পাহাড়ে সম্ভাবনাময় তরুণ আদিবাসী নেতৃত্বের নৃশংস হত্যায় আমরা ক্ষুব্ধ: ৪৩ নাগরিকের বিবৃতি

পাহাড়ে সম্ভাবনাময় তরুণ আদিবাসী নেতৃত্বের নৃশংস হত্যায়

আমরা ক্ষুব্ধ: ৪৩ নাগরিকের বিবৃতি

“গতকাল সোমবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ রাতে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার লোগাঙ ইউনিয়নের অনিল পাড়া গ্রামে “দুর্বৃত্তদের” গুলিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমাসহ চার জনকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত অন্যরা হলেন সুনীল কান্তি ত্রিপুরা, লিটন চাকমা ও রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা। আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, এ ঘটনায় আরও নিখোঁজ রয়েছেন নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরা। এ সহিংসতার ঘটনায় সম্ভাবনাময় তরুণ আদিবাসী নের্তৃত্বের মৃত্যুতে আমরা ক্ষুব্ধ।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাহাড়ে তরুণ আদিবাসী নেতৃত্বের ওপর এমন আক্রমণ  ঘটতে এর আগেও দেখেছি।   পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের ২৭ বছর পরেও পাহাড়ে সেনা উপস্থিতি বহাল রাখা হয়েছে এই যুক্তিতে যে তারা পাহাড়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্ করছি যে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন প্রতিশ্রুত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না, বরং অভিযোগ আছে, তাদের  সজ্ঞানে সশস্ত্র দুষ্কৃতকারীরা দিনে-দুপুরে পাহাড়ে চাঁদাবাজি ও সহিংসতা  চালাচ্ছে। অনেকে আশংকা করেন, পাহাড়ে বাঙালি জাতিগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আদিবাসী তরুণ নেতৃত্বকে পরিকল্পিতভাবে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে। এই সন্দেহ যদি কিয়দাংশও সত্য হয় তাহলে আমরা এদেশের নাগরিক হিসেবে সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে হত্যার রাজনীতি কোনোদিনও পাহাড়ে শান্তি আনবে না। 

আমরা এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই ও হত্যার বিচার দাবি করি। একইসাথে আমাদের দাবি, নিখোঁজ তিনজন তরুণকে উদ্ধারের জন্য বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ অনতিবিলম্বে গ্রহণ করা হোক। আমরা আশা করছি, সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন জনমনে বিরাজমান সকল আশংকা এবং অভিযোগ আমলে নিয়ে পাহাড়ে আদিবাসী জনগণের নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নটিকে নিষ্ঠার সাথে বিবেচনা করবেন। 

১২ই ডিসেম্বর ২০২৩

Social Share
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •