যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন, ছবি: শহিদুল আলম

[১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ‘যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা’ প্রণয়নের তাগিদ তৈরি হয়। কারণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এটা স্পষ্ট হয়েছিল যে, বাংলাদেশে আইন আদালত এবিষয়ে খুবই অস্বচ্ছ অবস্থায় আছে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবিষয়ে কোনো বিধিবিধান নাই, ধারণাগত দিক থেকেও সমাজ এ নিয়ে খুবই নাজুক অবস্থায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক প্রথম এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই নীতিমালা সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করা হয়। এরপর বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ্ই নীতিমালার একটি খসড়া প্রণয়ন করা হয়। ২০০০ সালের দিকে এই খসড়া চ’ড়ান্ত করার পর বিভিন্ন বিভাগের ১৭ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করে এই নীতিমালা গ্রহণের জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন। শিক্ষার্থী-শিক্ষক সমন্বয়ে গঠিত ‘৮ই মার্চ পর্ষদ’ থেকে তা প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর পর প্রতিবছর ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মিছিল করে এই খসড়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে জমা দেয়া হতো।  বহু আলোচনা, বিতর্ক ও প্রচারের পর এক পর্যায়ে জাবি শিক্ষক সমিতি এই নীতিমালা গ্রহণ করে এবং তা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়। ২০০৬-৭ সালে আরেকটি যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের মুখে সকলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি থেকে আগের নীতিমালা পরিবর্ধন পরিমার্জন করে, শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ সকলের সাথে ব্যাপক আলোচনা মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে তা চ’ড়ান্ত করা হয়। ১৮ই মার্চ ২০০৭ সালে তা উপাচার্যের কাছে জমা দেয়া হয়। এরও বেশ কিছুদিন পর  বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তা গ্রহণ করে।

দেশজুড়ে যৌন নিপীড়ন বেড়ে যাবার পরিপ্রেক্ষিতে এরকম নীতিমালার প্রয়োজন তখন অনেকেই অনুভব করতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, মহিলা আইনজীবী সমিতি এ নিয়ে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সারাদেশে যৌন নিপীড়নের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে একটি রিট আবেদনের সূত্রে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২০০৯ সালের ১৪ই মে এই নীতিমালা গ্রহণে একটি আদেশ জারি করে। কিন্তু এরপর বহু বছর পার হলেও, বহু প্রতিষ্ঠান এই নীতিমালা এখনও গ্রহণ করেনি। আসলে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সবধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানায় এই নীতিমালা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা উচিৎ। শুধু তাই নয় সকল রাজনৈতিক দল, শ্রমিক, ছাত্র, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠনেও এই নীতিমালা থাকা জরুরী।

বস্তুত যে নীতিমালা দলিল থেকে পরে অনেকেই কাজ করেছেন তা এখানে পুনপ্রকাশ করা হল। যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে সজাগ অবস্থান তৈরি এবং এর বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণে এই দলিল সহায়ক হবে বলে আমরা আশা করি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন নিজ নিজ অবস্থা অনুযায়ী এই দলিল পরিমার্জন করে নিজেদের নীতিমালা দাঁড় করাতে পারবেন।]

(more…)
Social Share
  •  
  •  
  • 350
  •  
  •  
  •  
  •  

সর্বজনকথা ৯ম বর্ষ: ৩য় সংখ্যা (মে- জুলাই ২০২৩)

(more…)
Social Share
  •  
  •  

সর্বজনকথা ৯ম বর্ষ: ২য় সংখ্যা (ফেব্রুয়ারি- এপ্রিল ২০২৩)

(more…)
Social Share
  •  
  •  

সর্বজনকথা ৯ম বর্ষ: ১ম সংখ্যা (নভেম্বর ২০২২- জানুয়ারি ২০২৩)

(more…)
Social Share
  •  
  •