সর্বজনকথা ৭ম বর্ষ: ৩য় সংখ্যা (মে – জুলাই ২০২১)

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র: প্রতারণামূলক নিষ্ঠুর ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পের দৃষ্টান্ত

কল্লোল মোস্তফা

‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ’ এই বিজ্ঞাপনী প্রচার দিয়ে এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু করেছিল এস আলম গ্রুপ। এই প্রকল্পে তার সহযোগী চীনা কোম্পানি আর পৃষ্ঠপোষক সরকার। প্রথম থেকেই এই প্রকল্পে পাওয়া যায় কোম্পানি-সরকারের যোগসাজসে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম আর জোর জবরদস্তির নানা চিত্র। এর কারণে এই প্রকল্প এলাকার গরীব মানুষ আর প্রকল্পের শ্রমিকদের উপর জুলুমের অনেক ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ-সন্ত্রাসীদের গুলিতে মানুষ খুনজখম করা তার অংশ। এই প্রাণবিনাশী প্রকল্প  প্রথম থেকেই কীরকম অনিয়ম ও মিথ্যাচারের উপর দিয়ে চলছে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র এই লেখায় উপস্থিত করা হয়েছে।  

যে প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতিবাদ বিক্ষোভ এবং তার প্রতিক্রিয়ায় গুলি করে হত্যার ঘটনা দু-দুবার ঘটতে পারে, তা যে কোনো সাধারণ প্রকল্প নয়, তা বলাই বাহুল্য। দেশীয় কোম্পানি এস আলম ও চীনা কোম্পানি সেপকো-৩ এবং এইচটিজির যৌথ মালিকানায় নির্মিতব্য বাঁশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প এরকমই একটি অসাধারণ ‘উন্নয়ন’ প্রকল্প! অসাধারণ বলেই হয়তো ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘শুভ উদ্বোধন’ উপলক্ষ্যে সংবাদপত্রের পাতাজুড়ে দেওয়া এস আলম ও চীনা কোম্পানি সেপকো-৩-এর যৌথ বিজ্ঞাপনের শিরোনাম ছিল: ‘অন্ধকার থেকে আলোর মিছিলে প্রিয় বাংলাদেশ’! এই বিশেষ ‘উন্নয়ন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথমবার মানুষ হত্যার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল টেক্সটাইল মিলস ও ভেজিটেবল অয়েলের নামে জমি কিনে প্রতারণামূলকভাবে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা বাঁশখালীর গণ্ডামারা গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালিয়ে। আর দ্বিতীয়বার মানুষ হত্যা করা হয় ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পর্যায়ে সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ ও রোজার সময় কাজের সময়সূচি পরিবর্তনের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে।

(more…)
Social Share
  •  
  •  

বাঁশখালী হত্যাকান্ড ২০১৬: সরেজমিন প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, মিথ্যাচারের জবাব ও এলাকার মানুষের কথা

২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল বাঁশখালীতে আবারও পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিরস্ত্র গরীব খেটে খাওয়া ক্ষুধার্ত মানুষ নিহত হলেন। বাংলাদেশের এস আলম গ্রুপ ও চীনা কোম্পানির যৌথ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে দখল, বঞ্চনা ও  প্রতারণা এবং জনগণের ওপর দমন পীড়ন নির্যাতন এমনকি গুলি করে হত্যার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৬ সালে এরকম হত্যাকান্ড ঘটেছিল। সেসময় জনগণকে উন্নয়ন সম্পর্কে মিথ্যাচার করে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি দখল করছিল এসব কোম্পানি। সেসময়ই এলাকার মানুষ এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তখনও গুলি চালিয়ে কমপক্ষে চারজন মানুষকে খুন করা হয়েছিল, জখম ও ঘরছাড়া হয়েছিলেন আরও বহুজন। এরপর যৌথ বাহিনী মোতায়েন করে জবরদস্তির উপর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। যে শ্রমিকেরা এখানে কাজ করছিলেন তাদের কর্মঘন্টা ও মজুরি পরিশোধে ভয়ানক জবরদস্তি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ন্যায্য বিক্ষোভ শ্রমিকদের, সেখানে আবার পুলিশের গুলি, কমপক্ষে পাঁচজন নিহত, কতজন জখম তার হিসাব এখনও হয় নাই।  জীবন নাশী এসব প্রকল্পের জন্য বারবার মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে।

