈশ্বরদীতে অবস্থতি পাবনা সুগার মিলসহ দেশের ছয়টি চিনিকল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পাবনা সুগার মিলের এমডি সাইফ উদ্দিন আহম্মেদ এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এখনও কোনো চিঠি পাইনি। তবে কর্পোরেশনের হেড অফিস থেকে মৌখিক ভাবে জানতে পেরেছি ছয়টি চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। মোট ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৯টির কার্যক্রম চালু থাকবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের চিঠির বরাত দিয়ে তিনি জানান, চিনি আহরণের হার, আখের জমি, মিলের অবস্থা/দক্ষতা, লোকাসান ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বিবেচনায় চলতি আখ মাড়াই মৌসুমে ১৫টি চিনিকলের মধ্যে অধিকতর বিবেচনায় ৯টি চিনিকলে উৎপাদন পরিচালনা করা ও অবশিষ্ট ৬টি মিলে আখ মাড়াই না করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আখ মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকলগুলোর মধ্যে রয়েছে, পাবনা সুগার মিল, কুষ্টিয়া সুগার মিল,পঞ্চগড় সুগার মিল, শ্যামপুর সুগার মিল, রংপুর সুগার মিল ও সেতাবগঞ্জ সুগার মিল।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, যেসব মিলে চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই করা হবেনা সেসব এলাকায় উৎপাদিত ও কৃষকের সরবরাহকৃত আখ নিকটস্থ চালু চিনিকলে পরিবহন করে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উৎপাদন স্থগিতকৃত মিল হতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চালুকৃত মিলে সংযুক্ত/বদলি পূর্বক সমন্বয় করা হবে।… ….

ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

২ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে রংপুর চিনিকলসহ দেশের ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন সহস্রাধিক আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারী। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কের চিনিকলের সামনের কয়েকটি স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় উভয় দিকে শতাধিক ছোট–বড় যানবাহন আটকা পড়ে।

সংবাদ পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার একদল পুলিশ এসে অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলে শুরুতে তা অগ্রাহ্য করে অবরোধ চালিয়ে যান চাষি-শ্রমিক-কর্মচারীরা। পরে বেলা ১টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প সংস্থার সদর দপ্তর থেকে ১৫টি চিনিকলের মধ্যে অব্যাহত লোকসানে ২০২০-২১ মৌসুমে রংপুর চিনিকলসহ ৬টিতে মাড়াই বন্ধ রাখার নির্দেশনা আসে। এই মৌসুমে শুধু ৯টি চিনিকলে আখমাড়াই করার নির্দেশসংবলিত ওই চিঠি পাওয়ার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা।… ….

আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, খেতে আগুন

১৯ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

রংপুর চিনিকলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা। অন্যদিকে আখের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় অভিমান করে নিজের আখখেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক আখচাষি। শনিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা শনিবার সকাল নয়টার দিকে মহিমাগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের সামনে গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকেন। এতে ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। দুপুর ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলন চলার সময় মিলস গেট সাব-জোনের গোপালপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান নামের এক আখচাষি তাঁর এক একর জমির আখে আগুন লাগিয়ে দেন। খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সোনাতলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নেভায়।… ….

লোকসানি চিনিকল আধুনিকায়নে বিদেশি বিনিয়োগ

২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) সাময়িক বন্ধ থাকা ছয়টি চিনিকল আধুনিকায়নের মাধ্যমে লাভজনক করতে এবং উৎপাদিত চিনি রপ্তানি করতে একত্রিত হয়েছে জাপান, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনটি প্রতিষ্ঠান।

থাইল্যান্ডের সুটেক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারকারা ইন্টারন্যাশনাল এবং জাপানের সোজিৎজ মেশিনারি করপোরেশন যৌথভাবে আগামী দুই বছরের মধ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এই চিনিকলগুলোতে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিএসএফআইসি পরিচালিত এই চিনিকলগুলো যৌথভাবে পরিচালনার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে গত বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এবং এক্সিম ব্যাংক অব থাইল্যান্ড এই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। যৌথ উদ্যোগে তিনটি প্রতিষ্ঠান এই বিনিয়োগের ৩০ শতাংশ অর্থায়ন করবে এবং বাকি ৭০ শতাংশ আসবে ব্যাংক দুটি থেকে।

বিনিয়োগকারীদের স্থানীয় প্রতিনিধি মো. এমদাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা আট বছরের মধ্যে বিনিয়োগের অর্থ তুলে আনব।’

‘এই উদ্যোগটি চিনি শিল্প ও কৃষকদের বাঁচাবে,’ যোগ করেন তিনি।

এমদাদ হোসেন জানান, এই প্রকল্প থেকে সুগন্ধি ও ওষুধে ব্যবহার করার উন্নত মানের অ্যালকোহল উত্পাদন করা হবে। এসব উপজাত পণ্য মিলের আয় বাড়াতে সহায়তা করবে।

গত ২ ডিসেম্বর একটি সরকারি আদেশে পাবনা সুগার, রংপুরের শ্যামপুর সুগার, পঞ্চগড় সুগার, দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ সুগার, রংপুর সুগার এবং কুষ্টিয়া সুগার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের অক্টোবরে পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর আখ, লিকার এবং বিয়ার শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য এই তিন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে বিএসএফআইসি।

প্রতিদিন ১৪ হাজার টন আখ প্রক্রিয়াজাতকরণে ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি কারখানা স্থাপন করবে কোম্পানিগুলো। তারা রপ্তানির জন্য এক্সট্রা নিউট্রাল অ্যালকোহল (ইএনএ) তৈরি করতে উচ্চ মানের আখ উৎপাদন করবে। প্রসাধনী, পারফিউম, টয়লেট্রিজ এবং চুলের স্প্রে তৈরিতে প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে ইএনএ ব্যবহৃত হয়।

এ ছাড়া, শিল্প খাতেও ইএনএ ব্যবহার করা হয়। মুদ্রণ শিল্পের কিছু ভার্নিস, রঙ এবং কালি তৈরির পাশাপাশি এন্টিসেপটিক, ড্রাগ, সিরাপ এবং স্প্রের মতো ওষুধজাত পণ্য উৎপাদনে এর ব্যবহার রয়েছে।

পাশাপাশি হুইস্কি, ভোদকা, জিন এবং লিকারের মতো অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় তৈরির প্রাথমিক কাঁচামাল ইএনএ।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে বিএসএফআইসির চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা জানান, করপোরেশন আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ছয়টি চিনিকলের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে এবং বিএসএফআইসি এই প্রকল্পের জন্য জমি দেবে বলে যোগ করেন তিনি।

প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থায়ন বিনিয়োগকারীরা করবে এবং মুনাফার ভাগ কীভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দেশের পুরাতন চিনিকলগুলোকে আধুনিকীকরণের সাতটি বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বিএসএফআইসি। সবগুলো প্রস্তাব বর্তমানে বিবেচনাধীন।… ….

আখ চাষি-শ্রমিকদের আন্দোলন চলছেই

২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, কালের কন্ঠ

গত নভেম্বরে বিনা নোটিশে সরকারি ছয় চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। এর প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ছয় চিনিকলের আখ চাষি ও শ্রমিকরা। উৎপাদিত আখ আগের মতো নির্ধারিত মিলে বিক্রির দাবিতে কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। বিএসএফআইসি কর্তৃপক্ষ দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা রাস্তায় আন্দোলনে থাকবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।

জানা গেছে, উৎপাদিত আখ কেটে চাষিরা মাঠে ফেলে রেখেছেন। অনেকে মাঠেই আখে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন। অনেক স্থানে আখ চাষিদের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ উপস্থিত হয়ে কর্মসূচি বাতিলে চেষ্টা করছে।… …

২০ বছরের ইজারা দেবে সরকার

২৪ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

বন্ধ হওয়া ২৫টি পাটকল পুনরায় চালু করতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ১৫-২০ বছরের জন্য ভাড়ায় ইজারা দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে ৫-৭টি পাটকল ইজারা দেওয়া হতে পারে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে ৯ সদস্যের একটি আন্তমন্ত্রণালয় ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে সাত মাস চলে গেছে। পাটকল চালু হয়নি। চাকরি হারানো শ্রমিকেরা ক্ষতিপূরণের পুরোটা পাননি।

এদিকে বন্ধ পাটকল চালু করতে সরকার যে নীতি নিয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ না–ও দেখাতে পারেন, এমনটা বলছেন পাট খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁদের বক্তব্য, মধ্যমেয়াদি ইজারা নিয়ে ৪০০-৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চাইবেন না ব্যবসায়ীরা। কারণ, যেকোনো সময় সরকারের নীতি পরিবর্তন হলে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।… ….

রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলে উৎপাদন স্থগিতের সুযোগ নিচ্ছে বেসরকারি খাত

১১ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা ১৫ থেকে ১৭ লাখ টন। এর মধ্যে এক লাখ টনেরও কম চিনি আসে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো থেকে। বাজারের চাহিদা পূরণে অবদান খুব সামান্য হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন স্থগিত রাখার ঘোষণাকে সুযোগ হিসেবেই নিচ্ছেন বেসরকারি খাতের আমদানিকারকরা। কয়েক দফায় চিনির দাম মণপ্রতি প্রায় ৪৫০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। যদিও এর কারণ হিসেবে বিশ্ববাজারে বুকিং দর বৃদ্ধির কথাই বলছেন তারা।

গতকাল বিশ্ববাজারে চিনির বুকিং মূল্য ছিল প্রতি পাউন্ড ১৫ দশমিক ৬০ সেন্ট। বুকিং মূল্যের সঙ্গে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধন ও বাজারজাত মূল্য যুক্ত করলে প্রতি মণ চিনির দাম ১ হাজার ৯০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি মণ চিনি ২ হাজার ৩৫০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে এটিই চিনির সর্বোচ্চ দাম।

বেসরকারি খাতের যে কয়েকটি চিনিকল আমদানি করা চিনি পরিশোধনের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ করে তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সিটি সুগার, ফ্রেশ সুগার, আবদুল মোনেম সুগার ও দেশবন্ধু সুগার মিল। বাজারের সিংহভাগই তাদের নিয়ন্ত্রণে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির আগেই বাজারে সরবরাহ আদেশ (ডিও) ছেড়ে অর্থ উত্তোলন করে। এসব ডিও বাজারে বিভিন্ন হাত ঘুরে শেষ পর্যন্ত মিলগেট থেকে পণ্যটি উত্তোলন করে সর্বশেষ পাইকারি বিক্রেতা। এ প্রক্রিয়ার মধ্যেই ডিওর প্রকৃত মূল্য থেকে অনেক বেড়ে যায় চিনির দাম। মূলত ডিও কেনাবেচার মাধ্যমে দাম বাড়ানোর সুযোগ থাকায় আমদানিকারকদের বিক্রি করা দামের চেয়েও অনেক বেশি মূল্যে চিনি বিক্রি হয়। যার প্রভাব পড়ে দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে।… …

করোনা পরিস্থিতি

নিশ্চিত হয়নি নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ

২৫ অক্টোবর ২০২০, প্রথম আলো

দেশে করোনার সংক্রমণের সাড়ে সাত মাস পরও অধিকাংশ হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহব্যবস্থা চালু করতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জুন মাসে জরুরি ভিত্তিতে ৭৯টি হাসপাতালে এ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে চালু হয়েছে ১৪টির, কাজ শেষে চালুর অপেক্ষায় আছে ৪টি। অথচ শীতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে সরকার। শীতে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আক্রান্ত রোগীর তুলনায় হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি ছিল শুরু থেকেই। ধীরে ধীরে রোগী বাড়তে থাকলে মে মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তড়িঘড়ি করে অক্সিজেন ট্যাংক নেই, এমন হাসপাতালের তালিকা তৈরি করে। কিন্তু তালিকায় ভুল থাকায় আবার তা সংশোধন করা হয়। এরপর জুনের শুরুতে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ১টি প্রতিষ্ঠানকে ২৬টি হাসপাতালের কাজের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বাকি ২ প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৫৩টির মধ্যে ৭টির চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে গত সপ্তাহে।.. ..

গত ১৪ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ৩৯টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহব্যবস্থা স্থাপনের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারকে (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেখানে গ্যাস পাইপলাইন নেই, এমন ৩০টি হাসপাতালে কোভিড তহবিল থেকে গ্যাস পাইপলাইন ও অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করছে ইউনিসেফ। বাকি ২৩টি হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালুর জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এইচইডি) নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।

তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল জুনে। কিন্তু এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পেলে নতুন করে আবার প্রস্তুতি নিতে হবে। এতে ৩০টির কাজ শেষ করতে অন্তত ৬ মাস লাগতে পারে।

তিন মাসে ১৮ হাসপাতালে অক্সিজেন

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২ জুন ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৩৯টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজের অনুমোদন পেয়েছিল নিমিউ অ্যান্ড টিসি। কিন্তু এর মধ্যে আগে থেকেই ১৩টি হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক ছিল। পরে তালিকা সংশোধন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শেষ পর্যন্ত জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে ২৬টির চূড়ান্ত অনুমোদন পায় নিমিউ।

নিমিউ অ্যান্ড টিসি বলছে, হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক বসাতে ঠিকাদার হিসেবে স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেডকে ১৩টি করে হাসপাতালের কাজ দেয় নিমিউ। এর মধ্যে ১৩টি হাসপাতালেরই কাজ শেষ করে অক্সিজেন সরবরাহ চালু করেছে স্পেক্ট্রা। আর লিন্ডে ৫টির কাজ শেষ করলেও চালু হয়েছে ১টি। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমোদন পেলে বাকি ৪টির অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হবে। আর ৮টির কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি লিন্ডে।

এ বিষয়ে নিমিউ অ্যান্ড টিসির চিফ টেকনিক্যাল ম্যানেজার মোহা. আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভারত থেকে অক্সিজেন ট্যাংক আমদানি করছে লিন্ডে। তাই কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। ভারত থেকে ছেড়ে আসা জাহাজ শিগগিরই বন্দরে পৌঁছাবে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি কাজ শেষ হয়ে যাবে।

পাঁচ মাস পর সাতটির অনুমোদন

ঢাকার বাইরে ২৩টি হাসপাতালে গ্যাস পাইপলাইন ও লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের কথা আরেকটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচইডি)। এর মধ্যে আছে ২টি সরকারি মেডিকেল কলেজ, ৯টি ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও ১২টি ১০০ শয্যার হাসপাতাল। জুনে এমন সিদ্ধান্ত হলেও চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে প্রায় ৫ মাস পার করে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অবশেষে ১৮ অক্টোবর ৭টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের কাজ পেয়েছে এইচইডি।

এ বিষয়ে এইচইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, অনুমোদন পাওয়া ৭টির কাজ জরুরি ভিত্তিতে শুরু করা হচ্ছে। বাকিগুলোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।

অনুমোদন পায়নি ইউনিসেফ

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গঠিত কোভিড-১৯ তহবিলের টাকায় ৩০টি হাসপাতালে গ্যাস পাইপলাইন ও লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের কথা জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বাংলাদেশের। এর মধ্যে আছে ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দিনাজপুরের আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আর বাকিগুলো হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালসহ বিভিন্ন জেলা সদর হাসপাতাল।

এ বিষয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল জুনে। কিন্তু এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পেলে নতুন করে আবার প্রস্তুতি নিতে হবে। এতে ৩০টির কাজ শেষ করতে অন্তত ৬ মাস লাগতে পারে।.. ..

অক্সফোর্ডের কোটি টিকা কিনছে সরকার

০৫ নভেম্বর ২০২০, সমকাল

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার (ভ্যাকসিন) তিন কোটি ডোজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার এই টিকা কেনার জন্য একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।

প্রত্যেক ব্যক্তিকে দুই ডোজ করে ভ্যাকসিন নিতে হবে। অর্থাৎ এই তিন কোটি ডোজ দিয়ে দেড় কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকাটির অনুমোদন দিলে তা বাংলাদেশে আসবে। বাংলাদেশে প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়বে ৫ ডলার (প্রায় ৪২৫ টাকা)।

বাংলাদেশ সরকার, বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে এ চুক্তি সই হয়েছে।

৩৫ শতাংশ কভিড হাসপাতালই দুর্নীতিগ্রস্ত : টিআইবি

১১ নভেম্বর, ২০২০, দেশ রুপান্তর

করোনা সংকটের সময় দেশের কভিড হাসপাতালগুলোর ৩৫ শতাংশে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির এক গবেষণা বলছে, করোনাকালে ৯৩টি ক্রয় বিল কারসাজির মাধ্যমে সরকারের ১২ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। সুরক্ষাসামগ্রী কিনতে চার-পাঁচগুণ দাম বাড়িয়ে ৫০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়। অথচ ওই সুরক্ষাসামগ্রী মাত্র ১২ কোটি টাকায় কেনা হয়েছে। এছাড়া নমুনা সংগ্রহ-পরীক্ষা ও ত্রাণ বিতরণের বড় ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে টিআইবি। গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ (দ্বিতীয় পর্ব) শীর্ষক গবেষণায় এসব কথা বলা হয়েছে।

অনলাইন ও টেলিফোন জরিপের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ, ত্রাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণা করা হয়েছে। দেশের ৪৭টি জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন টিআইবির গবেষকরা। এতে বলা হয়েছে, করোনাকালে বিদ্যমান আইন অনুসরণের ঘাটতি দেখা গেছে। এ সংক্রান্ত দুটি আইন যথাযথভাবে মানা হয়নি। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতে বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পসহ বিভিন্ন জিনিস ক্রয়ে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ অনুসরণের ক্ষেত্রেও ঘাটতি লক্ষ করা যায়।

সরকারি ক্রয়ে দুর্নীতি

টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, জরুরি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ লঙ্ঘন করে বিভিন্ন প্রকল্পে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি ব্যবহার করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অনেক ক্ষেত্রে মৌখিক আদেশে ক্রয় করা হয়েছে। কোনো ক্রয়ে ই-জিপি ব্যবহার করা হয়নি। কয়েকটি সিন্ডিকেট স্বাস্থ্য খাতের সব ধরনের ক্রয় নিয়ন্ত্রণ করেছে। এসব সিন্ডিকেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিএমএসডি, বিভিন্ন হাসপাতালের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দুদকের কিছু কর্মকর্তার সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও পাওয়া যায়। মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিইর মতো জরুরি স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নামসর্বস্ব যে প্রতিষ্ঠানকে ৩২ কোটি টাকার কাজ দেওয়া হয় তা একটি অটোমোবাইল কোম্পানি (গাড়ি ব্যবসায়ী)।

একই প্রকল্পের অধীন অন্য একটি ক্রয়ে সুরক্ষাসামগ্রী পোশাক ক্রয়ের জন্য ৫০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা প্রকল্প বাজেট বরাদ্দ করা হয়। প্রতিটি পোশাক বাজারমূল্যের চেয়ে চার-পাঁচগুণ বাড়িয়ে বরাদ্দ রাখা হয়। ঢাকার একটি কভিড-ডেডিকেটেড হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ক্রয় কমিটিকে অবহিত না করে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক নিজের শ্যালক ও ভাগ্নের একটি নামসর্বস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেন। স্টোরে মালামাল জমা দেওয়ার আগেই বিল পরিশোধ করে দেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে তা আর সরবরাহ করা হয়নি। করোনার সময়ে এ ধরনের ৯৩টি ক্রয়ে বিল কারসাজির মাধ্যমে ১২ কোটি ১০ লাখ ৬৫ হাজার ৯০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি প্রকল্পের অধীনে ৮৩টি হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ২৩টি হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক সরাসরি ক্রয়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পিপিআরের বিভিন্ন বিধি লঙ্ঘন করে সরাসরি ক্রয়ের ক্ষেত্রে একজনের কাছ থেকে দর প্রস্তাব আহ্বান করা হয়, কেন্দ্রীয়ভাবে দর যাচাই কমিটি গঠন করা হয়নি এবং যান্ত্রিক বিষয়গুলো দেখভালের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের নিয়ে কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। দুর্নীতির কারণে এসব হাসপাতালে ট্যাংক স্থাপনে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৬৬ কোটি টাকা।

নমুনা পরীক্ষায় দুর্নীতি

টিআইবির গবেষণায় দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদিত একটি প্রতিষ্ঠান ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা ছাড়াই ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। এখনো ৩৪.৪ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে তিন বা ততোধিক দিন করোনার প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। জরিপে অংশ নেওয়া সেবাগ্রহীতাদের ৯.৯ শতাংশ নমুনা পরীক্ষায় ভুল প্রতিবেদন পেয়েছেন। যথাসময়ে প্রতিবেদন না পাওয়ায় অনেক প্রবাসীর কর্মক্ষেত্রে ফেরায় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, অনেক কষ্টে জোগাড় করা ফ্লাইট বাতিল হয়ে যায়। এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া প্রতিবেদন নিয়ে ভ্রমণ করায় ছয়-সাতটি দেশে বাংলাদেশিদের গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং যাত্রীদের ফেরত পাঠানো হয়। অনেক দেশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত সনদ গ্রহণ করেনি।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নগদ সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে জরিপে অংশ নেওয়া ৫৬ শতাংশ উপকারভোগী দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। সুবিধা পাওয়ার জন্য গড়ে ২২০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। তালিকায় নাম থাকার পরও ৬৯ শতাংশ ব্যক্তি এখনো নগদ সহায়তা পাননি। জরিপে ওএমএস (চাল) সহায়তা উপকারভোগীদের ১৫ শতাংশ দুর্নীতির শিকার হন। টিআইবি জানিয়েছে, নগদ ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে ৭৯ শতাংশ সংসদ সদস্য, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও কাউন্সিলর জড়িত ছিল। ৪৮ শতাংশ ছিল স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা। করোনাকালে যেসব জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে, তাদের ৯০ জনই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত।

এছাড়া হাসপাতালে মানসম্মত সুরক্ষাসামগ্রীর ঘাটতি, হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতার ঘাটতি, অকার্যকর কমিটি, জবাবদিহিতার অভাব, মতপ্রকাশে বিধিনিষেধ, পরীক্ষাগারে সক্ষমতার ঘাটতি, স্বচ্ছতার অভাব, প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে বিতরণে বড় ধরনের অনিয়ম ও বৈষম্য পেয়েছে টিআইবি।

আইসিইউ খালি নেই হাসপাতালে

০৯ ডিসেম্বর, ২০২০, বণিক বার্তা

কয়েক মাস আগে থেকেই শীতে করোনার সংক্রমণ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় মোকাবেলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতির কথা জানিয়ে আসছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বাস্তবতা হচ্ছে, করোনাক্রান্ত রোগী বাড়ায় এখন সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলো। খালি নেই আইসিও সিট। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিত্রও প্রায় একই রকম।

গত নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দেশে প্রায় প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বরে করোনা রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি বেড়েছে। চলতি মাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় এক লাখে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লেও চলতি মাসে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা কমানো হয়েছে। অক্টোবরের চেয়ে ডিসেম্বরে রাজধানীর নয়টি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেডের সংখ্যা কমেছে। এতে করোনায় ভুক্তভোগীরা জরুরি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।… ….

চিকিৎসক মারা গেছেন ১১৩ জন, ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন একজন

১১ ডিসেম্বর ২০২০, বাংলা ট্রিবিউন

৯ ডিসেম্বর ভোর চারটার দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাসপাতালটির সনোলজিস্ট ডা. সাইদুল ইসলাম। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জানিয়েছে, ডা. সাইদুলসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এবং করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন এখন পর্যন্ত ১১৩ জন চিকিৎসক। অথচ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম চিকিৎসক ছাড়া আর কেউ পাননি সরকার প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ।

বিএমএ’র হিসাব অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত করোনায় ৮ হাজার ১৩৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে চিকিৎসক দুই হাজার ৮৮১ জন, নার্স এক হাজার ৯৭৩ ও স্বাস্থ্যকর্মী আছেন তিন হাজার ২৮১ জন।

করোনা মহামারির এই সময়ে সম্মুখযোদ্ধাদের উৎসাহ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেন গত ৭ এপ্রিল। অথচ আট মাসের বেশি সময় পার হলেও কোনও চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী কেউই সেই প্রণোদনা পাননি।… ….

প্রণোদনা আর্থিক সহায়তার সিংহভাগই মালিকদের জন্য

১৭ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

করোনা সংকট মোকাবিলায় রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত সরকার, বিদেশি ক্রেতা ও দাতা গোষ্ঠীর কাছ থেকে ৬২ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকার ঋণ প্রণোদনা ও আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। তার মধ্যে ৮৩ দশমিক ৯৭ শতাংশই কারখানামালিকদের ব্যবসায়িক সংকট মোকাবিলায়। আর বেতন-ভাতা বাবদ শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘তৈরি পোশাক খাতে করোনাভাইরাস উদ্ভূত সংকট: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে। সংস্থাটি বলছে, প্রণোদনার অর্থপ্রাপ্তিতে বড় কারখানাগুলোকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও তদবিরের অভিযোগও পাওয়া গেছে।… …

প্রণোদনার ঋণের ২৫% গেছে বড় ১৫ গ্রুপের কাছে

প্রথম আলো, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

বড় গ্রাহকদের করোনাভাইরাসজনিত আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। শিল্প ও সেবা খাতের এই গ্রাহকদের বাকি সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। কম সুদের এই ঋণের সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি কেউই। দফায় দফায় খেলাপি হওয়া ও পুনর্গঠন–সুবিধা নেওয়া ব্যবসায়ীরা যেমন এই ঋণ নিয়েছেন, তেমনি ভালো ব্যবসায়ীরাও তা পেয়েছেন।

তবে এই প্রণোদনা ঋণের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হলো সরকারি প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ। লোকসানি এই সংস্থা সোনালী ব্যাংক থেকে এই ঋণ নিয়েছে। বিমানের ঋণে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে ৪৫ কোটি টাকা। ১৫টি শিল্প গ্রুপ ৭ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা নিয়েছে। অর্থাৎ মূল প্রণোদনা তহবিলের ২৫ শতাংশ অর্থই গেছে তাদের কাছে। সব মিলিয়ে বড়দের প্রণোদনা তহবিলের টাকা পেয়েছে প্রায় তিন হাজার প্রতিষ্ঠান।… …

করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ এপ্রিল ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর আগে তৈরি পোশাক খাতের বেতন-ভাতার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি।

শিল্প ও সেবা খাতের প্রণোদনা প্যাকেজটিই সবচেয়ে বড়। এর আকার শুরুতে ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা পরবর্তী সময়ে বেড়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। নতুন করে বিদেশি ও দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বেসরকারি খাতের শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৬১ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপ। তারা রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, জনতা, রূপালীসহ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে এই ঋণ নিয়েছে। চট্টগ্রামভিত্তিক গ্রুপটিকে দেওয়া ঋণে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে ৪৩ কোটি টাকা।

চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপও এই তহবিল থেকে ৮৫১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। তাদের রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা, ইসলামীসহ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক প্রণোদনার ঋণ দিয়েছে। এস আলমের ঋণে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে ৩৮ কোটি টাকা।

ইস্পাত খাতের বিএসআরএম গ্রুপ সব মিলিয়ে ৬১৯ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। গ্রুপটির ঋণে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে ২৮ কোটি টাকা। আবাসন ও নিত্যব্যবহার্য পণ্য খাতের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ ৬০০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। তাদের ঋণে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে ২৭ কোটি টাকা। প্রাণ গ্রুপ ৫৪০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে, এতে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে ২৪ কোটি টাকা।

খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতের প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ ৫০২ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে, যেখানে সরকার ২৩ কোটি টাকা সুদ ভর্তুকি দেবে। অন্য উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইস্পাত খাতের কেএসআরএম ৩২৫ কোটি টাকা ও জিপিএইচ ২৮৬ কোটি টাকা, এসিআই গ্রুপ পেয়েছে ৩০৪ কোটি টাকা ঋণ; নাভানা গ্রুপ ২৬৮ কোটি টাকা; বেক্সিমকো গ্রুপ ২৬০ কোটি টাকা; জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ২৩৫ কোটি টাকা; স্কয়ার গ্রুপ ২০২ কোটি টাকা এবং থারমেক্স গ্রুপ ১৯০ কোটি টাকার ঋণ পেয়েছে প্রণোদনা তহবিল থেকে।… ….

ঢাকায় দিনে ৩৯ তালাক

প্রথম আলো, ২২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩: ০১

করোনার এই সময়ে ঢাকায় তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে গেছে। এ বছরের জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ মাসে ঢাকায় বিবাহবিচ্ছেদ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে দৈনিক ৩৯টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে, অর্থাৎ প্রতি ৩৭ মিনিটে একটি তালাক হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ বেড়ে যাওয়ার পেছনে করোনার কারণের তৈরি হওয়া মানসিক, আর্থিকসহ নানামুখী চাপের পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন এবং যোগাযোগ কমে যাওয়াকে অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।.. ..

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানায় সরকার। এরপর ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ছিল। ছুটির মধ্যে এপ্রিল মাসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে কোনো তালাকের আবেদন জমা পড়েনি। মে মাসেও তালাকের আবেদন কম ছিল। তবে জুন মাসে তালাকের আবেদন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরেও এই ধারা অব্যাহত ছিল। গত নভেম্বর মাসে ঠিক কতটি তালাকের আবেদন জমা পড়েছে, সে হিসাব এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে দুই সিটির কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে নভেম্বরেও আবেদনের সংখ্যা বেশি হবে। চাকরিজীবী স্বামী-স্ত্রীদের ক্ষেত্রে তালাকের ঘটনা বেশি ঘটছে।.. …

দুই সিটির মেয়রের কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন থেকে অক্টোবর মাসে তালাক হয়েছে ৫ হাজার ৯৭০টি। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনে ২ হাজার ৭০৬টি আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩ হাজার ২৬৪টি তালাক হয়েছে। এই সময়ে প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ১৯৪টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে। আর ২০১৯ সালে প্রতি মাসে গড়ে তালাক হয়েছিল ৯২০টি। চলতি বছরের ৫ মাসে তালাক বেড়েছে ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহে অনিশ্চয়তা

৩১ ডিসেম্বর, ২০২০, দেশ রুপান্তর

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০ দিন ধরে বিকল হয়ে আছে দেশের সবচেয়ে বড় অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেডের অক্সিজেন উৎপাদন প্ল্যান্ট। দেশের হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের চাহিদার বেশিরভাগই সরবরাহ করে থাকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত লিন্ডের এ প্ল্যান্টটি। উৎপাদন বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে প্রতিদিন ৭০-৮০ টন করে অক্সিজেন আমদানি করতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। অবশ্য এতেও হাসপাতালগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারছে না লিন্ডে।  আগে প্রতিদিন প্রায় ১০০ টন অক্সিজেন উৎপাদন হতো এ কারখানায়। সে হিসাবে ২০-৩০ টন অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে।

এদিকে যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করে কবে নাগাদ কারখানায় উৎপাদন শুরু করা যাবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে কারখানা কর্র্তৃপক্ষ। করোনা মহামারীর মাঝে উৎপাদনে যেতে প্রতিষ্ঠানটির যদি আরও দীর্ঘ সময় লাগে সে ক্ষেত্রে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এতে দেশের হাসপাতালগুলোতে, বিশেষ করে মুমূর্ষু কভিড-১৯ রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে সংকটের সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লিন্ডের কারখানাটিতে উৎপাদন বন্ধের সুযোগ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ করছেন অতি মুনাফার লোভে।… ….

মহামারিতে খর্ব হয়েছে মতপ্রকাশ, বেড়েছে দমন-পীড়ন

৩১ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

করোনা মহামারির মধ্যে মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব হয়েছে; বেড়েছে দমন-পীড়ন, সীমান্ত হত্যা ও নারী নির্যাতন। এ তথ্য জানিয়ে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলেছে, মহামারির সময়েও মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা ঘটেছে তা নজিরবিহীন।

আজ বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজিত এক সেমিনারে আসক ২০২০ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে এক প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংস্থাটি। সর্বস্তরের নাগরিকের অধিকার রক্ষা করাসহ একটি গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারবান্ধব রাষ্ট্র গঠনে সরকার কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে তারা।

আসকের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির ও সহকারী সমন্বয়কারী অনির্বাণ সাহা ওই সেমিনারে মানবাধিকার–সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। আসকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা বেড়েছে। এ বছর ১২৯ মামলায় ২৬৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসক বলেছে, বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যা বন্ধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বারবার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা কমেনি। ২০২০ সালে তাদের গুলিতে ৪২ জন এবং শারীরিক নির্যাতনে ৭ জনসহ মোট ৪৯ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আগের বছর ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪৩।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে সারা দেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৬২৭ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ–পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৫৩ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ১৪ জন। ২০১৯ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মোট ১ হাজার ৪১৩ জন নারী। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭৩২।

করোনার নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হয় না বাংলাদেশের পিসিআর পরীক্ষায়

২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

‘ব্রিটেনে শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন আর বাংলাদেশে শনাক্ত নতুন স্ট্রেইনকে কোনোভাবেই এক বলার সুযোগ নেই। তাছাড়া বাংলাদেশে চলমান আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের নতুন স্টেইন শনাক্তের সুযোগ বা সক্ষমতাও নেই। নতুন স্ট্রেইন বাংলাদেশে আছে কি না, তারচেয়ে বড় বিষয় চলে আসার সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না। কোনোভাবে যদি ব্রিটেনের নতুন স্ট্রেইন বা ভ্যারিয়েন্টটি বাংলাদেশে চলে আসে তবে তা সংক্রমণের বিস্তার ত্বরাণ্বিত করতে পারে, যেমনটি করছে যুক্তরাজ্যে’, দ্য ডেইলি স্টারকে বলছিলেন ড. বিজন কুমার শীল ও ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম। অনুজীব বিজ্ঞানী ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. বিজন সিঙ্গাপুরে এবং দ্য ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের সিনিয়র গবেষক ড. আকরাম লন্ডনে অবস্থান করছেন। করোনাভাইরাসের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

বাংলাদেশে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন শনাক্তের সুযোগ আছে কি না, সরকারের পরামর্শক কমিটির তিন জন বিশেষজ্ঞ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন বিষয়টি তাদের জানা নেই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুলতানা শাহানা বানু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাংলাদেশে আরটি-পিসিআরে টু-জিন (দুইটি জিন) পরীক্ষা করা হচ্ছে। বর্তমানে আমরা যে আরটি-পিসিআর ব্যবহার করছি, সেটাতে হয়তো সবগুলো মিউটেশন বা পরিবর্তন শনাক্ত করতে পারছি না, স্কিপ করে যাচ্ছি। ফলে আমাদের এখানে যেভাবে পরীক্ষা হচ্ছে, সেভাবে নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। সেটা নিয়েই এখন আমাদের আলোচনা যে, আমাদের এই আরটি-পিসিআর হয়তো পরিবর্তন করতে হবে, নতুন কিট দরকার হবে।’… …

ভারতের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি দামে ভ্যাকসিন কিনবে বাংলাদেশ: রয়টার্স

১২ জানুয়ারি, ২০২১, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

বাংলাদেশ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজ চার ডলারে কিনবে। এতে ভারতের তুলনায় অন্তত ৪৭ শতাংশ বেশি খরচ হবে বাংলাদেশের।

বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ গত বছর নভেম্বরে সেরামের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার প্রাথমিক চুক্তি করেছে।… ….

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লালমনিরহাটে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, মৃতদেহে আগুন

২৯ অক্টোবর ২০২০, বিবিসি বাংলা

বাংলাদেশে লালমনিরহাট জেলার পুলিশ জানিয়েছে, পাটগ্রাম এলাকায় শত শত মানুষ একজন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর তার মৃতদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, এক মসজিদে আছরের নামাজের পর ঐ ব্যক্তি ধর্মের অবমাননা করেছেন, এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।

এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

শত শত মানুষ জড়ো হয়ে পিটিয়ে ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করে তার মৃতদেহে আগুন দেয়ার ঘটনাটি ঘটেছে পাটগ্রামের বুড়িমারি ইউনিয়নে।

মুরাদনগরে গুজব তুলে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ

০১ নভেম্বর ২০২০, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজবে কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর ও আগুন ধরানো হয়েছে।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাড়িও রয়েছে। এই ঘটনার মধ্যে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গ্রেপ্তার দুজনের বাড়িতে আগুন ধরানো হয়েছিল জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেছেন, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। গ্রেপ্তার দুজনের একজন পূর্ব ধউর (পূর্ব) ইউনিয়নের কুরবানপুর এলাকার একটি কিন্ডার গার্টেনের প্রধান শিক্ষক। অন্যজন পাশের আন্দিকোট গ্রামের বাসিন্দা। পূর্ব ধউর (পূর্ব) ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হলেন অধ্যাপক বনকুমার শিব।

বড় ভাই’দের প্রশ্রয়ে ভয়ংকর কিশোর গ্যাং

১৮ নভেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

কেউ স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছে, কেউ এখনো পড়ছে। তাদের আড্ডায় রয়েছে রকমফের। এদের আড্ডায় যোগ দেন তরুণ বখাটে, ছিনতাইকারী ও মাদক মামলার আসামিরাও। আড্ডার ছলে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ে। আর ‘বীরত্ব’ দেখাতে তুচ্ছ ঘটনায় খুনোখুনি, প্রকাশ্যে রাস্তায় গুলি করতে তাদের হাত কাঁপছে না। ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাইয়ে তারা বেপরোয়া।

তাদের নানা অপকর্মে সাহস জোগান গডফাদার নামে পরিচিত বড় ভাইয়েরা। এসব বড় ভাই চট্টগ্রাম নগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পদধারী, নামধারী। প্রথম আলোর অনুসন্ধান ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরে ৪৭ বড় ভাইয়ের দলে রয়েছে ৬০০ কিশোর-তরুণ। এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে বড় ভাইয়েরা এদের টানছেন। কিশোর থেকে শুরু থেকে তরুণেরা নানা মোহে পড়ে স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকেরা।… ….

ওসি প্রদীপের অবৈধ কর্মকাণ্ড জেনে যাওয়ায় খুন হন সিনহা’

১৩ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ মদদে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খুন হন। টেকনাফে বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভয়াশ্রম তিনি গড়ে তুলেছিলেন। এ সম্পর্কে জেনে ফেলার কারণেই তাঁকে খুন করা হয়।

আজ রোববার কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এ কথা বলেন। এর আগে সকালে কক্সবাজারের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দায়ের করেন র‍্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম। দুপুরে অভিযোগপত্রের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানায় র‍্যাব।… …

সিনহা রাশেদ হত্যা মামলা: থানায় গোপন বৈঠকে হত্যার ‘পরিকল্পনা’

১৪ ডিসেম্বর ২০২০, সমকাল

কক্সবাজারের টেকনাফে সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার প্রত্যক্ষ মদদে হত্যা মিশন বাস্তবায়ন হয়। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে টেকনাফ থানায় বসে গোপন বৈঠক করে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও পুলিশের তিন সোর্স মিলে সিনহাকে হত্যার ছক চূড়ান্ত করেন।

টেকনাফে সরকারি বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে অবৈধ কর্মকাে র অভয়াশ্রম গড়ে তুলেছিলেন ওসি প্রদীপ। তার ইয়াবা বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয় জেনে যান সিনহা। ইয়াবা কারবার নিয়ে সাক্ষাৎকার চাওয়ায় প্রথমে সিনহাকে হুমকি দেন প্রদীপ। ওই কাজ থেকে বিরত রাখতে না পারায় তাকে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করেন।…

টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, কালের কন্ঠ

কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরের দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। র‌্যাবের দাবি, নিহত ব্যক্তি একজন মাদক কারবারি।

মহামারীর বছরে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ শিকার ১৮৮ জন: আসক

৩১ ডিসেম্বর ২০২০, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

মহামারীর মধ্যে পেরিয়ে আসা ২০২০ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘উদ্বেগজনক’ ছিল বলে পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, গত বছর ১৮৮ জন ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ শিকার হয়েছে। নারী নির্যাতন, বিশেষ করে ধর্ষণ ও পারিবারিক নির্যাতন উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

বিদায়ী বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আসক। এবার সংবাদ সম্মেলনটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে আসকের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির বলেন, “২০২০ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ক্রসফায়ার/বন্দুকযুদ্ধ/গুলিবিনিময়ে নিহত হয়েছেন ১৮৮ জন। এর মধ্যে চলমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে নিহত হন ১১২ জন।”

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে সংগৃহীত আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান ও পর্যালোচনা করে এই তথ্য সন্নিবেশিত করেছে আসক।

সংবাদ সম্মেলনের আসকের সহকারী সমন্বয়কারী অনির্বাণ সাহা বলেন, “করোনাকালেও অব্যাহত ছিল রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা।”

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট তথ্য হিসেবে ওমানপ্রবাসী মো. জাফরের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হওয়ার ঘটনাটি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

আসক জানায়, ২০২০ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে (গ্রেপ্তারের পর) নিহত হন ১১ জন। এছাড়া গ্রেপ্তারের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মারা যান ৫ জন এবং গুলিতে নিহত হন ৮ জন। অন্যদিকে এ বছর দেশের কারাগারগুলোতে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৭৫ জন।

মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, ২০২০ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম ও নিখোঁজের শিকার হন ৬ জন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন।

বছরটিতে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ৪২ বাংলাদেশির নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে আসক। এছাড়া এই বাহিনীর শারীরিক নির্যাতনে আরও সাতজন বাংলাদেশি নিহত হন বলেও জানানো হয়েছে।

নারী অধিকার-পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারীর সময়েও নারীর প্রতি সহিংসতা চলতে থাকে। এই সময়কালে নারী নির্যাতন, বিশেষ করে ধর্ষণের ঘটনা ও ভয়াবহতা বেড়েছে।

আসক জানায়, এই বছর সারাদেশে ১ হাজার ৬২৭ নারী ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৫৩ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১৪ জন।

২০১৯ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ১ হাজার ৪১৩ নারী এবং ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭৩২।

ডিবির তদন্তে বেরিয়ে এল, ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়েছিল র‌্যাব

২ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

দীপক ভৌমিক তৈরি পোশাকের ব্যবসা করেন। তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে সাদাপোশাকের লোকজন। যাওয়ার সময় বলে গেছে, তারা ডিবির লোক। কিন্তু ডিবির তদন্তে জানা গেছে, সাদাপোশাকের ওরা ছিল আসলে ‘কালো পোশাকের জন্য’ পরিচিত র‌্যাব সদস্য। পোশাকের এই মারপ্যাঁচে পড়া দীপক ল্যান্ডমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান।

রাজধানীর মহাখালীর নিউ ডিওএইচএসের বাসা থেকে গত ২৪ আগস্ট বিকেলে দীপক ভৌমিককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সাদাপোশাকে আসা অস্ত্রধারী ৮-১০ জন নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছে বলে জানান দীপকের ছেলে রাকেশ পিয়ারী ভৌমিক। পরদিন বিকেলে অবশ্য ছাড়া পেয়ে দীপক বাসায় ফিরে আসেন।

লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ, এসআইয়ের বাড়িতে ইট নিক্ষেপ

৩ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

বরিশালে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তারের তিন দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন মহানগর ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন আহমেদের বাসায় ইট–পাটকেল নিক্ষেপ করেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় বরিশাল নগরের সাগরদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার দিবাগত রাতে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেজাউল করিম ওরফে রেজা (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মো. ইউনুস মুনশির ছেলে। তিনি বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশের নির্যাতনের কারণেই রেজাউলের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে রেজাউলকে আটক করেন নগর ডিবির এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ।

আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, গুলিতে নিহত যুবক

০৬ জানুয়ারি ২০২১, বাংলা ট্রিবিউন

কক্সবাজারের টেকনাফে মাদক মামলার আটক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে খোরশেদ আলম (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েছে। তবে নিহত পরিবারের দাবি, পুলিশের গুলিতে নিহত হন খোরশেদ।… …

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি শামসুল আলমকে আটক করে পুলিশ। তাকে থানায় নিয়ে আসার পথে হাবিরছাড়া এলকায় পৌঁছলে তার লোকজন অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে শামসুকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি ছোড়ে। এসময় গোলাগুলিতে আহত হন ওই তিন পুলিশ সদস্য।… …

নিহত পরিবারের দাবি, শামসুল আলম পুলিশের হাতে আটকের খবর শুনে ব্যাডমিন্টিন খেলা শেষে ঘটনাস্থলে ভাইকে দেখতে ছুটে যান খোরশেদ আলম। এসময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয় সে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে।

গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের অধিকার

মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি: চুয়েট শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

৩০ অক্টোবর ২০২০, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ফেইসবুকে মহানবীকে (স.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

চুয়েটের স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান।

স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিনারি কমিটি কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিলে তা একাডেমিক কমিটির সভায় অবহিত করার পর ওই কার্যকর হয়।

যে শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে তার নাম রায়হান রোমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের ২০১৩-’১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রেজিস্ট্রার ফারুক-উজ-জামান বলেন, “ওই ছাত্র ফেইসবুকে নবীকে নিয়ে কটুক্তি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিনারি কমিটি বৃহস্পতিবার তাকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।… …

সাংবাদিক সরোয়ারকে সীতাকুণ্ডের খাল থেকে উদ্ধার

১ নভেম্বর, ২০২০, দেশ রুপান্তর

চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ হওয়া সাংবাদিক গোলাম সরোয়ারকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী একটি খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

আজকের সূর্যোদয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সদস্য গোলাম সরওয়ার বৃহস্পতিবার নিখোঁজ হন।

রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই স্থানে তাকে দেখতে পেয়ে জানতে চাইলে গোলাম সরোয়ার নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।

উক্ত ব্যক্তি পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোরশেদ চৌধুরীকে বিষয়টি জানান। চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক সীতাকুন্ড মডেল থানা এবং সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবকে অবহিত করে।

ধর্ম অবমাননাকর প্রচারণার অভিযোগে তরুণী গ্রেপ্তার

৬ নভেম্বর, ২০২০, দেশ রুপান্তর

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম অবমাননাকর প্রচারণা অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে ইসরাত জাহান রেইলি (১৯) এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর দারুসসালাম থানাধীন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-৪ এর এএসপি সাজেদুল ইসলাম ওই তরুণীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

র‌্যাব জানায়, রেইলি সাতটি ফেইসবুক আইডি, ২টি ব্যক্তিগত ব্লগভিত্তিক ফেইসবুক পেজ এবং টুইটার আইডি হতে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষী পোস্ট করে আসছে। তার একাধিক ফেইসবুক আইডি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার পরেও সে নতুন আইডি খুলে ধর্মীয় উস্কানিমূলক  প্রচারণার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

সানজিদা ইসলাম: গুম হয়ে যাওয়া মানুষদের খুঁজে বের করতে এক নারীর আন্দোলন

২৫ নভেম্বর ২০২০, বিবিসি বাংলা

পরিবারের সদস্যকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এমন পরিবারগুলোকে নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশের সানজিদা ইসলাম। তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে আনতে একটি কর্মসূচী চালাচ্ছেন।

সানজিদা ইসলাম তার এই সংগঠনের নাম দিয়েছেন মায়ের ডাক। তিনি নিজে এই সংগঠনের সমন্বয়কারী।

মিজ ইসলামের ভাই সাজেদুল ইসলাম সুমনকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ২০১৩ সালের চৌঠা ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিএনপির তৎকালীন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের (বর্তমানে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাজেদুল ইসলাম সুমন। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।

নিখোঁজ সাজেদুল ইসলাম সুমনের পরিবারসহ মায়ের ডাক-এর সদস্য বাকী পরিবারগুলোর অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাদের তুলে নিয়ে গেছে। যদিও সরকার, পুলিশ বা র‍্যাবের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

মিজ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলছেন, ”যখন আমার নিজের ভাই গুম হয়ে যায়, তখন আমরা ঘটনাগুলো উপলব্ধি করতে শুরু করি। সেই সময় অনেকগুলো ঘটনা ঘটে, যেখানে গুমের ঘটনা ঘটে। তাদের পরবর্তীতে আর পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া হয়নি।”

এই বিষয়ে ক্যাম্পেইন করার জন্য গুমের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারগুলো একত্রির হয় ‘মায়ের ডাক’-এর ব্যানারে।

মিজ ইসলাম বলছেন, ”গুম হওয়ার পরিবারগুলোর মায়েদের যে আর্তনাদ, সেটা তুলে ধরাই আমাদের সংগঠনের উদ্দেশ্য।”

এই পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে প্রশাসনিক পর্যায়ে যে আবেদন করা উচিত, হাইকোর্টে রিট থেকে শুরু করে অফিসিয়াল যে পদক্ষেপগুলো নেয়ার, সেটাই তারা করার চেষ্টা করছেন।

”আমাদের হিসাবে এখন পর্যন্ত ৫৫২ জনের গুম হওয়ার তথ্য রয়েছে। কিন্তু এটা আসলে আরও বেশি হবে। কারণ অনেক পরিবার আছে যারা হয়তো ততোটা শিক্ষিত নয় যে, তথ্য সংগ্রহ করে রাখছে, সামনে এগিয়ে এসে বলতে পারছে।” সানজিদা ইসলাম বলছেন।… ….

প্রেস ক্লাবে রাতের আঁধারে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের লাঠিপেটা!

০৭ ডিসেম্বর ২০২০, জাগো নিউজ

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষক ও পোশাক শ্রমিকদের রাতের আঁধারে লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর পৌনে ৫টার দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে বলে জানান আন্দোলনকারীরা। এ সময় তাদের দিকে পানি ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।

ফলে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রেস ক্লাবের সামনের ফুটপাত থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা।

কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও পোশাক শ্রমিক আহত হয়েছেন। কারও ভেঙেছে হাত, কেউবা চোট পেয়েছেন মাথা, কপাল, হাঁটু কিংবা পিঠে।

লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, কে বা কারা শিক্ষক ও পোশাক শ্রমিকদের তাড়িয়ে দিয়েছে তা তারা জানেন না।… …

আন্দোলনকারীদের মধ্যে ছিলেন নীলফামারীর একটি স্বতন্ত্র এবতেদিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম। তিনি জানান, ভোরের দিকে হঠাৎ বাঁশির শব্দ ও চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশের লাঠির আঘাত লাগে কপাল ও পায়ে।

কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, ‘২২ বছরের চাকরিজীবনে বিনা বেতনে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে পড়াশোনা করিয়েছি। এই তার প্রতিদান। বাড়িতে গিয়ে পুলিশের এই অত্যাচারের কথা বলতেও পারব না। এ বড় লজ্জা।’… …

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই স্ব স্ব দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন স্বতন্ত্র এতবেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ২০১৮ প্যানেলপ্রত্যাশী, তাজরীন ফ্যাশনস ও এওয়ান গার্মেন্টসে কর্মরত শত শত মানুষ।… …

সিনেমার সংলাপে পুলিশকে হেয় করার অভিযোগে পরিচালক অভিনেতা গ্রেপ্তার

২৫ ডিসেম্বর ২৫, ২০২০, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

‘নবাব এলএলবি’ সিনেমার একটি দৃশ্যের সংলাপে পুলিশকে হেয় করার অভিযোগে পর্নোগ্রাফি মামলায় ছবির পরিচালক অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহীন মৃধাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাদের ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মিরপুরের বাসা থেকে অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহীন মৃধাকে গ্রেপ্তার করা হয়।… ….

নির্বাচনে কেমন সংবাদ করতে হবে বলে দিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা

৩১ ডিসেম্বর ২০২০, বাংলা ট্রিবিউন

আসন্ন সাভার পৌরসভা নির্বাচনে কীভাবে নিউজ করতে হবে সাংবাদিকদের সে নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনির হোসাইন খান। তিনি বলে দিয়েছেন, প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ নিয়ে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না, সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না। প্রার্থীদের কোনও নেতিবাচক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা যাবে না। খবর প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের অফিসে রিপোর্ট করার ভয়ও দেখিয়েছেন তিনি।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে আসন্ন সাভার পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে সাভার সরকারি কলেজ ভবনে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাভার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফখর উদ্দিন শিকদার, মিরপুর থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল, সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ প্রমুখ।

মতবিনিময়সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনির হোসাইন খান বলেন, ‘নির্বাচন একটি সেনসিটিভ জিনিস, একটা নিউজের জন্য পুরো গণ্ডগোল হয়ে যাবে, পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যাবে, পরিস্থিতি কন্ট্রোলে আনা টাফ হয়ে যাবে। একটা বেফাঁস কথা বা বেফাঁস খবর এরকম যদি ছাপায়ও, আমার বা আপনাদের মতামত, হয়তো তার দৃষ্টি আছে বা নেই, যতটুকু অ্যাভোয়েড করা যায় করতে হবে। নেগেটিভ থাকলেও সবকিছু পজিটিভলি দেখতে হবে। আমাদের নির্বাচন ঠিক থাকতে হবে।’

এটা গভর্নমেন্টের একটা শিডিউল বা নির্বাচন কমিশনের শিডিউল, এটা নিয়ে কোনও সময় আপস নেই। আমরা সবাই পজিটিভলি দেখবো। কারো কোনও ভুল ভ্রান্তি থাকলে আমরা পারসোনালি বলবো। একটা নিউজ করে দিলে হয়তো আপনার একটু ক্রেডিট হবে, কিন্তু আমার জন্য, ওসি সাহেবের জন্য, সাভার পৌরবাসীর জন্য বিষয়টি কষ্টকর হয়ে যাবে। কোনও নেগেটিভ ঘটনা ঘটলে আপনারা আমাকে জানাবেন, আমি যদি কোনও ব্যবস্থা না নেই, তখন আপনারা নিউজ পরিবেশন করবেন।’

এসময় নিজ নিজ বক্তব্যে উপস্থিত সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে সাংবাদিকদের পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কিত নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন।

মো. মুনির হোসাইন খান এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা অনেক সময় নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন করেন। এতে ওই প্রার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন, তার নির্বাচনি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। এগুলো কিন্তু করা যাবে না, যদি কেউ করেন, আমি কিন্তু তার অফিসে রিপোর্ট করবো।’

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এমপিরা পালানোর দরজা খুঁজে পাবেন না: ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের

৪ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

‘বৃহত্তর নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের কিছু কিছু চামচা নেতা আছেন, যাঁরা বলেন অমুক নেতা তমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপির দুর্গ ভেঙেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চারটা আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা খুঁজে পাবে না পালানোর জন্য। এটাই হলো সত্য কথা। সত্য কথা বলতে হবে। আমি সাহস করে সত্য কথা বলছি।’

কথাগুলো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার। তাঁর সাম্প্রতিক এ বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানের ছবি তোলায় সরকারি কাজে বাধাদানের ধারায় দণ্ড

৫ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

গাছের আড়াল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উচ্ছেদ অভিযানের ছবি তোলার কারণে আবদুল হামিদ (৪১) নামের এক মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিককে দণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা। ছবি তোলায় সরকারি কাজে বাধাদানের ধারায় ওই ব্যক্তিকে ২০০ টাকা জরিমানা (অর্থদণ্ড) করেন তিনি। যদিও এ সময় দণ্ডিত ব্যক্তি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছিলেন।

ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা এলাকায়। দণ্ডিত ব্যক্তির নাম আবদুল হামিদ (৪১)। তিনি কাহারতা গ্রামের মৃত কছর উদ্দিনের ছেলে। তিনি ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সখীপুর উপজেলার শাখার চেয়ারম্যান, দৈনিক আকাশ বার্তা পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও সখীপুর উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্য বলে দাবি করেন।

আদালত সূত্রে জানায়, পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা গ্রামের সরকারি খাসপুকুরের পাড় দখল করে স্থানীয় লোকজন আটটি দোকানঘর নির্মাণ করেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই দোকানঘরগুলো উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেন। ওই সময় আবদুল হামিদ ওরফে মুকুল গাছের আড়াল থেকে মুঠোফোনে একাধিক ছবি তোলেন। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিতে এলে আবদুল হামিদকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।… ….

ভোটার বেড়েছে, ছিল অনিয়মও

১৭ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের মহড়া আর বিএনপির সক্রিয় উপস্থিতি না থাকা—সাম্প্রতিক সময়ে ভোটের এই প্রবণতাই আবার দেখা গেল দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌরসভার নির্বাচনে। তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে, শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকেই বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি। এর বাইরে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, ধাওয়া, মেয়র পদে অনেক পৌরসভায় প্রকাশ্যে সিল মারা, গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোটারকে নৌকায় ভোট দিতে প্ররোচিত বা বাধ্য করা, গতকাল শনিবারের ভোটে কম–বেশি এর সবই দেখা গেছে।

ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে বিজয়ী মো. তরিকুল ইসলাম খানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। আর গাইবান্ধায় ভোট শেষে রাতে একটি কেন্দ্রের ব্যালট বাক্স ও মালামাল নিয়ে ফেরার পথে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাবের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা এই হামলা–ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত।

এবার প্রচারের সময়ও সংঘাত-সহিংসতায় দুজন নিহত হয়েছে। তবে গতকাল ভোটের দিন রাজশাহীর আড়ানী, ঝিনাইদহের শৈলকুপাসহ সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হয়েছে। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া প্রহরা ছিল। নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরাও নজরদারি করেছেন। তবে সে তুলনায় বুথ ও গোপন কক্ষ ছিল অনেকটাই অরক্ষিত। যেসব স্থানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হয়েছে, সেগুলোতে সহযোগিতার নামে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিরা গোপন কক্ষে অবস্থান নিয়ে মেয়র পদে বাটন চেপেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর ব্যালটের ভোটের ক্ষেত্রে ভোটারকে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটেছে। তবে কাউন্সিলরের ভোটে জবরদস্তি করার তেমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।… …

এমপি যাবেন বলে সেতু বন্ধ! পাড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছিল শিশুটি

১৭ জানুয়ারি, ২০২১, কালের কন্ঠ

সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা, বোয়ালখালীর কালুরঘাট সেতুতে আটকে পরে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে ছয় বছরের এক শিশু। এমপি সেতু পার হবেন বলে এক পাশে গাড়ি পারাপার বন্ধ। এরই মধ্যে গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া দগ্ধ শিশুর স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সেতু এলাকার আকাশ। শতশত মানুষের ভীড়ও জমে গেছে। উপস্থিত জনতার অনুরোধ ও স্বজনদের আকুতি-মিনতিও সেতু কর্তৃপক্ষের মন গলাতে পারেনি। টোল অফিসের সামনে দগ্ধ শিশুর সিএনজি অটোরিকশাটি আটকে থাকে। রবিবার সকালে বোয়ালখালীর কালুরঘাট সেতুর টোল অফিসের সামনেই এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটে।… 

মৃত ব্যক্তিরাও কি তাহলে ভোট দিতে এসেছিলেন

২১ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভার নওপাড়া এলাকার বাসিন্দা আতর আলী শেখ (৬২) বার্ধক্যের কারণে গত ৬ আগস্ট মারা যান। একই এলাকার রাবেয়া খাতুন (৭৮) গত ১০ জুলাই এবং নুর ইসলাম প্রামাণিক (৫০) গত ২১ ডিসেম্বর মারা যান। এ ছাড়া স্থানীয় লোকজন আরও কয়েকজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। বেশ কয়েকজন কর্মসূত্রে বিদেশে এবং বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করছেন। এ রকম অন্তত ২৫ জন রয়েছেন বলে মুখে মুখে হিসাব করে জানালেন স্থানীয় লোকজন।

তবে নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটের হিসাব বলছে মৃত এবং বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিরাও ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছিলেন! কারণ, ওই কেন্দ্রে সেদিন শতভাগ ভোট পড়েছিল। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা কেন্দ্রভিত্তিক যে ফলাফল প্রকাশ করেছেন, তাতেই এ রকম অস্বাভাবিক চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কুষ্টিয়া, মিরপুর, ভেড়ামারা ও কুমারখালী নির্বাচনে মেয়র পদে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের এসব উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে মিরপুর পৌরসভা নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৬ জানুয়ারি ব্যালটে অনুষ্ঠিত মিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে মোট ১০টি কেন্দ্রে গড়ে ভোট পড়েছিল ৮৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এর মধ্যে ৭টিতে ৮০ শতাংশের ওপরে, দুটি কেন্দ্রে ৭৯ শতাংশের ওপরে এবং নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে।

আর জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে, গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের ২৪টি পৌরসভার নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌরসভার নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ। সেই অনুপাতে মিরপুর পৌরসভায় অস্বাভাবিক হারে ভোট পড়েছে।… …

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: এক শিক্ষককে বরখাস্ত, দুজনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত

২৩ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণকারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই তিন শিক্ষকের মধ্যে একজনকে বরখাস্ত ও দুজনকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১২তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার বেলা তিনটার দিকে সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিন্ডিকেট সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আগের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তই এবারের সিন্ডিকেট সভায় বহাল রাখা হয়েছে। আগামীকাল রোববার সভার সিদ্ধান্ত রেজল্যুশন করে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে।

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর একই বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে অপসারণ করা হয়েছে।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধি অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করা হলে ওই কর্মচারী ভবিষ্যতে অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে অথবা কোনো আইন বলে বা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো সংস্থায় নিয়োগ লাভের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে চাকরি থেকে অপসারিত হলে কর্মচারী পুনর্নিয়োগ লাভের অযোগ্য হবেন না।

বিদ্যুৎ-জ্বালানী-খনিজসম্পদ

গাজপ্রমে বাড়তি ব্যয় ১৩২ কোটি টাকা

২২ নভেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি গাজপ্রমকে ভোলায় তিনটি গ্যাসকূপ খননের কাজ দিতে গিয়ে ১৩২ কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশে গাজপ্রম কাজ পেলেও তারা নিজেরা কূপ খনন করে না। ঠিকা দেয় এরিয়েল অয়েল ফিল্ড সার্ভিসেস নামের একটি কোম্পানিকে। এরিয়েল বাংলাদেশ সরকারকে একই কূপ ২৪ শতাংশ কম খরচে খনন করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। অবশ্য সরকারি সংস্থা বাপেক্সকে খননের কাজ দিলে খরচ পড়বে অর্ধেকের কম।

জ্বালানিসচিবের নেতৃত্বাধীন প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটি (পিপিসি) গত ৯ সেপ্টেম্বর ভোলায় রাশিয়ার গাজপ্রমকে তিনটি কূপ খননের প্রাথমিক অনুমতি দেয় বলে জ্বালানি বিভাগের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান। এখন শুধু জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন বাকি। প্রতিটি কূপ খননে গাজপ্রম পাবে ১৮০ কোটি টাকা, তিনটিতে মোট ৫৪০ কোটি টাকা। অন্যদিকে এরিয়েল চিঠি দিয়ে বলেছে, তারা প্রতিটি কূপ ১৩৬ কোটি টাকা করে তিনটি মোট ৪০৮ কোটি টাকায় খনন করতে চায়।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) প্রতিটি কূপ খননে ৬৫ থেকে ৮০ কোটি টাকা ব্যয় করে। চলতি বছরই কুমিল্লার মুরাদনগরের শ্রীকাইলে একটি কূপ খনন শেষ করেছে বাপেক্স। এতে ৮০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এ হিসেবে, ভোলার তিনটি কূপ বাপেক্স খনন করলে ব্যয় হতো ২৪০ কোটি টাকা। সরকারের সাশ্রয় হতো ৩০০ কোটি টাকার মতো (গাজপ্রমের তুলনায়)।

ভোলা গ্যাসক্ষেত্র বাপেক্সই ১৯৯৫ সালে আবিষ্কার করে। সেখান থেকে সংস্থাটি ২০০৯ সাল থেকে গ্যাস উত্তোলন করছে, যা শুধু ভোলায় ব্যবহৃত হয়। ভোলায় এখন পর্যন্ত ছয়টি কূপ খনন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পিজেএসসি গাজপ্রমকে ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭টি কূপ খননের কাজ দিয়েছে। এ জন্য ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কূপগুলো এরিয়েলকে দিয়েই খনন করিয়েছে গাজপ্রম। রাশিয়ার গাজপ্রম অবশ্য সরাসরি কাজ এরিয়েলকে দেয় না। তারা দেয় গাজপ্রম ইপি ইন্টারন্যাশনালকে, যেটি নেদারল্যান্ডসে নিবন্ধিত। গাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল আবার কাজটি দেয় এরিয়েলকে।

এভাবে কূপ খননকাজের হাতবদল এবং বাংলাদেশের ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ বিষয়ে জ্বালানিসচিব মো. আনিছুর রহমান ১৭ অক্টোবর মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশে যে গাজপ্রম এত দিন কাজ করেছে, ভোলায়ও কাজ করতে যাচ্ছে, তারা রাশিয়ার সরকারি গাজপ্রম বলেই আমরা জেনে এসেছি। গাজপ্রমের সঙ্গে আলোচনার সময় রাশিয়ার দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।’… ….

ধারাবাহিকভাবে কমছে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ব্যবহার

২১ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

দেশে গত এক দশকে সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে বিদ্যুৎ খাত। এ সময়ে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাড়ানো হয়েছে সক্ষমতা। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২১ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট। যদিও বর্তমানে বিশাল এ সক্ষমতার মাত্র ৪০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে সক্ষমতার ব্যবহার।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে বিদ্যুৎ খাতের স্থাপিত সক্ষমতা ২১ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট এবং প্রকৃত উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার ৭৪৮ মেগাওয়াট। কিন্তু এ বিপুল পরিমাণ উৎপাদন সক্ষমতার বিপরীতে ১৮ জানুয়ারি দিনের পিক আওয়ারে উৎপাদন হয়েছে ৭ হাজার ৭৫৮ মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যার পিক আওয়ারে উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ২৯৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি খুব বেশি গতি পাচ্ছে না। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ দশমিক ২৬ শতাংশ।

কয়েক বছর ধরেই বিদ্যুৎ খাতে উৎপাদন সক্ষমতার ব্যবহার কমছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৪০ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সক্ষমতার ৪৩ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪৫ শতাংশ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ৪৮ শতাংশ ব্যবহার হয়েছিল।

বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী পাঁচ বছর ধরে যদি বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের উপরে না থাকে, তবে স্থাপিত সক্ষমতার ব্যবহার ৪০ শতাংশেরও নিচে নেমে যাবে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত সক্ষমতার বিরূপ প্রভাব পড়বে বিপিডিবির আর্থিক অবস্থা এবং বিদ্যুতের দামের ওপর।

নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও বেসরকারি ও সরকারি কোম্পানির কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ কেনার জন্য স্বল্প (রেন্টাল) ও দীর্ঘমেয়াদি (আইপিপি বা ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) চুক্তি থাকে বিপিডিবির। এ কেন্দ্রগুলোতে ব্যবহূত তেল, গ্যাস, কয়লা বা জ্বালানির মূল্য দেয় বিপিডিবি। বিদ্যুতের দাম থেকে শুরু করে সারা বছর কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি ইউনিট অর্থ বরাদ্দ থাকে। এছাড়া কেন্দ্রটির একটি ভাড়া দেয়া হয়, যা ক্যাপাসিটি চার্জ নামে পরিচিত। যখন কোনো কেন্দ্র থেকে সরকার বিদ্যুৎ নেয় না, তখন এনার্জি ও বিদ্যুতের দাম দেয়া বন্ধ থাকে। কিন্তু ক্যাপাসিটি চার্জ বা কেন্দ্র ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ ঠিকই পরিশোধ করতে হয়।

একটি ১০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বছরে শুধু কেন্দ্র ভাড়াই দিতে হয় প্রায় ৮০-৯০ কোটি টাকা। ফলে কেন্দ্র অলস বসে থাকলে বিপুল পরিমাণ অর্থ সরকারের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। বিপিডিবির আর্থিক ক্ষতি পোষাতে সরকারকে বিপুল অংকের টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। অন্যদিকে ক্ষতি পোষাতে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয়। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্র অব্যবহূত থাকার বোঝা গিয়ে পড়ে ভোক্তার ওপর। আর নতুন আইনের মাধ্যমে এখন থেকে বছরে একাধিকবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

পরিবেশ

শত একর জমির পাকা ধান নষ্ট

০৯ নভেম্বর ২০২০, সমকাল

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় কারখানার পানি ও বর্জ্যে মরে যাচ্ছে কৃষকের ফসলি জমির পাকা ধান। নষ্ট হচ্ছে তিন ফসলি জমি। উপজেলার ঘেঁচুয়া গ্রামে ‘মালিহা’ গ্রুপের ‘মালিহা পলিটেক্স ফাইবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিেিটড’-এর দূষিত পানি ও বর্জ্যে ঘেঁচুয়াসহ আশপাশের ছয়টি গ্রামের দুই শতাধিক কৃষকের কয়েকশ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কারখানার দূষিত পানি ও বর্জ্যে নষ্ট হয়ে যাওয়া পাকা আমন ধান তারা ঘরে তুলতে পারছেন না। দ্রুততম সময়ে কারখানার দূষিত পানি ও বর্জ্য বন্ধ করা না হলে সম্প্রতি ওই কারখানা বন্ধে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি গ্রাম হচ্ছে- ঘেঁচুয়া, গাবগাইছার চালা, পাটজাগ, বংশীনগর, বড়চালা ও ইন্নত খাঁর চালা।

বছরখানেক ধরে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের ঘেঁচুয়া গ্রামে ‘মালিহা’ গ্রুপের ‘মালিহা পলিটেক্স ফাইবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড’ নামের কারখানায় প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। পানি ও বর্জ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদন শুরুর পর থেকেই ওই কারখানার পানি ও বর্জ্য ঘেঁচুয়া গ্রামসহ আশপাশের ছয়টি গ্রামের কয়েকশ একর তিন ফসলি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। ওই জমিতে পর্যায়ক্রমে আমন, ইরি ও সরিষা চাষ হয়। কিন্তু গত এক বছরে ওইসব এলাকার কৃষকরা কোনো ফসলই ঘরে তুলতে পারছেন না। এবারের আমনের পাকা ধানও তাদের ঘরে উঠছে না। হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। আবাদি জমিঘেঁষা আশপাশের পুকুরের মাছও মারা যাচ্ছে। বাড়িতে লালন করা হাঁস-মুরগি ফসলি জমির পাশের পুকুরের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান।

সরকারি খালে বাঁধ দেওয়ার প্রতিবাদ করায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা

১০ নভেম্বর ২০২০, সমকাল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশনে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ করায় সৈয়দ মনাব্বির আহমেদ (২৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাসিরনগর থানার পরিদর্শক মো. কবির হোসন।

সোমবার উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মনাব্বির আহমেদ ওই গ্রামের শিব্বির আহমেদের ছেলে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তোফাজ্জল নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মনাব্বির ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। এ ছাড়াও তিনি সৃজন সাহিত্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং একুশে সৃজন ও দশ দিগন্ত নামে একটি সাপ্তাহিক লিটল ম্যাগের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক অয়েল ট্যাংকারের ৬৪% ভাঙা হয় বাংলাদেশে

১২ নভেম্বর, ২০২০, বণিক বার্তা

নব্বইয়ের দশকে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে দেশে জাহাজ ভাঙা শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। লাভজনক হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যে গড়ে ওঠে অনেকগুলো ইয়ার্ড। সেখানে বিদেশ থেকে নানা ধরনের পুরনো জাহাজ এনে ভাঙতে থাকেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে খুব একটা কড়াকড়ি না থাকায় অন্যান্য জাহাজের সঙ্গে অয়েল ট্যাংকারও আসতে থাকে এসব ইয়ার্ডে। ফলে বর্তমানে অনেকটাই বিদেশী অয়েল ট্যাংকের ডাম্পিং স্টেশনে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রামের শিপইয়ার্ডগুলো। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ক্লার্কসন্স রিসার্চের গবেষণা বলছে, জাহাজ ভাঙায় বাংলাদেশ বিশ্বের এক নম্বর দেশে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের ৬৪ শতাংশ অয়েল ট্যাংকার এখন বাংলাদেশেই পুনঃপ্রক্রিয়াজাত হচ্ছে।

বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, অয়েল ট্যাংকারগুলোয় প্রচুর পরিমাণে পরিবাহিত জ্বালানি তেলের বর্জ্য বা গাদ, অ্যাসবেসটস ও পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল (পিসিবি) থাকে। এগুলোর সবই পরিবেশের জন্য অত্যন্ত বিষাক্ত ও ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত। এ কারণে প্রতিবেদনগুলোয় ভারত, বাংলাদেশ বা পরিবেশগতভাবে নাজুক অবস্থানে থাকা অন্যান্য এশীয় দেশে অয়েল ট্যাংকার ভাঙতে না পাঠানোর সুপারিশ রয়েছে।

এসব সুপারিশ উপেক্ষা করে বাংলাদেশে ভাঙা অয়েল ট্যাংকারগুলো থেকে ছড়িয়ে পড়া বিষাক্ত উপাদানে বায়ু ও পানি দূষিত হচ্ছে। এসব জাহাজে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান অ্যাসবেসটস নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় অনেকখানি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশপাশের জীববৈচিত্র্য। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় জাহাজ ভাঙার কারণে পরিবেশ দূষিত হয়ে নাজুক অবস্থানে পড়ে গিয়েছে সুন্দরবনের মতো সংবেদনশীল বনাঞ্চলও। একই সঙ্গে তা ক্ষতিগ্রস্ত করছে সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকাকে। বিশেষ করে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশে ভাঙার জন্য আনা জাহাজগুলোর মধ্যে অয়েল ট্যাংকার ছাড়াও রয়েছে বাল্ক ক্যারিয়ার, কেমিক্যাল ট্যাংকারস, কনটেইনার শিপস, ফেরিজ অ্যান্ড প্যাসেঞ্জার শিপস, জেনারেল কার্গো শিপস, লিকুইফায়েড গ্যাস ক্যারিয়ারস, অফশোর ভেসেলস ও অন্যান্য। ক্লার্কসন্স রিসার্চের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া জাহাজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল বাল্ক ক্যারিয়ার, যার পরিমাণ ৩৪ লাখ ২৬ হাজার গ্রস টন। এছাড়া কনটেইনার শিপ ছিল ১০ লাখ ১৫ হাজার গ্রস টন। আর অয়েল ট্যাংকার ছিল ১২ লাখ ৭১ হাজার গ্রস টন, যা বিশ্বের সব দেশে বিক্রি হওয়া পুরনো অয়েল ট্যাংকারের ৬৪ শতাংশ। সে হিসাবে বিশ্বের ৬৪ শতাংশ অয়েল ট্যাংকারই পুনঃপ্রক্রিয়াজাত হয় বাংলাদেশে।… ….

ফসলি জমি বাঁচাতে কৃষকরা অনশনে, ১০ দিনেও খোঁজ নেয়নি কেউ

০৯ নভেম্বর ২০২০, বাংলা ট্রিবিউন

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে আশুরার বিলে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ ও ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে ১০ দিন ধরে আন্দোলন ও অনশন কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় কয়েকশ’ কৃষক পরিবার। এলাকার কৃষকদের দাবি, সরকার অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় প্রায় ১৯শ’ হেক্টর জমিতে গতবছর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব জমির ৯ ভাগের এক ভাগ সরকারের। বাকি জমিতে পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। ফলে ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করতে পারছেন না। তাই এই বিলে বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। এদিকে এলাকাবাসীর অনশনের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও কর্মকর্তা সেখানে যাননি এবং তাদের সাথে কথা বলেননি।… …

এদিকে ১০ দিন ধরে কৃষকদের অনশন কর্মসূচি পালনকালে ৭ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরইমধ্যে অনশনে বসে অসুস্থ হওয়ার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোলাপ সরকার নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।… ….

উজাড় হয়ে যাচ্ছে সাঙ্গু সংরক্ষিত বন

২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ডেইলি স্টার অনলাইন বাংলা

বান্দরবানের থানচি এলাকার একটি দুর্গম সংরক্ষিত বন এবং অভয়ারণ্যে গত দুই মাসে শতাব্দী প্রাচীন বহু গাছ কেটে ফেলা হয়েছে গত দুমাসে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, বনের প্রায় একশ একর জমি সম্পূর্ণ খালি হয়ে গেছে গত কয়েক বছরে।

একাধিক উত্স থেকে ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করেছে দ্য ডেইলি স্টার। যা প্রমাণ দেয় যে শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলো সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে কেটে সাঙ্গু নদী দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানচির স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বান্দরবান শহর ও চট্টগ্রামের কাঠ ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গত কয়েক বছর ধরে শীতের মৌসুমে এই পাহাড়ি বন থেকে গাছ কাটাচ্ছেন।

তবে এর বিরুদ্ধে কখনই ব্যবস্থা নেয়নি বন। সব সময়ই তারা বলে আসছেন, ‘জনবল ঘাটতি’র কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে তারা পাহারা দিতে পারছে না।

বনের গাছ লুটপাটে বন কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।… ….

বাংলাদেশের বাতাস দূষিত, তাই ফ্রান্সে থাকার অনুমতি

১৩ জানুয়ারি, ২০২১, দেশ রুপান্তর

বাংলাদেশের বাতাস ‘বিপজ্জনক মাত্রায়’ দূষিত-এমন যুক্তি দিয়ে এক বাঙালি অভিবাসী ফ্রান্স থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন না। তাকে দেশটিতে বসবাসের অনুমতি দিয়েছেন  বোর্দোর একটি আপিল আদালত।

৪০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকের নাম প্রকাশ না করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ফ্রান্সে এই ধরনের রায় প্রথম বলে মনে করছেন ওই ব্যক্তির আইনজীবী।

আইনজীবী আদালতকে জানান, তার মক্কেলের অ্যাজমা রোগ আছে। তিনি বাংলাদেশে গেলে অকাল মৃত্যুর শঙ্কায় পড়তে পারেন।

আইনজীবী লুডোভিচ রিভিয়ার বলেছেন, ‘আমার জানা মতে ফ্রান্সের কোনো আদালত এই প্রথম এমন রায় দিলেন।’

‘সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিপজ্জনক দূষণের কারণে আমার ক্লায়েন্টের জীবন হুমকিতে পড়বে।’

বাংলাদেশের দূষিত বাতাস নিয়ে আলোচনা বেশ পুরোনো। গত বছর বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ছিল ১৭৯তম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের থেকেও প্রায় ৬ গুণ খারাপ দেশের কিছু অঞ্চলের বাতাস।… …

কৃষকদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে

১৫ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

… … দেশের একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি ক্যান্সার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিআরএইচ)। হাসপাতালটির ক্যান্সার এপিডেমিওলজি বিভাগের সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ক্যান্সার রেজিস্ট্রি রিপোর্ট: ২০১৫-১৭’ প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর হাসপাতালটিতে যত রোগী ক্যান্সার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই কৃষক। এছাড়াও শনাক্তকৃতদের মধ্যে কৃষকের হারও এখন উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে হাসপাতালটিতে ক্যান্সার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয় ১০ হাজার ৩১০ জন। তাদের মধ্যে ৩০ দশমিক ২ শতাংশই কৃষক। ২০১৬ সালে শনাক্তকৃত ১১ হাজার ১৫ জনের মধ্যে কৃষক ছিলেন ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ। ২০১৭ সালে ১৪ হাজার ৪৪ জন ক্যান্সার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়, তাদের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ ছিলেন কৃষক।

দেশের কৃষকদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব বাড়ার পেছনে কীটনাশকসহ কৃষি রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারকেই দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) ও গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিস (জিএপি) নীতিমালার পরামর্শ হলো, রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহারের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার ও শরীরের অন্যান্য অংশে কীটনাশকের অনুপ্রবেশ রোধের প্রতিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া বাতাসের উল্টো দিকে তা প্রয়োগ করা যাবে না। কিন্তু সিংহভাগ কৃষকই এসব পরামর্শ মানছেন না। কোনো ধরনের সুরক্ষা উপকরণ বা ব্যবস্থা ছাড়াই কীটনাশক প্রয়োগ করছেন ৮৫ শতাংশের বেশি কৃষক। ফলে এসব রাসায়নিক ও কীটনাশকের মারাত্মক এবং ক্ষতিকারক সূক্ষ্ম উপাদানগুলো দেহে প্রবেশ করে মারণব্যাধির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একই সঙ্গে তা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ও অনিরাপদভাবে কীটনাশক প্রয়োগের কারণে ক্যান্সার ছাড়াও স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষকরা। দীর্ঘমেয়াদে তা হয়ে উঠছে কিডনি, হূদযন্ত্র ও ফুসফুসের ক্ষতির কারণ। ফলে ফসলের রোগবালাই দমনের পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অবহেলা করছেন কৃষকরা। এভাবে কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকের যেমন বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে, তেমনি পরিবেশের ওপরও পড়ছে বিরূপ প্রভাব।… …

কক্সবাজারের মাতারবাড়ী: নদী ভরাট করে সড়ক

২৩ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

কক্সবাজারের মহেশখালীর মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে যেন মিশে রয়েছে কোহেলিয়া নদীটি। মহেশখালী দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গিয়ে নদীটি বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। সেই অনাদিকাল থেকে মহেশখালীর বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহনের বেশির ভাগই কোহেলিয়া দিয়েই হয়ে আসছে। এখন নদীর তীর ভরাট করে রাস্তা তৈরির কার্যক্রম চলায় বড় নৌকাগুলো চলতে পারছে না। প্রাণ আর পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে কায়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য কোহেলিয়ার বুক ভরাট করে তৈরি হচ্ছে পাকা সড়ক। সাড়ে সাত কিলোমিটারের সড়কটির অন্তত পাঁচ কিলোমিটার পড়েছে নদীর তীরের অংশে। ৮০ ফুট প্রস্থের সড়কটি নির্মাণের জন্য নদীর তীরের কোথাও ৩০ ফুট, কোথাও আবার ৫০ ফুট করে ভরাট করা হয়েছে।

জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার প্রায় ৩২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তত্ত্বাবধানে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সব দেখেশুনে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। নকশা অনুযায়ীই তাঁরা কাজ করছেন।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, একসময়ের খরস্রোতা এই নদীতে মাছ ধরতেন কয়েক শ মৎস্যজীবী। এখন তাঁরা বেকার। স্থানীয় ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল কোহেলিয়া নদীটি খননের। কিন্তু খনন না করে উল্টো ভরাট করায় জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছেন বহু মানুষ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহেশখালীর লবণ, মাছ, শুঁটকি এই নদী দিয়ে কার্গো বোঝাই করে নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হতো। এখন তা-ও বন্ধ। নদীর দুই তীরে অন্তত ১ হাজার একর জমিতে উৎপাদিত হচ্ছে লাখ লাখ মণ লবণ। এ লবণ ভিন্ন পথে পরিবহনের ক্ষেত্রে চাষিদের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে প্রতি মণে ১৫ থেকে ২০ টাকা।

দুর্ঘটনা

অনিয়মেই সড়কে ঝরছে প্রাণ

০৭ ডিসেম্বর ২০২০, সমকাল

গত শুক্রবার সড়কে প্রাণ গেছে অন্তত ২৬ জনের। বেসরকারি সংস্থা যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে নভেম্বরে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮৬ জনের। দিনে গড়ে ১৬ জনের বেশি মানুষের প্রাণ যাচ্ছে সড়কে। দুর্ঘটনার কারণ বিশ্নেষণে দেখা যাচ্ছে, এসব মৃত্যুর কারণ ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, গাড়ি ও অব্যবস্থাপনা।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, রাস্তা চওড়া ও উন্নত হলেও নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত। যানবাহনও নিরাপদ নয়। কিন্তু যেনতেনভাবে ফিটনেস পেয়ে যাচ্ছে। সরকার নিষিদ্ধ করলেও মহাসড়কে দাপিয়ে চলছে অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত হালকা যানবাহন। উচ্চ আদালত উচ্ছেদ করতে বললেও চলছে অবৈধ নছিমন-করিমন, যাতে নূ্যনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ভারী যানবাহনের সঙ্গে এসব হালকা গাড়ির সামান্য সংঘর্ষেও প্রাণ যাচ্ছে সড়কে।… ….

জয়পুরহাটে ট্রেনের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে নিহত ১১

১৯ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

জয়পুরহাটে ট্রেনের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ১১ জন নিহত ও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ সকাল পৌনে সাতটার দিকে জয়পুরহাট সদরের পুরানাপৈল রেলক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সময় ক্রসিংটির গেট খোলা ছিল ও সংশ্লিষ্ট গেটম্যান ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মো. সালাম কবির ও সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সারোয়ার হোসেন।… ….

২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৬৮৬ জন নিহত, আহত ৮৬০০: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

০৯ জানুয়ারি, ২০২১ , ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

বিদায়ী ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় হাজার ৬৮৬ জন নিহত এবং আট হাজার ছয় শ জন আহত হয়েছে। গত বছর সড়ক পথে চার হাজার ৮৯১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। একই সময় রেলপথে ৩২৩টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩১৮ জন, আহত হয়েছেন ৭৯ জন। ১৮৩টি নৌ দুর্ঘটনায় ৩১৩ জন নিহত, ৩৪২ জন আহত এবং ৩৭১ জন নিখোঁজ হয়েছেন।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। তারা জানায়, বিদায়ী বছরে সড়ক, রেল ও নৌ পথে পাঁচ হাজার ৩৯৭টি দুর্ঘটনায় সাত হাজার ৩১৭ জন নিহত ও নয় হাজার ২১ জন আহত হয়েছেন।… ….

রূপগঞ্জে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে প্রতিবন্ধী শিশুসহ নিহত

২৩ জানুয়ারি, ২০২১, বণিক বার্তা

নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পূর্বাচলের ১১ নং সেক্টর কুমারটে গ্রামে ডেসকো ও পবিস-২ এর ১১ হাজার ভোল্টের দুটি বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে বসতঘর পুড়ে ঘটনাস্থলে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এঘটনায় আরো ১ জন গুরুতর আহতকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, বাড়ির মালিক মাছুম মিয়া, তার স্ত্রী সীমা ও তাদের ২ প্রতিবন্ধী শিশু সন্তান।… …

ভারত-বাংলাদেশ

ভারতের নতুন বিধিতে কমতে পারে রপ্তানি

১৬ নভেম্বর, ২০২০, কালের কন্ঠ

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশাল বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। রয়েছে নানা চুক্তি। এতে লাভবান হয় উভয় পক্ষই। কিন্তু গত আগস্টে ভারত সরকার কাস্টমস রুলস, ২০২০ (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব রুলস অব অরিজিন আন্ডার ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টস) জারি করেছে। এতে পণ্যের উৎপাদনপ্রক্রিয়াসহ কয়েকটি স্পর্শকাতর বিষয়ে রপ্তানিকারকরা তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে। এটি কার্যকর হলে ভারতের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সাহায্য ছাড়াই যেকোনো পণ্য ভেরিফিকেশন বা যাচাই করতে পারবে দেশটির কাস্টমস।

এই রুলসের ফলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। ভারতীয় রুলসের অন্তত চারটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে সরকার আশা করছে, আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সুরাহা সম্ভব হবে। বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই বৈঠক ডাকবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।… …

ভারতীয় ঋণের প্রকল্প: এক দশকেও সুরাহা হয়নি ঋণের শর্ত

১৭ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

ঋণের একটি শর্ত ছাড় দেওয়া নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনাটা ১ বা ২ বছর নয়, দীর্ঘ ১০ বছরের। কখনো দিল্লি, কখনো ঢাকা; সমস্যা সমাধানে দুই দেশের নীতিনির্ধারকেরা দফায় দফায় বসেছিলেন। দীর্ঘ এক দশকে কর্মকর্তা বদলেছে; কেউ কেউ চাকরি থেকে বিদায়ও নিয়েছেন। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি।

দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে ২০১০ সালে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। সড়ক, রেল, নদীসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে ওই টাকা দেওয়া হয়। তবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ঋণচুক্তির সময় শর্ত ছিল, এই ঋণের আওতায় যত প্রকল্প নেওয়া হবে, তা বাস্তবায়নে ৮৫ শতাংশ পণ্য ও সেবা ভারত থেকে আমদানি করতে হবে।

শুরু থেকেই ঋণের শর্ত নিয়ে আপত্তি ছিল বাংলাদেশের। কারণ, সড়ক, রেলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে ধরনের উপকরণ ও যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়, তা বাংলাদেশেই সহজলভ্য। বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে ঋণের এই শর্তটি শিথিল করার অনুরোধ জানালে ২০১৪ সালে পণ্য ও সেবা আমদানি ৮৫ শতাংশের পরিবর্তে কমিয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়, নির্মাণকাজের ধরন দেখে কত শতাংশ পণ্য ও সেবা ভারত থেকে আনা হবে, তা প্রকল্প দেখে ঠিক করা হবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এখনো কার্যকর হয়নি।

সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, প্রকল্পের ধরন দেখে কত শতাংশ পণ্য ও সেবা আমদানির যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেটা মানা হচ্ছে না। ৭৫ শতাংশ পণ্য ও সেবা ভারত থেকেই আমদানি করতে হচ্ছে। তাই যে টাকায় বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য কেনার সুযোগ ছিল, ভারত থেকে তুলনামূলক বেশি দামে এসব পণ্য কিনতে হচ্ছে। আবার, প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পক্ষেরও সক্ষমতার ঘাটতি আছে। এ নিয়েও বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০১০ থেকে এই পর্যন্ত লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় ভারতের সঙ্গে মোট তিন দফা ঋণচুক্তি সই হয়েছে। প্রথম দফায় ২০১০ সালে ১০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে দ্বিতীয়বার চুক্তি সই হয়; যেখানে আরও ২০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হয়। সবশেষ ২০১৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সব মিলিয়ে ৭৩৬ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ভারত, যে টাকা দিয়ে ৪৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।… ….

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৭ সমঝোতা স্মারক সই

১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ইত্তেফাক অনলাইন

বাংলাদেশ ও ভারত সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। কৃষি, বাণিজ্য, জ্বালানিসহ সাত খাতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে এ সমাঝোতা স্মারক সই করা হয়। আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়। বৃহস্পতিবার হাসিনা-মোদি ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের অংশ হিসেবে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়েছে।

সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে সংশ্লিষ্ট ৭ মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সচিব বা শীর্ষ কর্মকর্তা আর ভারতের পক্ষে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী সই করেন।

সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে-কৃষি খাতে সহযোগিতা, হাইড্রোকার্বনে সহযোগিতার বিষয়ে রূপরেখা, হাতির সুরক্ষায় অভয়ারণ্য নিশ্চিত করা, নয়াদিল্লি জাদুঘরের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সহযোগিতা, হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প চালু, বাংলাদেশ-ভারত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফোরামের ট্রাম্প অব রেফারেন্স এবং বরিশালে সুয়ারেজ প্রকল্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক।… ….

দেশে পেঁয়াজের মৌসুম শুরু, ভারত খুলে দিল রপ্তানি

২৯ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

দেশে এখন চলছে পেঁয়াজের মৌসুম। দেশের বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কমছে পেঁয়াজের দাম। অন্যদিকে পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিচ্ছে ভারত।

কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটির অভ্যন্তরীন বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক কমেছে। আর তাই গতকাল সোমবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এই নিষেধাজ্ঞা উঠছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গতকাল এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব ধরনের পেঁয়াজের রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের সড়ক ব্যবহারের ফি নিয়ে প্রশ্ন ভারতের

২৯ ডিসেম্বর ২০২০, সমকাল

চট্টগ্রাম, মোংলা সমুদ্রবন্দর হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তর দিয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে সড়ক ব্যবহারের ফি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারত। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রতি টন ভারতীয় পণ্য পরিবহনে কিলোমিটারপ্রতি দুই টাকা ফি নির্ধারণ করেছে। কিন্তু ভারত এই ফি দিতে নারাজ। দেশটি ফি-মুক্ত অথবা স্বল্প ফি’তে পণ্য পরিবহন সুবিধা চায়। তবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) বলছে, ভারতীয় পণ্য পরিবহনে রাস্তার ক্ষতি ও পরিবেশদূষণ বাড়বে, তাই ফি দিতে হবে।… …

২০১৮ সালের অক্টোবরে সই হওয়া চুক্তিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুবিধা পেয়েছে ভারত। পরীক্ষামূলক যাত্রা হিসেবে গত জুলাইয়ে কলকাতা বন্দর থেকে ডাল ও টিনবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। পণ্য খালাসের পর তা ট্রাকে বাংলাদেশের সড়কপথে আখাউড়া বন্দর হয়ে ভারতের ত্রিপুরায় পাঠানো হয়। পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের পর পাঁচ মাসে কোনো পণ্য পরিবহন হয়নি।

চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে পাঠানো পণ্য চট্টগ্রাম ও মোংলায় খালাসের পর বাংলাদেশের নির্ধারিত আটটি সড়কপথ ব্যবহার করে স্থলবন্দর হয়ে আসাম ও ত্রিপুরায় যাবে। গত বছরের ডিসেম্বরে দুই দেশে নৌ সচিব পর্যায়ের ‘আন্তঃসরকার কমিটি’র (আইজিসি) বৈঠকে সড়ক ব্যবহারের ফি নির্ধারণে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ প্রতি টন পণ্য পরিবহনে কিলোমিটারে দুই টাকা ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করে।

এ হিসাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ফেনী-কুমিল্লা হয়ে আখাউড়া বন্দর পর্যন্ত ২৩০ কিলোমিটার পথে ১৫ টনের মাঝারি ট্রাকের পণ্য পরিবহনে ভারতকে ছয় হাজার ৫৬০ টাকা ফি দিতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে সিলেটের শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসামে পণ্য পরিবহনে ৪২৭ কিলোমিটার পথে ১৫ টনের ট্রাককে ১০ হাজার ৩৬০ টাকা মাশুল দিতে হবে।

মোংলা বন্দর থেকে গোপালগঞ্জ-মাওয়া-ঢাকা-নরসিংদী, আশুগঞ্জ-সিলেট হয়ে শেওলাবন্দর দিয়ে আসামে পরিবহনে ৪৯৪ কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারে ১২ হাজার ৭২৫ টাকা ফি দিতে হবে। মোংলা থেকে তামাবিল বন্দর হয়ে ১৫ টন পণ্য পরিবহনে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ১৭৫ টাকা।

সড়ক ব্যবহারের ফি ছাড়াও পণ্য পরিবহনে ডকুমেন্ট চার্জ ৩০ টাকা, প্রতি টনে ট্রান্সশিপমেন্ট চার্জ ২০ টাকা, প্রতি টনে সিকিউরিটি চার্জ ১০০ টাকা, প্রতি টনে এস্কর্ট চার্জ ৫০ টাকা, প্রতি টনে প্রশাসনিক চার্জ ১০০ টাকা, প্রতি কনটেইনারে স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশের রাজস্ব বোর্ড। এ ছাড়া ইলেক্ট্রিক লক ও সিল বাবদ প্রতি টনে প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় ৬০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সড়ক ব্যবহারের মাশুল ছাড়াও ‘ইলেক্ট্রিক লক ও সিল’ ফি নিয়েও আপত্তি রয়েছে ভারতের।… …

‘উচ্চ’ ফি নিয়ে আপত্তির কথা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছে ভারত। দেশটির যুক্তি- ট্রানজিটে বৈষম্যমূলক আচরণ নিষিদ্ধ। প্রতি টন পণ্যের জন্য কিলোমিটারপ্রতি দুই টাকা ফি বৈষম্যহীন নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ভারতীয় পণ্য সমুদ্রবন্দরে খালাসের পর বাংলাদেশের ট্রাকে সড়কপথে ভারতে যাবে। ভারতের ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকবে না। বাংলাদেশের ট্রাক সড়ক ব্যবহারের জন্য নিবন্ধিত। ট্রাকের মালিক-শ্রমিকের সঙ্গে পণ্যের আমদানি-রপ্তানিকারকের আলোচনায় ভাড়া নির্ধারণ করা যেতে পারে। বন্দরে এক দফা নির্ধারিত মাশুল দিতে হবে। এরপর সড়কে মাশুল নিলে ব্যয় বেড়ে যাবে। ট্রানজিট ব্যবহারে আগ্রহ হারাবেন আমদানি রপ্তানিকারকরা। চট্টগ্রাম বন্দরে অন্য দেশের জাহাজে আসা পণ্যের টনপ্রতি ডকুমেন্ট ফি ১০ টাকা। ভারতীয় পণ্যের জন্য তা টনপ্রতি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিকিউরিটি ফি ১০০ টাকা নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি তুলেছে ভারত।

প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে সড়ক ফি’র বিষয়টি বিবেচনা করতে সওজকে চিঠি দিয়েছেন। এ চিঠির মতামত দিয়ে সংস্থাটি জবাবে বলেছে, দুই দেশের চুক্তির ৮ ধারা অনুযায়ী সড়ক ফি আদায়ের সুযোগ রয়েছে। ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৪ সালের টোল নীতিমালা অনুযায়ী। অর্থনৈতিক ও গাণিতিক বিশ্নেষণের মাধ্যমে ১৫ টনের ট্রাকে প্রতি কিলোমিটারে ফি এক টাকা ৮৫ পয়সা। এর সঙ্গে পরিবেশ ও শব্দদূষণ মাশুল যোগ করে প্রতি টন পণ্য পরিবহনে প্রতি কিলোমিটারে দুই টাকা ফি ধরা হয়েছে।… …

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষে রাশিয়া-চীন, ভোটদানে বিরত ভারত

২ জানুয়ারি, ২০২১, দেশ রুপান্তর

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা প্রশ্নে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, রাশিয়াসহ ৯ দেশ। ভোটাভুটি থেকে বিরত ছিলো ভারত, জাপানসহ ২৫ দেশ। তবে, রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গ ছেড়েছে আফ্রিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরের ৯ দেশ।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কর্ম অধিবেশনে বৃহস্পতিবার রাতে প্রস্তাবটির পক্ষে ১৩০টি ভোট পড়েছে। আর বিপক্ষে পড়েছে ৯টি ভোট।

বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হবে চার হাজার কোটি টাকা

০৩ জানুয়ারী ৩, ২০২১, শেয়ার বিজ নিউজ

ভারতের পাঁচটি উৎস থেকে বর্তমানে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র থেকে আমদানি ব্যয় পড়ে প্রায় সাড়ে তিন টাকা। বাকিগুলো থেকে আমদানি খরচ ইউনিটপ্রতি চার থেকে পাঁচ টাকা। যদিও চাহিদা না থাকায় আমদানি সক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে না। এরপরও ভারতের আদানি গ্রুপ থেকে আমদানি করা হবে আরও এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে এ বিদ্যুৎ আমদানিতে ২০১৭ সালে চুক্তি করে বাংলাদেশ। এ বিদ্যুতের জন্য বাংলাদেশকে উচ্চহারে ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হবে, বছরে যার পরিমাণ প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। যদিও বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত রয়েছে। তাই এ বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে অনেকটাই অস্বস্তিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদানির এ বিদ্যুৎ আমদানির কোনো প্রয়োজনই ছিল না। কারণ বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। আর চাহিদা ১২ থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। তবে শীতে এ চাহিদা সাত থেকে আট হাজার মেগাওয়াটে নেমে আসে। আবার সন্ধ্যার তুলনায় দিনে চাহিদা অনেকখানি কমে যায়। তাই উচ্চ ব্যয়ে আদানির বিদ্যুৎ আমদানির সিদ্ধান্ত পুরোই অযৌক্তিক। এছাড়া এ বিদ্যুৎ আমদানি ব্যয়ও অনেক বেশি পড়বে বলে আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে।

সীমান্তে ফেলানী হত্যা: ১০ বছরেও বিচার পায়নি পরিবার

০৭ জানুয়ারি, ২০২১, ঢাকা ট্রিবিউন বাংলা

বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১০ বছরেও বিচার পায়নি তার পরিবার।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে অনন্তপুর সীমান্তে নির্মম হত্যার শিকার হয় ফেলানী।

দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা কাঁটা তারে ঝুলে থাকে তার মরদেহ। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। পরে বিএসএফের বিশেষ আদালতে দুই দফায় বিচারিক রায়ে খালাস পান অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ।

পরে এ রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন মাসুমের সহযোগিতায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে ফেলানীর পরিবার।

এরপর কয়েক দফা ফেলানী হত্যার বিচার কার্য অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিচার কার্য অমীমাংসিত থাকায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা ও মা।

বিবিধ

ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ করতে বলল হেফাজত

২ নভেম্বর ২০২০, প্রথম আলো অনলাইন

ফ্রান্সে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর অবমাননার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ–সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সমাবেশে সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ করতে হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমা চাইতে হবে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় ‘ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও’ কর্মসূচি শেষে এক সমাবেশে জুনায়েদ বাবুনগরী এসব কথা বলেন।

অবসরপ্রাপ্ত কিছু সেনাসদস্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে: আইএসপিআর

০৪ নভেম্বর, ২০২০, ইত্তেফাক অনলাইন

সেনাবাহিনীতে দীর্ঘদিন চাকুরী করার পর অবসর গ্রহণ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অবসরপ্রাপ্ত প্রতিটি সেনাসদস্য অবসর জীবনে নিজেকে একজন প্রাক্তন সেনাসদস্য হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন এবং সৎ ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করেন। তবে অবসর জীবনে যদি কোন প্রাক্তন সেনাসদস্য শৃঙ্খলা বিবর্জিত জীবনযাপন করে যা সামরিক ও বেসামরিক পরিমণ্ডলে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করে, তখন তাকে সংশোধনের জন্য দেশের সকল সেনানিবাস সমূহে অবাঞ্ছিত বা Persona Non Grata (PNG) ঘোষণা করা হয়।… …

সম্প্রতি কয়েকজন অবাঞ্ছিত ঘোষিত (PNG) অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য বিদেশ হতে বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য সম্বলিত গল্প এবং বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত মান্যবর ব্যক্তিদের কথোপকথনকে সংগ্রহ করে আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার করে তা কাট-পেস্ট ও এডিট করে তাদের উদ্দেশ্য মাফিক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থাপনের মাধ্যমে সেনাসদস্য ও দেশের সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়ে ক্রমাগত দেশ এবং সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে।… …

বান্দরবানের পাহাড়ে সিকদার গ্রুপের হোটেল-পর্যটন কেন্দ্র, পাহাড়িদের বিক্ষোভ

০৮ নভেম্বর ০৮, ২০২০, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

বান্দরবানে চিম্বুক পাহাড়ে বসবাসরত ম্রো জনগোষ্ঠী পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ ও পর্যটনের নামে তাদের প্রাচীন জুম ভূমি কেড়ে না নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

আজ রোববার সকালে কাপ্রু পাড়া বাজার এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন পাড়ায় বসবাসরত প্রায় এক হাজার ম্রো জনগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়।

একটি কল্যাণ সংস্থা ও সিকদার গ্রুপ কাপ্রু পাড়া থেকে নাইতং পাহাড় হয়ে জীবন নগর পর্যন্ত পাঁচ তারকা হোটেল এবং পর্যটন স্পট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা যায়। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান পাহাড়িরা।

এই স্থাপনা নির্মাণে সিকদার গ্রুপ প্রায় এক হাজার একর জুমের জমি দখলের চেষ্টা করছে, অভিযোগ করেন প্রতিবাদকারীরা।

তারা জানান, জুম ভূমি ছাড়াও সেখানে রয়েছে ম্রোদের বসতভিটা ও শ্মশান।

ভাঙনের পর অশেষ দুঃখে কাটছে দিন

১৫ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

পদ্মাপারে বসবাস প্রায় ৪৫ বছর। তবু নদীটিকে বুঝে উঠতে পারছেন না আবু বক্কর সিদ্দিক। বললেন, ‘গাঙ্গের গতিবিধির ঠিক নাই। কখন কোন দিক দিয়া আইসা ভাইঙা নিয়া যায়।’ হয়েছেও তা-ই। আবু বক্করের পরিবার পদ্মার ভাঙনের মুখে পড়েছে দুবার। ১৯৯২ সালে প্রথম। দ্বিতীয়বার ২০১৮ সালে।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে আবু বক্করের চা, পান-বিড়ির দোকান ছিল। বাড়ি ছিল কেদারপুর ইউনিয়নের চর জুজিরাতে—দুই ঠিকানাই বিলীন হয়েছে ২০১৮ সালে পদ্মার তীব্র ভাঙনে। ভিটাবাড়ি হারিয়ে আবু বক্কর স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নদীর কাছে ভাড়া করা জমিতে। মা ও ছোট ভাই থাকছেন ১০ কিলোমিটার দূরে লোনসিং গ্রামে।

গত ২৭ নভেম্বর শেষ বিকেলে আবু বক্করের সঙ্গে দেখা। তখন তিনি কিনারে বসে পদ্মার শান্ত রূপ দেখছিলেন। বললেন, তাঁর মতো নদীভাঙনের শিকার হওয়া পরিবারগুলোকে সে সময় সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) সহযোগিতা করেছিল। কিন্তু সেই সহযোগিতা কমে গেছে। তাঁরা এখন দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

নড়িয়া উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, ২০১৮ সালে নড়িয়া পৌরসভা এবং নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর, মোক্তারের চর ও ঘড়িষাড় ইউনিয়নের ৫ হাজার ১৯টি পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। পদ্মায় পুরো বিলীন হয়েছে আটটি গ্রাম—চর নড়িয়া, বসাকের চর, চর জুজিরা, বাঁশতলা, ওয়াপদা, সাধুর বাজার, শেহের আলী মাদবরকান্দি ও ঈশ্বরকাঠি। ৮০ শতাংশ নিশ্চিহ্ন হয়েছে কেদারপুর ও পূর্ব নড়িয়া গ্রাম দুটি।

এই তালিকা ধরে ২০১৯ সালের জুনে মাঠপর্যায়ে জরিপ করে বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি)। গত অক্টোবরে প্রকাশিত জরিপ প্রতিবেদন বলছে, পরিবারগুলোর অর্ধেকের বেশি উদ্বাস্তু হয়েছে। তারা কাজ হারিয়েছে। আয় কমে গেছে। সে সময় তারা সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেয়েছিল, কিন্তু স্থায়ী পুনর্বাসন হয়নি।… ….

নতুন আবাসে রোহিঙ্গারা

৫ ডিসেম্বর ২০২০, সমকাল

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত হয়ে নিজ বসতভিটা থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিল, তাদের মধ্যে একটি দলকে গতকাল শুক্রবার ভাসানচরে স্থানান্তর করা হলো। প্রথম দফায় ভাসানচরে স্বেচ্ছায় আসা এই দলে পুরুষ ৩৬৮, নারী ৪৬৪ জন এবং শিশু ৮১০টি।

গতকাল ভাসানচরে তাদের নতুন বসতভিটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কক্সবাজারের ঘিঞ্জি ক্যাম্প থেকে ভাসানচরের খোলামেলা পরিবেশ ও পাকা ঘর এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেখে রোহিঙ্গারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। তাদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।

সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তারা জানান, সব মিলিয়ে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ভাসানচর। আধুনিক বর্জ্য ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, বায়োগ্যাস প্লান্ট ও সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হয়েছে এখানে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

রোহিঙ্গাদের একটি অংশ অস্থায়ীভাবে ভাসানচরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ‘আশ্রয়ণ-৩’ নামে প্রকল্প নেওয়া হয়। চরটি বসবাসের উপযোগী করতে সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়ন ও বনায়ন করা হয়। দ্বীপটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নৌবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরকে একটি ‘টাউনশিপ’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

চট্টগ্রামের বোট ক্লাব থেকে ভাসানচর পর্যন্ত অন্তত ৪০ রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা হয় সমকালের এই প্রতিবেদকের। তারা সবাই জানান, নতুন স্বপ্ন নিয়েই নতুন ঠিকানায় যাচ্ছেন তারা। কেউ তাদের আসতে জোর জবরদস্তি করেননি। তাদের আশা কক্সবাজারের তুলনায় ভাসানচরে অনেক সুখে-শান্তিতে থাকবেন।

কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর: যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩

১৯ ডিসেম্বর ২০২০, প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানসহ (৩৫) তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর আরাফাত আজ শনিবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার বাকি দুজন সবুজ হোসেন (২০) ও হৃদয় আহমেদ (২০)। এ ছাড়া বাচ্চু (৩২) নামের একজন পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এসপি বলেন, আনিসুরের সঙ্গে কয়া মহাবিদ্যালয় (কলেজ) কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহযোগীদের নিয়ে তিনি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সড়কের পাশে স্থাপিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেন।… ….

রাজশাহীতে ওষুধ স্প্রে করার পর শত শত বিঘা আলু গাছ পুড়ে যাওয়ার অভিযোগ

২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ইত্তেফাক

রাজশাহীর তানোরে আলুর ক্ষেতে ওষুধ স্প্রে করার পর শত শত বিঘা জমিতে রোপণ করা আলুর গাছে পুড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, বায়ার কোম্পানির ওষুধ স্প্রে করার পর এমনটি ঘটেছে। এদিকে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে ওই কোম্পানির কর্মকর্তারা ডিলারদের নিয়ে তানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে সভা করেছেন। সভায় কৃষি কর্মকর্তাসহ ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষকরা দিশেহারার মতো হতাশা ও আতঙ্কে পৌষের ঠাণ্ডার মধ্যে প্রশাসন ও ডিলারের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। তারা আদৌও ক্ষতিপূরণ পাবেন কী না তা এখনো কেউ নিশ্চিত নন।

তানোর উপজেলার শুকদেবপুর গ্রামের নাদের আলীর ছেলে প্রান্তিক আলু চাষী শামিম হোসেন বলেন, এবছর তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। সব ধরনের মোড়ক থেকে আলুকে রক্ষার জন্য শুক্রবার তিনি বায়ার কোম্পানির ওষুধ জমিতে স্প্রে করেন। কিন্তু পরের দিন শনিবার সকালে জমিতে গিয়ে দেখেন স্প্রে করা জমির সবগুলো আলুর গাছ পুড়ে গেছে।… ….

নারীরা বিয়ের কাজী হতে পারবেন না, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

১০ জানুয়ারি ২০২১, সমকাল

বাংলাদেশের সামাজিক ও বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে নারীরা নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিয়ের কাজী) হতে পারবে না মর্মে ৬ বছর আগে আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

দিনাজপুরের এক নারী রেজিস্ট্রার প্রার্থীর রিট খারিজ করে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।

রোববার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির।

অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, নারীরা মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় ফিজিক্যাল ডিসকোয়ালিফেশন থাকেন। মুসলিম বিবাহ হচ্ছে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং আমাদের দেশে বেশির ভাগ বিয়ের অনুষ্ঠান হয় মসজিদে। ওই সময় নারীরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন না এবং তারা নামাজও পড়তে পারেন না। বিয়ে যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে নারীদের দিয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। এই পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত রুল খারিজ করে দিয়েছেন।

মিরপুরে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

২১ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো অনলাইন

মিরপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয়দের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে। অভিযানে স্থানীয় ব্যক্তিরা বাধা দিলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরের ১১ নম্বরের ৩ নম্বর অ্যাভিনিউয়ের ৪ নম্বর সড়কে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে ডিএনসিসির নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। এলাকাটি আটকে পড়া পাকিস্তানি–অধ্যুষিত।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়কের একটি স্থাপনা ভাঙতে গেলে স্থানীয় ব্যক্তিরা ডিএনসিসির কর্মকর্তা ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। এরপর ডিএনসিসির কর্মকর্তারা পিছু হটেন। কিছুক্ষণ পর কয়েক শ পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা–কর্মীসহ ডিএনসিসি ফের উচ্ছেদের প্রস্তুতি নেয়। তবে স্থানীয় বিহারিদের সঙ্গে নেতা–কার্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে।

Social Share
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •