সংবাদপত্রের পাতা থেকে(২৬ জুলাই- ২৫ অক্টোবর ২০২৫)

সংবাদপত্রের পাতা থেকে(২৬ জুলাই- ২৫ অক্টোবর ২০২৫)

অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনীতি ও সংস্কার

জুলাই সনদের খসড়া প্রস্তুত, পুলিশ কমিশনে ঐকমত্য

২৮ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

পুলিশ বাহিনীর পেশাদারত্ব ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা এবং পুলিশি সেবাকে জনবান্ধব করার লক্ষ্যে একটি ‘স্বাধীন পুলিশ কমিশন’ গঠনের প্রস্তাবে গতকাল রোববার ঐকমত্য হয়েছে। জানানো হয়েছে জুলাই সনদের খসড়া প্রস্তুত করার কথাও। এ ছাড়া এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ১৯তম দিন। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এখন পর্যন্ত ১২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল সকাল থেকে রাত প্রায় আটটা পর্যন্ত আলোচনা চলে। মাঝে একাধিকবার বিরতি ছিল। এদিন সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন একটি নতুন প্রস্তাব দেয়। সংবিধানের মূলনীতি নিয়েও আলোচনা হয়। তবে এ দুটি বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করা হবে।

আসিফের বাবার দাপটে মুরাদনগর ছাড়া তিন পরিবার

২৯ জুলাই ২০২৫, বাংলা ভিশন অনলাইন

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজারের কড়াইবাড়ীতে গত ৩ জুলাই রিক্তা আক্তারের চোখের সামনে একে একে কুপিয়ে ও পাথর দিয়ে থেতলিয়ে হত্যা করা হয় তার মা রুবি আক্তার, ভাই রাসেল ও বোন জোনাকিকে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত তার ছোট বোন রুমা আক্তার এখন রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে বাদ যায়নি তার ভাইয়ের ১১ মাস বয়সী শিশু রাইসাও।

টয়লেটে লুকিয়ে কোনোমতে প্রাণে বাঁচতে পেরেছেন রিক্তা আক্তার ও তার ভাবী মিম আক্তার। কিন্তু ঘটনার পর পলাতক থাকার কথা আসামিদের অথচ পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে ভুক্তভোগী এই পরিবারকেই। রিক্তা আক্তারের অভিযোগ, হত্যা মামলার মূল আসামি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহসহ প্রধান আসামিরা রয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার আশ্রয়ে। এ কারণেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।

রিক্তা আক্তার বাংলাভিশনকে বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহসহ মূল আসামিরা সবাই এখনও বাইরে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। তারা বাইরে থেকে উল্টো আমাদেরই হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে আমাদের পেলেই শত শত টুকরো করে মারবে। তাই আমরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’

এ ঘটনায় দোষীরা স্থানীয় সরকার ও যুব উন্নয়ন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের আশ্রয়ে রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিক্তা আক্তার এবং তার ভাবী মীম আক্তার।

গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর একই এলাকার আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে আরও একটি ঘটনা। এই ঘটনার ভুক্তভোগী ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিখা রানীর অভিযোগ, ওইদিন তাকে স্কুলের একটি কক্ষে আটকে রেখে প্রথমে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হলে একপর্যায়ে তার ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ওই কক্ষে অবরুদ্ধ করে রেখে বিবস্ত্র করেও চালানো হয় নির্যাতন। পরে তাকে স্কুল থেকে বের করে ঘুরানো হয় গ্রামের প্রধান সড়কগুলোতে। যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেই ভিডিওতে শিখা রানীকে হেনস্থাকারীদের দলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসাইনকেও দেখা যায়।

এ বিষয়ে শিখা রানী বলেন, স্কুলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আসিফের বাবা বিল্লাল হোসেনকে ২০১৪ সালে বহিষ্কার করা হলে তখন আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। এখন আমার ছাত্র আসিফ উপদেষ্টা হওয়ার পর খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ছেলে উপদেষ্টা হওয়ার পর তার বাবা আমার প্রতি সেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শিমুল চেয়ারম্যান, সাত্তার মেম্বার, সালাউদ্দীন ও বাশারদের দিয়ে আমাকে নির্যাতন করেছেন।

এ ঘটনায় আসিফের বাবা বিল্লাল হোসেন ও শিমুল চেয়ারম্যানসহ দোষীদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। আদালতে মামলা করা হলে সেটিও খারিজ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন শিখা রানী।

ওই স্কুলের তৎকালীন সভাপতি স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর অভিযোগও প্রায় একই রকম। সেই সময় অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় এখন ছেলে উপদেষ্টা হওয়ার পর তারা প্রতিশোধ নিচ্ছে বলে দাবি তার।

মৌলিক সংস্কারের সব বিষয়ে মতৈক্য হয়নি

৩১ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌলিক সংস্কারের সব প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। এর মধ্যে দলগুলোর ঐকমত্যের দলিল বা জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা করার দাবি উঠেছে। ফলে আজ বৃহস্পতিবার সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আনার লক্ষ্যে ছয়টি কমিশনের যেসব প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হবে, সেগুলো নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করা হবে। ৩১ জুলাইয়ের (আজ বৃহস্পতিবার) মধ্যে এই সনদ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের। গত সোমবার দলগুলোকে সনদের একটি খসড়াও দেওয়া হয়েছিল। তবে সে খসড়ায় সনদ বাস্তবায়নের যে পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশ কিছু দলের আপত্তি আছে। গতকাল বুধবার ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি তুলেছে জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি।

গতকাল দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল সাতটি বিষয়। সেগুলো হলো ১. সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ চারটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপদ্ধতি; ২. দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন, উচ্চকক্ষের নির্বাচনপদ্ধতি ও ক্ষমতা; ৩. সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব (সংরক্ষিত নারী আসন বাড়ানো ও নির্বাচনপদ্ধতি); ৪. রাষ্ট্রপতির নির্বাচনপদ্ধতি; ৫. রাষ্ট্রের মূলনীতি; ৬. সংবিধানে নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ এবং ৭. রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব। মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়েও এখনো ঐকমত্য হয়নি।

এর মধ্যে গতকাল পুরোপুরি ঐকমত্য না হলেও রাত নয়টার দিকে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ঐকমত্য কমিশন। আর রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে দলগুলোকে একটি ধারণাপত্র দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি, এমন কয়েকটি বিষয়ে আজ ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

৩১ জুলাইয়ের (আজ বৃহস্পতিবার) মধ্যে এই সনদ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের। গত সোমবার দলগুলোকে সনদের একটি খসড়াও দেওয়া হয়েছিল। তবে সে খসড়ায় সনদ বাস্তবায়নের যে পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশ কিছু দলের আপত্তি আছে।

সংস্কার নিয়ে ১০ মাস

গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রশাসন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো প্রতিবেদন দেয়। পরে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। এরপর ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে আইনবিধি সংস্কার করে বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন সম্ভব, এমন অনেক সুপারিশকে ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলছে। অন্যদিকে ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।

প্রথম পর্বে ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পৃথক আলোচনা করে কমিশন। প্রথম পর্বে ঐকমত্য হয়নি, এমন ২০টির মতো মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে গত ৩ জুন থেকে সব দলকে একসঙ্গে নিয়ে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু করে ঐকমত্য কমিশন। সংস্কারের ক্ষেত্রে এই প্রস্তাবগুলোকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে এখন পর্যন্ত ১৩টি বিষয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতকাল প্রথম পর্বে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার একটি তালিকা দলগুলোকে দেওয়া হয়। সেখানে মোট ৬২টি বিষয় এবং কোন প্রস্তাবে কয়টি দল একমত হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগই বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রয়েছে ৬টি।

এ ছাড়া সংবিধান সংস্কার কমিশনের ১৮টি সুপারিশ রয়েছে। যদিও এর মধ্যে কয়েকটি বিষয় আছে, যেগুলো নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। যেমন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন। এ বিষয়ে ৩০টি দল প্রথম পর্বে একমত হলেও গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি।

গতকাল রাতে বৈঠকের বিরতিতে কমিশনের প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন কমিশনের সদস্যরা। পরে আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রগতি জানানো হয়েছে। তিনি কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় ১৪টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।

গতকাল প্রথম পর্বে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার একটি তালিকা দলগুলোকে দেওয়া হয়। সেখানে মোট ৬২টি বিষয় এবং কোন প্রস্তাবে কয়টি দল একমত হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগই বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রয়েছে ৬টি।

যেসব বিষয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত

দ্বিতীয় পর্বে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়েছে, এমন বিষয়ের মধ্যে রয়েছে এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন; সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন; সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব; নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ; রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান; হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত স্থানান্তর; সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি; জরুরি অবস্থা জারিসংক্রান্ত; প্রধান বিচারপতি নিয়োগ; ইসি গঠনপদ্ধতি সংবিধানে যুক্ত করা হবে; পুলিশ কমিশন গঠন; প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান। এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হয়েছে, একই ব্যক্তি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না, এ প্রস্তাবে তিন-চতুর্থাংশ দল একমত এবং সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব। এগুলোর মধ্যে সেসব বিষয়ে বিএনপিসহ যারা একমত হয়নি, তারা জাতীয় সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিতে পারবে।

ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে ন্যূনতম ৫ শতাংশ বর্ধিত হারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন অব্যাহত থাকবে। এটিও সংবিধানে যুক্ত হবে। সংরক্ষিত নারী আসন ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে।

নারী আসন নিয়ে যে সিদ্ধান্ত

সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০টি থেকে বাড়িয়ে ১০০টি করা এবং সেখানে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করেছিল সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে দফায় দফায় আলোচনা হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে ঐকমত্য কমিশন ৫০টি আসন বহাল রাখা এবং ৩০০ সাধারণ আসনের মধ্যে ৫-৭ শতাংশ আসনে দলগুলো নারী প্রার্থী দেবে, এমন প্রস্তাব দেয়। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আলোচনা হলেও এ বিষয়ে মতৈক্য হয়নি।

পরে রাতে নারী আসন নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের জানান, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করার বিষয়ে প্রায় সব দল একমত হয়েছে, যদিও দু-একটি দলে এতে দ্বিমত রয়েছে। কিছু দল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ১০০ আসনে উন্নীত করার পক্ষে, আবার কিছু দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের পক্ষে।

সিদ্ধান্তের বিষয়ে আলী রীয়াজ জানান, সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখা হবে। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে বিদ্যমান ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। পরবর্তী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো ন্যূনতম ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। এটিও সংবিধানে যুক্ত হবে।

ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে ন্যূনতম ৫ শতাংশ বর্ধিত হারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন অব্যাহত থাকবে। এটিও সংবিধানে যুক্ত হবে। সংরক্ষিত নারী আসন ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল থাকবে।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব

রাতে আলী রীয়াজ জানান, কমিশন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব বিষয়ে একটি সাধারণ ধারণাপত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে বিবেচনার জন্য দিয়েছে। কমিশন প্রস্তাব করেছে যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়াই নিয়োগ দিতে পারেন। আজ আলোচনার মাধ্যমে এটি নিষ্পত্তি হবে বলে তিনি আশা করেন।

মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে এখনো যেখানে আপত্তি

সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে জোরালো আপত্তি আছে বিএনপির। তারা এ–সংক্রান্ত বিধান সংবিধানে যুক্ত না করে আইনের মাধ্যমে নিয়োগ করার পক্ষে।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের বিষয়ে দলগুলো একমত হলেও উচ্চকক্ষের নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে মতভিন্নতা আছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছিল, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে অর্থাৎ সারা দেশে একটি দল যত ভোট পাবে, তার অনুপাতে তারা উচ্চকক্ষে আসন পাবে। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল এই প্রস্তাবে একমত। তবে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের এতে আপত্তি আছে। উচ্চকক্ষের ক্ষমতা কী হবে, তা নিয়েও মতভিন্নতা আছে। এমন পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে কমিশনকে একটি সিদ্ধান্ত দেওয়ার ভার দেওয়া হয়েছিল। তবে গতকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি।

রাষ্ট্রের মূলনীতি প্রশ্নেও দলগুলো মোটাদাগে বিভক্ত। সংবিধানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব নিয়েও এখন পর্যন্ত সেভাবে আলোচনা হয়নি। রাষ্ট্রপতির নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি।

অবশ্য গতকাল দুপুরে আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বৃহস্পতিবার (আজ) একটি সমন্বিত ও গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সব দলের কাছে তুলে দেওয়া সম্ভব হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা যে দায়িত্ব আমাদের দিয়েছেন, তার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমরা চেষ্টা করছি এসব বিষয়ে দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছাতে এবং আগামীকালের মধ্যেই আপনাদের অবহিত করতে পারব।’

বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার দাবি

গত সোমবার দলগুলোকে জুলাই জাতীয় সনদের একটি খসড়া দিয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, এই সনদের অন্তর্ভুক্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে অঙ্গীকার করবে রাজনৈতিক দলগুলো।

গতকাল ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, খসড়ায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তা দেখে তিনি বিস্মিত ও খুব হতাশ হয়েছেন। তিনি জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়া এবং এ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে আলাদাভাবে আলোচনা করার দাবি জানান। তিনি বলেন, যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকে, তাহলে এসব সিদ্ধান্তের এক পয়সা দাম আছে বলে তিনি মনে করেন না। সে ক্ষেত্রে এত দিন যা হয়েছে, তা সময়ের অপচয়।

এ বিষয়ে আরও কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে কথা বলার চেষ্টা করা হলে ঐকমত্য কমিশন অনুমতি দেয়নি। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এ বিষয়ে কমিশনের প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন।

রাতে আলোচনার শেষ পর্যায়ে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন আবারও এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, সংস্কার বাস্তবায়নের ছয়টি পদ্ধতির কথা বলা হয়েছিল। এটা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। তবে আলী রীয়াজ বলেন, কমিশন আগে সনদের প্রক্রিয়া শেষ করতে চায়। বাস্তবায়নের পথ নিয়ে এখন আলোচনায় যাচ্ছে না কমিশন।

মৌলিক সংস্কারের যৌগিক চিত্র

০২ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

ঐকমত্যের সংলাপে ২০ মৌলিক সংস্কারের সিদ্ধান্তের আটটিতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি। বিএনপি চারটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাজি নয়। তিনটিতে নোট অব ডিসেন্টসহ (আপত্তি) একমত হয়েছে দলটি। জামায়াতে ইসলামী একটি সিদ্ধান্তে রাজি নয়। তিনটিতে আপত্তিসহ একমত তারা। অন্যদিকে এনসিপি ১৮ সিদ্ধান্তে একমত। কিন্তু ৭ শতাংশ আসনে নারীর সরাসরি মনোয়নের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে নবগঠিত দলটি ১৫ শতাংশ নারী প্রার্থীর প্রস্তাব করেছে।

বিএনপি প্রস্তাব করেছিল, এক ব্যক্তি জীবনে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না। এ সিদ্ধান্তে সব দল একমত হয়েছে। এমপিদের গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একমত হয়নি ইসলামী আন্দোলন। দলটি প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চায়। বাকি দলগুলো এ প্রস্তাবে একমত। গণঅধিকার, এবি পার্টি, এলডিপি, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দলও সংস্কারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে রাজি হয়নি কিংবা আপত্তিসহ একমত হয়েছে। ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লেবার পার্টি, এনডিএমের অবস্থান বিএনপির মতোই।

সংবিধানের মূলনীতিতে সিপিবি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদসহ কয়েকটি দল রাজি হয়নি। সে হিসেবে ৯টি সিদ্ধান্তে ঐকমত্য হয়নি। বাকি ১১ সিদ্ধান্তে ঐকমত্য হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের সঙ্গে অন্যান্য সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে সিদ্ধান্ত যুক্ত করায়, ঐকমত্য কমিশনের হিসাবে সিদ্ধান্তের সংখ্যা ১৯।

দু’একদিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া দেওয়ার কথা রয়েছে। এতে থাকবে কোন সিদ্ধান্তে দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে। কোন সিদ্ধান্তে দলগুলো আপত্তিসহ একমত হয়েছে।

সনদ চূড়ান্ত হলে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারসহ সই করার কথা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর। সনদে বলা থাকবে, কী কী সংস্কার কীভাবে হবে। খসড়ায়  ৭ দফা অঙ্গীকার রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সংস্কারে যেসব সুপারিশে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার রয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, এর জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিমার্জন, পুনর্লিখন এবং আইন, বিধিবিধানেও অনুরূপ পরিবর্তন করা হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে গঠিত সরকার তা দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে।

বিএনপি এতে একমত হলেও সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে সই না করার হুমকি দিয়েছে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্তত ১৫টি দল। এ দলগুলো নির্বাচনের পরে নয়, বর্তমান সরকারের অধীনেই ভোটের আগে সংস্কার চায়। তাই সংলাপ হলেও সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে শিগগির সনদের চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।

চার সিদ্ধান্তে রাজি নয় বিএনপি, তিনটিতে ভিন্নমত

ভোটের অনুপাতে (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন; প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদ না থাকা; দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি), মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এবং ন্যায়পাল নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠনের যেসব  সিদ্ধান্ত ঐকমত্য কমিশন দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে রাজি নয় বিএনপি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে সংসদীয় বাছাই কমিটি গঠনে একমত হলেও র‌্যাঙ্ক চয়েজ ভোটের সিদ্ধান্ত মানবে না তারা। বিএনপি জানিয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদে সই করলেও ক্ষমতায় গেলে রাজি নয় এমন সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করবে না তারা।  

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারে ঐকমত্য কমিশনের প্রাথমিক প্রস্তাব ছিল, অর্থবিল বাদে বাকি সব বিষয়ে এমপিরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন। বিএনপি প্রস্তাব করে, আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধন বিল এবং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নেও এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্তে ভোট দেবেন। এই প্রস্তাবে বিএনপি নোট অব ডিসেন্টসহ একমত হয়েছে। তারা জানিয়েছে, দলের প্রস্তাব আগামী নির্বাচনের ইশতেহারে রাখা হবে। বিএনপি ভোটে জয়ী হলে, এই চার বিষয় বাদে বাকি বিষয়ে এমপিরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।

কমিশনের প্রস্তাব ছিল, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। বিএনপি এতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে জানিয়েছে, জ্যেষ্ঠতম দুই বিচারকের একজনকে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

কমিশনের প্রস্তাব ছিল, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়াই রাষ্ট্রপতি ১২টি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে পারবেন। তিন বাহিনীর প্রধান, ডিজিএফআইর মহাপরিচালক, এনএসআইর মহাপরিচালক, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগে রাষ্ট্রপতিকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ কোনো দলই রাজি হয়নি।

পরে কমিশন সিদ্ধান্ত দেয়, মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন, প্রেস কাউন্সিল, আইন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এবং বিটিআরসিতে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। বিএনপি প্রথম চারটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দিতে রাজি হয়েছে। পরের তিনটি কমিশনের নিয়োগের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়ার সিদ্ধান্তে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। 

জামায়াত নারীদের সরাসরি নির্বাচনে রাজি নয়

কমিশনের ১৬টি সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছে জামায়াত। সরাসরি নির্বাচনে নারীদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতায় রাজি হয়নি। কমিশনের সিদ্ধান্ত, আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে আহ্বান থাকবে। পরের নির্বাচনে তা আরও ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। তখন সংবিধান সংশোধন করে নারী প্রার্থী মনোনয়নের বাধ্যবাধকতা তৈরি করা হবে। জামায়াত জানিয়েছে, তারা সংসদে নারী আসন বৃদ্ধি করে ১০০ করতে রাজি। তবে আসন বণ্টন হতে হবে পিআর পদ্ধতিতে।

জামায়াত আপত্তিসহ একমত হয়েছে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিল, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদ গ্রহণ না করা এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির নিয়োগের ক্ষমতার সিদ্ধান্তে। ৭০ অনুচ্ছেদের সিদ্ধান্তে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে জামায়াত বলেছে, এমপিরা আস্থা ভোট এবং সংবিধান সংশোধনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিলে সদস্য পদ বাতিল হবে।

কমিশনের প্রস্তাব ছিল, প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতার পদে থাকতে পারবেন না। বিএনপি এ সিদ্ধান্তে রাজি হয়নি। জামায়াত নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না। তবে সংসদ নেতা পদে থাকতে পারবেন।

এনসিপি নারী প্রতিনিধিত্ব বেশি চায়, অন্যদের নানা মত

কমিশনের ১৮ সিদ্ধান্তে একমত এনসিপি। দলটির নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কারে। তারা জানিয়েছে, এমপিরা আস্থা ভোট দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে দিতে পারবেন না। ৭ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়নের সিদ্ধান্তেও আপত্তি জানিয়েছে এনসিপি। দলটি প্রস্তাব করেছে, অন্তত ১৫ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে।

২৭টি দল সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনে রাজি হলেও সিপিবি, বাসদ, জমিয়ত একমত হয়নি। সংবিধানের মূলনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার যুক্ত করতে রাজি হয়নি সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ জাসদ। নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে গণফোরাম, মার্কসবাদী বাসদ, জেএসডিসহ কয়েকটি দল। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় গেলে মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনর্বহাল করবে।

এলডিপি, লেবার পার্টি, ১২ দলীয় জোট, সমমনা জাতীয় জোট, এনডিএম, জমিয়ত, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, নেজামে ইসলামী পার্টিও একই অবস্থান জানিয়েছে। নারী আসন বৃদ্ধি এবং সরাসরি মনোনয়নে রাজি নয় ইসলামী আন্দোলনসহ ছয় ধর্মভিত্তিক দল।

পিআরসহ তিন সিদ্ধান্তে বেশি বিরোধ

সংলাপে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন, সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষেও দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিধান এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্বের সিদ্ধান্তে। জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ ২১ দল একমত হওয়ায় কমিশন সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পিআরের সিদ্ধান্ত দেয়। বিএনপিসহ পাঁচটি দল এতে রাজি হয়নি।  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেছেন, পিআর এবং উচ্চকক্ষে সংবিধান সংশোধনের এখতিয়ার দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। বিএনপি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে না।

সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তেও তুমুল বিতর্ক হয়েছে। বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠনে দীর্ঘ আলোচনার পর একমত হয়েছে। তবে দুদক, পিএসসি, সিএজি এবং ন্যায়পাল নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি গঠনে রাজি নয়।

বিএনপি ও সমমনা ছয়টি দল বলেছে, এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের আইন শক্তিশালী করতে হবে। তবে সংবিধানে রাখা যাবে না। কারণ, এর মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগ তথা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব হবে। বিএনপির অবস্থান এই চার প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারে থাকতে হবে। সালাহউদ্দিন সমকালকে বলেছেন, নইলে রাষ্ট্রের ভারসাম্য থাকবে না। নির্বাহী বিভাগকে দায়িত্বের সঙ্গে ক্ষমতাও দিতে হবে।

জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের সমকালকে বলেছেন, সংস্কারের উদ্দেশ্যই  ক্ষমতার ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণ, যাতে আর স্বৈরাচার তৈরি না হয়। তাই সংবিধানের সুরক্ষায় পিআর পদ্ধতি এবং উচ্চকক্ষে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে দুদক, পিএসসি, সিএজিকে স্বাধীন করতে হবে।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন সমকালকে বলেছেন, আমরা সংস্কারের সব সিদ্ধান্তেই একমত। নারী প্রতিনিধিত্বে আমাদের আপত্তি ইতিবাচক। নারী প্রতিনিধিত্ব সাত থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বাছাই কমিটিতে নিয়োগ সম্ভব না হলে, র‍্যাংক চয়েজ (পছন্দক্রম) ভোটে হতে হবে। নিয়োগ পদ্ধতি আগামী সংসদে নির্ধারণ হলে, সরকারি দল তত্ত্বাবধায়ককে আবার কুক্ষিগত করতে চাইবে। এতে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার পালাবদল না হয়ে দেশ আবার বিশৃঙ্খলায় পড়বে।

যেসব বিষয়ে ঐকমত্য

এক ব্যক্তি জীবনে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না,  স্বাধীন পুলিশ কমিশন, জরুরি অবস্থা জারিতে বিরোধী নেতার সম্পৃক্ততা, মৌলিক অধিকার সম্প্রাসরণ, নির্বাচন কমিশন গঠনে সাংবিধানিক কমিটি, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে সাংবিধানিক কমিটি, সংবিধানের ৮, ৪৮, ৫৬ এবং ৫৮ (ক) অনুচ্ছেদ সংশোধনে গণভোট, গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ক্ষমতা সীমিত করে আইন প্রণয়ন, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ করে বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এবং উপজেলায় আদালত স্থাপনসহ ১১টি সিদ্ধান্তে সব দল একমত হয়েছে।

ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন, টাকা আদায়, অভিযোগ বিএনপি নেতা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে

০২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

যশোরের অভয়নগরে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পদ স্থগিত হওয়া স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর স্ত্রী সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর ওরফে টিপু (৪৮) নওয়াপাড়া এলাকার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। তিনি ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এলাকা ছেড়ে গেছেন তিনি।

নারীদের ধ্বংস করা হচ্ছে, রাজনীতি করব না: ফেসবুক লাইভে বৈষম্যবিরোধী নেত্রী

০২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

আর কখনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন। লাইভে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে যাঁদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলন করেছি, তাঁরাই আজ নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বয়ান (ন্যারেটিভ) তৈরির চেষ্টা করছেন। নারীদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। এগুলো নেওয়া যায় না।’

গতকাল শুক্রবার রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে আসেন ফাতেমা খানম। ১৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড তিনি লাইভে ছিলেন। এ সময় ফাতেমা বলেন, ‘চট্টগ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থের কাছে, তাঁদের চাওয়া-পাওয়ার কাছে আমাদের রাজনীতি হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছেন আন্দোলনের সম্মুখসারিতে থাকা অনেকে। এখন বলতে গেলে কেউই নেই। এই সবকিছুর জন্য কিছুসংখ্যক ভাই-ব্রাদার দায়ী। তাঁরা কেন্দ্রের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চট্টগ্রামে একটার পর এক কোরাম বানিয়েছেন। এর দায় আপনাদের নিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর শেখ হাসিনা সরকারের ‘ছায়া’ দেখছেন আনু মুহাম্মদ

০২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ‘ছায়া’ দেখছেন সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাতে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরে শেখ হাসিনা সরকারের ছায়া দেখতে পাচ্ছি। সেই একই রকম স্বৈরতন্ত্র, একই রকম জনগণের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন, একই রকম বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা হচ্ছে।’ সরকারের এই উল্টোযাত্রা চলতে থাকলে জনগণের দ্রোহযাত্রা অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ২ আগস্ট ঢাকার রাস্তায় প্রতিবাদী কর্মসূচি ‘দ্রোহযাত্রার’ বর্ষপূর্তি ছিল আজ শনিবার। এই দিনটি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামোর বিলোপ, চব্বিশের গণহত্যাসহ পাহাড় ও সমতলের সব গণহত্যার বিচার এবং নব্য ফ্যাসিবাদী প্রবণতা প্রতিহতের’ আহ্বানে আজ বিকেলে ‘শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার দ্রোহযাত্রার’ আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, নারী, শ্রমিক ও ছাত্রসংগঠন এই আয়োজন করে। গত বছরের মতো আজকের দ্রোহযাত্রায়ও সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

কমিশনের সুপারিশ জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

৪ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

দ্বিতীয় পর্যায়ে গঠিত পাঁচটি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় সংস্কার বিবেচনায় নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন কমিশনগুলোর প্রধানেরা। সংস্কারের পাশাপাশি এসব সুপারিশ জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।

চিঠিতে সই করেছেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান শিরীন পারভিন হক, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন প্রধান তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন প্রধান জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনপ্রধান কামাল আহমেদ ও শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। তাঁরা আশাবাদ জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা যথাযথ ও সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে গঠিত ছয়টি বিষয়ভিত্তিক কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপ চালিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে সময়োচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়ণ এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ অনুযায়ী সংস্কার কার্যক্রমও সমানভাবে জরুরি।

সময়ের সীমাবদ্ধতার পরও অত্যাবশ্যক সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার নিশ্চিত করতে চিঠিতে দুটি কার্যকর পদক্ষেপের অনুরোধ করা হয়। প্রথমত, এখনই যেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব, সেগুলো বাছাই করে দ্রুত বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা। দ্বিতীয়ত, এসব সংস্কার নির্বাচিত সরকার অব্যাহত রাখবে—এই মর্মে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্যে বিষয়গুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা।

কমিশনপ্রধানেরা আরও বলেছেন, জুলাই সনদে গণমাধ্যম, নারী, শ্রম, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকারবিষয়ক সংস্কার অন্তর্ভুক্ত না হলে রাজনৈতিক দলগুলো ভবিষ্যতে তা বাতিল বা উপেক্ষা করার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে জনমানসে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শ্রমিক, নারী ও সাংবাদিক জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানে প্রাণ দিয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ থেকে যে আশা ও স্বপ্ন জন্ম নিয়েছে, তা উপেক্ষিত হলে তা ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিতে পারে।

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের খোলাচিঠি

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং তা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে খোলাচিঠি দিয়েছেন স্বাস্থ্য খাত–সংশ্লিষ্ট ছয় বিশিষ্টজন। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ খোলাচিঠি দেন বিশিষ্টজনেরা। ওই খোলাচিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন, লিয়াকত আলী, নায়লা জামান খান, আজহারুল ইসলাম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ।

ছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা’, দিলেন অনেকের পরিচয়

০৪ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

‘হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যে ছেলেগুলো সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। সেটা  নিজেকে ছাত্রলীগ প্রমাণের দায় থেকে।ছাত্রলীগ যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাত, তারা সেগুলার অংশীদার হতো, লীগের কালচারই চর্চা করত।’ এ কথা বলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের।

রোববার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন আবদুল কাদের। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ছাত্রলীগের হয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন–নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন হলের বেশ কয়েকজনকে ছাত্রশিবির সংশ্লিষ্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে আবদুল কাদের লিখেছেন, ‘শিবির করে আসা ছেলেরা নিজেকে ছাত্রলীগ প্রমাণ করার জন্য উগ্রবাদী।’ ছাত্রলীগের হয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো এমন কয়েকজনের বিষয়ে শিবিরের তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম ফোন দিয়ে তদবির করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ক্ষোভের মুখে টিএসসিতে শিবিরের প্রদর্শনী থেকে সরানো হলো দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি

০৫ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষোভের মুখে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রদর্শনীতে থাকা একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবি সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে এ ছবি সরানো হয়।

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি আয়োজন করে। সেই আয়োজনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ তৈরি হয়।

এদিকে রাত সাড়ে ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টিএসসিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে বামপন্থী সংগঠন ও শিবিরের সমর্থকেরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ছাত্রশিবিরকে বলি যে ছবিগুলো সরাতে হবে। তারা ছবি সরিয়ে নিতে সম্মতি দেয়। পরে আমাদের সহকারী প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় ছবিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।’

নিয়োগটি নজিরবিহীন!

৮ আগস্ট ২০২৫, মানবজমিন

রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রাপ্তবয়স্ক যে কাউকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে সরকার। বিদায়ী হাসিনা সরকারের আমলে প্রশ্নবিদ্ধ একাধিক নিয়োগ হয়েছে। চট্টগ্রামের শ্রমিক নেতা থেকে শুরু করে ‘আড়াই ঘণ্টার এমপি’ খ্যাত আখাউড়ার এক শিক্ষক নেতাকে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে পতিত সরকার। যদিও সব ভেসে গেছে ‘৩৬ জুলাই’র রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে। ওয়াকিবহালরা বলছেন- পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রদূতের মতো মর্যাদাপূর্ণ পদে বিতর্কমুক্ত নিয়োগ প্রত্যাশা ছিল জাতির। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে পেশাদারিত্বের মূল্যায়ন কাম্য ছিল।

কিন্তু, না সেটি হয়নি। পেশাদার কূটনীতিক বা রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ- উভয় ক্ষেত্রেই বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। অনেক ক্ষেত্রে বিদায়ী সরকারের আমলে ‘মাখন খাওয়া’ লোকজন এ আমলেও সুবিধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনৈতিক লেনদেনের কথাও চাউর আছে। বিশেষ করে মালদ্বীপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদে সম্প্রতি যে নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে গুঞ্জন চরমে। ওই পদে নিয়োগ পেয়েছেন তুরস্কে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী একজন তরুণ শিক্ষাবিদ। যিনি অধ্যাপনার পাশাপাশি তুরস্ক পার্লামেন্টে অন্যতম বেতনভোগী উপদেষ্টা বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নথি উপস্থাপনা করেছেন। তার নাম ড. মো. নাজমুল ইসলাম।

বয়স, অতীত কীর্তি, রাজনৈতিক আনুগত্য এবং বিদেশিনীর সঙ্গে সংসার ইত্যাদি বিবেচনায় তার নিয়োগ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে বলে মনে করছেন পেশাদাররা। বোদ্ধাদের বিবেচনায় এই নিয়োগ ‘নজিরবিহীন’! বলা হচ্ছে- সব কিছুর একটা সৌন্দর্য থাকে। মালেতে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ পাওয়া ড. মো. নাজমুল ইসলামের জন্ম ১৯৯২ সালে। তার বয়স ৩৩ বছর। বাংলাদেশে ৫৪ বছরের ইতিহাসে রাষ্ট্রদূত পদে এই বয়সে এমন নিয়োগ সম্ভবত এটাই প্রথম।

আট উপদেষ্টার সমালোচনায় সাবেক সচিব

০৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। অবসরপ্রাপ্ত এই সচিব বলেছেন, এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না।

শুক্রবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ অভিযোগ করেন আব্দুস সাত্তার। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৮২ ব্যাচের এই কর্মকর্তা বর্তমানে অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি।

‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও আগামী দিনের জনপ্রশাসন’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে প্রশাসন ক্যাডারদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

অধ্যাপক ইউনূসের মামলা দ্রুত প্রত্যাহার হয়েছে, সবচেয়ে কম হয়েছে শ্রমিকদের: আনু মুহাম্মদ

০৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বিগত সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাসীনদের বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও শ্রমিকদের মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি মামলা আছে। সেটার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু যাঁরা ক্ষমতাবান, তাঁদের ব্যাপারে অগ্রগতি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা খুব দ্রুত প্রত্যাহার হয়েছে, সমাধান হয়েছে। এ রকম যাঁরা ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁদেরটাও হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে কম হয়েছে শ্রমিকদের বিষয়ে।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর: দায়িত্ব ও ভূমিকা পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সভায় আনু মুহাম্মদ এ কথাগুলো বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন আনু মুহাম্মদ।

সভায় গুম, ক্রসফায়ার ও বিচারহীনতার প্রসঙ্গে আনু মুহাম্মদ বলেন, গুম প্রতিরোধ কমিশন হলেও ক্রসফায়ার নিয়ে কোনো তদন্ত বা কমিশন হয়নি। এ ছাড়া মব সন্ত্রাস, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ধর্মীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনায়ও সন্তোষজনক অগ্রগতি নেই। কোনো কোনো সরকারি উপদেষ্টা এগুলোকে যৌক্তিকতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে এটাকে প্রেশার গ্রুপ বলেছেন। এটা তো কাণ্ডজ্ঞানের বিষয় যে মব সন্ত্রাস এবং প্রেশার গ্রুপ এক কথা নয়।

সভায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং নজরদারি কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যে নজরদারি প্রযুক্তি ইসরায়েলের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, সেই নজরদারি ব্যবস্থায় সংস্কারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

সভায় ৭৪-এর বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের দাবি জানান আনু মুহাম্মদ। অর্থনৈতিক খাত সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে—রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সে উন্নতি হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে খেলাপি ঋণ উদ্ধার বা পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের ভূমিকা পর্যালোচনা করেন লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার, মামলা–বাণিজ্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনীতির গতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনীতির গতি মন্থর হয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কারের বেশির ভাগ সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। আমলাতন্ত্র জনবান্ধব হয়নি বরং সরকার আমলাতন্ত্রবান্ধব হয়েছে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান, স্থপতি ফারহানা শারমিন ইমু প্রমুখ।

ফৌজদারি আইনে পরিবর্তন

মিথ্যা মামলায় শাস্তি পেতে হবে, মুঠোফোনে সমন দেওয়া যাবে

১২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

১২৭ বছরের পুরোনো ফৌজদারি কার্যবিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ১৮৯৮ সালের আইনের সংশোধনীতে ডিজিটাল মাধ্যমে অর্থাৎ মুঠোফোনে কল করে ও খুদেবার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে সমন জারির বিধান রাখা হয়েছে। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা রোধে আবশ্যিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

সংশোধিত বিধানগুলোতে গ্রেপ্তার, তদন্ত, জামিন, বিচারসহ পুরো প্রক্রিয়ায় বেশকিছু মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। বিচারপ্রার্থী ও আসামিদের সুরক্ষায় যুক্ত হয়েছে নতুন ধারা। পরিবর্তন এসেছে ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা, পুলিশের রিমান্ডে নেওয়া, অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো, মামলার হাজিরা ও সাক্ষীর নিরাপত্তার ব্যবস্থাতেও। এ ছাড়া যেকোনো স্থানে সংক্ষিপ্ত বিচার আদালত পরিচালনার বিধানও রাখা হয়েছে।

শুধু প্রতিরোধমূলক আটক করার জন্য ৫৪ ধারা ব্যবহার করা যাবে না। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কারণ জানাতে বাধ্য।

গত রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ ‘ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ’–এর গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে সংশোধনীর বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

আসামি গ্রেপ্তারে বিশেষ সুরক্ষার বিধান রাখা হয়েছে নতুন সংশোধনীতে। বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকারীর পরিচয় জানাতে হবে, চাইলে তাঁকে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। গ্রেপ্তারকারীর নাম যাতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, সেভাবে ধারণ করতে হবে। যাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাঁকে ও আশপাশে উপস্থিত ব্যক্তিদের পরিচয় জানাতে হবে। বাসার বাইরে থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারের সদস্য, আত্মীয় বা মনোনীত বন্ধুকে সময়, স্থান ও কোথায় রাখা হবে, সেসব জানাতে হবে।

সংশোধিত বিধানে আরও রয়েছে, গ্রেপ্তারের পর এর কারণ লিখতে হবে। যে থানার এলাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে, সেই থানার জেনারেল ডায়েরিতে (জিডি) সঙ্গে সঙ্গে নথিভুক্ত করতে হবে। যদি গ্রেপ্তারকারী কর্মকর্তা ওই থানার না হন, গ্রেপ্তারের মেমোরেন্ডামের কপি সেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দিতে হবে। গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ও কোন অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেসব তথ্য প্রতিটি থানায় ও জেলা বা মহানগর সদর দপ্তরে দৃশ্যমানভাবে (সর্বোত্তম হলো ডিজিটাল মাধ্যমে) প্রদর্শন করতে হবে। গ্রেপ্তারের পর জব্দ তালিকার একটি অনুলিপি গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্য বা নিকটজনকে দিতে হবে।

আমলযোগ্য অপরাধে কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে হলে পুলিশকে দেখাতে হবে যে, ওই ব্যক্তি পুলিশের সামনেই অপরাধ করেছেন। যদি অপরাধসম্পর্কিত এজাহার বা নালিশি মামলা তদন্তাধীন থাকে, তবে পুলিশকে দেখাতে হবে যে, ওই ব্যক্তি অপরাধ করেছেন বলে যুক্তিসংগত সন্দেহের কারণ আছে। শুধু প্রতিরোধমূলক আটক করার জন্য ৫৪ ধারা ব্যবহার করা যাবে না। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কারণ জানাতে বাধ্য।

বিএনপির চেয়ে জামায়াতের আয় দ্বিগুণ, ব্যয় পাঁচগুণ

১২ আগস্ট ২০২৫, যুগান্তর

২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের বিবরণী নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এতে গত বছর দলটির আয় দেখানো হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা। আর দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

বিএনপিও আয়-ব্যয়ের হিসাব ইসিতে জমা দিয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছর তাদের মোট আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, আর ব্যয় হয়েছে চার কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা।

দুই দলের প্রদত্ত তথ্যনুযায়ী ২০২৪ সালে জামায়াতের আয় বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ এবং ব্যয় পাঁচগুণ।

এক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী চান না ৮৯ শতাংশ মানুষ

১২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না—এমন বিধানের পক্ষে ৮৯ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে আসন বণ্টন চান ৭১ শতাংশ মানুষ। আর রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির পরিবর্তন চান ৯০ শতাংশ মানুষ।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) প্রস্তাবিত জাতীয় সনদ চূড়ান্তকরণে জনমত যাচাইয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জনমত যাচাইয়ের তথ্য তুলে ধরা হয়।

তথ্য উপস্থাপন করেন সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ৪০টি প্রশ্নে সারা দেশে ১ হাজার ৩৭৩ জনের মতামত এবং ১৫টি নাগরিক সংলাপের মাধ্যমে জরিপটি করে সুজন।

সংবাদ সম্মেলনে জনমত যাচাইয়ে উঠে আসা তথ্যের বরাতে বলা হয়, আইনসভা সংস্কারের প্রস্তাবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে মত দিয়েছেন ৬৯ শতাংশ মানুষ।

একই ব্যক্তি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদনেতা হতে পারবেন না—এমন প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছেন ৮৭ শতাংশ মানুষ।

ঘূর্ণমান পদ্ধতিতে নিম্নকক্ষে নারী আসন সংরক্ষণের পক্ষে ৬৩ শতাংশ ও উচ্চকক্ষে নারীদের জন্য ৩০টি আসন সংরক্ষণের পক্ষে ৬৯ শতাংশ মানুষ একমত।

বিরোধী দল থেকে নিম্নকক্ষে একজন ডেপুটি স্পিকার নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৬ শতাংশ মানুষ। উচ্চকক্ষে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার চান ৮২ শতাংশ মানুষ।

নির্বাচনকালে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে—নির্বাহী বিভাগের এমন কার্যক্রম গ্রহণে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়ার বিধান করার পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৭ শতাংশ মানুষ।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রত্যয়ন (সার্টিফাই) করে তা গণবিজ্ঞপ্তি হিসেবে প্রকাশ করার পক্ষে ৮৬ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন।

নির্বাচনী ব্যয় নিরীক্ষণ ও অসত্য তথ্য প্রদানকারীদের প্রার্থিতা বা নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করার পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৮ শতাংশ মানুষ।

৯২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দলের সদস্য হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত।

সুজন প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্যে নির্বাচনকালে ১২০ দিনের জন্য দলনিরপেক্ষ সরকার গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৩ শতাংশ মানুষ।

দুদক, মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন ও প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কমিশনকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত ৯০ শতাংশ মানুষের।

সব সাংবিধানিক পদে ও তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগের জন্য এনসিসি গঠনের পক্ষে ৮০ শতাংশ, মৌলিক অধিকারের পরিধি বাড়ানোর পক্ষে ৮৮ শতাংশ এবং মৌলিক অধিকারকে শর্তহীন করার পক্ষে ৮৪ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন।

সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের উভয় কক্ষের দুই–তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৫ শতাংশ মানুষ। পাঁচ বছর পরপর দলের নিবন্ধন নবায়নের পক্ষে মত ৭৬ শতাংশের। ব্যাংকিং চ্যানেলে দলের আর্থিক লেনদেন ও অডিট হিসাব প্রকাশের পক্ষে মত ৯১ শতাংশের। দলের সদস্যদের মতামতে প্রার্থী মনোনয়নের পক্ষে মত ৮৩ শতাংশের। দলের লেজুড়বৃত্তিক ও বিদেশি শাখা না থাকার পক্ষে মত ৮০ শতাংশের।

স্থায়ী স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের পক্ষে ৯০ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও বিকেন্দ্রীকরণে প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের পক্ষে মত ৮৮ শতাংশের। স্থানীয় সরকারকে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের পক্ষে মত ৮৪ শতাংশের। সরকারি কৌঁসুলি ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দক্ষ পেশাজীবী নিয়োগের পক্ষে মত ৮৫ শতাংশের। উপজেলা পর্যায়ে আদালত স্থাপনের পক্ষে মত ৮১ শতাংশের। স্থানীয় সরকার কমিশন গঠনের পক্ষে ৯০ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন।

অন্তরালে জোট নিয়ে দৌড়ঝাঁপ

১৬ আগস্ট, ২০২৫, কালের কন্ঠ

দেশ এখন নির্বাচনমুখী। রাজনৈতিক দলগুলো যার যার মতো ভোটের মাঠ দাপিয়ে বোড়চ্ছে। তারা ধরনা দিচ্ছে ভোটারদের কাছে। এরই মধ্যে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে দুই-একটি দল।

তবে কার্যত শেষ পর্যন্ত তারাও ভোটের মাঠেই থাকছে। বড় দল বিএনপিকে চাপে রাখতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ দুই-একটি দল ভোটে না যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছে, এটিও তাদের নির্বাচনী কৌশল। পেছনে বড় দলের সঙ্গে আসন সমঝোতাই মূল লক্ষ্য।

জানা গেছে, আসন বণ্টন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে এনসিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, এবি পার্টি, গণ-অধিকার পরিষদের মধ্যে আলোচনা চলছে। বিএনপি জোটসঙ্গীদের ৬০টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয়। কিন্তু এনসিপি ৩০টি আসন ধরেই দর-কষাকষি করছে। তারা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দর-কষাকষি করছে। এ ক্ষেত্রে ১৭টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ বিএনপি।

এদিকে জামায়াত জোটবদ্ধ না হলেও বিএনপির কাছে কমপক্ষে ৫০টি আসনে ছাড় চায় বলে জানা গেছে। সেটি নিশ্চিত না হওয়ায় তারা নির্বাচনে না যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি ও জামায়াতের সূত্র জানিয়েছে।

বিপুল দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের ফরেনসিক অডিটের উদ্যোগ নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার

১৯ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থা, করপোরেশন ও বিভাগের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ বেশ পুরেনো। বিশেষ করে গত দেড় দশকে এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকল্প ও কেনাকাটায় বড় ধরনের দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) দপ্তরের নিরীক্ষায় বিভিন্ন সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। পাশাপাশি ঋণের নামে লুট করা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অর্থ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত এক বছরে বেসরকারি ব্যাংক, আর্থিক খাতের অলিগার্কসহ বেসরকারি খাতের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত ও নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, করপোরেশন ও বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি নিরীক্ষা করে দেখার কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ২৮ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দিচ্ছে সরকার

১৯ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে নতুন ২৮ হাজার সদস্য নিয়োগ দিচ্ছে সরকার। সোমবার বিকেলে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) পদমর্যাদার ১৫ হাজার ৮৫১, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) চার হাজার ৪৬৯, আনসার পাঁচ হাজার ৫৫১, কোস্টগার্ড ৬৩৪, কারারক্ষী এক হাজার ৫৫৮ এবং ফায়ার সার্ভিসে ২০৮ জন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিছু নতুন পদ সৃষ্টি এবং কিছু শূন্য পদ পূরণ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: অন্তর্বর্তী সরকার

২২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে গণমাধ্যমকে সতর্ক করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এই সতর্কবার্তা জানিয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার বক্তব্য কেউ ভবিষ্যতে প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসকের একটি ভাষণ কিছু গণমাধ্যম প্রচার করেছে। সেখানে শেখ হাসিনা মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।

জুলাই শহীদ-আহতদের তালিকায় কিছু নাম নিয়ে প্রশ্ন, যাচাই করছে সরকার

২২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের তালিকা আবার যাচাই–বাছাই করছে সরকার। গেজেটে প্রশ্নবিদ্ধ নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ইতিমধ্যে দেশের সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের তালিকায় কিছু নাম নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলনে যুক্ত না থেকেও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে—এমন ব্যক্তিদের নাম বাদ দিয়ে নতুন গেজেট প্রকাশ করা হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হিসেবে ৮৩৪ জনের নামে চলতি বছরের জানুয়ারিতে গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। তালিকায় আরও ১০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে গত ৩০ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে সরকারি গেজেট অনুযায়ী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৪৪ জন।

তবে ৩ আগস্ট শহীদদের তালিকা থেকে আটজনের নাম বাদ দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তাঁদের মধ্যে চারজনের নাম গেজেটে দুবার এসেছিল। বাকি চারজন সরাসরি জুলাই গণ-আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আটজনের নাম বাদ দেওয়ার পর এখন শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ জন।

অন্যদিকে আহত ব্যক্তিদের প্রথম তালিকায় নাম ছিল ১২ হাজার ৪৩ জনের। গত জুলাইয়ে আরও ১ হাজার ৭৫৭ জনের নাম যুক্ত করা হয়। সরকারি গেজেট অনুযায়ী, আহত ব্যক্তিদের মোট সংখ্যা এখন ১৩ হাজার ৮০০।

তবে অভিযোগ উঠেছে, জুলাই গণ-আন্দোলনে অংশ না নিলেও কারও কারও নাম তালিকায় ঢুকে পড়েছে।

বদলে যাচ্ছে কারাগারের নাম

২৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ২ হাজার ৭০০–এর বেশি বন্দী পালিয়ে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক বন্দী পলাতক আছেন বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

কারা মহাপরিদর্শক বলেন, পলাতকদের মধ্যে জঙ্গি আছেন ৯ জন। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আছেন ৬০ জন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় কারা অধিদপ্তরের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্যের কপি লিখিত আকারে দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, কারাগারকেন্দ্রিক সংশোধনের বিষয়টির ওপর অধিক গুরুত্বারোপের জন্য বাংলাদেশ জেলের নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার গৃহীত ‘প্রাণবিনাশী’ প্রকল্পগুলো এই সরকার অব্যাহত রেখেছে: আনু মুহাম্মদ

২৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যে মহাপরিকল্পনার অধীনে প্রাণবিনাশী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু করেছিলেন, এই সরকার সেগুলো বাতিল না করে অব্যাহত রেখেছে। আমরা শেখ হাসিনার গৃহীত চুক্তিগুলো জনগণের সম্মুখে প্রকাশ ও বাতিলের কথা বলেছি। কিন্তু তাঁর সব বিপজ্জনক প্রকল্প, জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি এই সরকার গ্রহণ করছে।’

মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার নিমতলায় ‘ফুলবাড়ী ট্র্যাজেডি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। এর আগে সকাল ১০টায় কয়লাখনি–বিরোধী আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শোক র‌্যালি করা হয়। এরপর স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

প্রশাসনে বড় পদোন্নতি, উপসচিব হলেন ২৬৮ কর্মকর্তা

২৮ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

প্রশাসনে বড় পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার উপসচিব পদে ২৬৮ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এবার নতুন করে ৩০তম বিসিএসের কর্মকর্তাদের এ পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এই ব্যাচের কর্মকর্তারা ২০২২ সালে চাকরির ১০ বছর পূর্ণ করে পদোন্নতির অপেক্ষায় ছিলেন।

কম গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বাস্তবায়নে বেশি ঝোঁক

২৮ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮ সুপারিশের মধ্যে মাত্র ১৮টি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে হাতে নেওয়া ১৮টি সুপারিশের মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রস্তাবও রয়েছে। যেমন– মহাসড়কের ফিলিং স্টেশনে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়টি সংস্কার কমিশন সুপারিশের একেবারে শেষের দিকে রাখলেও এখন এটিই এক নম্বর অগ্রাধিকারে চলে এসেছে। এ ছাড়া এমন কিছু সুপারিশ সামনে আনা হয়েছে, যা জনপ্রশাসনেরই কাজ নয়। এসব কারণে সুপারিশ বাস্তবায়নে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা।

অথচ ২৬ ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা, সরকারি দপ্তরে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ, প্রশাসনিক কাঠামো এবং জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো দ্রুত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

তিন দলের সঙ্গে আজ বিশেষ বৈঠকে বসছেন ড. ইউনূস

৩১ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ রোববার বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকেল ৩টায় তিনি বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর সাড়ে ৪টায় জামায়াতের সঙ্গে এবং সন্ধ্যা ৬টায় এনসিপির সঙ্গে বৈঠক হবে। শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সর্বশেষ গত ২২ জুলাই বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। গত ২১ জুলাই মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে বিক্ষোভের পর দলগুলোকে বৈঠকে ডেকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেন সরকারপ্রধান। পরের দুই দিনে আরও ২৫টি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে তিনি একই বার্তা দেন।

১০০ সংরক্ষিত সংসদীয় আসনে সরাসরি ভোটে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর প্রস্তাব

৩১ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও সংসদে প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ১০০ সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নারী সাংসদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম। পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দল থেকে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব দাবি তুলে ধরেন তারা।

জাপা নিষিদ্ধের দাবির পেছনে আছে ভোটের হিসাবও

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

শুধু আওয়ামী লীগের দোসর হওয়াই একমাত্র কারণ নয়। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবির পেছনে আছে ভোটের হিসাবও। জামায়াতে ইসলামী বিষয়টি স্বীকার করতে রাজি না হলেও জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির নেতারা পেছনের এই সমীকরণকে আমলে নিয়েছেন। 

আবার সংস্কার ও নির্বাচনকেন্দ্রিক যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে, তার পেছনেও রয়েছে সংসদে দলগুলোর অবস্থান এবং ক্ষমতার অংশীদারিত্ব নিয়ে দরকষাকষি। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে তাদের ওপর চাপ তৈরির বড় কারণ এই দরকষাকষিতে লাভবান হওয়া। একাধিক দলের নির্বাচনে না যাওয়ার হুমকিকে তারা এর অংশ হিসেবে দেখছে। এর সঙ্গে নতুন অস্ত্র হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে জাপা নিষিদ্ধের দাবিকে। 

একাধিক দলের নেতারা সমকালকে বলছেন, জামায়াত মনে করছে, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভোট দলটির পক্ষে গেলে জামায়াতের বিরোধী দল হওয়ার সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে। এমন শঙ্কা থেকেই বিভক্ত এবং ভোটের মাঠে দৃশ্যত দুর্বল জাতীয় পার্টিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ধরে নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়েছে। জামায়াত, এনসিপি এই দাবি করেছে। গণঅধিকার পরিষদ জাপা নিষিদ্ধের দাবিতে কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচি পালনকালে দলের সভাপতি নুরুল হক নুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিপেটায় গুরুতর আহত হয়েছেন।

অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ-শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়াও রায়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই রায় দেন।

রায়ে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন বাতিল করে পূর্বের (১৯৭২ সালের) অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়ে এ সংক্রান্ত রুল যথাযথ ঘোষণা করেন আদালত।

মানবতাবিরোধী অপরাধ: অভিযোগপত্র দাখিল হলেই নির্বাচনের অযোগ্য হবেন, সরকারি চাকরিও থাকবে না

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হলে তিনি জনপ্রতিনিধি অথবা সরকারি কোনো পদ বা দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। আজ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের স্বাধীনতায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আপত্তি

৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

সচিব ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা নিয়োগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে স্বাধীনতা দেওয়ার প্রস্তাবটির সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একমত হয়নি। নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্কার প্রস্তাব আলো মুখ দেখবে না।

তারা মনে করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের স্বায়ত্তশাসন জোরদার ও কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে দুর্বল করছে এমন সিদ্ধান্ত।

ডাকসু নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ভরাডুবিতে এনসিপিতে নানা প্রতিক্রিয়া

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

ডাকসু নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ–সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলকে সমর্থন দিয়েছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে ভোটে এই প্যানেলের ভরাডুবি হয়েছে। এ নিয়ে এনসিপির ভেতরে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডাকসুতে বিপর্যয়ের জন্য দলটির নেতারা একে অন্যকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।

এনসিপি তারুণ্যনির্ভর দল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের অবস্থান বা গ্রহণযোগ্যতা এখন কেমন, ডাকসু নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে তা অনেকেই বুঝতে চাইবেন—এমন ধারণা দলটির নেতাদের মধ্যেও ছিল। সে কারণে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে দলটির নেতাদের নানামুখী তৎপরতা ছিল। কিন্তু ভোটে এর প্রতিফলন কতটা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জমির বিরোধে খুন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু, তবু তাঁরা জুলাই শহীদ

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর ওয়ারীতে গত বছরের ১৪ আগস্ট কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিএনপি নেতা মো. আল-আমিন ভূঁইয়া ও তাঁর ছোট ভাই নুরুল আমিনকে। স্বজনেরা জানিয়েছেন, এই খুনের নেপথ্যে ছিল জমিসংক্রান্ত বিরোধ। যদিও আল-আমিনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হিসেবে প্রজ্ঞাপনভুক্ত করা হয়েছে।

ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ ও নিহতদের চারজন স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রথম আলো। পাশাপাশি বিশ্লেষণ করা হয়েছে মামলার নথি। স্বজনেরা স্বীকার করেছেন, আল-আমিন ভূঁইয়া ও নুরুল আমিন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হননি।

আল-আমিনের বোন মারহুমা প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার ঘটনায় তাঁরা ওয়ারী থানায় মামলা করেছেন। জড়িত আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তাহলে শহীদদের তালিকায় নাম কীভাবে উঠল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নিয়ে আর কথা বলবেন না।

দুই মাস অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, সরকারি তালিকায় থাকা ৮৩৪ জনের মধ্যে অন্তত ৫২ জন রয়েছেন, যাঁরা আসলে শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য নন।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শহীদদের তালিকায় নাম ওঠাতে ভূমিকা রেখেছেন নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা। প্রথম আলো ৪১টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে। অনেকেই স্বীকার করেছেন, তাঁদের স্বজনের মৃত্যু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে হয়নি। কেউ কেউ বলেছেন, তাঁরা সরকারি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় নাম দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের প্ররোচনাও দেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।

জামায়াত আমিরের বাসায় স্কয়ারের এমডিসহ ব্যবসায়ীরা

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বাংলা ট্রিবিউন

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে বাংলাদেশের শিল্প মালিকদের এক প্রতিনিধিদল। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ডা. শফিকুর রহমানের বসুন্ধরার বাসায় এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় জামায়াত।

প্রতিনিধিদলে ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজিএমইএ’র পরিচালক সাইফুল্লাহ মানছুর, বিজিএমইএ’র ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেলের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ভুঁইয়া, জনসংযোগ ও প্রচার কমিটি চেয়ারম্যান মাসুদ কবির।

এ সময় জামায়াতের শিল্প-বাণিজ্য শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. আনোয়ারুল আজিম ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. খালিদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাতে বাংলাদেশের শিল্প বাণিজ্যের সম্ভাবনা, নতুন বিনিয়োগ ও তার পরিবেশ, সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ বিশেষ করে শ্রম আইন ২০২৫ নিয়ে আলোচনা হয়।

এই সরকারও পুরোনো পথে, প্রশাসনে পদ ছাড়াই পদোন্নতি

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

জনপ্রশাসনে এখন নিয়মিত উপসচিব পদ রয়েছে এক হাজারের মতো। কিন্তু এই পদে কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৬ জন। পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা আগে থেকেই বেশি ছিল। তারপরও গত মাসে ২৬৮ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

পদোন্নতি দেওয়ার পর কর্মকর্তাদের দ্রুত পদায়ন করা যায় না। কারণ, পদায়নের মতো জায়গা কম, খালিও থাকে না। তখন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়ে আগের পদেই রেখে দেওয়া হয়, তাঁরা আগের কাজই করেন। শুধু বাড়ে বেতন ও ভাতা। পাশাপাশি উপসচিব পদে তিন বছর চাকরির পর গাড়ি কেনার জন্য বিনা সুদের ঋণসুবিধা পাওয়া যায়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপনে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ৫২ জন কর্মকর্তাকে আগের পদেই পদায়ন (ইনসিটু) করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ২৮ আগস্ট উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া এ রকম ২৬৮ জন কর্মকর্তার বেশির ভাগের দায়িত্বে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

পদের চেয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা আগে থেকেই বেশি ছিল। তারপরও গত মাসে ২৬৮ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এভাবে পদ ছাড়াই পদোন্নতি দেওয়া হতো। অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগ একতরফা ও পাতানো নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার জন্য আমলাদের খুশি রাখার চেষ্টা করত। এ জন্য গাড়ি ও বাড়ি কিনতে বিনা সুদে ঋণসুবিধা দেওয়া শুরু করে। পদোন্নতি দেওয়াও বাড়ানো হয়। পদোন্নতিতে এই সরকারও একই পথে হাঁটছে। একদিকে আমলারা পদোন্নতির জন্য চাপ দিচ্ছেন, সরকারও নমনীয় হয়ে তা মেনে নিচ্ছে। জনপ্রশাসনে সংস্কারের জন্য গঠিত সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশও সরকার বাস্তবায়ন করেনি। তবে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন।

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ কয়েকটি দাবিতে রাজধানীতে সাত দলের বিক্ষোভ-সমাবেশ

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫,প্রথম আলো

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ কয়েকটি দাবিতে রাজধানীতে সাত দলের বিক্ষোভ-জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সাতটি দল রাজধানীতে একযোগে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে। এর পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও দাবি জানিয়েছে তারা।

জামায়াতে ইসলামী বলেছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার বিষয়ে সফলতা আসছে না বলেই তারা মাঠের কর্মসূচিতে গেছে। ইসলামী আন্দোলন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রশ্নে ‘গণভোট’ দাবি করে বলেছে, জনগণ না চাইলে তারা এ দাবি থেকে সরে যাবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিজয়নগর এলাকায় সাত দলের এই বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়। বিক্ষোভকারী অপর দলগুলো হলো, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও খেলাফত আন্দোলন। সাত দলের এই কর্মসূচির সময় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে প্রেসক্লাব সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ওই এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।

হেফাজতকে কাছে পেতে তৎপর বিএনপি

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামকে কাছে পেতে তৎপরতা শুরু হয়েছে রাজনীতিতে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের নির্বাচনী সমঝোতা করতে যাচ্ছে। এখানে কয়েকটি দল আছে হেফাজতে ইসলাম-সংশ্লিষ্ট। তারা অভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

এমন পটভূমিতে নির্বাচন সামনে রেখে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্ব বিএনপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বিএনপি যোগাযোগও বাড়িয়েছে। আবার হেফাজতের আমিরও এর মধ্যে কয়েকটি বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।

সব মিলিয়ে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ‘ভোটব্যাংক’ লক্ষ্য করে রাজনৈতিক দলগুলোর হেফাজতকেন্দ্রিক আগ্রহ বেড়েছে।

শ্রেণিকক্ষে ঢুকে ‘অকৃতকার্য’ অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পেটালেন বাগছাস নেতা

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

রংপুরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধশত শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদের (ইমতি) বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ইমতিয়াজ আহম্মদ ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক। সম্প্রতি তিনি বিদ্যালয়ে গিয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল শুনে ‘অকৃতকার্য হওয়া’ শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর একে একে তিনটি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটান।

রংপুর মহানগরের হারাটি উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে ৪ সেপ্টেম্বর। শিক্ষার্থীদের পিটুনি দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর সংক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা স্কুলে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তবে ঘটনার ১৮ দিন পার হলেও কোনো আইনি ব্যবস্থা নেননি প্রধান শিক্ষক। অবশ্য প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত ইমতিয়াজ আহম্মেদের দাবি, তাঁরা ঘটনাটি মীমাংসা করেছেন।

চাপে পড়ে সরকার গাড়ি মালিকদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

রাজধানীর সড়কে কয়েক মিনিট দাঁড়ালেই চোখে পড়বে ফিটনেসহীন গাড়ি কোন মাত্রায় কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। ২০ থেকে ২৫ বছরের পুরোনো এসব লক্কড়ঝক্কড় বাস-মিনিবাস আর ট্রাকের ইঞ্জিন চাপ নিতে পারে না। তবু প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন নিয়মিত ঢাকার বাতাসকে দূষিত করেই যাচ্ছে। দীর্ঘদিন এভাবে চললেও নেওয়া হচ্ছে না কার্যকর পদক্ষেপ।

খোদ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকেই কালো ধোঁয়া নির্গত গাড়ির ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়– এমন অভিযোগ বহুদিনের। আবার অনেক গাড়ি বছরের পর বছর ফিটনেস সনদ না নিয়েও অবাধে চলাচল করছে ঢাকার রাজপথে।

২০ বছরের পুরোনো বাস ও ২৫ বছরের পুরোনো ট্রাক সড়ক থেকে সরানোর উদ্যোগ নিয়েও পিছু হটে সরকার। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের ধর্মঘটের হুমকিতে সবকিছু ভেস্তে যায়। গত ২০ জুলাই পুরোনো যানবাহন উচ্ছেদে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, অভিযান দিন-রাত চলবে। কিন্তু মালিক-শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘটের হুমকি দিলে সরকার সে অভিযান থেকে সরে আসে। পুরোনো যানবাহন উচ্ছেদে সরকারের প্রতিশ্রুতি কার্যকর তো হয়ইনি, উল্টো পরিবহন ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার পথে হাঁটছে সরকার।

আগে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন্ড বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান বা প্রাইম মুভার আমদানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ছিল পাঁচ বছর। এখন তা বাড়িয়ে ১২ বছর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এসব গাড়ি কেনার জন্য মালিকদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি আয়করের বোঝা কমানোর দিকেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা আসিফ ভুঁইয়ার কুমিল্লাপ্রীতি, নিলেন ২৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার জেলা কুমিল্লার সড়ক ও অন্যান্য গ্রামীণ অবকাঠামো মেরামত ও উন্নয়নে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

এ প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে আসিফ মাহমুদের নিজ উপজেলা মুরাদনগরে (৪৫৩ কোটি টাকা)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর উপজেলা দেবীদ্বারে (৩৩৮ কোটি টাকা)।

একই পথে হেঁটেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদও। তাঁর জেলা সাতক্ষীরায় এলজিইডি নিচ্ছে ২ হাজার ১৯৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প। এ প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজেই ভূমিকা রেখেছেন শেখ আবদুর রশীদ। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, কোনো জেলার জন্য এককভাবে এত বড় প্রকল্প এলজিইডি অতীতে নেয়নি।

কুমিল্লা ও সাতক্ষীরার জন্য বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হলেও এই দুই জেলার চেয়েও খারাপ রাস্তাঘাট রয়েছে বিভিন্ন জেলায়। যেমন এলজিইডির হিসাবে, কুড়িগ্রাম জেলার ৭০ শতাংশ উপজেলা সড়কই খারাপ (পুওর ও ব্যাড)। এ জেলার জন্য কোনো একক প্রকল্প নেই। এলজিইডির কুড়িগ্রাম জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুছ হোসেন বিশ্বাস গত ২৮ জুলাই প্রথম আলোকে বলেন, বিগত অর্থবছরে রাস্তাঘাট মেরামতে তাঁদের চাহিদা ছিল ৮০ কোটি টাকা। পেয়েছিলেন ৪০ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, মানুষ রাস্তাঘাট মেরামতের দাবি নিয়ে আসেন; কিন্তু তাঁরা টাকার অভাবে মেরামত করতে পারেন না।

কঠিন শর্তে ১০৬ কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে সরকার

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

প্রায় ১০৬ কোটি ডলার অনমনীয় বা কঠিন শর্তে বিদেশি ঋণ নিচ্ছে সরকার। সাতটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিদেশি সহায়তা অনুসন্ধান কমিটির সভায় গতকাল বুধবার এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত হয়। এ ধরনের ঋণ কীভাবে আরও কম সুদে নেওয়া যায় তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ অন্য কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার পক্ষ থেকে বৈদেশিক সহায়তার জন্য মোট ৩৬টি বিদেশি ঋণনির্ভর প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে চীনের ঋণ ও অনুদানের বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। তবে মাত্র সাতটি প্রকল্প কঠিন শর্তের ঋণের প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে।

কাড়াকাড়ি করে প্রশাসনে লোক নিয়োগ করিয়েছে বিএনপি-জামায়াত: তথ্য উপদেষ্টা

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী কাড়াকাড়ি করে প্রশাসনিক জায়গাগুলোতে তাদের লোক নিয়োগ করিয়েছে। নিয়োগের আগে তারা সংস্কারের জন্য সরকারকে যত সময় লাগে দেওয়ার পক্ষে ছিল। তবে নিয়োগ শেষ হওয়ার পরপরই ডিসেম্বর মাস থেকে তারা অসহযোগ শুরু করে দিয়েছে।

আজ রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্ব-নিয়ন্ত্রণ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা: রাজনৈতিক ও নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক সংলাপে তথ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। এতে সহযোগিতা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন। সংলাপে সম্মানিত অতিথি ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা।

শিল্পকর্ম লুট নিয়ে এক বছরে হয়নি কোনো অনুসন্ধান

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

গত বছর আগস্টে গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের মতো প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেক আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে লুট হয় দেশের প্রথিতযশা অনেক শিল্পীর চিত্রকর্ম। জুলাই অভ্যুত্থানের পর জনরোষে অনেক চিত্রকর্ম লুটের পাশাপাশি ধ্বংসও হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন, সাবেক মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, শাহরিয়ার আলম, আনিসুল হক এবং সালমান এফ রহমানের মতো আওয়ামী লীগের অনেক প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে ছিল চিত্রকর্মের বড় সংগ্রহ। এসব চিত্রকর্ম লুট হওয়ার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো সেগুলোর একটিও উদ্ধার হওয়ার কোনো তথ্য জানা যায়নি। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা জিডিও নথিভুক্ত হয়নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। এমনকি এসব দুর্লভ চিত্রকর্ম উদ্ধারে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। উল্লেখ্য, নেপালে চলতি মাসে হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নাশকতা এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস ও লুটপাটের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি করেছে সুশীলা কার্কির নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।

মনোহরদীতে সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদের জানাজায় মানুষের ঢল

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেষবারের মতো তাঁর জানাজায় অংশ নেন স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মনোহরদী উপজেলার শুকুর মাহমুদ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নূরুল মজিদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে উপজেলার ব্রাহ্মণহাটা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। এর আগে গতকাল সোমবার এশার নামাজের পর রাজধানীর গুলশান এলাকার আজাদ মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়।

সরকারি ক্রয়ের দর প্রস্তাবে ১০% মূল্যসীমা বাতিল

০১ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

সরকারি ক্রয়ে সুশাসন জোরদার এবং স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর) ২০২৫ কার্যকর করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত সশোধিত আইন ও নতুন বিধিমালায় আগের নিয়মকানুনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সরকারি ক্রয় আইনে সংশোধনীর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ কার্য ক্রয়ের দর প্রস্তাবে ১০ শতাংশ কম বা বেশি মূল্যসীমার বিধান বাতিল করা হয়েছে। সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা আনতে ও সিন্ডিকেট ভাঙতে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। এতদিন প্রাক্কলিত মূল্যের ১০ শতাংশ কম বা বেশি হলে দরপত্র প্রস্তাব বাতিল করা হতো। অভ্যন্তরীণ কার্য ক্রয়ে অতিমাত্রায় নিম্ন দর ঠেকাতে ২০১৬ সালে আইনে সংশোধন এনে এই বিধান চালু হয়। কিন্তু দেখা যায়, দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় দরদাতারা জেনে ফেলায় তাদের উল্লেখ করা মূল্য অনেক ক্ষেত্রে সমান হয়ে যেত। সে ক্ষেত্রে অতীত কাজের অভিজ্ঞতা, টার্নওভার, তারল্য ইত্যাদি বিবেচনা করা হতো। এতে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কিছু বড় প্রতিষ্ঠানই বেশি কাজ পেত। অবশেষে এটি বাতিল করল সরকার।

উপদেষ্টাদের ঘনঘন বিদেশ সফর ও প্রধান উপদেষ্টার বহর নিয়ে যত সমালোচনা

২ অক্টোবর ২০২৫, বিবিসি নিউজ বাংলা

সরকারি নথি ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খবর বলছে, দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রায় ১৪ মাসে ১৩ বার বিদেশ সফর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়াও সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টারাও নিয়মিত বিদেশ সফর করছেন। এর মধ্যেকোনো কোনো উপদেষ্টাকে ‘গুরুত্বহীন’ নানা অনুষ্ঠানেও তাদের অংশ নিতে দেখা গেছে বলেও সমালোচনা রয়েছে।

জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফর করে মাত্রই দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, যেই সফরে তার সঙ্গী হয়েছিলেন সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা, সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক দলের কয়েকজন প্রতিনিধিও।

সরকারি একটি নথিতে দেখা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই সফরে অন্তত একশোজন তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন।

যদিও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গেলো সপ্তাহে একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছেন, প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী ছিলেন ৬২ জন।

অনেক উপদেষ্টা আখের গুছিয়েছেন, সেফ এক্সিটের বিষয়ে ভাবছেন : নাহিদ ইসলাম

০৫ অক্টোবর, ২০২৫, কালেরকন্ঠ

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলার সমর্থনই তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককেই বিশ্বাস করা আমাদের ভুল হয়েছে। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। আমরা নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলকে যে বিশ্বাস করেছিলাম বা তাদের ওপর আস্থা রেখেছিলাম সেই জায়গায় আমরা আসলে প্রতারিত হয়েছি।

সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন অথবা গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। যখন সময় আসবে আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আঁতাত করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন।

পুরোনো প্রক্রিয়ায় নতুন দুটি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স, কারা পেল

০৯ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার যে প্রক্রিয়ায় বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের (টিভি) লাইসেন্স দিত, সেই একই প্রক্রিয়ায় নতুন দুটি টিভির অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। চ্যানেল দুটির নাম ‘নেক্সট টিভি’ ও ‘লাইভ টিভি’।

নেক্সট টিভির লাইসেন্স পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আরিফুর রহমান তুহিন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। এনসিপি গঠিত হওয়ার পর তিনি দলটির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হন।

লাইভ টিভির লাইসেন্স পেয়েছেন আরিফুর রহমান নামের আরেকজন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বছর ছয়েক আগে পড়াশোনা শেষ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ছিলেন। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ছিলেন। তবে এনসিপিতে যোগ দেননি।

টিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠা ও চালানোর মতো আর্থিক সক্ষমতা আরিফুর রহমান তুহিন ও আরিফুর রহমানের আছে কি না, সে প্রশ্ন রয়েছে। কী বিবেচনায় তাঁদের লাইসেন্স দেওয়া হলো, সে বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে প্রশ্ন পাঠানো হয়েছিল। তবে উত্তর পাওয়া যায়নি।

শেখ হাসিনা, সেনা কর্মকর্তাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

০৯ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

দেড় দশকের শাসনামলে গুমের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ছাড়াও ২৩ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তা আছেন। সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক ও র‍্যাবের সাবেক তিন প্রধানও আছেন। আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে বলা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে এ আদেশ দিয়েছেন। গুমের ঘটনায় এই প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করলেন ট্রাইব্যুনাল। 

বাংলাদেশি পাসপোর্ট মানেই ‘সন্দেহ’, বন্ধ হচ্ছে ভিসা

৭ অক্টোবর ২০২৫, ঢাকা পোস্ট

একসময় ধারণা ছিল, যত বেশি দেশ ভ্রমণ করা যাবে এবং পাসপোর্টে যত বেশি দেশের ভিসা থাকবে, পাসপোর্ট তত বেশি ‘ভারী’ হবে। উন্নত দেশগুলো সহজে ভিসা দেবে। তবে, দিন বদলে গেছে। বর্তমানে সবুজ মলাটের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে অধিকাংশ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশেরই যেন ‘অ্যালার্জি’। ভিসা দেওয়া তো দূরের কথা, যেসব দেশে ভিসা ‘অন-অ্যারাইভাল’ নিয়ম চালু আছে, সেসব দেশও বাংলাদেশিদের প্রবেশ করতে না দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।

গত কয়েক বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের মতো জনপ্রিয় গন্তব্যেও বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হচ্ছে। এসব দেশের ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় দীর্ঘ হচ্ছে, প্রত্যাখ্যানের হার বাড়ছে এবং পুরোনো সুবিধাগুলো সীমিত করা হচ্ছে। দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে ভিসা পেলেও অনেক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীকে ইমিগ্রেশনে নানা কারণে ‘অফলোড’ করে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

৫ ব্যাংক একীভূত হচ্ছে, দায়িত্ব নিল সরকার

১০ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

সংকটে পড়া পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে নিয়ে এখন নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক করা হবে।

নতুন ব্যাংকের জন্য নাম প্রস্তাব করা হয়েছে দুটি—‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’। ব্যাংকটি পরিচালিত হবে বাণিজ্যিকভাবে ও পেশাদারির ভিত্তিতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ অনুমোদনের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, ব্যাংকগুলো একীভূত করার

ফলে কেউ চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারী আমানত হারাবেন না।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ ব্যাংকের সব দায় ও সম্পত্তি গ্রহণ করে নতুন ব্যাংকটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার দেবে। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে নগদে, আর বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা সুকুক বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।

পরোয়ানা থাকা ১৫ কর্মকর্তা ‘সেনা হেফাজতে’, একজন লাপাত্তা

১১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সামরিক বাহিনীর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন, তার মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা সদর। তবে একজন এখনো লাপাত্তা। সেনাবাহিনীর দৃষ্টিতে, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ কর্মস্থলে ‘অবৈধভাবে’ অনুপস্থিত।

গুমের মামলায় ট্রাইব্যুনাল থেকে পরোয়ানা জারির পর তা নিয়ে তুমুল আলোচনা এবং সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করায় জুলাই অভ্যুত্থানকারীদের ক্ষোভের মধ্যে আজ শনিবার ঢাকা সেনানিবাসের মেস আলফাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান এ তথ‍্য জানান।

সামরিক বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে মোট ২৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হলেও চাকরিরত ১৫ জনকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। লাপাত্তা একজনের বাইরে আটজন সামরিক বাহিনী থেকে এরই মধ্যে অবসর নিয়েছেন। একজন রয়েছেন অবসরের প্রক্রিয়ায়।

পঞ্চগড়ে এনসিপির কর্মসূচিতে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট, নেসকোর কর্মকর্তাদের কলিজা ছিঁড়ে ফেলার হুমকি সারজিসের

১২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

বক্তব্য দেওয়ার সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছেন, ‘এর আগেও পঞ্চগড়ে এনসিপির প্রোগ্রাম চলাকালে বিদ্যুৎ গেছে। নেসকোর যে মালিক তাকে এবং তার বাপকে জবাব দিতে হবে, প্রোগ্রাম চলাকালে, এটা হয় কেন? এক দিন হইতো, দুই দিন হইতো কিচ্ছু বলতাম না, তিন দিনের তিন দিনই এটা হইছে। যারা এটা করছে, তারা হচ্ছে রাজনৈতিক ***। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াদের আমরা দেখে নিব তাদের কলিজা কত বড় হইছে। কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব।’

চাঁদাবাজিসহ সব অপকর্মের বিরুদ্ধে সারজিস আলমের নেতৃত্বে পঞ্চগড় শহর থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত গতকাল শনিবার লংমার্চ হয়। সেই লংমার্চের সমাপ্তি বক্তব্য দেন রাত সাড়ে নয়টার দিকে। পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে এই আয়োজনে বক্তব্য দেওয়ার সময় সারজিস আলম এসব কথা বলেন।

কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে রেখে ট্রাইব্যুনালে আনা-নেওয়ার চিন্তা

১২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা তিন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর যে ১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনী নিজেদের হেফাজতে রাখতে চায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।

এই বিষয়ে সেনা কর্তৃপক্ষের একটা ভাবনা হচ্ছে, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামি হওয়া এসব কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে থাকবে। মামলার নির্দিষ্ট তারিখে সেনাবাহিনী এঁদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করবে, আদালতের কার্যক্রম শেষে আবার হেফাজতে নিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছেন। আইন অনুযায়ী কোনো আসামিকে গ্রেপ্তারের পর অনতিবিলম্বে আদালতে হাজির করতে হবে। এরপর আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন, তাঁদের কারাগারে পাঠাবেন নাকি জামিন দেবেন। তবে সরকার চাইলে কোনো স্থাপনাকে কারাগার ঘোষণা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে আসামিরা কোথায় থাকবেন, সেটা আদালত নির্ধারণ করবেন।

ক্যাডারদের দ্বন্দ্বে আটকে আছে প্রশাসনিক সংস্কার

১৩ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮ সুপারিশের মধ্যে আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ১৮টি। এর মধ্যে মাত্র তিনটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর বাইরে ছয়টি সুপারিশ যুক্ত করা হয়েছে জুলাই সনদে।

গত ২২ মে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক হয়। বৈঠকে তিন পক্ষ মিলে একটি যৌথ সুপারিশ দেওয়ার পরামর্শ দেয় ঐকমত্য কমিশন।

পরামর্শ অনুযায়ী, গত ৩০ জুন তিন পক্ষ একসঙ্গে আলোচনায় বসলেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। ফলে জনস্বার্থমূলক অনেক সুপারিশও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

চাকরি-এনসিপির পদ হারিয়ে মুনতাসির কেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন

১৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি করে বিক্ষোভ করেছিলেন মুনতাসির মাহমুদ; তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠকের পদটি হারান তিনি। রেড ক্রিসেন্টের চাকরিটিও হারান। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন মুনতাসির। এদিকে মাহবুব দাবি করেছেন যে তাঁকে জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন মুনতাসির।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে গতকাল রোববার দুপুরে মগবাজারে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করেন মুনতাসির। এরপর সন্ধ্যায়ই এনসিপি তাঁকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।

ষড়যন্ত্রে লিপ্ত উপদেষ্টাদের কণ্ঠ রেকর্ড আছে, সংশোধন না হলে নাম প্রকাশ করা হবে: জামায়াত নেতা তাহের

১৪ অক্টোবর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইন বাংলা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা একটি বিশেষ দলের পক্ষে প্রশাসনকে ব্যবহার করে নীল নকশার নির্বাচন আয়োজনের ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারী উপদেষ্টাদের নাম ও তাদের কথোপকথনের রেকর্ড তাদের কাছে রয়েছে। সময়মতো সংশোধন না হলে জনগণের সামনে সব প্রকাশ করা হবে।

পিআর পদ্ধতিকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করে গণভোট দেওয়া, জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেখানে সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে তিনি এমনটা বলেন।

ডা. মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘সরকারের চারজন-পাঁচজন উপদেষ্টা একটি বিশেষ দলের পক্ষে সকল নিয়োগকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রশাসনকে একটি দলীয় সরকারে পরিণত করার চেষ্টা করছেন।’

জুলাই সনদ হবে নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল

১৫ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী শুক্রবার এই সনদ সই করার মধ্য দিয়ে তা ‘নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল’ হিসেবে পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করবে দলগুলো।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে দলগুলোর কাছে সনদের অনুলিপি পাঠানো হয়। তবে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কমিশনের সুপারিশ দেওয়া হয়নি। সনদ সই হওয়ার পর বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে নিজেদের সুপারিশ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দেবে কমিশন। এটি জুলাই সনদের অংশ হবে না।

এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর দলগুলোকে সনদের যে খসড়া দেওয়া হয়েছিল, সেটিই চূড়ান্ত করে গতকাল দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সনদে মূল বিষয়বস্তুর কোনো পরিবর্তন আসেনি। শুধু কয়েকটি

ক্ষেত্রে শব্দগত সংশোধন আছে। জুলাই জাতীয় সনদের তিনটি ভাগ আছে। প্রথম ভাগে আছে সনদের পটভূমি। দ্বিতীয় ভাগে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং তৃতীয় ভাগে আছে সনদ বাস্তবায়নের ৭ দফা অঙ্গীকারনামা।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ছয়টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।

তবে সব দল শেষ পর্যন্ত সনদে সই করবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করার বিষয়ে একমত হলেও ভোটের দিন ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতা আছে। কোনো কোনো দল সনদে সই করার আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে নিশ্চয়তা চায়।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। আগামী শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ সই হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ও সদস্যরা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দুজন করে প্রতিনিধি এই সনদে সই করবেন। ৩০টি দল ইতিমধ্যে দুজন করে স্বাক্ষরকারীর নাম কমিশনের কাছে পাঠিয়েছে।

সব দলের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ পাঠানো হয়েছে। আগামী শুক্রবার ঐতিহাসিক মুহূর্তে সবার উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। আমরা আশা করছি, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপে উপনীত হতে পারব।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ

তবে সব দল শেষ পর্যন্ত সনদে সই করবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করার বিষয়ে একমত হলেও ভোটের দিন ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতা আছে। কোনো কোনো দল সনদে সই করার আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে নিশ্চয়তা চায়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব দলের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ পাঠানো হয়েছে। আগামী শুক্রবার ঐতিহাসিক মুহূর্তে সবার উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। আমরা আশা করছি, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপে উপনীত হতে পারব।’

সনদে যা থাকছে

সনদে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কিছুটা কমানো, কিছু প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাড়ানো, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি ও বিরোধী দলের সমন্বয়ে গঠিত বাছাই কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের বিধান করা, কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে দেওয়া, আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করা, এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন এবং একই ব্যক্তি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হতে পারবেন না—এমন বিধান করা, আস্থা ভোট ও অর্থবিল ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে আইনসভায় সংসদ সদস্যদের ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণসহ বেশ কিছু মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাব আছে। অবশ্য এর মধ্যে বেশ কিছু প্রস্তাবে বিএনপিসহ কোনো কোনো দলের ভিন্নমত আছে। কোন প্রস্তাবে কার ভিন্নমত আছে, তা সনদে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথম পর্বে ঐকমত্য হওয়া বিষয়ের মধ্যে আছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন, জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক দলকে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আনা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা, আইনজীবীদের আচরণবিধি, গণহত্যা ও ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন, তথ্য অধিকার আইনের সংশোধন, দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন, নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে সংশোধন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতি, আয়কর আইনের সংশোধন ইত্যাদি।

দ্বিতীয় পর্বে ১১টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব ঐকমত্য হয়। সেগুলো হলো: ১. সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ২. নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ৩. রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান, ৪. বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ— (ক) সুপ্রিম কোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, (খ) উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ, ৫. জরুরি অবস্থা ঘোষণা, ৬. প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, ৭. সংবিধান সংশোধন, ৮. প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল (এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন), ৯. নির্বাচন কমিশন গঠন, ১০. পুলিশ কমিশন গঠন, ১১. নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ-সম্পর্কিত প্রস্তাব।

যেসব সিদ্ধান্তে ভিন্নমত

সনদে যেসব বিষয়ে কোনো কোনো দলের নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমত আছে সেগুলোর মধ্যে আছে:

১. রাষ্ট্রের মূলনীতি: এই প্রস্তাবে ভিন্নমত আছে বাংলাদেশ জাসদ, সিপিবি, বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী), গণফোরামের।

২. রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব: কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমত আছে বিএনপি, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ১২-দলীয় জোট, এলডিপির।

৩. প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান: ভিন্নমত আছে বিএনপি, এনডিএম, ১২-দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের।

৪. তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা: গঠনপ্রক্রিয়ার একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত একমত হলেও পরের ধাপ নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দলের ভিন্নমত আছে। অন্যদিকে একটি অংশে ভিন্নমত আছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের। কোন ধরনের দল (নিবন্ধিত/অনিবন্ধিত) উপদেষ্টার নাম প্রস্তাব করবে, তা নিয়ে ভিন্নমত।

৫. উচ্চকক্ষ: পিআর ও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে ভিন্নতম বিএনপি ও এনডিএমের।

৬. উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকা নিয়ে ভিন্নমত সিপিবি, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, আমজনতার দলের।

৭. নারী আসনের বিধান: সিপিবি, বাসদ, আমজনতার দলের ভিন্নমত।

৮. সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ (ন্যায়পাল, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক): বিএনপিসহ ৭টি দল ও জোটের ভিন্নমত।

৯. দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগের বিধান সংবিধানে যুক্ত করা: বিএনপিসহ সাতটি দল ও জোটের ভিন্নমত।

১০. দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের একটি ধারা (নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত) সংশোধন: জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভিন্নমত।

জুলাই জাতীয় সনদে ২৪ দলের সই

১৮ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

নানা অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সই হয়েছে নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে তৈরি এই সনদে শুক্রবার সই করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট। পাশাপাশি সনদে সই করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা।

তবে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা তরুণদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অনুষ্ঠানে যায়নি, সনদে সইও করেনি। এ ছাড়া চারটি বাম দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ জুলাই সনদে সই করেনি। আর গণফোরাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও সই করেনি সনদে। অবশ্য দলগুলো চাইলে পরেও সনদে সই করতে পারবে।

এদিকে বেলা একটার দিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে একদল লোক অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়। এরপর সংসদ ভবন এলাকার আশপাশে পুলিশ ও ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

সরকার–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ অনুষ্ঠান করা যাবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেন। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজও অনুষ্ঠান করার পক্ষে দৃঢ় থাকেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বৈশ্বিক অঙ্গনে সবচেয়ে অগৌরবের পরিচয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশী পাসপোর্ট

১৭ অক্টোবর ২০২৫, বণিক বার্তা

স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। জিডিপির আকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশীদের অবস্থান এগিয়ে। বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি-রফতানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্য হচ্ছে। অর্থনীতিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে এগিয়ে থাকলেও আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশী পাসপোর্টের অগৌরব কাটছে না। বরং যত দিন যাচ্ছে, বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশী পাসপোর্ট আরো বেশি অপাঙ্‌ক্তেয় হয়ে উঠছে।

প্রতি বছর বিশ্বের ১৯৯টি দেশের পাসপোর্ট ও ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্য নিয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। বছরের বিভিন্ন সময় এ সূচক হালনাগাদ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত ২০২৫ সালের সর্বশেষ (৭ অক্টোবর) পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশী পাসপোর্টের অবনমন ঘটেছে। বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম স্থানে নেমে গেছে। ২০২৪ সালের শুরুতে এ সূচকে বাংলাদেশী পাসপোর্টের অবস্থান ছিল ৯৭তম। বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ১০০তম অবস্থানে রয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা দেশ উত্তর কোরিয়া। এ দুটি দেশের নাগরিকরা এখন বিশ্বের ২২৭টি ভ্রমণ গন্তব্যের মধ্যে মাত্র ৩৮টিতে ভিসামুক্ত সুবিধা পাচ্ছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভিসামুক্ত গন্তব্যে প্রবেশের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে প্রবেশের অনুমতি না দেয়ার ঘটনাও ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে চালু হয়েছে প্রবেশের আগে অনুমতি নেয়ার নিয়ম।

শাপলা চত্বরে শহীদদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ হবে: আসিফ মাহমুদ

১৮ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের শহীদদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে; যাতে দেশের মানুষ তাদের আজীবন স্মরণ করেন।

শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চেক হস্তান্তর

২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডে শহীদ ৫৮ জন এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ১৯ জনের পরিবারের প্রত্যেককে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়েছে।

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

২২ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-অপহরণ, নির্যাতন, খুন ও জুলাইয়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার সকালে এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

একই সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাত দিনের মধ্যে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গুমের দুই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জানিয়ে এল জামায়াত

২২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে কাদের কাদের নিয়ে এই আপত্তি, তাঁদের নাম প্রকাশ করেনি দলটি।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা উপদেষ্টা, তাদের ব্যাপারে বলেছি, সকলের ব্যাপারে নয়। আমরা বলেছি, কিছু কিছু লোক আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) বিভ্রান্ত করে। আপনার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু আপনার কিছু লোক আপনার পাশে আপনাকে বিভ্রান্ত করে এবং ওরা কোনো একটা দলের পক্ষে কাজ করে আমরা মনে করি। তাদেরকে, তাদের ব্যাপারে আপনাকে হুঁশিয়ার থাকা দরকার।’

দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল

২৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আরও সময় নিতে চেয়েছেন। এই দুই উপদেষ্টা হলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, মাহফুজ আলম আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এখন পর্যন্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তিনি সরকারে থাকতে চান। আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করতে পারেন। অবশ্য কোনো বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে চেষ্টা করেও দুই উপদেষ্টার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আসিফ মাহমুদ গত ১৪ আগস্ট সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি পদত্যাগ করবেন। অন্যদিকে মাহফুজ আলম গত ২৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দুই মাস ধরে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি যে আমি কখন নেমে যাই। মানে আমি কখন নামব, আমি জানি না।’

প্রশাসনে ‘ভাগ-বাঁটোয়ারা হচ্ছে’, কিছু উপদেষ্টার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত চায় এনসিপি

২২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

জনপ্রশাসনে বদলি–পদায়নে ‘ভাগ–বাঁটোয়ারায়’ উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকে সহায়তা করা হচ্ছে অভিযোগ করে সেই উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চেয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানিয়েছে তারা।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক শেষে বেরিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনপ্রশাসনে যেভাবে বদলি-পদায়নগুলো হচ্ছে, সেটা কিসের ভিত্তিতে হচ্ছে, নিরপেক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়ন হচ্ছে কি না…। কারণ, আমরা বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাচ্ছি, শুনতে পাচ্ছি যে প্রশাসনে বিভিন্ন ভাগ-বাঁটোয়ারা হচ্ছে। বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে যারা পরিচিত, তারা নিজেদের মধ্যে প্রশাসন, এসপি-ডিসি ভাগ-বাঁটোয়ারা করছে। নির্বাচনের জন্য তারা সেই তালিকা সরকারকে সেগুলো দিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও সেই দলগুলোর সঙ্গে সে ব্যাপারে সহায়তা করছে।’

পুলিশ কমিশন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হওয়া নিয়ে শঙ্কা

২৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয় মূলত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন ঘিরে। এই তিন ক্ষেত্রে অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রভাব পড়ে পুলিশের অন্যান্য কার্যক্রমেও। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে কার্যকরী স্বায়ত্তশাসন (ফাংশনাল অটোনমি) দাবি করে আসছিল পুলিশ। তবে এই দাবি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নির্বিচার গুলি ও বলপ্রয়োগের পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে স্বাধীন কর্তৃপক্ষের অধীনে পুলিশ বাহিনী পরিচালনার দাবি ওঠে। এ জন্য পুলিশের চাওয়া ছিল, একটি স্বাধীন কমিশন। এই কমিশনই যেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন পদগুলোর নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ নিরসনেও কাজ করবে এ কমিশন।

পুলিশ কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য এবং জুলাই সনদে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর অধ্যাদেশের মাধ্যমে স্বশাসিত কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের একটি কমিটি কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রম নিয়ে একটি খসড়া তৈরি করেছে। খসড়ায় রয়েছে, এই কমিশন পুলিশি কার্যক্রমে শৃঙ্খলা, দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। তবে পুলিশ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ হবে না।

প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের খসড়ায় আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে ৯ সদস্যের স্বশাসিত পুলিশ কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি এই কমিশনের অধীনে হবে না। আগের মতোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। কমিশন শুধু এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করবে। এ ছাড়া কমিশনকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিবর্তে সুপারিশের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। আবার সুপারিশ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা না থাকায় এর কার্যকারিতা নিয়েও সন্দিহান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই কমিশনের সদস্য বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীর নেতৃত্বে হওয়া বাছাই কমিটি কতটা নিরপেক্ষভাবে কমিশনের সদস্য বাছাই করতে পারবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চাওয়ার বাইরে গিয়ে বাছাই কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত কতটা গুরুত্ব পাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

আইএলওর তিন কনভেনশনে স্বাক্ষর করল অন্তর্বর্তী সরকার

২৩ অক্টোবর ২০২৫, বণিক বার্তা

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশনে সই করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এ তিনটি কনভেনশনের অনুসমর্থনপত্রে সই করেন।

কনভেনশনগুলো হলো—পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কনভেনশন, ১৯৮১, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারণামূলক কাঠামো কনভেনশন, ২০০৬ এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধবিষয়ক কনভেনশন, ২০১৯। তিনটির মধ্যে কনভেনশন ১৮৭ ও কনভেনশন ১৫৫ আইএলওর মৌলিক কনভেনশন। ২০২২ সালে এ দুটিকে মৌলিক কনভেনশন হিসেবে গ্রহণ করে আইএলও।

জোটের প্রার্থী হলেও ভোটে লড়তে হবে নিজ দলের প্রতীকে

২৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

নির্বাচনী জোট হলেও প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে হবে। এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

অনুমোদিত খসড়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও পুলিশের মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিন বাহিনীকে নির্বাচনী দায়িত্ব দিতে আলাদা কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না।

শুধু সরকার নয়, একে অন্যকেও কি চাপে ফেলতে চায় বিএনপি–জামায়াত–এনসিপি

২৪ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিন দলই আলাদাভাবে সরকারের কিছু উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আবার কেউ কেউ অপসারণের দাবিও তুলেছে।

কিন্তু এই তিন দলের অভিযোগের ধরন এবং অবস্থান বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়—তারা শুধু সরকারের ওপর নয়, পরস্পরের বিরুদ্ধেও চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক প্রভাবের প্রশ্নে এক অঘোষিত প্রতিযোগিতা এখানে দৃশ্যমান।

গত মঙ্গলবার বিএনপি এবং বুধবার জামায়াত ও এনসিপি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেছে। তিন দলই কিছু বিষয়ে নিজেদের বিপরীতমুখী অবস্থানে অনড় আছে। বিশেষ করে জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি, গণভোটের সময় ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে তারা এখনো একমত হতে পারেনি।

দলগুলোর এই পরস্পরবিরোধী অবস্থানের কারণে নতুন কোনো সংকট তৈরি হয় কি না, সেই আশঙ্কা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা রয়েছে। জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পদ্ধতি এখনো ঠিক হয়নি। দলগুলোও এই ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে রাজি নয়।

তবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার এখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের অপেক্ষায় আছে। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশগুলো দেবে, সেগুলো নিয়ে আমরা বসব। উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

বিনা শর্তে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির

২৪ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

বিনা শর্তে ক্ষমা চেয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ১৯৪৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কেউ জামায়াতের দ্বারা কোনো কষ্ট পেয়ে থাকলে তিনি মাফ চান।

যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে স্থানীয় সময় গত বুধবার শফিকুর রহমান নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন (কোবা) আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সাংবাদিকেরা ছাড়াও জামায়াতের নেতা–কর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাতচিল্লশ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের আজ ২২ অক্টোবর রাত ৮টা ১১ মিনিটে পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যে যেখানে যত কষ্ট পেয়েছেন, আমরা বিনা শর্তে তাঁদের কাছে মাফ চাই। এটা গোটা জাতি হলেও চাই, ব্যক্তি হলেও চাই। কোনো অসুবিধা নাই।’

অর্থনীতি

কমলাপুর–বিমানবন্দর ও সাভার–ভাটারা পথে মেট্রোর ব্যয় দাঁড়াবে ২ লাখ কোটি টাকা, কী ভাবছে সরকার

২৮ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

ঢাকায় পরবর্তী দুটি মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ঠিকাদারের কাছ থেকে যে দর প্রস্তাব পাওয়া গেছে, তাতে মোট নির্মাণব্যয় দাঁড়াতে পারে দুই লাখ কোটি টাকা, যা সরকারের প্রাক্কলনের দ্বিগুণের বেশি। সরকার ব্যয় ধরেছিল প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা।

ঠিকাদার এখন যে দর প্রস্তাব করছে, তাতে নতুন দুই মেট্রোরেল নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি নির্মাণ ব্যয় ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ঢাকার উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ পড়েছে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

রাজধানীতে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) হিসাবে, ভারতে সাম্প্রতিক কালে নেওয়া মেট্রোরেল প্রকল্পে এই ব্যয় ৫০০ কোটি টাকার কম। ভিয়েতনাম, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশে প্রস্তাবিত দরের চেয়ে কম টাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে।

মেট্রোরেলের ব্যয় বেশি হওয়ার কারণ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার বিভিন্ন শর্ত এবং কম প্রতিযোগিতা। প্রকল্পের দরপত্রে ঠিকাদার হিসেবে জাপানি কোম্পানিগুলো অংশগ্রহণ করে। তারা চড়া দাম হাঁকায়, যেখানে দর-কষাকষির সুযোগ কম থাকে।

বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে চার কোটি মানুষ

০১ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে। প্রায় ২৪ শতাংশ বা প্রতি চারজনের মধ্যে একজন মানুষ বসবাস করছে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে। এ ধরনের দারিদ্র্যের হার শহরের তুলনায় গ্রামে প্রায় দ্বিগুণ। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মধ্যে বেশি। সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে। আর জেলাভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি বান্দরবানে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স (এমপিআই) ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক সেমিনারে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ওপর এটিই প্রথম কোনো প্রতিবেদন।

দেশে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের চিত্র

এমপিআই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৩ কোটি ৯৮ লাখ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে আছে। মোট জনসংখ্যার ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিকভাবে দরিদ্র। উল্লেখ্য, বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের এ হার সাধারণ দারিদ্র্যের হারের চেয়ে বেশ খানিকটা বেশি। বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয় ও ব্যয় জরিপে (২০২২) দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।   

জিইডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রাম এলাকায় বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার শহরাঞ্চলের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। গ্রামাঞ্চলে এ হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। শিশুদের মধ্যে এ হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বিদেশের সঙ্গে লেনদেনে চার বছর পর উদ্বৃত্ত

০৩ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

সংকট কাটিয়ে বিদেশের সঙ্গে লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত অবস্থায় এসেছে বাংলাদেশ। চার বছর পর সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে বড় উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত অর্থবছর শেষে যার পরিমাণ ৩২৯ কোটি ডলার। বাণিজ্য ঘাটতিও কমে এসেছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে চলতি হিসাবে আগের অর্থবছরের ৬৫১ কোটি ডলারের ঘাটতি থেকে গত অর্থবছরে ৯৮ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। আর্থিক হিসাবেও বড় উদ্বৃত্ত হয়েছে। বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য প্রকাশ করেনি। চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি কমে দুই হাজার ৪৫ কোটি ডলারে নেমেছে। আগের অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল দুই হাজার ২৪৩ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল দুই হাজার ৭৩৮ কোটি ডলার। আমদানির তুলনায় রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে বাণিজ ঘাটতি কমেছে।

খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকা শীর্ষ ৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ

০৪ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকা বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে আছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক খাদ্যসংকট নিয়ে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৫’–এ এই তথ্য উঠে এসেছে। জাতিসংঘের পাঁচটি সংস্থা মিলে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সংস্থাগুলো হলো এফএও, ইফাদ, ডব্লিউএফপি, ডব্লিউএইচও ও ইউনিসেফ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দেওয়া ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস’ শীর্ষক পৃথক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে তীব্র খাদ্যসংকটে থাকা ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ।

আলুর দরপতন, কেজিতে ১০ টাকা লোকসান কৃষকের

০৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

যশোর সদর উপজেলার নোঙরপুরের মাঠে এ বছর এক কেজি আলু উৎপাদন করতে কৃষকের ৮ থেকে ৯ টাকা খরচ হয়েছে। সেখান থেকে বাছাই করে হিমাগারে রাখার উপযোগী প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ে ১৫ টাকার মতো। এর সঙ্গে হিমাগারভাড়া দিতে হয়েছে কেজিতে ৬ টাকা। বস্তা কেনাসহ পরিবহন ও শ্রমিক খরচ মিলিয়ে রয়েছে আরও তিন টাকা। অর্থাৎ হিমাগারে এক কেজি আলু সংরক্ষণ করতে ২৪ টাকা খরচ হয়েছে। সংরক্ষণের পাঁচ মাস পরে এখন হিমাগারে পাইকারিতে সাড়ে ১৫ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে আলু বেচাকেনা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি কেজি আলুতে কৃষকদের ১০ টাকার মতো লোকসান গুনতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ব্যাপারীরাও লোকসানে রয়েছেন।

২ কোটি ডলারের জাপানি বিনিয়োগ চুক্তিতে লাইফলাইন পাচ্ছে বেক্সিমকো টেক্সটাইল

৭ আগস্ট ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা বেক্সিমকো টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানাগুলো একটি ত্রিপক্ষীয় লিজ চুক্তির আওতায় আবারও চালু হতে যাচ্ছে। এই চুক্তিতে জাপানি সংস্থা রিভাইভাল প্রজেক্ট লিমিটেড, জনতা ব্যাংক এবং বেক্সিমকো গ্রুপ রয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, এই উদ্যোগ বাংলাদেশ সরকারের নীতিগত সমর্থন পেয়েছে, যার লক্ষ্য দেশের অন্যতম বৃহত্তম টেক্সটাইল কার্যক্রমের পুনরুদ্ধার, একইসঙ্গে প্রায় ২৫,০০০ কর্মীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

রিভাইভাল প্রজেক্ট লিমিটেড শুরুতে বিদেশি ব্যাংক থেকে ২ কোটি ডলারের ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির ব্যবস্থা করবে, যা বৈশ্বিক পোশাক শিল্প জায়ান্ট ইনডিটেক্স এর ক্রয়াদেশ বাস্তবায়নে বেক্সিমকো টেক্সটাইলসকে মূলধন জোগাবে। কয়েক মাস ধরে বেতন বকেয়া থাকার প্রতিবাদে শ্রমিক বিক্ষোভের পর ফেব্রুয়ারি থেকে অচল হয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানটি এরপর অর্ডার পূরণের জন্য পোশাক উৎপাদন করবে।

সামষ্টিক অর্থনীতির নাজুকতা কাটলেও আস্থার ঘাটতি বিনিয়োগ-কর্মসংস্থানে

৮ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এ সরকারের এক বছর পূর্ণ হলো আজ।

এক বছর আগে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির পরিস্থিতি ছিল বেশ নাজুক। জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে মন্থরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, বিনিময় হারে অস্থিরতা, রিজার্ভের ক্রমাগত ক্ষয়, বৈদেশিক বাণিজ্যের ভারসাম্যে (বিওপি) রেকর্ড ঘাটতি, ব্যাংক খাতে নৈরাজ্যসহ নানা সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছিল দেশের অর্থনীতি। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী এক বছরে সামষ্টিক অর্থনীতির এসব সংকট অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। তবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে খরা, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে পিছিয়ে পড়া, মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেলেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না নামা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে।

শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এ সরকারের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক, ব্যবসায়ী ও ব্যাংক নির্বাহীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গণমানুষের প্রত্যাশা ছিল বিপুল, সে তুলনায় প্রাপ্তি সামান্যই। অনেক প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ গঠনের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, সেটি পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। ঘুস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, প্রশাসনিক অদক্ষতাসহ দেশের অনেক মৌলিক সংকট আগের মতোই বিরাজমান। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের যেসব প্রতিশ্রুতির কথা শোনা গিয়েছিল, তার অনেকগুলোই গত এক বছরে আলোর মুখ দেখেনি।

৫ মাস ধরে জিপিওর এফডির অনেক গ্রাহক আসলসহ মুনাফা তুলতে পারছেন না

০৮ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

ঢাকা জিপিওর (জেনারেল পোস্ট অফিস) ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মেয়াদি হিসাবে (এফডি) ২০২২ সালের জুলাইয়ে ২ লাখ টাকা আমানত রাখেন এক ব্যক্তি।

গত ২৪ জুলাই তিনি আসলসহ তিন বছরের মুনাফা তোলার জন্য তাঁর পাসবই ঢাকা জিপিওর সঞ্চয় ব্যাংকের উত্তোলন কাউন্টারে জমা দেন।

কিন্তু টাকা না দিয়ে তাঁকে ফেরত পাঠানো হয়। কারণ হিসেবে তাঁকে বলা হয়, সিস্টেমের সফটওয়্যারে তাঁর মুনাফা ১২ হাজার ৬০ টাকা কম দেখাচ্ছে।

শুধু এই ব্যক্তিই নন, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাব (এফডি) যাঁরা করেছেন, এমন অনেকে একই ধরনের সমস্যার কারণে আসলসহ মুনাফার টাকা পাচ্ছেন না। শুধু ঢাকা জিপিও নয়, এর হিসাবাধীন বিভিন্ন সাব–পোস্ট অফিস থেকেও একই সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে।

অর্থনীতির পতন ঠেকানো গেছে, অস্বস্তি বিনিয়োগে

১০ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গত এক বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের পতন ঠেকানো গেছে। ঝুঁকির মাত্রা কমানো গেছে। তবে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য এখনো পুরোপুরি চাপমুক্ত হয়নি, বেশ কিছু জায়গায় এখনো অস্বস্তি রয়ে গেছে। জাতীয় রাজনীতি ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যবসা-বাণিজ্যে ও বিনিয়োগে একধরনের অনিশ্চয়তা আছে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে রপ্তানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক।

ভালো খবর হলো, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে গতি থাকায় ডলার–সংকট কাটানো গেছে, রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করার ফলেও রিজার্ভকে সুসংহত করেছে। ব্যাংক ও আর্থিক সংস্কারের উদ্যোগ শুরু হয়েছে। গত সরকারের আমলে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ভেঙে পড়া ব্যাংকগুলো টেনে তুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৎপর আছে। তবে এখনো কয়েকটি ব্যাংক ভালো অবস্থায় নেই।

খারাপ খবর হলো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান পরিস্থিতি আগের মতোই আছে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমানো গেলেও এখনো তা ৮ শতাংশের বেশি আছে, যা গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষকে ভোগাচ্ছে। অন্যদিকে রাজস্ব আদায়ে অগ্রগতি নেই। সরকারের বিদেশি দেনা পরিশোধ গত অর্থবছরে ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা অর্থনীতিকে নতুন করে চাপে ফেলছে।

জাহিদ হোসেন গত এক বছরের অর্থনীতির মূল্যায়নকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। এক. সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিতিশীল অবস্থা থেকে স্থিতিশীলতা এসেছে। দুই. মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে স্বস্তির জায়গা আসেনি। তিন. ব্যাংক খাতে দুর্দশা কাটেনি। তবে যে রক্তক্ষরণ চলছিল, তা থামানো গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরে অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠনের পাশাপাশি টাস্কফোর্স, রাজস্ব, পরিসংখ্যান নিয়ে একাধিক কমিটি করা হয়। এসব কমিটি যেসব সুপারিশ করেছে, তা পুরোপুরি বাস্তবায়নের আগ্রহ সরকারের মধ্যে তেমন দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ ছাড়ে ২৮০ খেলাপি প্রতিষ্ঠান সুবিধা পেল

১৩ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

ব্যাংকের ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীদের ঋণ আবারও পুনর্গঠনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ ক্ষমতায় ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে প্রায় ২৮০টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে আরও এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন।

প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী, খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলো এসব ঋণের বিপরীতে চাহিদামতো টাকা জমা দিয়ে নবায়ন করতে পারছে না। এ জন্য বিশেষ সুবিধার আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হচ্ছে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ। যাদের ঋণের স্থিতি ৫০ কোটি টাকার বেশি, শুধু তাদের এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই সুবিধা দিতে চলতি বছরের শুরুতে একটি বাছাই কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বন্ধ ছিল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) শীর্ষ পর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের নেতাদের ব্যবসা রয়েছে এই তালিকায়। আবার কারও কারও ব্যবসা খারাপ হয়েছে করোনাভাইরাস, ডলার-সংকটের সময়। আবার সুবিধা পাওয়া কারও কারও বিরুদ্ধে ঋণ অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এবার ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা পাওয়া কিছু প্রতিষ্ঠান এর আগেও বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া এ ধরনের সুবিধা পেয়েছে। তবে এ পর্যন্ত ঠিক কী পরিমাণ ঋণ পুনর্গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত কার্যকর তখনই হবে, যখন গ্রাহক নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক তা কার্যকর করবে। তবে যাঁরা নির্বাচন করবেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ঋণ নবায়ন করে ফেলছেন বলে জানা গেছে।

ড্রোন শো পরিচালনা শিখতে চীন যাচ্ছেন ১১ জন

১৩ আগস্ট ২০২৫, বাংলা ট্রিবিউন

ড্রোন শো পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে চীন যাচ্ছেন ১১ জন। এক মাসের এ প্রশিক্ষণ চীনের সাংহাই ও গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার চীনা দূতাবাসে ড্রোন প্রশিক্ষণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান ও প্রেস কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ তথ্য জানান।

চট্টগ্রাম বন্দরে বিপজ্জনক ৩৫৭ কনটেইনার

১৪ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর রয়েছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঝুঁকিতে। তেজস্ক্রিয় পদার্থ থাকার ঝুঁকিতে একটি কনটেইনার শনাক্ত হলেও বন্দরের অভ্যন্তরে এখনও রয়ে গেছে এমন আরও ১২টি। তেজস্ক্রিয় পদার্থ থাকা এই কনটেইনারগুলো এখনও সরানো হয়নি ইয়ার্ড থেকে। শুধু তাই নয়, বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে থাকা ৩৫৭ কনটেইনারে সালফিউরিক এসিড, সোডিয়াম ও পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইডের মতো বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থও রয়েছে।

এদিকে ১০ থেকে ১৫ বছরের পুরোনো এসব কনটেইনার নষ্ট হয়ে বাইরে গড়িয়ে পড়ছে রাসায়নিক। লেবাননের বৈরুতের মতো যে কোনো সময় এসব কনটেইনারে বিস্ফোরণের আশঙ্কা করছে খোদ বন্দর কর্তৃপক্ষই। বিপজ্জনক এই কনটেইনার সরাতে চট্টগ্রাম কাস্টমসকে এক ডজনের বেশি চিঠি দিয়েছে তারা। কাস্টমস আবার চিঠি দিয়েছে পরমাণু শক্তি কমিশনকে। এভাবে চিঠি চালাচালি চললেও অপসারণ হচ্ছে না কনটেইনার, বাড়ছে বিপদও।

শুধু জাপানি ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ, বাড়তি ব্যয়ের আশঙ্কা

১৪ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

ঢাকার মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের একটি প্যাকেজে জাপানের বাইরে ঠিকাদার থাকবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের একটি অংশের (প্যাকেজ-৮) দরপত্রে অংশ নেওয়া চীনা ঠিকাদারকে অযৌক্তিক শর্ত দিয়ে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে প্রতিযোগিতা সীমিত হয়ে ব্যয় বেড়ে যেতে পারে।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)। নতুন করে আরও দুটি মেট্রো রেললাইন নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে—এমআরটি লাইন-১, যা কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত। অন্যটি এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট), যা সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারায় যাবে।

এই দুটি প্রকল্পের দরপত্রপ্রক্রিয়া চলাকালে ডিএমটিসএল মূল্যায়ন করে দেখেছে, শুরুতে তারা যে প্রাক্কলন করেছিল, ঠিকাদার নিয়োগের পর তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। এই দুটি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা।

বেক্সিমকোর পর নাসা গ্রুপকেও সহায়তার সিদ্ধান্ত সরকারের, কারখানা সচল রাখতে উদ্যোগ

১৮ আগস্ট ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

বেক্সিমকো গ্রুপের মতো এবার নাসা গ্রুপকেও বাঁচাতে এগিয়ে আসছে সরকার। দেশের অন্যতম বৃহৎ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক এই গ্রুপের কারখানা চালু রাখা ও হাজারো শ্রমিকের বেতন নিশ্চিতে নেওয়া হচ্ছে পদক্ষেপ।

এই গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি থাকলেও, তাদেরকে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলার সুযোগসহ কিছু নীতি সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে কারখানাগুলো অন্তত চালু থাকে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।

পাঁচ ব্যাংক এক করতে লাগবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা

১৯ আগস্ট ২০২৫,সমকাল

দুর্বল পাঁচ ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক মিলে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার রূপরেখার খসড়া তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ায় প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন বিনিয়োগ হিসেবে সরকারের কাছে চাইবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া আমানত বীমা তহবিল থেকে ঋণ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার কাছে তহবিল চেয়ে আবেদন করা হবে। প্রস্তাবিত রূপরেখার ওপর সরকারের সম্মতি চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক মিলে একটি ব্যাংক করা হচ্ছে। একীভূতকরণের আগে এসব ব্যাংকের সব শেয়ার শূন্য করা হবে। একীভূত করার শুরুর দিকে আমানত উত্তোলনের চাপ তৈরি হবে। প্রাথমিকভাবে ক্ষুদ্র আমানত ফেরত দেওয়া হবে। আর প্রাতিষ্ঠানিক আমানত শেয়ারে রূপান্তর করা হবে। নতুন আমানত সংগ্রহ এবং ঋণ আদায় জোরদার করা হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির সুরক্ষা দেওয়া হবে। বিশেষ করে অনিয়ম-জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততা নেই এবং নিয়ম মেনে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের চাকরির সুরক্ষা থাকবে।

রাজশাহীতে এবার ঋণগ্রস্ত পানচাষির আত্মহত্যা

১৯ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় পানের দাম না পেয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে আকবর হোসেন (৫০) নামের এক চাষি আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল সোমবার বরজ (পানের ক্ষেত) থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একই উপজেলায় ফজলুর রহমান (৫৫) নামের রিকশাচালককে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগে এক সুদের কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে ১৫ আগস্ট রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় এলাকায় নিজ ঘর থেকে এক পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশ থেকে উদ্ধার করা চিরকুটের এক জায়গায় লেখা ছিল, ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’ স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, অভাবের কারণে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন কৃষক মিনারুল ইসলাম।

গতকাল মৃত আকবর হোসেন মোহনপুর উপজেলার খাড়ইল গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে। তিনি ১৩টি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এবং স্থানীয় সুদের কারবারির কাছ থেকে সাত লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন।

টিসিবির লাইন থেকে খালি হাতে ফিরছে নিম্ন আয়ের মানুষ

২০ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

ভর্তুকি মূল্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর রাজধানীতে টিসিবি পণ্য বিক্রির ট্রাকের সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। অনেক স্থানে ডিলারদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন কেউ কেউ। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা।

দুই মাস বিরতির পর ১০ আগস্ট রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম শুরু হয়। টিসিবির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঢাকা মহানগরীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাক, চট্টগ্রামে ২৫টি, গাজীপুরে ছয়টি, কুমিল্লা মহানগরীতে তিনটি ট্রাক, এছাড়া ঢাকা, কুমিল্লা, ফরিদপুর, পটুয়াখালী ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি চলছে। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ জনের কাছে পণ্য বিক্রির ঘোষণা দেয়া হয়। ভর্তুকি মূল্যে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে টিসিবির তিনটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে দুই লিটার ভোজ্যতেল ২৩০ টাকা, এক কেজি চিনি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল দুই কেজি ১৪০ টাকা।

সাগরে জরিপ চালাতে আসছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ

১৯ আগস্ট ২০২৫,সমকাল

বাংলাদেশের অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানে মৎস্যসম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের প্রাণিজ আমিষের বড় অংশই আসে মাছ থেকে। যা আহরিত হয় বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি থেকে। কিন্তু এ সম্পদের প্রকৃত অবস্থা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক কোনো তথ্য নেই। বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমা ১১৮ হাজার বর্গকিলোমিটার। এখানে প্রচুর ছোট–বড় সামুদ্রিক মাছ ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্য থাকলেও সুফল মিলছে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র নিয়ে বড় ধরনের জরিপ শুরু হতে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনে কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিদেশিদের হাতে যাবে পাঁচ টার্মিনাল, খরচ বৃদ্ধির শঙ্কা

২০ আগস্ট ২০২৫,সমকাল

চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে চারটি কনটেইনার টার্মিনালের মাধ্যমে পণ্য ওঠানামা হয়। এর মধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) পরিচালনা করছে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি)। আরেকটি হচ্ছে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)। আগামী ডিসেম্বরে আবুধাবিভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডকে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই টার্মিনালে এককভাবে বন্দরের ৪৪ শতাংশ কনটেইনার ওঠানামা করে। বাকি দুটি টার্মিনাল হলো চট্টগ্রাম কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ও জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি)।

এ ছাড়া বে টার্মিনাল-১ ও ২ এবং লালদিয়া নামে তিনটি নতুন টার্মিনাল করতে যাচ্ছে সরকার। এগুলো পরিচালনার দায়িত্বও যাচ্ছে বিদেশিদের হাতে। লালদিয়ার চরের টার্মিনাল দেওয়া হচ্ছে ডেনমার্কের এপিএম মায়ের্স্ককে। আর বে টার্মিনাল প্রকল্পের একটিতে ডিপি ওয়ার্ল্ড, আরেকটিতে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনালকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে বন্দরের সাতটি টার্মিনালের পাঁচটিই চলে যাবে বিদেশিদের হাতে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে।

মেগা প্রকল্পে ৭.৫২ বিলিয়ন বাড়তি ব্যয়ের অভিযোগ তুললেও এক বছরে নেই আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার উদ্যোগ

২১ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে শ্বেতপত্র কমিটি এবং অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। তাদের প্রতিবেদনে উঠে আসে, আওয়ামী লীগ আমলে বাস্তবায়িত আটটি মেগা প্রকল্পে প্রারম্ভিক ব্যয়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার বা ৯১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা সমমানের ধরে) অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে। দুর্বল পরিকল্পনা, বাস্তবায়নে বিলম্ব এবং দুর্নীতিকে এ ব্যয় বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যদিও পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দেশের বেসরকারি ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে যেমন আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়েছে, তেমনি মেগা প্রকল্পের বাড়তি ব্যয় নিয়েও আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত।

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ অনুমোদন

২১ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংশোধিত অধ্যাদেশে আগের জারি করা অধ্যাদেশের ১১টি ধারায় সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধিত অধ্যাদেশে রাজস্ব নীতি বিভাগ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে সচিবসহ অন্যান্য পদে কোনো সুনির্দিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার পরিবর্তে বিশেষায়িত জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাদের পদায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এক দিনে ৩ শতাধিক ব্যাংক কর্মীকে ছাঁটাই

২০ আগস্ট, ২০২৫, কালবেলা

এক দিনে তিন শতাধিক কর্মীকে ছাঁটাইয়ের নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি। টানা ২৪ বছর চাকরিজীবনের শেষ প্রান্তে চলে আসা কর্মীরাও বাদ যাননি এই তালিকা থেকে। আকস্মিক ওই খবরে অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তায় তাদের নির্ঘুম রাত কাটছে।

এমনিতেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। এমন সময় নতুন করে চাকরি পাওয়া অনেকের জন্য কঠিন মনে করছেন তারা।

দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশে খুচরা (রিটেইল) ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় গত ৩০ জুলাই। তার কয়েক দিনের মাথায় একসঙ্গে অব্যাহতির খবর জানিয়ে দেওয়া হয়।

বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমছে, বাংলাদেশে সুফল কম কেন

২২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম অনেকটাই কমে গেছে। এমনকি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দর এখন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগের চেয়েও কম। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মূল্যস্ফীতিও অনেকটা কমিয়ে এনেছে। কিন্তু বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো চড়া।

২০২২ সালে দেউলিয়া হওয়া শ্রীলঙ্কায় এখন মূল্যস্ফীতি, অর্থাৎ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে না, বরং কমছে। মূল্য সংকোচনের হার শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়া পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি ২০২৩ সালে ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। সেটা এখন নেমেছে ৪ শতাংশের কাছাকাছি।

ভারতে মূল্যস্ফীতি এখন একেবারেই কম (১ দশমিক ৫৫ শতাংশ)। নেপালেও তাই (২ দশমিক ৭২)। বিপরীতে বাংলাদেশে এখনো মূল্যস্ফীতি চড়া, যা গত জুলাই মাসে ছিল সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি।

বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কতটা কমেছে, তা জানা যায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) একটি প্রতিবেদন থেকে। ট্যারিফ কমিশন নিয়মিত এই প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারকে দেয়। ১৮ আগস্টের প্রতিবেদনে দেখা যায়, থাইল্যান্ডে এখন ৫ শতাংশ ভাঙা চালের মেট্রিক টনপ্রতি দর ৩৮১ মার্কিন ডলার (এফওবি মূল্য, অর্থাৎ জাহাজভাড়া ছাড়া), যা এক বছর আগে ছিল ৬১৬ ডলার। এক বছরে দাম কমেছে ৩৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ গত জুন পর্যন্ত আগের এক বছরে ১৪ লাখ টন চাল আমদানি করেছে। সরকারিভাবে আট লাখ টন, বেসরকারিভাবে ছয় লাখ টন চাল আনা হয়েছে। কিন্তু দেশের বাজারে দাম কমছে না। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত মে মাসের শেষ দিকে ঢাকার বাজারে মোটা চালের দাম ছিল ৫২-৫৫ টাকা কেজি, যা এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।

২০২০ সালের পর থেকেই দেশের বাজারে চালের দাম চড়া। ওই বছরের শুরুতে মোটা চালের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা (টিসিবির হিসাব)। করোনাকালের শুরুতে (২০২০ সালের মার্চ) আতঙ্কের কেনাকাটায় চালের দাম বেড়ে যায়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার দাম কমাতে ব্যর্থ হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা এখনো আছে। দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে দরপতন ও দেশে ভালো ফলনের পরও চালের বাজারে স্বস্তি আসছে না।

চাল বাংলাদেশকে সব সময় আমদানি করতে হয় না। ভোজ্যতেল, চিনি, জ্বালানি তেল, রান্নায় ব্যবহৃত তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসসহ (এলপিজি) বিভিন্ন পণ্য আমদানি করতে হয়। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন, জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের কোম্পানি আরামকো ও বিশ্বব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগের পর্যায়ে নেমে গেছে। বাংলাদেশেও দাম কমেছে। তবে বিশ্ববাজারের তুলনায় কম হারে।

দেশে প্রতি চারজনের একজন এখন গরিব

২৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

দেশে বিগত তিন বছরে দারিদ্র্য বেড়েছে। প্রতি চারজনের একজন এখন গরিব। আরও অনেক মানুষ এমন আর্থিক অবস্থায় রয়েছেন যে অসুস্থতা বা অন্য কোনো সংকটে তাঁরা গরিব হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

২০২০ সালে করোনা মহামারির আগে তিন দশক ধরে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা বাড়ছে। এটা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা পিছিয়ে যাওয়ার লক্ষণ।

দারিদ্র্যের এ হিসাব উঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) এক গবেষণায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় করা ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক এ গবেষণায় বলা হয়, গত মে মাসে এসে দেশের দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশে, যা ২০২২ সালে সরকারি হিসাবে (পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয়-ব্যয় জরিপ) ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।

পিপিআরসি বলছে, দরিদ্রের বাইরে এখন দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার হঠাৎ দুর্যোগে যেকোনো সময় দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিন বছরে অতি বা চরম দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে। ২০২২ সালের অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে।

সংকটাপন্ন ব্যাংকগুলোর কারণে অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে রফতানি

২৭ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প দেশের সর্ববৃহৎ রফতানি খাত। এ খাত দীর্ঘদিন ধরেই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ব্যাংকে তারল্য সংকটের কারণে পোশাক শিল্প মালিক ও উদ্যোক্তারা মারাত্মক আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

রফতানি আয় সময়মতো না পাওয়া এবং নতুন করে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় পুরো শিল্প খাত অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করেছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।

ভোলায় চীনা বিনিয়োগে হবে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল

২৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ভোলায় প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগে হতে যাচ্ছে নতুন একটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল। চীনা বিনিয়োগে নির্মিত এ অঞ্চলে মৎস্য ও মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ, দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন এবং কৃষি–শিল্পভিত্তিক নানা কারখানা স্থাপিত হবে। নতুন এই অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিপূর্ণভাবে চালু হলে তাতে কর্মসংস্থান হবে প্রায় এক লাখ লোকের।

‘ভোলা ইকো-ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক জোন’ নামের এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করবে চীনা ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান লিজ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিজ। বেসরকারি এই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ইতিমধ্যে প্রাথমিক অনুমোদন বা প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

‘মহেশখালী-মাতারবাড়ীকে সিঙ্গাপুর-সাংহাই বন্দরের মতো করতে চায় সরকার’

৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, যমুনা টিভি অনলাইন

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে মাতারবাড়ী-মহেশখালীকে সাংহাই-সিঙ্গাপুর বন্দরের মতো উন্নতমানের বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার। এর ফলে এখান থেকে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) দেড়শ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে।

আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, মাতারবাড়ীকে কেন্দ্র করে ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলার রফতানি হবে। ২০৫৫ সালের মধ্যে ২৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এতে করে দেশের চেহারা পুরো বদলে যাবে।

বাজার শক্তি নয়,ডলারের দর ধরে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক শ্রমবাজারের একটি সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউজ এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স কিনছে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১১৯ টাকা দরে। প্রবাসীদের কাছ থেকে সংগৃহীত এ ডলারই বাংলাদেশী ব্যাংকগুলোর কাছে ১২১ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর দেশের ব্যাংক থেকে গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে।

দেশের ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদা না থাকার অজুহাতে বিদেশী এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো প্রবাসীদের ডলারপ্রতি কম টাকা দিচ্ছে। সেই ডলার বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর কাছে বেশি দামে বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে তারা। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এ মুহূর্তে ডলারের দরপতন ঠেকানোর নীতি নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দরপতন ঠেকানোর চেষ্টা না করলে চলতি সপ্তাহে প্রতি ডলার ১১৫ টাকায় নেমে যেত। এতে গত সাড়ে তিন বছর টাকার যে রেকর্ড অবমূল্যায়ন হয়েছে, সেটি সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যেত।

যাচ্ছে সার আসছে মাদক

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, যুগান্তর

বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে প্রতিদিন শত শত টন ইউরিয়া সার পাচার হয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কপথ ও কর্ণফুলীর নদীর মোহনা ও বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সাগরপথে চোরাকারবারিরা কৃষির অন্যতম উপকরণ মূল্যবান এই সার পাচার করে দিচ্ছে। দেশে উৎপাদিত এবং সরকারিভাবে বিদেশ থেকে আমদানি করা ভর্তুকি মূল্যের এই সার পাচার হওয়ায় কৃষক ও কৃষি অর্থনীতি বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের আর্থিক গচ্চাও কম নয়। বিপরীতে চোরাকারবারিরা লুফে নিচ্ছে বাড়তি মুনাফা। তবে এর চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে-সারের বিপরীতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মরণঘাতী মাদকের চালান। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একাধিক চোরাকারবারি সিন্ডিকেট প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই পাচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সাশ্রয়ের জন্য ওএমএসের লাইনে মধ্যবিত্তরাও

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

বাজারে কয়েক মাস ধরে চালের দাম উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে আটার দামও বাড়ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় এবং প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫২ টাকায়। সেই হিসাবে ওএমএসের ট্রাক থেকে কিনলে পাঁচ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আটায় একজন ক্রেতার সাশ্রয় হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৯০ টাকা।

এই অর্থ সাশ্রয়ের জন্য ক্রেতারা ছুটছেন ওএমএসের ট্রাকের পেছনে। তীব্র রোদেও লাইন ধরে চাল-আটা কিনছেন ক্রেতারা। এই লাইনে শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ দাঁড়িয়েছেন তা নয়, মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকদেরও লাইনে দাঁড়িয়ে চাল-আটার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

বন্ধ কারখানায় ব্যয় শতকোটি টাকা

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার সরঞ্জামে ধরেছে মরিচা। কারখানা ভবনের অনেক স্থানে পলেস্তারাও খসে পড়েছে। চুরি হয়ে গেছে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। পাঁচ বছর আগে এ কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাই বিশাল এলাকাজুড়ে থাকা কারখানাটি এখন অনেকটা ভুতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়েছে।

আর বন্ধ এ কারখানা পরিচালনার জন্য গত চার অর্থবছরে খরচ হয়েছে মোট ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ খরচ ৩৩ কোটি টাকার বেশি। কারখানাটি হলো চট্টগ্রাম নগরের আমিন জুট মিলস। ৭১ বছর আগে এই পাটকল চালু হয়েছিল। ২০২০ সালের ১ জুলাই কারখানাটি বন্ধ করে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তাতে চাকরি হারান প্রায় চার হাজার শ্রমিক। এখন কারখানা বন্ধ থাকলেও প্রশাসনিক কাজে যুক্ত আছেন ১২৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী।

নতুন টেলিকম নীতিমালা: রবি-বাংলালিংকের ‘হতাশা-উদ্বেগ’, গ্রামীণফোন বলছে ‘ইতিবাচক’

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

সদ্য অনুমোদন পাওয়া টেলিযোগাযোগ নীতিমালা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মোবাইল অপারেটর রবি ও বাংলালিংক। আর শীর্ষস্থানীয় আরেক অপারেটর গ্রামীণফোন পুরো বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরেছে।সেরা স্মার্টফোন

রবি ও বাংলালিংকের দাবি, এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনার সময় দেওয়া প্রস্তাবগুলো আমলে না নিয়েই নীতিমালাটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাদের মূল আপত্তি কোম্পানির অংশীদারত্বের ১৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া নিয়ে।

বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটর হিসেবে কোম্পানি খুলতে সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগ ৮৫ শতাংশের বিধান রেখে ‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং’ শীর্ষক এ নীতিমালা বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

বোরো চাষের জমি ও উৎপাদন বেশি দেখাচ্ছে কি বিবিএস

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

দেশের মোট ধানের প্রায় ৫৫ শতাংশ বোরো মৌসুমে উৎপাদন হয়। তাই খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বোরো ধানকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে কী পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চাষ হয় সে তথ্য পাওয়া যায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কাছে। তবে সংস্থাটির প্রকাশ করা এ তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্যাটেলাইট ইমেজ প্রযুক্তির মাধ্যমে হিসাব করা বোরো ধান আবাদের জমির পরিমাণ বিবিএসের হিসাবের চেয়ে ১২ শতাংশ কম। জমির পরিমাণ বেশি দেখানোর ফলে স্বাভাবিকভাবে উৎপাদনের তথ্যও বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

শহরেই নয়, গ্রামেও চালের বাজার চড়া

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

আশ্বিন মাস আসতে আর তিন দিন বাকি। এ মাসে সাধারণত কর্মসংস্থানের অভাব থাকে। কৃষকের ঘরে ধান-চালও থাকে কম। ফলে চালের বাজার হয় কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। এবারও আশ্বিনের ছায়া পড়েছে চালের বাজারে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যই বলছে, প্রায় তিন মাস ধরে চড়া চালের দাম। চালের এই বাড়তি দাম শুধু শহরেই নয়, প্রভাব ফেলেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনেও।

রাজধানীর কয়েকটি চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও প্রকারভেদে গত এক থেকে দেড় মাসে খুচরায় কেজিতে দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। একই পরিস্থিতি ধান উৎপাদন এলাকা নওগাঁ, রংপুর, কুষ্টিয়া অঞ্চলেও। সেখানে খুচরায় কেজিতে বেড়েছে সর্বোচ্চ সাত টাকা।

বিড়ালের খাবার আমদানি বছরে ৪০০ কোটি টাকার

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, দেশে এরই মধ্যে ক্যাট ফুড তথা বিড়ালের খাবারের ৫০০ কোটি টাকার বাজার গড়ে উঠেছে। এতে দেশীয় খাবারের হিস্যা ১০০ কোটি টাকার মতো। বাকি প্রায় ৪০০ কোটি টাকার খাবার বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছরে, বিশেষ করে করোনার পর থেকে বিড়াল পোষার প্রবণতা বেড়েছে। এতে খাবারের চাহিদাও বেড়েছে। তবে দেশে এখনো বিড়ালের জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার সেভাবে খুব একটা তৈরি হচ্ছে না। সে জন্য এ ধরনের খাবার আমদানি করতে হয়। গত বছর দেশে বিড়ালের খাবার তৈরির প্রথম কারখানা চালু হয়েছে।

কুড়িগ্রামে কৃষিজমি ভুটানকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তে কৃষকদের বিক্ষোভ

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ঢাকা পোস্ট

কুড়িগ্রামের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষিজমি ভূটানকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) করার জন্য লিজ দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইউনিয়নের মাধবরাম এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

‎প্রতিবাদে সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্র সংষ্কার কৃষক আন্দোলনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট রায়হান কবীর, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম জুয়েল, জেলা আহ্বায়ক মনতাজ মিয়া, সদস্য সচিব রেজাউল করিম, অর্থ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন শাখার নেতা এরশাদুল মিয়া, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, “এই জমি আমাদের বাপ-দাদার রক্ত-ঘামে অর্জিত সম্পদ। কোনো আলোচনা ছাড়াই বিদেশি শক্তির হাতে জমি তুলে দেওয়ার চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে। আমরা জীবন দিতে রাজি, কিন্তু এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না।”

বক্তারা আরও বলেন, সরকার একদিকে কৃষকের উন্নয়নের কথা বলে, অন্যদিকে কৃষকদের শেষ সম্বল কেড়ে নিয়ে ভূমিদস্যুদের হাতে তুলে দিচ্ছে। অবিলম্বে এ অবৈধ প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে কুড়িগ্রামের সর্বস্তরের কৃষক সমাজকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এসময় তারা তিন দফা দাবি জানান, দাবিগুলো হলো—ভোগডাঙ্গা মৌজার জে.এল. নং ৪৩-এর জমিকে খাস খতিয়ানভুক্ত করার সিদ্ধান্ত বাতিল, ভূটানের রাজার সঙ্গে সম্পাদিত ইপিজেড লিজ চুক্তি বাতিল এবং জমির প্রকৃত মালিকদের মালিকানা নিশ্চিতকরণ ও হয়রানি বন্ধ।

তিনজন বেকারের একজন স্নাতক, ৮ বছরে শিক্ষিত বেকার দ্বিগুণ

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকার। প্রতি তিনজন বেকারের একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী। আর দুই বছরের বেশি বেকার এমন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী সবচেয়ে বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪–এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সেখানে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি এবং বেশ সময় ধরে বেকার থাকার প্রবণতা দেখা গেছে।

দেশে বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী বেকার বসে আছেন। তাঁরা একেবারে চাকরি পাচ্ছেন না কিংবা পছন্দমতো চাকরি পাচ্ছেন না। মেস করে থাকেন, মানবেতর জীবন যাপন করেন, আর একটি সম্মানজনক চাকরির জন্য দিন গোনেন। মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে যাঁরা পরিবারের সঙ্গে থাকেন, নানা টানাপোড়েন তাঁদের অসহায় করে তোলে, মানসিক চাপে থাকেন সব সময়।

গত বছর শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেওয়ার পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। মূলত চাকরি পাওয়া নিয়ে হতাশা থেকেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা এই আন্দোলন গড়ে তোলেন।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশের চলমান সংস্কার আলোচনায় রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংস্কারকেও প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বিশেষ তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে কী কী করা উচিত, আলোচনায় থাকা দরকার।

প্রতি তিনজনে একজন বেকার উচ্চশিক্ষিত

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, বাংলাদেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ২৪ হাজার। এর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা ৮ লাখ ৮৫ হাজার।

সার্বিকভাবে কয়েক বছর ধরে দেশে বেকারের মোট সংখ্যা প্রায় অপরিবর্তিত। কিন্তু খারাপ খবর হলো, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। দেশে এখন প্রতি তিনজন বেকারের মধ্য একজন উচ্চশিক্ষিত। তাঁরা বিএ কিংবা এমএ ডিগ্রি নিয়েও শোভন চাকরি পাচ্ছেন না।

২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে, ওই বছর চার লাখের মতো স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার ছিলেন। আট বছর পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ লাখ। এর মানে আট বছরের ব্যবধানে উচ্চশিক্ষিত বেকার দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।

উচ্চশিক্ষিত তরুণেরা বেশি দিন বেকার থাকেন

১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই বয়সসীমার মধ্যে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে ২ বছরের বেশি সময় ধরে বেকার থাকেন ১৭ শতাংশের বেশি তরুণ বেকার। এই হার অন্য ডিগ্রিধারীর চেয়ে বেশি। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ২ বছরের বেশি সময় বেকার থাকেন ৮ শতাংশের বেশি বেকার। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন তরুণদের মধ্যে বেকারের হার ১ শতাংশের মতো।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিষেবার ওপর খরচ বাড়লো ৪১ শতাংশ

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ইত্তেফাক

প্রায় ৪০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবা খাতে ট্যারিফ (মাশুল) বাড়ানো হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ট্যারিফের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে গড়ে ট্যারিফ বেড়েছে ৪১ শতাংশের মতো। সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবা খাতে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছিল। প্রায় ৪০ বছর পর অন্তর্বর্তী সরকার বন্দরের ট্যারিফ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন নতুন আরোপিত ট্যারিফ আজ সকাল থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আগে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে নতুন ট্যারিফের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ৫২টি খাতে ট্যারিফ আদায় করা হয়। সেখান থেকে ২৩টি খাতে সরাসরি বর্ধিত হারে ট্যারিফ আদায় অনুমোদন হয়েছে।

২% অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যবসা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে বা মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু ও চাঙা করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোক ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দিয়েছে। এই ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ১০ বছর। ঋণ নিয়মিত হলে শুরুতে দুই বছর ঋণ পরিশোধে বিরতি সুবিধা পাওয়া যাবে। এ সুবিধা পেতে চাইলে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।

খেলাপি ব্যবসায়ীদের ঋণ পুনঃ তফসিল করার সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ পুনঃ তফসিলের আবেদন পাওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে ব্যাংককে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। ঋণ পুনঃ তফসিলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। একইভাবে এককালীন ঋণ পরিশোধ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে এক বছর সময় পাবেন গ্রাহকেরা। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো অনাপত্তি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এর ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যেসব ব্যবসায়ী চাপে ছিলেন এবং বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা সুবিধা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

দেশে গত জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। দেশে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন লাখ কোটি টাকার বেশি।প্রমাণিত হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রেঞ্জ বা কমিশনারের অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। মাত্র দুই দিনের মধ্যে ব্যাক ডেটে অর্ডারশিটে সই করে কোম্পানিকে ২৬৬ কোটি টাকার কর কমানো হয়। এই প্রক্রিয়ায় জাহাঙ্গীর আলম ৩০ লাখ এবং মাসুদুর রহমান ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন। তবে মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘জাহাঙ্গীর আলমের অনুরোধে অর্ডারশিট তৈরি করেছি, তার বাইরে কিছু জানি না।’

ব্যাংকের বন্ধকি সম্পদের সত্যতা যাচাইয়ে এখনো ফরেনসিক অডিটের উদ্যোগ নেই

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে লুণ্ঠিত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর একটি গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ভুয়া বিভিন্ন কোম্পানির নামে ব্যাংকটি থেকে বের করে নেয়া হয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা।

পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে লুণ্ঠিত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর একটি গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ভুয়া বিভিন্ন কোম্পানির নামে ব্যাংকটি থেকে বের করে নেয়া হয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এ ঋণের (বিনিয়োগ) বিপরীতে জমিসহ যেসব সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়েছিল, সেগুলোর বেশির ভাগই অস্তিত্বহীন। পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পর ব্যাংকটির বন্ধকি সম্পদের নিরীক্ষা ও বাজারমূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সে নিরীক্ষার তথ্য বলছে, চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকটির হাতে জামানত হিসেবে থাকা সম্পত্তি বিক্রি করে কেবল ২৫-৩০ শতাংশ অর্থ আদায় সম্ভব।

উত্তরাঞ্চলে বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার ফসল মাঠেই পচে

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

সংরক্ষণ আর পরিকল্পনার অভাবে মাঠেই পচে যায় উত্তরাঞ্চলের হাজার হাজার টন ফসল। শুধু আলু, আম ও সবজিই নষ্ট হয় বছরে সাত থেকে আট লাখ টন, টাকার অঙ্কে যা আড়াই হাজার কোটি টাকা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। লাভ তুলছেন আড়তদার ও মধ্যস্বত্বভোগীরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উপজেলা পর্যায়ে হিমাগার, প্রি-কুলিং ও আধুনিক সংরক্ষণ অবকাঠামো গড়ে তোলা না হলে কৃষকের এই লোকসান দিন দিন বাড়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

উত্তরাঞ্চলে প্রতিবছর গড়ে ২২ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়। এর মধ্যে মৌসুমে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টন আলু পচে যায়। প্রতি কেজি ১৫ টাকা করে ধরলেও ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৭০০ থেকে ৭৫০ কোটি টাকা।

আমের ক্ষেত্রেও লোকসানের হিসাবটা একই রকম। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের তথ্য বলছে, নওগাঁয় গত মৌসুমে প্রায় ৪ দশমিক ৫ লাখ টন আম ফললেও সংরক্ষণ সুবিধার অভাবে এর ১ দশমিক ৩ থেকে ১ দশমিক ৫ লাখ টন নষ্ট হয়ে যায়। ৪০ টাকা করে কেজি ধরলেও ক্ষতি দাঁড়ায় ৬০০ কোটি টাকা। রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমও ফলনের ১০-১৫ শতাংশ পচে যায়। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৩৬০ কোটি।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এই অঞ্চলে গড়ে ২৫ শতাংশ সবজি পচে যায় কিংবা কম দামে বিক্রি হয়। প্রতিবছর শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয় পাঁচ থেকে আট লাখ টন। টাকার অঙ্কে সবজির লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫০ থেকে ৮০০ কোটি।

জিনিসপত্রের দাম নিয়ে ৭০% মানুষের উদ্বেগ: পিপিআরসির জরিপ

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

সমাজের নানা আর্থিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক উদ্বেগের কারণে প্রায় ৪৬ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা হারিয়েছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। ঘুষ আগের চেয়ে কমলেও হয়রানির শিকার মানুষেরা বলছেন, ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রে টাকা ছাড়া কিছু হয় না।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার রাতে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ‘পরিবার পর্যায়ে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনায় সংস্থাটির সাম্প্রতিক জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। গত মে মাসে দেশের ৮ হাজার ৬৭টি খানার মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।

জরিপের পারিবারিক মনস্তত্ত্ব অংশের ফলাফল তুলে ধরে বলা হয়, প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সংকটের মধ্যে আছে। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ চিকিৎসা ব্যয় এবং ২৭ শতাংশ ঋণ পরিশোধ নিয়ে সংকটে আছেন।

আইএমএফের নতুন শর্ত: বিদেশি ঋণ সীমিত করতে হবে বাংলাদেশকে

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ওপর বিদেশি ঋণ গ্রহণের ওপর সীমারেখা টেনে দিয়েছে।

গত জুনে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির বিষয়ে পর্যালোচনার সময় নতুন এই শর্ত দিয়েছে আইএমএফ।

শর্ত অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ৮.৪৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ নিতে পারবে। এর মধ্যে প্রথম ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ১.৯১ বিলিয়ন ডলার ও প্রথমার্ধে ৩.৩৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ নেওয়া যাবে।

আইএমএফ প্রতি তিন মাসে বিদেশি ঋণ পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

আইএমএফ ২০২৩ সালে যখন ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করে, তখন এমন কোনো শর্ত ছিল না। কিন্তু, জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি অনুমোদনের মাধ্যমে মূল ঋণের পরিমাণ ৮০০ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পায় এবং মেয়াদও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ আইএমএফের এই ঋণ প্রোগ্রাম থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে।

‘কম ঝুঁকি’র দেশ থেকে বাংলাদেশকে ‘মধ্যম ঝুঁকি’র দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, রপ্তানি ও রাজস্ব আয়ের তুলনায় ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে।

ডিএসএ অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের ঋণ ও রপ্তানির অনুপাত ১৬২.৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা প্রাক্কলিত ১১৬-১১৮ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি। ঋণ ও রাজস্বের অনুপাতও বেড়েছে। এসব কারণেই সরকারের নতুন ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা কমেছে।

রাজশাহীতে ওএমএসের চাল-আটা কিনতে কেউ রাত ১২টা, কেউ ভোররাত থেকে লাইনে

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

বাজারের উচ্চ মূল্যের বিপরীতে অর্ধেক দামে চাল ও আটা কিনতে রাজশাহীতে সরকারি খোলাবাজারের (ওএমএস) ট্রাকের সামনে ভিড় করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সকাল ৯টায় ট্রাক এলেও অনেকেই পণ্যের আশায় রাত ১২টা বা ভোররাত থেকে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। রাজশাহী নগরের চৌদ্দপাই এলাকায় এমনই এক চিত্র দেখা গেছে, যেখানে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও অনেকে পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরেছেন।

রাজশাহী নগরের ৩০টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে সাপ্তাহিক ছুটি বাদে পাঁচ দিন প্রতি ট্রাকে এক টন চাল ও এক টন আটা বিক্রি করা হয়। একজন প্রতি কেজি ৩০ টাকায় সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল এবং প্রতি কেজি ২৪ টাকায় একই পরিমাণ আটা কিনতে পারেন।

রাত তিনটার দিকে এসে লাইন ধরে অবস্থান করছিলেন নগরের বুধপাড়া এলাকার বাসিন্দা রোজেনা বেগম। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চাল ও আটা কেনার সুযোগ পান। তিনি বলেন, ‘অ্যাকটা মানুষ কাইজ করেন। চাইরটা-পাঁচটা মানুষ খায়। কী করব, ওই একজনের আয়ে কিছু হয় না। আইসতে তো হবেই। তা ছাড়া তো বুদ্ধি নাই। আমরা গরিব মানুষ। অনেক দিন পাওয়া যায় না। তাই রাতে আসি।’

বেতন-ভাতার অর্থসংস্থান নিয়ে চিন্তায় সরকার

০৫ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে আরেকটি বেতন কাঠামো হচ্ছে। বকেয়া ভর্তুকির অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। এদিকে রাজস্ব আয়ে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি নেই। এ অবস্থায় বাড়তি ব্যয়ের অর্থসংস্থান নিয়ে চিন্তায় সরকার। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ডিসেম্বরে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সংশোধন হবে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনার মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। ভাতায় রয়েছে ৪১ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বেতন-ভাতা খাতে মোট বরাদ্দ ৮৪ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে বেতন-ভাতায় আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর ফলে এ খাতে বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। তবে কিছু বাড়তি খরচের হিসাব পাওয়া গেলেও সার্বিকভাবে কত ব্যয় বাড়বে– তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

যমুনায় ৩০০ মিটারের মধ্যে দুই সেতু, কাছাকাছি দূরত্বে আরো একটি নির্মাণের উদ্যোগ

৮ অক্টোবর ২০২৫, বণিক বার্তা

যমুনা বহুমুখী সেতুর মাত্র ৩০০ মিটার উজানে চলতি বছর চালু হয় নতুন এক রেল সেতু। এবার এ দুই সেতুর কাছাকাছি দূরত্বেই আরো একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকারের সেতু বিভাগ। নতুন সেতুর সম্ভাব্য সমীক্ষার জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও নিযুক্ত করা হয়েছে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সমীক্ষার মাধ্যমে নতুন সেতুর সম্ভাব্য স্থান, কারিগরি চ্যালেঞ্জ, অর্থনৈতিক প্রভাব এবং পরিবেশগত বিভিন্ন দিক নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।

নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ সম্পর্কে সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দুই পাশের সংযোগ সড়কের তুলনায় যমুনা সেতুর প্রশস্ততা কম। দেশে যানবাহন চলাচল যে হারে বাড়ছে, তাতে অদূরভবিষ্যতে এ পথে যাতায়াতে নতুন একটি সেতুর দরকার হবে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য যমুনায় নতুন সেতুর প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও কাছাকাছি জায়গায় এতগুলো অবকাঠামো নদীর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অবকাঠামো বিশেষজ্ঞরা।

চার বছরের মধ্যে এবার সর্বোচ্চে পৌঁছবে দারিদ্র্যের হার

৮ অক্টোবর ২০২৫, বণিক বার্তা

বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২০২৪ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে চলতি বছর ২১ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছবে, যা কভিড-পরবর্তী সময় তথা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে দেশের শ্রমবাজারের দুর্বল চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ দেশে কর্মক্ষম জনশক্তির মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত ছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে প্রায় ২৪ লাখই নারী। এ পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান ও কর্মক্ষম জনসংখ্যার অনুপাত ২ দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ; ২০২৩ সালে ১৯ দশমিক ২ এবং ২০২২ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন, ব্যাংক খাত পুনর্গঠন, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রেমিট্যান্স প্রবাহ বজায় রাখা এবং নীতিগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে অর্থনীতি স্থিতিশীল হবে এবং দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলেও জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

চীন থেকে ২০টি যুদ্ধবিমান কেনা হচ্ছে

০৯ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য চীন থেকে ২০টি জে-১০সিই যুদ্ধবিমান কেনা হচ্ছে। মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এমআরসিএ) বা নানামুখী ভূমিকা পালনে সক্ষম এসব যুদ্ধবিমান কেনা, প্রশিক্ষণ, অন্যান্য খরচসহ মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২২০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা। জাতীয় আকাশ প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এসব যুদ্ধবিমান কেনা হচ্ছে।

চলতি ২০২৫-২৬ এবং আগামী ২০২৬-২৭ অর্থবছরে যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি বাস্তবায়নের আশা করছে সরকার। জিটুজি (সরকার টু সরকার) পদ্ধতিতে চীন সরকার বা সে দেশের সরকার মনোনীত কোনো সংস্থার কাছ থেকে এসব বিমান কেনা হবে। এসব বিমানের মূল্য ২০৩৫-৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে পরিশোধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে খরচ বাড়ছে, কোন পণ্যে দাম কত বাড়তে পারে

১২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

ব্যবহারকারীদের আপত্তি উপেক্ষা করে আগামী মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন বাড়তি মাশুল কার্যকর হচ্ছে। প্রায় ৪১ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছে নতুন মাশুল। বিভিন্ন সমীক্ষা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নতুন মাশুল কার্যকরের পর এ অঞ্চলে ব্যয়বহুল বন্দরে পরিণত হবে চট্টগ্রাম বন্দর।

বিদেশিদের হাতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর চারটি বড় টার্মিনাল ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্তে মাশুল বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বন্দর মাশুলের বড় অংশই সরাসরি আদায় করবে বিদেশিরা। বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়া প্রকল্পের ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনও (আইএফসি) গত এপ্রিলে তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বিদ্যমান ট্যারিফ কাঠামো বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট নয়। মূলত এরপরই বন্দর মাশুল বাড়ানোর গতি পায়, যা আগামী মঙ্গলবার কার্যকর হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্দর মাশুল বাড়ানোর কারণে গাণিতিক হারে খরচ বাড়তে থাকবে। কারণ, বন্দরের বাড়তি খরচ তুলে নিতে শিপিং কোম্পানিগুলো ধাপে ধাপে খরচ বাড়াতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরাও বাড়তি খরচ তুলে নেবেন।

বিদেশিদের হাতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর চারটি বড় টার্মিনাল ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্তে মাশুল বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বন্দর মাশুলের বড় অংশই সরাসরি আদায় করবে বিদেশিরা।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নয়, বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দিতেই মাশুল বাড়ানো হচ্ছে। আর এটা করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পরামর্শেই। বন্দরের মাশুল বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে বহুভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পণ্য আমদানিতে খরচ বাড়বে, যার বোঝা বহন করবে ভোক্তারা। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।

ব্যবসায়ী ও ব্যবহারকারীদের আপত্তির মধ্যেই গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের নতুন মাশুলের গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগের তুলনায় গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কনটেইনার পরিবহনের মাশুল। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গড়ে প্রতিটি কনটেইনারে (২০ ফুট লম্বা) বাড়তি মাশুল ধরা হয়েছে প্রায় ৩৯ ডলার (৪ হাজার ৩৯৫ টাকা)। এই মাশুলের বড় অংশ আদায় করা হবে শিপিং লাইন থেকে। একাংশ পরিশোধ করবে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকেরা। শিপিং লাইন বন্দরের বাড়তি খরচ তুলে নেবে আমদানিকারক–রপ্তানিকারকের কাছ থেকে। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক বাড়তি খরচ পণ্যের দামে যুক্ত করবে।

৩০ বছরের জন্য বিদেশি অপারেটরদের হাতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের দুই টার্মিনাল ও পানগাঁও, চুক্তি ডিসেম্বরে

১২ অক্টোবর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বাংলা অনলাইন

চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া, নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনাল পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগে আগামী ডিসেম্বরে চুক্তি স্বাক্ষর করবে সরকার। এর মধ্যে লালদিয়া টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য, আর বাকি দু’টি টার্মিনাল ২৫ বছর মেয়াদে বিদেশি কোম্পানিগুলোর হাতে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে।

রোববার (১২ অক্তোবর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে সরকার চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে বিদেশি কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে। তাদের প্রতিবেদন সরকার ছয় মাস আগে পেয়েছে।’

কনসালটেন্টের সুপারিশ অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের সভা: বন্দরের বর্ধিত মাশুল স্থগিত করে আলোচনার আহ্বান

১৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে মাশুল বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি করেছেন তাঁরা।

তবে সরকার বর্ধিত মাশুল কার্যকরের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। গতকাল নৌপরিবহনসচিব বলেছেন, মাশুল কমানোর সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম বন্দরে অস্বাভাবিক ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রতিবাদে ‘চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীবৃন্দ’–এর ব্যানারে গতকাল রোববার সভার আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রামের র‍্যাডিসন ব্লু হোটেলে এ সভায় বিভিন্ন খাত ও সংগঠনের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী।

ব্যবসায়ীদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের নতুন মাশুলের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এই মাশুল আগামীকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। আগের তুলনায় গড়ে প্রায় ৪১ শতাংশ হারে মাশুল বাড়ানো হয়েছে। বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতে নতুন মাশুল কার্যকর করা হচ্ছে বলে সমালোচনা রয়েছে।

গতকালের সভায় আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিদেশি অপারেটররা চায় ট্যারিফ বাড়িয়ে দেওয়া হোক। মাশুল বৃদ্ধির নেপথ্যে যারা আছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। বর্ধিত মাশুল স্থগিত রেখে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক বলেন, মোংলা ও পায়রায় মাশুল বাড়ানো হয়নি, বাড়ানো হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। কোনো খাতে ছয় গুণ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। এই বাড়তি মাশুল পরিশোধ করবেন দিনমজুর, শ্রমিক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জনগণ। বিদেশি অপারেটরদের সুবিধার জন্য মাশুল বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড, মায়ের্সক লাইনের পেছনে কারা, এজেন্ট কারা, অফিসে কারা যায়, আমাদের কাছে খবর আছে। বলে দেব কিন্তু। তখন লজ্জা পাবেন। আপনারা যাকে ইচ্ছা তাকে টার্মিনাল দিয়ে দেবেন, সেটা হবে না। পতেঙ্গা টার্মিনাল যারা ছেড়ে দিয়েছে, তাদের পরিণতি আমরা দেখেছি।’

দারিদ্র্য কমার বদলে বাড়ছে, ঝুঁকিতে মধ্যবিত্ত

১৭ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশ সাফল্য দেখালেও হঠাৎ ছন্দপতন ঘটেছে। কোভিডের পর পর আবার দারিদ্র্য বাড়তে শুরু করেছে। তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। তাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে।

আবার কয়েক বছর ধরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ পরিস্থিতি থমকে আছে। ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কমেছে। ফলে কাজপ্রত্যাশীরা বিপাকে পড়েছেন। এটিও দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

আবদুস সালাম রাজধানীর আশকোনা এলাকায় সেলুনে কাজ করেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ছোটখাটো ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকেন। সব মিলিয়ে মাসে সংসার খরচ এখন ২৫-৩০ হাজার টাকা। এক বছর আগেও প্রতি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকায় সংসার চালানো যেত, যা আয় হতো, তা দিয়েই কষ্টেসৃষ্টে চলত তাঁর সংসার। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আবদুস সালামকে।

তাই আবদুস সালাম আগামী মাসে পরিবারকে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন। নিজে একটি মেসে ওঠে যাবেন। এভাবেই আবদুস সালামের জীবনসংগ্রাম আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আবদুস সালাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে ধারদেনা করে চলছি। এখন আর কুলাতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে স্ত্রী-সন্তানদের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

আবদুস সালামের মতো এমন বহু সীমিত আয়ের মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। অনেকেই গরিব হয়ে গেছেন। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদেরও এখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

প্রতিবছর ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালিত হয়। এ দিবসটি এমন এক সময় পালিত হচ্ছে, যখন বাংলাদেশে দারিদ্র্য হার বৃদ্ধির কথা বলছে বিশ্বব্যাংকসহ দেশি বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

দারিদ্র্য বিমোচনে সাফল্যের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশে শোকেস কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম ঢাকায় এসে ‘দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গণবক্তৃতা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দারিদ্র্য বিমোচনের উল্টো পথে হাঁটছে বাংলাদেশ।

দারিদ্র্য কত বাড়ল

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২২ সালের জাতীয় খানা আয় ও ব্যয় জরিপ অনুসারে, ওই বছর দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এরপর আর এই জরিপটি হয়নি।

সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) ‘ইকোনমিক ডায়নামিকস অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেবেল ইন মিড ২০২৫’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২৭ দশমিক ৯৩ বা প্রায় ২৮ শতাংশ। গত মে মাসে এই গবেষণা করা হয়। এ ছাড়া ১৮ শতাংশ মানুষ যেকোনো সময় গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এর মানে হলো, গত তিন বছরের মধ্যে দরিদ্র লোকের সংখ্যা বেড়েছে প্রতি ১০০ জনে ১০ জন। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রতি ৪ জনে ১ জন দরিদ্র মানুষ। অথচ ২০১৬ সালের বিবিএসের হিসাবে, দেশে দারিদ্র্য হার ছিল ২৪ শতাংশের মতো।

পিপিআরসির মতো সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১ দশমিক ২ শতাংশে।

দারিদ্র্যের সংজ্ঞা

বিবিএসের মানদণ্ড অনুসারে, খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্য ও সেবা কেনার জন্য একজন মানুষের প্রতি মাসে গড়ে ৩ হাজার ৮২২ টাকা খরচ করার সামর্থ্য যদি না থাকে, তাহলে তাকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ধরা হয়। এটি উচ্চ দারিদ্র্যরেখা। পাশাপাশি দারিদ্র্য পরিমাপে ১১৯ ধরনের বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নেয় বিবিএস।

কেন বাড়ল

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক, পিপিআরসি, সানেমসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে ২০২২ সালের পর দারিদ্র্য বেড়েছে। সংখ্যার হেরফের হলেও দারিদ্র্য বৃদ্ধি নিয়ে সবাই একমত। ছোটখাটো দুর্যোগ হলে বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যান। বাংলাদেশে এখন অন্তত ১০ কোটি মানুষ এমন ঝুঁকিতে রয়েছেন।’

জাহিদ হোসেনের মতে, দারিদ্র্য বৃদ্ধির মোটাদাগে তিনটি কারণ আছে। প্রথমত, জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই হারে আয় বাড়েনি। ফলে জীবনযাত্রার মান নেমে যাচ্ছে। মানুষ গরিব হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, চাহিদা অনুসারে কর্মসংস্থান হয়নি। বরং কমেছে। ২০১৬ সালের পর শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের অংশীদারত্ব আনুপাতিক হারে বাড়েনি। শুধু সংখ্যা বেড়েছে। তৃতীয়ত, কোভিডের পর কৃষি খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। এর মানে, নিম্ন মজুরির কর্মসংস্থান বেশি হয়েছে, যা দারিদ্র্য কমাতে ভূমিকা রাখতে পারেনি।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি অনেক অনুসন্ধানে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। শিক্ষিত বেকারত্ব হার বৃদ্ধির ফলে শিক্ষার মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসের সম্ভাবনা কমেছে। শুধু তা–ই নয়, বিগত কয়েকটি শ্রমশক্তি জরিপ থেকে দেখা যায়, অধিকাংশ পেশায় গত কয়েক বছরে প্রকৃত মজুরি কমে গেছে। যেসব পেশায় উচ্চশিক্ষা দরকার সেখানেও কমেছে। সুতরাং দারিদ্র্য হার বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ওঠানো–নামানোয় অচলাবস্থা

১৮ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

চার দিন ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থা চলছে। গাড়ি প্রবেশের মাশুল প্রায় চার গুণ করার প্রতিবাদে গাড়ির মালিকেরা অঘোষিতভাবে এই কর্মসূচি পালন করছেন।

১৫ অক্টোবর থেকে বন্দরে গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল কার্যকর হয়। এর মধ্যে ভারী যানবাহনের প্রবেশে আগে মাশুল ছিল ৫৭ টাকা। তা প্রায় চার গুণ করে ২৩০ টাকা করা হয়েছে। এরপর ঘোষণা ছাড়া গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন মালিকেরা।

সরেজমিনে আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দেখা যায়, নগরের সল্টগোলা ক্রসিং মোড়ে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাইম মুভার মালিক সমিতি ও শ্রমিকেরা। এ সময় বন্দরমুখী প্রাইম মুভার ও লরিগুলোকে বাধা দিতে দেখা যায়। হ্যান্ডমাইক হাতে এসব যাববাহনকে বন্দরে ঢুকতে মানা করছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, বর্ধিত মাশুল তাঁরা দেবেন না।

খেলাপি ঋণ অবলোপনে শর্ত তুলে নিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

১৯ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

কোনো ঋণ মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে খেলাপি হলে তা অবলোপন করতে পারবে ব্যাংকগুলো। এ জন্য শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হবে এবং গ্রাহককে ৩০ দিন আগে অবহিত করতে হবে। পাশাপাশি অবলোপন করা ঋণ আদায় করলে কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা দেওয়া যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ রোববার এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে উন্নয়ন সহযোগী ও ঋণদাতা সংস্থাগুলোও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছে।

এক দশকে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণে ব্যয় ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি

২১ অক্টোবর ২০২৫, বণিক বার্তা

সরকার তার কর্মচারীদের দক্ষতা উন্নয়নে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। কিন্তু প্রশিক্ষণ সম্পন্ন না করে সম্মানী-ভাতা উত্তোলন, স্বাক্ষর জাল করে প্রশিক্ষণের অর্থ গ্রহণ, বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ লোপাট, বেশি প্রশিক্ষণার্থীর অংশগ্রহণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের মতো অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন সময়ে। অর্থ বিভাগের তথ্য বলছে, গত এক দশকে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণে বাজেট থেকে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রশিক্ষণে জন্য বিপুল অংকের এ অর্থ ব্যয়ের সুফল দৃশ্যমান নয়।

অর্থ বিভাগের তথ্যানুসারে, ২০১৬-১৭ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণে ১৯ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৮৩ কোটি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৯৩ কোটি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৬৫৬ কোটি, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৩২৬ কোটি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৮৬ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ৯৬৯ কোটি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৬৬ কোটি ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রশিক্ষণ বাবদ ৩ হাজার ৬২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ ছিল। আলোচ্য অর্থবছরে সরকারের খাতভিত্তিক ব্যয়ের তথ্য এখনো প্রকাশ করা না হলেও প্রশিক্ষণ বাবদ এ সময়ে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হতে পারে বলে জানা গেছে। আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রশিক্ষণ ব্যয় বাবদ ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে গত এক দশকে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণে অন্তত ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ভাতা ও সম্মানীর পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ফলে এ বাবদ সরকারের ব্যয় আরো বাড়বে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগের জারি করা এক পরিপত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অধীন সব সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের দৈনিক প্রশিক্ষণ ভাতা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৪ আগস্ট জারি করা অর্থ বিভাগের আরেক পরিপত্রের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের বক্তাদের সম্মানী ও প্রশিক্ষণ ভাতার হার পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এখন থেকে বিষয়ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণে যুগ্ম সচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মচারীরা ১ ঘণ্টা ক্লাস নিলে ভাতা পাবেন ৩ হাজার ৬০০ টাকা, যা এতদিন ছিল ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর চতুর্থ ও পঞ্চম গ্রেড বা উপসচিব এবং তার নিম্নপর্যায়ের কর্মচারীরা এতদিন পেতেন ২ হাজার টাকা, এখন থেকে পাবেন ৩ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণে এতদিন গ্রেড-৯ থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মচারীরা প্রতিদিন প্রশিক্ষণ ভাতা পেতেন ৬০০ টাকা। এটিকে বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে। গ্রেড-১০ থেকে তার নিম্নপর্যায়ের কর্মচারীর প্রতিদিন প্রশিক্ষণ ভাতা ছিল ৫০০ টাকা। সেটিকে এখন বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। একইভাবে কোর্স পরিচালকের সম্মানী প্রতিদিনের জন্য ১ হাজার ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা, কোর্স সমন্বয়কের সম্মানী ১ হাজার ২০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং সাপোর্ট স্টাফদের সম্মানী ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে।

পাটকল নামটাই কি ইতিহাস হয়ে যাবে

২১ অক্টোবর ২০২৫, প্রতিদিনের বাংলাদেশ

পৃথিবীর অন্যতম বড় পাটকল ছিল আদমজী জুট মিলস। ২০০২ সালে মিলটির সব শ্রমিক-কর্মচারীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় করার মধ্য দিয়ে দেশের শিল্প খাতের এক সুবর্ণ অধ্যায়ের অবসান ঘটে। কালক্রমে খুলনা-যশোরের রাষ্ট্রায়ত্ত নামকরা পাটকলগুলোও একই পরিণতির শিকার হয়। একে একে থেমে যেতে থাকে এসব কারখানার সাইরেন। বেকারত্বের অভিশাপ নেমে আসে অসংখ্য শ্রমিকের জীবনে।

খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রীয় পাটকলের মধ্যে ছয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে লিজের মাধ্যমে। এর মধ্যে আবার দুটি মিলের মালিকানা নিয়েছে ভারতীয় কোম্পানি। বাকিগুলোও একই পথে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্রীয় এসব মূল্যবান সম্পদ কি তাহলে এভাবেই ধীরে ধীরে হাতছাড়া হয়ে যেতে থাকবে?

একসময় বাংলাদেশ ছিল সোনালি আঁশের দেশ। পাট ছিল গৌরবের নাম, ছিল কৃষকের ভরসা আর রাষ্ট্রের কাছে রপ্তানির প্রধান উৎস। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই জৌলুস ঠাঁই নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়।

১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে খুলনা-যশোর অঞ্চলের বড় বড় পাটকল রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল কৃষকের জন্য পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। তবে দুর্নীতি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনায় পাটকলগুলোকে লোকসান গুনতে হয় বছরের পর বছর। ২০২০ সালে সরকার একসঙ্গে ২৫টি রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর মধ্য দিয়েই শুরু হয় নতুন অধ্যায় লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) তথ্যমতে, খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে ৬টি এখন বেসরকারি হাতে। দৌলতপুর জুট মিল লিজ নিয়েছে ফরচুন গ্রুপ, মাসিক ভাড়া ৯ লাখ টাকা। খালিশপুর জুট মিল গেছে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে, মাসিক ২৬ লাখ টাকায়। আটরার ইস্টার্ণ জুট মিল ১০ লাখ টাকায় লিজ নিয়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আটলান্টিস। নওয়াপাড়ার কার্পেটিং জুট মিল ৭ লাখ টাকায় নিয়েছে আরেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রিগ্যাল জুট। যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ (জেজেআই) ১৫ লাখ টাকায় নিয়েছে আকিজ গ্রুপ, নতুন নাম দিয়েছে আকিজ জুট পার্ক। ক্রিসেন্ট জুট মিলের ক্ষেত্রে মাহবুব এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে ৫০ লাখ টাকায় তিন বছরের চুক্তি হয়েছে; হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে। বাকি দুটি প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিল ও স্টার জুট মিল এখনও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঝুলে আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত চুক্তি হয়েছে যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ নিয়ে। ৮১ একর জমির মধ্যে ২৭ একর আকিজ গ্রুপ ২০২৩ সালের এপ্রিলে লিজ নেয়, মে মাসেই উৎপাদন শুরু করে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সরকার ভাড়া পাবে ২০২৫ সালের নভেম্বর থেকে। অর্থাৎ দুই বছর মিল চালু থেকেও সরকারের আয় শূন্য। স্থানীয়দের দাবি, এটি সরকারের জন্য সরাসরি ক্ষতির উদাহরণ।

আমদানিকৃত বীজে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

২৩ অক্টোবর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইন বাংলা

বাংলাদেশ হয়তো নিজের প্রয়োজনের সব খাদ্য উৎপাদন করতে পারে, কিন্তু সেই উৎপাদন টিকিয়ে রাখার মতো বীজ উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে অর্থকরী ফসল থেকে শুরু করে শাকসবজি পর্যন্ত—দেশের কৃষি এখন নীরবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে আমদানি করা বীজের ওপর, যা আজ বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনের মূলভিত্তি হয়ে উঠেছে।

পাটের কথাই ধরুন, বিশ্ববাজারে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানটি বাংলাদেশের। অথচ সোনালী আঁশের প্রায় ৮০ শতাংশ বীজ আমদানি করা হয়,যার বেশিরভাগটাই ভারত থেকে।

উচ্চ ফলনের জন্য কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা হাইব্রিড ধানের ক্ষেত্রেও একই চিত্র—বাংলাদেশ চীন, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে বিপুল পরিমাণে বীজ আমদানি করছে। ভুট্টা, শাকসবজি, তৈলবীজ ও ডালজাত ফসলে-ও বিদেশি বীজ দ্রুত দেশীয় জাতের জায়গা দখল করছে।

অথচ দুই দশক আগেও দেশে ব্যবহৃত বীজের বড় অংশই আসত কৃষকের নিজস্ব সংরক্ষণ অথবা সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) থেকে। তখন বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ ছিল দেশের কৃষি ঐতিহ্যের অংশ। তবে সেই চিত্র নাটকীয় হাড়ে বদলে এখন একটি বড় অংশ আমদানি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্য নিরাপত্তা থাকলেও বীজ নিরাপত্তা না থাকলে সেটি কখনোই টেকসই হবে না।

শ্রমজীবি মানুষের কথা

চাকরি পাচ্ছেন না গাজীপুরের কাজ হারানো শ্রমিকেরা, কী করছেন তাঁরা

০৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

এক যুগের বেশি সময় বেক্সিমকোর পোশাক কারখানায় চাকরি করেছেন মনির শেখ। চাকরি চলে যাওয়ার পর অনেক কারখানায় ঘুরেও চাকরি পাননি। বাধ্য হয়ে এখন সবজি বিক্রি করছেন। শুধু মনির শেখ নন, কাজ হারানো শ্রমিকদের অনেকেই পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন।

চাকরি চলে যাওয়ার পর অনেক কারখানায় নতুন চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন মনির শেখ; কিন্তু যখনই কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, তিনি আগে বেক্সিমকোতে কাজ করেছেন, তখনই না করে দেয়। চাকরি জোটেনি; কিন্তু কিছু একটি তো করে পেট চালাতে হবে। সে জন্য এখন সবজি বেচে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

গত সপ্তাহের রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর চক্রবর্তী বাজার এলাকায় মনির শেখের সঙ্গে কথা হয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অনেক শ্রমিক পেশা বদল করেছেন; অনেকে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

বাস্তবতা হলো ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কসহ গাজীপুরের ছোট-বড় মিলিয়ে ১০৬টি শিল্পকারখানা নানা কারণে বন্ধ হয়ে যায়। শিল্প পুলিশের তথ্যানুসারে, চাকরি হারিয়েছেন ৭৩ হাজার শ্রমিক। অনেক শ্রমিক আগের চেয়ে কম বেতনে চাকরি পেলেও হাজার হাজার শ্রমিক এখনো বেকার। অনেকেই চাকরি না পেয়ে অটোরিকশা চালাচ্ছেন; সবজি বিক্রি, ফেরি করে পণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে নানা ধরনের পেশায় যুক্ত হচ্ছেন।

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, গুলি, এক শ্রমিক নিহত

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই শ্রমিকের নাম হাবিব ইসলাম (৩২)। তিনি নীলফামারী সদরের সংগলশী ইউনিয়নের কাজীরহাটের দুলাল হোসেনের ছেলে ও ইপিজেডের ভেনচুরা লেদার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শ্রমিক।

আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা জানান, উত্তরা ইপিজেডে অবস্থিত এভারগ্ৰীন নামে একটি কোম্পানিতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে দুই দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন ইপিজেডের শ্রমিকেরা। গতকাল সোমবার রাতে হঠাৎ করে কোম্পানি বন্ধের নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ শ্রমিক আজ মঙ্গলবার সকালে ইপিজেডের মূল দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দফায় দফায় শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। এ সময় এক শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকেরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এসময় নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

নীলফামারীতে ইপিজেডে শ্রমিকের মৃত্যু

‘কায় জানে বাবার সাথে ওইটাই মোর শেষ খাওয়া’

০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

বাবা দুলাল হোসেন (৬০) ও ছেলে হাবিব ইসলাম (২১) গতকাল সোমবার একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছেন। খাওয়ার পর ছেলে চলে যান বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে উত্তরা ইপিজেডে। বাবা বিছানায়।

ইপিজেডের ভেতরে ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন হাবিব। সকালে যখন তাঁর বাড়িতে ফেরার কথা, তখন বাড়িতে তাঁর মৃত্যুর খবর এল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হন হাবিব ইসলাম।

বাবা দুলাল হোসেন বলেন, ‘ছেলেটা আমার অনেক ভালো ছিল। খেলাধুলা করি সব সময় ফুর্তিতে থাকত। কারও সাথে ঝগড়া-বিবাদ নাই। এই সপ্তায় অর নাইট ডিউটি পইরছে। এই জন্য দিনত ঘুমায় আর সইন্ধ্যা হইলে রাইতের খাবার খায়া ডিউটিত যায়। কাইল সইন্ধ্যাত এক সাথে রাইতের খাবার খাইছি। কায় জানে বাবার সাথে ওইটাই মোর শেষ খাবার হইবে। সকালে উঠি বাইরত বেড়াইতে একজন আসি কইল হাবিব গুলি খাইছে। নীলফামারী হাসপাতালোত যায়া দেখি বাপ মোর নাই।’

আজ মঙ্গলবার সকালে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে কারখানা বন্ধ ও ছাঁটাইয়ের জেরে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে হাবিব ইসলাম নিহত হন। তাঁর বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ের কাজীরহাট গ্রামে।

প্রায় ৪৮ হাজার শ্রমিক মামলা থেকে মুক্ত

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আট বছরে শ্রমিকনেতা ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলোর প্রায় সবই প্রত্যাহার হয়ে গেছে। এর ফলে অভিযুক্ত, অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৪৭ হাজার ৭২৮ জন মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তবে শ্রমিক হত্যার অভিযোগে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় হওয়া একটি মামলা প্রত্যাহার হয়নি। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ও গাজীপুর জেলার চার থানায় শ্রমিকনেতা ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মোট মামলা ছিল ৪৫টি। সবচেয়ে বেশি ১৫টি মামলা হয়েছিল ঢাকার আশুলিয়া থানায়, আর ১৪টি হয়েছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায়। এ ছাড়া কোনাবাড়ী থানায় ১০টি, জয়দেবপুর থানায় ২টি, বাসন থানায় ২টি এবং টঙ্গী পশ্চিম থানায় ২টি মামলা ছিল। মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয় গত মাসে।

সদ্য অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়া শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাগুলো প্রত্যাহারের ব্যাপারে আমরা যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম, জেনেভায় আইএলওর প্রধান কার্যালয়ে গিয়েও আমরা তা বলে এসেছিলাম। আর এবার যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কের হার বাংলাদেশের জন্য ২০ শতাংশে এসেছে, অন্য কারণের পাশাপাশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও ভূমিকা রেখেছে বলে আমি বলব।’

১৪ মাসে ১১৫ কারখানা বন্ধ, বেকার ৮২ হাজার

০১ অক্টোবর, ২০২৫, কালের কন্ঠ

বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন ও ভাঙচুরের ঘটনায় গত ১ মে থেকে কেয়া নিট কম্পোজিট, কেয়া নিটিং, কেয়া স্পিনিং ও কেয়া ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এতে কেয়া গ্রুপের প্রায় ১৪ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী এখন বেকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গাজীপুরের কোনাবাড়ির শিল্প এলাকায় স্থাপিত তৈরি পোশাক কারখানাসহ কেয়া গ্রুপের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ১২৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে কাঁচামাল আমদানি ও পণ্য রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় ব্যবসায় ধস নামে।

শ্রমিক মজুরি, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিলসহ কারখানা পরিচালনার  ব্যয় নির্বাহে তীব্র অর্থ সংকটে পড়ে একসময়ের নামি এই প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠান বলেন, আমাদের রপ্তানি আয়ের ৬৬ কোটি ডলার সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের ফরেন কারেন্সি (এফসি) অ্যাকাউন্টে জমা করেনি। টাকা জমা দিতে ব্যাংকগুলোতে আবেদন করা হলেও সাড়া মেলেনি। পরে এ বিষয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করেও সাড়া পাননি বলে জানান।

তিনি বলেন, ওই টাকা জমা হলে ব্যাংকের পাওনার প্রায় দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা পরিশোধ হয়ে যেত। আমদানি-রপ্তানিও ঠিক থাকত। বন্ধ করতে হতো না তিলে তিলে গড়া কারখানাগুলো।

শুধু কেয়া গ্রুপের চার কারখানা নয়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গাজীপুরের ছোট-বড় ১১৫টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

বেকার হয়েছেন ৮২ হাজার ৩৩৫ শ্রমিক-কর্মী। এর মধ্যে গত দুই মাসে ৯টি কারখানা বন্ধ হয়ে বেকার আরো ৯ হাজার ২৩২ জন। সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়েছে দেশের অন্যতম বড় তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান লিজ অ্যাপারেলস লিমিটেড। মহানগরীর কুনিয়া এলাকার কারখানাটি বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়েছেন ৮৩৫ জন নারীসহ দুই হাজার ৮৩৫  শ্রমিক-কর্মচারী।

নামকরা আরো যেসব কারখানা বন্ধ হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে বেক্সিমকোর ১৩টিসহ শ্রীপুরের ডার্ড কম্পোজিট, টঙ্গীর খাঁ পাড়া এলাকার সিজন ড্রেসেস, কোনাবাড়ির পলিকন লিমিটেড, টেক্সটিল ফ্যাশন, স্ট্যান্ডার্ট সিরামিক, ক্ল্যাসিক ফ্যাশন, লা-মুনি অ্যাপারেলস, মিককিফ অ্যাপারেলসের মতো বিজিএমইএভুক্ত অনেক প্রতিষ্ঠান।

নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি না হওয়ায় বেকার শ্রমিকদের ৯০ শতাংশ এখনো কর্মহীন। অনেকে পেশা বদল করেছেন। তা ছাড়া কারখানা বন্ধের প্রভাব পড়েছে স্থানীয় অন্য ব্যবসায়। কল-কারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শিল্প পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য আপা, জয়িতা, ডে কেয়ারের কর্মীদের কী হবে

০৪ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

কর্মজীবী তানজিলা মোস্তাফিজের সন্তানের বয়স ১ বছর ১১ মাস। অনেক ছোটাছুটি করার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় গ্রন্থাগার ভবনে থাকা সরকারি দিবাযত্ন কেন্দ্রে সন্তানের জন্য একটি আসন পান তিনি।

এ দিবাযত্ন কেন্দ্রটি মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের ‘২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত হয়। আসন পেতে মা–বাবার করা ৫৫০টি আবেদন এখন অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছে।

এই প্রকল্পের মেয়াদ গত ৩০ জুন শেষ হয়ে গেছে। কেন্দ্রটির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। কাজেই মা–বাবারা কেন্দ্রে সন্তান রাখতে পারছেন। তবে কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না।

তানজিলা বলেন, তাঁর সন্তান এ দিবাযত্ন কেন্দ্রে থাকতে পছন্দ করে। কেন্দ্রটি বাসার কাছে, নিরাপদ, খরচও কম। বেসরকারি দিবাযত্ন কেন্দ্রে খরচ অনেক বেশি। তাই কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে সন্তানকে কোথায় রাখবেন, এ নিয়ে তিনি বেশ দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।

তথ্য আপারা শিশু সন্তানদের নিয়েও আন্দোলন করেছে। রোদ-বৃষ্টি ছাপিয়ে রাত-দিন ফুটপাতে এসব নারীদের অবস্থান কর্মসূচি অনেককেই নাড়া দিয়েছে।

শুধু এই কেন্দ্রের কর্মীরাই নন।  মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কয়েকটি প্রকল্পের কর্মীরা বছরজুড়ে রয়েছে দুশ্চিন্তায়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ‘মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম’ ও ‘তথ্য আপা: তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন’ প্রকল্প, জয়িতা ফাউন্ডেশন পরিচালিত রাপা প্লাজায় ‘জয়িতা বিপণনকেন্দ্র ও জয়িতা ফুডকোর্ট প্রকল্পে আড়াই হাজারের বেশি কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ৭০০ জনের বেশি নারী। কাজ হারিয়ে, বেতন না পেয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে।

পোশাক শ্রমিকদের ১২ দাবি নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান

১৩ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

তৈরি পোশাক খাতে ১২ দফা দাবি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলোর জোট ‘আরএমজি ওয়ার্কিং গ্রুপ কোর কমিটি’। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে এসব দাবি অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের হাওলাদার, ডব্লিউএফটিইউ-বিসির সদস্য সচিব রাজেকুজ্জামান রতন, আইবিসির সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, এনসিসিডব্লিউইয়ের সদস্য সচিব নইমুল আহসান জুয়েল ও শাকিল আখতার চৌধুরী এবং জি-স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী রুহুল আমিন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। এর বেশির ভাগ নারী। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ আসে এই খাত থেকে। সংবিধান, শ্রম আইন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা শ্রমিকদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখা যায়নি।

সংগঠনের উপস্থাপিত ১২ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে– ইপিজেড, এসইজেডসহ সব গার্মেন্ট শ্রমিকের জন্য একই শ্রম আইন প্রযোজ্য করা, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা ও ইউনিয়ন নেতাদের হয়রানি বন্ধ করা। গার্মেন্ট শিল্পের টেকসই উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ ও বিদ্যমান শ্রমিকদের কাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও তা আইনি সুরক্ষার আওতায় আনা। কর্মস্থলে বিল্ডিং, ফায়ার ও ইলেকট্রিক সেফটি স্ট্যান্ডার্ড বাস্তবায়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা।

বাকি দাবিগুলো হলো– পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ড বাধ্যতামূলক করা, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড নির্ধারণ। সব গার্মেন্ট শ্রমিকের জন্য মানসম্মত আবাসন ও সামাজিক নিরাপত্তা জাল সম্প্রসারণ। ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি, পিতৃত্ব ছুটি চালু এবং কারখানাভিত্তিক ডে কেয়ার কেন্দ্র স্থাপন। আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুযায়ী যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতামুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নারী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ পরিবহন চালু করা। শ্রম আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধি, ডিজিটালাইজেশন ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) প্রক্রিয়া চালু করা। শ্রম পরিদর্শন ও প্রশাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। প্রযুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকদের পুনঃদক্ষতা উন্নয়ন ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি। মানবাধিকার ডিউ ডিলিজেন্স (এইচআরডিডি) বাস্তবায়ন এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা।

ঢাকার রাস্তায় হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞাপন, নতুন সেবা ‘হিউম্যান বিলবোর্ড’

২৩ অক্টোবর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইন বাংলা

বিকেলের আলো একটু ফিকে হলেই ঢাকার রাস্তায় নেমে পড়েন একদল তরুণ। গন্তব্য—শহরের ব্যস্ত আর অভিজাত এলাকাগুলো। দলের প্রত্যেকের পিঠে একটি করে ব্যাগ, পরনে একই রকম পোশাক। ব্যাগগুলো আবার বিশেষ ধরনের—প্রতিটির সঙ্গে যুক্ত একটি করে ডিজিটাল স্ক্রিন। আর সেই স্ক্রিনই তাদের কাজের মূল মাধ্যম।

দিনের আলো ম্লান হওয়া মাত্রই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে একের পর এক ছবি ও ভিডিও—বিভিন্ন পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন। শহরের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে পথচারীদের সেই বিজ্ঞাপনই দেখান তারা।

রাজধানীর নানা ট্র্যাফিক সিগন্যালে প্রায়ই দেখা যায় তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে। কখনো শপিং মলের সামনে, কখনো আবার ব্যস্ততম রেলস্টেশন বা বাসস্ট্যান্ডেও হাজির হন তারা। স্ক্রিনে অবিরাম চলে নানা পণ্যের ভিডিও প্রচার।

ঢাকা শহরে অভিনব এই চলমান বিজ্ঞাপন সেবা চালু করেছে ‘স্মার্ট স্ক্রিন ডিজিটাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

১৫ জনের একটি দল প্রায় প্রতিদিনই শহরের নির্ধারিত কিছু স্থানে পৌঁছে যান। প্রচারণা চলে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। প্রতিদিনের এই চলমান প্রচারণা চলে ঢাকার ব্যস্ততম এলাকায়।

ঐশিকা জয়া বলেন, “গুলশান ১ ও ২, বনানী, তেজগাঁও, সীমান্ত স্কয়ার, রবীন্দ্র সরোবর লেক আর ধানমন্ডি ২৭ আমাদের ফিক্সড লোকেশন। তবে ক্লায়েন্টের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা কাস্টমাইজড সেবাও দিয়ে থাকি।”

স্থান, সময় আর লোকবলের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ কাস্টমাইজড সেবা দেয়। কোন এলাকায় বিজ্ঞাপন প্রচার হবে, কতক্ষণ বা কতদিন চলবে—সব কিছুই নির্ধারণ করা যায় ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী। এমনকি, বিজ্ঞাপনবাহকের সংখ্যা কিংবা তাদের পোশাকের ধরনও নির্ধারণ করে দেওয়ার সুযোগ থাকে গ্রাহকের হাতে।

হিউম্যান বিলবোর্ড সেবার জন্য ‘স্মার্ট স্ক্রিন ডিজিটাল’-এর রয়েছে প্রায় ৩০টি ডিজিটাল ব্যাকপ্যাক। প্রতিটি ব্যাগে থাকে শক্তিশালী ব্যাটারি ও প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। প্রতিষ্ঠানটি এগুলো চীন থেকে আমদানি না করে নিজেরাই তৈরি করেছে।

আইন সংশোধন, ২০ শ্রমিকের সম্মতিতেও করা যাবে ট্রেড ইউনিয়ন

২৪ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

বিদ্যমান শ্রম আইন অনুযায়ী কোনো কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন করতে গেলে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগে। এখন সংশোধিত শ্রম আইনে কারখানার আকারভেদে ২০ থেকে ৪০০ জন শ্রমিকের সম্মতির কথা বলা হয়েছে। যেমন কোনো কারখানায় ২০ থেকে ৩০০ শ্রমিক থাকলে ২০ জন এবং ৩০১ থেকে ৫০০ শ্রমিক থাকলে ৪০ জনের সম্মতি লাগবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বিদ্যমান আইনটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি দেশের শ্রমমানকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা, মালিক-শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকের কল্যাণ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে নতুন আইনের সারসংক্ষেপে।

বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ অধ্যাদেশ অনুমোদনের কথা সাংবাদিকদের জানান।

বিদ্যমান আইনটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি দেশের শ্রমমানকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা, মালিক-শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকের কল্যাণ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে নতুন আইনের সারসংক্ষেপে।

অনুমোদিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন হবে এখন শ্রমিকের সংখ্যা ও কারখানার আকার অনুযায়ী। কারখানার আকার বড় হলে বেশি শ্রমিকের সম্মতি নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হবে, আকার ছোট হলে শ্রমিকের সংখ্যাও লাগবে কম। অনুমোদন হওয়ার পর গতকালই তা আইন মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার (ভেটিং) জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ভেটিং শেষে জারি হবে প্রজ্ঞাপন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে এটা নিয়ে কাজ হয়েছে। শ্রমিক, কারখানার মালিক ও সরকারের মোটামুটি সম্মতি নিয়েই এটা করা হয়েছে। তিন পক্ষকেই আমি ধন্যবাদ জানাই এবং আমি বিশ্বাস করি, এটা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করা হয়েছে।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, কারখানার আকার অনুযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০ থেকে ৩০০ জন শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২০ জন, ৩০১ থেকে ৫০০ জন শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪০ জন, ৫০১ থেকে ১ হাজার ৫০০ জন শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০০ জন, ১ হাজার ৫০১ থেকে তিন হাজার শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৩০০ জন এবং তিন হাজার ১ থেকে তার বেশি শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানে ৪০০ জন শ্রমিকের সম্মতি লাগবে ট্রেড ইউনিয়ন করতে গেলে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি কারখানায় সর্বোচ্চ ট্রেড ইউনিয়ন হতে পারবে এখন পাঁচটি, বর্তমান নিয়ম তিনটি। ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা একাধিক হলে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হবে যৌথ দর-কষাকষি প্রতিনিধিদল বা সিবিএ।

এক বছরের বেশি সময় ধরে এটা নিয়ে কাজ হয়েছে। শ্রমিক, কারখানার মালিক ও সরকারের মোটামুটি সম্মতি নিয়েই এটা করা হয়েছে। তিন পক্ষকেই আমি ধন্যবাদ জানাই এবং আমি বিশ্বাস করি, এটা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করা হয়েছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন

বাংলাদেশ নিট পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, সর্বশেষ ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে শ্রমিকের সংখ্যার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা মানা হয়নি। এর দায়দায়িত্ব এখন সরকারকেই নিতে হবে।

কত ছিল এ সংখ্যা—জানতে চাইলে বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, ৩০০ জন শ্রমিক থাকা কারখানার ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন করতে ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ৩০১ থেকে ১ হাজার জনের কারখানার ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল ১৫০ জনের সম্মতি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন ছোট কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করা একটু কঠিন হয়ে যাবে। কোনো কারখানায় যদি ৩০ জন শ্রমিক থাকেন আর ২০ জন শ্রমিক মিলে যদি ইউনিয়ন করতে চান, তাহলে শতাংশ আকারে তা অনেক বেশি হয়ে যাবে, যা এত দিন ২০ শতাংশ ছিল।

শ্রমিকনেতা বাবুল আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সংখ্যার যে শ্রেণি করা হয়েছে, তা সন্তোষজনক। যদিও আমরা আরেকটু কমসংখ্যক শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন নিবন্ধনের দাবি করেছিলাম। তারপরও যা করা হয়েছে, তাতে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন সহজ হবে। তবে শ্রম দপ্তরের অনিয়ম দূর না হলে এর সুফল মিলবে না।’ তিনি বলেন, শ্রমিকের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা ও গৃহপরিচারককে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করা ইতিবাচক।

শ্রম আইনে গৃহপরিচারকদের যুক্ত করা হয়েছে। গৃহপরিচারক বলতে এমন কোনো ব্যক্তিকে বোঝাবে, যিনি নিয়োগকারীর বাসায় মৌখিক বা লিখিতভাবে খণ্ড বা পূর্ণকালীন নিয়োগের মাধ্যমে গৃহকাজ করেন। এ ক্ষেত্রে মেস বা ডরমিটরিও গৃহ হিসেবে বিবেচিত হবে।

শ্রমিককে কালোতালিকাভুক্ত করা যাবে না

মজুরি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন শ্রমিকেরা। আন্দোলন ঠেকাতে শিল্পমালিকেরা অনেক সময় শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি তাঁদের কালোতালিকাভুক্ত করেন। তখন শ্রমিকদের নতুন কারখানায় চাকরি পাওয়া কঠিন হয়। সংশোধিত শ্রম আইন অধ্যাদেশে শ্রমিকদের কালোতালিকাভুক্ত নিষেধ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক বা মালিকদের কোনো সংগঠন কর্মরত কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই, বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর বা অন্য কোনো কারণে চাকরি থেকে অবসানের পর নতুন কোনো কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করার উদ্দেশ্যে কালোতালিকাভুক্ত করা যাবে না।

গৃহপরিচারকেরাও শ্রমিক

শ্রম আইনে গৃহপরিচারকদের যুক্ত করা হয়েছে। গৃহপরিচারক বলতে এমন কোনো ব্যক্তিকে বোঝাবে, যিনি নিয়োগকারীর বাসায় মৌখিক বা লিখিতভাবে খণ্ড বা পূর্ণকালীন নিয়োগের মাধ্যমে গৃহকাজ করেন। এ ক্ষেত্রে মেস বা ডরমিটরিও গৃহ হিসেবে বিবেচিত হবে। কোনো ব্যক্তিকে জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক কোনো কাজ করানো যাবে না। কেউ এ ব্যাপারে কাউকে সহায়তাও করতে পারবে না।

এ ছাড়া শ্রমিকের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়েছে। অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, শ্রমিক অর্থ শিক্ষানবিশসহ কোনো ব্যক্তি, চাকরির শর্ত প্রকাশ্যে বা ঊহ্য যেভাবেই থাকুক না কেন, যিনি কোনো প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরিভাবে বা কোনো ঠিকাদার, যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, তাঁর মাধ্যমে মজুরি বা অর্থের বিনিময়ে কোনো দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক বা করণিক কাজে নিযুক্ত কর্মচারী বা কর্মকর্তা যে নামেই হোক না কেন, তাঁরা অন্তর্ভুক্ত হবেন।

১০০ স্থায়ী শ্রমিক থাকলে ভবিষ্য তহবিল

বর্তমান আইনে শ্রমিকদের সুবিধার জন্য ভবিষ্য তহবিল গঠনের কথা বলা থাকলেও তা বাধ্যতামূলক নয়। অধ্যাদেশে তা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ১০০ স্থায়ী শ্রমিক থাকলেই মালিকপক্ষ তাদের জন্য ভবিষ্য তহবিল গঠন করতে বাধ্য থাকবে।

তবে বিকল্প ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে ‘প্রগতি স্কিম’, যাতে মালিক ৫০ শতাংশ ও শ্রমিক ৫০ শতাংশ চাঁদা দেবেন। তবে কোনো সদস্য স্কিমে থাকতে না চাইলে লিখিতভাবে মালিকপক্ষকে জানাতে হবে।

প্রসূতি ছুটি ৮ দিন বাড়ল

প্রত্যেক নারী কর্মী প্রতিষ্ঠানের কাছে সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের আগের ৬০ দিন এবং সন্তান প্রসবের পরের ৬০ দিনের জন্য ছুটি নিতে পারবেন। কর্তৃপক্ষ এ ছুটি দিতে বাধ্য থাকবে। বর্তমানে প্রসূতি ছুটি ১১২ দিন। এখন ৮ দিন বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হলো।

গার্মেন্ট শ্রমিক সংগতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, ‘আমরা শ্রমিকের অধিকার ও জীবনমান উন্নত করতে শ্রম আইনে বিভিন্ন সংশোধন চেয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত যতটুকু জানতে পেরেছি, ইতিবাচক বলেই মনে হচ্ছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি ১৮০ দিন করার দাবি করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত ১২০ দিন করা হয়েছে। এটিকে এক ধাপ উত্তরণ বলা যায়।’

কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ তহবিল

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, আইনের অন্যান্য বিধানে যা–ই থাকুক না কেন, সরকার বিধির মাধ্যমে কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ তহবিল প্রতিষ্ঠা করবে। তহবিলের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের গঠন, তাদের কাজ, সুবিধার মাত্রা, তহবিলের অর্থায়ন উৎস ও পদ্ধতি ইত্যাদি বলা হবে বিধিতে। এটি একটি নতুন ধারা। প্রজ্ঞাপনে বলা হবে কোন কোন শিল্প বা খাতে এ তহবিল প্রযোজ্য হবে।

ধর্ম, সংস্কৃতি এবং সংখ্যালঘু-প্রান্তিক জনগোষ্ঠি

বম জাতিগোষ্ঠীর ৩ নাগরিকের কারা হেফাজতে মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি ১৫৫ নাগরিকের

আগস্ট ২, ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

চট্টগ্রাম কারা হেফাজতে বম জাতিগোষ্ঠীর তিন নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ১৫৫ নাগরিক।

এছাড়া, ‘সন্ত্রাস দমনের’ নামে বান্দরবানে নির্বিচারে সাধারণ আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন, বিশেষত বম জাতিগোষ্ঠীর নারী-শিশু ও সাধারণ নাগরিকদের বিনা বিচারে আটক ও বছরের পর বছর কারাবন্দি রাখার কথা জানিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

পাশাপাশি এতে সব নিরপরাধ বম নাগরিকদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম কারা হেফাজতে ভান লাল রুয়াল বম (৩৫), ৩১ মে লাল সাংময় বম (৫৫) ও ১৫ মে লাল থেলং কিম বমের (২৯) মৃত্যু হয়। অভিযোগ তোলা হয়েছে, লাল থেলং কিম বম বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই লাল থেলং কিম মারা যান। তার পরিবারের অভিযোগ, কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্য সন্দেহে লাল থেলং কিমকে ব্যাংক ডাকাতিসহ একাধিক মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাবন্দি রাখা হয়েছিল। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।

মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর

০৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

গত বছরের (২০২৪) ১৮ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে এক বাঙালি যুবক গণপিটুনিতে নিহত হন। পরদিন জেলার দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সহিংসতায় গণপিটুনিতে মারা যান এক পাহাড়ি ব্যক্তি। রাতে জেলা সদরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে দুই পাহাড়ি যুবক নিহত হন। এ ঘটনার জেরে ২০ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি শহরে অনিক কুমার চাকমা নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

পাহাড়ে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। কিন্তু গত বছর অনেক দিন পর পাহাড়ে এত বড় সহিংসতা ঘটল।

সংখ্যা বা ধরন যেদিক থেকেই বিচার করুন, আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন মোটেও কমেনি। বিশেষ করে পাহাড়ে সহিংসতার এমন ধরন আগে দেখা যায়নি।

কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা

নৃগোষ্ঠীর মানুষের ওপর নিপীড়নের সংখ্যা কমেনি গত এক বছরে। উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়নে। যে সংস্কারপ্রক্রিয়া চলছে, সেসবে নৃগোষ্ঠীর দাবির প্রতিফলন নেই। পাহাড়ে ভূমি কমিশনের কাজ বন্ধ।

এমন অবস্থায় আজ ৯ আগস্ট পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আদিবাসী মানুষের অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়িদের ওপর সহিংস হামলায় নিহত হন চারজন। এরপর চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে হামলা, জমি দখল, হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা কমেনি।

মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছেই

ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান কাপেং ফাউন্ডেশন গতকাল শুক্রবার চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে। সেখানে দেখা গেছে, এ সময়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীদের ওপর ২৪টি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২১টি ঘটেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে, তিনটি সমতলে। ছয়জন নারী ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। দুজন নিহত হয়েছেন।

পাহাড় ও সমতল মিলিয়ে গ্রেপ্তারের পর মৃত্যু, বিনা বিচারে আটক, মারধর, হেনস্তা এবং জোর করে ধর্মান্তরিত করার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ৩৪টি ঘটনা ঘটেছে।

কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংখ্যা বা ধরন যেদিক থেকেই বিচার করুন, আদিবাসীদের ওপর নিপীড়ন মোটেও কমেনি। বিশেষ করে পাহাড়ে সহিংসতার এমন ধরন আগে দেখা যায়নি।’

খাগড়াছড়ি শহরের দুই পাহাড়ি যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা নিয়ে সদর থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে।

রাঙামাটিতে প্রকাশ্যে পিটিয়ে নিহত অনিক চাকমার মামলার বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি সাহেব উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ৬ জন গ্রেপ্তার আছে। মামলার তদন্ত চলছে।

‘সংস্কারে জায়গা হয়নি’

এ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের সময় গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর একটিতে চাকমা সার্কেল প্রধান ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়কে একটি কমিশনে থাকার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। গত বছরের অক্টোবরে এ বিষয়ে দেবাশীষ রায় প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘সংস্কার কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা আমাকে ওই কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এরপর কীভাবে সেই নিয়োগ প্রস্তাব বাতিল হয়ে গেল, সেটা আমি বলতে পারব না।’

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনে যথাক্রমে নিরূপা দেওয়ান ও ইলিরা দেওয়ানকে রাখা হয়। কিন্তু সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি মোটেও সুবিচার করা হয়নি বলে মনে করেন নিরূপা দেওয়ান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনে ‘আদিবাসী’ শব্দটিই নেই। অথচ প্রধান উপদেষ্টা গত বছরের আগস্ট মাসে দেশে এসে এ শব্দটি নিজেই উচ্চারণ করেছিলেন। সংবিধান সংস্কার কমিশনে সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়টি একেবারে উপেক্ষা করা হয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পুরোনো দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। এ দলটির সঙ্গেই সরকার ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি করে। কিন্তু এ দলটির সঙ্গে কমিশন কোনো আলোচনা করেনি। জেএসএসের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একটি বৈঠকের জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা সাড়া দেননি।’

জেএসএসের সঙ্গে বৈঠক না করলেও পার্বত্য চুক্তিবিরোধী ইউপিডিএফের সঙ্গে একটি সংলাপ করে ঐকমত্য কমিশন। কিন্তু পরে এ নিয়ে সমালোচনা হলে দ্বিতীয়বার আর ইউপিডিএফের সঙ্গে আলোচনা করেনি।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই সরকার গঠিত হয়েছিল বৈষম্যের নিরসনে; কিন্তু সরকারের বৈষম্য বিলোপের চেষ্টা দেখিনি। সংস্কারের প্রক্রিয়ায় আমাদের ঠাঁই হয়নি। বরং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েছে।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে একটি জাতীয় পর্যায়ে পরিবীক্ষণ কমিটি আছে। অন্তর্বর্তী সরকার এটি পুনর্গঠন করে। গত ১৯ জুলাই এ কমিটির প্রথম ও একমাত্র বৈঠক হয়। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ বলতে এই একটি বৈঠক।

‘মব তৈরি করে’ দিনাজপুরে রিসোর্টে হামলা-ভাঙচুর, দরবার শরিফে আগুন

২৮ আগস্ট ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

‘মবের মত পরিস্থিতি তৈরি করে’ শত শত ‘তৌহিদি জনতা’ দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় একটি রিসোর্টে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় তারা সেখানে থাকা একটি দরবার শরিফে অগ্নিসংযোগ করে।

‘অনৈতিক এবং ইসলামবিরোধী কার্যকলাপের’ অভিযোগে এনে বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে উপজেলার কাঞ্চন মোড়ের ‘জীবন মহল’ নামে রিসোর্টে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জেলা পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন জানান।

ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

রংপুরে মহানবী (সা.)–কে কটূক্তির অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার, ১৪টি বসতঘর ভাঙচুর

২৭ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে এক কিশোরকে (১৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় উত্তেজিত লোকজন গতকাল শনিবার রাতে ও আজ রোববার বিকেলে ওই কিশোরের বাড়িসহ সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের ১৪টি বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে।

আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার কিশোর একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তৃতীয় পর্বের শিক্ষার্থী। বাড়ি গঙ্গাচড়ার বেদগাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে।

গঙ্গাচড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান প্রথম আলোকে বলেন, ওই কিশোর ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর লেখা ও ছবি দিয়েছে—এমন অভিযোগ পায় পুলিশ। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে রাত সাড়ে আটটার দিকে থানায় আনা হয়। পরে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর তার বিচারের দাবিতে মিছিলসহ উত্তেজিত লোকজন তার বাড়ির সামনে যায়। রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয়বার আরেকটি মিছিল এসে কিশোরের এক স্বজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পরে রাতে থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

রংপুরে হামলার শিকার পরিবারগুলো আতঙ্কে, বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে

২৯ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কে কটূক্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার এক কিশোরের বাড়িসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ১৪টি বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুরের পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, হামলার শিকার পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড। আতঙ্কে পরিবারগুলো গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও অন্য মালামাল ভ্যানে করে সরিয়ে নিচ্ছে। অনেকে গরু, ছাগল ও ধান বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। আলদাদপুর নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ও ভেতরে অবস্থান করছে সেনাবাহিনী। কাছাকাছি খিলালগঞ্জ বাজারেও পুলিশ ও সেনাসদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জীবন চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি এই রিসোর্টের মালিক। রিসোর্টের ভিতরে একটি দরবার শরিফও রয়েছে। বিকালে ‘তৌহিদি জনতার’ ব্যানারে শত শত মানুষ মিছিল নিয়ে রিসোর্টে হামলা চালাতে আসে। রিসোর্টের লোকজন সেটা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। তখন উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বাদ্যযন্ত্রের বিক্রি কমেছে ৫০ শতাংশের বেশি

২৯ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

দোকানে গিটার, কি-বোর্ড, তবলা, হারমোনিয়াম সবই সাজানো, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। বিক্রেতারা আগে যেখানে ক্রেতার ভিড় সামলাতে ব্যস্ত থাকতেন, সেখানে এখন দিনের পর দিন বেচাবিক্রি ছাড়া অলস সময় কাটছে তাদের। দেশে বাদ্যযন্ত্রের বড় মার্কেট এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাব, বসুন্ধরা সিটি, শাঁখারীবাজার—সব জায়গাতেই একই অবস্থা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক বছরে দেশের বাদ্যযন্ত্রের বাজারে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। আগে যারা নিয়মিত বাদ্যযন্ত্র কিনতেন তারা আর আসছেন না। বাদ্যযন্ত্র ব্যবসায়ীদের মতে, বিক্রির বড় অংশ নির্ভর করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কনসার্ট ও স্টেজ শো আয়োজনের ওপর। কিন্তু গত এক বছরে এসব অনুষ্ঠান ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বড় বড় কনসার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাউন্ড সিস্টেম, গিটার, ড্রামসেট, কি-বোর্ডের মতো যন্ত্রের চাহিদা কমেছে। অন্যদিকে ছোট আকারের সাংস্কৃতিক আসর কমে যাওয়ায় হারমোনিয়াম, তবলা, বাঁশি, একতারার মতো ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের ক্রেতাও নেই বললেই চলে।

গণ্ডগোলের শঙ্কায় শিরনি ছাড়া ওরস

৩০ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার শেষ হয়েছে সিলেটের হজরত শাহপরান (রহ.) মাজারের বার্ষিক ওরস। গণ্ডগোলের আশঙ্কার কথা জানিয়ে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় মাজার কর্তৃপক্ষ ভক্তদের মধ্যে শিরনি বিতরণ করেনি।

শিরনি না দেওয়ায় ভক্ত আশেকানরা ক্ষুব্ধ। তাদের ভাষ্যে, প্রথমবারের মতো ওরসে শিরনি দেওয়া হয়নি। এটি ঐহিত্যের বরখেলাপ। তিনশ ষাট আউলিয়া পরিষদের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, রাতভর এবাদত শেষে ভক্তরা শিরনি প্রত্যাশা করেন। দীর্ঘদিনের রেওয়াজ এটি। কিন্তু মব সৃষ্টির কথা বলে পুলিশের শিরনি বিতরণ বন্ধ করা দুঃখজনক। তিনি বলেন, গত বছর শাহপরান মাজার এলাকায় গানবাজনার বিরুদ্ধে একদল মানুষ হামলা করেছিল। সেটিকে অজুহাত করেছে পুলিশ।

মাজারের খাদেম আব্দুল আজিজ জানান, মারামারি হয় উল্লেখ করে পুলিশ শিরনি বিতরণ করা যাবে না জানায়। ফলে কোনো শিরনি দেওয়া হয়নি।

গোয়ালন্দে দরবারে হামলা, কবর থেকে তুলে পোড়ানো হলো ‘নুরাল পাগলা’র লাশ

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবি করা নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলার’ মরদেহ তুলে নিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তৌহিদী জনতা। এর আগে সেখানকার দরবার শরিফ ও বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা। এতে দরবারের ভক্ত, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশসহ ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এ সময় ভাঙচুর করা হয় ইউএনওর গাড়ি, পুলিশের দুটি গাড়ি।

শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লাপাড়ায় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বিরোধিতা, বাতিল হলো কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

‘ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংস্কৃতিক মৈত্রী’ ব্যানারে জড়ো হওয়া একদল ব্যক্তির আপত্তির মুখে বাতিল হয়ে গেছে স্রোত আবৃত্তি সংসদের ‘রবীন্দ্র স্মরণ দ্রোহে, জাগরণে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলার ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল।

পুলিশের উপস্থিতিতেই রাজশাহীতে খানকা শরিফে হামলা-ভাঙচুর

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ইত্তেফাক

রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের পানিশাইল চন্দ্রপুকুর গ্রামে অবস্থিত একটি খানকা শরিফে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দেড় শতাধিক লোক। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ও থানার ওসি উপস্থিত থাকলেও হামলা প্রতিরোধে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

প্রায় ১৫ বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুর রহমান ভান্ডারি নিজ জমিতে খানকা শরিফটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তার অনুসারীদের কাছে ‘পীর সাহেব’ হিসেবে পরিচিত।

নুরুলের ভক্ত রাসেলকে পিটিয়ে হত্যা, ‘বাধা দেওয়া হয় হাসপাতালে নিতেও’

৬  সেপ্টেম্বর ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

‘আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। সে কেবল নুরুল হকের ভক্ত ছিল। দরবারে থাকায় ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলল। দরবার থেকে মারতে মারতে আনার পরে ওরা আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিতে দেয়নি। হাসপাতালে নেওয়ার জন্য গাড়িতে তোলা হলে গাড়ি থেকে নামিয়ে আবার পিটিয়েছে।’—বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন গোয়ালন্দের দরবার শরিফে হামলায় নিহত রাসেল মোল্লার মা আমেনা বেগম।

গতকাল শুক্রবারের ওই ঘটনার পর আজ শনিবার সকালে নিহত রাসেল মোল্লার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপচা গ্রামে রাসেলের বাড়িতে স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভিড়। বাড়ির উঠানে মা আমেনা বেগমকে ঘিরে বিলাপ করছেন স্বজনেরা। আর ঘরের ভেতর দুই শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে কাঁদছেন রাসেলের স্ত্রী হাসি আক্তার।

নিহত রাসেল মোল্লা (৩০) পেশায় ট্রাকচালক ছিলেন। নুরাল পাগলার ভক্ত হিসেবে তাকে সবাই চিনত। পাঁচ বছর আগে হাসি আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের চার বছরের এক মেয়ে ও দুই বছরের এক ছেলে রয়েছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৃত্য শিক্ষক বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের আহ্বান জামায়াতের

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইন বাংলা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নেই। ফলে সমৃদ্ধ সিলেবাস থাকলেও শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা দেশের সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সঙ্গীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সঙ্গীত বা নৃত্য শিক্ষার্থীর আবশ্যিক কোনো বিষয় হতে পারে না। কোনো পরিবারের আগ্রহ থাকলে তারা ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষক রেখে এসব বিষয় শেখাতে পারে।’

বিবৃতিতে সরকার ও শিক্ষা উপদেষ্টাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

উচ্ছেদের ভয়ে ‘দুর্গাপূজার আনন্দ নেই’

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, কালের কণ্ঠ

‘এবার দুর্গাপূজায় আনন্দ নেই, শুধু ভয়’ কথাগুলো বলার সময় কণ্ঠ ভারী হয়ে আসছিল বেণু রানীর। সত্তরোর্ধ্ব এই নারী জানালেন, জন্ম, বিয়ে, সংসার—সবই কেটেছে বরিশালের সুইপার কলোনিতেই। শত বছরের ভিটামাটি থেকে হঠাৎ উচ্ছেদের আতঙ্কে এখন তাঁদের রাতের ঘুম উধাও।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এই সুইপার কলোনিতে তিন দশকের বেশি হরিজন সম্প্রদায়ের পরিবারগুলো বসবাস করে আসছে।

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নগরের পরিচ্ছন্নতার কাজ করে আসা মানুষগুলোই আজ নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কিত।

হরিজন সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর অভিযোগ, দুর্গাপূজার পর যেকোনো সময় কলোনি থেকে সরে যাওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কলোনির ভেতর এখন নেই পূজার আনন্দ। বেণু রানী বলেন, ‘আমাদের এবারের দুর্গাপূজায় কোনো আনন্দ নেই।

গাজীপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ, বাতাসে ভেঙেছে—দাবি পুলিশের

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি অনলাইন

গাজীপুরের কাশিমপুরে পূজা উদযাপন কমিটির প্রস্তুত করা কয়েকটি প্রতিমা দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে কাশিমপুর নামা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, বাতাসে প্রতিমা ভেঙে গিয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পূজারিরা। খবর পেয়ে কাশিমপুর থানা-পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

কুমিল্লায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৪ মাজারে হামলা ভাঙচুর আগুন

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

সামাজিক মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মাইকে ঘোষণা দিয়ে কুমিল্লার হোমনায় চারটি মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার হোমনার আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান সমকালকে বলেন ‘এ ঘটনায় উসকানি ও ইন্ধনদাতাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘বেমজা মহসিন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত বুধবার সকালে এক যুবক ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় কিছু লোক ক্ষুব্ধ হয়ে থানার সামনে জড়ো হয়ে ওই যুবকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদের শান্ত করেন। দুপুরে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় ‘বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা’ হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

ময়মনসিংহে প্রতি সপ্তাহে কাওয়ালি গানের আসর বসা খানকা শরিফে ভাঙচুর

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

ময়মনসিংহ নগরীতে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামে একটি খানকা ভাঙচুর করা হয়েছে। ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালানোর অভিযোগ তুলে আজ শুক্রবার দুপুরে একদল লোক এই ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফে’ প্রতি শুক্রবার রাতে সামা কাওয়ালি গানের আসর হয়। স্থানীয় বাসিন্দা উসমান গণি ফকির প্রায় ১৭ বছর আগে বাজারের এক পাশে সরকারি জমিতে একটি ঘর করে সেখানে ওই খানকা গড়ে তোলেন। এখানে নিজের ভক্তদের নিয়ে আড্ডা দিতেন উমসান গণি ফকির। স্থানীয় লোকজন এটিকে গণি ফকিরের আস্তানা নামে জানে। কাওয়ালি গানের আয়োজন করায় সম্প্রতি ‘অসামাজিক’ আখ্যা দিয়ে এটি বন্ধের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন একদল মুসল্লি।

আফগানিস্তান সফরে খেলাফত মজলিসের আমির

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

বাংলাদেশ থেকে আফগানিস্তান সফরে গেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হকসহ সাতজন। গত বুধবার সকালে কাবুলে পৌঁছেন তারা। দলটি জানায়, ‘ইমারাতে ইসলামিয়া’ বা তালেবান সরকারের আমন্ত্রণে সফরকারী দলটি আফগানিস্তানে গেছে। কাবুলে তাদের তালেবান সরকারের প্রধান বিচারপতি, একাধিক মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার ও নারী অধিকার বিষয়ে পশ্চিমা মহলে তালেবান সরকার নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সেখানে আসলে নারী অধিকার লুণ্ঠন বা হরণ হচ্ছে কিনা, এটা বাস্তবে দেখল তারা। অনেক সময় হয় না যে, একটা বিষয়ে ভুল ধারণা থাকে। এই বিষয়টা তারা জানল আসলে বিষয়টা সত্য কিনা।’

জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, সেই বৃদ্ধ বললেন ‘হেই থাইক্কা কামকাজ করতে পারি না’

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

বাউল ফকিরের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে ধরে তিনজন লোক জোর করে চুল কেটে দিচ্ছেন। বয়স্ক মানুষটি অনেকক্ষণ চেষ্টা করেন নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে। না পেরে শেষ পর্যন্ত অসহায় আত্মসমর্পণ করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ, তুই দেহিস।’

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেনস্তার শিকার ব্যক্তির নাম হালিম উদ্দিন আকন্দ (৭০)। তিনি ময়মনিসংহের তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে হালিম ফকির হিসেবেই চেনেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হালিম উদ্দিন পাগল বা মানসিক বিকারগ্রস্ত নন। সংসারজীবনে তিনি পুত্র ও কন্যাসন্তানের জনক। দীর্ঘ ৩৭ বছর যাবৎ জট ছিল তাঁর মাথায়। হজরত শাহজালাল (র.) ও শাহ্ পরানের (র.) ভক্ত তিনি। আগে পেশায় কৃষক থাকলেও এখন ফকিরি হালে আছেন। টুকটাক কবিরাজিও করেন। গত কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করেই একদল লোক এসে তাঁর মাথার জট, দাড়ি ও চুল জোরপূর্বক কেটে দেন। ঘটনার সময় বাধা দিতে গেলে এই বৃদ্ধ মানুষের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও বল প্রয়োগ করা হয়।

খাগড়াছড়িতে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে সমাবেশ, কাল আবারও অবরোধ

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ শুক্রবার দুপুরে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী স্কয়ারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাজারো শিক্ষার্থীসহ পাহাড়ি লোকজন যোগ দেন।

জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের চেঙ্গী স্কয়ার, মহাজনপাড়া, নারকেলবাগান, শাপলা চত্বর, আদালত সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার চেঙ্গী স্কয়ারে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সমাবেশ হয়। সমাবেশে আগামীকাল শনিবার আবারও খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন বক্তারা।

খাগড়াছড়িতে স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভে গুলিতে নিহত অন্তত ৩

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জুম্ম ছাত্র জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় আহত আরও ৪ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক আহসান হাবিব পলাশ আজ রোববার সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নিহতদের মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মোহাম্মদ সাবেরও ৩ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সদর হাসপাতালে ৩ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।’

জুম্ম ছাত্র জনতার অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ আজ রোববার তৃতীয় দিনে প্রবেশ করায় খাগড়াছড়িতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে গুইমারার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে।

তারা বলছে, গুইমারা উপজেলায় দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ৩ জন পাহাড়ি নিহত এবং মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ ৩ পুলিশ সদস্য এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে এ মর্মে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অতি শিগগির তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

‘ওরা আমার নতুন বইও পুড়িয়ে দিল’

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

‘একনিমেষেই সব শেষ হয়ে গেল। এত দিন ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা ঘর পুড়িয়ে দিল, দোকানটাও জ্বালিয়ে দিল। তারা তো শুধু আমার ঘর ও দোকান পোড়ায়নি, আমার ভাত খাওয়ার অবলম্বনও নিয়ে গেছে। এখন আমি কীভাবে চলব? আমার দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে দেব?’

কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন লা সা প্রু মারমা। স্বামীহারা লা সা প্রু সংসার চালাতেন স্থানীয় বাজারে থাকা ছোট্ট কাপড়ের দোকানের আয়ে। এখন সেই দোকানটিও নেই, নেই বসতবাড়ি। জীবনের অবলম্বন হারিয়ে হতাশায় ডুবে আছেন তিনি।

গত সোমবার বিকেলে খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার রামেসু বাজার এলাকায় কথা হয় লা সা প্রু মারমার সঙ্গে। পোড়া বাড়ির সামনের টিলায় ছোট মেয়ে ও স্বজনদের নিয়ে বসেছিলেন তিনি। পাশে ছিলেন দুই জা (স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী)। তাঁদেরও ঘর পুড়েছে, পুড়েছে দোকান।

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার রামেসু বাজার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কাছে কাপড় কেনাবেচার জন্য প্রসিদ্ধ। গত রোববার বাজারটি হয়ে ওঠে রণক্ষেত্র। সহিংসতার আগুনে পুড়ে যায় প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ও ৪০টির মতো দোকান।

তেল নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জিপ চালক তইচিং মারমা, ঘরে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইন

গাড়ির জন্য তেল আনতে গত রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় পাশের রামসু বাজারে গিয়েছিলেন খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার বটতলা এলাকার জীপ চালক তইচিং মারমা (২০)। তখন সড়ক অবরোধ করা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন তইচিং। তবে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

ঘরে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তানু মারমা, মা দানুচিং মারমা অপেক্ষায় ছিলেন। আর তার বাবা হলাচাই মারমা তখন পাগলের মত ছুটছিলেন সন্তানের খোঁজে। পরে, রাত ৮ টার দিকে ছেলের মৃত্যু সংবাদ পান হলাচাই। 

খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে ধর্ষণের আলামত নেই ডাক্তারি পরীক্ষায়, প্রতিবেদন জমা

০১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষার পর প্রতিবেদন জেলা সিভিল সার্জনের কাছে জমা দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। সেখানে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের আলামত মেলেনি বলে জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেওয়া ওই প্রতিবেদনে ধর্ষণের পরীক্ষার ১০টি সূচকের সব কটিতে স্বাভাবিক লেখা রয়েছে। এর অর্থ ধর্ষণের কোনো আলামত নেই।

ধর্ষণের আলামত পরীক্ষায় তিন চিকিৎসক দলের নেতৃত্ব দেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ জয়া চাকমা। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন, নাহিদা আকতারসহ আমরা তিনজন এ কমিটিতে ছিলাম। প্রতিবেদনটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে কী রয়েছে, বিষয়টি ওনারা জানাবেন।’

‘নাচ–গান হওয়ার খবর শুনে’ বাধা দিতে এসেছিলেন একদল লোক

০৯ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘নাচ–গান হওয়ার খবর শুনে’ একদল ব্যক্তি বাধা দিতে এসেছিলেন। মঙ্গলবার বিকেলে পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান শুরুর আগে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন প্রথম আলোকে বলেন, এখানে নাচ-গান হবে শুনে বাধা দিতে এসেছিলেন একদল লোক। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের জানিয়েছেন, এখানে নাচ–গান নয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর অনুষ্ঠান হবে। সেটা শুনে তাঁরা চলে গেছেন।

তেজগাঁওয়ে হোলি রোজারি চার্চের সামনে বিস্ফোরণ

০৮ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে হোলি রোজারি চার্চের সামনে বিস্ফোরণের শব্দের পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। আজ বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী চার্চের নিরাপত্তাকর্মীদের বরাত দিয়ে জানান, দুজনকে ককটেল ছুড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে দেখেছেন তাঁরা।

‘আপত্তি’ ওঠায় চারুকলায় হচ্ছে না শরৎ উৎসব

০৯ অক্টোবর ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

‘অনেকের কাছ থেকে আপত্তি আসায়’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজনের অনুমতি বাতিল করে দিয়েছে চারুকলা অনুষদ।

বিগত বছরের মত এবারও সেখানে ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিল সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।

চারুকলা অনুষদের একজন শিক্ষক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, মানজার চৌধুরীকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ ট্যাগ দিয়ে কেউ কেউ অনুষ্ঠান চলাকালীন ঝামেলা করতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে চারুকলা কর্তৃপক্ষ এখানে ভেন্যু বরাদ্দ বাতিল করেছে।

শেষ মুহূর্তে ‘গোলযোগ’ হওয়ার শঙ্কাকে কারণ দেখিয়ে চারুকলা কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি বাতিল করে বলে দাবি করেছেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট।

বৃহস্পতিবার সকালে ফেইসবুকে একটি পোস্টার ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কয়েকজনকে দেখা যায়, তাদের মধ্যে মানজার চৌধুরীও আছেন।

ফরিদপুরে বিচারগানের আয়োজন বন্ধ করে দিল প্রশাসন

২৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

ফরিদপুরের নগরকান্দায় ‘ইসলাম পরিপন্থী’ বলে অভিযোগ পাওয়ার পর বিচারগানের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার তালমা ইউনিয়নের রসুলপুর বাজারে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এর আয়োজন হওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রসুলপুরে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সলেমান ফকিরের উদ্যোগে এ বিচারগানের আয়োজন করা হয়। এর আয়োজন নিয়ে দুই দিন ধরে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। প্যান্ডেল ও প্যান্ডেলের ভেতরে মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল। সেখানে কিছু দোকানও বসেছিল। গতকাল সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঠিক শেষ মুহূর্তে গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুম বিল্লাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধের এ নির্দেশ দেন।

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মানবাধিকার

গোপালগঞ্জে সহিংসতা

প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা পায়নি পর্যবেক্ষণ দল

২৬ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ১১ জন নাগরিকের পর্যবেক্ষণ দল। তাঁরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, সেখানে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা তাঁরা পাননি। তাঁরা এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ঘটেছে কি না, তা যাচাইয়ে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ শহরে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন নিহত হন। পরে অনেকে গ্রেপ্তার হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা ও মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রাথমিক পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে ২২ জুলাই জেলাটি সফর করেন ১১ জন নাগরিক।

তাঁরা হলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, মোশাহিদা সুলতানা, রুশাদ ফরিদী, আইনজীবী সারা হোসেন ও মানজুর আল মতিন, সাংবাদিক তাসনিম খলিল, শিল্পী বীথি ঘোষ, লেখক ফিরোজ আহমেদ ও অধিকারকর্মী নাফিউল আলম। এ ছাড়া আরেকজন সাংবাদিক ছিলেন, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

বিএনপির কার্যালয়ের ভাড়া চাওয়ায় দোকান মালিককে পিটিয়ে হত্যা

৩০ জুলাই ২০২৫, ঢাকা পোস্ট

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় দলীয় কার্যালয়ের বকেয়া ভাড়া চাওয়ায় মো. জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া (৫৭) নামে এক দোকান মালিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিচারবহির্ভূত ২৯ হত্যা

২৬ জুলাই ২০২৫, আমাদের সময়

কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার পতন হলেও এখনও রয়ে গেছে তার রেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলেও ২৯ বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। গত বছর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চলতি বছর জুন পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধের চিত্র তুলে ধরে অধিকার। গত বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ‘ত্রৈমাসিক মানবাধিকার প্রতিবেদন’-এ আরও বলা হয়, এ সময়ে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে ২৩৩ জন। কারাগারে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের।

প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, মৃত্যুদ- হয়েছে ১৬০ জনের, বিএসএফ কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৮২৮ জনের, আক্রমণের শিকার হয়েছেন ১৬৫ সাংবাদিক, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৩৩ জন নিহত হয়েছেন ও ৬ হাজার ১৫৭ জন আহত হয়েছেন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৮৮ জন। যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৮ জন, ৩৩ নারী যৌতুক ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন। অধিকারের

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতনের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু থাকা এবং এটি বন্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩-এর বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতে নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের ঘটনাগুলো অব্যাহতভাবে ঘটছে। সংবাদ মাধ্যমের

স্বাধীনতার বিষয়ে বলা হয়, এই সময়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী, প্রশাসন, মাদক কারবারি ও ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলা, তাদের সাজা দেওয়া, তুলে নেওয়ার মতোও ঘটনা ঘটেছে।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে এক মেজর

৩১ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের ২২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ওই বৈঠক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা মেজর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সেনাবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার সেনা সদরের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করেছে পুলিশ। তাতে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তাঁরা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

জুনের তুলনায় জুলাইয়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে

০১ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

গত জুনের তুলানায় জুলাই মাসে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। কারা হেফাজতে মৃত্যু ঘটেছে দ্বিগুন। সাম্প্রদায়িক হামলা বেশি হয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার সূচকও জুলাইয়ে ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

গতকাল বৃহস্পতিবার মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে ৪৮টি রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটেছে। এতে ৯ জন নিহত ও ৫৯৩ জন আহত হয়েছেন। দুষ্কৃতকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন চারজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন একজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে মারা গেছেন দুইজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে একজনের। ভয়ে পালাতে গিয়ে মারা গেছেন একজন। পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করা হয়েছে একজনকে। কারা হেফাজতে মারা গেছেন ১০ জন। গত জুন মাসে কারা হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন পাঁচজন।

জুলাই মাসে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। ৩০ জন সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা, ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। মামলা হয়েছে তিনজনের নামে। গ্রেপ্তার হয়েছেন দুজন। সাইবার নিরাপত্তা আইনে একজনের নামে মামলা হয়েছে ও একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬ বাংলাদেশি। ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একজনকে। সীমান্তে বিএসএফ পুশইন করেছে ১ হাজার ৫৬১ জনকে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। তিনটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে ১৫টি। এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন।

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৯৪ নারী হত্যার শিকার হয়েছেন। ৫১ নারী আত্মহত্যা করেছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫৬ জন। দল বেধে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৮ জন। ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে ৭ নারীকে। ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন ২২ জন। যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ২৬ জন। তিনজনের গায়ে এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। অপহরণ ও নিখোঁজ হয়েছেন ১৩ জন। তিন জন বেআইনি সালিশের শিকার হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই মাসের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এতে ৩৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারের সমন্বয়হীনতা ও ব্যর্থতা ছিল।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৬ জুলাই সহিংসতা ও প্রাণহানি ঘটেছে। গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।

কারাগারগুলোতে এখন ৭৭ হাজার বন্দী

২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

দেশের কারাগারগুলোতে এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে দেড় গুণের বেশি বন্দী আছে। ঢাকাসহ সারা দেশের ৭০টি কারাগারে থাকার ব্যবস্থা আছে ৪২ হাজার ৮৮৭ জন বন্দীর; এখন আছে ৭৭ হাজার ২৯১ জন। অর্থাৎ কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার জন বেশি বন্দী রয়েছে।

কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় করা মামলাসহ বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় কারাগারে বন্দীর সংখ্যা বেড়েছে।

কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন পর্যন্ত (গত বছরের ৪ আগস্ট) সারা দেশে কারাগারগুলোতে বন্দী ছিল ৮৮ হাজার। সরকার পতনের পর ১২ আগস্ট বন্দীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৪৯ হাজারে। এরপর ২১ অক্টোবর সারা দেশের কারাগারগুলোতে বন্দীর সংখ্যা বেড়ে হয় ৫৫ হাজার ৮২৬। সর্বশেষ ২৮ জুলাই বন্দীর সংখ্যা আরও বেড়ে ৭৭ হাজার ২৯১ জনে দাঁড়িয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কারা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সে সময় ব্যাপক ধরপাকড় চালায়। এতে কারাগারগুলোতে বন্দী বেড়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। তখন আদালতে আইনজীবীও ছিল খুবই কম। বন্দীদের পক্ষ থেকে আবেদন করলেই তাঁরা জামিন পেয়ে যান। এতে বন্দী কমে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের পাশাপাশি পুলিশও অভিযানে নামে। গণ–অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তার হতে থাকে। অন্যান্য ফৌজদারি মামলার আসামিও গ্রেপ্তার করা হয়। এতে বন্দীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

কারা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিল ৮ হাজার ৫৩৬ জন, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–১–এ ছিল ১ হাজার ৪৫৭, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২–এ ছিল ৩ হাজার ৬৪২ জন, কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ২ হাজার ৪৪০, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ৫ হাজার ৪০৪ জন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ২ হাজার ৬৮৬, ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে ২ হাজার ২৪৯ এবং খুলনা জেলা কারাগারে ১ হাজার ৪১০ জন বন্দী ছিলেন।

সাবেক মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ সদস্যসহ আটক ২১৪

পুলিশ সদর দপ্তর ও কারা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গণ–অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী ৩২ জন, সংসদ সদস্য ৪৭ জনসহ মোট ১১৪ জন রাজনীতিবিদকে গ্রেপ্তার করা কারাগারগুলোতে এখন ৭৭ হাজার হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৬৩ জন পুলিশ সদস্য, ২৮ জন আমলা, ৭ জন সাংবাদিক ও ৩ জন ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন কারাগারে আটক আছেন। তাঁদের মধ্যে ডিভিশন পেয়েছেন ১৫৩ জন।

এর বাইরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মামলায় সারা দেশে এখন পর্যন্ত কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। তবে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৫৩১টি মামলা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া হিসাব বলছে, চলতি বছরের এপ্রিলে সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ২৮ হাজার ৪০০ জনকে, মে মাসে ৪৫ হাজার ২৭৭ এবং জুনে ৪২ হাজার ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গণ-অভ্যুত্থানের মামলার পাশাপাশি বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযানের বাইরে যৌথ বাহিনীর অভিযানেও কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবশ্য গ্রেপ্তার এই ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

শাহবাগে অবরোধকারীদের ওপর ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, দুই পক্ষকেই পুলিশের লাঠিচার্জ

০১ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন একদল ব্যক্তি। টানা ৩২ ঘণ্টা অবরোধের পর আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আরেক দল ব্যক্তি নিজেদের ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে ওই অবরোধকারীদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা শাহবাগ মোড়ের চারপাশে রাখা ব্যারিকেড (প্রতিবন্ধকতা) সরিয়ে দেন।

এর এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন পুলিশ এসে দুই পক্ষকে লাঠিচার্জ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর শাহবাগ মোড় দিয়ে পুরোদমে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

কেশবপুরে থানায় ঢুকে হুমকি, জামায়াতের পেশাজীবী সংগঠনের নেতা গ্রেপ্তার

০৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

যশোরের কেশবপুরে থানায় অনাধিকার প্রবেশ, সরকারি কাজে বাধা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে জামায়াতের সহযোগী সংগঠন পেশাজীবী পরিষদের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে যশোর শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আইনজীবী অজিয়ার রহমান কেশবপুর উপজেলা পেশজীবী পরিষদের সভাপতি। তিনি ছাত্রশিবিরের যশোর জেলা পূর্ব শাখার সাবেক সভাপতি। কেশবপুর পৌর জামায়াতের আমির জাকির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গাজীপুরে পুলিশের সামনে চাঁদাবাজদের সাংবাদিককে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল

০৭ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

গাজীপুর নগরের সাহাপাড়া এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছিলেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের সামনেই স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সাহাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিকের নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তিনি দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত। ওই সংবাদকর্মীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা

০৭ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

গাজীপুরে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। তাঁকে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্বজন রাস্তা না চেনায় গেলেন এগিয়ে আনতে, পথে দুজনকেই পিটিয়ে হত্যা

১০ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ভ্যানচোর সন্দেহে পিটিয়ে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। প্রদীপ দাস সম্পর্কে রুপলাল দাসের ভাগনির স্বামী ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রুপলাল দাস জুতা সেলাইয়ের কাজ করতেন। আর প্রদীপ দাস ভ্যান চালাতেন।