২০১৬ সালে নিহতদের পরিবার  ও আহতসহ এলাকাবাসীর ওপরই চাপানো হয় মামলা, শুরু হয় আরেকদফা হয়রানি। এরপর হত্যাকান্ডে সরকারি প্রশাসন ও এস আলম গ্রুপের ভূমিকা আড়াল করতে এবং কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে একটি পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প হিসেবে হাজির করতে বিজ্ঞাপন ছাড়াও শুরু হয় যথেচ্ছ মিথ্যাচার। ঘটনাগুলো একইরকম ভাবে এবারেও ঘটে যাচ্ছে। তখন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর জ্বালানী উপদেষ্টা সরাসরি সমর্থন জানান কোম্পানি ও প্রকল্পের প্রতি। সেকারণে তদন্ত, বিচার কোনোকিছুই আর অগ্রসর হয়নি। এবছরও শুরু হয়েছে, পাইকারি মামলা, হয়রানি ও মিথ্যা প্রচার।

২০২১ সালের হত্যাকান্ড বুঝতে গেলে তাই ২০১৬ সালের ঘটনাবলীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ দরকার। সেসময় জনবিক্ষোভ ও হত্যাকান্ডের পর এ বিষয়ে বেশ কিছু অনুসন্ধান হয়েছিল। সেসব লেখা প্রকাশিত হয়েছিল সর্বজনকথা ২০১৬ সালের মে-জুলাই এবং আগস্ট-অক্টোবর সংখ্যায়। আগ্রহী সকলের সুবিধার জন্য এগুলো এখানে আমরা একসাথে হাজির করছি, এখানে পরপর চারটি লেখা দেয়া হলো। এপ্রিল মাসেই লেখক প্রকৌশলী মাহবুব সুমন, কল্লোল মোস্তফা ও নৃবিজ্ঞানী নাসরিন সিরাজ এ্যানি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন, কথা বলেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে, এর ভিত্তিতেই তাঁদের লেখায় জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়। কল্লোল মোস্তফার লেখায় এস আলম গ্রুপের বিজ্ঞাপনী মিথ্যাচারের জবাব পাওয়া যাবে। ঘটনার একমাস পর একইবছরের মে মাসে এই অবরুদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করে সেসময়ের পরিস্থিতি ও জনগণের কথা জানিয়েছেন মওদুদ রহমান

(more…)
Social Share
  •  
  •  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও পাশের গ্রামবাসী: সংঘাত কাদের এবং কেন?

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে এবং তার পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী ও পাশের গ্রামের অধিবাসীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘাত হয়। এর পেছনে কী কারণ? কারা আসলে এর সাথে জড়িত? এটা কি আকস্মিক না দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব-বিরোধের ফলাফল? চাঁদাবাজি, মাদকসহ নানা ব্যবসার সাথে এর সম্পর্ক কী? সমাধান কোথায়? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সরেজমিন অনুসন্ধান করে লিখেছেন মেহেদী হাসান

চাঁদাবাজি এবং মাদক বাণিজ্যের বিরুদ্ধে গেরুয়াবাসী দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে।বিভিন্ন সময়ে ছোট-বড় লড়াই-সংঘাত  হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংঘাত বড় আকারের রূপ ধারণ করেছে। ধারণা করা হচ্ছে মূল ইস্যু- চাঁদাবাজি এবং মাদক বাণিজ্য বন্ধ না হলে এই লড়াই চলতে থাকবে। কিন্তু, এখন লড়াইয়ের গতিমুখ ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মূল  দাবী,’বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল খুলে দেওয়া’র পরিবর্তে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ ‘সীমানা’ দেওয়াল তৈরী করে দেওয়া’র দাবী জানাচ্ছে। এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকেও কেউ কেউ এই দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে জড়িত। এলাকাবাসীর মধ্যে এই ইস্যুর প্রতি সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলছে। তবে স্থানীয় অধিকাংশ অধিবাসীদের কথা,“ছেলেপুলেরা চাইছে চান্দাবাজি আর ইয়াবা বন্ধ হউক। অথচ কেউ কেউ বলছে; দেওয়াল তোলা, রাস্তা বানানোর কথা। দেওয়াল তুলে দিলেই কী চান্দাবাজি বন্ধ হবে? আর আমাদের তো সাভার যাওয়ার অনেক রাস্তা আছে। নতুন করে বড় রাস্তা বানানোর দরকার কী? তার মানে কী? ঠিকাদারদের জন্য রাস্তা বানানোর দাবী কী আমরা করছি? নেতা-কর্মীদের ভাগ বাড়বে,আমাদের তাতে ফায়দা কী?”

(more…)
Social Share
  •  
  •