একের পর এক গণপিটুনি, ১০ দিনে নিহত ৯

১২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

দেশে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১০ দিনে দেশে অন্তত ১৩টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯ জন, আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএফএস) তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সারা দেশে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ৭৮ জন। এর সঙ্গে আগস্ট মাসের প্রথম ১০ দিনের ঘটনা যুক্ত করলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৭। এই সময়ে আহত হয়েছেন ২৬৬ জন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত কমপক্ষে ১১১ জন মানুষ ‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা) সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন।

নজরদারির সরঞ্জাম ও প্রাণঘাতী অস্ত্র কেনা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে

১৪ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

আওয়ামী লীগ আমলে কেনা নজরদারির সরঞ্জাম নিয়ে তদন্তে নামছে সরকার। এসব সরঞ্জাম কীভাবে নাগরিকদের অধিকার খর্ব করতে ব্যবহার হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকার কীভাবে অবৈধ নজরদারির মাধ্যমে মানুষের অধিকার ও বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে, তা সেখানে উঠে এসেছে। এ জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে, কোথা থেকে এনে কীভাবে এগুলো ব্যবহার করা হয়েছে– সব কিছু তদন্ত করে দেখা হবে।

শিল্পের শহরে সন্ধ্যা হলেই আতঙ্ক, ১৯ জায়গা বেশি বিপজ্জনক

২৩ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

দেশের একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি আশিক চৌধুরী ১৬ আগস্ট রাতে গাজীপুর মহানগরের বড়বাড়ি থেকে একটি অটোরিকশায় টঙ্গীর বোর্ডবাজার যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাটিতে আগে থেকেই যাত্রীবেশে কয়েকজন বসে ছিলেন। সেটি শহরের গাছা এলাকায় পৌঁছালে চালকসহ চারজন আশিকের কাছে থাকা দেড় লাখ টাকা ও দুটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।

গাজীপুরে এর আগে ৭ আগস্ট স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এক ব্যক্তিকে ছিনতাইকারীদের ধাওয়ার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে অনেকের সামনে খুন হন তিনি।

এই দুই ঘটনা গাজীপুর শহরের অপরাধ পরিস্থিতির কোনো বিচ্ছিন্ন চিত্র নয়, বরং শহরটির বাসিন্দাদের নিরাপত্তাহীনতার নিত্যদিনের পরিস্থিতি। গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) আওতাধীন এলাকায় একের পর এক ছিনতাই হচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই রাস্তায় চলাচলে আতঙ্ক তৈরি হয়। চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। অপহরণ ও ধর্ষণ বেড়েছে। খুন হচ্ছে।

ফজলুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবিতে বাসার সামনে অবস্থান

২৫ আগস্ট ২০২৫, যুগান্তর

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত আন্দোলনকারীদের ‘কালো শক্তি’ বলায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সেগুনবাগিচায় তার বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছে ছাত্র-জনতা। ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

‎সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে সেগুনবাগিচায় কনকর্ড টাওয়ারের সামনে ‘বিপ্লবী ছাত্র জনতা’ ব্যানারে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’, ‘জুলাই রাজবন্দী’-সহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।

৭ মাসে শিশু ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ

২৫ আগস্ট ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়েছে বলে উঠে এসেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যে।

আসকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ৩০৬ জন মেয়েশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ১৭৫। এ সংখ্যা ইতোমধ্যেই গত পুরো বছরে রিপোর্ট হওয়া মোট ২৩৪টি ঘটনার তুলনায়ও অনেক বেশি।

ভুক্তভোগীদের বয়সের পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে। তাদের মধ্যে ৪৯ জনের বয়স ০ থেকে ৬ বছরের মধ্যে, ৯৪ জনের বয়স ৭ থেকে ১২ বছরের মধ্যে এবং ১০৩ জন কিশোরী। ৬০টি ঘটনায় ভুক্তভোগীর বয়স উল্লেখ করা হয়নি।

নদীতে মাসে গড়ে মিলছে ৪৩ মরদেহ, পরিচয় শনাক্ত হচ্ছে না ৩০ শতাংশেরই

২৭ আগস্ট ২০২৫, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি অনলাইন

চলতি বছর প্রতিমাসে গড়ে ৪৩টি করে মরদেহ পাওয়া গেছে নদীগুলোতে, যেই সংখ্যা আগের বছরে ছিল ৩৭। এসব মরদেহের ৩০ শতাংশের কোনো পরিচয়ই মেলেনি এখন পর্যন্ত। নৌ পুলিশের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এসব তথ্য। হিসেব বলছে, মৃত্যুর অনেক সময় পর মরদেহ পাওয়া আর জনবল-লজিস্টিক সংকটে অনেকটাই বেগ পেতে হয় এসব মরদেহ শনাক্ত করতে।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে ৪৪০টি মরদেহ পাওয়া যায় নদীতে। যার মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ২৯৯টি, আর পরিচয় মেলেনি ১৪১টির। অন্যদিকে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে মরদেহ পাওয়া গেছে ৩০১টি। এর মধ্যে ৯২টি শনাক্ত করা যায়নি।

ঢাকা অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বছর প্রতিমাসে গড়ে ৪৩টি করে মরদেহ পাওয়া গেছে নদীগুলোতে। তবে এ সংখ্যা আগের বছর ছিল ৩৭। এসব মরদেহের ৩০ শতাংশের কোনো পরিচয়ই মেলেনি এখন পর্যন্ত।

রাজধানীতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভাঙচুর, আগুন

৩০ আগস্ট ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

আগের দিনের সংঘর্ষের জেরে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দুই দফা হামলায় দলটির তিনতলার কার্যালয়ের নিচতলার একটি অংশ পুড়ে গেছে।

দেশের কয়েকটি জেলায় জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার মধ্যে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীতে এ ঘটনা ঘটে।

লাঠিচার্জ করে ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে পুলিশ হামলাকারীদের জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। পরে জলকামানের পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

জাপা-গণঅধিকার সংঘর্ষ, সেনা-পুলিশের লাঠিচার্জে আহত নুর-রাশেদসহ অনেকে

৩০ অগাস্ট ২০২৫, বিবিসি বাংলা

বাংলাদেশের দুই রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। ঢাকার কাকরাইল এলাকায় এর জেরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।

গুরুতর আহত নুরুল হক নুরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, ঘটনাস্থলে ‘মব ভায়োলেন্সের’ মাধ্যমে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা হয়েছে উল্লেখ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর – আইএসপিআর জানিয়েছে, “জননিরাপত্তা রক্ষার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বল প্রয়োগে বাধ্য হয়”।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইলে এ ঘটনা ঘটে। দুটি রাজনৈতিক দলেরই কার্যালয় রয়েছে ওই এলাকায়।

মব ভিকটিম রূপলালের ছেলে জয় স্কুল ছেড়ে এখন…

আগস্ট ৩০, ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

রংপুরের তারাগঞ্জ বাজার। ফুটপাতে ছোট্ট কাঠের চৌকিতে বসে জুতা সেলাই করছে ১৪ বছরের জয় রবিদাস। পাশে যন্ত্রপাতি, সামনে কয়েক জোড়া জুতা। এখানেই বারো বছর ধরে বসতেন তার বাবা রূপলাল রবিদাস। গত ৯ আগস্ট মব সন্ত্রাসে বাবার মৃত্যুর পর সেই শূন্য আসনে বসতে হয়েছে ছেলেকে।

জয় ছিল তারাগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। বাবাকে হারিয়ে সেই স্বপ্ন থেমে গেছে তার। সংসারের ভার কাঁধে নিয়ে বাধ্য হয়ে নামতে হয়েছে পৈতৃক পেশায়।

শুক্রবার সকালে জয়কে দেখা যায় বাজারের ফুটপাতে বসে জুতা সেলাই করতে।

বাকৃবিতে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের উদ্ধারে বহিরাগতদের হামলা, সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ আহত ১০

৩১ আগস্ট ২০২৫, আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবরুদ্ধ ২০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে উদ্ধারে হামলা চালিয়েছে বহিরাগতরা। এতে সাংবাদিক-শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন।

ভেটেরিনারি অনুষদ ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রায় এক মাস ধরে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চলছে। দুই অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়ার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও সংঘর্ষ, সহ-উপাচার্যসহ আহত ১০

৩১ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ চলছে। দেড় ঘণ্টা মুখোমুখি অবস্থানের পর আজ রোববার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটের দিকে ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট–সংলগ্ন জোবরা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। ইটের আঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন ও অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক প্রান্তে কয়েক শ শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। বিপরীত দিকে ছিলেন এলাকাবাসী। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দুই পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। ইটের আঘাতে আহত অবস্থায় অন্তত ১০ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের দিকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। তাঁদের মাথা থেকে রক্ত ঝরছিল। তবে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

 

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফের ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

রাজধানীর কাকরাইলে আবারও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিন গণঅধিকারের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার ঘটনার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংহতি সমাবেশ করে দলটির নেতাকর্মীরা। পরে তারা পল্টনে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে রওনা হন। এর পরই জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

আদালতকক্ষে বিচারকের সামনেই সাংবাদিককে মারধর

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দী সাংবাদিক মনজুরুল আলমের (পান্না) জামিন শুনানি চলাকালে মারধরের শিকার হয়েছেন সময় টিভির প্রতিবেদক আসিফ হোসাইন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের এজলাসকক্ষে সময় টিভির ওই সাংবাদিককে আইনজীবীরা মারধর করেছেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মনজুরুল আলমের (পান্না) জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। লতিফ সিদ্দিকীকে আদালতে হাজির না করলেও সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে কারাগার থেকে আদালতকক্ষে তোলা হয়। এজলাসকক্ষে তখন উপস্থিত ছিলেন বাংলা আউট লুকের বিশেষ প্রতিনিধি মুক্তাদির রশিদ রোমিও। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এই সাংবাদিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্নাকে মাথায় হেলমেট, হাতে হ্যান্ডকাফ ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে পুলিশ বাঁশি বাজিয়ে আদালতে হাজির করে। তখন মনজুরুল আলম পান্নাকে বিধ্বস্ত দেখা যায়। এ সময় মনজুরুল আলম পুলিশের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা এমন কেন করছেন, আমি তো আপনাদের শত্রু নই?” এ সময় আমি সাংবাদিক পান্নাকে জিজ্ঞেস করি, ভাই, আপনাকে কি জেলের ভেতরে নির্যাতন করা হয়েছে? সাংবাদিক পান্না উত্তর দেন, “না।”’

সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদ বলেন, ‘আমি যখন মনজুরুল আলমের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তখন আদালতকক্ষে উপস্থিত আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহি আমাকে কোর্ট থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য ধমকাতে থাকেন। ‌তখন আমি বলি, আদালতকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা কেবল বিচারকের আছে। উনি বললে বের হয়ে যাব। ওনাকে বলতে দিন।’

মুক্তাদির রশিদ বলেন, ‘আমি যখন আইনজীবী মহিউদ্দিনকে এ কথা বলি, তিনি আমাকে মারধর করতে উদ্ধত হন।’

এ পর্যায়ে মারধরের শিকার হন জানিয়ে সময় টিভির সাংবাদিক আসিফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহি ভাইকে বলছিলাম, উনি সাংবাদিক। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আইনজীবী মহিউদ্দিন আমাকে ঘুষি মারেন। তখন আমার হাতে থাকা টেলিভিশনের বুমটি উঁচু করে বিচারকের উদ্দেশে বলতে থাকি, আমাকে মারধর করা হচ্ছে। আমি এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকজন আইনজীবী আমাকে এলোপাতাড়ি কিল–ঘুষি দিতে থাকেন। তখন আমার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। একপর্যায়ে আদালতকক্ষে উপস্থিত সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কাইয়ুম হোসেন, মনজুরুল আলমের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিনসহ অন্য আইনজীবী, উপস্থিত সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করেন। আমি এর বিচার চাই।’

 

দস্যুতায় ফিরছে আত্মসমর্পণকারীরা, ‘দুলাভাই বাহিনী’সহ ১৪ দল সক্রিয়

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

২০১৮ সালের নভেম্বরে ৩২টি দস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছিল সরকার। কিন্তু প্রথম আলোর অনুসন্ধান বলছে, গত বছর সরকার পতনের ডামাডোলের সুযোগে দুলাভাই বাহিনীসহ সুন্দরবনে আবার সক্রিয় হয়েছে অন্তত ১৪টি দস্যুদল। তারা নিয়মিত অস্ত্রের মুখে বনজীবীদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করছে। আত্মসমর্পণকারীদের অন্তত ১১ জন আবারও দস্যুতায় ফিরেছেন।

এ কাজে দস্যুদের পৃষ্ঠপোষক উপকূলের প্রভাবশালী একশ্রেণির মাছ ব্যবসায়ী, যাঁরা এলাকায় ‘কোম্পানি মহাজন’ নামে পরিচিত। তাঁদের নির্দেশে জেলেরা নদীতে বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরেন। তাঁরাই দস্যুদের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে দেন, প্রায় সময় মুক্তিপণও পাঠান। এতে দস্যুদের হাতে যায় টাকার জোগান, অস্ত্রের মজুত আর বিষে নষ্ট হয় সুন্দরবনের পরিবেশ।

 

রাজধানীতে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বেড়েছে

১১ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

রাজধানীতে গত ৯ মাসে ৪৯২টি বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা ছিল ৩৭৮। একই সঙ্গে মেডিকেল কলেজগুলোর মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য যাওয়া লাশের সংখ্যাও বাড়ছে।

ঢাকা মেডিকেল, স্যার সলিমুল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ এবং আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে বেওয়ারিশ লাশ দাফনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের দুজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মার্কিন দূতাবাস ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার, সোয়াট মোতায়েন

১৪ অক্টোবর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বাংলা অনলাইন

জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দূতাবাসের অনুরোধে সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাত থেকে বারিধারার কূটনৈতিক পাড়ায় অবস্থিত দূতাবাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশের বিশেষায়িত দল সোয়াট মোতায়েন করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোয়াট মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা হুমকি সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানানো হয়নি।’

 

ঢাকায় হওয়া সাইবার সুরক্ষা আইনের মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার

২১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা কমিটির সাবেক সদস্যসচিব সাকিব খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে চারটার দিকে বগুড়া শহরের নারুলী এলাকার বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগ থানায় করা একটি মামলায় সাকিব খানকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ, সেটা শাহবাগ থানা-পুলিশ বলতে পারবে। র‍্যাব-১২ এর বগুড়ার স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ফিরোজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল সাকিব খানকে গ্রেপ্তার করেছে। র‍্যাব অভিযান পরিচালনায় তাদের সহযোগিতা করেছে।’

‘নিখোঁজ’ কারা ডিআইজিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে

২২ অক্টোবর ২০২৫, ইত্তেফাক

অবশেষে অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি (প্রিজন্স) শেখ আব্দুল অমিক ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনার সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৭০, তালুকদার স্টেটের ৬/ডি-২ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে কে বা কারা আটক করে নিয়ে যায়। শেখ আব্দুল অমিক কারা অধিদপ্তরের ডিআইজি (প্রিজন্স) হিসাবে অবসরে যান ২০১২ সালে।

পুলিশের অভিযোগ, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিন্ন নামে একটি আইডি খুলে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উস্কানিমূলক, ভুয়া, মিথ্যা বানোয়াট পোস্টের মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে কারা বিদ্রোহ করার চেষ্টা করছেন। তিনি ফেসবুকে তার আইডিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সরকার বিরোধী বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

সূত্র মতে, সম্প্রতি শেখ আব্দুল অমিক কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেনের বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক আদেশ জারির কারণে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে বিচারাধীন।

গণতন্ত্র মতপ্রকাশের অধিকার

পক্ষে গেলে সাংবাদিকতা মুক্ত, বিপক্ষে গেলে ‘মব’

০৭ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে দেশের গণমাধ্যমগুলো নতুন ধরনের চাপের মুখে পড়েছে। প্রতিবেদন পক্ষে গেলে সাংবাদিকতা ‘মুক্ত’ থাকে, বিপক্ষে গেলে ‘মবের’ (উশৃঙ্খল জনতা) শিকার হতে হয়।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গতকাল বুধবার সকালে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আয়োজিত এক সংলাপে কয়েকজনের বক্তব্যে এই অভিমত উঠে আসে। ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: অভিযোগ নিষ্পত্তি ও স্বনিয়ন্ত্রণের বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।

সংলাপে সম্মানিত অতিথি ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ওপর চাপের ক্ষেত্রে এখন একটি ‘সামাজিক শক্তি’ সক্রিয় রয়েছে। সারা বিশ্বেই কর্তৃত্ববাদী শাসন থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সময় নতুন সামাজিক শক্তিগুলোর উদ্ভব ঘটে, তারা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং কখনো কখনো তা ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়। এ দেশেও তার কিছু প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। তবে এ ধরনের ঘটনায় যে পরিমাণ সহিংসতা হয়, সৌভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে তা হয়নি।

কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীনদের সংখ্যা বেড়ে ৪৮.৫০ শতাংশ

১১ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীন মানুষের হার আরও বেড়েছে। গত বছরের অক্টোবরে ৩৮ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন তাঁরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। ৮ মাস পর এখন ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ বলছেন, কাকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে তাঁরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।

কাকে ভোট দেবেন, তা বলতে চান না ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ মানুষ। আর ভোট দেবেন না বলেছেন ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভে ৩’-এর ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে’ জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। বিআইজিডি ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্ম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

নজরদারির সরঞ্জাম ও প্রাণঘাতী অস্ত্র কেনা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে

১৪ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

আওয়ামী লীগ আমলে কেনা নজরদারির সরঞ্জাম নিয়ে তদন্তে নামছে সরকার। এসব সরঞ্জাম কীভাবে নাগরিকদের অধিকার খর্ব করতে ব্যবহার হয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকার কীভাবে অবৈধ নজরদারির মাধ্যমে মানুষের অধিকার ও বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে, তা সেখানে উঠে এসেছে। এ জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে, কোথা থেকে এনে কীভাবে এগুলো ব্যবহার করা হয়েছে– সব কিছু তদন্ত করে দেখা হবে।

ধানমন্ডি বত্রিশে দাঁড়িয়ে ওসি: প্রেস সচিবের নির্দেশনা অনুসরণ করছি

১৫ আগস্ট ২০২৫, ঢাকা ট্রিবিউন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এ সময় ৩২ নম্বর সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও হামলাকারীদের ঠেকাতে দেখা যায়নি; কাউকে মারধর করে তুলে দেওয়া হলে পুলিশ তাকে নিয়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশ বলছে, তারা সরকারের প্রধান উপদেষ্টার “প্রেস সচিবের নির্দেশনা” মোতাবেক কাজ করছেন।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের দুই পাশেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রেখেছে। শুধু গণমাধ্যমকর্মীদের ভেতরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। দুই পাশেই ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদেরও দেখা গেছে। এছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা বাড়ির সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পাহারা দিতেও দেখা গেছে।

৩২ নম্বরে ফুল দিতে আসা সেই রিকশাচালক কারাগারে

১৬ আগস্ট ২০২৫, বাংলা ট্রিবিউন

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে গণপিটুনি ও মব ভায়োল্যান্সের শিকার রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে জুলাই আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

শনিবার (১৬ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জেনিফার জেরিনের আদালত এ আদেশ দেন।

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ আটক ৩

১৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে আয়োজন করা হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সেখানে অংশগ্রহণ করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাতে দোয়া মাহফিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রাতেই এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

ঢাবিতে শাকিব খান-জয়া আহসানদের ছবিতে জুতা ছুড়ল ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’

১৬ আগস্ট ২০২৫, আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানানো সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের ছবি টাঙিয়ে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়।

আজ ১৬ আগস্ট (শনিবার) বিকেল ৫টায় ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্টদের ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে তাদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করা হয়।

আয়োজকদের একটি ব্যানারে লেখা ছিল ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বয়কট করুন’; ‘শহীদের রক্তকে তাচ্ছিল্য করে গণহত্যার পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করে এদের চিনে রাখুন।’

আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের নাম-সংবলিত পোস্টারে জুতা নিক্ষেপ করে। এ তালিকায় চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, শমি কায়সার, শম্পা রেজা, অরুণা বিশ্বাস, নাজিফা তুষি, সাজু খাদেম, মুমতাহিনা টয়া, সুনেরাহ বিনতে কামাল, পিয়া জান্নাতুল, আরশ খান, খায়রুল বাশার, ইরফান সাজ্জাদ, শাকিব খান, কচি খন্দকার, মেহের আফরোজ শাওন, সংগীতশিল্পী লিঙ্কন (আর্টসেল), রাহুল আনন্দ, নাট্যকার সুমন আনোয়ারসহ আরও অনেকে রয়েছেন।

লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি অধ্যাপক কার্জনসহ ডিবি হেফাজতে ১৫ জন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার

২৮ আগস্ট ২০২৫, আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা থেকে আটক আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার দেখাবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিবির নতুন প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম।

ডিআরইউ ভবনের শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি সংগঠন।

‘স্লোগান দিয়ে’ কারাগারে ‘বাকপ্রতিবন্ধী’ সাইদ, দুশ্চিন্তায় পরিবার

৩১ আগস্ট ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের পাশে ২৪ অগাস্ট ঝটিকা মিছিল করে আওয়ামী লীগ, যেখান থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে সাইদ শেখও আছেন, যিনি একজন ‘বাকপ্রতিবন্ধী’।

পল্টন থানার ওই মামলায় বলা হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার পাশাপাশি বড় ধরনের ‘অঘটন’ ঘটাতে আসামিরা রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেন এবং সমাবেশ আয়োজনের চেষ্টাও করেন।

সাইদের আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন, বাকপ্রতিবন্ধী কীভাবে স্লোগান দেবেন? তার ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

তবে পুলিশের দাবি, নিষিদ্ধ দলের হয়ে সাইদ মিছিলের সামনে থেকে স্লোগান দিয়েছেন।

পল্লী বিদ্যুতের আন্দোলনে দেশবিরোধী শক্তির ইন্ধন রয়েছে: প্রেস সচিব

৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সময় নিউজ

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মী অসন্তোষ দূর করতে ও তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ করতে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রোববার (৭ সপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সমস্যা সমাধানে দুটি কমিটি করা হয়েছে। বদলিকৃতদের পূর্বের জায়গায় ফেরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সাময়িক বরখাস্তদের পূর্বের পদে ফেরানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ সময় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে আন্দোলনে দেশবিরোধী শক্তি ইন্ধন দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন প্রেস সচিব।

তিনি বলেন, কর্মীদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে। কর্মবিরতির কোনো প্রয়োজন দেখছে না অন্তর্বর্তী সরকার। আন্দোলনের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহকসেবা ব্যাহত হলে সরকার কঠিন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

এরআগে, পল্লী বিদ্যুতের সংস্কার, চাকরি বৈষম্য দূরীকরণ ও হয়রানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধসহ চার দফা দাবিতে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণছুটিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ ঠেকাতে দুই অ্যাপ বন্ধের চিন্তা

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং অনলাইন বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল থেকে গত বুধবার যে ২৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাঁদের মধ্যে দেড় শতাধিক ব্যক্তি দুটি অ্যাপ ব্যবহার করে যোগাযোগ রাখতেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় এ বিষয় তুলে ধরা হয়। সূত্র জানায়, বৈঠকে আলোচনা হয় যে সরকার আপাতত রাতে অ্যাপ দুটির (টেলিগ্রাম ও বোটিম) ব্যবহারে গতি কমিয়ে দেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দুই অ্যাপ বাংলাদেশে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মাধ্যমে নতুন করে দমনপীড়ন

১০ অক্টোবর ২০২৫, মানবজমিন

সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন করে দমনপীড়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সমালোচনা করেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচডব্লিউআর)। বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থকদের গ্রেপ্তারে সম্প্রতি সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ব্যবহার বাড়াচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশে কর্তব্যরত জাতিসংঘের মানবাধিকার দলের উচিত নির্বিচারে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানানো এবং মানবাধিকার সমুন্নত করতে ও বেআইনিভাবে রাজনৈতিক সহিংসতাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে উৎসাহিত করা।

এইচডব্লিউআর বলছে, ২০২৫ সালের ১২ই মে এক নির্দেশে সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ক্ষমতা ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ওপর ‘সাময়িক’ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় দলটির সভা-সমাবেশ এবং অনলাইন  প্রোগ্রাম নিষিদ্ধ করা হয়। এই আইনের মাধ্যমেই এখন আওয়ামী লীগের কর্মী ও শান্তিপূর্ণ অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, শেখ হাসিনার আমলে মানুষ যেভাবে দলীয় পক্ষপাতিত্ব সহ্য করেছে ঠিক সেই পথে হাঁটা উচিত নয়। তা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দিয়ে কারাগার পূরণ হোক বা শান্তিপূর্ণ ভিন্নমত দমনই হোক। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তার বন্ধে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই সন্দেহজনক হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। বহু আটক ব্যক্তি হেফাজতে দুর্ব্যবহার এবং চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করেছে। যা হাসিনা আমলের দমনপীড়নের ভয়াবহ স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।

গত ২৮শে আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ আয়োজিত এক আলোচনা সভা থেকে সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদসহ ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় একদল লোক অংশগ্রহণকারীদের ঘিরে ধরে হয়রানি করে এবং তাদের আওয়ামী লীগের অনুগত বলে অভিযুক্ত করে। সভায় থাকা সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্না পুলিশের সাহায্য চাইলে, পুলিশ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো ১৬ জন অংশগ্রহণকারীকে আটক করে। এদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীও ছিলেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সন্ত্রাস দমন আইনটি প্রণীত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্য জানিয়েছে, ২০২৫ সালের সংশোধনীর লক্ষ্য হলো ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ সদস্যদের অন্যায় কাজের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক দল ও ছাত্রদের দাবির ভিত্তিতেই এ কাজ করছেন অন্তর্বর্তী সরকার।

কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা দমন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড লঙ্ঘন করে। বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদ সতর্ক করে দিয়েছে যে, সন্ত্রাস দমন আইনের সংশোধনী ‘মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সীমিত করবে। যদিও ড. ইউনূস মত প্রকাশের স্বাধীনতায় কোনো বিধিনিষেধের কথা অস্বীকার করেছেন।

অন্যদিকে, সরকার রক্ষণশীল মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা কখনো আওয়ামী লীগ সমর্থকদের লক্ষ্য করে, আবার কখনো নারীর অধিকারের বিরোধিতা করে সহিংসতা চালাচ্ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত মবের হামলায় কমপক্ষে ১৫২ জন নিহত হয়েছেন।

একজন রাজনৈতিক কর্মী এইচআরডব্লিউ’কে বলেছেন, এখন আমাদের সামনে দু’টি পথ খোলা- হয় সন্ত্রাসী তকমা নিয়ে জেলে যাওয়া, নয়তো মবের শিকার হওয়া। দোষীদের শাস্তি হোক, কিন্তু সেটা অবশ্যই একটি ন্যায্য বিচার ব্যবস্থার অধীনে হতে হবে। যা ইউনূস সরকার দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

চাঁদাবাজির মামলায় ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমার ৮ বছরের কারাদণ্ড

১০ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

চাঁদাবাজির একটি মামলায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সংগঠক মাইকেল চাকমাকে আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত বুধবার রাঙামাটির অতিরিক্ত দায়রা জজ তাওহিদুল হক এ রায় দেন। একই মামলায় সুমন চাকমা নামে আরেক ব্যক্তিকেও আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর মাইকেল চাকমা ও সুমন চাকমাকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। পরে তাঁদের অস্ত্র ও টাকাসহ লংগদু থানায় হস্তান্তর করা হয়। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও চাঁদাবাজির সময় দুজনকে আটক করা হয়েছে অভিযোগ এনে তাঁদের বিরুদ্ধে লংগদু থানায় মামলা হয়েছিল।

দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির যাতে প্রতিবাদ না হয় সে জন্য বন্দরে সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা: আনু মুহাম্মদ

১১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

অর্থনীতিবিদ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। বলা হয়েছে, যানজটের কারণে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। তার মানে ১১ নভেম্বরের পর থেকে যানজট যদি হয়, আমদানি-রপ্তানির সমস্যা হবে না। এই এক মাসই শুধু সমস্যা। এর মানে এই এক মাস যেন কোনো প্রতিবাদ না হয়। এর অর্থ, তাঁদের ইচ্ছা আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ও বিপজ্জনক একটি চুক্তিতে যাওয়া।’

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামে ‘জাতীয় সক্ষমতা ও জাতীয় নিরাপত্তা: চট্টগ্রাম বন্দর ও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গ’ শিরোনামে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে এ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং টার্মিনালকে বিনা টেন্ডারে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া দেশের জন্য নিরাপত্তাঝুঁকি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় জিয়া স্মৃতি জাদুঘর সেমিনার হলে এ সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি ও গণতান্ত্রিক অধিকার আন্দোলন। এতে মূল দাবি ছিল, জাতীয় সমুদ্রবন্দর জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে। উপস্থিত বক্তারা চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি অপারেটর নিয়োগে ঝুঁকি ও বন্দরের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ: কর্তৃপক্ষের অবাধ ক্ষমতায় অপব্যবহারের ঝুঁকি

১২ অক্টোবর ২০২৫,

অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়ায় ব্যক্তির উপাত্তের ওপর অধিকার এবং তা ব্যবহারের বিধান রাখা হয়েছে। তবে বহুল আলোচিত এই অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়ায়ও সরকারের নির্বাহী বিভাগের অবাধ ক্ষমতা রয়ে গেছে, যাতে অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি হবে।

এ ছাড়া অনুমোদিত খসড়ায় উপাত্ত মজুতকরণের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর এই বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার গত বৃহস্পতিবার অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন দেয়। এতে নাগরিকের ব্যক্তিগত বিভিন্ন উপাত্তের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তার ওপর অধিকার দেওয়া হয়েছে।

উপাত্ত সুরক্ষার বিধান করার জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৯ সাল থেকে কাজ করছিল। তারা একাধিক খসড়াও করেছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের এপ্রিলেও তারা একটি খসড়া করেছিল।

অন্তর্বর্তী সরকার এসে উপাত্ত সুরক্ষার বিধান নিয়ে কাজ শুরু করে। অনুমোদিত খসড়ায় উপাত্তের সংজ্ঞা, সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অধ্যাদেশটি জারির ১৮ মাস পর তা কার্যকরের কথা বলেছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের আইন প্রয়োগে আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন।

অধ্যাদেশটি কোনো ব্যক্তি, উপাত্ত জিম্মাদার, প্রক্রিয়াকারী বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত দায়িত্ব পালনকারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করে বাংলাদেশি নাগরিকদের উপাত্ত যাঁরা প্রক্রিয়া করেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ মেটা-গুগলের মতো প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো এর আওতায় আসবে। যদিও এসব প্রতিষ্ঠানকে বিধান লঙ্ঘনের দায়ে শাস্তি প্রদানের বিষয়টি অনুমোদিত খসড়ায় আছে, তবে কিছু অস্পষ্টতার কারণে তাদের দায় এড়ানোর রাস্তাও খোলা রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার তার সর্বশেষ খসড়ায় উপাত্ত সুরক্ষা বিধান লঙ্ঘনের জন্য কোনো ফৌজদারি অপরাধ রাখেনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত খসড়ায় প্রশাসনিক জরিমানাসহ কারাদণ্ডের বিধান আছে। অর্থাৎ মেটা-গুগলের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো বিধান লঙ্ঘন করলে শাস্তি ভোগ করবে।

দখল, দুর্নীতি ও অনিয়ম

সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি, আটক ৫

২৬ জুলাই ২০২৫, সমকাল

রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার রাতে তাদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

পুলিশ বলছে, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে তারা চাঁদা দাবি করেছিলেন।

আটকরা হলেন- মো. সিয়াম, সাদমান সাদাব, আমিনুল ইসলাম, ইব্রাহীম হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ।

পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদ গুলশান ৮৩ নম্বর একটি সড়কে বসবাস করেন। কিছু দিন আগে সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজন শাম্মীর বাসায় যান। তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা আদায় করেন তারা। আজ সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ কয়েকজনকে সঙ্গে করে শাম্মীর বাসায় গিয়ে তার স্বামীর কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে খবর পেয়ে গুলশান থানা পুলিশ রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করে।

গুলশান থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, আজ দ্বিতীয় দফায় চাঁদাবাজি করতে গেলে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আটক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন, ১৭ জুলাই আওয়ামী লীগ নেত্রী শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় যান তাকে ধরতে। তখন শাম্মীর কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। শাম্মীরা তাদের ১০ লাখ টাকা দেন। আজ ফের চাঁদার টাকা আনতে গেলে ভুক্তভোগী পরিবার থানায় ফোন করে সহযোগিতা চান। তখন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করা হয়।

চাঁদা না দিলে পুলিশ-সেনাবাহিনী দিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়

২৭ জুলাই ২০২৫, জাগো নিউজ

চাঁদা না দিলে পুলিশ-সেনাবাহিনী দিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয় ভুক্তভোগী আবু জাফর/ছবি-সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে একজন সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচ যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

আটকরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, মো. সিয়াম, সাদমান সাদাব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ সংগঠক ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সেলের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ এবং আমিনুল ইসলাম।

পুলিশ বলছে, চাঁদা না দিলে পুলিশ বা সেনাবাহিনী দিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়। ভয়েই ১০ লাখ টাকা দিয়ে দেন ভুক্তভোগী। শনিবার (২৬ জুলাই) মধ্যরাতে এসব তথ্য জানান গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে আবু জাফর (সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের স্বামী) নামে একজন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীর বাসা থেকে গত ১৭ জুলাই ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তারা বলে পুলিশ বা সেনাবাহিনী দিয়ে গ্রেফতার করাবে। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আবু জাফর আগে আওয়ামী লীগ করতেন।

এ সময় এই প্রবাসী জানান, তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেন। তিনি কোনো রাজনীতির মধ্যে এখন নাই, দেশে এসেছেন বেড়াতে। এরপরও তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা নেয় চাঁদাবাজরা। এরপরও ভুক্তভোগী আবু জাফর পুলিশকে জানাননি।

এর দুইদিন পর বাকি ৪০ লাখ টাকা নিতে চাঁদাবাজরা ওই বাসায় আবার যায়। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদের নেতৃত্ব ৪০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। এরপর আবু জাফর পুলিশকে জানালে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতেনাতে পাঁচ চাঁদাবাজকে আটক করে।

সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি

অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা ছাত্রের বাড়িতে হঠাৎ উঠছে ভবন, এলাকায় নানা আলোচনা

২৭ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার আবদুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগে পাকা ভবন তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় আড়াই মাস আগে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে দেওয়া হয়েছে ছাদ ঢালাই।

সেনবাগ উপজেলার নবীপুরে আজ রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে চারটি কক্ষ রয়েছে।

আবদুর রাজ্জাক বর্তমানে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। গত শনিবার রাতে গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসা থেকে রাজ্জাকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানায় করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্জাকসহ চারজনকে আজ সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। ঘটনার পর আবদুর রাজ্জাককে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

রাজ্জাকের গ্রামে গিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, আর্থিক অনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা একজন ছাত্রের বাড়িতে হঠাৎ পাকা ভবন নির্মাণ নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে। এ আলোচনায় নতুন মাত্রা পেয়েছে চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজ্জাকের গ্রেপ্তার ঘটনা। যদিও জমানো টাকা, অনুদান ও ঋণ নিয়ে ভবনটি করা হচ্ছে বলে দাবি পরিবারের।

এনসিপির নেতার কথোপকথন

‘তোমরা দেখো ওর থেকে আরও পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না’

১০ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

চট্টগ্রামে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন দমাতে ৫ লাখ টাকার চাঁদা চাওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনার আরেক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলন বন্ধে টাকা চাইতে শোনা যায় তাঁকে।

এর আগে গত ৫ জুলাই নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেন এক নারী। চিঠিতে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন নিজাম উদ্দিন। নিজাম তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্যসচিব ছিলেন। অভিযোগের পর তাঁর পদও স্থগিত করা হয়। পরে তাঁকে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি আপলোড করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব রাহাদুল ইসলাম। তিনি লিখেছেন, ‘সাইফপাওয়ার টেকবিরোধী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিজাম উদ্দিন ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এটা শুধু দুর্নীতিই নয়, এটি ছাত্র ও জনতার বিশ্বাসের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা।’

জনকণ্ঠ দখলের অভিযোগ, কে এই আফিজ

০৫ আগস্ট ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

কর্মীদের একটি অংশের পাল্টা সম্পাদকীয় বোর্ড গঠনের মধ্য দিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠ দখলের অভিযোগের মধ্যে সামনে এসেছে একটি নাম, যে নাম বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাংবাদিক মহলে নানা কারণে আলোচনায় ছিল।

আফিজুর রহমান সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর। বিস্ময়করভাবে প্রায় ১১ বছর তার কাজের জায়গা ছিল প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর বা ডিজিএফআই।

সেই দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমে হস্তক্ষেপ, সাংবাদিকদের ডিজিএফআই কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ‘হয়রানি ও চাপ প্রয়োগ’, কোনো প্রতিবেদন কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিপক্ষে গেলে ‘হুমকি-ধামকি দেওয়া’, এমনকি সাংবাদিক সমিতির নির্বাচনে প্রভাব খাটিয়ে প্রার্থীদের বসিয়ে দেওয়ার মত বহু অভিযোগ সে সময় ওঠে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ পাঁচ বছর বিতর্কিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন আফিজ।

সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর তিনি নাফিজ সরাফাতের পত্রিকা দৈনিক বাংলার নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। এখন তিনি গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারের চিফ অপারেটিং অফিসার।

জনকণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক শামীমা এ খানের অভিযোগ, গত শনিবার ‘ষড়যন্ত্র করে মব সৃষ্টি করে’ দখল করা হয়েছে জনকণ্ঠ ভবন। আর এর পেছনের ‘মূল ব্যক্তি’ হলেন আফিজুর রহমান।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক

১৭ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা বেগমের সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

মো. আক্তার হোসেন বলেন, আহমেদ আকবর সোবহান দেশে প্রায় ৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি স্থাবর সম্পদ ও ১৮৪ কোটি টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫২ কোটি টাকা। অভিযোগ অনুযায়ী, এই সম্পদ তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। তাঁর স্ত্রী আফরোজা বেগম দেশে প্রায় ১১৭ কোটি টাকার স্থাবর ও ৩৩৫ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪৫৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদ অর্জন করেছেন।

দুদকের অনুসন্ধান: পাথর লুটে জড়িত ৪২ নেতা–ব্যবসায়ী, ভাগ পেতেন ডিসি–এসপি

২২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪২ জন রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তালিকায় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা আছেন। এ ছাড়া লুটাপাটে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবির নিষ্ক্রিয়তা ও সহযোগিতা ছিল।

সাদাপাথর এলাকায় এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালিয়ে দুদক এসব তথ্য জানতে পেরেছে। ১৩ আগস্ট দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এ অভিযান চালায়। পরে অভিযানে পাওয়া যাবতীয় তথ্য প্রতিবেদন আকারে ঢাকায় পাঠানো হয়। এটি গতকাল বুধবার জানাজানি হয়।

শতকোটি টাকার সরকারি জমি সাড়ে ৫ লাখে বিক্রি

২২ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদামের শতকোটি টাকার সরকারি জমি বিক্রি নিয়ে জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৬০ বছর আগে আদমজী জুট মিলের নামে হস্তান্তরিত এবং পরবর্তী সময়ে সরকারি খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত জমি সম্প্রতি ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে বিক্রি দেখানো হয়েছে।

রেকর্ড অনুযায়ী, সিএস খতিয়ান নম্বর ১৫৫৭ ও এসএ খতিয়ান নম্বর ২১০৯ এর জমির মালিক ছিলেন রেবতী মোহন দাস। ১৯৬৩ সালে এক্সিকিউশন কনভেয়েন্স ডিডের (লিখিত দলিল যা আইনিভাবে কার্যকর) মাধ্যমে জমিটি আদমজী জুট মিলস লিমিটেডের নামে হস্তান্তরিত হয়।

সিলেটে পাথরের পর টিলাও সাবাড়

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

কী পরিমাণ টিলা সিলেটে ছিল, এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান সরকারি কোনো সংস্থার কাছে পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জানিয়েছে, জেলায় ১ হাজার ২৫টি ছোট-বড় টিলা ছিল। নগর এবং সদর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় থাকা এসব টিলার আয়তন ২৫১ একর। সব উপজেলাতেই কমবেশি টিলা কাটা হচ্ছে।

পরিবেশবাদী একাধিক সংগঠন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের আগের আড়াই দশকে সিলেটে অন্তত ৩০ শতাংশ টিলা সাবাড় হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর প্রশাসন, পুলিশ ও পরিবেশ অধিদপ্তর কয়েক মাস ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিল। এ সুযোগে অবাধে টিলা কাটা চলে। এ সময় অন্তত ১৫ শতাংশ টিলার মাটি কমবেশি সাবাড় হয়। ২০২৪ সালের আগে-পরে ৪৫ শতাংশ টিলা পুরোপুরি বা আংশিক সাবাড় হয়েছে।

সমন্বয়ক পরিচয়ে জুলাইয়ের মামলা থেকে অব্যাহতির কথা বলে চাঁদাবাজি: ৩ জন কারাগারে

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অনলাইন বাংলা

জুলাই আন্দোলনের মামলা থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার করা মামলায় তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন-  এএইচএম নোমান রেজা, তানজিল হোসেন ও ফারিয়া আক্তার তমা।

রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র: নিয়োগ ও টেন্ডারে অনিয়মের খোঁজে দুদক

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগ ও টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল অবৈধভাবে বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের একটি অভিযোগ অনুসন্ধান শুরুর তথ্য দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন।

তিনি বলেন, “এনফোর্সমেন্ট দল অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন ‘বরাদ্দ হয়নি’

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় গত জুলাই মাসে ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) উপকারভোগীদের জন্য ৭৭ দশমিক ৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রক্রিয়া অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ চাল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) একজন ডিলার (পরিবেশক) তুলেও নেন। তবে ওই মাসে টিসিবির অন্য পণ্য পেলেও চাল পাননি বলে অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদপুরের ৮ ইউনিয়নে টিসিবির উপকারভোগী কার্ডধারী আছেন ১৫ হাজার ৫৬৭ জন। এসব উপকারভোগী নিজেদের কার্ড দেখিয়ে প্রতি মাসে একবার ইউনিয়নের টিসিবির নিয়োগ করা ডিলারের কাছ থেকে বাজারের চেয়ে কম মূল্যে তেল, চিনি, ডাল ও চাল কিনতে পারেন। গত জুলাইয়ে ডিলারদের কাছ থেকে তেল, চিনি ও ডালের একটি প্যাকেজ কিনতে পেরেছেন তাঁরা। ওই মাসে চালের বরাদ্দ আসেনি বলে জানানো হয় কার্ডধারীদের।

৩৫ লাখের বিনিময়ে ২৯৯ কোটির কর হয়ে যায় ৩৩ কোটি টাকা

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ইত্তেফাক

একটি প্রতিষ্ঠানের ২৯৯ কোটি টাকার আয়কর মাত্র ৩৩ কোটি টাকায় নামিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দুই কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা তদন্তে জানা গেছে, এই অনিয়মের বিনিময়ে তারা ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন।

এ ঘটনায় নোয়াখালীর কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-৩-এর যুগ্ম কর কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলমকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুর কর অঞ্চলের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মোহাম্মদ মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তদন্তে উঠে এসেছে, জোবাইদা করিম জুট মিলস লিমিটেডের দুই করবর্ষে ২৯৯ কোটি টাকা কর নির্ধারণ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী আপিলের পর ট্রাইব্যুনাল সংশোধিত কর নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলে পাঠায়। কিন্তু তখন উপ-কর কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে থাকা জাহাঙ্গীর আলম কোম্পানিকে কর কমিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। পরে পদোন্নতি ও বদলির সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মাসুদুর রহমানকে দিয়ে অর্ডারশিট তৈরি করান। এতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অমান্য করে ২৯৯ কোটি টাকার কর কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩৩ কোটি টাকা।

রাজশাহীর খাদ্যগুদামে চাল নিয়ে ‘চালবাজি’, কোটি টাকার কারসাজি

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজশাহীর খাদ্যগুদামে নিম্নমানের ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল ঢুকিয়ে পরে তা পাল্টে দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এ কাজে জড়িত আছেন গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই। তাঁদের যোগসাজশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে চাল সরবরাহ ও পাল্টানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল শনিবার সকালে জেলার বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে চাল পাল্টানোর ঘটনা।

নিয়ম অনুযায়ী কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে তা চুক্তিবদ্ধ মিলারদের মাধ্যমে চাল বানিয়ে সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু অভিযোগ আছে, কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ধান না কিনেই সরাসরি নিম্নমানের চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে ধান ছাঁটাই, পরিবহন ব্যয়সহ ভালো চালের খরচ দেখিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগসাজশ করে অসাধু কর্মকর্তারা এই অনিয়ম করেছেন।

ফেনীতে নিজামের ‘ঘাটলা’ এখন বিএনপির ঘরে ঘরে

০১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে ফেনীতে এককভাবে ‘রাজত্ব’ করেছেন নিজাম হাজারী। মাস্টারপাড়ার পুকুরের ‘ঘাটলা’ থেকে নিজাম হাজারী অবৈধ উপার্জনের যে খাতগুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন, এর মধ্যে বাস, ট্রাক, টেম্পোস্ট্যান্ড, সরকারি নানা দপ্তরের দরপত্র, বালুমহাল, সীমান্তকেন্দ্রিক কালোবাজারি, মামলা–বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য।

স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, নিজাম হাজারী দলবল নিয়ে পালিয়েছেন। তাঁর সেই ঘাটলা এখন অনেকটা বিএনপির নেতাদের ঘরে ঘরে। এখানে বিএনপির কারও একক নিয়ন্ত্রণ নেই, বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত দলটির নেতা–কর্মীরা। এর মধ্যে জেলাভিত্তিক মোটাদাগে চারটি গ্রুপ আলোচিত। তাঁদের ছায়ায় গড়ে উঠেছে কিছু উপদল। এর বাইরে উপজেলায় ছোট ছোট আরও গ্রুপ গড়ে উঠছে। জেলা বা কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ না কেউ এসব গ্রুপকে ‘মুরব্বি’ হিসেবে প্রশ্রয় দেন।

ফেনী জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাবেক সভাপতি মাঈন উদ্দিন আহমেদ কামরান প্রথম আলোকে বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি, দখল–বাণিজ্য, হয়রানি থেকে রেহাই পাচ্ছে না জনগণ। আগে আওয়ামী লীগের নেতারা করতেন, এখন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা করছেন।

ফ্যাসিস্ট হাসিনার অর্থ জোগানদাতা

দিলীপ আগরওয়ালা গোপনে কারামুক্ত

১৬ অক্টোবর ২০২৫, যুগান্তর

বিতর্কিত স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী ও ধনকুবের দিলীপ কুমার আগরওয়ালা অনেকটা গোপনে কারাগার থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এর আগে জুলাই হত্যাসহ একাধিক মামলায় তাকে জামিন দেন আদালত। এর পরপরই দ্রুত তার জামিননামা কারাগারে পৌঁছায়। একপর্যায়ে কঠোর গোপনীয়তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভারতে পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম অর্থ জোগানদাতা হিসাবে পরিচিত দিলীপের এমন আকস্মিক কারামুক্তি নিয়ে আদালত অঙ্গনে তোলপাড় চলছে।

আইনজীবীদের অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া তার এভাবে কারামুক্তি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ বর্তমানে যে কোনো বন্দি মুক্তির ক্ষেত্রে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার ক্লিয়ারেন্স লাগে। এছাড়া পুলিশসহ আরও কয়েকটি সংস্থার কর্তাব্যক্তিদের কাছে ধরনা দিতে হয়। সেখানে দিলীপ একজন হাইপ্রোফাইল আসামি। রাষ্ট্রপক্ষের কারও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া তার এত দ্রুত কারামুক্তি কিছুতেই সম্ভব নয়।

অনিয়ম-দুর্নীতিতে সায় ছিল কি শরিয়াহ বোর্ডের?

১৯ অক্টোবর ২০২৫, বণিক বার্তা

আমানতের হেফাজত করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত। আমানতদারিতা হলো গচ্ছিত অর্থ বা অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে রক্ষা করা এবং পরে তা প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। ইসলামী ধারার ব্যাংকিংও গড়ে উঠেছে এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে। যদিও দেশের শরিয়াহভিত্তিক বেশির ভাগ ব্যাংক গ্রাহকদের আমানতের অর্থ ‘খেয়ানত’ করেছে। এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে সংগঠিত অনিয়ম-দুর্নীতিতে ব্যাংকগুলোর শরিয়াহ বোর্ডেরও সায় ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইসলামী ধারার ব্যাংকের নীতিনির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি। শরিয়াহ বোর্ড নামে পরিচিত এ কমিটির মূল দায়িত্ব হলো ইসলামী নীতির আলোকে ব্যাংক পরিচালনা নিশ্চিত করা, শরিয়াহসম্মত ব্যাংকিং সংস্কৃতি গড়ে তোলা এবং শরিয়াহ লঙ্ঘন থেকে ব্যাংককে রক্ষা করা। এ ধারার ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্পিত দায়িত্ব পালনে শরিয়াহ বোর্ডের সদস্যরা অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে বোর্ডে থাকা স্বনামধন্য ব্যক্তিরা অনিয়মের সঙ্গী হয়েছেন। তাদের কেউ কেউ সভার সম্মানী বাবদ ৫ হাজার টাকা নেয়ার কথা থাকলেও ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষে পরিবর্তন এলেও শরিয়াহ বোর্ড অপরিবর্তিত থেকেছে। কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন এলেও সেটি যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘অর্থ পাচার’: ১০ শিল্পগোষ্ঠীর তালিকা থেকে জেমকন বাদ, যোগ হল প্রিমিয়ার

১১ অক্টোবর ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি যে ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর ‘পাচার করা’ অর্থ ফেরত আনতে রাষ্ট্রের তিন সংস্থার যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করা হয়েছিল, সেই শিল্পগোষ্ঠীর তালিকায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

তালিকা থেকে যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের জেমকন গ্রুপকে বাদ দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবালের প্রিমিয়ার গ্রুপকে।

নতুন তালিকায় তদন্তের আওতায় থাকা শিল্পগোষ্ঠীগুলো হল—বসুন্ধরা গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, আরামিট গ্রুপ, সামিট গ্রুপ এবং প্রিমিয়ার গ্রুপ।

শিক্ষা

শিক্ষার মানে গুরুত্ব কম দিয়ে আওয়ামী সরকারের মতো ভবন নির্মাণে বড় প্রকল্প

৩১ জুলাই ২০২৫, বণিক বার্তা

গত দেড় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় অংশই একাডেমিক কার্যক্রমের তুলনায় রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য আর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদপদবি দখলে বেশি ব্যস্ত ছিলেন।

গত দেড় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় অংশই একাডেমিক কার্যক্রমের তুলনায় রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য আর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদপদবি দখলে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। এতে গবেষণায় পিছিয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি, অবনতি ঘটে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের, শিক্ষার মানও হয় নিম্নমুখী। এর প্রতিফলন দেখা গেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন র‍্যাংকিংয়ে। একসময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়ালেও এসব র‍্যাংকিংয়ে কখনই বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে—এমন আকাঙ্ক্ষার কথা উঠে এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

যদিও হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র খুব একটা বদলেছে বলে মনে করছেন না তারা। শিক্ষকদের একটি অংশ এখনো রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে বেশি ব্যস্ত। শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। শিক্ষার মানের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ দেখা না গেলেও অবকাঠামোগত প্রকল্পে বেশ সক্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে রেকর্ড ২ হাজার ৮৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন প্রকল্পে ছয়টি একাডেমিক ভবন, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নয়টি আবাসিক হল, হাউজ টিউটরদের জন্য নয়টি ভবন, আবাসিক-প্রশাসনিকসহ আরো সাতটি ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এখন পর্যন্ত সর্ববৃহৎ প্রকল্প।

মাদ্রাসা শিক্ষা

বছরে দুই লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হলেও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নেই বেশির ভাগই

২ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

দেশে প্রতি বছর কওমি ও আলিয়া ধারার মাদ্রাসা থেকে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তবে আধুনিক কারিগরি ও পেশাভিত্তিক শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় তাদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের সুযোগ একেবারেই সীমিত।

দেশে প্রতি বছর কওমি ও আলিয়া ধারার মাদ্রাসা থেকে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তবে আধুনিক কারিগরি ও পেশাভিত্তিক শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় তাদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের সুযোগ একেবারেই সীমিত। কেবল একটি ধারায় শিক্ষা নেয়া এসব গ্র্যাজুয়েটের সিংহভাগই থাকছেন বেকার, কিংবা বাধ্য হচ্ছেন অনানুষ্ঠানিক পেশায় যুক্ত হতে। অনেকে আবার নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেই যুক্ত হচ্ছেন যৎসামান্য বেতনে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আধুনিক কারিকুলামের অভাব, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা নিয়ে নেতিবাচক ধারণা, কওমি ধারার সব স্তরের স্বীকৃতি না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে তারা দেশের আনুষ্ঠানিক শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে পারছেন না। তাই কর্মমুখী শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার সমন্বয় না ঘটলে এসব শিক্ষার্থী আরো বেশি সংখ্যায় প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান থেকে ছিটকে পড়বেন। হতাশা বাড়বে বিশাল এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, কয়েক বছর ধরেই দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানটির শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩ অনুসারে, দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকার অর্থাৎ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী বেকারের সংখ্যা ৯ লাখ ৬ হাজার। এর আগে ২০২২ সালে ছিল ৭ লাখ ৯৯ হাজার। অর্থাৎ এক বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকার বেড়েছে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার জন। সাধারণ ধারার তুলনায় শ্রমবাজারে অধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন মূলত উচ্চশিক্ষিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা।

কক্সবাজার জেলায় ‘এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড এক্সপেকটেশনস অব ফরমার মাদ্রাসা স্টুডেন্টস ইন কক্সবাজার: আ ক্রস-সেকশনাল এক্সপ্লোরেশন’ শীর্ষক এক গবেষণা পরিচালনা করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)। তাতে দেখা গেছে, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক চাকরি করেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাত্র ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাদের মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যেই চাকরির হার বেশি, ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৭৮২ কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এসব শিক্ষার্থীর বড় অংশই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় নিয়োজিত। একই চিত্র উঠে এসেছে অন্যান্য জেলার মাদ্রাসা গ্র্যাজুয়েটদের বক্তব্যেও।

ঢাবির হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে, প্রক্টরের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামালেন শিক্ষার্থীরা

০৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। গত বছরের ১৭ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের তিনি এ কথা জানান।

গতকাল সকালে ঢাবির ১৮টি হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপরই ওই কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে ও হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ছাত্রদের বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। একপর্যায়ে রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের ছাত্রীরা ফটকের তালা ভেঙে বের হয়ে এসে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। দিবাগত রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

অবহেলায় শিক্ষা খাত, সংস্কারে কমিশনও করা হয়নি

১১ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়নি; বরং সিদ্ধান্তহীনতা, প্রশাসনিক জটিলতা, গতিহীনতা শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও দুর্বল করেছে। শিক্ষার বিভিন্ন পদে ব্যক্তির বদল হলেও কাজকর্মে তেমন পরিবর্তন হয়নি। দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায় আগের মতোই।

শিক্ষা বরাবরই বাজেট বরাদ্দে অবহেলার শিকার। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন চলতি অর্থবছরেও শিক্ষা খাতে মোট বাজেটের শতকরা হার বাড়েনি, বরং প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে। ফলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।

জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন বা সংশোধনের কাজও থমকে আছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারে ১১টি কমিশন হলেও শিক্ষা খাতে কোনো কমিশন গঠন করেনি অন্তর্বর্তী সরকার। প্রাথমিক শিক্ষায় একটি পরামর্শক কমিটি হলেও সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতি সামান্য।

ক্যাম্পাসে ‘চাঙ্গা’ ছাত্রশিবির ভিন্ন নামে ভোটে লড়ছে

১৯ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হয়ে ৫ আগস্টের পর শক্তভাবে ক্যাম্পাসগুলোতে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতেও সরব হয় সংগঠনটি। শিবিরের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘চাঙ্গা’ সময় পার করছেন তারা। তবে এর পরও ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তারা শিবিরের নামে প্যানেল দিচ্ছে না। তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক তিন নামে প্যানেল দিচ্ছে সংগঠনটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেল দিচ্ছে ছাত্রশিবির। শিক্ষার্থীদের দাবির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্র রাজনীতি মৌখিকভাবে নিষিদ্ধ থাকায় শিবির নেতাকর্মীরা সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।

হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিংহভাগ আসন থাকছে ফাঁকা

২৫ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

আসন সক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষার্থী পাচ্ছে না দেশের টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজগুলো (টিএসসি)। প্রতি বছর এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬২ শতাংশ আসন শূন্য থাকছে। এর পরও দেশে বাড়ছে টিএসসির সংখ্যা। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শিক্ষার সব স্তরেই মান নিশ্চিত না করে বরং অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। কারিগরি শিক্ষা খাতেও বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প নেয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ৪২৯টি উপজেলায় ৪২৯টি টিএসসি নির্মাণের দুটি প্রকল্প। এর মধ্যে একটি প্রকল্পে ১০০টি এবং আরেকটি প্রকল্পের অধীন নির্মাণ হচ্ছে ৩২৯টি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছর পর্যন্ত এগুলোর মধ্যে ৯১টি টিএসসিতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য।

প্রয়োজনীয়সংখ্যক দক্ষ শিক্ষক ও প্রচারণার অভাবসহ বিভিন্ন কারণে এ প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পর এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষাবর্ষেই আসন সংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষার্থী পায়নি। প্রকল্প দুটির মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ৩৩৮টি টিএসসির নির্মাণকাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। সম্প্রতি কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রথম প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনের প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, ৩২৯টি টিএসসি নির্মাণের দ্বিতীয় প্রকল্পটির মেয়াদও বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।

যমুনা অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের, সাউন্ড গ্রেনেড–কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ–লাঠিচার্জ

২৭ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

তিন দফা দাবিতে প্রকৌশলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় পুলিশ।

বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। জলকামান দিয়ে পানি ছোড়ে।

পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

আজ বুধবার বেলা দেড়টার পর এই ঘটনা ঘটে। এর আগে পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহবাগের মূল সড়কে অবস্থান নেন। এতে বন্ধ হয়ে যায় শাহবাগ ও আশপাশের সড়ক।

একই দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার পাঁচ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে—ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী লিখতে না দেওয়া। ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে ৯ম গ্রেডে উন্নীত না করা। ১০ম গ্রেডের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেওয়া।

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয়ের কারণ দীর্ঘ প্রস্তুতি

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

ভিপি ও জিএস পদে কোন দুজন প্রার্থী হচ্ছেন, সেটি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে কোনো ছাত্রসংগঠনই ঠিক করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ইসলামী ছাত্রশিবির।

ভোটের ছয় মাস আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় ডাকসু নির্বাচন হলে শিবিরের প্যানেল থেকে ভিপি পদে আবু সাদিক কায়েম ও জিএস পদে এস এম ফরহাদ নির্বাচন করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা ছিল শিবিরের। নির্বাচনের প্যানেল তৈরি ও প্রচারের ক্ষেত্রে সেই পরিকল্পনার ছাপ দেখা গেছে।

ইসলামপন্থী ছাত্রসংগঠন হলেও শিবির তাদের প্যানেল ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ করার চেষ্টা করেছে। নিজেদের প্যানেলে চারজন ছাত্রী ও চাকমা সম্প্রদায়ের একজন শিক্ষার্থীকে রেখেছে তারা।

শিবিরের প্যানেলের বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে হিজাব পরা এবং হিজাব না পরা—দুই ধরনের প্রার্থীই দেখা যেত। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনে ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়, এমন অনেক কাজ থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা করে গেছেন সংগঠনটির নেতারা।

মাধ্যমিক শিক্ষায় দেশের ৯৩ শতাংশ বিদ্যালয়ই বেসরকারি

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

দেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড় অংশই পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারিভাবে। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশের ২১ হাজার ৮৬টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯ হাজার ৭৫৭টি বেসরকারি, যা মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯৩ দশমিক ৭ শতাংশ। বাকিগুলোর মধ্যে ৬৯১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আর ৬৩৮টি আপগ্রেডেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে গত ১২ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব আপগ্রেডেড সরকারি বিদ্যালয়ের নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার আদেশ জারি করেছে।

শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আধিক্য এ স্তরে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এসব বিদ্যালয়ের বেশির ভাগেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা নেই। মানসম্মত শিক্ষকও নেই। এছাড়া সরকারি স্কুলগুলোর বেশির ভাগই শহরে অবস্থিত হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে, যা শিক্ষায় বৈষম্য তৈরি করছে।

ঢাবি হল সংসদ: শীর্ষ ৫৪ পদে জয়ীদের ‘অধিকাংশ শিবির সমর্থিত স্বতন্ত্র’

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল সংসদ নির্বাচনের শীর্ষ ৫৪ পদের ৫৩টিতে জয় পেয়েছেন ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীরা; একটিতে জয় পেয়েছেন ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী।

তবে ‘স্বতন্ত্র’ হিসেবে জয় পাওয়া ‘অধিকাংশ’ প্রার্থীকে নিজেদের নেতাকর্মী দাবি করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।

এবার ১৮টি হল সংসদেরর মধ্যে প্যানেল দেয় শুধু ছাত্রদল। এর বাইরে জগন্নাথ হলে ‘শহীদ জগৎজ্যোতি ব্রিগেড নামে প্যানেল দিয়েছিল ছাত্র ইউনিয়ন (মেঘমল্লার–মাঈন)। তবে শীর্ষ পদগুলোতে তারা জয় পায়নি।

প্রতিটি হল সংসদে ১৩টি করে পদে নির্বাচন হয়েছে। ১৮টি আবাসিক হলে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ মোট পদ ২৩৪টি। এসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১ হাজার ৩৫ জন।

এর মধ্যে ভিপি (সহসভাপতি), জিএস (সাধারণ সম্পাদক) ও এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদ ছিল ৫৪টি।

ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুধু জগন্নাথ হলের ভিপি পদে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের প্রার্থী জয় পেয়েছেন। বাকিগুলো গেছে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীদের দখলে।

জাকসুর ২৫ পদের ২০টিতেই শিবিরের জয়

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ—জাকসু নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা।

প্রায় ৩৩ বছর পর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ফল ঘোষণা শুরু হয় শনিবার বিকালে; ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর।

ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ১৫টিতে বিজয়ী হয়েছেন ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা। বাকি চারটি পদের মধ্যে ভিপিসহ তিনটি পদে স্বতন্ত্র এবং একটিতে বাগছাস প্রার্থী জয় পেয়েছেন।

দোকানিকে হল ভিপির তিন হাজার টাকা জরিমানা, প্রক্টর বললেন, এটা তাঁর এখতিয়ারে নেই

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একটি দোকান থেকে টেস্টিং সল্ট (এমএসজি) পাওয়ায় হল সংসদের নবনির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক দোকানিকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন ১২ সেপ্টেম্বর। তবে প্রক্টর জানিয়েছেন, এটি হল সংসদের ভিপির এখতিয়ারে নেই।

টেস্টিং সল্টের বিষয়ে প্রথমে দোকানদার অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে খাবারে তা মেশানোর কথা স্বীকার করেন। এ সময় ভিপির পক্ষ থেকে দোকানদারের সঙ্গে একটি লিখিত চুক্তিনামা স্বাক্ষরিত হয়, যাতে তিন দিনের মধ্যে জরিমানা না দিলে দোকানের চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করার কথা উল্লেখ ছিল।

প্রাথমিকে কেন সংগীত শিক্ষক, বিরোধিতায় কারা, কী বলছেন শিক্ষকেরা

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পদক্ষেপ নেওয়ার পাঁচ বছর পর এখন তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এর বিরোধিতাও হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব তৈরি করেছিল। তার ভিত্তিতে গত বছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই দুই বিষয়ে ৫ হাজার ১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবে সম্মতি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সংগীতের জন্য ২ হাজার ৫৮৩ জন এবং শারীরিক শিক্ষার ২ হাজার ৫৮৩ জন।

এরপর গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’–এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে অন্যান্য বিষয়বস্তুর পাশাপাশি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন সভা, সেমিনার, বিক্ষোভ সমাবেশে সংগীত শিক্ষকের বদলে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেছেন। সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা না হলে তাঁরা আন্দোলনেরও হুমকি দিচ্ছেন।

বিদ্যালয়ে যেনতেন পড়াশোনা, ভরসা কোচিং ও গৃহশিক্ষক

০৬ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

দেশে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাকে মাধ্যমিক শিক্ষা হিসেবে গণ্য করা হয়। যদিও ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা ধরা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে ড. কুদরাত-এ-খুদার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনে একই সুপারিশ করা হয়েছিল। কোনোটাই কোনো সরকার বাস্তবায়ন করেনি।

কুদরাত-এ-খুদার শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনে মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে দেশের শ্রমবাজারের জন্য দক্ষ কর্মী সরবরাহ করা এবং মেধাবীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করাকে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষাবিদেরা বলছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে যেনতেন শিক্ষা এই দুই উদ্দেশ্যের কোনোটাই পূরণ করতে পারছে না।

মাধ্যমিক পর্যায়ে এখন সাধারণ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে ১৮ হাজার ৯৬৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (সাধারণ বা জেনারেল) রয়েছে। এর মধ্যে ৬২৮টি সরকারি। মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ৮১ লাখ ৬৬ হাজার। শিক্ষকসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৪৭ হাজার। এ ছাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ (মাধ্যমিকেও পড়ানো হয়) আছে ১ হাজার ৪৮০টি (৬৩টি সরকারি)। এগুলোতে শিক্ষার্থী প্রায় ১৬ লাখ ১০ হাজার। শিক্ষক প্রায় ৫৫ হাজার।

বেসরকারি স্কুলগুলো আগে নিজেদের মতো করে শিক্ষক নিয়োগ দিত। তবে এখন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের অধীন পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হয়। তবে শিক্ষকের বড় সংকট মূলত সরকারি স্কুলে।

মাউশির তথ্যমতে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য, যা মোট পদের ২০ শতাংশ। শিক্ষকেরা বলছেন, জনবলকাঠামোতে সৃষ্ট পদের সংখ্যা কম। তার ওপর পদ শূন্য থাকে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপপরিচালকসহ মাধ্যমিকের অন্যান্য পদেও দীর্ঘদিন অনেক পদ শূন্য রয়েছে।

২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে ২০১৮ সালের মধ্যে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১: ৩০-এ নামিয়ে আনার লক্ষ্য ছিল (প্রতি ৩০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন শিক্ষক)। কিন্তু সরকারি বিদ্যালয়ে এখনো গড়ে প্রতি ৩৭ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন শিক্ষক রয়েছেন। যদিও বিদ্যালয় ভেদে তা কোথাও কোথাও আরও বেশি।

সরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল। অথচ এই বিদ্যালয়ে প্রায় এক বছর ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যিনি আছেন, তিনিও চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। তিনিই রুটিন দায়িত্ব হিসেবে প্রধান শিক্ষকের কাজ করছেন। বিদ্যালয়টির শিক্ষকেরা বলছেন, পূর্ণকালীন প্রধান শিক্ষক না থাকলে প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো চলে না।

শিক্ষকসংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকসংকট দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিসিএসে উত্তীর্ণ, কিন্তু ক্যাডার পদ পাননি (নন-ক্যাডার) এমন প্রার্থীদের মধ্য থেকে মাধ্যমিকে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা চলছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।

মাউশির পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন শাখার তথ্য বলছে, মাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে আরও অবনতি হয়েছে। আগে থেকেই ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে ছিল, এবার সেই দুর্বলতা আরও বেড়েছে।

বর্তমানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শুরুর পদ সহকারী শিক্ষক। সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেশির ভাগই ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে এই পদে চাকরি করে পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতেন। তবে ২০১৮ সালে ‘সিনিয়র শিক্ষক’ নামে নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি করা হয়। এই পদে ২০২১ সালের জুনে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এরপর এই পদে আর পদোন্নতি হয়নি।

শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রশাসন ও পুলিশসহ কিছু চাকরিতে পদোন্নতি পেতে কোনো অসুবিধা হয় না। এমনকি পর্যাপ্ত পদ না থাকলেও পদোন্নতি দিচ্ছে বর্তমান সরকার। কিন্তু শিক্ষকদের ঠিক সময়ে পদোন্নতি দেওয়া হয় না।

ডাকসু নেতাদের জন্য নিয়ম ভেঙে এসি বসাচ্ছেন ভিসি

০৮ অক্টোবর ২০২৫, সমকাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাজেট ঘাটতি থাকলেও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে ৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র (এসি) বসানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অফিস ছাড়া অন্য কোথাও এসি দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও উপাচার্য (ভিসি) ডাকসু নেতাদের চাপে এগুলো বসানোর অনুমোদন দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই সিদ্ধান্তকে অনিয়ম বলছেন কোষাধ্যক্ষ। অন্যদিকে কেনার ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি। জরুরি পণ্য দেখিয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এসি কেনা হচ্ছে।

গত সপ্তাহে রাজস্ব বাজেট থেকে এসি বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়। তখন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিদেশে থাকায় কোষাধ্যক্ষের রুটিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ। গত ১ সেপ্টেম্বর কোষাধ্যক্ষ দেশে ফিরেছেন।

ঘাটতি বাজেটে চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সেন্টারগুলোতে পর্যাপ্ত অর্থ দেওয়া যাচ্ছে না। আবাসন সংকট, শ্রেণিকক্ষ সংকট আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম কর্মরত শিক্ষার্থীদের নামমাত্র সম্মানিও প্রশাসন দিতে পারছে না। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবার অনুমতি না দিলেও ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম বারবার ফোন করে চাপ সৃষ্টি করায় ফের ফাইল এনে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ এসি বসানোর অনুমোদন দেন।

পুলিশের লাঠিপেটা, জলকামানে ছত্রভঙ্গ শিক্ষক–কর্মচারীরা গেলেন শহীদ মিনারে

১২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবরোধ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের বাধার মুখে শিক্ষক–কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।

প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের সরাতে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়েছে। এতে কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। কয়েকজনকে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে গেছে পুলিশ।

আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন। প্রায় ৬ ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে তাঁরা শহীদ মিনারের দিকে সরে যান।

৪৪ বছর পর চাকসুর নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির

১৬ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের’ প্রার্থীরা ভিপি-জিএসসহ ২৪টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

ডাকসু–জাকসু–চাকসুর পর রাকসুতেও শিবিরের জয়

১৭ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের সালাউদ্দিন আম্মার জয়ী হয়েছেন।

সাড়ে তিন দশক পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ৭২ বছরে এটি রাকসুর ১৭তম নির্বাচন। ১৯৯০ সালের পর দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি।

আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।

রাকসু নির্বাচনে ২৩ পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। সেখানে অধিকাংশ পদে জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল। রাকসুতেও এর ধারাবাহিকতা দেখা গেল।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ, কার্যকর দুই ধাপে

২১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থ দুই ধাপে পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। ১৫ শতাংশের মধ্য ৭ দশমিক ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) কার্যকর হবে এ বছরের ১ নভেম্বর থেকে। আরও ৭ শতাংশ ৫ কার্যকর হবে আগামী বছরের ১ জুলাই থেকে।

আজ মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।

এর আগে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড় মূল বেতনের ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) বাড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন শিক্ষক–কর্মচারীরা।

বাড়িভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

বাংলাদেশি নয়, চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচারণা চালাচ্ছে ড. ইউনূসের প্রেস উইং

১০ আগস্ট ২০২৫, বাংলা আউটলুক

বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে সরকারের প্রচারণা তেমন শোনা না গেলেও, বাংলাদেশ থেকে চীনে গিয়ে কী ধরনের চিকিৎসা নেওয়া যাবে তা নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রেস উইং।

সম্প্রতি চীন সরকারের খরচে ২৩ জনের একটি দলের প্রধান হিসেবে ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ চীন সফরে যান। সেখান থেকেই শুরু হয় চীনের বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যাপক প্রচারণা।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তরুণ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য অধিকারকর্মী নাভিদ মুস্তাক বাংলা আউটলুককে বলেন, “চীনের চিকিৎসা নিয়ে প্রচারণার দায়িত্ব প্রেস উইং-এর হতে পারে না।” তিনি বলেন, কোন দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কেমন এবং কী কী সুবিধা আছে সে বিষয়ে প্রচারণা করার দায়িত্ব প্রেস উইং-এর নয়। আমরা জানি চীনের অনেক চিকিৎসা ভালো, পাকিস্তানের চিকিৎসাও ভালো, তবে সেরা কোনটি, কে কোথায় কোন চিকিৎসা পাবে, সেটা নিশ্চিত করা বা সে বিষয়ে কথা বলা উচিত চিকিৎসক বা অভিজ্ঞ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

কাজ হয়েছে কাগজে, উন্নতি নেই স্বাস্থ্যসেবায়

১২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

স্বাস্থ্য খাতে মৌলিক কোনো পরিবর্তন এখনো দেখা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, সংস্কার শুরু হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য খাত–সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, এক বছরে কাগজে–কলমে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ হয়েছে, বাস্তবে সেবায় কোনো উন্নতি হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বড় কাজ হিসেবে মানুষের সামনে এসেছে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার বিষয়টি। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের আগস্টের শেষ সপ্তাহে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা করাই তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকার শীর্ষে। গত শুক্রবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আহতদের সুচিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। এতে আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না।’

সমস্যা আগের মতোই

জনস্বাস্থ্যবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন যে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। অনেকে আশা করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। চলতি অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের ৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। দুই দশক ধরে বরাদ্দ মোটামুটি ৫ শতাংশ বা তার কাছাকাছি ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার বাঁধা ছক থেকে বের হতে পারল না।

হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ ও সমস্যা আগের মতোই আছে। ৭ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, প্রতিদিন দেশের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এখনো হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন। বিশেষ রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিয়ে সংকট নিরসনে উদ্যোগ না নিলে ১০ বছর পরও হাজার হাজার রোগী হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থাকবেন।

সরকারি হাসপাতালে যন্ত্র নষ্ট বা অব্যবহৃত থাকার কারণে মানুষ সেবা নিতে এসে ফিরে যান, অনেকে বেশি খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে চলে যান। জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নষ্ট সব যন্ত্র এক বছরেও পুরোদমে চালু হয়নি। একই অবস্থা দেখা যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাজধানীর বাইরে এ রকম উদাহরণ আরও আছে।

স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে লাগাতার সড়ক অবরোধের ঘোষণা

১২ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

জাতীয়ভাবে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের তিন দফা দাবিতে বরিশালে গত ২৭ জুলাই থেকে ছাত্র-জনতার ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। গতকাল সোমবার ১৫ দিন পার হলেও দাবি বাস্তবায়নে সরকারের তরফে সাড়া মেলেনি। তবে স্থানীয়ভাবে বরিশাল নগরীতে আন্দোলন করে এসব দাবি আদায় কিংবা তা বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনের সক্ষমতা কতটুকু– এ নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

এ পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার থেকে নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একই কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। লাগাতার অবরোধ হলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ বিভাগের পাঁচ জেলার দূরপাল্লার বাস রাজধানীসহ সারাদেশে যেতে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা পার হতে হয়।

৩৩টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম কমিয়েছে সরকার

১৩ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

অত্যাবশ্যকীয় ৩৩টি ওষুধের দাম কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আ. সামাদ মৃধা। এ ছাড়া ইডিসিএল তৃতীয় প্রজন্মের জন্মনিরোধক পিল উৎপাদন ও আইভি ফ্লুইড প্ল্যান্ট চালু করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও ২৪৬ সংস্কার প্রস্তাব শিগগিরই বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত, অনেকগুলোর বাস্তবায়ন শুরু

১৪ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

১০টি কমিশনের (সংবিধানসংক্রান্ত কমিশন বাদে) আরও ২৪৬টি সুপারিশ আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৩৬৭টি সুপারিশ আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হলো। এর মধ্যে ৩৭টি ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই তথ্য জানানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, গত সপ্তাহে জানানো হয়েছিল ১২১টি সুপারিশ বাস্তবায়নাধীন আছে। তার মধ্যে ১৬টি ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে, ১৪টি আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে এবং বাকিগুলো বাস্তবায়নাধীন। আজকে জানানো হয় আরও ২৪৬টি আশু সুপারিশ বাস্তবায়নাধীন। এটি উপদেষ্টা পরিষদকে জানানো হয়।

প্রেস সচিব বলেন, নতুন ২৪৬টি সুপারিশের মধ্যে ৮২টি শ্রম সংস্কার বিষয়ে। আজকে শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, এগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই বাস্তবায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কিছু কিছু ইতিমধ্যে বাস্তবায়নও হয়েছে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের ৭১টি সুপারিশ আশু বাস্তবায়নের জন্য তালিকা করা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার বিষয়ে ৩৭টি, স্বাস্থ্য বিষয়ে ৩৩টি এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের ২৩টি সুপারিশ রয়েছে।

হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি প্রবেশে কড়াকড়ি

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতে সময়সীমা বেধে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন থেকে তারা শুধু সোমবার ও বৃহস্পতিবার, দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত, অর্থাৎ সপ্তাহে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ড. এ বি এম আবু হানিফ স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্রে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। দেশের সব সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে এটি।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময় ছাড়া কোনো ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি সরকারি হাসপাতালের সীমানার ভেতরে থাকতে পারবেন না। সাক্ষাতের সময় তাদের অবশ্যই নিজ নিজ কোম্পানির পরিচয়পত্র গলায় দৃশ্যমানভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।

প্রতিনিধিরা রোগীর কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন না, এমনকি ব্যবস্থাপনার ছবিও তোলা যাবে না—বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশনায়।

চিকিৎসা নিতে বিদেশ গেলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, আরটিভি নিউজ

চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। সোমবার দিনগত মধ্য রাতের ফ্লাইটে তিনি সিঙ্গাপুর যান। দেশে ফিরবেন বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব) ড. মঞ্জুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

জানা গেছে, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ক্যানসারের রোগী। তিনি এর আগেও চিকিৎসাসেবা নিতে সিঙ্গাপুরে গেছেন।

ক্যান্সার শনাক্তের তিন ধরনের যন্ত্রের সবই অচল

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের বাসিন্দা আমেনা বেগম (ছদ্মনাম)। পঞ্চাশোর্ধ্ব এ নারী দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন। স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও রোগ ধরা যায়নি। তবে কোনো কোনো চিকিৎসক ক্যান্সার বলে অনুমান করেন। তাই ঢাকায় এসে চিকিৎসা নিতে বলা হয়। কিন্তু পেশায় দিনমজুর স্বামী আবুল কালামের পক্ষে সে ব্যয় বহন করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। পরে কিছু অর্থ জোগাড় করে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইসিআরএইচ) আসেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসক দেখালে আমেনাকে কিছু পরীক্ষা দেয়া হয়। সেগুলো নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা। কারণ তার যে সমস্যা তা শনাক্তে যে যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, সবগুলোই এ হাসপাতালের অচল। পরীক্ষাগুলো তাই করতে হবে বাইরের কোনো ডায়াগনস্টিকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বতর্মানে সিটিস্ক্যান, এমআরআই ও মেমোগ্রাফি—প্রধান এ তিন যন্ত্রের সবগুলোই অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালটিতে সব মিলিয়ে আটটি রেডিওথেরাপি যন্ত্র ছিল। এর মধ্যে চারটি বহুদিন ধরে অকেজো, আর দুটি যন্ত্র মেরামত-অযোগ্য। বর্তমানে মাত্র দুটি যন্ত্রে কোনোরকমে সেবা চলছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত চাপের কারণে প্রায়ই একটি বিকল হয়ে পড়ে। এর ফলে কেবল আমেনা বেগমই নন, তার মতো স্বল্প আয়ের অনেক রোগীই বাড়তি খরচের চাপে পড়ছেন। স্বল্পমূল্যে সেবা পাওয়ার আশায় তারা হাসপাতালটিতে এলেও ফিরে যেতে হচ্ছে নিরাশ হয়ে। জনবল ঘাটতিসহ নানা সংকটও রয়েছে এনআইসিআরএইচে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব যন্ত্র মেরামত কিংবা নতুন কেনার বিষয়ে বারবার প্রস্তাব দেয়া হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

দেশের ৮৮% স্ট্রোকের রোগী জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

বাংলাদেশের অধিকাংশ স্ট্রোকের রোগীই দেরিতে হাসপাতালে আসেন। আবার যে হাসপাতালে প্রথমে চিকিৎসার জন্য যান সেখান থেকে বিশেষায়িত হাসপাতালে রেফার করতেও বিলম্ব হয়।

বাংলাদেশের অধিকাংশ স্ট্রোকের রোগীই দেরিতে হাসপাতালে আসেন। আবার যে হাসপাতালে প্রথমে চিকিৎসার জন্য যান সেখান থেকে বিশেষায়িত হাসপাতালে রেফার করতেও বিলম্ব হয়। এমনকি ওই হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসা শুরু হতেই সময় লাগে গড়ে দেড় ঘণ্টা। ফলে দেশের ৮৮ শতাংশ স্ট্রোকের রোগী জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা থ্রম্বোলাইসিস থেকে বঞ্চিত হন।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ‘ইমার্জেন্সি মেডিকেল জার্নালে’।

পীরগাছায় ৮ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত, রংপুরের আরও দুই উপজেলায় উপসর্গের রোগী

০১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

রংপুরের পীরগাছার পর মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগী পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বিশেষজ্ঞরা জেলার পীরগাছার আটজন অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করেছেন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র বলছে, গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা গেছেন। একই সময়ে অ্যানথ্রাক্স রোগে উপজেলার চারটি ইউনিয়নে অর্ধশত ব্যক্তি আক্রান্ত হন। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছিল প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পরে আইইডিসিআরের একটি প্রতিনিধিদল গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর এবং পারুল ইউনিয়নের অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ থাকা ১২ নারী-পুরুষের নমুনা সংগ্রহ করেছিল।

রেডিওথেরাপির করুণ দশা

০৭ অক্টোবর ২০২৫, যুগান্তর

দেশে অন্তত ৩৮ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এর মধ্যে শ্বাসনালি, স্তন, মুখ, পাকস্থলী এবং জরায়ু মুখের ক্যানসারের রোগী বেশি। তবে বর্তমানে দেশের ক্যানসার রোগী কত তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোথাও নেই। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যানসার রোগীদের মধ্যে অন্তত ৮০ শতাংশের জন্য রেডিওথেরাপি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। কিন্তু তাদের চিকিৎসার জন্য নেই অতি প্রয়োজনীয় মেশিনটি। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দেশে সরকারি হাসপাতালে মাত্র ১২টি রেডিওথেরাপি মেশিন আছে। ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) বলছে, বাংলাদেশে রোগী অনুপাতে কমপক্ষে ১৭০টি রেডিওথেরাপি মেশিন দরকার।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমএমইউ) দেশের কিশোরগঞ্জ জেলায় জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করেছিল। ওই জেলার গবেষণাসূত্র ধরে গবেষকরা জানান, দেশে প্রতি লাখে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৬ জন। এছাড়া প্রতি বছর প্রতি লাখে নতুন করে ক্যানসার আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন। গবেষণার তথ্যে আরও বলা হয়, মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের জন্য দায়ী ক্যানসার।

বর্তমানে দেশে সরকারি ব্যবস্থাপানয় যে ১২টি রেডিওথেরাপি মেশিন রয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ২টি (লিনাক) মেশিন আছে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রোগীদের জন্য। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি (কোবাল্ট) ও একটি (ব্র্যাকিথেরাপি) মেশিনসহ দুটি, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি (কোবাল্ট), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি (কোবাল্ট), সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে একটি (কোবাল্ট) মেশিন আছে। অপরদিকে স্বায়ত্তশাসিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি (লিনাক) মেশিন রয়েছে। এর বাইরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দুটি রেডিওথেরাপি (লিনাক) মেশিন রয়েছে। ঢাকা মেডিকেল, বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুটি (লিনাক) অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একটি মেশিন অকোজা অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ-এই চার বিভাগে কোনো সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেই রেডিওথেরাপি চিকিৎসা নেই।

সাপ আসে, জোয়ারের পানি ওঠে, অযত্নে কমিউনিটি ক্লিনিক

২৫ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

কমিউনিটি ক্লিনিক এখন অযত্ন, অবহেলার শিকার। কোনো কোনোটির ছাদ ও দেয়াল খসে পড়ছে। কোনোটিতে যাওয়া-আসার রাস্তা নেই। আবার কোনোটিতে জোয়ারের পানি ঢোকে। বাস্তবতা হলো, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ ঠিকমতো সেবা পাচ্ছে না।

প্রথম আলোর অনুসন্ধানে দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর এ চিত্র ধরা পড়েছে। সাংবাদিকেরা দেখেছেন, অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকের গ্লুকোমিটার কাজ করে না। কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মী নেই। অন্তত একটি এলাকার মানুষ অভিযোগ করেছেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে টাকা দিয়ে ওষুধ কিনতে হয়।

প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা গত আগস্ট মাসের শেষ দুই সপ্তাহে দেশের আট বিভাগের আট জেলার ৩২টি ক্লিনিক সরেজমিন দেখেছেন, অনেক ক্লিনিকে যাওয়ার রাস্তা নেই, বর্ষাকালে পানিতে কিছু ডুবে থাকে, কিছু ক্লিনিক ভাঙাচোরা, কয়েকটি ক্লিনিকের টয়লেট খারাপ, প্রায় সব ক্লিনিকের গ্লুকোমিটার যন্ত্র অলস পড়ে আছে। ক্লিনিকগুলোয় জনবলের সংকট আছে, আছে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ। বস্তুত কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে গ্রামের মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না।

এই আট জেলা হচ্ছে পঞ্চগড়, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, সুনামগঞ্জ ও নওগাঁ। এ ছাড়া খুলনাসহ আরও কিছু জেলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের অবস্থা জানা গেছে মুঠোফোনে কথা বলে।

প্রথম আলোর সাংবাদিকেরা ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা মানুষের মতামত নিয়েছেন, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের (সিএইচসিপি) সঙ্গে কথা বলেছেন, কিছু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনের বক্তব্য নিয়েছেন। প্রায় সব ক্ষেত্রেই অসন্তুষ্টি দেখা গেছে।

প্রথম আলোর অনুসন্ধানে দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর এ চিত্র ধরা পড়েছে। সাংবাদিকেরা দেখেছেন, অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকের গ্লুকোমিটার কাজ করে না। কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মী নেই। অন্তত একটি এলাকার মানুষ অভিযোগ করেছেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে টাকা দিয়ে ওষুধ কিনতে হয়।

কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার মূল দায়িত্ব সিএইচসিপির। তাঁরা সরকারের রাজস্ব খাতের ১৬তম গ্রেডের কর্মী। সিএইচসিপিকে সহায়তা করেন স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারী। তাঁরাও রাজস্ব খাতের একই গ্রেডের কর্মী। তবে কমিউনিটি ক্লিনিকে কোনো আয়ার পদ নেই। বিদ্যুৎ বিল সরকার দেয় না। কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার জন্য ১১ সদস্যের কমিউনিটি গ্রুপ থাকে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, জমিদাতা, সিএইচসিপি এই গ্রুপের সদস্য। গ্রুপটি স্থানীয়ভাবে তহবিল গঠন করে আয়ার বেতন ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে।

মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। ২০০১ সালের পর কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। পরে ২০০৯ সালে আবার চালু হয়। সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৬০।

এসব ক্লিনিক থেকে ২২ ধরনের ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়ার কথা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দৈনিক গড়ে পাঁচ লাখ মানুষের এসব ক্লিনিক থেকে সেবা পাওয়ার কথা। স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে কমিউনিটি ক্লিনিকের নাম পাল্টে ‘গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র’ করার সুপারিশ করেছে।

পরিবেশ

ঢাকায় বস্তির ৯৮ শতাংশের দেহে অতিমাত্রায় সিসা

০৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।

আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। আজ বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।

উল্লেখ্য, ‍যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

চলনবিলে কেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস

১৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বুড়ি পোতাজিয়া এলাকায় চলনবিলের শেষ অংশে এসে মিলিত হয়েছে শতাধিক খাল, বিল, বড়াল নদসহ অর্ধশতাধিক নদীর পানি। এসব উৎস থেকে আসা পানির সম্মিলিত প্রবাহ গিয়ে মিলিত হয় যমুনা নদীর সঙ্গে। এই পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে এখানে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে চায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পরিবেশ ও পানিবিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে পানিপ্রবাহের স্থানে বাধা তৈরি করে কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ করা হলে সেটি একদিকে চলনবিলের জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, অন্যদিকে পানির এই শক্তিশালী প্রবাহ বাধা পেলে তা আশপাশের এলাকার জন্য জলাবদ্ধতা ও বন্যার প্রকোপ বাড়িয়ে তুলবে।

সিরাজগঞ্জে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় আইন পাস হয় ২০১৬ সালে। ক্লাস শুরু হয় ২০১৮ সালের এপ্রিলে। এখন পাঁচটি বিভাগে পড়ছেন ১ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া শিক্ষক আছেন ৩৪ জন, কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন ১৬১ জন। সাত বছর ধরে শাহজাদপুর পৌর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আটটি ভাড়া ভবনে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্প অনুমোদন

১৮ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। তবে অনুমোদন পেলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করতে হবে। মূলত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে এ শর্ত দেয়া হয়।

বনের জমি উদ্ধারে অগ্রগতি, দূষণ ও পলিথিন বন্ধ হয়নি

১৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

নদী ও বায়ুদূষণ রোধে কর্মপরিকল্পনা হলেও সার্বিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে বনের জমি উদ্ধারে সাফল্য রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য দেওয়া বরাদ্দ বাতিল করে প্রায় ১০ হাজার একর বনভূমি ফিরিয়ে এনেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ সময়ে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা সফল হয়নি। এ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

কক্সবাজারের বনাঞ্চলে স্বস্তি ফিরলেও বন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে মহাবিপন্ন হাতি মারা গেছে ১৯টি। এর মধ্যে হাতি সংরক্ষণে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে যেকোনো একটি নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে নদীর সংখ্যা নিয়ে নদী রক্ষা কমিশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যকার বিভ্রান্তি দূর হয়েছে। দুই সংস্থা যৌথভাবে নদীর একটি অভিন্ন তালিকা করেছে, যেখানে নদ–নদীর সংখ্যা পাওয়া গেছে ১ হাজার ২৯৪টি।

শব্দদূষণ বন্ধে শাহজালাল বিমানবন্দর ও সচিবালয় এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা সত্ত্বেও নীরব এলাকায় শব্দদূষণ বন্ধ হয়নি।

সিলেটে বালু লুটপাটেও ‘ঐকমত্য’

২০ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

সিলেটের শ্রীপুর, রাংপানি, জাফলং, সংরক্ষিত বাংকার এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন নদ-নদী ও পর্যটনকেন্দ্রে চলছে নির্বিচার বালু লুট। পাথরের মতো বালু লুটপাটের কারণে অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এসব স্থান এখন শ্রীহীন হয়ে পড়ছে।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে ওঠা চক্র প্রকাশ্যে এই বালু লুট করছে। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অভিযান চালালেও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।

ভরাট হবে এশিয়ার সর্ববৃহৎ গোচারণ ভূমি

২৫ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

সিরাজগঞ্জের বড়াল ও ধোলাই নদের মাঝে বিশাল গোচারণ ভূমিটিই এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ গোচরণ ভূমি। দেশের অন্যতম বড় দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটার আওতাধীন জায়গাটি ভরাট করে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে চায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ হলে দেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিলের প্রবাহ মুখও বন্ধ হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে ভরাট হতে থাকবে পুরো চলনবিলই।

পরিবেশ ও পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে পানিপ্রবাহের স্থানে বাধা তৈরি করে কংক্রিটের স্থাপনা নির্মাণ করা হলে সেটি একদিকে চলনবিলের জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, অন্যদিকে পানির এ শক্তিশালী প্রবাহ বাধা পেলে তা আশপাশের এলাকার জন্য জলাবদ্ধতা ও বন্যার প্রকোপ বাড়িয়ে তুলবে। নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকি বলেন, ‘এখানে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা মানে কয়েক বছরের মধ্যেই চলনবিল, খাল ও বড় বড় নদী ভরাট করে ফেলার প্রাথমিক আয়োজন।’

খেলার মাঠ–পার্ক নিয়ে আলাপ নেই, আগ্রহ ভবনের উচ্চতা বাড়ানোয়

২৭ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানী ঢাকায় শিশু–কিশোরদের জন্য নতুন খেলার মাঠ কিংবা পার্ক তৈরির কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ আবাসন ব্যবসায়ীদের চাপে নগরীতে উন্মুক্ত জায়গা কমিয়ে ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর পথে হাঁটছে সরকার।

পরিকল্পনাবিদদের অভিযোগ, এ কারণে ঢাকা শহরকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য যে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) তৈরি করা হয়েছিল, তা আবারও সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) ভবনের কনফারেন্স হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাবিদেরা এই অভিযোগ করেছেন। ‘ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) সংশোধনের উদ্যোগ: বিআইপির পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বিআইপি।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্ক

পার্কের নিয়ন্ত্রণ আবার ক্লাবের হাতেই

০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

সবুজে ঘেরা পার্কটির উন্মুক্ত স্থান নষ্ট করে কৃত্রিম মাঠ (আর্টিফিশিয়াল টার্ফ) বানানো হয়েছে। সেই স্থান সাধারণ মানুষের ব্যবহারের সুযোগ নেই। ক্রিকেট মাঠটিও ব্যবহারের সুযোগ পান না স্থানীয় বাসিন্দারা। মাঠে খেলাধুলা ও অনুশীলন করেন শুধু মাঠ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত ক্লাব একাডেমির খেলোয়াড়েরা। টার্ফ ও ক্রিকেট মাঠ দুটি ভাড়া দেওয়া হয়।

সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারেন না—এমন পার্কটি রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্ক।

পার্কটি পরিচালনা করতে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। পরে ক্লাবের কার্যক্রম ও জনসাধারণের ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি নিয়ে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ আসে। পার্কের দখল-ধ্বংস বন্ধে একটি প্রতিবাদী কর্মসূচিও করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্যরা। গণমাধ্যমেও ক্লাবের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এবার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয়

০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

চারদিকে থই থই পানি, মাঝে কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি। এমন ১২৫ একর জমি ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে এ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে।

সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য যে জায়গা ঠিক করা হয়েছে, তা ‘দেখার হাওর’ এলাকার মধ্যে। দেখার হাওর সুনামগঞ্জের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার সীমানায় অবস্থিত। সুনামগঞ্জ শহর থেকে তা ১৫ কিলোমিটার দূরে। বছরের মোটামুটি সাত মাস জায়গাটি পানির নিচে থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে যেকোনো ধরনের নির্মাণকাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর সার্ক ফোয়ারা মোড়–সংলগ্ন ‘পান্থকুঞ্জ পার্ক’ ও হাতিরঝিল জলাধারের উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো ধরনের নির্মাণকাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পান্থকুঞ্জ পার্ক এবং হাতিরঝিলে বিনোদন ও অন্য উদ্দেশ্যে জনসাধারণের প্রবেশাধিকারে হস্তক্ষেপ না করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেন। সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের এফডিসি (চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন) থেকে পলাশী পর্যন্ত সম্প্রসারণে ওই পার্ক ও জলাধারের উন্মুক্তস্থানে নির্মাণের বৈধতা নিয়ে ওই রিটটি করা হয়।

যে কারণে ‘সোনালি ব্যাগ’ তৈরির গবেষণা প্রকল্প বন্ধের সিদ্ধান্ত

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বাংলা ট্রিবিউন

পাটের আঁশ দিয়ে তৈরি ‘সোনালি ব্যাগ’ আর বাজারে আসছে না। এই ব্যাগ তৈরির গবেষণা প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের বিকল্প হিসেবে একাধিকবার ব্যবহার করা যায় এমন ব্যাগ তৈরির লক্ষ্যে ‘সোনালি আঁশ’ নামে খ্যাত পাটের তৈরি পলিথিনের বিকল্প ‘সোনালি ব্যাগ’ তৈরি করা যায় কিনা তা গবেষণার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। গবেষণায় দেখা গেছে প্রকল্পটি ফলপ্রসূ হচ্ছে না, তাই এটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, পাটের পলিমার থেকে এক ধরনের ব্যাগ তৈরি করার জন্য গবেষণা চলছিল। ২০১৬ সালে পাট থেকে পলিথিনের বিকল্প তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী, পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমদ খান। পরে তাকে বিজেএমসির বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ড. মোবারক আহমদ খানের এই আবিষ্কার দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন গবেষণার পর ‘সোনালি ব্যাগ’ নামে পরিচিত পাটের আঁশের তৈরি পলিথিনের ব্যাগ বাজারে আনা সম্ভব হয়নি। কারণ অনুসন্ধানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বুয়েটের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। কমিটি দীর্ঘদিন কাজ করে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, পাটের আঁশ দিয়ে পলিথিনের ব্যাগ তৈরির লক্ষ্যে গবেষণা প্রকল্পটি ফলপ্রসূ হবে না। কারণ প্রতিটি ব্যাগের দাম পড়বে ২০ থেকে ২৪ টাকা। যা বাজারে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ক্রেতারা এতো টাকা দাম দিয়ে এই ব্যাগ ব্যবহারে উৎসাহী হবেন না।

বিশেষজ্ঞ দলের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই ব্যাগ তৈরিতে ১৫ থেকে ১৬ প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রতিটি কেমিক্যালই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। মানুষের সুস্থতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এসব কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি ব্যাগ বাজারে না ছাড়ার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ দল। বিষয়টি সবার অগোচরে ছিল বলেও জানায় বিশেষজ্ঞ দল। এসব কারণে পাটের আঁশ দিয়ে ‘সোনালি ব্যাগ’ তৈরির গবেষণা প্রকল্পটি অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আগের মতোই দুর্নীতিপূর্ণ ও পরিবেশবিধ্বংসী প্রকল্প চলছে

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

আগের মতোই দুর্নীতিপূর্ণ ও পরিবেশবিধ্বংসী প্রকল্পগুলো চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ অংশটি জনস্বার্থবিরোধী হলেও অন্তর্বর্তী সরকার জনমত উপেক্ষা করে এ অংশের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পের নামে ব্যয়ের যে আগ্রহ আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যে ছিল, সেই ব্যয়ের আগ্রহ থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সরেনি।

পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল জলাধার ধ্বংস করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জনবিরোধী ও প্রকৃতি ধ্বংসকারী উড়ালসড়ক বাতিলের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বায়ুদূষণে ২৮ শতাংশ দায় যানবাহনের ধোঁয়ার

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

বাংলাদেশে বায়ুদূষণের এক বড় উৎস যানবাহনের ধোঁয়া। মোট বায়ুদূষণের ২৮ শতাংশের জন্য দায়ী গাড়ি। এরপর আছে কারখানা, ইটভাটা ও নির্মাণকাজের ধুলোবালি।

মঙ্গলবার রাজধানীর পর্যটন ভবনে গণশুনানিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘বায়ুদূষণ প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এ শুনানির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। শুনানিতে ভুক্তভোগী নাগরিক, চিকিৎসক, পরিবেশবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদ, গবেষক, আইনপ্রণেতা ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

শুনানিতে বেলা জানিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে বিশ্বে বায়ুদূষণের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। বেলার উপস্থাপনায় দেখা যায়– যানবাহনের ধোঁয়া ২৮ শতাংশ, কারখানা ১৩ শতাংশ, ইটভাটা ১১ শতাংশ এবং নির্মাণ প্রকল্পের ধুলোবালি ৮ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। বাকি অংশ আসে আবর্জনা পোড়ানো, গৃহস্থালির ধোঁয়া ও জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার থেকে।

ওসমানী উদ্যান: ঢাকার ‘ফুসফুসে’ আবার স্থাপনা

১১ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানী ঢাকার ব্যস্ত এলাকা গুলিস্তানের পাশে এক টুকরা সবুজ নিয়ে আছে ওসমানী উদ্যান; উন্নয়নের জন্য সেখানে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে, যা নিয়ে আপত্তি রয়েছে পরিবেশবাদীদের। তার মধ্যে এখন আরেকটি স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ওসমানী উদ্যানকে ‘ঢাকার ফুসফুসও’ বলা হয়। সেখানে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নানা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছিল, যা এখনো অসমাপ্ত। ফলে উদ্যানটি পরিণত হয়েছে কংক্রিটের জঞ্জালে। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করবে। এতে ব্যয় হবে ৪৬ কোটি টাকা।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওসমানী উদ্যানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে এর নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে। নকশা চূড়ান্ত হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর স্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

সুন্দরবনে বিদেশি পর্যটক বাড়াতে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন

১২ অক্টোবর, ২০২৫, কালের কন্ঠ

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য অক্ষুণ্ন রেখে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০ বছর মেয়াদি ‘সুন্দরবন ইকোট্যুরিজম মাস্টারপ্ল্যান (২০২৫-২০৪৫)’ প্রণয়ন করা হয়েছে।

এটি গতানুগতিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মতো নয়, বরং সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশকে অক্ষুন্ন রেখে কিভাবে টেকসই পর্যটন বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন করা যায়, তার একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ করা হয়েছে।

মাস্টারপ্ল্যানটি বন বিভাগ অনুমোদন দিলে ইউনেসকো ঘোষিত এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইউএসএআইডি’র আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় বাংলাদেশ বন বিভাগ ও সোলিমার ইন্টারন্যাশনাল এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

ড্যাপের সংশোধনী অনুমোদন, বাড়ানো হলো ভবনের উচ্চতার সীমা

২০ অক্টোবর ২০২৫, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বাংলা অনলাইন

ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ২০২২–২০৩৫ পর্যালোচনা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাবসহ ড্যাপের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এর মাধ্যমে রাজধানীর প্রায় সব এলাকায় ভবনের উচ্চতার সীমা বাড়ানো হয়েছে।

রোববার (১৯ অক্টোবর) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের সভাপতিত্বে রাজউক প্রণীত ড্যাপ বাস্তবায়ন মনিটরিং ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধনীর সুপারিশ প্রণয়ন-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুমোদনের ভিত্তিতে শীঘ্রই সংশোধিত ড্যাপ (২০২২–২০৩৫) গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

ড্যাপের ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), জনঘনত্ব, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল ও কৃষি ভূমি সংরক্ষণের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে পরিবেশ সংবেদনশীলতাকে গুরত্ব দিয়ে বিধানাবলী সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ সংশোধনী অনুযায়ী, রাজউকের আওতাধীন প্রায় সব এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও ও জনঘনত্ব বাড়বে।

বিদ্যুৎ-জ্বালানী-খনিজসম্পদ

স্বস্তিতে বিদ্যুৎ, সংকটে গ্যাস সরবরাহ

০৯ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত নিয়ে দুর্নীতি-অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ ছিল গত সরকারের সময়ে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন বলছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে অন্তত ৬০০ কোটি ডলার নয়ছয় হয়েছে। এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি এক বছরে। আদানি, রামপালসহ বিতর্কিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তি বাতিল বা সংশোধনে কমিটি করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে খরচ কমিয়ে সাশ্রয়ে জোর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সাশ্রয় করেছে তারা। তারপরও বিদ্যুৎ-গ্যাস খাতে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ভর্তুকি গেছে গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫)। গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এবার লোডশেডিং করতে হয়নি। চাহিদাও কিছুটা কম ছিল। বিদ্যুৎ খাত অনেকটা স্বস্তিতে ছিল। তবে টানা সংকট ছিল গ্যাস সরবরাহে। শিল্পে নতুন সংযোগ বন্ধ আছে আট মাস ধরে।

গত সরকারের সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সবচেয়ে বেশি ভুগেছে বকেয়া বিল পরিশোধের চাপে। এতে সরবরাহ ধরে রাখতে পারেনি। টানা তিন বছর লোডশেডিং করতে হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেয়। শুরুতেই জ্বালানি তেল আমদানির বিদেশি কোম্পানির ৫০ কোটি ডলারের বকেয়া শোধ করা হয়। গ‍্যাস খাতে ৭৫ কোটি ডলার বকেয়া রেখে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গত এপ্রিলে সব বকেয়া শোধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিদ্যুৎ খাতের বকেয়াও অনেকটা শোধ করা হয়েছে।

বিপুল ভর্তুকির মধ্যে সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির মুনাফা ভাগাভাগি

২৬ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বছরের পর বছর লোকসান করছে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাত। প্রতিবছর এ খাতে সরকারের ভর্তুকি বাড়ছে। সর্বোচ্চ ৬২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি গেছে গত অর্থবছরে। এর মধ্যেও নিয়মিত মুনাফা করছে সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলো।

সরকার একে বলছে, ‘কৃত্রিম মুনাফা’। এটি বন্ধে গত সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎ বিভাগ নির্দেশনা দেয়। কিন্তু তারপরও মুনাফা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

চুক্তি অনুসারে, সরকারি-বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনে নেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এরপর তারা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নির্ধারিত দামে ছয়টি বিতরণ সংস্থার কাছে তা বিক্রি করে।

প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে পিডিবির খরচ হয় গড়ে ১১ টাকার বেশি। আর পিডিবি প্রতি ইউনিট বিক্রি করে ৭ টাকা ৪ পয়সায়। এ কারণে লোকসান গুনতে হয় পিডিবির, যা তারা ভর্তুকি হিসেবে সরকারের কাছ থেকে নেয়।

প্রশিক্ষিতদের ছাঁটাই আর অযোগ্যদের নিয়োগ

৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, কালবেলা

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন নানা জটিলতায় তিন বছর পিছিয়ে গেলেও দেশের সবচেয়ে বড় এ মেগা প্রকল্প ঘিরে অনিয়মের উৎসব জমে উঠেছে আরও আগেই। বিদেশ সফর এবং নিয়োগবাণিজ্য ঘিরে কিছু কর্মকর্তা গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আলোচিত এ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শুরু থেকেই আঁকড়ে রেখেছেন সিন্ডিকেটের হোতারা। রূপপুরসহ দেশের সব পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শৌকত আকবরের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের নাটাই এখন বর্তমান এমডি জাহেদুল হাছান, রূপপুরের প্রকল্প পরিচালক কবীর হোসেন, অলোক ভট্টাচার্য, মুশফিকা আহমেদ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদ খানসহ কয়েকজনের হাতে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সিন্ডিকেটভুক্ত কর্মকর্তারা এতটাই ক্ষমতাধর যে, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নকারী রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান রোসাটমের পরামর্শ কিংবা মতামতও পাত্তা দেন না তারা। একটি পদে প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে রোসাটম প্রশ্ন তোলার পরও সিন্ডিকেটের আগ্রহের কারণে সেই নিয়োগ আটকানো যায়নি। বরং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ আওয়াজ তুললে চাকরিচ্যুত হতে হয়। তাদের ক্ষমতার দাপটে এক দিনের মধ্যে ১৮৬ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ১৮ জনকে; যারা রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়া থেকে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছিলেন। দৌরাত্ম্য এখানেই থেমে নেই—এনপিসিবিএলের এমডি ড. জাহেদুল হাছান সরকারি খরচে গত এক যুগে অন্তত ৬৫ বার বিদেশ সফর করেছেন। রাশিয়ায় নিজস্ব আবাসনের ব্যবস্থা থাকার পরও হোটেল ভাড়া দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগও আছে জাহেদুলের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, পিআরএলে (অবসরোত্তর ছুটি) যাওয়ার পরও বিধি ভেঙে জাহেদুলকেই এমডি পদে বহাল রাখা হয়েছে।

চাপ দিয়ে ৩৬৬ কোটি টাকা জরিমানা নিল শেভরন

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

দেশে গ্যাসের উৎপাদন টানা কমতে থাকায় বেশি দামের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বেড়েছে। অথচ গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর একটি প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ বন্ধ করে রেখেছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন। বিনিয়োগ বন্ধ রেখে চাপ দিয়ে বকেয়া বিলের পুরোটা আদায় করে নিয়েছে তারা। এরপরও কাজ শুরু না করে দেরিতে বিল শোধের সুদ (বিলম্ব মাশুল বা জরিমানা) আদায় করে নিয়েছে শেভরন।

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, চুক্তি অনুসারে গ্যাস বিল জমা দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হয়। বিল দিতে দেরি হলে জরিমানা দিতে হয়। এবার মোট জরিমানা শোধ করা হয়েছে ৩ কোটি ডলারের (১২২ টাকা ধরে ৩৬৬ কোটি টাকা) বেশি।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের তিনটি গ্যাসক্ষেত্র (বিবিয়ানা, মৌলভীবাজার ও জালালাবাদ) থেকে গ্যাস উৎপাদন করে শেভরন। প্রতি মাসে গড়ে তাদের বিল দাঁড়ায় প্রায় চার কোটি ডলার। বিগত সরকারের সময় ডলার–সংকটে বিল বকেয়া শুরু হলে চাপ দিতে থাকে শেভরন। সরকার পতনের পর বকেয়া ছিল ২৪ কোটি ডলার। এটি পরিশোধে তারা নতুন বিনিয়োগ বন্ধ রেখে চাপ তৈরি করে। তিন দশক ধরে তারা বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। বিভিন্ন সময়ে নানা সুবিধা নিয়েছে। তাদের কাছে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত।

নিরাপত্তাহীন পারমাণবিক কেন্দ্রে ফুয়েল লোড বিপজ্জনক

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, কালবেলা

রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদনের দ্বারপ্রান্তে। আগামী ৬ নভেম্বর রিঅ্যাক্টরে পারমাণবিক জ্বালানি (ফুয়েল) লোড করার প্রাথমিক তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদনে যাওয়ার আগে স্পর্শকাতর এ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলেই জানাচ্ছে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলগুলো। অথচ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে একেবারে উল্টো চিত্র। সরেজমিন পর্যবেক্ষণের পর রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ৮৫ পাতার একটি গোপন প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইএইএ। ওই প্রতিবেদনে রূপপুরে নিরাপত্তার যেসব ঘাটতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তা শিউরে ওঠার মতো। সংস্থাটির দাবি, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অপূর্ণতা, জরুরি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় ভঙ্গুর বন্দোবস্ত, বিকিরণ নিয়ন্ত্রণের আয়োজনে ফাঁকফোকর, প্রশিক্ষণে ঘাটতি এবং ব্যবস্থাপনায় চরম অব্যবস্থাপনা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তার যাবতীয় আয়োজন সম্পূর্ণ না করে পূর্বনির্ধারিত তারিখে (৬ নভেম্বর) ফুয়েল লোডিং শুরু হলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আইএইএ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইএইএর সতর্কতা আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি কার্যক্রম শুরু করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নন, পুরো রূপপুরের বাসিন্দাদের চূড়ান্ত সর্বনাশ ঘটে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আইএইএর একটি বিশেষজ্ঞ দল গত ১০-২৭ আগস্ট রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে মিশন পরিচালনা করে। এরপর সংস্থাটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রেস নোট প্রকাশ করে। যেখানে ‘কমিটমেন্ট, ইমপ্রুভমেন্ট, ইনহ্যান্সমেন্ট’ জাতীয় শব্দগুলো বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। রূপপুর কর্তৃপক্ষ এই নোটটিকে প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার প্রমাণপত্র হিসেবে প্রচার করছে। অথচ ওই নোটে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে—নিরাপত্তার মানদণ্ডে ঘাটতি রয়েছে এবং তা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যেতে পারে ভারতের আদানি

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, প্রথম আলো

কয়েক দফা আলোচনা করেও কয়লার দাম নিয়ে ভারতের বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি। দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। তবে চুক্তির বাইরে ছাড় দিতে রাজি নয় আদানি। তারা বিরোধ নিষ্পত্তি করতে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে যেতে পারে।

আদানি ইতিমধ্যে আইনি পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। আদানির একটি সূত্রও তা নিশ্চিত করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগও আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, আদানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে তারা এটিকে আরবিট্রেশনের (সালিস) দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর প্রথম ধাপ হচ্ছে, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠক; যা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে মিডিয়েটর (মধ্যস্থতাকারী) নিয়োগ করা, যা এখনো হয়নি। তিনি বলেন, ‘আদানি যদি সালিসের দিকে যায়, তা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

এবার স্থলভাগের গ্যাস ব্লক বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার তোড়জোড়

১১ অক্টোবর ২০২৫, বাংলা ট্রিবিউন

সাগরে ব্যর্থতার পর এবার স্থলভাগে বহুজাতিক কোম্পানির জন্য গ্যাস উৎপাদন-বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) চূড়ান্ত করার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও নির্বাচনের আগে এ ধরনের উদ্যোগ কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে দ্বিধান্বিত বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের স্থলভাগের কোনও গ্যাস ব্লক বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে না দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে ক্ষমতার একেবারে শেষ সময়ে এসে মার্কিন কোম্পানি শেভরনকে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের পাশের কিছু জমিতে নতুন করে অনুসন্ধান ও উত্তোলনের অনুমতি দেয়। এর বাইরে স্থলভাগের জন্য নতুন কোনও পিএসসি করা হয়নি। যদিও ভোলা ছাড়া দেশের অন্য কোথাও তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বড় কোনও সাফল্যও পাওয়া যায়নি।

অব্যবহৃত পড়ে আছে ভোলার গ্যাস, থাকতে পারে ১৪৩২ বিলিয়ন ঘনফুট

২৫ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

দেশে প্রতিবছর কমছে গ্যাসের উৎপাদন। চড়া দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করেও চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছে না শিল্পকারখানা। আটকে আছে নতুন বিনিয়োগ। অথচ অবহেলায় অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে দক্ষিণের দ্বীপজেলা ভোলার গ্যাস। এ গ্যাস ব্যবহার নিয়ে আড়াই দশক পরও কার্যকর পরিকল্পনা নিতে পারেনি সরকার।

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, ভোলায় উৎপাদিত গ্যাস জেলার বাইরে আনার কোনো ব্যবস্থা নেই। জেলার ভেতরেও উৎপাদন সক্ষমতা অনুসারে গ্যাসের ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়নি। শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে দিনে ১৫ কোটি ঘনফুট উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও ব্যবহৃত হচ্ছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ কোটি ঘনফুট গ্যাস। আরও দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদনই শুরু হয়নি।

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১৯৯৫ সালে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। শাহবাজপুর থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয় ২০০৯ সালে। একই সংস্থা ২০১৮ সালে আবিষ্কার করে ভোলার দ্বিতীয় গ্যাসক্ষেত্র ভোলা নর্থ। তারা ২০২৩ সালে আবিষ্কার করে ইলিশা গ্যাসক্ষেত্র। এ দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে এখনো উৎপাদন শুরু হয়নি।

যাতায়াত ব্যবস্থা ও দুর্ঘটনা

সাড়ে ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭ হাজারের বেশি

১০ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত দেশে সড়কে ৩৪ হাজার ৮৯৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৩৭ হাজার ৩৮২ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত মানুষের সংখ্যা ৫৯ হাজার ৫৯৭। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।

সংস্থাটি বলছে, দেশের সড়ক পরিবহন খাতে এমন অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্য সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার সড়ক পরিবহনব্যবস্থা সংস্কারে কোনো কমিশন গঠন করেনি।

রাজধানীর ডিআরইউ মিলনায়তনে ‘সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনার সংস্কারে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রূপরেখা: সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

সড়ক–রেলের প্রকল্প থেকে সাশ্রয়, পরিবহন খাত এখনো বিশৃঙ্খল

১৩ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে সড়ক ও রেল খাতে প্রকল্প ব্যয় কমানোর ওপর বেশি জোর দিয়েছে। এরই মধ্যে চলমান ও প্রায় সমাপ্ত বেশ কিছু প্রকল্পে ব্যয় কমানো হয়েছে। এ ছাড়া ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রকল্প বাদ দেওয়ার পাশাপাশি নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মনোভাব দেখা গেছে।

তবে বিগত সরকারের আমলে পরিবহন খাতে যে বিশৃঙ্খলা ছিল, তা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার তেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বাড়ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বাস-ট্রাক উচ্ছেদে উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধায় এবারও সাফল্য খুব একটা নেই। ঢাকার যানজট নিরসন ও গণপরিবহনে নৈরাজ্য আগের মতোই আছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন, সেতু বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এই দুই মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভাগগুলো কী পরিমাণ ব্যয় সাশ্রয় করেছে, তার একটা তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, গত এক বছরে প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে।

মেট্রোরেল চালুর পর উত্তরা মতিঝিল সড়কপথে গতি খুব একটা বাড়েনি

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ চালুর পর সড়কপথে উত্তরা-মতিঝিল করিডোরে যাতায়াতের গতি খুব একটা বাড়েনি। গবেষণায় দেখা গেছে, এ সড়কপথে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ চালুর পর সড়কপথে উত্তরা-মতিঝিল করিডোরে যাতায়াতের গতি খুব একটা বাড়েনি। গবেষণায় দেখা গেছে, এ সড়কপথে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। সড়কপথের যানজট কমাতে মেট্রোরেলের এ ভূমিকা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তরা-মতিঝিল করিডোরে বাড়তে থাকবে যানবাহন, যা ধীরে ধীরে যাতায়াতের গতি কমিয়ে দেবে। জাইকা ওগাতা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

‘‌দ্য ইমপ্যাক্ট অব ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট অন রোড কনজেশন’ শিরোনামের গবেষণায় দেখানো হয়েছে, মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর উত্তরা-মতিঝিল সড়কপথে গাড়ির গতি কিছুটা বেড়েছে। অনেকে প্রাইভেট কার ও সড়কভিত্তিক যানবাহন বাদ দিয়ে মেট্রোরেলে যাতায়াত করছেন। ফলে রাস্তায় জায়গা খালি হয়েছে এবং গাড়ির গতি বেড়েছে।

বিস্ফোরণের পর ছড়িয়ে পড়ে ‘বিষাক্ত গ্যাস’, কারখানার ছাদের দরজা ছিল তালাবন্ধ

১৫ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় কেন এত মৃত্যু হলো, প্রাথমিকভাবে তার কয়েকটি কারণ জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের ধারণা, কারখানার পাশে থাকা রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণের পর সেখান থেকে বিষাক্ত সাদা ধোঁয়া বা টক্সিক গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে, যা ছিল প্রাণঘাতী।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ‘আগুন খুব দ্রুত “ডেভেলপ স্টেজ” বা তৃতীয় ধাপে পৌঁছে যায়, ফলে ভুক্তভোগীরা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন।’ এ ছাড়া যে পোশাক কারখানার ভবন থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ভবনের ছাদের দরজায় দুটি তালা লাগানো ছিল। এর ফলে কারখানার শ্রমিকেরা কেউ ওপরে উঠতে পারেননি। এ ছাড়া পোশাক কারখানার ভবন ও রাসায়নিকের গুদাম কোনোটিরই অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

দেশে সড়ক দুর্ঘটনার উচ্চ ঝুঁকি এই ২১ জায়গায়

২৩ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

ব্যবসায়ী বিলু চৌধুরী গত জুনে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে দুর্ঘটনায় আহত হন। তিনি রাস্তা পার হচ্ছিলেন। তাঁকে ধাক্কা দেয় একটি মোটরসাইকেল। রাজধানীর একটি হাসপাতালে ১৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বিলু চৌধুরীর মৃত্যু হয়।

বিলু চৌধুরী যেখানে আহত হয়েছিলেন, সেই জায়গায় নিয়মিতই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এটি ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের একটি অংশ। শুধু এ অংশে নয়, শেরপুর উপজেলার উত্তরে দশমাইল এলাকা থেকে দক্ষিণে সীমাবাড়ি পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার মহাসড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ।

সরেজমিন গতকাল মঙ্গলবার দেখা যায়, সড়কটি দিয়ে দ্রুতগতিতে শত শত যানবাহন চলাচল করে। তবে রাস্তা পারাপারের নিরাপদ ব্যবস্থা নেই। সড়কের দুই উপজেলার মহিলা কলেজসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান। নানা কাজে প্রতিদিন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে কয়েক শ মানুষ আসেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ পায়ে চালিত রিকশার যত্রতত্র চলাফেরা এই সড়কে।

শেরপুর পৌর শহরের ক্রীড়া সংগঠক আবদুল খালেক বলেন, ‘প্রতিদিন জীবন হাতে করে এই সড়ক ধরে আমাদের চলাচল করতে হয়।’

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, শেরপুরের এই জায়গার মতো দেশের ২১টি স্থান সড়ক দুর্ঘটনার অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল—এই পাঁচ বছরের ৩৭ হাজার সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই ২১ জায়গায় মোট সড়ক দুর্ঘটনার ১৪ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।

পররাষ্ট্র বিষয়ক

বাণিজ্য সচিব: যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনবে বাংলাদেশ

২৭ জুলাই ২০২৫, ঢাকা ট্রিবিউন

যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

রবিবার (২৭ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

সচিব বলেন, “বোয়িংয়ের ব্যবসাটা কিন্তু সে দেশের সরকার করে না, করে বোয়িং কোম্পানি। আমরা বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছি। যেমন ভারত দিয়েছে ১০০টি, ভিয়েতনাম দিয়েছে ১০০টি, আর ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টি।”

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিদেশীয় ফোরামে ঢাকাকে সক্রিয় করতে বেইজিংয়ের চাপ

২৯ জুলাই ২০২৫, প্রথম আলো

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে নিয়ে গত জুনে কুনমিংয়ে ত্রিদেশীয় এক ‘অনানুষ্ঠানিক আলোচনা’র আয়োজন করেছিল চীন। যদিও ঢাকা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এটি কোনো জোট গঠন নয়, কেবলই কর্মকর্তা পর্যায়ের আলোচনা। তবু থেমে নেই বেইজিংয়ের তৎপরতা। ত্রিদেশীয় উদ্যোগে বাংলাদেশকে সক্রিয় করতে কূটনৈতিক চাপ ও কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।

চীনের ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ে গত ১৯ জুন চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা বৈঠক করেছিলেন। এরপর গত এক মাসে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলের আলোচনায় ওই ত্রিদেশীয় উদ্যোগের প্রসঙ্গ এসেছে।

পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি এ মাসেই

০৩ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের হার ২০ শতাংশের ঘোষণা এলেও দেশটির সঙ্গে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। চুক্তি হতে দু–তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। চুক্তির খসড়া তৈরির কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর)।

খসড়া শেষ করার পর তারা তা বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা দেখে ও মতামত দিয়ে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর দিন ঠিক করে যুক্তরাষ্ট্রে উভয় পক্ষের চুক্তি সই হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এ কথা জানা গেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হবে ৭ আগস্ট থেকে। পুরো বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি আসতে পারে শিগগির।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র কী পেতে যাচ্ছে

০৪ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

পাল্টা শুল্কের ঘোষিত হার ৩৫ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে বেশ কিছু বিষয়ে ছাড় দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শুল্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মেধাসম্পদ, আমদানি, সেবা খাত, পরিবেশ ও শ্রম অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ছাড় দিতে রাজি হওয়ার কারণেই বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার পাল্টা শুল্কের এই হার ঘোষণার পর উভয় পক্ষ এখন চুক্তি করার দিকে এগোচ্ছে। চুক্তির সম্ভাব্য নাম ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ পারস্পরিক বাণিজ্যচুক্তি।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্যগুলো জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সব চাওয়া বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে কি না, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত রাতে ওয়াশিংটন থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘না। সব মেনে নেওয়া সম্ভব না বলেই আমরা লম্বা সময় ধরে দর-কষাকষি করলাম।’

সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র যেসব পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করবে, সেগুলোর ওপর আমদানি শুল্ক (সিডি), সম্পূরক শুল্ক (এসডি) এবং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) কমাবে বাংলাদেশ। তবে এ ব্যাপারে আইন সংশোধন করতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিডি ও এসডি কমানোর ক্ষেত্রে আইন সংশোধনের প্রশ্ন এসে যায়। তবে সেই পর্যায় এখনো আসেনি। দেখা যাক।’

জানা গেছে, কিছু খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের ওপর বাংলাদেশের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা বাংলাদেশ বাদ দেবে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য অনাপত্তিপত্রও সহজ করা হবে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধন যাতে সহজে আসতে পারে এবং বাংলাদেশ থেকে সে দেশে যেতে পারে, তার অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছ করতে বাংলাদেশ নির্দেশিকা প্রণয়ন করবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান কোম্পানিগুলোর বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধ করবে।

সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক পণ্য, বেসামরিক উড়োজাহাজ ও যন্ত্রাংশ আমদানি বাড়াবে বাংলাদেশ এবং জ্বালানি তেল ও ভোজ্যতেল, গম ও তুলা আমদানি বাড়ানো এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশ অবৈধ রপ্তানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ তদন্ত করবে। বাংলাদেশ এতে রাজি। এ ছাড়া জনমত গ্রহণের সুযোগ নিতে বাংলাদেশ আইন ও বিধিমালা অনলাইনে সহজলভ্য করার পাশাপাশি প্রস্তাবিত আইন ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করবে।

সূত্রমতে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ধারা অনুযায়ী, বাংলাদেশ বার্ষিক আমদানি লাইসেন্সিং প্রতিবেদন ডব্লিউটিওতে জমা দেবে। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্য বা কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি অনুমতিপত্র বাধ্যতামূলক করবে না। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকট্রনিক বিল অব লেডিংয়ের বৈধতা অস্বীকার করবে না এবং দেশটি থেকে আসা স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য দ্রুত ছাড় করবে।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মেধাসম্পদ, আমদানি, সেবা খাত, পরিবেশ ও শ্রম অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে ছাড় দিচ্ছে। ছাড় দিতে রাজি হওয়ার ফলেই বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে ২০% করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

জানা গেছে, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) যে অনুমোদন দেবে, তা বাংলাদেশ মেনে নেবে। এফডিএর ইলেকট্রনিক সনদকেও গ্রহণ করবে বাংলাদেশ। এ জন্য সংস্থাটি থেকে হার্ড কপি, মূল কপি, সত্যায়িত কপি বা হাতে লেখা কপি দাবি করবে না। আন্তর্জাতিক মেডিকেল ডিভাইস রেগুলেটরস ফোরামের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করবে বাংলাদেশ।

সূত্রগুলো জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের দুগ্ধ নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং মাংস ও পোলট্রি, প্রক্রিয়াজাত মাংস ও ডিমজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে স্বীকৃতি এবং দেশটির গরু, ভেড়া বা ছাগলের দুগ্ধজাত পণ্য আমদানির অনুমতি দেবে বাংলাদেশ। যদি কোনো মার্কিন পণ্যে সমস্যা দেখা দেয়, তবে বাংলাদেশ দেরি না করে যুক্তরাষ্ট্র বা তৃতীয় দেশের ঝুঁকি বিশ্লেষণ ও অনুমোদন বিবেচনায় নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেবে।

মারাত্মক সংক্রামক বার্ড ফ্লু রোধে বাংলাদেশ বিশ্ব পশু স্বাস্থ্য সংস্থার বিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো বিধান আরোপ তো করবেই না, বজায়ও রাখবে না—এমন শর্ত বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে বলে জানা গেছে। চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত পণ্য বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশাধিকারের জন্য আবেদন জমা দিলে ১৮ মাসের মধ্যে তা অনুমোদন করবে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া হচ্ছে, এখনো যদি না করে থাকে, তাহলে বাংলাদেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করবে। এগুলো হচ্ছে বার্ন কনভেনশন, ব্রাসেলস কনভেনশন, বুদাপেস্ট চুক্তি, হেগ চুক্তি, মাদ্রিদ প্রটোকল, মারাকেশ চুক্তি, প্যারিস কনভেনশন, পেটেন্ট কো–অপারেশন চুক্তি, সিঙ্গাপুর চুক্তি, নতুন জাতের উদ্ভিদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (ইউপিওভি) ১৯৯১, বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার কপিরাইট চুক্তি এবং ডব্লিউআইপিও পারফরম্যান্স ও ফোনোগ্রাম চুক্তি।

এ ছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ এবং দুর্নীতিবিরোধী পরিকল্পনা ও বন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার কথা অনলাইনে প্রকাশ করবে। ডব্লিউটিওর মৎস্য ভর্তুকি চুক্তি মেনে চলবে বাংলাদেশ, অবৈধ মাছ ধরায় ভর্তুকি দেবে না এবং দীর্ঘ মেয়াদে সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণে টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে।

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নীতিমালায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত বিবেচনায় নেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা আইনের আওতায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংরক্ষণ করা এবং ২০২১ সালের সোশ্যাল মিডিয়া ও ওভার দ্য টপ (ওটিটি) আইন সংশোধন বা বাতিল করার প্রতিশ্রুতিও দেয় বাংলাদেশ।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সাধারণ বিমা করপোরেশনের সঙ্গে বর্তমানে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর যে ৫০ শতাংশ পুনর্বিমা করার বাধ্যবাধকতা আছে, এ বিধানের বাতিল চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটি জাহাজ কিনবে সরকার, খরচ ৯৩৬ কোটি টাকা

১২ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ কেনা হচ্ছে। হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসি নামক প্রতিষ্ঠান থেকে এই জাহাজ দুটি কিনতে ব্যয় হবে ৯৩৬ কোটি টাকা।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই জাহাজ কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দুটি জাহাজ কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। এর মধ্যে দুটি প্রস্তাব কারিগরিভাবে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

সব প্রক্রিয়া শেষে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ পায় যুক্তরাষ্ট্রের হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসি। এতে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যয় হবে ৭৬ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ৬৬ লাখ মার্কিন ডলার। জাহাজ দুটি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

১২ আগস্ট ২০২৫,  যুগান্তর

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় গুলশানে আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে ৫ সমঝোতা স্মারক সই ও ৩ নোট বিনিময় সম্পন্ন

আগস্ট ১২, ২০২৫, ডেইলিস্টার অনলাইন বাংলা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরের প্রথম দিনে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই ও তিনটি নোট বিনিময় হয়েছে।

মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় সমঝোতা স্মারক সই ও নোট বিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রথম নোট বিনিময়টি হয়েছে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান এবং বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নিজ নিজ দেশের পক্ষে নোট বিনিময় করেন।

দ্বিতীয় নোট বিনিময়টি হয়েছে কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত। এটি বিনিময় করেছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

তৃতীয় নোট বিনিময়টি হয়েছে হালাল ইকোসিস্টেম ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের উপমন্ত্রী সিনেটর ড. জুলকিফলি বিন হাসান এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন নোট বিনিময় সম্পন্ন করেন।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে প্রথম সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত। মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ খালেদ বিন নরদিন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এমওইউতে সই করেন।

দ্বিতীয় সমঝোতা স্মারকটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ, এলএনজি অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও সেগুলোর অবকাঠামো ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত। মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী আমির হামজা বিন আজিজান এবং বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এমওইউতে সই করেন।

তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি মালয়েশিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এবং বাংলাদেশের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত। মালয়েশিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহদ ফাইয আবদুল্লাহ এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এমওইউতে সই করেন।

চতুর্থ সমঝোতা স্মারকটি এমআইএমওএস সার্ভিসেস ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত।

পঞ্চম সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এনসিসিআইএম) এবং বাংলাদেশের ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মধ্যে।

ভারতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বন্ধে দিল্লির উদ্যোগ চায় ঢাকা

২১ আগস্ট ২০২৫, বণিক বার্তা

ভারতে অবস্থান করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ‘বাংলাদেশবিরোধী’ কর্মকাণ্ড বন্ধে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গতকাল দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি এবং কলকাতায় আওয়ামী লীগের ‘কার্যালয় প্রতিষ্ঠার’ খবরের মধ্যে এ অবস্থান জানাল সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দিল্লি ও কলকাতায় নিষিদ্ধ ঘোষিত দল আওয়ামী লীগের অফিস তৈরির খবর বাংলাদেশ সরকারের নজরে এসেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা ভারত থেকে বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলেও উঠে এসেছে বিবৃতিতে।

পাকিস্তানের মন্ত্রী বললেন আগেই সমাধান হয়েছে, ভিন্নমত উপদেষ্টার

২৫ আগস্ট ২০২৫, প্রথম আলো

একাত্তরের অমীমাংসিত বিষয় বা ইস্যু ‘দুবার সমাধানের’ দাবি করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তবে তাঁর সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, দুই দেশের অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আগামী দিনে উভয় পক্ষই আলোচনা চালিয়ে যাবে।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল রোববার সকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। এরপর দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ওই বৈঠকের আলোচনা নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

সাত মাসে বিএসএফের গুলিতে ২২ বাংলাদেশি নিহত

২৬ আগস্ট ২০২৫, দেশ টিভি অনলাইন

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাত মাসে প্রাণ গেছে ২২ বাংলাদেশির। আহত হয়েছেন ৩২ জন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে, ২০০৯ সাল থেকে গত ১৬ বছরে বিএসএফ হত্যা করেছে ৬০৭ বাংলাদেশিকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে বেসরকারিভাবে দুই দেশ যৌথ কমিশন করতে পারে। তবে রাজনৈতিক সমাধানই প্রধান উপায়। আলোচনায় কাজ না হলে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পরামর্শ আইনজীবীদের।

পাঁচ দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তুতি চলছে

৩০ আগস্ট ২০২৫, সমকাল

আগামী ডিসেম্বরেই জাপানের সঙ্গে শুল্ক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এটিই হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। একই সঙ্গে আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে আরও অন্তত চারটি দেশে বিভিন্ন নামে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চায় সরকার। এ ছাড়া বাণিজ্য সুবিধা পেতে রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে (আরসিইপি) যোগ দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বাংলাদেশের।

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হয়ে যাবে বাংলাদেশ। তখন উন্নত দেশগুলো থেকে আর বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া যাবে না। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যমান রপ্তানির ধারা বজায় রাখতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। তবে এ চুক্তির ক্ষেত্রে রপ্তানির পাশাপাশি বিনিয়োগ, সেবা ও জনশক্তিকেও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাভাষীদের দ্রুত ঠেলে পাঠাতে নতুন পদ্ধতিতে আসাম

১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সমকাল

উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যে অবৈধ বিদেশিদের বহিষ্কার করার জন্য নতুন পদ্ধতির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মাত্র ১০ দিনের বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক সরাসরি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত ও বহিষ্কার করতে পারবেন।

গত মঙ্গলবার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুমোদন করে আসামের মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বাস শর্মা সাংবাদিকদের জানান, জেলা প্রশাসকের আদেশের পর সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাবে। সেখান থেকে সীমান্ত বাহিনী বিএসএফের সহায়তায় তাঁকে বিদেশে নির্বাসন দেওয়া হবে।

আসাম থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ১২৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর বেশির ভাগই বাংলাদেশি সন্দেহে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ফেরত (পুশব্যাক) পাঠায়। এসওপি প্রকাশের পর এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে এসওপি বাস্তবায়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকার ওপর দিল্লির ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব এখনো অক্ষুণ্ন

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গত এক বছরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক রাজনৈতিক অস্থিরতা, কূটনৈতিক টানাপড়েন ও পারস্পরিক বাগ্‌যুদ্ধে জর্জরিত। যদিও অর্থনীতির অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান ভিন্ন বাস্তবতা তুলে ধরছে। আমদানি-রফতানির পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্যশস্য, তুলা, সুতা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে বাংলাদেশের ওপর ভারতের ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে।

ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব বলতে বোঝায়, একটি দেশের ওপর আরেকটি দেশের এমন অর্থনৈতিক প্রভাব, যা শুধু বাজার বা বাণিজ্য দিয়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং কৌশলগত নির্ভরশীলতাও তৈরি করে। বলা যায় ভূ-অর্থনীতি মূলত বাণিজ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল, জ্বালানি সরবরাহ এবং অবকাঠামোর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে। তিনদিক থেকে সীমান্তঘেরা অবস্থান, খাদ্য ও জ্বালানি আমদানি এবং পোশাক শিল্পের কাঁচামাল নির্ভরতাসহ নানা কারণে বাংলাদেশের ওপর ভারতের ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব বিদ্যমান। যে প্রভাব অনেকাংশ বেড়েছে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে।

আরসার হামলায় বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আরাকান আর্মিপ্রধানের

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বণিক বার্তা

বাংলাদেশ সীমান্তে আরাকান আর্মির ঘাঁটিতে ‘রোহিঙ্গা বিদ্রোহী’রা হামলা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সশস্ত্র সংগঠনটির কমান্ডার ইন চিফ মেজর জেনারেল তোয়ান মারত নাইং। আর এতে ‘কিছু বাংলাদেশী কর্মকর্তার’ সমর্থন রয়েছে বলেও অভিযোগ তার। থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাওয়াদ্দিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ করেন আরাকান আর্মির প্রধান। এ বিষয়ে জানতে ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাসে যোগাযোগ করে ইরাওয়াদ্দি। তবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রামে এল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ

০৮ অক্টোবর ২০২৫, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি অনলাইন

আমেরিকার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। শুভেচ্ছা সফরে জাহাজটি এসেছে বলে বুধবার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, পূর্বের মতো আবারো শুভেচ্ছা সফরে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী জাহাজ ইউএসএস ফিৎসজেরাল্ড (USS Fitzgerald) আজ বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছেছে। এ সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ বানৌজা আবু উবাইদাহ্ সফরকারী জাহাজটিকে অভ্যর্থনা জানায়।

পোস্টে আরও বলা হয়, এ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের পেশাগত বিষয়ে মত বিনিময়, প্রশিক্ষণ ও পারস্পারিক সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা যায়।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালেও আমেরিকার নৌবাহিনীর জাহাজ শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসেছিল।

‘বাতিলের তালিকা সঠিক নয়’, ভারতের সঙ্গে কোন চুক্তির কী অবস্থা, জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

২২ অক্টোবর ২০২৫, প্রথম আলো

ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে যে তালিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, সেটা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, যে তালিকাটা এসেছে, এটা কোনো একজন দিয়েছেন, সার্কুলেট (প্রচার) করেছেন। সেটা সম্ভবত কোনো একজন অ্যাডভাইজার রিটুইট করেছেন। তাঁর একটা কমেন্টসহ। কমেন্টটা নিয়ে আমি কোনো কমেন্ট করতে চাই না। হয়তো এটা উনি না করলেও পারতেন। যে তালিকাটা এসেছে, ওখানে এটা সঠিক নয়। এর অধিকাংশ (তালিকার চুক্তি) এক্সিস্ট করে না।

ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি অনেক আগেই বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাকিগুলোর কয়েকটি আছে যে বিভিন্ন পর্যায়ে আছে এবং ঠিক ওই নামে নেই। অন্য রকম ডেসক্রিপশনে (বিবরণ) আছে।’

গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখা হয়, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরই চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং যথাযথ পর্যালোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

 স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তালিকা পোস্ট করা হয়েছিল

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তালিকা পোস্ট করা হয়েছিল

এর নিচে একটি তালিকা জুড়ে দেওয়া হয়। তার শিরোনামে লেখা হয়, ‘হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সাথে করা ১০ চুক্তি বাতিল, বাকিগুলোও বিবেচনাধীন।’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেলসংযোগ প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল বলে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডোর বাতিল উল্লেখ করা হলেও হুবহু এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে ‘আশুগঞ্জ-সরাইল-ধারখার প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প চলমান আছে। ওই প্রকল্পের আওতায় কেবল একটি প্যাকেজ বাতিল হয়েছে (প্যাকেজ ৩: ধারখার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর)। ফেনী নদীর পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে পানীয় জল সরবরাহের জন্য ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের জন্য ২০১৯ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ওই সমঝোতা স্মারকটি বাতিল হয়নি।

উপদেষ্টা বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে স্থগিত হিসেবে। এ নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদী কুশিয়ারা থেকে পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০২২ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সমঝোতা স্মারকটি স্থগিত হয়নি। বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও হুবহু এ নামের কোনো চুক্তি নেই। তবে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৮ সালে চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তিটি বাতিল হয়নি। চুক্তিটি বলবৎ আছে।

তৌহিদ হোসেন জানান, ফারাক্কা বাঁধসংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রস্তাবের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবগত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প বাতিল হিসেবে উল্লেখ করা হলেও এ রকম কোনো প্রকল্প নেই। পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল উল্লেখ করা হলেও ভারতের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের আওতায় ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত যে পাইপলাইন আছে, তা সম্প্রসারণের জন্য ভারতের সঙ্গে একবার প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।

উপদেষ্টা জানান, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প (মিরসরাই ও মোংলা) বাতিল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় ঋণচুক্তির (এলওসি) আওতায় ওই প্রকল্পগুলোতে অর্থায়নের বিষয়টি বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান। আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুনর্বিবেচনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চুক্তিটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি (১৯৯৬) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নবায়ন/পুনর্বিবেচনা উল্লেখ করা হলেও ২০২৬ সালে চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি নবায়নের জন্য আলোচনা হবে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি (খসড়া) (২০১১): বাস্তবায়নের জন্য আলোচনায় বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১০-২০১১ সালে খসড়া হওয়া তিস্তা চুক্তিটি এখনো স্বাক্ষরিত হয়নি। ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসইর সঙ্গে টাগ বোট চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের (জিআরএসই) থেকে ২১ মিলিয়ন ডলারে একটি সমুদ্রগামী টাগবোট কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ। প্রতিরক্ষা খাতে ভারতীয় ঋণচুক্তির ৫০০ মিলিয়ন ডলারের আওতায় এটি কেনার কথা ছিল। জিআরএসইর দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে এই চুক্তি বাতিলের তথ্য চলতি বছরের মে মাসে দিয়েছিল ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম।

ভারতীয় ঋণচুক্তির আওতায় কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) থেকে টাগবোট কেনার চুক্তি বাতিলের যে তথ্য আসিফ মাহমুদের পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কেবল সেই তথ্যটি সঠিক বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘জিআরএসই মানে গার্ডেন রিচের সাথে আমাদের একটা টাগবোট কেনার চুক্তি ছিল, সেটা আমরা বাতিল করেছি। বাতিল করা হয়েছে, বিবেচনা করে দেখা গেছে যে এটা বাংলাদেশের জন্য খুব লাভজনক না।’

Social Share
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •